বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪

শীতলক্ষ্যা

নদীর সাথে নদীর, নদীর সাথে সাগরের, সাগরের সাথে মহাসাগরের সম্পর্ক সরাসরি। আল্লার সাথে বান্দার সম্পর্ক সরাসরি বলেই আল্লা- বান্দার সম্পর্কে কখনো ফাটল সৃষ্টি হয়না। জলের এই শুদ্ধতম সম্পর্ক দেখে উপলব্ধির জায়গা শাণিত করার জন্য সুযোগ পেলেই ছুটে চলি নদীর আলিঙ্গনে। দিনটা ঢেকে আছে কুয়াশার আবরনে। জানুয়ারি শীতলতম মাস। শীতলতাও বেশ প্রাসঙ্গিক। শীতকালে শীতলক্ষ্যা স্নানে প্রশান্তিময় হবে আমার গোপন আস্তানা। তাইতো শীতলক্ষ্যার দিকে ছুটে চলা।
শীতালক্ষ্যা নদী (যা লক্ষ্ম্যা নদী নামেও পরিচিত) হল ব্রহ্মপুত্র নদের একটি উপনদী। এর গতিপথের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পরে নারায়ণগঞ্জের পূর্ব দিয়ে কালাগাছিয়ার কাছে ধলেশ্বরী নদীর সাথে মিশেছে। এর উপরিভাগের একটি অংশ বানর নদী নামে পরিচিত। নদীটি প্রায় 39 কিলোমিটার লম্বা এবং নারায়ণগঞ্জের নিকটে এর সর্বোচ্চ প্রস্থ প্রায় ৩০০ মিটার। এর সর্বোচ্চ প্রবাহ ডেমরার কাছে ২,৬০০ কিউসেক। সারা বছর ধরে এর নাব্যতা বজায় থাকে।
এই শীতলক্ষ্যার জোয়ার নিয়মতান্ত্রিক। অর্থাৎ পলিসি মেইনটেইন করে চলে। নদী অবশ্যই মাত্রা, ছন্দ মেনে চলে। তবে দৃশ্যমান চোখে তা সবসময় মাপা যায়না। কিন্তু যে শীতলক্ষ্যাকে দেখলাম সেই শীতলক্ষ্যার গতিবিধি চোখের ক্যালকুলাসে ধৃত। চুপচাপ বয়ে চলার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

আমরা তিন জন। কাজী বর্ণাঢ্য, মাইন উদ্দিন সরকার আর আমি। ইচ্ছে ছিল রিক্সা করে চরসিন্দুর গ্রামে যাওয়া। কিন্তু কলের কাজ যে বলে চলেনা। তাই সিএনজি করে শীতলক্ষ্যা অভিমুখে। সিএনজি গ্রাম্যনিয়মে ছুটে চলছে। আমি ড্রাইভারের বাম পাশে বসা। সম্পাদক ও কবি বসে আছে পেছনের সিটে। গল্প করা ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ নেই। কারন সিএনজি কাজের চেয়ে কেওয়াজ করে বেশি। চারপাশের দৃশ্যগুলো চোখকে টেনে তার দিকে নিয়ে যায়। গ্রামগুলো যেন সবুজের পাহাড়। আর আমরা সবুজপাহাড়ের গুহার ভেতর দিয়ে স্বর্গয়ীয় ঝরণার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তালতলী গ্রামে যখন আমরা তখন একটি নতুন কবরের দিকে তাকানোর জন্য মন চোখকে হুকুম দেয়। চেয়ে দেখি এটি কবর নয়, মাজার।নাম নাজানা বাবার মাজার। তাও আবার রাস্তার পাশে। রাস্তার পাশে মাজার থাকলে ব্যবসা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশ। তাছাড়া গ্রামের মানু মাজারকে বৈষয়িক সফলতার হাসপাতাল মনে করে। ফলে মাজারে বিশ্রাম নেয়া বাবার ফান্ডে দুই-এক টাকা করে জমা হতে থাকে। যেহেতু বাবা রাস্তার পাশে তার সোস্যাল কেপিটেল ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে আবশ্যিকহারে।

যাক, বাবার কাছে দোয়াপ্রার্থনা করে উদ্দেশ্যের দিকে যাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর চোখে আসে সবুজের মাঠে ইটমিল। সারি সারি কাঁচা ইট রাখা। এইভাবে রাখা হয় পনেরো দিন। তারপর আগুনের চুল্লিতে রাখা হয় প্রায় পনেরো দিন। ইট বলতে যা বোঝানো হয় তাকে আমরা পাই প্রায় দেড় মাস পর। আর দেড় ঘণ্টা পর সূর্যের  স্বাভাবিক আভাটুকু থাকবেনা।সূর্যের আভাহীন শীতলক্ষ্যা দেখার অভিপ্রায় নেই প্রায়। তাই একটু তাড়া।

চরসিন্দুর গ্রামে এসে পৌঁছালাম বিকালের শেষ লগ্নে। সোমেন চন্দ পাঠাগারের সামনে আমরা। অনেক দিন আগ থেকেই এই পাঠাগারের গল্প শুনতাম। গল্প শুনতাম শহিদুল হক সুমন ভাইয়ের। তিনি সুমন স্যার নামে এলাকায় পরিচিত। মুক্তমনা মানুষ। গল্প লিখেন। তার সাংগঠনিক ব্যবহার প্রসংশা করার মতো। সমাজ, মানুষকে নিয়ে তাঁর ভাবনা স্তাবকতার যোগ্যতা রাখে। পাঠাগার থেকে একটি সিগারেট খাওয়ার দূরত্বে আমাদের আরাধ্য শীতলক্ষ্যা। শীতলক্ষ্যার গন্ধ পাচ্ছি। মৃন্ময় গন্ধ। প্রিয়ার ডাকে প্রিয় লেইট অস্তির বিরক্তিকর। তাই আমার শরীর, মন নিয়ে শীতলক্ষ্যার কাছে নিজেকে সমর্পণ করলাম। নদী মানেই মা, নদী মানেই প্রিয়া। তাইতো সব নদীর পাড়ে মানুষের বসতি। এই শীতলক্ষ্যায় জেলের প্রাচুর্য নেই, স্বল্পতার গ্লানিও নেই। জেলেরা শীতলক্ষ্যার মতোই ধারাবাহিক। কুমিল্লার গোমতী নদী যেন এই নদীর ছোট বোন। দুই বোন নিজ কাজে আড়ম্বরহীন আন্তরিক। নদীর এপারে নরসিংদী, ওপারে গাজীপুর। নদীকে কেন্দ্র করে অধিকাংশ প্রাদেশিক বিভক্তি হয়ে থাকে। কিন্তু নদী তো বিভক্তি চায়না। নদী কখনো চায়না পৃথিবীর বুকে আরেকটি পৃথিবী হোক। অথচ সে-ই বিভক্তির অনুঘটক। নদীর দুঃখ হয়তো এখানেই।
রাত নেমে আসে। শীতের রাত। শীতলক্ষ্যার সাথে দেখা করার জন্য অন্ধকারে সাথে দলে দলে নেমে আসে কুয়াশার তাবলিক। শীতলক্ষ্যার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। সেও আমাদের বিদায় দিল, বড়ই নির্লিপ্ত শীতলক্ষ্যার বিদায়ভাষা। অটোরিক্সা করে নীড়ে ফেরার পরিক্রমা ।সবুজের পাহাড় থেকে নেমে আসা বাতাসের সাথে ধাক্কা অনুভূত ,শীতল ধাক্কা। একেকটি ধাক্কা যেন একেকটি জীবনের স্পন্দন, মধুময় প্রশান্তি।কত অব্যক্ত দৃশ্যপ্রিয়া লেপ্টে আছে সেই প্রশান্তির কানায়-কোনায়।। 

সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৪

অজয় নদী

অজয় নদী

ভোরের হাসির সাথে দেখা হয় যদি,
বলিও আমি এক স্বচ্ছ কুয়াশা তোমার স্লোগানে  আমার বাড়ি।
বর্ষায় তোমার যে বীর্য, সেই বীর্য ভেঙে আজকের আমি, আমরা। শীতকালে আমাদের মাঝে তোমার তারূণ্যের আবির রাঙ্গিয়ে উঠে। তুমি তো এমনই সারাবেলা থাকতে চাওনা, সাধকের মতো গোপন হয়ে যাও, বাবার মতো নিজেকে রূপান্তর কর।

আজ বন্যশীত

শরীর কেঁপে উঠার আগে হাড়ে সাইক্লোন উঠে। এই শীতে তোমার চামড়ায় ছোট্ট ছোট্ট মৃত্তিকাদ্বীপ যেন সদ্য যৌবনা কোনো তন্বীর লাল টিপ। পাশে সবুজেরা অলংকারের মতো প্রহরীর চেতনায় জেগে আছে।
বিদায় কখনো আনন্দের হয়না, বিদায় বেদনাকে নন্দন করতে পারে শুধু। আজকের সূর্য, এই শীতের সূর্য যখন বিদায় নেয় তখন সজল বেদনা ছড়িয়ে থাকে তোমার থোরা থোরা প্লাবনে। একটি সোনালি নীল যেন চোখের জলের সমার্থক, বিদায় রাগের সতীর্থ। সবুজ সমেত গ্রাম হয়ে পড়ে ভাষামন্থর স্থিরচিত্র।
রাতের সাথে তোমার মিতালি অন্যরকম তবে ভিন্নরকম নয়। রাতের নদী খুব বেশি যৌথ। রাতের নদী খুব বেশি সামাজিক। সাগরের দিকে ছুটে চলে ধীমান লয়ে।
রায়পুরের রাণী তোমার গভীরে মিশে যায় কোন সময়টাতে
আমি জানি! রাণীর সাথে তোমার একনিষ্ঠ পরকীয়ার কথাও
আমি জানি।
আমি তো এমনই সবকিছু জেনে যাই, আজ না হয় কাল, কাল না হয় পরের দিন।আমাকে যে জানতেই হয়।

কেন জানবো না?

আমার ভেতরে যে সুরের উৎসব তাও তোমার উৎসের কথা বলে। তুমিহীন আমি না হতে পারি দৈহিক, না হতে পারি আত্মিক।

অজয় নদী

আমি তোমার রক্তের উত্তর পুরুষ, চুপচাপ বসে খেলা দেখছি কেবল। আশীর্বাদে ধন্য করো যেন চোখযুগল সুস্থ থাকে -- পৃথিবীর শেষ খেলাটি দেখার জন্য।।

শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪

জীবনের মাঠে

জীবনের মাঠে চিন্তারাম ফুটবল খেলে
যুক্তিরা ভুল ধরে রেফারি সেজে
ভুল, শয়তানের মতো শক্তিশালী
ইশ্বরের গোপন ভাণ্ডারে করে মারামারি
ইশ্বর অসহায়!
patience is divine 

বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪

ছোঁয়া

কতটুকু ছোট হলে আকাশ ছোঁয়া যায়
কী পরিমাণ সুখী হলে দুংখ কেনা যায় 

বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৪

ঝড়ের পাখি

ঝড়ের পাখি শিকার করতে নেই,
 আজকাল ঝড়ের খুব কদর,
প্রলোভনে বসে থাকে শিকারিমন। 

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

খুব বেশী সাজতে নেই

খুব বেশী সাজতে নেই
আওয়াজ তোলে বেতাল মনে কাঁদতে নেই
নিজের চোখে অন্য ছবি আঁকতে নেই
কানকথায় স্বর্গ পানে হাঁটতে নেই
পারো যদি,
যদি ভুলে স্বপ্ন দেখ
আকাশটা ছাদ বানিয়ে পায়ে হাঁটো
পিছলে পড়া অতীত ভুলে হাসতে শিখো
নিজের মনে মহান ক্ষমার শিল্প খোলো 

সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৪

তিতাস

আশুগঞ্জ গোল চত্ত্বর।  বাস দাঁড়ানো। বাসে উঠলাম। সমস্ত বাস ফাকাঁ। ড্রাইবারসহ আমরা তিনজন। বাস চলতে আরম্ভ করল। উজান ভাটি হোটেল অতিক্রম করার আগেই বাস পরিপূর্ণ। বিষয়টি জাদুর মতো মনে হল। আশুগঞ্জের মানুষ আবার জ্বিনে যতটুকু বিশ্বাসী পরকালেও ততটুকু বিশ্বাসী নয়। আমিও আশুগঞ্জের যোগ্য অধিবাসী। তাই আমাকে না জানিয়ে মন সংশয় প্রকাশ করতে শুরু করল যে এরা আবার জ্বিন না তো!
আয়তুল কুরসী " জানা আছে, জ্বিন হলেও আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তাছাড়া সকালে যেহেতু সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করে বাড়ি থেকে বের হয়েছি সেহেতু আল্লার বিশেষ ফেরেশতা তো আমার হেফাজতে নিয়োজিত আছেই।

বাস চলছে। মহিলাদের সিট বাসের সামনে থাকে। মহিলাদের জন্য আলাদা সিট রাখার পক্ষে আমি না। তাই মহিলাদের সিটে বসলাম। শাঁ শাঁ করে বাস চলছে। দৃশ্যগুলো ছোট থেকে বড়, বড় থেকে ছোট হয়ে যাচ্ছে। বিপরীতমুখী বাস যখন আমাদের বাসটি অতিক্রম করে মনে হয় দূর্ঘটনা ঘটে গেল বুঝি।
মাঝে মাঝে মোবাইলে  স্নেক গেইম খেলি। খুব ঝুকিপূর্ন। একটু কন্সেন্ট্রেশন ব্রেক হলে নিশ্চিত পরাজয়। বাসে উঠে দেখতে পেলাম প্রত্যেক ড্রাইবার সরাসরি স্নেক গেইম খেলছে। আমরা তো জাতি হিসাবে কৃপণ নয়,
তবে রাস্তার জায়গা নির্ধারণে এতো কৃপণতা কেন?
যাক, কোনো রকম দূর্ঘটনা ঘটেনি। বাস যথারীতি থামল। আমিও যথাস্থানে এসে পৌঁছালাম। ব্রাক্ষণবাড়ীয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে রিক্সা করে গাঁও গেরাম রেস্তোরাঁয় এসে পৌঁছলাম। রেস্তোরাঁটি অত্যন্ত ছোট পরিসরে কিন্তু গোছানো। তিতাসের পাড় ঘেষে তার অবস্থান। আমি এখানে অবস্থান করেনি। কারণ ততক্ষণে তিতাস আমাকে ডাকতে শুরু করেছে।
তিতাসের এক কোণে স্নান করছে পৃথিবীর মানুষ। তিতাস মানুষদের ময়লামুক্ত করে। শুধু দেহের ময়লা নয়, মনের ময়লাও বটে। আমার মনের জমাটবদ্ধ ময়লাগুলো গলতে আরম্ভ করে। আমিও তিতাসের ভেতর থেকে ভেতরে ঢুকতে থাকি। লজ্জার আবরণে ঢাকা তিতাস। দামের পোশাক পরিধান করে আছে তিতাস। কচি লতার মতো তার শারীরিক বাঁক। তার গর্ভে সুস্বাদু মাছের শিল্পশালা। তিতাসজেলের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তারপরও সীমিত জেলের ঘর-বাড়ি তিতাসের উদাম দেহে।

ইজুলিয়া বিলে ঘর বানিয়েছে জেলে। ফারুক মিয়া সরকারের কাছ থেকে এই দোগাঙ্গি বিলকে ইজারা নিয়েছে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে। শীতকাল যখন পূর্ণ যুবতী তিতাস তখন শতবছরের বৃদ্ধ। ফলে ধান চাষের  মওসুম শুরু হয় এবং এই ইজুলিয়া বিল হয়ে পড়ে গোচড়ানোর চারণভূমি। শীতকাল বলে তিতাসের মাটির গন্ধও পেলুম খুব করে, আপন করে। তিতাসের মাটির গন্ধে স্বাধীন এক মমতা আছে, মমতাময়ী স্নেহভরা আকুতি রয়েছে। সেই মমতা, সেই স্নেহ আমি এড়াতে পারিনি। তাইতো গ্রাম্য মেয়ের সম্মতিসূচক চোখের পাপড়ির মতো ধ্যানস্থ হয়ে রইলাম। ধ্যানে ধ্যানে চলে গেলাম গোকর্ণ ঘাটে।

গুফন ঘাটে অনন্তের মার সাথে দেখা। হাতে তার এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট। তিতাসের জল থেকে কলসী কাঁখে সে আর জল আনেনা। এখন তার বাড়িতে টিউবওয়েল। কিশোরকে সে ফেইসবুকে খুঁজে, ভুল নাম্বারে প্রেমের মেসেজ পাঠায়, মেসেজের উত্তর আসেনা। তবুও তিতাসের জলের দিকে তাকিয়ে আছে অনন্তের মা, আমার ধ্যানস্থ আকাঙক্ষা

ও তিতাসের পানি
জানো তুমি, জান কী তুমি?
কোনো নিয়মে জীবন এতো দামি?

রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪

জীবনের ঘ্রাণ

ভৈরব থেকে আশুগঞ্জ। অটোরিক্সা করে আসা যায়। তার জন্য ভাড়া গুনতে হয় পঁচিশ টাকা। সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু অতিক্রম করে আশুগঞ্জ তিন রাস্তার মোড়ে এসে নামলাম। মিষ্টি খিদা অনুভব করছি। তাই সরাসরি বাড়ি যাওয়া বেটার। তিন রাস্তার মোড় থেকে দুইভাবে বাড়ি যাওয়া যায়,

এক : আলম নগরের রাস্তা দিয়ে
দুই : আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার-এর পথ দিয়ে

ভাই, যাবেন?
কই?
বাজার চারতলা।

 ওডেন।

রিক্সাওয়ালার নাম ইকবাল মিয়া। বাড়ি দৌলত কান্দি। তার দুই ছেলে,  এক মেয়ে। বড় ছেলেটা ক্লাস সেবেনে পড়ে, ছোট মেয়ে প্লে ওয়ানে, মেজ ছেলে ক্লাস ফোরে।

বাপ যদি সন্তান জন্ম দিয়া পরালেহা না করাইতে পারে তইলে হে বাপের নামে কলংক

ইকবাল মিয়ার কথা শুনে বেশ ভালো লাগল। চুপ করে কথা শুনতে থাকি। মাঝে মাঝে ছোট ছোট প্রশ্ন করি। এই ছোট্ট প্রশ্ন তার কথাকে দীর্ঘমেয়াদি করে। আমার সাথে কথা বলে সেও হয়তো আরামবোধ করছে। কারন দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর তাড়া তার প্যাডেলে দেখতে পাচ্ছি না।
সে নয় বছর মালয়েশিয়া ছিল। ছোট দুইটা ভাইকে বিদেশ নিয়ে সে দেশে চলে আসে। আবার চলে যাবে। সন্তান নেয়ার ব্যাপারে সে খুব হিসাবী। তিন বছর পর পর সে সন্তান নিয়েছে।

ভাই দেশ কেমন চলছে?

হুব বালা। পুলিশের বেতন বারছে, অহন হেরা বালা কইরা ডিউটি পালন করে, আগে এমন দেহি নাই।

ইকবাল মিয়ার আপন চাচাতো ভাই মেজর। এখন মিশনে আছে আফ্রিকায়।  আগে তার ভাইটি বিএনপি করত। এখন নাকি আওয়ামীলীগ-এ যোগ দিয়েছে। তবে চার লাইনের রেলপথ তৈরির সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার সরল প্রসংশা করেছে ইকবাল মিয়া।
ইকবাল মিয়া বসে থাকতে রাজি না। সে মনে করে বিদেশে বাঙালীরা যে ডিউটি পালন করে বাংলাদেশে যদি তা করে তবে টাকার অভাব হবে না।

আপনার দৈনিক উপার্জন কত?
আদা বেলায় পাচ শ টেহা।

নিজের রিক্সা। তাই রিক্সাভাড়া গুনতে হয়না। আমি কে বা কী করি সে একবারও জানতে চায়নি। নিজের কথা, দেশের কথা বলতে বলতে লালপুরের কোণায় চলে আসে ।
তাকে চল্লিশ টাকা ভাড়া দিয়ে বিদায় নিলাম। এখান থেকে বাবার বাড়ি পাঁচ মিনিটের পথ। বর্ষাকালে এখান থেকেই খেয়ানৌকায়
উঠতে হয়। শীতকাল বলে শুধু বাঁশের সাঁকো পার  হলেই বাজার চারতলা। শীতকালের এই মরা নদীটির পূর্বপাড় ঘিরে আড়াইসিধা গ্রাম, পশ্চিম পাড় ধরে চরচারতলা ইউনিয়ন তথা আশুগঞ্জ বন্দরের অবস্থান। এক সময় চরচারতলাও আড়াইসিধা ইউনিয়নের অন্তুর্ভুক্ত ছিল। গ্রাম্য স্বার্থকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের একটি ঝগড়া হয়, তাতে চরচারতলার একজন মানুষ মারা যায়, আড়াইসিধারও একজন মানুষ মারা যায়। তখন থেকে তারা আলাদা ইউনিয়ন।

বাঁশের সাঁকোর ভাড়া দুই টাকা। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন ভাড়া ছিল পঞ্চাশ পয়সা। কখনো পয়সা দিতাম না। কোনোক্রমে সাঁকো থেকে নেমে এক দৌড়, আমাকে আর পায় কোথায়। সপ্তম শ্রেণীতে যখন পড়ি তখন থেকে সাঁকো ভাড়া দেয়ার বিষয়ে সচেতন হয়। কিন্তু আমি যখন দিতে শিখলাম তারা আর নিতে চায়না।

আজকে ভাড়া নেয়ার দায়িত্বে আছে সুজন। প্রতিবন্ধী। ছোট কালে পোলিও হয়েছিল। ফলে বাম পাটি শক্তিহীন হয়ে পড়ে। এখনো পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। সে এখন  নবম শ্রেণীর ছাত্র।  আমাকে দেখা মাত্র ভরাট কণ্ঠে `কাকা ডাক'। তারপর একগাদা অভিযোগ -- আমি নাকি সুজনের ছবিতে কোনো লাইক দেয়না অথচ সে আমার ছবি দেখামাত্র লাইক দেয়, তার কবিতা কেন আমার পত্রিকায় ছাপায়নি ....এমন অনেক অভিযোগ।
সুজনকে ভাড়া দিতে চাইলাম। সে আমার কাছ থেকে ভাড়া নিবে না তো নিবে না।
সাঁকোর পাশেই কনি জাল দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা চলছে। মাছ আসে না।

কীভাবে আসবে?
নদীতে তো মাছ নেই।

তারপরও চেষ্টা থেমে থাকে না।
সুজনকে চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটছি। রাস্তার কুমারী বাঁক, বাঁকে বাঁকে জীবনের ঘ্রাণ, আমার লেপ্টে থাকা শৈশব।

আড্ডা

কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম রুব্বান আর রাবেয়া চাচীর সাথে। তারা একই এলাকার(মানিকদিয়া) মেয়ে। দুজনের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্ব। ফুল বিক্রি করে। ফুল বিক্রি উপলক্ষ, লক্ষ্য অর্থ উপার্জন করা।

অহনকার মাইয়্যা-ছিরিরা ফুল কিনত চা না

তারপরও ছেলে-মেয়েদের যুগল বসে থাকা  দেখলেই তারা ফুল বিক্রি করার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে। তাদের  ব্যাকুলতা দেখে কেউ কেউ আধুনিকভাবে অর্থ দিয়ে দেয় কিন্তু ফুল কিনে না। একটা সময়ে ফুল ছিল প্রেমিক যুগলের দ্বিতীয় প্রেম। হয়তো এই কারনেই আপেল মাহমুদ লিখেছিলেন "মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি "। এখন আর প্রেম শব্দটি খুবভাবে শুনতে পাইনা, শুনতে পাই relationship, girl friend, boy friend যাদের স্লোগান If any relationship does not serve you let him/her go alone।

চাচীরাও ফুলের ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাছাড়া ভিক্ষুকদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে অর্থাৎ ভিক্ষুকরাও বেকার সমস্যার করাল আগ্রাসনে পড়ার জোরালো সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

রুব্বান চাচী স্মার্টলি সিগারেট টানে। তার নাসিকা ছিদ্র দিয়ে প্রধোঁয়া নেমে আসে পৃথিবীতে। তার স্বামী `হাফিজ' তাকে সিগারেট খাওয়া শেখায়। তিনি ছিলেন হাফিজের তৃতীয় বউ। তাকে বিয়ে করার পরও হাফিজ আরো দুটি বিয়ে করে। পাকিস্তানি যুদ্ধের সময় চাচী চলে আসেন তার ভাইয়ের কাছে। ভাইয়ের সাথে এখনো আছেন। ভাইটাই তার সুখের- দুংখের ভাগিদার। ভাইটা খুব অসুস্থ।

রাবেয়া চাচীর স্বামী থেকেও নেই। রাবেয়া চাচীর স্বামী যখন দ্বিতীয় বিয়ে করে তখন সে স্বামীত্যাগ করেন। একমাত্র কন্যাকে সাথে নিয়ে নিজগ্রামের অভিমুখে চোখমুখ ফেরায়। কন্যাকে বড় করে, এক হোটেল মালিকের সাথে কন্যাকে বিয়ে দেন, কন্যার সন্তান হয়, তাদেরও বিয়ে হয়ে গেছে প্রায়।

তাদের অর্থ উপার্জনের এলাকা ঢাকা ইউনিভার্সিটি। তাদের শিকার ছাত্রছাত্রীরা। করুনার পণ্যে তারা অর্থ উপার্জন করেন। অনেক ধর্মপ্রাণা টাকা দেয় আর দোয়া প্রার্থনা করে যেন একটি সুন্দর পোলা  পাই, আবার অনেক ধর্মপ্রাণ টাকা দেয় আর দোয়ার আর্জি করে যেন একটি সুন্দর মাইয়্যা পায়। এই বিষয়টি চাচীদেরকে কুড়ি বছর আগে নিয়ে যায়, চাচীরা তাদের স্বামীর কথা মনে করে,তাদের স্বামীরা ছিল বিয়েবিলাসী যাদের কারনে আজ তারা ভিক্ষুক।

শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৪

মানুষ হিসাবে

মানুষ হিসাবে আমার ভুল হতে পারে,
ভুল চর্চা করতে পারিনা যেহেতু আমি মানুষ।

Mistake is the incident,
I can't practise mistakes as a man. 

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৪

মিউ মিউ

গভীর রাতে বিড়ালের মিউ মিউ গভীর এক অস্থিরতা। গভীর সান্ত্বনা তখন শারীরিক ব্যাপার। অনুঙ্গ ভুজঙ্গ বিষ সর্বাঙ্গে ছড়ায়। শারীরিক আদালতে মানসিক খাব। জীবনের বাগানে যৌবনের রাত।
জীবনের নৌকা যৌবনে বায়,
যৌবনের ক্ষুধা জীবনের তাই।

বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪

পুতুলের বিয়ে

প্রথমবার একটি পুতুল শাড়ি পড়েছিল।
প্রথমবার একটি পুতুলের বিয়ে হয়েছিল।
বিয়ে হওয়ার অনেক দিন পরে পুতুলটি নারী হলো।
নারীদের আকাশে এত পাখি উড়ে কেন?
পাখিদের ডানায় উড়ে কামের বাতাস। মদন দেবতা কামুক আকারে সাকার।লোভাতুর কামনায় ভোগের আবাস।
ভোগে সুখ, ত্যাগেও সুখ, রমরমা সুখের বাজার।  

সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৪

দেখা হয় যদি

এক বছর চলে গেল
এমনিতেই চলে যাবে এক যুগ
পৃথিবীর সূর্য হবে আজকের কুয়াশা
কুয়াশা এমনই তরল, বহুজাগতিক স্মার্ট
মিশে যেতে পারে মৃত্তিকার সংসারে
হতে পারে আধার কসমোলজির আঁধারে
চোখটাই কেবল ব্যর্থ  আগুনকে গুণ ভেবে
সাপের গর্তে নিজেকে রেখে
আজ থেকে বহুদিন পর
আগুন আর সাপের সাথে দেখা হয় যদি
তখন হয়তো ভাববো
হয়তো ভাবনা
সাপের আর আগুনেরও ছিল আন্তরিক নদী

শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৪

সাপ

শীতকালে সাপ গর্তে চলে যায়, সচারচর সামাজিক হয়না
শীতকালে মানুষের সাপ জেগে উঠে, পারত অসামাজিক হয়না
Snake used to live in hole in winter and for then it is unsocial
The snake of man is alive in intention in winter and try to keep it social

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৪

রাগ

রাগের আয়ু বেশী দিন হলে জীবনের আয়ু কমে যায়, অভিমানের আয়ু কৌমার্য হলে সম্পর্কের বন্ধন বৃদ্ধি পায়।

বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৪

কাব্যগুলো

ঠোঁটের ভাঁজে,চুলের  নীচে
আমার সজল বাসা
চোখের নীচে জলপাই রঙ
স্বপহীন এক আশা
লবন সমেত হাসি তোমার
গাইনদা চালের ভ্রু
বুকের দেশে সৌম্য নদী
গানিতিক ঢেউ স্লো
ভাষার গতি নিত্য নতুন
ফাগুন মাতাল দোল
তুমি আমার বন্য পাখি
গুনের কাব্যগুন

রাজনগরের বেটি ল

কোপাই নদী।
খোয়াই নদী। তোমার জলে চমৎকার নুড়ি!
বাঁশপাতার সজীবতা তোমার জলে,
তোমার জল কত শান্ত, সিগ্ধ, সমাহিত, প্রাগৈতিহাসিক, প্রাজ্ঞ!তোমার জল অভিমানী সুন্দর , ঝড়প্রবণ মনোহর।
তোমার জলে স্নান করবো বলে জন্মের পর গতরে জল লেপন করিনি। তোমার জলে তৃষ্ণা মেটাবো বলে মানুষের পৃথিবী বদল করেছি, হয়েছি চাতকপৃথিবীর বাসিন্দা।

বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়,

বিশ্বাস রাখি ভালো আছো,

তোমার নির্মিত দেয়ালচিত্রে কপালকুন্ডলার দেখা পেলুম। লালমাটির কপালকুন্ডলা। কোনো কথা বলে না, কথা না-বলায় যেন অনেক কথা, কথা না-বলায় যেন গীতব্যথা।

আমি কী তবে পথিক ,পথহারা পিথাগোরাস?

 জন্মবছর থেকে এখনো হাঁটছি তোমার কপালকুন্ডলাকে চোখে রেখে, মনে ধারণ করে। আমি তো হতে পারতাম সফরসঙ্গীর পদাঙ্ক অনুসরণে সচারচর পুরুষ। সবকিছু ছেড়ে বনলতার কাছে করেছি নিজেকে সমর্পণ, উদ্যানলতার আশা করেনিতো কোনোকালে।

বলো তো বিনোদবিহারী,

কপালকুন্ডলা কেন এতো লাস্যময়ী, হাসির আড়ালে কেন তার মেঘের মতো দূরত্বমৈথুন?
আমি তো সেই সকাল থেকে বসে আছি সাঁওতালী মনে, মনের বিছানা পেতে।

শনিবারের হাঁট,

তোমার বাড়িতে যাবার নেমন্তন্ন আসে ইনবক্সের খামে। তোমার গাছের ঢালে ঢালে দুত্রুয়েল বাজনা, তোমাতে  মানুষের সরল আনাগোনা, সরল টানে কিনে কেউ কানামাছি-বৌছি।  তোমার সরব আঙ্গিনায় আসব, আসবে সে।
কিন্তু সে তো চলে গেছে পৌষমেলার গভীরে, চলে গেছে দেশীয় পিঠাঘরে, বন্যনিয়ম যেখানে শরম নিয়ে চলে। নন্দলাল বসুর কলাভবন দেখেছি তো বহুবার, তাইতো প্রশ্ন জাগেনি নারীর যোনিএলাকা ঘোড়ার দখলে কেন।
বন্য হতে যদি এতো ভয় কেন তবে দয়িতার গীতাপাঠ? নটিমূর্তি দাঁড়িয়ে আছে, বসে থাকা তার স্বভাবের জেলখানা, আমরা তো রেগে যায়, রাগারাগির ব্যাকরণ জানিনা, মানিনা।
তবু রাখাল হব,বিশ্বাস রাখি তুইও রাখালী,

রাজনগরের  বেটি ল
বলনা স্বাদ না মিটি ল

উৎসব উৎসের কথা বলে। রবীন্দ্রনাথ উপলব্ধি করেছিলেন আমাদের চিরচেনা উৎসবগুলো খুব বেশী সাম্প্রদায়িক চেতনায় আবৃত। তাই তিনি মোড়কচেতন থেকে বেরিয়ে এসে বিভিন্ন ঋতুউৎসব চালু করেন। বসন্ত উৎসব তারই মধ্যে একটি। উনিশ শত কুড়ি সালে বসন্ত উৎসবের একটি প্রাথমিক সূচনা আমরা দেখতে পাই। আজ কিন্তু বসন্ত উৎসব বেশ বড় পরিসরে আমাদের সামনে ধরা দেয়। বসন্ত যখন আসতে শুরু করে ( আজি জাগ্রত বসন্ত দ্বারে) তখন আম্রকুঞ্জ, শালবীথি, বকুলবীথি আনন্দ ধ্বনির স্ফুলিঙ্গ উড়াতে থাকে, আশ্রমবাসীর জীবনে, মনন চর্চায় আসে নব সাজের প্লাবন।
আজ শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব। আজ তোমার চোখে- মুখে বাসন্তী সাজ। সজ্জিত তোমাকে চঞ্চল হরিণীর মতো দেখায়, তাইতো বুভুক্ষ বাঘের দৃষ্টি তোমার শিল্পরীতির প্রকৃষ্ট এলাকায়। আমি সাদা পাঞ্জাবি পড়ে তোমার সঙ্গী হওয়ার কথা, হওয়ার কথা অসংখ্য লোকের স্রোতে ফেনায়িত ঢেউ। কিন্তু হলো কোথায়, কত ``হওয়া"  হয়ে উঠে না,
স্বাদ আর সাধ্যের মাঝখানে ঝুলে থাকে মধ্যবিত্ত জীবন!
সারাদিন তুমি আনন্দের জলে স্নান করলে। রাতে ফোন করে আনন্দের আংশিক পর্ব সম্প্রচার করলে ইথারের কাছে। অথচ ইথার তোমার অদৃশ্য নাটকও আমার কাছে রোজ টিলিকাস্ট করে পূর্ণ অবয়বে। আমি তো এমনই, খবরের পেছনের খবরও রাখি।
অনেক কিছু জেনেও শিশু হতে খুব আয়েশবোধ করি।
কেন বল তো?
শিশুরা উত্তর দিতে জানে, উত্তর তৈরি করতে জানেনা।
সূর্যের আলোতে ছাতিম ছায়া যখন অঙ্গার হয়ে জ্বলে তখন আমি শিশু, আবার রাতের আঁধারে ছাতিম শরীরে যখন টুইংকেল টুইংকেল জোনাক জ্বলে তখনো ভেতরের শিশুটিকে জাগ্রত রাখি। শিশুর পোশাকে আমি জীবনের গান গাই,আমার জীবনকে ফুটিয়ে তুলি তোমার পথচলায়।
 পথচলায় তো আমাদের ঠিকানা, আমাদের শান্তির নীড়, প্রশান্তির আস্তানা।

মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৪

মেঘের সাথে

পাথরেরও মন আছে শুনেছিলাম
মানুষের মন নেই দেখেছি
আমি তো হেঁটেছি
হেঁটে হেঁটে থেমেছি
থেমে থেমে শিখেছি
মানুষ এক উদ্ভুত অবিশ্বাস
জাগতিক গন্ধে আকুল ব্যকুল
হয়তো মানবিক, হয়ে যেতে পারে আধ্যাত্মিক সন্ত্রাস
আমাকে আর মানুষ বলনা
জলনুড়ি হক আমার নাম
মেঘের সাথে শিশুসুলভ মৌনতাই আমার কাম

সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৪

আপনি

বাতাসে ইথারে ঝগড়ার ধুম
বাতাসে সত্য সোলেমানের ঘুম
বাতাস ভাসে লাল গোলাপের ঘর
আজকে সুখে কালকে ঝড়
তবুও আপন হয়না পর

রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৪

বিস্তর

বিসর্জনের পর
বাত্তি জ্বলে আর নিভে
স্মৃতি লেগে থাকে বিসর্জনের পাতায়
স্মৃতির একটি মুহুর্ত অযুত নিযুক্ত হাজার বছর
ধ্যানে, জ্ঞানে, মনে, প্রাণে
স্মৃতিঝড় হৃদয়কে কামড়ে ধরে
তুলকালাম কাণ্ড পৌরাণিক তুফানে 

শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৪

পাখিদের সাথে

কতদিন ফুলদের সাথে কথা হইনা
বহুদিন পাখিদের সাথে গান গাইনা
সরিষা ফুলের হলুদ শরীর
লেবুপাতার কাঁচা গন্ধ
কুয়াশার আকুম-বাকুম ডাক
মনের পাতায় হাঁটেনা
মনের কাছে বাড়ে পৃথিবীর দেনা
যাপিত জীবন প্রস্তুতির দামে কেনা

শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৪

সমাজ আর ব্যক্তি

ব্যক্তি প্রথমত ব্যক্তি। তারপর ব্যক্তি হয়ে উঠে সমাজ। অসংখ্য ব্যক্তির একক জায়গা সমাজ। একক ব্যক্তি কখনো সমাজ হয়ে উঠতে পারেনা তবে সামাজিক হয়ে উঠার সম্ভাবনা সমাজ তৈরি করে রাখে।
আর এই কারনে ব্যক্তির স্বকীয়তা যতবেশী বিকাশমান, ব্যক্তির একা অর্থাৎ অসামাজিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ততবেশী।

তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে, সমাজ কী ব্যক্তির আপোষী মনোভাবের কাট পেস্ট?

অবশ্যই।

সমাজ কখনো একটি আস্ত ব্যক্তিকে গ্রহণ করতে পারেনা। ব্যক্তিগুণের কমন সংখ্যার ফলাফল আমাদের চিরচেনা, সদা প্রচলিত সমাজ।
সমাজের গ্রহণ ক্ষমতা সসীম। আর ব্যক্তির ধারণ এবং প্রদান ক্ষমতা অসীম। তাইতো কার্যত কারনে সমাজকে সুযোগ ব্যয়ের ধারণা মেনে চলতে হয়। আর ব্যক্তিকে মেনে চলতে হয় কাঁটা-বাছা নীতি।

চোখে দেখার মতো ঘটনা হলো, সমাজ আর ব্যক্তির দ্বন্দ্ব ব্যক্তিরই তৈরি। তাই ব্যক্তি বিকশিত হয় আগে, সমাজ ব্যক্তির বিকাশমান রূপকে শিশুর মতো অনুকরণ করে।

তাহলে সমাজ কেন?

সমাজ যৌথ। যৌথ হওয়ার কারণে শক্তিশালী। শক্তিশালী লিটলবয় দুর্বল হিরোসিমাকে ধবংস করবে স্বাভাবিক। ধবংসের গর্ভে থাকে সৃষ্টির প্রমত্তা উচ্ছ্বাস। ডাল আর চালের সমন্বয় সাধনের আয়োজনের কথাও ভুলার নয়। তাছাড়া ব্যক্তির কাছে তার পৃথিবীই শেষ কথা নয়, প্রাণিপৃথিবী বলে বিশাল এক জগৎ(আংশিক জানায়, অধিকাংশ অজানায়) থেকে যায়, তখনই ব্যক্তির ভাবী সঙ্কটাপন্ন মুহুর্তের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে বিধায়, বীর্যবান ব্যক্তি সমাজে এসে অসহায় হয়ে পড়ে, অসহায় হয়েও শেষ পর্যন্ত সমাজের কথা বলে।

বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৪

কুয়াশায় রাত হয় ভোর

সুখ বিক্রি হয়ে গেছে অতীত আর ভবিষ্যতের কাছে
প্রশান্তিকে নিয়ে সংসার পেতেছে বর্তমান
একখানা ইদিপাস আর আধখানা কপিলার সংসার
এরই নাম জীবন
নাকি জীবনের স্লোগান
প্রতিদিন নেপালরোডে রেখে আসি ত্রিশ মিনিটের জীবন
একটু জীবন এখানে, আর একটু জীবন সেখানে
এইভাবে কত জায়গায় জীবন রাখি আমি
শুধু রাখা হলনা আমাকে,
খুঁজে পেলামনা আমাকে রাখার মতো জীবন
কুয়াশায় রাত হয় ভোর, কাটে না জীবনের ঘোর

বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

হেদা --হেমাদে

ওতুটুক = এতটুকু

তাম্বু লাল= সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে চূড়ান্ত লালিমা [তাম্বুল মানে পান, তাম্বু লাল মানে পান খাওয়ার পর মুখে যে লাল আভা ছড়ায় তার সাথে সূর্যের অস্ত যাওয়ার চূড়ান্ত মুহুর্তের তুলনা~ হাইনজা বদা তাম্বু লাল]।

বদা = নিতম্বে থাপ্পড় দেয়া, পরাজয় সূচক ধ্বনি [দেশীয় খেলায় পরাজিত খেলোয়াড়দের নিতম্বে জয়ী খেলোয়াড়রা নিদিষ্ট সংখ্যাক থাপ্পড় দিত]

হেমাদে =থেমে যাওয়ার নির্দেশ

গেছেগা = চলে গেছে [ পুরাঘটিত বর্তমান + সাধারণ অতীত]

লইছে = নিয়েছে, নেয়া, থাকা [বালেল লাইগগা লইছে গা~ ক্ষুদ্র কিছুর জন্য অযথা আকুতি]

বুগুল দিয়ে যাওয়া = পাশ দিয়ে যাওয়া

লেদা = পশু-পাখির বিষ্ঠা

ওলাহাইননা = অভিবাসী, শেকড় ছাড়া

ওলা বিলাই = হিংস্র পুরুষ বিড়াল

টুলা = বন বেড়াল

হিয়াল = শেয়াল

বাইসাব = বড় ভাই

পাজুন /বেনদা= লাঠি, পশু-পাখি চড়ানোর লাঠি

হেদা = ওম দেওয়া, তাড়ানো

চুহুইল = ধান থেকে প্রাপ্ত তুষ

আইললা= দেশীয় কাঁচামালে ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা, মশা তাড়ানো দেশীয় পদ্ধতি।

ফিতদর = ডাইনিং রুম, খাবার রাখা ও খাওয়ার কক্ষ, মহিলাদের পায়চারী কক্ষ।

হুমুক = সামনে

হুমুক গর = সামনের কক্ষ, গেস্ট রুম, বসার কক্ষ, পুরুষের কক্ষ।

মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৪

পর্ব

পরীক্ষা যদি আমার প্রেমিকা হত, আমি হতাম পৃথিবীর একমাত্র ভালো ছাত্র

If exam were my girl friend, I would be a sole so best student of the world 

সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৪

পথিক

ফুল। ললিত ফুল। ফুলের সাথে ভ্রমরের শারীরিক সম্পর্ক। তাদের মাঝে মানসিক সম্পর্ক নেই, তবে মানসিক যোগাযোগ আছে।
ফুল। কাঁচা সুন্দর ফুল, পাকা সুন্দর ফুল। ফুলের সাথে পথিকের মানসিক সম্পর্ক। তাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক নেই, তবে শারীরিক স্পন্দন আছে।

রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৪

গাদি

গাদি/গাদ্দি = নিতম্ব

গাইল = সিমেন্ট বা লোহা দিয়ে তৈরি কূপ আকৃতির পাত্রবিশেষ, গালি।

পইললা = প্রথম

গাম= আঁঠালো কিছু, শরীরের লবণাক্ত পানি।

হিং মাছ = শিং মাছ ["স "  বর্ণ  "হ" বর্ণ হিসাবে উচ্চারিত]।

হিংগিল = শ্লেষ্মা

হেরা = তারা [ "ত" বর্ণ "স" বর্ণ হিসাবে উচ্চারিত]।

লুলা = পঙ্গু

লালু = লাল রঙের

ইডা = এইটা, এটি

কাইজ্জা = ঝগড়া

টেলহা = ঠাণ্ডা, নরম প্রকৃতির, ভদ্র [টেলহা ভাত, টেলহা মানুষ]।

কানি = অন্ধ মহিলা, ত্রিশ শতাংশ

বাগি = বর্গা

বাইগগা যাওয়া = লুকিয়ে যাওয়া [ছেলে-মেয়ে গোপনে বিয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে পলায়ন ]।

পিআইজ্জা = পেঁয়াজের মতো গোল জাতীয় কিছু যা সাধারণত পায়ে দৃশ্যমান হয়ে থাকে,বুড়িয়া, গিলটি।

বান্দর = বানর

বেডাহুননী = পুরুষের মতো যে মেয়ে (Nancy)

শনিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৪

কেন এমন হল?

ভালোই ছিলাম। বিকেলটা আমারই ছিল। সকালটাও ছিল ফুরফুরে, দুপুর কেটে যেতো বন্ধুদের সাথে হাতাহাতি, চোখাচোখি, খুনসুটির খেলায়। রাতে মায়ের ভাষার ক্রোড়ে ঘুমিয়ে যেতাম, স্বপ্নের দেশে হতাম স্বপ্নের মতো রঙিন, গেলাসে গেলাসে করতাম আনন্দ পান।

কেন এমন হল?

জল হয়ে সাগরে ঢেউ তুলে জলাতিক আনন্দে, মেঘ হয়ে চুপ থেকে মেঘাতিক স্নিগ্ধতায়, বৃষ্টি হয়ে রুপালি সিঁড়ির মতো পৃথিবীতে এসে দলাতিক নন্দনে চলছিল আমার ট্রেন -- ঝকঝক, ঝকঝক।

কেন আজ আমি তেমন নই ?

শৈলবালা রাজকন্যা। এক প্রজার সাথে প্রেম করে। তাদের প্রেম মেনে নিতে চায়নি রাজপরিবার। শৈলবালা প্রেমিকের হাত ধরে রাজ্য ত্যাগ করে। দুজন অনেক দূরে চলে যাবে, চোখের সীমানা ছাড়িয়ে। কুমার নদীর কাছে ভাইদের হাতে ধরা পড়ে প্রেমিকযুগল। শৈলবালাকে কেটে টুকরো টুকরো করে ভাইয়েরা। কুমার নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় শৈলবালার হাত, পা, মাথা, মস্তক।  কুমার নদী আজো বয়ে চলে সময়ের ধারায়। আজো কুমার নদী শৈলবালার অনুরাগে ছন্দময়।
কিন্তু কুমার নদী আমার বুকের ভেতর এতো ঢেউ তুলে কেন?

আমি তো শৈলবালা নই।

আমি তো ছোট্ট চাঁদের বুড়ি। পুতুলের মতো ঘুরাঘুরি করি। বিজ্ঞ জনের মতো হতে কত চেষ্টা করি অথচ পুতুলের ঘর-সংসারই আমার বাড়ি।
আমার ভেতরে আমি কত একা, আমার কেউ নেই,ব্যস্ত শহরের সবাই ব্যস্ত, আমার মতো কেউ নেই।

মা, তোমা থেকে আমি কততত দূরে, তুমি শুধু আমার কান্না শুন, আমার চোখে আর চুমু দিতে পারনা, বড় আপা, আমরা আর ভূত দেখে ভয় পাইনা, গল্পের সাথে কাটে না আমাদের  সারারাত।

আমি কত ভালো আছি মা,
কত ভালো আছি আপা!

বাবা মাঝেমধ্যে আমার খোঁয়ারে আসে। আমাকে ধমকের চকলেট দিয়ে যায়। আমি যেন শিশুর মতো আচরণ না করি। আমি নাকি অনেক বড় হয়ে গেছি, বিবাহিত নারীদের মতো বড় ।প্রায় আমার শহুরে কাকুকে পাঠায় খোঁয়ারে আছি কিনা যাচাই করতে।

বাবা, ও বাবা! আমি যে সকলের মাঝে থেকেও বড় একা, আমি যে বন্দিনী, আমার প্রতিটি অঙ্গ যে একাকীত্বের বনদস্যু, তুমি কী দেখতে পাও, শুনতে পাও?
বাবা,  ও  আমার পিয়ারা বাবা, বলো না।

ঐ যে, ঐ লোকটা আমাকে বলেছিল,  "ভালোবাসে "
আমি বিশ্বাস করিনি, আমার কী যে হাসি পেয়েছিল -- হা হা হা
লোকটি বলেছিল, তুমি হয়তো আমার কাছ থেকে এমন প্রস্তাব প্রত্যাশা করনি।
আমিও বলেছিলাম, প্রত্যাশা যেহেতু করেনি, উত্তর নঞর্থকই হবে।
এই নিয়ে আমার আন্টি কত হেসেছিল, হেসেছিল মামা। আমিও হেসেছিলাম বেশ।
হাসতে হাসতে কখন যে ফাঁসির মালা গলে পড়েছি, টেরই পাইনি। টের পেয়েছি বহুদিন পর যখন লোকটির, প্রতারকটির গার্লফ্রেন্ড আমাকে ফোন করেছিল।
সেদিন কী যে কেঁদেছিলাম আমি। বিছানায় শুয়ে আছি, কখন রাত আসে, কখন দিন আসে, এমনকি কোনো মুহুর্ত ছিল কিনা আমি কিচ্ছু বলতে পারিনা।
অনেক দিন পর আমি চোখ মেলে তাকালাম, নিজের দিকে তাকালাম। চেয়ে দেখি,
ও মা,  এ কী?
আমার কলিজাটা পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। আগুন জ্বলছে।  ছাইচাপা আগুন এখনো দাউদাউ করে জ্বলে।
বাবা, আমার প্রানের বাবা,
আমি পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছি, তোমার বেহেশত থেকে আমাকে শান্তি এনে দাও,
শান্তি দাও, শান্তি!

শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৪

হেবিট

মানুষ অভ্যাস তৈরি করে, অভ্যাসই মানুষকে চালিত করে। অনেকটা বেলুন আর তার ভেতরকার গ্যাসের  মতো।

First of all man is the Creator of habit, then the habit is the driver of man, as the so of balloon and its inner gas. 

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৪

যে পথ আমার ঠিকানা

তুমি ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই, নেই কোনো মত
আমার সমস্ত পথ এঁকেবেঁকে ছুটে চলে তোমার পথের ঠিকানায়
তার কিংবা তাহাদের মতে কিংবা পথে নয়
তোমার মত নিয়ে যারা খেলা করে, খেলে যায় সাপুরাম সাপুড়ে
তারা জানে না প্রিয় কিংবা প্রিয়তা
মতে,পথে থাকে না
প্রেম,
সে তো ধনাত্মক চার্জ
গভীরে যেতে জানে, গভীরতা খোঁজেনা
প্রেম!
মত তৈরির কারখানা
প্রেম?
একপ্রাণে পথ চলার শিল্পরীতি, অফুরন্ত প্রাণের শিল্পশালা

প্রিয় সুহৃদ,

মন্দির কিংবা মসজিদ ভাঙার অসীম সাহস, অন্তিম ইচ্ছা আপনার আছে কিনা আমার জানা নেই। পৃথিবীকে কতবার ভেঙেছেন তাও আমার জানা নেই।

শুধু জেনেছি আপনি ভাঙতে পারেন।

কী ভেঙ্গেছেন আপনি জানেন?

রাতের ধ্যানমগ্ন সময়ে প্রিয়-প্রিয়ার হৃদয়ঙ্গম মুহুর্তকে টুকরো টুকরো করে দিয়েছেন।

প্রিয়-প্রিয়া যখন খেলা করে স্বং ব্রক্ষ্মা সেই খেলার সজীব দর্শক, কেবলই হাসে আর প্রেরণা জোগায়। তিনি জানেন এই খেলায় সুর থাকে না, সুর তৈরি হয়, প্রতিটি সুর সৃষ্টির প্রমত্তায় উন্মাদ। তাঁর রহস্যের পল্লব এখানেই কেবল ভোরের সূর্যের মতো সত্যের স্ফুলিঙ্গ উড়ায়। অসুর,যাকে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রেমের পাঠশালায়, যাকে পাঠানো হয়েছে পৃথিবীতে ইশ্বরের বিপরীতে , সেও এক জায়গা এসে স্থির হয়ে যায়।

জানেন সে জায়গাটি কোথায়?

প্রেমিক-প্রেমিকার হৃদয়!

সেই হৃদয় ভাঙার অভিযানে আপনারা অসুরের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছেন।

এ্যাডাম-ইভ পৃথিবীতে নেমে আসে, নামানো হয়। ভাগ্যের পরামর্শে দুজন দুপথে দুভাবে।  ইভহীন এ্যাডাম ছটফট করে, ডানাভাঙা পাখির মতো ঘুরে বেড়ায়  শ্রীলঙ্কার একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। এ্যাডামের চোখের জলে নহর তৈরি হয় যা কিনা তৃষ্ণার্ত পাখির সুপেয় পানি। তাদের বুকের ভেতরের নোনা ব্যথা চোখের কথা হয়ে ঝরে। তাদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। প্রিয়হারা কান্নার সুর ইশ্বরের অস্তিত্বে আঘাত আনে। ইশ্বর তখন নড়েচড়ে বসেন। তখন থেকে ইশ্বর কসম করেছে প্রেমের সাথে থাকবেন ,তখন থেকে তিনি প্রেমের মাঝে  অপ্রেমের রিংটোন বাজাননা।

আপনারা আজ ইশ্বরের বিপরীতে!

আগুন নিয়ে খেলা করতে পারেন। আগুন আপনার পৃথিবীর সদস্য। প্রেম নিয়ে খেলা করতে যাবেন না, প্রেম আপনার পৃথিবীতে নেই।

প্রেমনদীর মাঝি হয়েছি আকাশ ভরা কাঁটা
প্রেমের পাশে বিপ্লব রেখে হাঁটছি আমি একা
আকাশ তুমি সঙ্গে থেকো, বাতাস দিও প্রাণ
অন্ধের চোখে জীবন দেব, গাইব প্রেমের গান

প্রিয়তার প্রিয়ারা,

প্রগতিশীলতার ঢং আপনাদের অঙ্গে, প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাব আপনাদের ঠোঁটে, কানে, ললিত দৃষ্টির প্রস্তুত এলাকায়। আপনাদের ভাষার মাংসে প্রাগৈতিহাসিক গন্ধ। তাইতো কবিকে নিয়ে অকহতব্য কথন।

কবি নিয়ে কথা বলা এতো সহজ?

শব্দের সাথে শব্দের মিল দিলেই কবিতা হয়না, কবিতা মানুষের শেকড় থেকে শিখরের কথা বলে, প্রচলিত দাসকে শেখায় মর্যাদার গূঢ় অর্থ।
কবির প্রেম শুরু হয়, শেষ হয়না। বন্য আবেশ ঝুলে থাকে শরীরের দেয়ালে। একধরনের জলপাই রঙের অন্ধকার তখনে-সখনে প্রশান্তির স্লোগানে মুখরিত করে তুলে মৃত্তিকার আমপারাঃ।
তাই ভবের চোখে না, ভাবের মনে ভেবে দেখুন-- আপনি কতটুকু মানুষ, আর কতটুকু মানুষ হলে মানুষ চেনা যায়।
সমাজের ত্যজ হলে মানুষ হয় কী অমৃতের সন্তান?
নিজের চেহারার এক আয়াতও মুখস্থ নেই অথচ কী সহজে প্রাক্কলিক বক্তব্যে  তাহার আদ্যোপান্ত মুখস্থ বলেন।
মুখস্থ প্রিয়দের জানায় মুখস্থ সেলাম, নমস্কার
জয় হোক
আপনাদের মুখস্থ আবিষ্কার

বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪

উদ্ভুত

মাটির পেটে জন্ম নিচ্ছে মানুষ
মানুষ চিনেনা ঘাস
ঘাসের সাথে মানুষের উদ্ভুত অবিশ্বাস 

মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৪

সাফিয়ার কাম

শীত পড়ছে। কাম নাই। তবু সাফিয়া প্রতি সন্ধ্যায় ঘর থেকে বের হয় কামের নাম করে। তার সন্তান ও প্রতিবেশীরা জানে সাফিয়া বারডেম হাসপাতালে কাজ করে।
মূলত সাফিয়া হাসপাতালে কোনো কাজ করেনা।
সাফিয়ার কামের জায়গা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মাঠ, মাঠের নির্জন প্রান্তর। সাফিয়ার গতরে শীতল কুয়াশা, কণ্ঠ বসে আসতে চায়। তবু সাফিয়া হাক তোলে,

লাগাইবা?
আহো, আহো

সাফিয়ার "আহো" শব্দটি ঘন কুয়াশায় ধাক্কা খেয়ে তারই দিকে ফিরে আসে। গভীর রাতে সাফিয়া বাড়ি ফিরে যায়, দরজায় কড়া নাড়ে। ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলে ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া  রোদেলা।রোদেলা মারে জিগাই,

আম্মা, দিনে কাম করবার পার না?

আম্মা ফেলফেল করে তাকিয়ে থাকে, দারিদ্র্যভরা কণ্ঠে উত্তর দেয়,

রইদের তাপ যে গতরে সহ্য অইনা মা

সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৪

প্রজাপতি

প্রজাপতি
ঠোঁটের কাছে, চোখের কাছে তোমায় রাখি
প্রজাপতি
মনের প্লেটে  আকাশরঙে তোমায় আঁকি
প্রজাপতি
রাত বিকেলের শিশির হয়ে তোমায় ডাকি
আসবে তুমি ভোরের পাশে
আসবে তুমি সকাল সাজে
আসবে তুমি সবুজ লাজে
আমার সকল কাজে এখন তুমি হাসে

রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৪

ঠোঁটের কাছে

সকাল। শীতের সকাল। হেতাকে ফাঁকি দিয়ে শিশির লুকানো বাতাস শরীরকে বিছানাতে  থাকতে বাধ্য করে। শুয়ে শুয়ে তার কথা, তাহার কথা কখনো ঠোঁটের কাছে, কখনো মস্তিষ্কের গোপন এলাকায় খেলা করে।প্রায় রাতসকালে তাকে ফোন করি। সে তখন ঘুমায়। তার ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য মাঝে মাঝে এই বিশেষ অভিযান চলে। মোবাইলের স্পিকার বেয়ে ভেসে আসে আড়মোড়া কণ্ঠ। আমার চমৎকার শিশুমনটা তখন জেগে উঠে।
বর্ষাকালে আমাদের এলাকায় পাটচাষ হতো।  বর্ষার যুবতী জলের মাঝে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতো পাটগাছ। বাতাসের সাথে তাদের মিহিকুচি বন্ধুসভা আমাদের আনন্দসভাকে মিছিলে নামাতো। পাটপঁচা গন্ধের একটি বিশেষ অর্থ ছিল আমার নাকের কাছে। যে অর্থের অর্থ উদ্ধার করা যায়না আজো, তবু আজো মনে পড়ে তার গন্ধের অদৃশ্য দৃশ্য।
পাটকাঠি রোদে শুকাতে দেওয়া হতো। অনেকটা তাবুস্টাইলে।  মনে হতো যেন কসমিক তাবু। আমরা এই তাবুতে ঢুকে পলাপলি খেলতাম। বিস্মিত এক ভালোলাগা খেলা করতো হৃদয়ের উজানে, হৃদয়ের ভাটিতে।
শহরে চলে আসি। গ্রামে আর বর্ষাকাল আসে না, হয়না পাটচাষ। হয়তো তারাও শহরে চলে গেছে।
তার, তাহার ঘুমভাঙা আইমের মাঝে, সাপভাঁজের শব্দের ঘাটে সেই কসমিক তাবু সুপ্ত ছিল, জানতাম না। আজ জানি।
ভুলে গিয়েছিলাম সেই বিস্মিত ভালো লাগা। আবার মনে হলো, আর ভুলবার নয়।
 কাছাকাছি আছি চোখ আর চোখের পাতার মতো।
আমরা কাছাকাছি আছি আকাশ আর পৃথিবীর মতো।
আমাদের সাধনা অনুভূতির সাধনা। অনুভূতির সাধনায় মানুষ আজ মানুষ।

জেট মাস

জেট মাস = জৈষ্ঠ্য মাস

ল্যাডা = নিতম্ব দিয়ে বসা

ছাও= বাচ্চা

টুফা = দই তৈরি ও রাখার পাত্র বিশেষ

গাবর = জেলে, যারা সাধারণত ময়লা ও জল সমেত থাকে [গালি হিসাবে ব্যবহৃত হয় ~ গাবরের বাচ্চা গাবর]।

সইলতা = সলিতা

কেউরের ছিপা =দরজার বগল

 ওগাইর তলা = মোরগ-মোরগীর বাসস্থান।

লালুছ =  লালসা।

কেরসা = কোনো কিছুর বিধ্বস্ত অবস্থা[ভুল উপায়ে কাঁচা কিছুকে পাকাতে গিয়ে যে অবস্থা হয়]।

তেরসা = বাকাঁ, বিশৃঙ্খলভাবে বাঁকা।

জেফত = খাবারের উৎসব, নেকের আশায় আয়োজিত খাবারের অনুষ্ঠান।

ঘাটলা= পুকুরের ঘাট

পাইলা = মাটির পাত্র

শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৪

হুজুরের সাদা চোখ

বেডা বেহাইয়্যার ডক আমার লগে আইয়্যা বইছে
কঅন যা ওইট্যা যান গা?
শোভন চেয়ারে শুয়ে আছে লিলুয়া বেগম। শোভন চেয়ারটি দের্ঘ্যে তিন ফিট, প্রস্থে এক ফুট। লিলুয়া বেগম দের্ঘ্য চার ফিট, প্রস্থে দেড় ফুট। লিলুয়া বেগমের পা জানালার বাইরে অন্ধকারে শরীর স্পর্শ করেছে। মাথা পাশের সিটে বসা আল্লামা হুজুরের সাদা পোশাকের ঢেউ ধরতে চায়। ডান হাতটি বালিশের ভূমিকা পালনরত। লিলুয়া বেগমের বইশের চোখ প্রায়বার তেড়ে আসে সামনের সিটে বসা প্রনামের দিকে। প্রনাম তার দিকে ফিরে তাকায়, তাকে আবিষ্কার করে অতীতচেনায়। লিলুয়া বেগমের দৈহিক কাঠামো তার খালাম্মার দেহের কাঠামোর প্রায় অনুরূপ। কিন্তু লিলুয়া বেগমের চোখে প্রনাম ভাইরাস দেখতে পায়। পীর সাহেব যে ভাইরাসের চোখে তার মেয়ে মুরিদের দিকে তাকায় সেই ভাইরাস।
মাঝে মাঝে সে চোখ বুজে, ধ্যানরকমের চোখ বুজা। তার পেট তখন সিট বেয়ে নিচে পড়তে চায়।
চোখ বুজা থেকে তার শরীরে নেমে আসে ঘুমরকমের নীরবতা। লিলুয়া বেগমের পেট তখন গামলার পানির মতো টলমল করে, টলমলে নড়ে উঠে। পাশের সিটে বসা টুপিহুজুর সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে লিলুয়া বেগমের শরীর তেলাওয়াত করে। প্রতি আয়াতে দশ নেকি। নাকি তার চেয়ে বেশী নেকি জমা হয় তার পুণ্যের পাল্লায় আমাদের জানা নেই। বয়স্ক স্তন ট্রেনের ছন্দময় প্যারেডের সাথে টকবগ টকবগ করছে। সুযোগে সবার চোখ মেডিটেশনের একনজরের একনিষ্ঠতার ব্যায়াম সেরে নিচ্ছে।
প্রতি শোভন চেয়ারে দুটি সিট। পাশাপাশি দুইজন বসে। মাঝখানে কোনো পার্থক্যের বেড়া নেই। লিলুয়া বেগম একাই দুটি সিট খরিদ করেছে।
কেন করেছে?
তার স্বামীর আদেশ।
সেও চায় তার পাশে কোনো পুরুষ মানুষ না বসুক।
তার এই চাওয়ার ভেতর কিমপরমধিকসুখং আছে, আছে কী পরিমাণ জীবন তা তত্ত্ব মারফতে ধরা পড়ে না। নারীদের চাওয়া তো এমনই পাওয়ার আকাঙক্ষায় সুপ্ত থাকে। প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা তাদেরকে ব্যথিত করে, পীড়িত করে অবশেষে তাদেরকে মহিলা করে। মহিলা মানেই মহলের ছায়ায় থাকা, মহলের ছায়া চলে কর্তৃপক্ষের আদেশে।
 কর্তৃপক্ষের বিধিই তাদের সামাজিক ইশ্বর।
লিলুয়া বেগম ইশ্বরের হুকুম মেনেছে।
লিলুয়া বেগম একাই সিটে বসেছিল। কোথা থেকে কোনো এক পুরুষ এসে তার সিটে বসল। লিলুয়া বেগম "না" করতে পারল না। রাগ করেছে এমন কোন সিম্বল মুখে রেখাপাত করেনি। বরং এমনভাবে বসেছিল যেন তারা স্বামী-স্ত্রী।
নরসিংদী স্টেশনে লোকটি নেমে গেল।
দইয়ের টুফার মতো লিলুয়া বেগমের মুখে তখন চাক্কা চাক্কা শব্দের কারিশমা
মানু কি লইজ্জা সরম দইয়া লাইছে
লগে আইয়া বইলে তো নাও করন যা না
লিলুয়া বেগমের মহাভারত শুদ্ধ করা টাইপের কথা শুনে সিটের পাশে দাঁড়ানো মেয়েটিও বসার কথা বলতে সাহস করেনি। কিন্তু মেয়েটির চেহারায় বসার প্রবল প্রাবল্য লক্ষ্য করা যায়। কোনো চেহারার করুণ ভাষ্য লিলুয়া বেগম পাঠ করতে চায়না। সে কেবল জানে সে একাই দুটি সিট খরিদ করেছে, সে কোনোদিন জানেনি মানুষ হিসাবে সে একটি সিট ক্রয় করতে পারে।
ভৈরব স্টেশন আসার আগ পর্যন্ত এই সিটটা কখনো লিলুয়া বেগমের ডাইনিং, কখনো বেডরুম, কখনো বৃন্দাবন কিন্তু মানুষের পৃথিবী হয়ে উঠে নাই!

শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৪

সমাজ

আমি বুঝিনা সমাজ রে
সমাজ বুঝেনা আমা রে
অবুঝ সক্ষমে চলি আমি আর সমাজ
রূপালী দ্বীপে শুয়ে থাকে অন্ধকার
বঙ্গপোসাগর থেকে ভেসে আসে ডাকাতিয়া ফেনা
ফেনায় ভেসে ভেসে সমাজ গড়ে নিঝুম দ্বীপ
নিঝুম দ্বীপের স্পর্শে সমাজ হয়ে গেল কবি
সামাজিক কবি জানেনা  কবি হতে গেলে কারো দারস্থ হতে হয়না
সমাজ জানেনা মনেরও রয়েছে একান্নবর্তী সমাজ
তারপরও সমাজের পালকে আমার পাখনা উড়ে
সমাজের লিটমাসে আমি হয়তো পাপি, হয়তো নেকি
ঘুমানোর আগে পাঠ করি
আসতাক ফিরুল্লা হা রাব্বী মিন কুল্লি জামবে ওয়া তুবু ইলাইহি

বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৪

চৌ চৌ

ক্ষুধার গন্ধে ঘুম আসেনা
লাইতে জেগে রই
মাগো তোমার রান্না করার
উনুন গেল কই
চাল ফুরাল ক্ষুধা বাড়িল
বর্ষা এল ঘরে
ফুলের গন্ধ নাকে আসেনা
পেট চৌ চৌ করে 

বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৪

হিজিমনি

দেশের নাটাইয়ে উড়ে মনের ঘুড়ি
ভালো ছিল হলে তবে পাথর কিংবা নুড়ি
মানুষের ঢং নিয়ে রোবট জীবন
রাষ্ট্রের হিজিমনি মনের মরন

Occupied mind born by state flies
Better to be a stone, a grief of stone
Man is robot in face of man
Mind is dead in playing of state

মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৪

সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৪

Allure

Will not provoke you anymore
You were my allure
No one knows blinding blizzard in me on coming
Going you onto the fire of novelty dew
Mind me again as the grace of few
Best bid for remembrance
Bid fair to do
Forevermore awaiting for your Serena mind
Wait for omen, wait for omeno


17 11 2014, 6.40
Central Library, Dhaka University 

রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৪

কেতকী

জমিন আর আকাশ নিয়ে পাখিদের দুটানা মন
একাকী কেতকী
এক ঢালে সারাটি জীবন

শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৪

Hawker

Honesty based on belief system is the best hawker

নারী কেবা

নারী ও পাখি উড়ে উড়ে চলে
রমণী ও ঘুড়ি উড়ে কথা কই
নারী ও কাক শীতে ঢল ঢল
নদী ও নারী স্রোতে কল কল

নারীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পুরুষ, পুরুষের বৃন্দাবন নারী 

শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৪

কে আছে তাকে ফেরাবার

যে যাবার সে যাবেই, যাবে ছলছল ছলনায়,
যাবে অজানায়, অজানা অভিযোগে! যে চলে যায় সে কখনো আসেনি, আসা মানুষের যাওয়া হয়না। Richard Parker ভুলে যেতে পারে নিস্তব্ধ সাগরে একমাত্র পাশে থাকা মমতাময়ী বন্ধুর কথা, ভুলে যেতে পারে প্রেমময়ী যুবকের  কথা আয়ু কেটে যে দিয়েছিল বেঁচে থাকার সাহস ও খাবার,
সহজেই যেতে পারে  জঙ্গলে আপন মঙ্গলে,
কে আছে তাকে ফেরাবার!  বালিতে পড়ে থাকা বন্ধুর কথা খেয়ালও আসেনা তার।
সে যে পশু, শুধুই পশু,
তাকে মনের দখল দেয়া পাপ
I was certain he was going to look back at me ...But he just started ahead into the jungle
মানুষ অপেক্ষা করে কালের পর কাল।
মানুষ বাঁচে, বাঁচায়, মানুষের চোখে মহাকাল।

সত্যের মতো রাক্ষস

তোমাদের পথে হাঁটিনি বলে আমি খোঁড়া
তোমাদের চোখে দেখিনা বলে আমি অন্ধ
তোমাদের মতো শুনিনা বলে আমি কালা
আমাকে থামাতে তোমার অনুপম ভাষার মেলা
থেমে যাবে তুমি, তোমাদের দলবল
সময় সত্যের মতো রাক্ষস

বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৪

বাঁকসুন্দরীর কথা মনে পড়ে

``সিয়েন আনিয়োস দে সোলেদাদ"
উপন্যাসের  সূচনা অনেকটা কৌতূহলে,রহস্যে -- যেখানে প্রথম হোসে আর্কাদিয়ো একটি লোককে হত্যা করে আর এরপর সে প্রচণ্ড অনুশোচনায় ভোগে, ভয়ঙ্কর রকমের এক বিবেকের দংশন শেষ পর্যন্ত তাকে তার গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করে এবং গ্রাম ছেড়ে পাহাড়-পর্বত ডিঙিয়ে সে পত্তন করে পৌরাণিক মাকোন্দোর।
``সিয়েন আনিয়োস দে সোলেদাদ"
উপন্যাসটির লেখক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। লাতিন আমেরিকার উপন্যাস নিয়ে বিশেষ করে গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস-এর লেখালেখির পেছনের কাহিনি নিয়ে  চমৎকার একটি কথোপকথনের [গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস এবং মারিয়ো বার্গাস ইয়োসা-এর মধ্যে কথোপকথন]  বই আমার হাতে আসে।
গোগ্রাসে গিলতে লাগলাম। ক্লাসের পেছনের বেঞ্চটি নির্বাচন করলাম যাতে আমার গিলাতে কোনো কাঁটা না লাগে। ক্লাস শেষে সোজা সেমিনার  লাইব্রেরীতে। সেমিনার লাইব্রেরীর বইগুলো চুপচাপ, কলহীন, শান্ত ; কুমারীও বলা যায়। কারণ আজ পর্যন্ত কোনো পাঠকের হাত তাদের শরীর স্পর্শ করেনি। বইয়ের দুংখ হয়তো ধূলিকণা বুঝতে পারে।
একদিন বইয়ের কুমারীভাব
নষ্ট করা জন্য অভিযান চালাই। সেইদিন ধূলিকণার সাথে আমার প্রচণ্ড যুদ্ধ করতে হয়। ফলাফল যে খুব ভালো হয়েছিল এমন না, আমি ডাস্ট এলার্জির  আক্রমণের কবলে পড়ি। সেইদিন থেকে তওবা করেছি আর কোনোদিন ধূলিকণা আর বইয়ের দাম্পত্য জীবনে তৃতীয় হাত প্রবেশ করাবো না।
তারপরও পড়াশোনা আমাকে করতে হয়। কারণ পড়াশোনা আমার কাছে জৈবিক কাজ।  বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাই তেমনি বেঁচে থাকার জন্য পড়ি।
পড়তে পড়তে জানতে পারি, বোর্হেসের সাংঘাতিক রকমের রক্ষণশীল, প্রতিক্রিয়াশীল একটি মন আছে কিন্তু সৃষ্টিশীলতার প্রশ্নে একবিন্দুও প্রতিক্রিয়াশীল কিংবা রক্ষণশীল নন। বোর্হেসের রচনাকর্মে এমন কিছু পাওয়া যায়না যেটাকে বলা যেতে পারে সমাজ বা ইতিহাসের পরিপন্থী বা জগতের নিশ্চল কল্পদৃশ্য, অন্তহীন এক কল্পদৃশ্য যা ফ্যাসিবাদ বা সাম্রাজ্যবাদকে উসকে দেয় বা তার বন্দনা করে।
আরো জানতে পারি, গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস লেখালেখি শুরু করেন পনেরো বছর বয়সে এবং তিনি তখন মনে করতেন লেখালেখির কোনো মানে হয়না। তাঁর ইচ্ছা ছিল উকিল হওয়ার। কারণ তিনি চলচ্চিত্রে দেখেছিলেন উকিলরা ন্যায্য বিচারের জন্য কোর্টে লড়াই করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর তাঁর স্বপ্নের গতিপথ পরিবর্তন হয়। একধরনের ভালো লাগা থেকে গল্পসল্প লিখতে আরম্ভ করেন। গল্প ছাপানো অক্ষরে দেখে তাঁর  আরেক ধরনের ভালো লাগা কাজ করতে থাকে।
বেস, শুরু হয়ে গেল তাঁর লেখক জীবন। চলে আসে একধরনের দায়বদ্ধতা।
লেখক যেমন দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে লেখেন আমিও পাঠউদ্ধারের প্রেরণা নিয়ে পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কোলাহলে সব কিছু হতে পারে কিন্তু পড়াশোনা হয়না। তাইতো সেমিনার লাইব্রেরীর এক কোণে বসে পড়ছি। লাইব্রেরীর বইগুলো এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এমন মায়াময় দৃষ্টি যেকোনো পুরুষমনের মরুময় এলাকায় করুণার প্লাবন আনতে পারে। কিন্তু আমি জেনে গেছি ধূলিকণার সাথে তাদের গভীর প্রেম। যুদ্ধ করে নিজের বীরত্ব প্রকাশ করে প্রেমিকাকে জয় করবো এমন প্রাগৈতিহাসিক ছেলে আমি নই। আমার ব্যাগভর্তি বইতে আমি সন্তুষ্ট। তারপরও চোখের আবেদন যুক্তি মানে না।নিজের সাথে যুদ্ধ করেই নিজের মতকে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। আমিও তাই করলাম।
আমার চোখ কালো কালো খাবার মগজে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বাম দিক থেকে লাইব্রেরী আপার নাগ ডাকার শব্দ কানে আসছে। কানে অদৃশ্য তুলা স্থাপন করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
হঠাৎ কানে আসে এ শার্পের একটি কণ্ঠ,
 `পরীক্ষা?'
মগজ তার দিকে ফিরে তাকায়।

ঠোঁটে কালো তিল, চোখে কালো মেঘ, বাম হাতের তর্জনীতে জিরো ফিগারের আংটি, চোখের নিচে প্রশান্ত মহাসাগর, কানে স্লিম লতি, কোমড়ের বাঁক যেন স্রোতের স্নিগ্ধ মোহনা, দাঁতে যেন শরতের সফেদ মেঘ খেলা করছে, সব মিলিয়ে যেন চোখের ভেতর, স্বপ্নের ভেতর খেলা করা এক নারী।
আমি মৃদু কণ্ঠে উত্তর দেই,
`না'
সে চলে যায়, আমার মগজও চলে আসে কালো খাবারের দিকে। মনোযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি। কিছুতেই মন থাকছে না বইয়ের পাতায়।বারবার ভাবছি তার কথা, তার কথা মানে তারই উচ্চারিত ধ্বণি --
`পরীক্ষা?'
ছাত্র কী শুধু পরীক্ষার জন্য পড়ে?
আমি কী তাহলে ছাত্র হতে পারিনি?
প্রশ্ন করি কিন্তু উত্তর আসেনা। উত্তর যাঁরা দিবেন তারা ভদ্রতার টুপি পড়ে জ্যামিতিক হারে সালাম খরিদ করে যাচ্ছেন।
হয়তো এই কারনেই বাংলা বিভাগ লাবণ্যের দেখা পায়না। অমিতের সুরে কথা বলে না কোনো প্রাণ। অনন্তের মার দুংখের আয়তিকে টিস্যুপেপার আবেগের যৌথ খেলা মনে করে স্বস্তি পায়।

সাহিত্য পড়তে আসি চেতনাকে জাগ্রত করা জন্য। ভর্তি হওয়ার আগে ভেবেছিলাম রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, মানিক, শেক্সপিয়র বুঝি বাংলা বিভাগের করিডোর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে। তাঁদের স্পর্শ পেয়ে সমৃদ্ধ হবে আমার ইচ্ছার উড়ন্ত ঘুড়ি। ভাবতাম সাহিত্যধর যাঁরা আছেন তাঁরা শিখাবেন সাহিত্য মানে নিজের মতো চিন্তা করা, নিজের আয়নায় নিজেকে দেখা, অন্ধকারের ভেতর আলো,  আলোর ভেতরে অন্ধকার খোঁজ করা।  জীবনব্যাপ্তির  নিচে যে নৈপুণ্য থাকে তার সাথে আমাদের নবীন জ্ঞানের স্পর্শ ঘটানোর জন্য যে  পরিক্রমা তা আবিষ্কারের পথ দেখাবেন তাঁরা।

বাস্তবতা ভিন্ন, তাঁরা যেন আকাশের তারা। মহা মুশকিল আমাদের বামন ছাত্রদের। এমন কোনো মই আবিষ্কার হয়নি যার সরল সহযোগিতায় তারাদের কাছে পৌঁছানো যায়। ফলে তারা দেখে দেখে চোখের পুষ্টি সাধন হয় কিন্তু মনের অপুষ্টি থেকেই যায়।
তারারা মাঝে মাঝে জমিনে নেমে আসেন। এসে আমাদেরকে উন্নত প্যাকেজ সিস্টেমের উপহার দেন। জীবনকে যারা প্যাকেজের স্রোতে ভাসিয়ে দিতে পারে তাদের জন্য আমার জয়তু অভিনন্দন। প্যাকেজ সিস্টেম মেধাবীর পাহাড় তৈরি করতেছে যাদের সাথে প্রতিনিয়ত ধাক্কা খেয়ে আমার চেতন ফিরে। আর তখনই স্বপ্নের দেবী আমাকে বলে যায়,
``ওরে বাছা, মাতৃকোষে রতনের রাজি"
আমি এতো রতন লইয়া কেন শিট তৈরি করিতে পারি নাই , কেন আমার নাম মেধাবীদের তালিকায় আসিবে না।
বুঝলুম, আমার জন্ম মেধাবী হইবার জন্য নহে, আমার জীবন মেধাবীদের একরঙা শিটের ভেতর প্রবেশ করিবার নহে। আমার জীবন বাতাসের লগে বন্ধুত্ব করে, সময় ও নদীর কথা শুনতে ব্যাকুল। তবু বাঁকসুন্দরী কথা ভুলিতে পারিনা,

`কী, পরীক্ষা?'

মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৪

জীবন যেখানে জলের মতো চলে

চিরচেনা জনপ্রিয়তার নগর
গাণিতিক হিসাবে ঠাসা
দৃষ্টির প্রদীপ ফেলে জ্বলে না লাল নীল দীপাবলী
ঢের ভালো,
মোটা চালের গন্ধে ধানখেতের পাশ দিয়ে হাঁটা
বটতলার উদাস দ্বীপে নিঝুম ভাতঘুম
আকাশছাদের চা স্টলে ভবিষ্যৎহীন কথা
যদি জানতুম
সফল হতে গেলে বিফলতার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়
বাতাসও গ্রহণ করেনা দীর্ঘশ্বাসের ভার
প্রচলিত রোদ শুকায় না শরীরের ভেজা জল

দূর থেকে সেলাম দিতাম নগর তোমায়
তোমার কীর্ত্তন শুনেই মুগ্ধ থাকতাম
পেন্সিলে আঁকা স্বপ্নে তোমাকে দেখতে আসতাম

অথচ আসতাম হয়ে গেল আসা, স্বপ্ন হয়ে গেল বাস্তব
হে আমার লাগামহীন স্বপ্ন
তুমি একবেলা নিষ্ঠুর হও
স্রোতের গতি থেকে নির্জন ফুসরত চাই,  জ্যামিতিক নির্জন
যেতে চাই কোলাহল থেকে শারীরিক দূরে
জীবন যেখানে জলের মতো চলে

নফস

নফস যেন জীবনের জলে রঙিন জাহাজ
ইউসুফের জামার মতো ছড়ায় খুশবুর আবাস


জা. রুমী
অনুবাদক :এমরানুর রেজা

সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৪

রং - ঢং

মেনকার রং তোমার অঙ্গে
বিশ্বামিত্রের ঢং আমার সঙ্গে 

রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৪

ব্লাইন্ড

আকাশ থেকে নেমে আসে বিশ্বাস
স্বং বিশ্বাস নয়, বিশ্বাসের ফটোকপি
বালুর বাড়িতে শেকড়ায়িত প্রশান্তির অন্ধকার
রূপরাজ্যের দৈত্য হয়ে গেল বিশ্বাসের হাতিয়ার

সময় সম্ভাবনাময়। সম্ভাবনার গর্ভে সংকট। সময়, সম্ভাবনা,স্পেসের বাইরে এক শুন্য জীবন। শুন্যতার সাথে সম্ভাবনার রিয়েল সম্পর্ক। যে সত্তা শুন্যতার চর্চা করে সেই মূলত স্বাপ্নিক, বাস্তবিক কিউপিড। সূর্যের মানুষ পৃথিবীর খোঁজ পায়না, পৃথিবীর মানুষ সূর্যকে আগুনের বল মনে করে। সময় গাধার মতো বহন করে আবর্তনের ঠেলাগাড়ি। বহন করতে পারেনা আমাকে, বহনযোগ্য নয় আমার ভেতরের জমাটবদ্ধ সময়সীমা। চিরদিনের উল্টো-পাল্টা আমি গড়ি ডানপিটে গুজরাট নগর, পবিত্র শহর। বিশ্বাসের তেলে সেদ্ধ করি তৈরিকরা থিউরি; সত্য নহে, মিথ্যা নয়,  হুজুগে বাগান। 

শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৪

অধরা জীবন

পড়শির বাড়ি থেকে উঠে আসা সন্ধ্যা
আমাকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়
সফেদ মেঘের গুঁড়া মতো হেঁটে চলি আজ থেকে কাল
কোনো এক অচেনা অসুখ শুয়ে থাকে নীল কিংবা হলুদ নয় একেবারে লাল শরীরে
ডানা ভাঙা হতাশায় স্বপ্ন নামে
স্বপ্নের কাছে পৃথিবী নধর
প্রনম্য কুচকাওয়াজে মৃত্তিকার সাথে গড়ে ছান্দসিক জীবন
অধরা জীবন, জীবন রে আমার, জীবন কেন এতো কথা বলে

বিপ্লবী জনাব

বিপ্লব সন্নিকটে
কার বিপ্লব?
আপনার ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলের?
ভালো তো, সব পাপই অবশেষে চুষে নেয় মক্কার পাথর
সহজলভ্য কচুরিপানাও ভাসমান
স্থির কেবল আপনার আদর্শিক বক্তব্য
কোথায় পান এতো নৈতিক কথা,
মুখে না মগজে?
বিপ্লব সন্নিকটে
আপনার মনে আছে রবীন্দ্রনাথের কথা
যিনি বলেছিলেন `বাঙ্গালী কোনো কাজ শুরু করে শেষ করেনা'
ও! মনে থাকার কথা না
সুখী হতে গেলে অনেক কথাই মন থেকে সরিয়ে ফেলতে হয়, ফেলাকথা নিয়ে তারপর সাজাতে হয় মুখের বাগান
বিপ্লব অতি নিকটে,
একেবারে আপনার চোখের কাছে, সুবিধার কাছে

ছোটকালে ছিপ দিয়ে মাছ ধরতাম। এক জায়গায় বকের মতো বসে থাকা হয়ে উঠতো না আমার। মাছ শিকার করতে হলে একজায়গায় প্রত্যয়ী হয়ে বসে থাকার ফলাফল সুবিধাজনক। বিষয়টি অনেক পরে বুঝলাম। বুঝেও বিশেষ ফল হলো না। কারণ বুঝার পর মাছ শিকারের নেশা হারিয়ে ফেললাম। নেশাহীন আমার কেবলই মনে পড়ে --
আওতি হে যাওতি
কুছ নেহি পাওতি

শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৪

চেনা - জানি সুর

চেনা-জানা সুর
ডাকে সুমধুর
ঢেউ তোলে আমার প্লাবনে।।

তুমি যে সখা উড়ারও পাখা
                  পাখিরও পাখা
এলোকেশে ধরো ভৈরবী সুর।।

আমি যে ছিলাম শিশুরও মতোন
বানালে আমায় আস্ত মানুষ
যাবে যদি যাও শুধু বলে যাও
যাবো ক্যামনে তোমাস্মৃতি থেকে দূর।।


কথা ও সুর : এমরানুর রেজা
07, 11,2014 : 8.45

বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৪

World and leader

Three types of people control the world

1~ Politician
2~ Writer
3~One who is good for nothing

If you want to be a politician you have to travel a lot, To be a writer you have to learn a lot, if you want to be a good for nothing you have to know how to laugh.

আশুতোষ

দুতলা ঘরটা দেখলেই একতলা মনের কথা কানে বাজে
একতলা মনে দুটি রুম
একটিতে সাবেক, অন্যটিতে বিবেক
সাবেক আর বিবেক নিয়ে উটের মতো উঠা- নামা করে মনটা
সাবেক ডিসচার্জ বহুদিন আগে
বিবেক ঘড়ির ফলার জীবিত পথে
সাবেকের পথে লাশ হয়ে শুয়ে থাকেন তিনি
ফুলের বাগানের মালী বিবেক যিনি আশুতোষ জ্ঞানী
নর্থপোলে কথার ভার
মোবাইলজীবনের কম্পন
মাটি ভেদ করে আকাশের দিকে বেড়ে উঠার প্লাবন
থেমে থাকে গন্ধমফলের অশ্বত্থ ছায়া
কালের কলিজার তলায় ডেকে আনা নৈপুন্য শব্দ

বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৪

শ্রুতি

শুনে শুনে জ্ঞানী হওয়ার প্রবনতা মানুষের সহজাত তবে প্রমিত নয়।
মানুষ, বিশেষ করে ভারতবর্ষের মানুষ রটনাকে[প্রবাদবাক্য~ যা রটে তা কিছু হলেও ঘটে] ঘটনা হিসাবে চালিয়ে দিয়ে বেশ আরামবোধ করে।
শুধু কী চালিয়ে দেওয়া?
একেবারে সভা, সমিতি, মহাসমাবেশ আয়োজনের মেলা চলে!
অথচ গঙ্গার জল অনেক গড়িয়ে যাওয়ার পর প্রমান হয় কান মাথার সাথেই আছে চিলও আকাশের বাতাসে।

Man wants to be a intellectual on listening by born but not the expression of the ability.
Man, specially the man of the Indian  subcontinent used to have the propaganda as the original copy of the incident (Proverb ~ It's may occurred at least a little what is aired).
Is it limited up to airing?
Propaganda is used to make a huge procession, conflict, projection of rustic task and so on. At the margin of brimful sequence concluded that the ear is yes with head and the kite is yes in the sky.

সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৪

যোগ্যতা

প্রেম করা একটি যোগ্যতা। প্রেমের সাথে থাকা তারুণ্য। প্রেমে লীন হয়ে যাওয়া বিকলাঙ্গ নদীর স্রোত।

Inductive causality of love affirmative is the ability. It is a projection of youth enough too. Losing self in love is the paralyzed stream of the river. 

লাইব্রেরী

আজকাল লাইব্রেরীতে যাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরী। একটু দেরী হলে আমার জন্য কোনো আসন  থাকে না। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও একটি অসুস্থ সিট ফাঁকা পাওয়া যায়না। আসন পূর্ণ করে বসে থাকেন গবেষক( আমার পুলকবোধ করার কথা)।
সাধারণ জ্ঞান মুখস্থ করার গবেষক!
যারা মুখস্থ করছেন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। অথচ তাদের মুখস্থ করার কথা ছিল বাংলাদেশের রাজধানী দিল্লি!
আবার অনেকে নাইন-টেন এর মেথ নিয়ে মহাব্যস্ত। অনার্স- মাস্টার্স সম্পূর্ণ করে সাত বছর আগে ফিরে যাওয়া,
বাহ,
চমৎকার!
বাসি খাবার খেয়ে আমরা অভ্যস্ত, বাসি জ্ঞান আমাদের মেধাকে কেন পূর্ণ করবে না? নতুন কিছু করা প্রত্যয় থাকলে অবশ্যই করা যায়।
তবে কালো পিঁপড়ার মানসিকতা ত্যাগ করতে হয়, ত্যাগ করতে হয় কাকড়ানীতি।
ভদ্রকালী ভগবতীর এক মূর্তি। এই দেবী ষোড়শ হস্তযুক্তা। একদিন মহিষাসুর স্বপ্ন দেখেন, দেবী ভদ্রকালী তাঁর শিরোশ্ছেদ করে রক্তপান করছেন। স্বপ্ন দেখে ভীত [Cowards die many times before their deaths/The valiant never taste of death but once/Of all the wonders that I yet have heard/ It seems to me most strange that men should fear/Seeing that death, a necessary end,
Will come when it will come] মহিষাসুর ভদ্রকালীর পূজা করতে আরম্ভ করে। পূজায় তুষ্ট হয়ে দেবী তাঁর কাছে উপস্থিত হন। দেবী তাঁর কথা মনোযোগের সাথে শুনেন। মহিষাসুরের কান্নাজড়ানো আবেদন দেবী বৃথা যেতে দেননি। দেবী তাঁকে বদ করবেন বাস্তবিক সত্য। তবে তাঁর তপস্যার পুরস্কারস্বরূপ তাকে পায়ের নিচের পাপুস হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। যতকাল দেবী পূজা পাবে ততকাল মহিষাসুর পাপুসের মর্যাদা পেয়ে যাবে ষোলোকলায়।
আমাদের বিশ্বমানের ছাত্রদের অবস্থা মহিষাসুরের মতো হচ্ছে কিনা?
 উন্নত চাকর হওয়ার জন্য কী শেকড়বিহীন হাপিত্যেশ। শুধু শারীরিক নয়,  মানসিক চাকর হওয়ার জন্যেও বটে । বিক্রি হতে হন্যে হয়ে বইয়ের সাথে চোখের সম্পর্ক তৈরি করছে। সম্পর্ক হচ্ছে না জ্ঞানের সাথে প্রজ্ঞার, প্রজ্ঞার সাথে মগজের। জাতি এগিয়ে যাচ্ছে পোশাকনীতি ভবিষ্যতের দিকে, প্রজ্ঞানীতি শ্রেষ্ঠবাণী চিরন্তনীতে পাওয়া যায়, শ্রমে পাওয়া যায়না।
ওহে ঈশ্বরী পাটুনী তোমার সন্তান আজ তোমার কথা পালন করছে অক্ষরে অক্ষরে (আমার সন্তান যেন তাকে দুধে-ভাতে)।
তবু তোমার দুঃখ পাওয়া উচিত। কারণ তারা তোমার কথার চরণ ধরেছে, আচরণ ধরেনি।

শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৪

পাগল

পাগল কথা কইনা
পাগল কথা বলার কিছু পায়না
পাগল মানুষের মতো আভিধানিক নয়
অভিধান খুঁজে খুঁজে মানুষ হয়রান
চালায় জোরে           হ্যাইয়্যা
স্বপ্নের ঠেলাগাড়ি
শরীরপথে কাচাঁ লবণ আর প্রসাধনী সাবান
পাগল কেবলই হাসে
চাঁদনী রাতে জোৎস্না শিকার করে
পাগল জোৎস্না রাতের জেলে
পাগল কথা কইনা
বলার মতো কিছু পায়না 

শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪

ভ্রমর

ফুল মারা যায়,
ভ্রমর ফুলের স্বল্পদৈর্ঘ্য জীবনকে স্বার্থক করে
 ভ্রমর মারা যায়,
সময় তার দায়িত্বটুকু পালন করে
সময়ের মরণ নেই,
সময় ইশ্বরের আংশিক জীবন 

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৪

সিঁড়ি

তোমাদের রাত হয় সিনেটের সিঁড়িতে দুতলা সন্ধ্যায়
কত যুবকের সাথে তোমার চেনাজানা
আজকে ভালো লাগা, কালকে কাটাকাটির দেনা
এক বোতল মনের কিছুই তো বাকী নেই
এক চামচ শরীর নিয়ে শুধু বেচাকেনায়  ধর ধর
বন্য মনে সামাজিক লাগাম
বন্য মনে ধর্মের ফেনায়িত ঢেউ
আর কতকাল গোপন হবে দেসদিমনা
তোমাকে গোপন করবে কেউ

বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৪

ফেরেশতা

ফেরেশতা (Arabic: ملائكة , Malāʾikah)  একটি  ডিবাইস। এই ডিবাইসে নিদিষ্ট প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকে। ইনস্টলকৃত প্রোগ্রাম ব্যতীত ডিবাইসটি অন্য কোনো কাজ করতে পারে না। যন্ত্র আর ফেরেশতার মধ্যে মোটাদাগের পার্থক্য হচ্ছে -- যন্ত্রের স্রষ্টা দৃশ্যমান আর ফেরেশতার স্রষ্টা অদৃশ্য!
ফেরেশতার মতো হওয়া মানে যন্ত্র জীবনের অনুকরণ, অনুসরণ। মানুষ যন্ত্রের মতো জীবন বহন করবে না ,এটাই মানুষের গৌরব, অহংকার।
যন্ত্রও ( Harut and Marut Arabic: هاروت وماروت‎) মানুষের মতো জীবনযাপন করতে পারবে না, এটাই যন্ত্রের সীমাবদ্ধতা, স্বাভাবিকতা।

অনুবাদ

যৌথ একক

যে দৃশ্য ধারণ করে, দুংখের যে জলে স্নান করে জীবনের পথ হাঁটা,
কুসুম যে সুখ বিকশিত করেছে অনেকের জীবনধারা
আমার শৈবাল শৈশব ছিলনা এমন
রহস্য থেকে জাগতিক আবর্তনে যা বর্তায়
আমার জীবনলীলার গভীর খেলায়
একাই হয়েছি রাজা, অনুভূতির রাজাধিরাজ
নদীর স্রোতধারা, ঝরনার আকুতি ব্যাকুল, সূর্যের অন্তিম হাসি, পাহাড়ের অন্তত ধৈর্য রেখেছি জীবনে ভাসমান
মৃত্যু থেকে উঠে আসে যেমন তেমন ঘাসলতা
হেঁটেছি তাতেও বরং আবিষ্কারের নেশায়
পাইনি কিছু আমি কেবল অনুভূতির দাস

এডগার এলান পো
অনুবাদক: এমরানুর রেজা
28102014

সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৪

নগ্নতাই

নিজের সামনে দাঁড়িয়ে দেখি
সভ্যতা এক নগ্ন পৃথিবী
আজকের পাপ গতকালের আদিম খাবার
কোনো এক বনে জন্ম আমার
সভ্যতা মানুষজন্মের জেলখানা
দুংখের হলাহল, দীর্ঘশ্বাসের কারখানা
হায় ইদিপাস
ওহে নীতিবাদ
পৃথিবীকে যতটুকু দেখা যায় ততটুকু না
জানার গভীরে আছে গভীর এক অজানা 

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪

মহাপ্লাবনে

মহাপ্লাবন শুরু হবে। প্লাবনে ভেসে যাবে সব কিছু। প্লাবনে ভাসমান থাকবে কেবলই একটি কিস্তি। মহা আয়োজনে চলছে কিস্তি বানানোর কাজ। এই কিস্তি জাগতিক মানুষের হাসির কারণ। জাগতিক সভার অধিকাংশ  হাসে আর আড়ালে আয়েশ করে মল ত্যাগ করে কিস্তিতে।
একদিন সত্যিই শুরু হলো মহাপ্লাবন। যারা কিস্তিতে উঠতে পারলো তারাই কেবল রক্ষা পেল।
সব কিছু জোড়ায় জোড়ায় তোলা হলো কিস্তিতে। বিড়াল তখনো পৃথিবীতে আসেনি। তাই সেই কেবল কিস্তিতে রাব্বাইক বলতে পারেনি।
ইন্দুরও কিন্তু নৌকার অধিবাসী। প্রাণিরা নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে খুবই সচেতন। ইন্দুরও নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছে। ইন্দুরের পালিত দায়িত্ব মানুষের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াল। ভাসমান মানুষ দূরদর্শী নেতার( হযরত নূহ্) কাছে সমস্যার ইতিউতি জানালেন। নেতা Supreme energy কাছে প্রার্থনা করলেন। Supreme energy সাথে নেতার গভীর বন্ধুত্ব। Supreme energy নেতার প্রার্থনা কবুল করলেন। Supreme energy কোনো কিছুই প্রত্যক্ষভাবে  করেন না, পরোক্ষভাবে করান।
একদিন বাঘের হাড়কাঁপানো জ্বর হলো। ঠাণ্ডা জ্বর। কোল্ড এলার্জির পারিবারিক আক্রমণও বলা যায়। মাঘ হাচ্ছি দিল ( হাচ্ছি আসে জান্নাত থেকে, আইম আসে জাহান্নাম থেকে)। হাচ্ছির সাথে বেরিয়ে আসে বিড়াল। আজো বিড়ালকে দেখতে বাঘের মতো মনে হয়।
জান্নাতি বেড়ালকে দেখে ইন্দুর ভীতসন্ত্রস্ত। প্রতিকূলতা স্বকীয় ঐক্যের পক্ষে হিতকরী। ইন্দুর  এক সাথে মিটিং করে, মিছিল করে নীরবে নীরবে। বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার জোড়ালো আলাপ চলে, নীতি নির্ধারিত হয়, মাননীয় বিড়ালসভাপতির স্বাক্ষর সম্বলিত আইন পাশ হয় কিন্তু বাস্তবে ইন্দুর আইন্দার ঘরে কান্দে।
আজো বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা হলো না....কোনোদিন হবে না ...ইঁদুর যে মরতে জানে না ...মরণ যে ভাইরাস, মরিবার সাহস মরনের এ্যান্টিভাইরাস ...
সাহসের ইতিহাসে বিড়ালের ছাও এক, ইন্দুরের ছাও অনেক সমানে হমান

সফেদ মেঘ

সফেদ মেঘ চলে যায় আকাশে আকাশে
আকাশ ছেড়ে
যে মেঘ চলে গেল আকাশ ছেড়ে সাগরের পরপারে
জানলো না আকাশের উপরেও আকাশ আছে
যেখানে বন্য প্রেমে রাত কাটে
প্রথম চুম্বনে আশীর্বাদ ঝড়ে, ঝড়ে পড়ে চিরতরে বিগত কালিমা
একহাজার চুম্বনের পর শুরু হয় প্রথম যৌবনের নিয়ত
জানলো না
আকাশেরও রয়েছে নিজস্ব সাগর
চংক্রমন যৌবনের নীলাভূমি
সব পথ ছেড়ে, সব মত ভুলে
কেবলই অভিযোগের প্লাবন, দুকূল উপচে পড়া ঢেউ
ফেনায়িত কথার মেলা
কেবলই
অদৃশ্য বাতাসে ওথেলো সিনড্রোম

পাখির প্রতিবেশী মেঘ
পাখির  মতো উড়ে চলে যে মেঘ সে আর কতটুকু আকাশ চিনে
দয়াগুনে আকাশ যদি ধরা না দেয়
আকাশ কোনোদিন নিচে নামে না
তাইতো আকাশ
বড় হওয়ার আগে বড় একা হয়ে গেলাম
ছোট বলেই আমি আকাশ চিনিলাম

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৪

নদীর মতো

নদী ও নারীর জোয়ার আসে
নদী ও নারী সাগরে মিশে

Flow tide for the capital of river and girl
River and girl get admixed with ocean 

অসীম কেন একা

ভোর যদি চলে যায় সকালের কাছে
দিনের কী আসে যায়
দিন যদি অভিমানে থমকে দাঁড়ায়
সিনথিসিস মহাকাল কেঁদে বুক ভাসায়
আজো থামেনি স্বপ্নের খেলা
বিজুরি বাতাসে চলে দেউলের ভেলা
প্রচারে নেমেছে বুজুর্গ কাল
বরফগলা নদী জানে সূর্যের প্রতাপ
এক থেকে নয়ের পর শুন্য রাজা
এক যদি চলে যায় নাফেরার দেশে
শুন্য রাজা হয়ে অসীম সুখে

বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৪

বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৪

!

One minute is wild enough to win the world 

মনের কারবার

দূরের কাশবন ঘন মনে হয়
মনে হওয়া মনের কারবার, কাশবনের নয়

The long afar Cashban Seeming impenetrable
It is a consortium of mind nor of Cashban 

মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৪

কালের পর কাল

একবার অস্থির হলে জন্ম অনিবার্য। কতকাল মৃত্যুগন্ধ নিয়ে বেচেঁ থাকা যায়। বেচেঁ থাকা বেড়ে উঠার রোগ, রোগে রোগে বাড়ছে বয়স,  মানুষের মহাকাল। ফাইলো মন অসীম ব্লেডে কেটে কেটে টুকরো,
অর্থনীতি বলে, বাড়ছে বাজার।
অজানা নেশায় ছুটছে পণ্ডিত, গভীর রাতের সরল সহবাস
শিশুটি কেবল আংশিক মানুষ, সব কাঁচা রোবট, যন্ত্রে বসবাস
সময় একটা পাগলা নেশা, ক্ষমতার জ্বালানীতে জ্বলছে বারংবার
কালের পর কাল

চুবা

শুক্কুরবার< শুক্রবার

রইববার <রোববার

হে আল্লাহ < এল্লা

বেহা < বেকা< বাকা < বাঁকা [ ক' বর্ণ, `হ' বর্ণ হয়ে  উচ্চারিত ]

তাইলে < তাহলে [ হ' লুপ্ত, ই'আবির্ভাব]

চমক= বিস্মিত হওয়ার মতো কিছু

চগম = মই

কইতাম < কহিতাম[সাধারণ বর্তমান কালেও `কইতাম' শব্দটি ব্যবহৃত হয় ~ আব্বা আমি একটা কতা কইতাম চাই]

আক্কল = জ্ঞান, প্রজ্ঞা
হাদা = আপ্যায়ন  [ Gentle hospitality ]

চুবা= জলে ডোবানো ( passive word)[শব্দটি রাগ থেকে উৎসারিত ~ হেরে চুবা দিয়া আন, সব পাগলামি ছুইটা যাইব]

গাঙ= মাঝারি নদী :  গঙ্গা > গাঙ

বিলাই = বিড়াল [বিলাই হয়ে যাওয়া = অসহায় হয়ে যাওয়া]
মাইন্দার গাছ = একধরনের কাঁটাযুক্ত শিমুল গাছ
আওর = ফসলের মাঠ বর্ষায় যা পরিপূর্ণ বিল ~ আওর < হাওড়
খতম > হতম = শেষ করা, হত্যা করা, সিল মোহর দিয়ে সনাক্ত করা

সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৪

ধাঁধা

মানুষের পৃথিবী এক জটিল ধাঁধা
অর্ধেক মন তার অর্ধেক কাদা

What a bemused murky the earth of the man
Half for mind half for shell 

একদিন চৈতার খালে ভ্রমণ

গ্রামের মানুষ ভয় পেতে ভালোবাসে। ভয় সমেত জীবনযাপনে বেশ আরামবোধ করে তারা। ভয় তাদের অভ্যাসগত, চেতনাগত। ভয়কে জয় করার মতো যে মনন, যে মেধা প্রয়োজন তা তাদের হয়ে উঠে না। অনন্ত প্রচেষ্টায় অসম্ভব সম্ভব হতে বাধ্য। হয়তো তাদের মধ্যে চেষ্টার ঘাটতি প্রবলভাবে, হয়তো ভয়কে লালন করা তাদের বেঁচে থাকার ম্যানিয়া।

ভয়ের উপকরণ, উপাদান তাদের গ্রাস করে ফেলে -- তাও তারা নিয়তির দান হিসাবে মেনে নেয়। আহারে, তৃপ্তিও কত অসাধারণভাবে অজ্ঞ হতে পারে!
সহজ, সরল মানুষের আজন্ম লালিত ভয়কে পুঁজি করে গড়ে উঠে এক শ্রেণির গ্রাম্য ডাক্তার। এই গ্রাম্য ডাক্তাররা ওঝা, কবিরাজ, পীরবাবা, হিরালী নামে পরিচিত।

যারা সাপের বিষ নামায় তাদেরকে বলা হয় ওঝা, আর যারা কঠিন শিলার আঘাত থেকে মন্ত্র বলে মাঠের ফসলকে রক্ষা করে তাদেরকে বলা হয় হিরালী।

কুন্দলাল হিরালী। মাঠকে যে দেশের লোক `আওর' বলে কুন্দলাল সে দেশের লোক।
বর্ষায় আওর এলাকায় চমৎকার বৃষ্টি হয়। বর্ষার আওর দেখতে নিষ্পাপ আর লাবন্যময়ী। আওর, পানি, ধানের যুবতী যুবতী শিষ যেন সৌন্দর্যের এক অনিন্দ্য মোহনা। একসময় আকাশ থেকে নাযিল হয় শিলাবৃষ্টি ,দুধেভরা  যুবতী শিষগুলোর কুমারী দেহ রক্তাক্ত করে। সম্মান নিয়ে তারা আর আকাশের দিকে তাকাতে পারে না। আকাশকে বিয়ে করার যে তীব্র ইচ্ছা শিষগুলো ধারণ করে তা ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
কুন্দলাল অনেক আওররাণীর ( ধানের শিষ) সম্মান রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। তাতেই তার কদর এলাকাতে প্রবল। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে আওরটি ( শনির আওর)  তার সম্মান রক্ষা সে করতে পারেনি। চাষীরাও তা কপাল বলে মেনে নেয় (There are two senses in which the term "luck" is used, the prescriptive, and the descriptive. Luck, in the descriptive sense, is merely a name we use in describing fortunate events after they have already happened. However, luck in the prescriptive sense is what is meant when one says they either have, or don't have, a belief in luck)। কুন্দলাল চুপচাপ বসে থাকে, চুপিচুপি চোখের জল বির্সজন দেয় আওরের মানুষ।

হতাশপ্রাণ আওরের মানুষের জীবনস্রোতে আশা নিয়ে আসে চৈতা। সে পূর্ব দেশের সুসং পাহাড়ের কাছ থেকে আসে। অল্প বয়স হলেও পাকা হিরালী।

বিশ্বাস করাও গ্রামের মানুষের জৈবিক কাজ। তারা চৈতাকে বিশ্বাস করে মনেপ্রাণে। লক্ষীও চৈতাকে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস সংক্রামিত। চৈতাও লক্ষীকে বিশ্বাস করে। বিশ্বাসের বাজারে দেখা মেলে ভালোবাসার, দেখা মেলে প্রেমের।
চৈতা-লক্ষী প্রেমের আবডালে আড়ালে উড়াউড়ি করে। সবুজ ধানের সাথে মিশে যায় সবুজ লক্ষী, শুধু লাল কাপড়ের আঁচলটুকু দূর থেকে চৈতার চোখের কোণে খেলা করে। নতুন একটা পুলকে বিবশ হয়ে হয়ে যেতে চায় চৈতার সারা দেহমন।

ছোটবেলা থেকে চৈতা একা। এই প্রথম চৈতা সামাজিক। চৈতা আজ পরিপূর্ণ পুরুষ। লক্ষীর উদাম হাসি ( হাসতে হাসতে লক্ষী বলে, খুব রাগ করবাম, তোমার মতো মাইনষের লগে রাগ করবাম না তো কী করবাম? তুমি কী রকম বোকা) চৈতার আবেগের আনায় ফেনা তোলে। ফেনার ঢেউ লক্ষীর বাড়ির সবপাশ ঘুরপাক খায়।
একদিন আকাশ ফেটে বৃষ্টি নামে (এমনি দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়! )। বৃষ্টির নৃত্য প্রেমিক মনকে উতলা করে। প্রেমিক মন ছুটে চলে কুন্দলালের বাড়ি ( লক্ষী কুন্দলালের একমাত্র কন্যা)। উঠানের মাঝে তখন ছড়া কেটে নাচতে নাচতে দুহাত দিয়ে বৃষ্টির জলকে জড়িয়ে ধরছে লক্ষী। মুগ্ধ হয়ে যায় চৈতা, বলে উঠে, লক্ষীরাণী। ঝড়ের মতো ছুটে এসে লক্ষী লুটিয়ে পড়ে চৈতার প্রশস্ত বুকে। নিবিড়ভাবে লক্ষীকে জড়িয়ে ধরে নিস্পন্দ পাথরের মতো নিশ্চল হয়ে যায় চৈতা।
ঠিক সেই মুহূর্তে উঠানে এসে দাঁড়াল সত্য  প্রেমের শত বাধা `কুন্দলাল'।
বাবা, তাদের প্রণয়কাব্যকে স্বীকৃতি দেয়নি।  গ্রামের মেয়েদের জীবন এমনই। তাদের স্বপ্ন নির্ধারণ করে স্বপ্নহীন অবিভাবক।
নতুনপুরের রতন দাসের সাথে লক্ষীর বিয়ে হয়।
লায়লী এখন ঘুরে মনের বনে আর মজনু ফুলের বাগানে। এক প্রেমে দুইজন মরা। শান্তি নেই  মনে,   প্রশান্তি নেই বাগানে।
এখন চৈতার মিশন ` শনির আওর ' রক্ষা। তাতে তার জীবনের ঝুঁকি প্রবল। তাতে কী? সে একা ছিল, দুজন হলো, আবার একা না হয়ে শুন্য হয়ে যাওয়া ভালো।
শুরু হয় চৈতার মন্ত্রপাঠ। আকাশে পুঞ্জীভূত পাথর অঝোরে চৈতার মাথার উপরে পড়তে থাকে। বাতাসে একটি এতিম শব্দ একবারে জন্য শোনা যায়। এরপরই সব চুপ।
চুপ হয়ে যায় নীলু দাসের ( 1930-2004) ``চৈতার খাল " গল্পটি।
গল্পটা সম্ভাব্য লেখকের প্রথম প্রকাশিত গল্প।এটি  মাহে-নেও ( আবদুল কাদের সম্পাদিত)  পত্রিকায় 1957 সালের আগষ্ট মাসে প্রকাশিত হয়।

এই গল্পে শেক্সপিয়ারসিনড্রোম স্পস্ট। স্পষ্ট বর্নাঢ্য বর্ণনা। বর্ণনার মানদণ্ড সময় নয়, স্মৃতি। বর্ণনা বিকশিত হতে থাকে বৃক্ষবিস্তারের মতো। প্রথমে গল্পকথক, তারপর জয়চরণ, আর জয়চরণের মুখে  কিংবদন্তীর বুনন। গল্পকার এখানে নিছক ফটোগ্রাফার। ফলে আমরা পাই লোকায়িত জীবনের যাপিত জীনববোধের জাবরকাটা গরম ফোটেজ, এক অখণ্ড সৌন্দর্যবোধ।

শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৪

কাঁটাতার

এক এলাকার কুকুর অন্য এলাকার কুকুর সহ্য করতে পারে না। কোনো কুকুর যদি ভুলক্রমে অন্য এলাকায় প্রবেশ করে তবে তার জন্য মহা নয় ভয়ঙ্কর বিপদ।
মানুষ তো  কুকুর নয়, কুকুর শব্দটি মানুষের কাছে গালি। সীমানা নির্ধারণে মানুষও কুকুরের মতো।

চোখের ভৌগোলিক স্বাধীনতা আছে, মানবিক স্বাধীনতা নেই, পাশবিক মানসিকতা থেকে   সীমানার কাঁটাতারের জন্ম।

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৪

প্রিয়ার আগে প্রিয়

যে প্রেম একা হয়ে যায়
সেই প্রেম আমার নয়
বৃষ্টি থেকে তুলে আনি এক হাজার পালক
মধ্য পথে এসে পথের সাথে হারিয়ে যাই
একবারে হারালে পথ দ্বিতীয় বার জাতিস্মর
প্রথম হারিয়ে পথ পেয়েছি খাইবার গিরিপথ
অনার্যরক্ত আমার শরীরের আনায় কানায় কানায় কালকেতু কান্দে অনার্যরক্তে নীরব নিরালায়

ক্যাফেইন উল্লাস এক থেকে দেড় হাজার মাইল অতিক্রম করে ছুটে আসে তোমার ঠোঁটে।
প্রেম,
তোমার একা হওয়ার সুযোগ নেই। তুমি হয়তো আজ স্টেজ করো না, মাতোয়ারা করো না যৌবনঠাসা কোনো যুবকের চোখ এবং চোখের নিচে শুয়ে থাকা কবর। কিন্তু শরীর ঝিমঝিম করার লোভে যে প্রিয় প্রতি রাতে ঘুমিয়ে পড়ে এ্যালকোহেলের দেশে, ঘুমেও তোমার চর্যা রোদ করেনি, করতে পারবে না।
 প্রিয় প্রেম,
তুমি এমনই নেশাকর! তৈরি করো বেঁচে থাকার নেশাদল!!
প্রেম,
তুমি প্রিয়ার আগে প্রিয়

মানুষের নেই কান

রাতযাপনে ফুলের বাসর
দিনযাপনে পাপ
গভীর পাপে সমাজ চলে
চোর পাইনা মাফ
মুখের সামনে নীতিকথা
কথার শেকড়ে ঘা
নকল চোখে রঙ্গিন গ্লাস
বাড়ছে মুখোশপরা
রোদের দেখায় পাখি ডাকে
ভোরের গভীর টান
সকাল হচ্ছে রোদের সকাল
ভোরের মহাপ্রয়াণ
সত্য কথা বাতাসে ভাসে
মানুষের নেই কান

বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৪

তোরা যাও সেন

সামনে ইদ। কোরবানির ইদ। শিশুদের কাছে ইদ মানে জামাকাপড় কেনা, নতুন জামাকাপড় সমেত নিজেকে  প্রদর্শনী করা। আজকের শিশু আগামীকালের ভবিষ্যৎ। এই ভবিষ্যতের কাছে কোরবানীর ইদ মানেও প্রদর্শনী। তবে জামাকাপড় নয়, মোটামোটি চারপাওয়ালা হালাল জন্তু। কার গরু-মহিষ কত দামী, কেমন হৃষ্টপুষ্ট তাই ভবিষ্যতের কাছে গবেষণাময় অহংকারের কারণ, আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। ইদের দিন সকালে শুরু হয় পশুনিধন অভিযান, শুরু হয় জীবিত পশুদের লাফালাফি, মাংসের বিপুলা আয়োজনে পূর্ণ হয় ঘরের ফ্রিজ!
কোরবানির ইদ বলেই বাড়ি যাবে গোধূলি।
গত রমজানের ইদে সে বাড়ি যায়নি। সারাদিন ঢাকা শহরের একটি নির্জন রুমে একা। চলে কেবল নিজের সাথে নিজের কথা।
কতক্ষণ জলের মতো একা একা কথা বলা যায়?
নিজেকে আড়াল করার অভিধান খুঁজে গোধূলি। ট্রিপটেন সেবন করে। চলে ঘুম-ঘুম খেলা। দুতলা বাড়ির সবটাই তার, তার একাকিত্বের একতলা। ঔষধের যৌবন ফুরিয়ে যায়, জেগে উঠে গোধূলির চৈতন্য। চেতনার চোখে সে দেখে --
 মা তার নতুন শ্বশুর বাড়িতে বেশ আমোদে আছে, বাবা তার নতুন বউয়ের সাথে পার করছে হানিমুন সময়। তাঁর খোঁজ নেয়ার আধটুকু সময় নেই তাদের খতিয়ানে। তাদের কাছে উৎসব আসে রঙ্গিলা সাজে আর গোধূলি দুংখের চুলায় সরবরাহ করে জ্বালানী।
গ্রামে জ্বালানী বেশ সস্তায় পাওয়া যায়। এই ইদে গোধূলি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে। তার বাবারও মমতার সদর দরজা হঠাৎ যেন খুলে গেল। ইদ উপলক্ষে স্পেশাল অফার। কোরবানির ইদ বলে কথা। বাবার গাড়ি করেই গোধূলির ইদের বাড়ি যাওয়া।
গোধূলির বয়স আঠারো। বয়স বৃদ্ধিতে দুংখের অবদান অনস্বীকার্য। তাইতো গোধূলির মানসিক বয়স কবেই আটাশের উপরে।
গ্রামের মাটিতে পা রাখার পর গোধূলির বয়স সাত-আটে নেমে আসে। শিশুবয়সী খেলায় মেতে উঠে। বউছি, কানামাছি, গোল্লাছুট, ক্রিকেট অর্থাৎ যখন যা সুযোগে আসে তাই নিয়ে ভেসে বেড়ায় চেনাজানা গ্রামের এপাশ-ওপাশ।
গোধূলি যখন প্রজাপতির ডানার মতো উড়তে থাকে তখন এক অচেনা তবুও চেনা দুটি চোখ করুণ রাগের ঘুড়ি উড়ায়। ঘড়িটা গোধূলির ডানায় আশ্রয় নিতে যায় কিন্তু বাস্তবতার নাটাই তাকে টেনে ধরে রাখে। আবেগমোড়ানো যে বোধ তা যে প্রবোধ মানে না! সামাজিক নিয়মকে কলা দেখিয়ে বন্যমন প্রকাশ করে চলমান সত্য--

-লিজা, শোন তো এনা
-হালা মোর সাথে আসে এত্তু কোনা পরে আস স, অক বাইত দিয়া আস
-না এলাই শোন
-তোরা ক্যাংকা আসেন?
-মুই ভালোই আসো, কিসু কবু?
-মুই যে তোমাক সারাদিন দেখ, তোরা কি স্যাটে জানেন না?
-হ জানয় তো, সবাই দেকে, তার কি হোসে?
-মুই ত সারাদিন দ্যাকো, কিশক তোরা বুজেন না?
-তোমাক মোর ভালো নাগে স্যাটে কি তোরা জানেন না?
-না জাননা, তুই দেকিস ক্যা?
-তোমাক মুই ভালোবাসো, সেই জন্য
-ভালা, তুই পড়িস?
-হ, মাদ্রেসাত যাও, বকরা ইদে সুটিত আইসো, আব্বা ফির জাবা মানা কসসেল, একন তোমার জন্য যাম
-ভালা, তুই যদি পড়া শ্যাস করি ঢাকাত ভালো চাকরি নিব্যা পারিস তাহলে তোক দি বিয়্যা বশিম
-ভালা, মোনে থোন কোল, পরে ফির ভুলি যান না
-ভালা, একন বাইত যা কুটকুট্যা আন্দার হোসে, ভয় নাগবি এ্যালা

লাটিম আনন্দে আনহা আনহা করতাছে। এতো কাল যার জন্য মনের জমানো কথাগুলো ছিল অকহতব্য, আজ তা সফল কুহুকথা। নদীর বয়ে চলা যেন আনন্দের ফুল্লুধারা। এতো সহজে বলা যায়নি সহজ কথাটি কিন্তু কী সহজে হয়ে গেল মানা!
লাটিম এখন পড়াশোনা করবেই। বনের পাখিকে খাঁচায় বন্দী করার ব্যাপারে সে প্রত্যয়ী। শহুরের খাঁচায় যে পাখি বন্দী থাকে সে পাখি যে পৃথিবীর খাঁচায় অমায়িক তা লাটিমের জানবার কথা নয়। আর সব কথা জেনে লাটিমরা জীবন চালনাও করে না, তাদের জীবন যন্ত্রের চেয়ে একটু নয় অধিকাংশ উপরে!

-আব্বা, মুই এ্যালাই কামত নাগব্যা নো, ফির পড়ব্যা যাম
-তাহালে তোক ভাত কাপড়া দিবি কে?
-মোরটা মুই করিম,তোমাক দিব্যা নাগব্যা লায়, তোরা যদি বেশী বিত্যাবিতি করেন তাহালে মুই কোল একবারে বাইত তে বাড়ে যাম, ব্যাটার মুক আর দেকপ্যা পাবা নেন, কয়া দিনু

গোধূলির সংক্ষিপ্ত সময় শেষ, শেষ জ্বালানী সংগ্রহের সময়। লাটিমের অসীম সময় শুরু। লাটিম রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে গোধূলিকে বিদায় জানাবে, স্মৃতিময়  শুদ্ধ চোখের জল গোধূলির পায়ে রাখবে, যে পা আস্তে আস্তে শহরের সেই জেলখানায় প্রবেশ করবে, প্রবেশ করবে চেনা তবুও অচেনা মানুষটির নিকোটিন রুমে!


-তোরা যাও সেন..? ফির কুন্দিন আস্মেন?
-আসিম.। ইস্কুল সুরটি দিলেই আসিম....

রাজা

অন্ধকারও ছিল একদিন পৃথিবীর রাজা
রাজা বদলায়, রাজ্য পুরাতন হয়েও আধুনিক সেনা

মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৪

সমাধান

মনে যখন কোনো সমস্যা আসে তখন সমস্যাকে বলি,
`প্রিয় বন্ধু,
তোমার সাথে রাতে আড্ডা দিবো।'
রাতে তার সাথে কথা বলি, সেও আমার সাথে আন্তরিকভাবে কথা বলে। একসময় সমস্যা দুর্বল হয়ে পড়ে। বুঝতে বাধ্য হয় আমার মন তার জন্য স্বাধীন এলাকা নয়। পরাধীনভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে স্বাধীনভাবে মরে যাওয়া স্বাস্থ্যকর। নিজের যোগ্যতা নিয়ে সমস্যাটি মারা যায়।
জয় হয় স্বকীয় আমির।
জয় হবো না কেন?
অসংখ্য শুক্রাণুকে পরাজিত করে পৃথিবীতে আসি।
জয় আমার রক্তে মিশে আছে, সমস্যা সমাধানের ইতিহাস আমার ডিএনএ- এর গোপন কথা! 

সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৪

আনা = স্রোত

আনা =স্রোত
বেবুজ = বোকা, নির্বোধ
হরদম = একের পর এক
ফুংডা = যৌন লিপ্সায় নিযুক্ত ব্যক্তি
টাক্কি= টয়লেট [ সাধারণত বাঁশ, কলা পাতা, লোকজ কাঁচামাল দিয়ে তৈরি ]
আরা = ঝোপঝাড়, ছোট জঙ্গল
হাইছ = ঝোপঝাড়, বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা
নামাত = বাড়ির ভাঁটা জায়গা, নিচের অংশ
কুনাইচ্ছা= আড়াআড়িভাবে
হিউজ্জা = দূরে যা [ তাচ্ছিল্য অর্থে ]
তফাত যা < ত ফা তুন = দূরে যাওয়া, দূরে যাওয়ার নির্দেশ
হেসা= সত্য, হেসান্তি = সত্যি
 তরতরা = সবজি
 হাত হওয়া = সন্তুষ্ট হওয়া
ডাইলা = মাথা মুণ্ডু, মাথায় চুল নেই এমন
ফাইলা= মাটির পাতিল
হারি কাফুর < হাড়ি কাপড় < শাড়ি কাপড় [ `স'  `হ'তে রূপান্তরিত ]
ছায়া = শাড়ির নিচে মহিলারা লুংগির মতো যে কাপড় পড়ে, পেটি কোট
ছয় = শিম
আস < হাঁস [ `হ ' বর্ণ `আ' বর্ণে উচ্চারিত ]

রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৪

সৃষ্টি

আকাশ ফেটে রক্ত ঝড়ে
পৃথিবী দেখে বৃষ্টি
মেঘের নিচে রোদের নাচন
মৃত্যু শেখায় সৃষ্টি 

শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৪

মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখা

আজ( 11,10,2014,10:5) আমার মৃত্যুদিবস হতে পারতো!
অস্বাভাবিকভাবে  মানুষ যেমন বেঁচে থাকে আমিও বেচেঁ আছি। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হলো। আমার পাশের সিটের মানুষগুলো মুনকার-নাকিরের সওয়াল জবাব দিবার জন্য হয়তো প্রস্তুতি নিচ্ছে!
আর আমি!
প্রতিদিনের মতো আজকেও জন্মদিন পালন করছি! অনেক আগে থেকেই প্রতিটি দিনকে শেষ দিন মেনে প্রতিদিনের আনন্দ-দুঃখ ইনজয় করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
মহাকালের কাছে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই, প্রত্যাশা আমার চোখের সামনের আশা ও স্বপ্নের কাছে, প্রত্যাশা এইমাত্র মনের ভেতর খেলা করা ফুলের কাছে।
আমি আজকে চলে গেলে আমার কিছুই হতো না, তারেক মাসুদের কিছু হয়নি। কিন্তু তারেক মাসুদের শুন্যতা বাংলাদেশর যোগাযোগ ব্যবস্থা পূর্ণ করতে পারবে!!
মৃত্যু থেকে বেঁচে আসা সৈনিক চোখের জলকে পুঁজি করে আপনাদের (যোগাযোগ ব্যবস্থা  যারা ভালো করতে পারেন) অনুরোধ করে বলছি,
প্লিজ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে আপনারা আন্তরিক দৃষ্টিপাত করুন।
মৃত্যু আসবে কিন্তু নিশ্চিত মৃত্যুর যমদূতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট!
আমরা তো নয় মাসে দেশ স্বাধীন করতে পারি, আমরা কেন পারবো না যোগাযোগ ব্যবস্থাকে  ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান দিতে! 

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৪

সন্ধ্যার প্রকৃতিতে চাঁদনী রাত

বালি চকচক করছে। বালির উপর জোছনার কচকচ আওয়াজ। বালি আর জোছনার বিছানায় শুয়ে আছে মধ্য রাতের কুকুর। কুকুরের চোখ দুটি বন্ধ, পা সামনের দিকে সরলরৈখিকভাবে স্থির। কালো পিঁপড়া কুকুরের  শরীরের দাঁরিয়ে বান্দা খেলছে। কুকুরের কান মাঘনিশীথের পাতার মতো একটু একটু নড়ছে। তাতে পিঁপড়ার মনে কোনো পুলিশীভয় তৈরি হচ্ছে না। কারণ পিঁপড়া জানে না কান নড়ার অর্থ কী!
বালি, জোছনা, পিঁপড়ার এই লাইভ শো দেখে তারেন  অবাক নয়। অবাক হওয়ার কারণ অন্য কিছু। অন্য কিছুটা হলো  মধ্য রাতে কুকুরের ঘুম।
কেন সে ঘুমাচ্ছে?
তারেন  গ্রাম্য কলেজের মাস্টার। গ্রামের মানুষেরা অধ্যাপক, প্রভাষক বুঝে না, মাস্টার বুঝে। মাস্টার শব্দটি তাদের অভ্যাসে, তাদের ভাষিক রক্ত প্রবাহে। এই শব্দটির আড়ালে যে ভয়ের বাণিজ্য লুকিয়ে আছে, লুকিয়ে আছে হাজার বছরের শোষণের স্রোতধারা তা তারা বুঝতে চায়না। গ্রামের মানুষের পীর সাবের নাম হুজুগ, গ্রামের মানুষের কেবলার নাম নগদ!
তারেন আজ রুমে যাবে না, যেতে পারবে না। তার রুমের দাপটে বাসিন্দা আজ মৌমাছি।
এইতো কিছু দিন আগে মৌমাছি রুমে আসে। ধীরে ধীরে বাসা বাঁধে। তারেন মাস্টার সুখবোধ করে। ভাবে প্রকৃতির কত কাছাকাছি সে। প্রকৃতিকে বাড়ির ছাদে, ড্রইংরুমে নিয়ে আসার চেষ্টা এই সময়টার একটা বাতিক।
মৌমাছির চাক বড় হচ্ছে, বড় হচ্ছে তারেন মাস্টারের দৈনিক সুখবোধ। তার মনে ভেসে উঠে চাক ভাঙার রসালো দৃশ্য। চাক ভাঙার সময় হয়তো তার দুই-এক জন প্রিয় বন্ধু সাথে থাকবে। তারা চিয়ার্স করবে। রুমটা প্রাকৃতিক আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এন্ড্রয়েড ক্যামেরা ধরে রাখবে বিরল কিছু সময়।
কিন্তু প্রকৃতি ক্ষেপে উঠলো। বিনা নোটিশে তারেন মাস্টারের চোখে আক্রমণ। মমতাময়ী মৌমাছি এমন রেগে যেতে পারে!
আহত চোখে রুমে থাকার সাহস করেনি  মাস্টার। আফ্রিকার মেয়েদের ঠোঁটের মতো তার ডান চোখটি ফুলে উঠেছে।বাম চোখটি  এখনো অক্ষত। এই চোখটিকে অক্ষত রাখার জন্যেই  তারেন মাস্টারের রুমে না ফেরার অভিযান, কুকুর, জোছনা আর পিঁপড়ার সাথে কিছু মুহুর্তে ভাগাভাগি।
হঠাৎ কুকুর ঘেউ ঘেউ করে চেচামেচি শুরু করে।
অ, কুকুর টি তাহলে ঘুমাচ্ছিল না, রেস্ট নিচ্ছিলো। রাতে কুকুর রেস্ট নেয় না।
তাহলে?
প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের সাথে চুপিচুপি কথা বলার কোনো পায়চারী হয়তো।
অলস সময় অনেক ভাবনা তৈরি করতে পারে। তারেন মাস্টারও ভাবছে, হতে পারে আগাছা কিংবা পরগাছা ভাবনা। ভাবনা অলস সময়কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কুকুরের ঘেউ ঘেউ আওয়াজ থেকে দূরে চলে আসে তারেন!
এইভাবে আর কত দূরে চলে আসবে তারেন মাস্টার?
নিজের শিশুমনটাকে কতকাল সান্ত্বনার চকলেট দিয়ে পুষ্টিগুণ অক্ষুন্ন রাখবে --
When I find myself in times of trouble
Mother Mary comes to me
Speaking words of wisdom, let it be
And in my hour of darkness
She is standing right in front of me
Speaking words of wisdom, let it be
Let it be, let it be
Let it be, let it be
Whisper words of wisdom, let it be

বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৪

ব্যথানাশক

অভিযোগ বিষাক্ত(বিষ মিশ্রিত)।অভিযোগকারী বিষধর(বিষ ধারণ করে যে)। অভিযোগের সমুদ্রে বসে আমি করি তৃপ্তির মেডিটেশন। আমি জানি, তৃপ্তি ব্যথানাশক।
Accusation is toxic. One who complaints having adder. In the realm of accusation I am busy myself in the content of satisfactory. 

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৪

দুর্ভোগ

যে বৃষ্টি নিয়ে আপনি কবিতা লেখেন
সেই বৃষ্টিই আমার দুর্ভোগের কারণ
You write in poetry on rain
That rain makes my disaster, episode of hell 

রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৪

Let there be light

ভোর মানে কুয়াশার ললিত চাহিদা। প্রতিটি ভোরে যদি কুয়াশা ফোটে একাকার হতো। প্রেমদহন গেয়ে যেত সাঁওতালী গান।
জন্মের সাথে মৃত্যুর শোকসংবাদ। মৃত্যু মানে তালিকাভুক্ত মাটির খাবার। রূহ তরতাজা হয়ে মগ্ন থাকতো কালিদাসপাপে।
পাপ আর পূন্যের তালিকায় জীবন হচ্ছে ভার!
অথচ
জীবন নিয়ে খেলছে সদা অদৃশ্য ডাকাত!
আলেয়ায় পা রাখে না, মন রাখে আজকের সর্দার
তবুও বলে যায় হাসির চিৎকার Let there be light! Let there be light

শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৪

স্বার্থপর

Selfish = Self + -Fish,
Self = One's own self, His better self
Fish = Belonging to

স্বার্থপর = স্বার্থের উপর < স্ব অর্থের উপর

স্বার্থপরতা গুরুত্বপূর্ণভাবে আবশ্যক। স্ব অর্থ বা নিজ সম্পর্কে যার ধারণা পরিষ্কার না, তার মাধ্যমে সমাজের উপকার হতে পারে না। স্বার্থপর হওয়া মানে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার ব্যাপারে মৌলিক পদক্ষেপ। স্বার্থপরতা প্রতিটি প্রাণির জন্মগত ও স্বাভাবিক আচরণ।
স্বার্থপরতা আর ভোগবাদী মানসিকতা এক নয়।
আমাদের প্রত্যেকের শরীরে একটি নিদিষ্ট তাপমাত্রা থাকে। এই নিদিষ্ট তাপমাত্রাকে আমরা জ্বর বলি না। বরং এই নিদিষ্ট স্কিলে তাপমাত্রা যদি শরীরে উঠা-নামা না করে তবেই ক্ষতিকর।
তাপমাত্রা যখন নিদিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করে আমরা এই বর্ধিত তাপমাত্রাকে জ্বর হিসাবে সনাক্ত করি যা কেবল ক্ষতি কর নয়,  ভয়ানক ভাবে ক্ষতিকর।
স্বার্থপরতা যখন নিদিষ্ট মাত্রায় উঠা-নামা করে তখন তা কল্যাণে মঙ্গলময়। যখন মাত্রা অতিক্রম করে তখন তা ভোগবাদী স্রোতের গতিপথ।
তাই
স্বার্থপরতা জিন্দাবাদ,
ভোগবাদী নিপাত যাক! 

আমিও একদিন মানুষ ছিলাম

ইদানিং কানে একটু কম শুনি
শিশু বয়সের অনেকটা সময় যেমন কম শুনতাম
চোখেও কম দেখি
যদিও সূর্যের তাপ, চাপ, আলো আগের চেয়ে অনেক বেশী
মাটির দিকে চোখ রেখে হাঁটতে হাঁটতে অনেক আগেই ভুলে গেছি আকাশ বলে কিছু একটা ছিল
চোখের জলও বিক্রি করে দিয়েছি মাহাজনের কাচঘরে
আমি এখন অবাক মানুষের মতো চোখ দিয়ে কথা শুনি
কান দিয়ে ঘ্রাণ নেই
মন পেতে প্রার্থনা করি অদৃশ্যের কাছে
অদৃশ্য কোনো সাংবিধানিক গন্তব্য নয়
চিলেকোঠায় বসে বৃষ্টির শব্দ শোনার মতো সবল
শব্দ শোনার মতো সরল
মনের নগ্ন মাঠে জায়নামাজ পেতে রাতের গভীরে মোমবাতি জ্বালাই
আগুনের সাথে কথা কই
পরিচয়হীন কথা
মানুষের কাহিনি যতসব
আমিও একদিন মানুষ ছিলাম
হাত-পা চোখ সমেত মানুষ
আমার ছিল নদীভরা অহংকার
ফুলে পূর্ণ ঘ্রাণ
কিছু নেই আজ, কিছু থাকাতে জীবন থাকে না

শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৪

রাগ

আমার উপর কেউ রাগ কিংবা অভিমান করবে এটাই আমার যোগ্যতা
Some one may be anger on me is my quality credit

মানুষ

মানুষ নিজের মতো করে অন্যকে বিবেচনা করে; অন্যের মতো করে নিজেকে বিশ্বাস করে
Man considers others likely his brainbox and believes himself in the eye of others

বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৪

মস্তিষ্ক বনাম গবেষণা

সেন্সর এ্যারিয়া মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। সেজিটাল সেকশন আরেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এমন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে মানুষের মস্তিষ্ক (The brain, together with the spinal cord, constitutes the central nervous system. It is responsible for monitoring and regulating unconscious and voluntary action and reaction in the body. It is also the intellectual center that allows thought, learning, memory and creativity)।
মন বলতে যা বুঝানো হয় মস্তিষ্ক অনেকটা তাই। কেননা অনুভূতির সাংকেতিক ডিজিট সাজানো থাকে মস্তিষ্কে। ফলে মানুষ সাদা- কালো, টক- মিস্টি প্রভৃতি সনাক্ত করতে পারে।
প্রাথমিকভাবে মস্তিষ্ককে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় --
ডান মস্তিষ্ক
বাম মস্তিষ্ক।
ডান মস্তিষ্ক যাদের খুব বেশী সক্রিয় তারা ডানপিটে স্বভাবের। আর যাদের বাম মস্তিষ্ক সক্রিয় তাদের গাম্ভীর্য পরিমাণ আলোচনা করার মতো। তবে আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশী অপছন্দ করে মুখস্থ করা। যখন আমরা শুধুই মুখস্থ করতে থাকি তখন আমাদের সৃজনীশক্তি হ্রাস পেতে থাকে।
এক জোড়া সক্ষম চোখকে যদি কালো ফিতা দিয়ে বেধেঁ দেয়া হয় তাহলে একমাস পর চোখজোড়া অক্ষম হয়ে যাবে। তেমনি ভাবে মুখস্থকরণ ফিতা দিয়ে আমাদের মস্তিষ্ককে বেধেঁ দেয়া মানে এর মূল কার্যক্ষমতা বিনষ্ট করে দেয়া।
অনেক শিক্ষা ব্যবস্থায় দারুণ কৌতুক হয়ে থাকে। সৃজনীশক্তি যখন পুরোপুরি হত্যা হয়ে গেছে তখনই গবেষণার পবিত্র দায়িত্ব দেয়া হয়। বেশ জমকালো গবেষকও প্রোডাকশন হয়ে থাকে।
কীভাবে?
গবেষকরা রাতের আঁধারে ` কাটপেস্ট ', ` কপিপেস্ট '--এর পতিতালয়ে যাওয়া-আসা করে।  তাতে কাজও উদ্ধার হয়, অর্থনৈতিক ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি খ্যাতির ক্যালরিও সমৃদ্ধ হয় বেশ।
সময় এইভাবেই চলে যেতে পারতো যদি সময়ের প্রতিটি বিন্দু মিজানের পাল্লায় না তোলা হতো। সময় প্রয়োজনে নিষ্ঠুর হতে পারে ; পারে বিধায় `কাটপেস্ট' করা জামানার হুজুরদের গবেষণা লাল কালি দিয়ে ক্রস চিহ্ন এঁকে দেয় আর উচ্চারণ করতে থাকে
``সাবধান! এটি কাটপেস্ট, কপিপেস্ট এলাকা "

মানুষের সন্ধানে

পৃথিবীতে যদি একজন মানুষের সন্ধান পেতাম তাহলে তাঁর কাছ থেকে দীক্ষা নিতাম কীভাবে মানুষ হতে হয়!

If I meet a man by chance, I will learn by heart how to be a man!

বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০১৪

শুষ্ক কেন?

যে শুষ্ক সে-ই কেবল রসের মূল্য বুঝে ( কুরানের অনেক বর্ণনায় নহরের বা মিঠাপানির রসালো বর্ণনা আছে; গ্রীকপুরাণে বসন্ত সমেত উন্মুক্ত প্রান্তরের বর্ণনা ব্যাপকভাবে; ``আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে" ভারতীয় মনুষ্যচিন্তায়; আইহনের রাধার কান্না কৃষ্ণের জন্য; ক্যারিবিয়ান সাহিত্যে উন্মুক্ত আকাশের বন্দনা)।
একবার রস-কস হীন হলেই তো রসের মূল্য ধারণ করা যায়(The more I rustic the more I civilized)। ধারণার চেয়ে ধারণ করা ফরজে আইন জাতীয় বিষয়।
 ধারণায় কথা বলা যায়, ধারণে বিচারের ক্ষমতা তৈরি হয় যে বিচারে লোক বিশেষের মতামত নয়, মত বিশেষের সভ্যতা পাওয়া যায় ....

আলাস্কা

মনে করতাম বাতাসের সমগোত্রীয় কিছু
যখন শরীরের তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে সহ্যের গতিসীমা
তখন তোমার সুশীতল পরশ আমার কোষাগারের জমা করবে স্নিগ্ধতার আলাস্কা
আবার যখন শৈত্য প্রবাহে তাপমাত্রা নেমে আসবে হিমাঙ্কের নিচে
তোমার তহবিল থেকে উত্তোলন হবে উষ্ণতার পর্যাপ্ত ব্যালেন্স আমার জন্য
কেবলই আমাদের জন্য
বাস্তবে দেখলাম সিনেমার অন্য দৃশ্য
তুমি তো তুমি আর আমি তো আমি
আঙ্গুল টু আঙ্গুল কাছাকাছি, পাশাপাশি
তবুও যেন অনেক দূরে আছি, দূরত্ব নিয়ে বাঁচি
আমার স্থলভাগে যে টর্নেডোর মিশন পাঠাও এক থেকে একাদশ
তখনই আমি দ্বাদশ ব্যক্তি হয়ে লুকিয়ে পড়ি মেঘের আড়ালে
পরিসেবার আশায় নয়, প্রতারিত হবার বাসনায়
এক আমিকে একাধিকবার দেখি আয়নায়
কাজ আমার বেড়ে যায়,
কল্পনাকে তখন হাতে ধরে দিয়ে আসি পাচারকারীর কাছে
তোমার চোখটা তখন জয়মাল্য মুখোপাধ্যায় দৈহিক কাভারে

ধর্ম পুরনো বিধায় ধর্ম মানা হয়ে উঠে না তোমার
অথচ কী মহান তোমার সৌন্দর্যের বাসি চেতনা
চোখের ভালো লাগাগুলো কী সুন্দর থরে-বিথরে সাজানো  মনের গেস্টরুমে
আর আমি তোমার মনের বেডরুমের এক নয়, দ্বিতীয় বাসিন্দা
যেদিন একা হয়ে যাবো, একা করে তুলবো তোমার মনের আঙিনা
জন্ম একবারই, মৃত্যু অঙ্গাণু অঙ্গাণু বহুবার
শুনেছি মানুষের মৃত্যু ইশ্বরের আযান

মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

রাতের পাখি

রাত যখন সঙ্গীহীন হয়ে পড়ে
প্রিয়হারা এক পাখির কান্না ঘুমের কানে লাগে
অন্ধকার কেটে পাখি জীবন খুঁজে
জীবনের পাশে মৃত্যু মিছিল করে উদাত্ত আহবানে
রাত ফুতুর হয়ে যায় সময়ের হুকুম মেনে
ফুরিয়ে যায় পাখির জীবন
ললিতা
আপেল খাওয়া আর সিগারেট পান করা একই কথা
ফরমালিন আর নিকোটিনের খেলা
ধবংস যেন অনিবার্য
ধবংস হয়ে যাই অবাক করার মতো
পৃথিবীতে চলে ভোরের আলো
রাতের পাখি অসহায়ভাবে নত

সুন্দর

কালো মানে অসুন্দর না, সুন্দর মানে স্বাভাবিকতা
Black does not mean to imply something unfair, fair is the natural stream.  

রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কবে

প্রেমিকার কবর প্রেমিকের মনে, প্রেমিকের কবর প্রেমিকার প্রাণে
Grave is the mutual cottage of the lovers 

শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

অত্যন্ত

অতীত নিয়ে পুষ্টিকর কথা বলেন দুই মহান --
যাঁদের বর্তমান সমৃদ্ধ,
যাঁদের বর্তমান সমৃদ্ধ না

শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

problem

Money!
Money is the problem in Sierra Leone
মাটির পৃথিবীতে তারাও মানুষ
কারনে বদলায়, মরে গেলে বেঁচে যায় 

বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

উরুসেভস্কি

হাসির বাতাস হয়ে তুমি ঝড়ে যাও
মেঘ হয়ে আনাগোনা করি আকাশ থেকে পাতাল
তোমাকে গন্তব্য মেনে কালো যে জিপটি আসছে পেছনের কংক্রিট রাস্তায়
তার জন্মের অনেক আগে আমার মৃত্যু হয়েছিল বহুবার
তাপমাত্রার উঠা-নামার সাথে তোমার হাসির এক পরকীয়া সম্পর্ক
তাই রোজ সকালে স্নান করি, বরফ রাখি অন্তরের অন্তরালে
বরফও আজকাল হিমানী হতে পারে না,
হেকেটি দেবী হিমানী হয়েছিল
কোনো কথা বলেনি `একরাত্রির' ঝড়ের পাড়ে
এমন হিমানীর প্রার্থনায় গভীর ধ্যানে সময় কাটাই
কিন্তু সময় আমাকে কাটে, কেটে ফালি ফালি করে ,
যোজন যোজন মোহনভোগ তার
হাসতে নাকি জানে না কেউ, কে বলেছে ভাই
হাসির ভাইরাস আমাকে ডোবার,
আমার ডুবন্ত শরীরে ভেসে উঠে সময়ের উরুসেভস্কি গাছ

বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সভ্যতার পিটিশন

মানুষ একে অন্যের দাস নয়, অন্নের দাস
 আব্বা কই আরেক কথা
`যে করে অন্যের চিন্তা, সে করতে পারে না অন্নের চিন্তা'
তখন মনে পড়ে আব্বার বাবার কথা
`যে ক পরের কথা, হে হারা হেতা'

এইভাবেই চিন্তার সাথে চিন্তা, বাবার সাথে তার বাবার বিস্তর ফাঁরাক
চিন্তার ফাঁকে গড়ে উঠে সভ্যতার পাহাড়
অসভ্যতা অনেকবার আন্দোলন করে একবার সভ্য হয়
আমার বাবা কিংবা তার বাবা কোনোদিন  সভ্য হতে পারে না

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

খসেপড়া

চুল খসে পড়ে, একটি চুল। চুলও একটি প্রাণি। প্রাণের সাথে বসবাসরত কোনো কিছু জড় হতে পারে না।
বইয়ের পৃষ্ঠা খসেপড়া চুলের মাঠ। বাতাস তাকে নিয়ে খেলছে। স্থানান্তরে রূপান্তর ও দেশান্তর হতে বাধ্য।
প্রথমে খেলার সামগ্রী, এরপর খেলোয়াড়, তারপর খেলারাম।
অভিনয়টা আসলে এমনই!
প্রথমে ফেনার মতো ভাসতে থাকা পরে জল হয়ে ফেনা তৈরি করা।
একটি চুল আজ একা, সেও একাধিকের একা হওয়ার কারন হবে।

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ইচ্ছে হলে আসতে পারো

ইচ্ছে হলে আসতে পারো
হাসতে পারি আবুল তাবোল বেতাল
আমাদের চুলায় প্রণয়আগুন
পৃথিবীর আজ আকাল
নদীর স্রোতে চর জেগেছে
মানুষের নেই হুশ
পুলিশপাড়ায় কালোবাজারি
হুজুর নিচ্ছে ঘুষ
তোমার চোখে ফুলের নাচন
আমার চোখে ঘুম
রাষ্ট্র একটা রাঘবপিণ্ড
শান্তি হচ্ছে গুম 

রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সেকেন্ড মাস্টার

সেকেন্ড মাস্টারের সাথে আমার পরিচয় ``একরাত্রি" (জ্যেষ্ঠ 1299) গল্পপাঠে। তিনি এই গল্পের নায়ক। তাঁর বাবা চোধুরী-জমিদারের নায়েব। বাবার কথা না মেনে চলাতেই তিনার গৌরব।
নায়েব সাহেব চাইতেন তাঁর একমাত্র উত্তরাধিকার জমিদারি-সেরেস্তার কোনো একটি পোস্ট দখল করুক। কিন্তু ছেলে তাঁর জয়নুল আবেদীন আর আমগো ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র মতো নিজসিদ্ধান্তে অটল। তাঁর পেশাচোখ পড়ে বাড়িপলাতক নীলরতনের উপর। নীলরতন কালেক্টর সাহেবের নাজির হয়েছে। তিনি নাজির যদি না হতে  পারেন জজ-আদালতের হেডক্লার্ক তো হবেনই।
আমাদের বেনামী মাস্টার যে আদালতপাড়ায় নিজের অবস্থান শক্ত করার ব্যাপারে প্রত্যয়ী তারও একটি পরিবেশগত কারন আছে। কারনটা হলো নায়েব সাহেব আদালতজীবীদের অত্যন্ত সম্মান করিতেন। মাস্টার সাহেবের শিশুমনও তাদেরকে তেত্রিশ কোটি দেবতার ছোটো ছোটো নূতন সংস্করণ হিসাবে পূজা দিতে শুরু করে।

একসময় তিনি একটি মহৎ কাজ করেন। বাড়ি থেকে কলিকাতায় হিজরত করেন। স্বপ্নবিলাসী মন আলাপবিলাসী লোকের ঘরে আশ্রয় নেয়।
 কিছুদিন মোটরবাইক নিজতেলে চলিল। তারপর আবার মালিকের কৃপা লাভ করিল।
কলিকাতার হাওয়া-বাতাস আমাদের মাস্টারের স্বপ্নসুর বদলে দেয়। মাস্টার এখন বিপ্লবের গান গান। পথে পথে বিজ্ঞাপন বিলি করেন। দেশ উদ্ধার করতেই  অইবো -- এই তার প্রতি পদক্ষেপের জিকির। হুজুরেরাও তাঁরে বেশ তালিম দিতে থাকেন।

তালিম নেয়া আর দেশউদ্ধারের কাজে ব্রত হয়ে সময় চলিতে পারিত কিন্তু চলিল না!

বাপজান তাহার মারা যান ( হরি বল, বল হরি)!

মাস্টারের মনে পড়ে মাতা আর দুই ভগিনীর কথা যেখানে সে-ই প্রধানকর্তা। বাস্তবতা মাস্টারকে করাতকলের কাঠের মতো ফালি ফালি করে। বহু কষ্ট করে চাকর হবার যোগ্যতা অর্জন করেন। নওয়াখালি বিভাগের একটি ছোটো শহরে এনট্রেন্স স্কুলের সেকেন্ড মাস্টার।

হ্যাঁ, এই সেকেন্ড মাস্টারের সাথেই আমার পরিচয়।

আরেকটা কথা, সেকেন্ড মাস্টারের তলে তলে টেম্পু চালানোর কথা কিন্তু আফনাগোরে কই নাই। হুনছিলাম যে মানুষ কারো দোষ গোপন রাখে আল্লা নাকি হাশরের দিন তার দোষ গোপন রাখবে। এহন তাইলে কী করমু?
যা দেখি, কইয়া দিমু!
মাদার তেরেসা, নেনসন মেন্ডেলা ( A long walk to freedom এর পিতা) জাহান্নামে যাইবো, আমি জান্নাতে গিয়া কী করমু!

কাহিনিটা হলো রামলোচনবাবুর স্ত্রীর সাথে মাস্টারের পরকীয়া সম্পর্ক। রামলোচনবাবু সরকারি উকিল। উকিলের বাড়িতে আমাদের মাস্টার সাহেব ভারতবর্ষের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে বেশ আয়েশবোধ করেন। কিন্তু আইহনজ্ঞানীর জানবার কথা নয় কৃষ্ণ কেন বাএ বাঁশী কালিনী নইকূলে।
সুরবালার চকিত চাহনি মাস্টারের মনকে উতলা করে , চুড়ির টুংটাং শব্দ তাঁর মনে জাগ্রত করে বেদনামানিক, পায়ের একটুখানি শব্দ তাঁকে অতীতচারিতার রঙে সাজিয়ে তোলে ( দূরে বহুদূরে / স্বপ্ন লোকে উজ্জয়িনীপুরে / খুঁজিতে গেছিনু কবে শিপ্রানদীরপারে/ মোর পূর্বজনমের প্রথমা প্রিয়ারে)।
রামলোচনবাবু বড়ো মোকদ্দমায় কিছু কালের জন্য বাড়ির বাইরে যান। কৃষ্ণমন মনে করে এখনই সুযোগ। রাত্রি তখন একটা- দেড়টা। পুকুরপাড়টি  যেন যমুনা নদী, আর আমাদের সুরবালা এবং মাস্টার মশাই যেন নৌকা খণ্ডের রাধা-কৃষ্ণ।
শিশুকালের দুজনা চিরকালের এক মোহনায় সাঁতার কাটতে চায়( সুরবালার সঙ্গে একত্রে পাঠশালায় গিয়াছি, এবং বউ-বউ খেলিয়াছি)।
 মন মানতে চায়না সময়ের শৌর্য-বীর্য ( ঠিক সময়ে ঠিক কাজ করতে কাহারও মনে পড়ে না, তাহার পরে বেঠিক সময়ে বেঠিক বাসনা লইয়া অস্থির হইয়া মরে)।
তারপর আমাদের কৃষ্ণ মহাপ্রলয়ের তীরে দাঁড়াইয়া অন্তত আনন্দের আস্বাদ লাভ করেন। রাত্রি শেষ হয়ে যায়, ঝর থেমে যায়, জল নেমে যায়, সুরবালা কোনো কথা না বলে চলে যায় ( silence is the most powerful crying), চলে আসেন আমাদের মাস্টার সাহেব....

অনাদরে

From the acute agony of being apart
Comes the flame that burns the heart

বিচ্ছেদের আগুন বিরহে অনল
প্রেমশোক মরে না স্মৃতির মতোন 

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

তোমার জন্মের আগে আমার মৃত্যু

জ্ঞানের চেয়ে পুষ্টিকর কোনো খাবার নেই
নেই কোনো আরামদায়ক প্রেমিকা
প্রেমিকার ঠোঁটের নিচে পিঁপড়াদেহে বসে থেকেছি
তার হাসির লাভা পুড়িয়ে দেয় আমার আস্ত শরীর
আমি গলে যেতে যেতে কান পেতে শুনি তার হাসির আরেকটি শব্দ
হয়তো
আমারই মতো আরেকজন গলতে গলতে  নিশ্বাসের চেয়েও দীর্ঘ হচ্ছে
গলিত তরল একদিন দেহ পাবে
সময়ের চোখে দেখবে তোমার হাসির বায়োস্কোপ
জানো তো,
বায়োস্কোপে যতখানি দেখা যায় তার চেয়ে বেশী নেশা ধরায় 

শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

অন্তত

মানুষকে অবিশ্বাস করা পাপ
পাপীদের উপর আস্থা রাখা অন্যায়

It is crime not in trust over the man
Tenfold sin when an unfair turned into persona grata 

ব্রথেল

তোমার ঠোঁটের মতো প্রিয় কোনো কম্পন হৃদয়ে আমার জমা নেই
তবুও তোমার হৃদয় গলনাঙ্ক ব্রথেল


Sweet sound of your lip, deemed vibration of yours is acute afar from the storage of mine
But yet your heart is brothel alike, your heart in melting point

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

হাঁস আর জল

জলের সাথে হাসের নিত্য উঠা-বসা
জলের সাথে হাসের প্রেম হয়না
প্রেম মনের মাজারে মনের আরাধনা
প্রয়োজন প্রেম নয়, পারিবারিক বায়না 

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ব্রতচারী মেঘ

জীবনের স্বপ্ন
রঙিন স্বপ্ন কাঠপেন্সিলে একেঁ মেঘনার পাড়ে সূর্যস্নানে যায়
সূর্যস্নানে যায় ব্রতচারী পথিক
রাতে উঠে থেকে থেকে মহিমাম্বিত হাঁকডাকের মেলা
মানুষ নিয়ে থামে না তোমার খেলা
থামবে না তোমার খেলা
কতকাল একতালে বহুতল ভবন
ডেস্কের আচার্যে এনিওয়ে আলামত
আকাশ-কুসুম স্বপ্ন থেমে থাকার নয়
থেমে থাকে আইহনের যৌনরাগ
 তাইতো রাধা উতলা বারংবার
আকুল শরীর তার বেআকুল প্রাণ
কৃষ্ণ সাধু নিয়ন্তা
রাধিকামোহন ঘুমাতে পারে না
কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি কালিনী নইকুলে
সিংহাসন তোমার
তোমার প্রজন্ম মরে ইচ্ছাকৃত ভুলে

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

রাধার কান্না



মূল : হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও
অনুবাদ : এমরানুর রেজা

সবুজ স্বপ্ন আর সুরেলা আলিঙ্গনে ছিল আমার জীবন
রঙধনু চলে গেল, সূর্য মিশে গেল
চলে যাওয়ার, মিশে যাওয়ার সময় নিয়ে গেল প্রোথিত সকল স্বপ্ন, সুর
কেবলই রয়ে গেলাম আমি শরতের পাতাহীন গাছ হয়ে
এই শুষ্ক পৃথিবী দুঃখ নিয়ে রাস করে
আর দুঃখ আমাকে নিয়ে
মৃত্যু আসে না সাহসী দুংখের কাছে, দুংখের পাশে
মৃত্যু একবার তুমি রক্তের কম্পন বাড়াও
আমাকে নিয়ে চলো
চলন্ত সুখ-স্বপ্নহীন আমি ভাঙা নৌকার মাঝি

সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বিভ্রম স্মৃতি

ঢেউয়ের তালে যে পা ছুটে আসবার কথা
সে পা ছুটে গেছে সাগরের পরপারে
এক উদাস দুপুর পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে নদী ও হাঁসের খেলা দেখে
পুঁটি মাছের মিছিল
শ্যাওলার কোলাহল
চোখে এক বিভ্রম স্মৃতি, স্মৃতির জাদুঘর
সময়ের মহাজন অস্ত্র দিবে, খাদ্য দিবে না
ক্ষুধার্ত আবেদন জাগ্রত করে রাগের নিউক্লিয়াস, মেমব্রেন
চোখে গত শতাব্দীর লিটলবয়, ফ্যাটম্যানরাগ
মানুষের জন্মদিন কবে   মা
তোমার ছেলে পশুদের কার্নিবাল দেখে উজ্জীবিত হয়েছে
ঢেউয়ের এ্যারিনায় মানুষের মৃত্যু তারিখ লিখবে
হার্ডলাইনে বাজবে ভরতের গীতবিতান
কয়েক প্যাক ইথানলে সজ্জিত হবে মনের বাগান
মানুষের জন্মতারিখ আছে কী মা
মানুষের ধর্মতলায় মানুষ তো পশুর শিরোনাম পড়ে
প্রাণির মৃত্যু হলে হয়তো মানুষ পেতো মৃত্যুর ইতিহাস
ইতিহাস নয়, ভুলের সংগ্রাম

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সময়চক্র

অতীত নিয়ে বর্তমান। বর্তমান যখন অতীত হয়ে যায় তখন অতীতের অতীত মনে ততটা রেখাপাত করে না।
সময় তো একটি গোলাকার বিষয়। যারা সময়ের চক্রাকারে গতিশীল তারা অতীতবিলাসী হতে পারে না।
সময়চক্র চুরাবালি কিংবা জলের চক্রের চেয়েও গতিশীল!

Present is the collection of the past.
When present is past, the past of the past is not so memorial platinum.
Time is a round flow and its motion is strong enough . So one who strolls along with the time having no ability to drink the past memories.
Just because time is  powerful magic of  nature .

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

হাউঅন

পূর্ণিমার চাঁদ নাকি ঝলসানো রুটি
আরে শালা
হাউঅনের লাগি পৃথিবী সৃষ্টি
নাকি পৃথিবীর  লাইগ্যা হাউঅন
আমি তো ছোট্ট কাল থেইক্যা হুইননা আইছি
হাইলে যা টাটকিত, হাউআইলে যায় সমাজে
তুই হাইবার লাইগ্যা এত পাগল অইছত কেরে
হাউঅন তো এক অভ্যাসের নাম
অভ্যাসের দাস হয়ে আছে মানুষ সেই কাল থেকে এই কাল
তর কী একটুও পরিবর্তন অইব না

হারঅ তোরে একটা কিসসা হুনাই

মুসা নবী একবার আল্লারে জিগাইছে

আল্লা, ও আল্লা
তুমি কী ঘুমাও না, হাউ না
আল্লা ক  `না'
মুসা নবী আবার জিগাই
`কেরে'
আল্লা ক , `লাক,  তরে একটা ডেমো দেখাই'

তুই একটা বাত্তি জ্বালা, আর আত লইয়া হারুইয়া থাক
মুসা নবী আল্লার হুকুমের কামলা
রাইত যখন গভীর অইছে
মুসা নবীর হাত থেকে বাত্তি পড়ে গেছে
পুইরা গেছে বিছানা
আগুন যখন সইললে লাগছে
তখন মুসার ওস অইছে
আল্লা তখন মুসারে জিগাই
 ও মুসা, দেখলা ঘুমাইলে কী অই
ক দেহি, আমার কী হাউনের সময় আছে, আছে ঘুমানোর সময়
মুসা ক,   `মাফ কর প্রভু, আমি অধম '

আরে ও লেখক, হুন, তুমি না ঈশ্বর, স্রষ্টা
এই সব জৈবিক কাজের লাইগ্যা পাগল অইছো কেরে
বাদ দাও আজাইরা চিন্তা
সৃষ্টিতে মন দাও

মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আমার চাওয়া - পাওয়া

আমার চাওয়া-পাওয়া
একটি স্বপ্নের ফ্রেমে বাধা থাকে
তুমি তখন নৃত্য করো, তুমুল নৃত্য
গাছের পাতা ঝরে যাওয়ার নৃত্য
কাল সারা রাত মুষলধারে বৃষ্টি হতো যদি
নায়ক হতো তোমার চিরচেনা মুখটি
আমি হতাম সিনেমার ভিলেন
ভিলেন হওয়া ভালো
সারাটা সময় আধিপত্য, শেষে পরাজয়
পরাজয় যে জয়ের মাসতুতো ভাই এটা কেবল ভিলেনই জানে
নায়ক হতে গেলেও ভিলেনকে স্বীকার করতে হয়
শয়তান কেন শয়তান
কারণ শয়তান দাস হতে পারেনি
ভিলেনও সময়ের দাস নয়, মাইকেলের রাবণ
এ্যালকোহলকে  রঙিন পানি না ভেবে ওষুধ ভাবো
দেখবে হ্যাং ওভার ইফেক্ট বলে কিচ্ছু নেই
কেটে যাবে প্রচলিত নেশার ঘোর
ভাবতে শিখো হিমানী, ভাবনাতেই গলদ
অন্য কোথাও গলদ কিংবা ময়লা নেই
চোখের সামনে ধারনার উল্লম্ফনের কারিশমা
বস্তুত শিশুর হাততালিই এসথেটিক সঠিক
আবেগ- বিবেগ মিথ্যার অহমিকা
চোখ যত বড় হবে আসমান ততই অসীম
তাই
চোখ বড় করে লাভ নেই আসমানী
আসমান তোমার চোখে আসবে না
আমার চাওয়া-পাওয়া বিশ্বাসের কাবিনে কেনা

সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

গুপ্ত নিশি কদাকার

বলার কথা ছিল অনেক রাত
বলা হলো না  অবশেষে
না বললেও রাত থেমে থাকে না
যেমন থেমে থাকে না তোমার ভাষিক আক্রমণ  আমার পোষা আচরণের দিকে
বুঝতে পারিনা
চলে গেলে, না থেমে গেলে
চলে যাওয়া আর থেমে থাকার মাঝখানেতে আমি
আমি মানে জীবনের অপর নাম
জীবনের প্রেমিকাগুলোর বিয়ে হয়ে যায় অপ্রেমিকের কাছে
আমি করি মানা অপ্রেমিকে গান আমার শোনবে  না

প্রেমিক মন পথেহাঁটা কুকুর, লেজ নাড়ানোর শক্তিটুকুও গতিহীন
বিড়াল তো বস্তুপ্রিয়, ব্যক্তিপ্রিয় রয়ে গেলাম আমি
বিড়াল তোমার পাশে বসে করে এ্যানিমেশন ড্রিংকস
আর আমি ঘুরেফিরে রাস্তার বাঁকে
রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি রে বন্ধু  দুঃখ লইয়া মনে
পৃথিবীর ছোট্ট বাক্সে আর কতটুকু দুঃখ থাকে
তারপরও নিজেকে কেটে দুঃখ দেখাই
আহোনিশি যোগ ধেআই
মন পবন গগনে রহাই

রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

পৃথিবী বদলায় কারণে

স্মৃতিগুলো বড্ড বেপরোয়া। শিশুর মতো খামখেয়ালি। মনে তার আধিপত্য জীবনের মতো দীর্ঘমেয়াদী।
ডাকাত হত্যা করেছিল এক হাজার কুয়াশার  প্রাণ
বেঁচে যায় গ্রামের কচি লতাপাতা
গতকাল রাতে ভোর আসেনি
বিড়ালের মিউ মিউ কান্না জন্ম দেয় এক কোটি ভোরের ড্রাইগ্লুকোজ
চিৎকারের জীবাশ্ম-জ্বালানি  ডেস্কে দাঁড়ানোর মহানগরীর ফুটানিক্যাল
স্মৃতির মতো আরামদায়ক হলে মশানিধন কোম্পানি চাকর হতে পারতো
চাকর হয়েছে আপোষগড়া দালাল
দালালের তো তাই হওয়ার কথা
স্মৃতির আর প্রেম হলো না জীবনের সাথে
তবু সে জীবনের সাথে থাকে, টেনে নিয়ে যায় আফিম সিনক্রোনাইজের দিকে
পৃথিবীর দিক এখন পশ্চিমমুখী নয়, তামাকগাছের শেকড়মুখী
পৃথিবী বদলায় কারনে গো ড্যাফনি, বিনা কারণে  না 

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪