শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১

মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১

আগে

 যে যায় সে কই না 

যে কই সে যায় না

বঙ্গবন্ধু বিজয় হাফ ম্যারাথন

 বঙ্গবন্ধু বিজয় হাফ ম্যারাথন২০২১— ১৭/১১/২০২১। শরীরে যথেষ্ট ক্লান্তি। চিটাগং থেকে ১৬ তারিখ সকালে টানা ছয় ঘন্টা ট্রেন জার্নি করে বাড়ি আসি। শরীরে যথেষ্ট ক্লান্তি। বাড়িতে চার ঘন্টা ঘুমানোর পর বিকালে তিন ঘন্টা ট্রেন জার্নি করে ঢাকা যাই। রাতে মাত্র তিন ঘন্টা ঘুম হয়। শরীরে যথেষ্ট ক্লান্তি। ১৭ তারিখ সকালে হাতিরঝিল রানস্পটে ভোর ৫ঃ ৩৮ মিনিটে উপস্থিত। শরীরে পর্যাপ্ত ক্লান্তি। ভাবছি কেমন করে পাড়ি দিবো ২১ কিলোমিটার পথ। 


যথাসময়ে রান শুরু হয়। তখনো চোখের সামনে ২১ কিলোমিটার, মনে মিষ্টি মিষ্টি ভয় ও আতঙ্ক। ঠিক সেই সময় আমার মনের ভয় দূর করে দিলো মিষ্টি মেয়ে 'মে'। মে টেক্সাস ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট— আমেরিকান বালিকা—  বাংলাদেশের অবস্থিত আমেরিকান এ্যাম্বাসির মানুষ। দৌড়ে আর গল্পে আমাদের পথ চলতে থাকে সামনের দিকে। 


মে'র সাথে পায়ে পায়ে তাল আর মুখে মুখে গল্পে ১৭ কিলোমিটার পাড়ি দিবার পর রানসঙ্গ বদল করি। এবার আমরা তিনজন— বাবুল আক্তার, প্রসেনজিৎ আর আমি। বাবুল আক্তার ভাই শুনালেন তার জীবনের গল্প— কেমন করে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়েও তিনি আজ গ্রামীণ ফোনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সেই গল্প। প্রসেনজিৎ চমৎকার এক কৌতূহলী মানুষ— ব্রাক ইউনিভার্সিটির এমএসসির ছাত্র। 


মে'র মায়ের নাম জুন। মে ইংরেজি মে মাসে জন্মগ্রহণ করেনি। মে'র মায়ের নাম জুন বিধায় তার নাম মে। মানে জুনিয়র জুন। আর জুনিয়র জুন মানে মে। মে আমেরিকান মানুষ হলেও আমেরিকার জীবন তার ভালো লাগে না। বাংলাদেশ তার কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে ডে বাই ডে। মে গোড টকার— তবে প্রথম প্রথম সে খুব ইন্ট্রভাট।


২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে আমার সময় লেগেছে প্রায় ২ঃ ৩৩ মিনিট। মনে আনন্দ। শরীরে ক্লান্তি। তবে মনে প্রশান্তি। এই ম্যারাথনের মধ্যে দিয়ে নিজের সক্ষমতা অন্যভাবে আবিষ্কার করতে পেরেছি— ফলে মন বলছে আইরন ম্যান হওয়া এমরানুর রেজা ভাইয়ের জন্যে খুব ইজি না হলেও ইজি হবে। ইজি জীবনের পথে যেমন সত্য রয়েছে তেমনিভাবে রয়েছে পরিশ্রমের প্রিয়তমা দারুল প্রশান্তি।

প্রেমিকের কোলাহল

 এ জীবন পাতাদের পাখিদের নয়তো 

এ জীবন বাতাসের ফুলদের হয়তো 

নদীরও ঘর আছে 

ঘর আছে সময়ের 

যেনো ফুল যেনো সুর সব যেনো মানুষের 

ঘুনপোকা কটকট 

ইঞ্জিন বটবট 

জুতাহিল খটাখট 

দুই চোখ পাশাপাশি দুই চোখে দুই ঘর

ঘর দুটি ফুলপাখা লতা পাতা সুর রাখা 

সরলে সরলে নদীপথ যতসব তার মনে জলরেখা

ভাজ খুলে সুখ পেলে 

করো চাষ মন খুলে 

খুজে সুখ কামনলে 

অভ্যাস অভ্যাস লেফট রাইট লেফট রাইট

কামনার মোড়কে সংসার পেরেকে 

মরে মন মরে যায়— লেফট রাইট লেফট রাইট 

এই জীবন প্রেমিকের সমাজের নয়তো 

কালো চোখ প্রেমিকার খুজে তারে হয়তো

সততার ঘর নেই 

ঘর নেই মানুষের 

ঘর আছে ঘর আছে যতসব ফানুশের 

ভাজ খুলে সুখ পেলে রাখো হাত হলাহল 

এই জীবন নগদের প্রেমিকের কোলাহল

মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১

তস্য

 আলোর ভেতর ছায়া লুকায় 

    লুকায় ছায়ার আলো 

     চোখের মানুষ মনের মানুষ 

        রঙের মানুষ কালো

শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১

মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১

মিশন এক্সট্রিম জয় ভীম নোনাজলের কাব্য

 মিশন এক্সট্রিম। একটি সিনেমার নাম। পরিচালক ফয়সাল আহমেদ। রচয়িতা সানী সানোয়ার। চিত্রনাট্যকার সানী সারোয়ার। এই সিনেমার মধ্যে দিয়ে মিস বাংলাদেশ জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিষেক ঘটে। এই সিনেমায় আমরা জিয়াদুলকে দেখতে পাই। জিয়াদুলের পারিবারিক নাম সৈয়দ নাজমুস সাকিব। সাকিব জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র। এখন একটি কলেজের ইংরেজির শিক্ষক— তার মিমিক করার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে— শুনতে পেয়েছিলাম ভাইব্রাদারদের মাধ্যমে। এই সিনেমায় জিয়াদুল বিপদগামী মতবাদধারী যুবক। সিনেমায় সে বেশি সময় বাচতে পারেনি। তার মৃত্যু হয় পুলিশের গুলিতে। 


সানী সারোয়ার পুলিশ মানুষ। এসপি, অপারেশন, এন্টি টেরোরিজম ইউনিট। এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) হলো উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে গঠিত বাংলাদেশ পুলিশের একটি শাখা। বাংলাদেশে কাউন্টার টেরোরিজমের ন্যাশনাল ইউনিট হিসেবে এটির কাজ করার কথা— ২০১৭ সালে ২০ সেপ্টেম্বর দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের এই ইউনিটটির সৃষ্টি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এই ইউনিটের  কার্যধারা শুরু।


ঢাকা এ্যাটাক কিংবা মিশন এক্সট্রিম মূলত এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের কামকাজের পর্দাভিত্তিক তরল আস্ফালন। অর্থাৎ জঙ্গি তৎপর সময়ে পুলিশের মহান মহান ভূমিকার কথা ত্যাগের কথা অভিনেতা অভিনেত্রী তাদের টেস্ট বেস্ট চেষ্টার মাধ্যমে স্পর্শ স্পষ্ট করে তুলেছে প্রায়। সাউন্ড টেস্ট, কালার স্ট্রিমিং, ক্যামেরার প্রয়োগ পরিধি ভালো লাগার মতো। কিন্তু। তামিল সিনেমা 'জয় ভীম'— টি জে জ্ঞানাভেল পরিচালিত, সুরিয়া ও জ্যোতিকা সাধনার প্রযোজনায় 'জয় ভীম' দেখার পর মিশন এক্সট্রিম দেখার আর ইচ্ছাপুলক মনচোখে জাগে না। 


কথাটি কেনো বললাম? 

ভাইরে, পুলিশিং এক জিনিস আর সিনেমা নির্মান আরেক টপিক। আইসক্রিমের আর মোবাইলের বিজ্ঞাপন কেনো সিনেমার চরিত্রের সংলাপে আনতে হবে?


'জয় ভীম' সিনেমাটি ১৯৯৩ সালের ইরুলার উপজাতির কোনো এক দম্পতির সাথে পুলিশের ঘটে যাওয়া আচরণের বিচারিক প্রেক্ষাপটে রচিত। সত্য ঘটনার সাথে পারিপার্শ্বিক সত্য ও আলঙ্কারিক সত্য এক করে সিনেমা নির্মাণ করলে পর্দায় শিল্পমনে চোখ রাখা যায়। তাই জয় ভীমে শিল্পমনে চোখ রাখতে পারলেও মিশন এক্সট্রিমে রাখা যায় না। মিশন এক্সট্রিমে সংলাপ ও গল্প বুননে আরও শক্তিশালী মনোযোগ দেয়ার প্রত্যয় প্রয়োজন ছিলো। 


কারন মিশন এক্সট্রিম ফিচার ফিল্ম না। ফিচার ফিল্ম হলে অনেক অপরাধ ক্ষমা করা যায়। রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের নোনাজলের কাব্যের অনেক অপরাধ আমরা ক্ষমা করেছি— টুনির অপরাধ আমরা ক্ষমা করেছি। তাসনুভা তামান্না বা টুনি যেখানে ছোট্ট সময় থেকে চরিত্রসময় পর্যন্ত জেলেপাড়ার সন্তান সেখানে তার ভাষা হওয়া উচিত ছিলো শতভাগ নির্ধারিত জেলেপাড়াময় অথচ তার ভাষায় নাগরিক টান। তবে ভালো লেগেছে নোনাজলের কাব্যের টপিক যা একান্ত বাংলাদেশের নিজস্ব গল্প— ভাঙনের গল্প সংগ্রামের গল্প আশা ও প্রত্যাশার গল্প। 


'নোনাজলে কাব্য' সিনেমার সাধারণ মানুষও মতবাদের ফাদে আটকে যায়— সেখানেও বিপদগামী তৎপরতা সক্রিয়। তাইতো ভাস্কর রুদ্র প্রান্তিক জেলেপল্লীতে এক অভিশাপের নাম। চেয়ারম্যান ও তার চ্যালারা বিশ্বাস করতে শুরু করে রুদ্রের নির্মিত মূর্তির জন্যে তাদের আয়ের প্রধান উৎস ইলিশ মাছ আর জালে ধরা দিচ্ছে না। বৈজ্ঞানিক জীবন আর সুবিধাবাদী বিশ্বাস জীবনের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রভাব, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জেলেদের দৈনন্দিন জীবন সংগ্রাম ও সংস্কৃতিক প্রভাব নোনাজলের কাব্য নামক ফিচার ফিল্মে টানটান আলোছায়া মায়ায় ১০৬ মিনিটে পর্দায় উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে ফ্রেঞ্চ-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার চেষ্টা কিংবা প্রচেষ্টা। 


আবার মিশন এক্সট্রিমে আসি। এই সিনেমার শেষে তাসকিন রহমানের ডায়লগটি ভালো লেগেছে— "আলোতে যা খেলা আঁধারে তা যুদ্ধ।"

শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১

মায়া

 হালকা আলো

            মিষ্টি আধার

                 সন্ধ্যা নদীর ছায়া

ঠোঁটের সাথে ঠোঁটের খেলা মহাকালের মায়া

শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১

কাবিন

 

চোখের ভেতর ঘর বানানোর ইচ্ছে জাগে প্রিয়
চোখটি তোমার আমার নামে কাবিন করে দিও

বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১

বড় শিশু

 না দেখি তারে 

               দেখি নাই তারে 

             ক্যামনে বলি তার কথা 

            যা বলি

          যা বলে লোকে 

        সবই যেনো মিথ্যা 

      মিথ্যার ঘনঘটা

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২১

আফা লের মাছ

 ০১

শিশুর কোনো জাহান্নাম নেই। কারন জান্নাতের প্রতি তার কোনো লোভ নেই, পাগলেরও তাই। 

No hell for the child as they have no a little yearning for the heaven is to the crazy dab


0২

একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাসকে অপ্রয়োজনীয় বলতে গেলে আরেকটি বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করা লাগে। আর বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ঝড়ের দিনের আম হলে চলে না, হতে হবে রক্তবীজের মতো প্রানদায়ক।


০৩

দুর্গা, পুরুষ তোমার অবয়ব বানাতে গিয়ে বানিয়ে ফেলে তার প্রেমিকার অবয়ব


০৪

ঢেউয়ের মতো হালকা হয়ে যাওয়ার পর ভাসতে ভাসতে পুরাতন পিরামিড পাড়ি দিয়ে তোমার বাড়ির উঠোনে পতিত হবো কোনো এক সমুদ্র হয়ে


০৫

মানুষের সৌন্দর্য দেখার জন্য আমি তার নীরবতা পর্যন্ত অপেক্ষা করি


০৬

বেয়াদব চোখ মন দেখে না, স্তন দেখে— বোকা চোখ স্তন দেখে না, মন দেখে— মানবিক চোখ মনের পাশে এক দেশের এক পাহাড় দেখে


০৭

জন্ম হবে আমার হয় সুরে নয় নদীর জলে, হয় কৃষ্ণের বাঁশির তলে নয় মৃত্যুর একনিষ্ঠ নলে


০৮

বড় হতে হতে তারা মেঘ ☁ হয়ে যায়— তারপর বৃষ্টি হয়ে জন্মে ফিরে


০৯

মহাকালে দুটি স্বর্গকাল— ছোটকাল ও প্রেমকাল


১০

গনিতে আমরা যোগ ভালো পারলেও সমাজে বিয়োগটাই আমরা ভালো পারি


১১

In the end we will become sleep slot 


১২

সাগর! তুমি এতো বিশাল কেনো? ছোট হতে তোমারও কী ভয় লাগে!?


১৩

লোকজন লোকালয়ের, লোকালয়ের লোক মনে ঢুকে গেলে মনটাকে তারা লোকালয় বানিয়ে ফেলে,  লোকালয়ে কিন্তু কেবল ফুল গাছ থাকে না, ডাস্টবিনও থাকে


১৪

মারলে মরতে হয়,বাঁচালে বেঁচে যাই


১৫

পাড়ে ঢেউ লাগলে পাহাড় সর্তক হয় না— নিজের ক্ষতি মেনে নেওয়ার ক্ষমতা যিনার থাকে তিনিই মহাপুরুষ— মানুষ ইন্দুরে দাত পছন্দ করে কিন্তু ইন্দুরকে না— মানুষ নিজের প্রয়োজনে গাছ কাটতে পারবে কিন্তু ইন্দুরের কোনো প্রয়োজন আছে বলে মানুষ মনে করে না— ক্রিমিনাল ল জানার আগে প্রিয়তমা ক্রিমিনাল সাইকোলজি জেনে নিও


১৬

অনেকের পার্সোনাল কাজ থাকে কিন্তু সেই পার্সোনাল কাজের পার্সোনালিটি থাকে না


১৭

প্লাস্টিকের ব্যানারে লেখা—  "প্লাস্টিক পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকর"


১৮

আমরা পুকুর কেটে বাড়ি বানাই


১৯

কুকুর আশ্বস্ত করে, কারণ বিশ্বস্ত থাকার ঐতিহ্য কুকুরেরই রয়েছে

Dog makes a hopeful dune as for the belief system is properly tenable to dog 


২০

মানুষ নিজের মতো করে অন্যকে বিবেচনা করে; অন্যের মতো করে নিজেকে বিশ্বাস করে 

Man considers others likely his brainbox and believes himself in the eye of others


২১

সৌন্দর্যের দিকে হাটা যায়— সৌন্দর্যের ভেতরে থাকা যায় না— সৌন্দর্যকে দেখতে হয় উপর থেকে


২২

গরীবের দুঃস্বপ্ন সাপ বা কুকুরের কামড়, টাকাওয়ালার দুঃস্বপ্ন প্রতিষ্ঠানে আগুন


২৩

একটি গর্ত পূর্ণ করতে গিয়ে  আরেকটি গর্ত তৈরির কোনো মানে নেই। তাহলে গর্তচক্র আর পূর্ণচক্র অব্যহত থাকবে।

যারা নারীবাদী তারা পুরুষতন্ত্রের উপর মই চালায়, আর যারা পুরুষ তারা শিয়ালের মতো লেজকাটানীতি গ্রহণ করে। ফলে কাকড়ানীতিতে পড়ে থাকে সমাজ, স্থবির হয়ে থাকে মানব সভ্যতা।

আসলে যারা মানুষ তারা মানুষনীতিতে বিশ্বাসী।


24

শিয়ালকে ঘরে আনতে নেই, সে খোয়ার  খুঁজে বের করবেই যেখানে পাখিগুলো অনেক দিন শান্তিতে ছিল


২৫

আয়না কথা বলে না— কথা না বলেও বলে দেয় অনেক— আয়না কথা বলে নীরবে— ভালোও বলে মন্দও বলে— আয়না যাতা বলে না— যা তাই বলে


২৬

I am learned how to walk towards the rossy lips of my dream, Used to have sweet breast of my dream, I am nothing when my dream is anything 


২৭

ছায়ায় থাকলে নিজের ছায়া দেখা যায় না, নিজেকে দেখার জন্য ছায়ার কাছে যাই বারবার, যতবার ছায়া মারি ততবারই আমার আমি নাই, আমার আমি নাই


২৮

আদিতে সব কিছু এক, তিনিও এক, তিনি সৃষ্টিও করবেন একটাই— মাঝখানে সসীমে অসীমে দৌড়ঝাঁপ


২৯

ভাঁজ না দিলে শাড়ি পড়া যায় না, ভাঁজ না খুললে নারী হওয়া যায় না


৩০

এক এলাকার কুকুর অন্য এলাকার কুকুর সহ্য করতে পারে না। কোনো কুকুর যদি ভুলক্রমে অন্য এলাকায় প্রবেশ করে তবে তার জন্য মহা নয় ভয়ঙ্কর বিপদ।

মানুষ তো  কুকুর নয়, কুকুর শব্দটি মানুষের কাছে গালি। সীমানা নির্ধারণে মানুষও কুকুরের মতো। 


চোখের ভৌগোলিক স্বাধীনতা আছে, মানবিক স্বাধীনতা নেই, পাশবিক মানসিকতা থেকে সীমানার কাঁটাতারের জন্ম।


৩১

বলকানো অবস্থা থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি। লায়লি মজনুর প্রেম এইভাবেই বলকায়। হৃদয় না বলকালে প্রেম রান্না হয় না, কাঁচা থেকে যায়।।


৩২

আমাকে কেউ আঘাত করলে তাকে ভালোবাসতে বাধ্য করি— পরিকল্পনা করে না— আঘাতের প্রদিষ্ট উপহার দিয়ে 


৩৩

সূর্য দূরে যায় না— সরে যায় যাতে তার উপস্থিতি আমরা টের পাই 


৩৪

আমার সাথে কাউকে মিশতে দেই না— আমি মিশি— মিলেমিশে থাকি 


৩৫

শেষ পর্যন্ত লেখকের কাছেই পৃথিবীর আমানত


৩৬

এক কলমি শাক বহুদিন জলে ছিল শাপলা হওয়ার আশায়, হাজার বছর পরও লোকে তাকে শাপলা বলে না। কলমি শাক জানে না জল থেকে শাপলার জন্ম, জলে থাকলেই শাপলা হওয়া যায় না।


 ৩৭

জীবন এমন এক বিন্দু যা বৃত্ত তৈরির ক্ষমতা নিয়ে বেঁচে থাকে


৩৮

মানুষ সাপকে ভয় পায় অথচ ছারপোকা থাকে বালিশের আন্তরিক নিকটে


৩৯

সাপের বিষে মানুষ মারা যায়, মানুষের বিষে মানুষ সাপ হয়ে যায়


৪০

প্রয়োজনে যে পাগল হতে পারে নাই সেই তো পাগল 


৪১

মনে নয়,মেনে নিতে শিখতে হয় 


৪২

জীবনডারে ব্যাখ্যা করার আগে মনডারে একবার চোখের জলের সুইমিংপুলে সাঁতার দিয়া আনেন মিয়া


৪৩

পাখিহীন আকাশ নীলের মরুভূমি


৪৪

প্রভু গো আমার, এমন কোনো সত্যের সন্ধান আমাকে দিও না যে সত্য প্রতিষ্ঠিত সত্যের উপর আমাকে বাহাদুরি করতে শেখায়


৪৫

মানুষের তো বিষদাঁত নেই, মানুষের আছে বিষকথা। বিষদাঁত সরাসরি মেরে ফেলে আর বিষকথা মৃত্যুর যন্ত্রনা দেয়।


৪৬

ধূমপান পুঁজিবাজারের জন্য পুষ্টিকর


৪৭

অজ্ঞদের প্রশ্ন বেশি, বিজ্ঞদের উত্তর একটাই


৪৮

When every dark flies over our eyes we are ready to reckon the reality of light


৪৯

পৃথিবীতে অনেক শব্দের ভীড়ে আমরা ঘড়ির শব্দ শুনতে পাই না। ঘড়ির শব্দ যখন শুনতে শুরু করি পৃথিবীর আর কোনো শব্দ কানে আসে না।


৫০

আমরা ছোট চোরকে বলি চোর আর বড় চোরকে বলি সাহেব


৫১

পাখি তার পাখনার উপর আস্থা রেখেই মরা ডালে বসে

রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১

আহা

 মিষ্টি মেয়েটি বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে গেলে পৃথিবী উর্বর হয়ে উঠে

শনিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২১

চাঁদ ফুল রানি

 আমিও তারে ভালোবাসি

তার সুখে আমি সুখী 

সে হাসলো আমিও হাসি 

সে ভাসলো আমিও ভাসি 

দূর পাহাড়ে উদাস মেঘের পাশে 

সন্ধ্যার পাখি নিঝুম নিথর বাতাসে 

বলে কথা ডানার ভাষায় 

পালকের নিচে তারে আমি লুকাই 

চাঁদের চাঁদ নাই জানি 

ফুলের ফুল নাই মানি 

চাঁদের দেশে 

ফুলের দেশে সে আমার চাঁদ-ফুল রানি

শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১

পৃথিবীর সমান একটি দেশ

 জানালার পাশে সবুজ মাঠ

মাঠের পাশে পানসে নদী

পানসে নদীর পাশে বাস করে কোনো এক কবি

কবিকে বলি নিয়ে আসতে 

নিয়ে আসতে দরজার পরপাশের মতো অন্ধকার 

কবি নিয়ে আসলো

নিয়ে আসলো বৃদ্ধ দাদুর দাঁতের মতো স্মৃতিধরা পতাকা 


প্রেমিকাকে বলেছিলাম

বলেছিলাম কোনো এক আশ্চর্য সহনশীল সন্ধ্যায় 

দেবদারু গাছের নিচে বিনয় ভবনের রাস্তার পাশে

কাবা শরীফের পাথরে চুমু দেয়া হয়নি আমার

চুমুু দিয়েছি তোমার ঠোঁটে 

রোপন করেছি তোমার ঠোঁটে চব্বিশ ঘন্টা 

অর্জনযোগ্য সব তেলাওয়াত

দ্রোপদী মহাভারত সূরা আলাক


সব শর্ত মেনে আমাকে দাও দূরদ্বীপে সাগরের বুকে স্বপ্নমাখা এক ছায়া— এক হাসিমাখা সৌহার্দ আশ্রয়


প্রেমিকা আমাকে দিলো আইন কানুন

দিলো নিয়মেধরা কাঁটাতার পতাকা সংবাদ প্রবঞ্চনা


কৃষকের লাঙলের কাছে আশ্রয় নিলাম

তাকেও বলি

এনে দাও সবুজ হাসি আর মাঠভর্তি প্রজন্মের আশা

কৃষকের লাঙল এনে দিলো

এনে দিলো তামাশার সূর্য অলসতার ঘুম

বাউলের দুতারায় আস্থা রাখি কিছুক্ষন

বাউলও খাবার মাছের সন্ধানে ভুলে যায় নদীর জীবন 

ভাবের সুরে উদারায় তুলে দর্শন বাউন্ডারি 


কার কাছে বলি

কার কাছে রাখি

কার বুকে রোপন করি পৃথিবীর আশা

স্বপ্ন সত্য সুখ কথা 

কার কাছে যাবো নতুন হয়ে

ফুল হয়ে গন্ধ বিলাবো আত্মার ছায়ায়


প্রিয়

কাল সকালে নিয়ে আসো

কৃষকের লাঙলের মতো একটি পতাকা

বাউলের দুতারার মতো একটি দেশ

প্রেমিকার অপেক্ষার মতো একটি মানচিত্র 

আকাশের সীমানার মতো জ্যামিতিক সংবিধান 


তারপর 


তোমার ঘরে জন্ম হবে আমার 

কাল সকালে সূর্য উঠার আগে

তোমার উঠানে কুয়াশাভরা ভোরে 

একটি দেশ পৃথিবীর সমান

একটি হাসি তারায় তারায় আসমান 


পল্লী কফি হাউজ, হাড়াসার

৮.৩০: ১৯/১১/২০২১

সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১

শিশুদের চোখে শান্তি অবিরাম

 প্রতিনিয়ত খেলে যায় তারা— শিশুদের ঘর 

ভাঙেনা কখনো, কখনোই না 

ওঠেনি কখনো গড়ে শিশুদের খেলাঘর 

উচ্ছ্বাস উদ্বেগ আবেগ শুরু থেকে শেষ 

শূন্যকুম্ভ প্রান্তিক এলাকায় কোলাহল ভরপিন্ড ভরপুর 

পাথরের ডানায় আশার পালকে কোমলপ্রাণ ঘুম 

পেছন থেকে সামনে 

সামনে থেকে পেছনে 

মাঝামাঝি 

সামনে মাঝে 

মাঝে পেছনে— একই কথা একই কান্না তবু নতুন 

তারা নয়তো রাজা— রাজ্য আছে তাদের 

তারা নয়তো প্রজা— তারা রাজার উপরে প্রশান্তিদেশ 

রোদ উঠে 

অন্ধকার নামে 

কুয়াশায় দেখা মিলে প্রেমের ঝিলিক 

ঢেউয়ের তরঙ্গের শিশুদের নবান্ন হিড়িক 

তারা হাসে কান্নার মতো 

তারা কাদে হাসির মতন 

তারা ঘুমে যায় যেনো জেগে আছে 

তারা জেগে থাকে যেনো ঘুম ঘুম রতন 

নেই তবু আছে শিশুদের খেলাঘর 

শিশুদের চোখে নেই বানানো সমাজ 

থাকে নাতো সমাজ বানানো আপন সমাজ বানানো পর

শিশুচোখে থাকে মোহনার ত্রিকাল সাগর নদী দ্বীপচর

মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১

ফসল কেনো আমদানি হবে

 আমাজন জঙ্গল আছে একটা। আমার একটা আমাজন জঙ্গল আছে— আমার ছোট্ট বারান্দায়। এই জঙ্গলের প্রত্যেকটা গাছ আমি যা খাই তারা তার ভাগ পায়। 


হঠাৎ দেখি আমাজন জঙ্গলে জন্ম নিয়েছে একটি লতানো গাছ। এই লতানো গাছ কোথা থেকে আসলো ভেবে ভেবে হতবাক। দেখি লতানো গাছ বারান্দা হলুদ করে জন্ম দিয়েছে কিছু গর্ভবতী ফুল।  তারপর বহুদিন আমাজন জঙ্গলের সাথে আমার দেখা নাই— বহুদিন বলতে দশ দিন। এইবার আমাজন জঙ্গলে এসে আমি আরও বিস্মিত। কারন জঙ্গলে ফুল পাতার বাইরে এবার দেখা দিয়েছে ফল— কুমড়া — ইংরেজিতে তাকে বলা হয় squash or pumpkin। 


যে দেশে ইটের বারান্দায় ফুল ফসলের আবাদ সম্ভব সেই দেশ কেনো ফসল আমদানি করবে—  এসিরুমের ভিক্ষুক উত্তর দিতে পারবেন!?

রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১

শিতানি

 পাতার মতো দুঃখ তার 

                          ঝুলে থাকে মনে 

             শীতের দেশে যেনো সে

                                       কুয়াশা কনে

বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২১

বদল হচ্ছে পৃথিবীর হাওয়া— আমরা সিলেটে

 ভ্রমন বা টুর বলতে অনেকে যা অনুধাবন করে বা মিন করে আমাদের এই টুরটা ঠিক তেমন না। আমরা যাচ্ছি সিলেটে। উদ্দেশ্য। প্রধান উদ্দেশ্য একটাই— ছাতক হাফ ম্যারাথনে অংশগ্রহন করা। হাফ ম্যারাথন বলে আসলে কিছু নেই। হাফ ম্যারাথন শব্দটা বানানো। ম্যারাথন ইজ ম্যারাথন— ৪২ কিলোমিটার। আমি দৌড়াবো ২১ কিলোমিটার, রাই দৌড়াবে দশ কিলোমিটার। রাইয়ের সাথে যাচ্ছে তার পরিবার সমগ্র। রাইয়ের পরিবার সমগ্রের সাথে বলতে গেলে আমি গেস্ট। ঠিক গেস্ট না— গেস্ট টাইপের। 


ভৈরব থেকে ট্রেনে উঠি। পুরো কেবিন আমাদের দখলে। ভালো একটা ঘুম দিই। ট্রেনের কেবিনে ঘুমানো আর মেঘে ঘুমানোর মধ্যে অমিল অনেক থাকলেও মিল তো আছেই। ঘুম থেকে উঠে ট্রেনের খাবারের কেবিনে গিয়ে ছয়টি কাকলেট খাই। ট্রেনের সবজি কাকলেট আমার খুবই প্রিয়— ঝাল ঝাল কোল কোল। 


সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে যখন আমরা পা রাখি তখন দুপুর শুরু হয়ে গেছে। এই স্টেশনটি চোখে থেকে যাওয়ার মতো না— খুবই সাদাসিধা একটা স্টেশন অথচ এটি নাকি দেশের পঞ্চম বৃহৎ রেলওয়ে স্টেশন।


আসামের চা শ্রমিকদের আন্দোলন-দাবির কার্যকারনে ১৮৯১ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে বাংলার পূর্ব দিকে রেলপথ নির্মানের কাজ শুরু করে— তারই ধারাবাহিকতায় এই অঞ্চলে রেল যোগাযোগ ছড়িয়ে পড়ে। বৃটিশ সরকার আসামের সিলেট জেলায় ১৯১২–১৯১৫ সালে কুলাউড়া হতে সিলেট পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করে এবং সিলেট রেলওয়ে স্টেশন চালু হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৪ সালে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক বাজার পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারন করা হয়। কেনো বৃটিশরা রেলপথ স্থাপন করলো এই বাংলায় এ নিয়ে গালাগালি চলতে থাকুক— বাঙালি এক অদ্ভুত ঘাড়বেহা জাতি— নিজে করতে তো পারবেই না অন্যের করাতে সহ্যও হবে না। 


এখন আমাদের কাফেলা যাবে গোবিন্দগঞ্জ। গোবিন্দগঞ্জ থেকে শুক্রবার ৫:৪০ মিনিটে আমাদের রান শুরু হবে। ছাতকের গোবিন্দগঞ্জে প্রচুর পান খাওয়ার লোক থাকলেও কোনো হোটেল নাই। কোথায় থাকবো এই নিয়ে বিশাল টেনশনে আছি। আয়োজক কমিটি সিলেটের হোটেলে থাকার পরামর্শ দিয়েছে— সকালে বাসে করে তারা নিয়ে আসবে। খুবই ভালো পরামর্শ। অনেক ভালো পরামর্শ আবার আমার কানে যেতে চায় না। আমি গোবিন্দগঞ্জই থাকবো— প্রয়োজনে রাতের ভেতরে হোটেল বসানো হবে কিন্তু গোবিন্দগঞ্জই থাকবো। 


অবশেষে গোবিন্দগঞ্জই থাকলাম। বিশাল বড় প্রাসাদের দুটি রুম দেয়া হলো আমাদের। একটি রুমে আমি আর রাই ঘুমালাম। সকাল সকাল ঘুমিয়ে যাই আমরা। পাচটায় ঘুম থেকে উঠে যাই আমরা। আমরা বলতে আমি আর রাই। রাইয়ের পরিবার সমগ্র তখনো ঘুমাচ্ছে। আরও আগে ঘুম থেকে উঠার দরকার ছিল। হন্তদন্ত হয়ে রাননাম্বার ও গেঞ্জি কালেক্ট করি। আমাদের গেঞ্জি রাখার জায়গা নাই— রাইয়ের পরিবার সমগ্র তখনো ঘুমাচ্ছে। পঙ্কজ দাদার কাছে আমাদের পরিহিত গেঞ্জিগুলা দিলাম।  রাইকে বললাম,— ''নো টেনশন, তারা ঘুমাচ্ছে ঘুমাক, যুদ্ধটা আমাদের, সো বি রেডি এন্ড ফাইট।'' রাই আমার কথা শুনে কচি মুখে আশাহীন মনে যেনো প্রান ফিরে পেলো।


রান শুরু হয়ে গ্যাছে। পৃথিবীতে চমৎকার হাওয়া। চারপাশে কেষ্টবিষ্টু কালার। সবার চোখে নিজেকে জয় করার সুন্দর ষড়যন্ত্র। আট বছরের রাই দৌড়াচ্ছে। আমিও  দৌড়াচ্ছি। যে রাস্তা দিয়ে দৌড়াচ্ছি এই রাস্তা দিয়ে সুনামগঞ্জ সদরে যাওয়া যায়। এখনো বড় বড় যান চলাচল শুরু হয়নি। সোয়ান ফোমের মালিক খবির দা। দাদার বয়স ৬৯। এখনো তিনি বেশ ভালো রানে আছেন। দৌড়াচ্ছি এবং দৌড়াচ্ছি— এমন সময় কানে আসে ' রেজা রেজা' শব্দ। পেছনে ফেরে তাকাই— দেখি আরেফিন ভাই। 


আরেফিন ভাই আমার হলের ও বাংলা বিভাগের বড় ভাই। তিনি ছিলেন 'বাংলা মৈত্রী'র সভাপতি আমি ছিলাম সেক্রেটারি। 'বাংলা মৈত্রী' আমাদের হলের বাংলা বিভাগের ছাত্রদের একটি সক্রিয় সংগঠন। আরেফিন ভাই কিন্তু আমার সাথে রানের পার্টিসিপ্যান্ট না— তিনি যারা রানার তাদের আইনি নিরাপত্তা দিচ্ছেন— মানে আরেফিন ভাই ছাতক থানার সাব ইন্সপেক্টর। আরেফিন ভাইকে দেখে অনেক অতীত মনে পড়ে গেলো— বাংলা মৈত্রীর ইতিহাসে আমি আর আরেফিন ভাই ছিলাম সবচেয়ে অভিজাত অলস সভাপতি সেক্রেটারি। আহা! আহারে!! সেই সোনালি দিনগুলোতে কী চমৎকার কেষ্টবিষ্টু হৃদয়মাখানো সফেদ মেঘ ☁ ছিলাম আমরা! সব মেঘই বৃষ্টি হয়ে যায়!  আমরাও বৃষ্টি হয়ে যার যার জায়গায় পতিত হলাম রোপিত হলাম দায়িত্বের বাহানায়। ভাইয়ের সাথে অল্পস্বল্প কথা বলে আবার শুরু করলাম 'দৌড়'। ২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। 


আবার শুরু হলো দৌড়ে সামনে যাওয়া। মহাসড়ক ছেড়ে গ্রামের রাস্তায় নেমে পড়ি। গ্রামিন দৃশ্য দারুন উপভোগ্য। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছেলে যুবক বৃদ্ধ যুবতী হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছে। শরীরে ক্লান্তি ঘামের ক্লান্তি নিমেষেই চলে যাচ্ছে শুন্য থেকে শুন্যের ভেতর তাদের হাততালি আর আনন্দমাখা ডিগবাজিতে। 


খুরমা দক্ষিণ ইউনিয়ন বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন— সেই গ্রামে পা রাখতে দেখা পাই নানু মিয়া নামে এক রসিক লোকের। নানু মিয়া আমার সাথে লুঙ্গি পরে দৌড়াচ্ছে আর নানা গল্প করছে। আমি তাকে প্রথম দর্শনেই বলেছি যেনো সে মেম্বার হয় এলাকার। কথা বলতে বলতে জানতে পারি সে এলাকাতে প্রতিবছর তার সাধ্যমতো দান করে এবং সে এলাকার মধ্যে ভালো মানের জনপ্রিয় লোক। ডাক্তার তাকে প্রতিদিন সকালে দৌড়াতে বলেছে কিন্তু তার সাহস ও সুযোগ হয় না— আজকে হয়েছে। 


নানু মিয়ার কাছে জানতে চেয়েছিলাম তার এলাকার উৎপাদন-ফসলের ব্যাপারে। তার ভাষ্যমতে ধানই প্রধান ফসল। সবজি চাষ বাড়ির আঙিনা মাঠে কিছু হয়ে থাকে। মাছ ধরা এখানে একটি পেশা। তাদের নদীর নাম সুরমা। এলাকাটিতে মারামারি প্রচুর— জানতে পারি আরেফিন ভাইয়ের কাছ থেকে। পারিবারিক শিক্ষা বলতে হাল্কাপনা ধর্মীয় শিক্ষা এখানে। রাস্তাঘাট তেমন উন্নত নয়,উন্নত নয় মানুষের জীবনযাত্রার মান। তবে শতভাগ মানুষ টয়লেটে হাগু করা শিখেছে। টয়লেট থেকে বের হয়ে সাবান দিয়ে হাত ধৌত করা রুচিশিক্ষা এখনো অর্জন করেনি। 


বাংলাদেশের প্রত্যেক গ্রামেই অশিক্ষা ভরপুর। হিংসা দ্বন্দ্ব সবচেয়ে বড় দ্বন্দ্ব। বচ্ছরের পর বচ্ছর এই হিংসা বয়ে নিয়ে বেড়াই গ্রামের সহজ সরল কাদামাটি। ইদানিং আবার প্রচুর রেমিট্যান্স ঢুকছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে। ফলে হাতে অর্থ আসতেছে প্রচুর— প্রচুর মানে প্রচুর। কিন্তু সেই অর্থ কাজে লাগানোর মাথা নাই— ব্যথা বাড়ছে। 


২১ কিলোমিটার দৌড় সম্পূর্ণ করলাম। প্রথম শমশেরনগর ট্রেইল ম্যারাথন (৪২ কিলোমিটার) সম্পুর্ন করেছিলাম, তারপর উত্তরা ১০ কিলোমিটার। আর এখন ২১ কিলোমিটার। মনে আনন্দে লাগছে। তবে এই দৌড়কে আমি কখনো প্রতিযোগিতা হিসাবে মনে করি না— মনে করি জীবনের অংশ, শরীরের পরীক্ষা।


জীবনকে প্রতিযোগিতা থেকে দূরে রাখি— প্রতিটি কাজ করি প্রতিদিন নিজেকে চ্যালেঞ্জ করে,নিজের সময়ের সাথে কথা বলে— প্রতিনিয়ত স্বভাবে চলার শতভাগ চেষ্টা করি— প্রভাবমুক্ত থাকার প্রতিজ্ঞা নিয়ে চোখ মেলে সানন্দে সামনে তাকাই। 


আরেফিন ভাইয়ের চোখ ঘুমে টলমল করতেছে। তার ডিউটি শেষ পাচটায়। এই ইভেন্টের কারনে বাড়তি ডিউটি। কেউ বিশ্বাস করেন আর না করেন বাংলাদেশের পুলিশ আর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের উপর দায়িত্বের নামে টরচার চলে। আরেফিন ভাইকে বললাম— ভাই, আপনি বাসায় গিয়ে ঘুম দেন, পরে সময় হাতে থাকলে সন্ধ্যায় আমরা আড্ডা দিবো। 


চা খাওয়া দরকার। দোকান খুজতে হবে। আশেপাশে ভালো কোনো দোকান নেই। হাটছি দোকানের খুজে— আমি, নবী ভাই আর বৌদি। রাইকে মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয়েছে— প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার জন্যে। রাস্তার পাশেই একটা বাড়ি— ঢুকে গেলাম বাড়িতে। দামান, নয়া দামান আসবে। রান্নাবান্নার কাজ চলছে। আমাদের বসতে দেয়া হলো। তারপর শুরু হলো আড্ডা। ধীরে ধীরে মানুষের ভীড় বাড়ছে। মানুষকে সম্মোহিত করার এক পরাবাস্তব ক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহন করেছেন এমরানুর রেজা ভাই। এটা ভাইয়ের সাথে টুর না করলে কেউ বুঝতে পারবে না। তবে রেজা ভাই সব সময় সম্মোহিত করার মুডে তাহেন না— মাঝে মাঝে ঘুড়ির খেলা দেখেন বাতাসে সুতা হাতে রেখে। 


চা-নাস্তা খেতে খেতে চাচার সাথে কথা হলো। আরবি ভাষায় কথা বলতে পারেন তিনি। বহুবছর সৌদি আরব ছিলেন। চাচার বড় ছেলেটা সৌদি আরবে হত্যা হয়েছে। চাচার নাতনি মিম— দারুন মিষ্টি মেয়ে যেনো বৃষ্টি রাশি রাশি— ক্লাস এইটে পড়ে— এখনো বিয়ে হয়নি। 


রাতে যে প্রাসাদে ছিলাম সেখানে চলে আসি। সিলেট শহরে যেতে হবে। সিলেট শহর থেকে আমাদের নেয়ার জন্যে চলে আসতেছেন নাছির ভাই। নাছির ভাইয়ের সাথে আমাদের অতীত কোনো পরিচয় নেই। একদিনের পরিচয়। তার সিএনজি দিয়েই আমরা গোবিন্দগঞ্জ আসি। এবং আজকে রাতে তার বাসাতেই থাকবো আমরা। 


প্রাসাদে বিশাল খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। পৃথিবীর সবাই জানে আমি খুবই সীমিত খাবারের লোক। এই সীমিত খাবারের রেজা ভাই মহাভারতের ভীমের মতো  খাওয়া দাওয়া করেছে এই প্রাসাদে। যে আপা খাবার রান্না করেছেন তিনি অসাধারণ অমায়িক মানুষ। বলে রাখা ভালো এই প্রাসাদ বাড়ির কারো সাথে আমাদের পূর্ব কোনো পরিচয় নেই। 


সিএনজি চলছে। নাছির ভাইয়ের পাশে বসা আমি। রাই ও নবী ভাই সুরমা নদীর জলে স্নান করে নিলো। সিএনজি চলছে। 


জ্ঞানী ভাই, আপনি মনে হয় বিয়ে করেননি। 

আপনি কেমনে বুঝলেন? 

বিবাহিতরা এতো সুখী থাকতে পারে না। 


নাছির ভাই গতকাল থেকে আমাকে 'জ্ঞানী ভাই' বলে। তার মতে আমি জ্ঞানী জ্ঞানী কথা বলি। নাছির ভাইয়ের বউও নাকি অনেক জ্ঞানী। তাই বউয়ের সাথে তার প্রায়ই মধুর দ্বন্দ্ব হয়। তাছাড়া পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মেয়েদের জ্ঞান সহ্য করতে পারে না। 


সিএনজি চলছে। নাছির ভাইয়ের ডান পাশে নবী ভাই। নাছির ভাইয়ের কথা শুনে নবী ভাই কথা বলে উঠলেন ''আমাকে আপনার অসুখী মনে হয়?" নাছির ভাই চুপ। আমি বুঝলাম, বিবাহিতরা বিবাহিতদের অনেক উত্তর নীরব ভাষায় দিয়ে থাকে। সিএনজি চলছে। সিএনজি চলছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে আমার পা পড়েনি। 


আমাদের সিএনজি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দরজার সামনে। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু বন্ধ সেহেতু আমাদের ঢুকতে দেয়া হবে না। এখন উপায়? যেখানে আছে রেজা ভাই সেখানে অবশ্যই আছে উপায়। চুপ করে একটু দাড়ালাম। এমন সময় চমৎকার এক যুবক-যুবতীর টিম বের হচ্ছে। ছেলেটির নাম সালমান। সালমানের সাথে ত্রিশ সেকেন্ড কথা বললাম।  শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় পড়ে সে। সে মিনিটেই সব ব্যবস্থা করে ফেললো। সালমানের বাবা নায়ক সালমান শাহ'র ভক্ত ছিলেন। তাই ছেলের নাম রাখলেন সালমান। সালমানের জীবনে কোনো শাবনুর আসছে কিনা জানি না।


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি আমার কাছে দারুন ভালো লেগেছে। আমার ধারনা ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়টি কোনো প্রান্তিক এলাকায় হবে অথচ এটি শহরের অধিত্যকায়। খুব ভালো লেগেছে শহীদ মিনারের অবস্থান ও রাস্তাটা— সপ্তপর্না গাছটির কথা ভুলবো না কখনো। 


লিডিং ইউভার্সিটির শহীদ মিনারটিও ভালো লেগেছে— লিডিং ইউনিভার্সিটি ২০০১ সালে বেসরকারি  বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২[১] এর অধীনে বাংলাদেশের সিলেটে প্রতিষ্ঠিত হয়— সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এটি— সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস রাগিব নগর,দক্ষিণ সুরমা,সিলেট এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয়টির সমস্ত কার্যক্রম চলছে। একটি গ্রাম এলাকায় একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলা সত্যিই নিকানো সাহস ও প্রত্যয় সুন্দর ইচ্ছার ব্যাপার।


এলাকাটির নাম রাগীব নগর হওয়ার পেছনে ইতিহাস রয়েছে। ম্যান মেইড ইতিহাস— ২০০৩ সালের ১১ ডিসেম্বর দক্ষিণ সুরমা-বিশ্বানাথের কামাল বাজার এলাকার তালিবপুরের বাসিন্দা রাগীব আলীর চাচাত ভাই লাল মিয়া স্থানীয় কলেজ মাঠে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তালিবপুর গ্রামকে রাগীব নগর ঘোষণা করেন। ২০০৪ সালের মার্চে সিলেটের বিশ্বনাথ আদালতে গ্রামবাসীর পক্ষে আবু সাঈদ বাদী হয়ে লাল মিয়া ও রাগীব আলীসহ কয়েক জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রায় ছয় বছর উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্তের মুখ দেখে— 'রাগীব নগর’ নাম ব্যবহার অবৈধ। রাগীব শব্দের অর্থ High ambitious!  High ambitious খারাপ কিছু না যখন আমরা distance Ladder মেনে চলতে পারবো। 


সিএনজি চলছে। এইবার সিএনজি থামবে মাজারে। আত্মার বিজ্ঞানী হযরত শাহজালাল (র) মাজারে। মাজারে গিয়ে চুপ করে বসে রইলাম। মনে মনে তিনার সাথে অনেক অনেক কথা বলে আস্তে আস্তে সিএনজির কাছে চলে আসি। শাহাজালাল (র) মাজার একমাত্র মাজার যেখানে আমার বারবার যেতে ইচ্ছে করে। সিএনজি চলছে। নাছির ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছি আমরা। 


নাছির ভাইয়ের বাসায় ব্যাগপত্র রেখে আমি আর রাইয়ান বের হয়ে গেলাম রাতের সিলেট দেখতে। রিকশা করে। রাতের সিলেট জোনাকির মতো সুন্দর— মিট মিট ঢিপ ঢিপ। পানসি রেস্টুরেন্ট ও পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট। সিলেটের জিন্দাবাজারে অবস্থিত দুটি রেস্টুরেন্ট। আমরা দুটি রেস্টুরেন্টেই যাই। খাওয়া দাওয়া করি। খাবারের মান ভালোই।  রাস্তার পাশেই দেখি হাজার প্রকারের আচারের ভাসমান দোকান। আট প্রকারের মিশ্র আচার কিনে খেতে বেশ আরাম লাগছিল। ঠেলা ব্রিজের পাশেই সেলফি ব্রিজ। সেলফি ব্রিজটি নতুন হয়েছে।  সরকার দেশের শরীরের উন্নয়নের জন্যে কাজ করছে বলা যায় কিন্তু দেশের মনের মান কে উন্নয়ন করবে!? 


শনিবার সকাল। আজ রাতের ট্রেনে বাড়ি ফিরবো। নাস্তা করে যাত্রা শুরু করি রাতারগুল ও জাফলং সুন্দরীর কথা মাথায় নিয়ে। পথে হযরত শাহ পরান (র) মাজার। সেখানেও কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে আধ্যাত্মিক পাওয়ার নিয়ে নিলাম। 


আমরা যাকে বলি মুক্তা গাছ, সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় তাকে বলে রাতা বা পাটি গাছ। আরামদায়ক শীতল পাটি  তৈরি করা যায় রাতা বা মুক্তা গাছ দিয়ে।  রাতারগুল গিয়ে দেখি মুক্তা গাছ আর মুক্তা গাছ। ছোট্টকালে মুক্তা দিয়া জিন্দাবাদ সিন্দাবাদ মুক্তিযুদ্ধ খেলতাম আমরা, আর এখানে সেই মুক্তা গাছ দেখবার লাইগগা টেহা খরচ কইরা আইছি আমরা— ডলার খরচ কইরা অনেক বিদেশিও আইছে— বিদেশিদের লগে রাইয়ের পরিবার সমগ্র কথা বলাও শুরু করে দিছে। সাদা চামড়া দেখলে আমাদের অনেকেরই মাথা ঠিক থাকে না। আর মাথা ঠিক না থাকলেই পেট খারাপ করে।


এখানে সবচেয়ে বেশি জন্মায় করচ গাছ ( Millettia pinnata)। এই বনের গাছপালা বছরে ৪ থেকে ৭ মাস পানির নিচে থাকে। বর্ষাকালে এই বন ২০–৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। বাকি সারা বছর, পানির উচ্চতা ১০ ফুটের মতো থাকে। বর্ষাকালে এই বনে অথৈ জল থাকে চার মাস। তারপর ছোট ছোট খালগুলো হয়ে যায় পায়ে-চলা পথ। আর তখন পানির আশ্রয় হয় বন বিভাগের খোঁড়া বিলগুলোতে। সেখানেই আশ্রয় নেয় জলজ প্রানিকুল। মিঠাপানির জলাবনটিতে উদ্ভিদের দু'টো স্তর পরিলক্ষিত হয়। উপরের স্তরটি মূলত বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ নিয়ে গঠিত যেখানে নিচের স্তরটিতে ঘন পাটিপাতার (মুর্তা) আধিক্য বিদ্যমান।


এই সোয়াম্প ফরেস্টটি প্রাকৃতিক হলেও বাংলাদেশ বন বিভাগ বেত, কদম, হিজল, মুর্তাসহ নানা জাতের জলসহিষ্ণু গাছ লাগিয়েছে। জলমগ্ন এই বনে রয়েছে হিজল, করচ আর বরুণ গাছ— আছে পিঠালি, অর্জুন, ছাতিম, গুটিজাম। আছে বট গাছও।


সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন রাতারগুল। পৃথিবীর মিঠাপানির  ২২টি জলাবনের মধ্যে  “রাতারগুল জলাবন” একটি। এই জলাবনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর। এই জলাবন গোয়াইন নদীর তীরে অবস্থিত— চেঙ্গির খালের সাথেও তার শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। বাঘ হরিন কুমির টাইপের প্রানি এখানে নেই। এখানে রয়েছে বিষধর সাপ আর কয়েকপ্রকার অসহায় বনজ প্রানি— জলমগ্ন বলে এই বনে সাপের আবাস বেশি, আছে জোঁকও; শুকনো মৌসুমে বেজিও দেখা যায়—এছাড়া রয়েছে বানর, গুঁইসাপ; সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙ্গা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিল এবং বাজপাখি। শীতকালে রাতারগুলে আসে বালিহাঁসসহ প্রচুর পরিযায়ী পাখি, আসে বিশালাকায় শকুনও। টেংরা, খলিসা, রিটা, পাবদা, মায়া, আইড়, কালবাউশ, রুই সহ বিভিন্ন জাতের মাছ চোখে আসে। 


এই বনের সবচেয়ে ভালো লাগার দিক তার নিস্তব্ধতা। এক অলৌকিক আধিপত্য আধ্যাত্মিক নিস্তব্ধতা এখানে বিরাজ করে। রাতে নৌকা করে এই বনে বর্ষাকালে থাকা মানে নিশ্চিত জীবন জিজ্ঞাসার নতুন এক অধ্যাপক অধ্যায়ের খোঁজ পাওয়া যাবে। কোনো এক নিপ চান্নি রাইতে তোমার চোখে আমার জন্ম হলে এই বনে পৃথিবীর আর কোনো বিষাদ যন্ত্রণা থাকবে না। করচের ফুল ❀ তোমার খোপায় শেষ রাতের প্রার্থনার মতো রেখে দিয়ে কুয়াশা মায়ায় পাখি হয়ে দেখবো আমরাই জীবনানন্দের জল হংসগমন রতিপ্রিয় সুখ কামনাপ্রিয় প্রশান্তি। 


হাওর এলাকার প্লাবনভূমি— সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার বিভিন্ন এলাকায় করচ প্রজাতির আধিক্য চোখে পড়ার মতো। 


করচ ঘন ডালপালাবিশিষ্ট বহুবর্ষজীবী বৃক্ষ। করচের তেল বায়োডিজেল হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে বলে গবেষণা চলছে। সুনামগঞ্জ জেলার ১৩৩টি ছোটবড় হাওরে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া হিজল-করচের অনেক গাছ রয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় হিজল-করচের বাগ।


এই প্রযুক্তি বিপ্লবের সময়ে বিশ্ববাসী পরিচিত হচ্ছে বায়োডিজেলের সাথে। এই বায়োডিজেলটি সংগ্রহ করা হয় গাছ থেকে এবং এ জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত গাছ হচ্ছে যাত্রাফা, গম, ভুট্টা, পাম, সাদা মান্দার। এগুলোর ফল ও ফুল থেকে সংগৃহীত তেলকেই বলা হচ্ছে বায়োডিজেল।

এ দেশের আদিবাসী ও গ্রামের মানুষ সাদা মান্দারের [Jatropa Carcus (যাত্রোপা কারকাস] বীজ থেকে তেল সংগ্রহ করে কুপি বাতি জ্বালাত। কেরোসিন আর বিদ্যুতের আগমন সে বৃক্ষ-জ্বালানির ইতিহাস ব্যবহারের আড়ালে চলে যায়। 


হিজল-করচ-আড়াং বন, হাওরের মূলধন— জ্বালানির ইতিহাস যেহেতু পৃথিবীর অগ্রগতির ইতিহাসের রাধাকৃষ্ণ সেহেতু এই সোয়াম্প ফরেস্টের বৃক্ষ গাছ পালা হয়ে উঠতে পারে বায়োডিজেলর খনিস্পট। পৃথিবী এখন বায়োডিজেলের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে জ্বালানির সহজলভ্য আধার হিসাবে। ফলে হাওড়ের প্রান জলজ উদ্ভিদ বৃক্ষের দিকে আমাদের নজরকে শক্তিশালী করতে হবে— রাতারগুল জলাভূমির দক্ষিণ দিকে রয়েছে দুটি হাওর: শিমুল বিল হাওর ও নেওয়া বিল হাওর। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব ২৬ কিলোমিটার।


সিএনজি চলছে। এখন গন্তব্য ফলাফল জাফলং। সিএনজি চলছে। পাহাড়ি রাস্তা। সন্ধ্যা নামার কিছুক্ষণ আগে জাফলং গিয়ে পা রাখি। ও মাই গড! আগের জাফলং আর নাই!  ন্যাচারাল বিউটি উধাও! আসামের জলমাতা থেকে জলদুগ্ধ ঝরনা হয়ে আসতেছে পিয়াইন নদীর বুক ধরে— জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীনে থাকা এক নির্জন বনভূমি। ১৯৫৪ সালে জমিদারি  প্রথার বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে খাসিয়া-জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটলেও বেশ কয়েক বছর জাফলংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা পতিতও পড়েছিল। পরবর্তিতে ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌপথে জাফলং আসতে শুরু করেন— পাথর ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকলে একসময় গড়ে ওঠে নতুন জনবসতি। পাহাড় আর ঝরনা-নদীর অভেদ্য সম্পর্কই জাফলং সুন্দরীর নাভিকমল আকর্ষন— অথচ সেই প্রকৃত সৌন্দর্যের জায়গা আজ আবিলতার মুখোমুখি। 


বিজিবি ক্যাম্পের পাশ থেকে রাতের আসাম উপভোগ করি। ভালো লাগে দারুণ। কিন্তু সেখানে যেতে মানা। দুটি দেশ দুটি নিয়ম অথচ একই আদমের সন্তান। মানচিত্র হন্তারকের চেহারার কোন জায়গায় কাটাতার বসানো যায় ভাবতে ভাবতে নাছির ভাইয়ের সিএনজির কাছে চলে আসি। 


সিএনজি চলছে। জাফলং সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে। সিএনজি চলছে। রাতের ট্রেনের টিকেট কাটা। স্টেশনে পৌছে গেলাম যথাসময়ে। একটি দুর্ঘটনা ঘটে গ্যাছে ইতিমধ্যে— আমাদের টিকেটের যাত্রা সময় শনিবার সকাল— আমি যাকে অনলাইনে টিকেট কাটতে বলছি সে শনিবার সকালের টিকেট কেটেছে— এখন উপায়!? 


জীবন যেখানে যেমন— উপায় বের করে রোববার সকালে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে নোঙর করি— আমাদের ভ্রমন-আন্টি বৌদির আম্মু অসুস্থ হয়ে গেছেন— তিনাকে ভৈরবের একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে প্রেসার চেকাপের জন্যে। ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রেসার কত না জেনেই আমি চললাম বাড়ি দিকে— বাড়ি যেতে যেতে মাথায় ঘুরছে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ফেরা উপন্যাসের কয়েকটি লাইন— 


“বন্ধুগণ হাওয়া ঘুরছে।

বাতাস এখন ওলট-পালট। সামলে। ভয় নেই, সঙ্কট মানেই পরিত্রাণ। বাতাস ঘুরছে। ঘোরার মুখটাতেই যা একটু গোলমাল। ঘরের চাল উড়ে যায়, মাথার ওপর আকাশ বেরিয়ে পড়ে। মড় মড় করে ভেঙে পড়ে গাছের ডাল। মেঘ চমকায়, কড়াৎ করে বাজ পড়ে। তবু মনে রাখবেন, হাওয়া ঘুরছে। হাওয়া ঘুরে যাচ্ছে।  হাত বদল হচ্ছে পৃথিবীর অধিকার। দেরি নেই।”

বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১

বিম্বু

        দেখতে চাই না খোদার চোখ 

তোমার চোখের বয়ান 

          বৃষ্টি হলে মেঘের মৃত্যু 

প্রেম খোদার প্রান

শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২১

মাটি চায় জল

 ওরা সন্তানের মতো ভাবে 

কাশফুলে বৃষ্টি পড়ে

জেএল দেওয়া চুলের মতো উড়ে যায় পাখি

আবার বদনাম নামে সূর্যের পথ ধরে

লাল থেকে আরো লাল হয়ে উঠে প্রতিবাদ 

পাওয়ার ইচ্ছে কাদামাটির নিচে বাইম মাছ

ফ্যামিলির কাছে কম কথা দেওয়া হয় সারাদিন

পানি আর পানি 

জল আর জল

চলো এখনি উঠি পড়ি শান্তিনৌকার খোঁজে 


জীবন তো একটাই

জীবনের নিচে সাদা কাশফুল 

কারো জন্য বিষয় ও বাসনা বিসর্জন দিতে হয় না 

দূরে 

অনাথ চোখের ঠিক সীমানার কাছে

কানি বক 

একই চাঁদ 

একই আকাশ 

ছিন্ন দুটি আশাগল্প 


যাতনা জোৎস্না খেলা করে মনে

নোনা বর্ষায় দুটি চোখ খুঁজে খুঁজে হয়রান

এখনও খোঁজ তুমি আমায়

শীতল হাওয়ায় কলমি ফুলের ধ্যানতৃপ্ত পাখায় 

একটি পাখি একা একা উড়ে আসে ছায়াপথ ধরে 

নদীর কিনারে

ছাদ লাগবে না প্রিয়

নৌকায় ছায়ায় চড়ুইভাতি 

আচ্ছা আমরা যাই

আমরা যাচ্ছি

অজানা পথে

লোকালয়ে 

একটি পাখি একা একা উড়ে গান গায় নদীর কিনারে 


মেঘ আসে তোমার দেখাপথে 

অন্ধকার নামে 

তুমি ডুবে যাও 

আমি ডুবে যাই 

মিথ্যা পৃথিবীর মিথ্যা ছলনায়

ছনচালে বাগানমাখানো বাড়ি 

মাঠের মাঝখানে একা এক দোকানে 

চাওয়ার আলোয় পাওয়ার কড়চাঘর 

নিভে গেলে কথা মুখোমুখি বসা

রাগ ঘৃণা হিংসা রেখে আসি জলের আগুনে 

গাঙচিল গতির নিচে রোদ পোহাতে পোহাতে ফেরারি 

নীরবতা শুদ্ধ ফুল চাষ করে


এমন দিনে রবে না তোমার ঘরমুখো আলো 

রবে না আমাদের

চুলখোলা শ্যামাঙ্গিনী ঢেউয়ের মতো বাজে বারবার 

ঠিক একদিন পেয়ে যাবো

দ্বীপ-আশা ফুল ফল


পাখি ডাকে সকালবেলা 

ব্রিজের উপরে হাওয়াইমিঠাই উচ্ছ্বাস 

এক তুমি'র প্রেমের জিহাদ কালো চশমা 

মাঝির বৈঠাতে আমাদের ভবিষ্যৎ 

লেখা না হোক আর কথা ছন্দমালা

এক দোকানির একা বসে থাকা

দ্রৌপদীচোখ জানে গোবিন্দ মহান

জায়েদা জানে না কে এই ইমাম 

কে এই ইমাম হাসান

তরবারিকে প্রেমের সাঁকো করে 

চলো হেটে যাই প্রানবিক পথে


কানি বক ফিরে আসো তুমি 

ফিরে তাকাও 

বেলা বয়ে যায়

যেতে হবে বহুদূর শান্তিযতির সীমায়

বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আফা লে র মাছ

 ১

রিক্সাওয়ালা ভাসমান রেকর্ডার


০২

সবাই যখন কথা বলে সবপাশ মাতাল করে রাখে নিজেকে তখন নিতান্ত গরীব কথার মানুষ মনে করতে থাকি। কৃপন স্বভাবও কিন্তু আমার নেই। ব্যাংকে আমি কথা জমা রাখি না। আজকাল কথা শুনতেও ভালো লাগে না। আমি মনে হয় গাধার মতো চুপ থাকতে শিখেগেছি দুর্বলের মতো গর্জন করবো বলে। শুনেছি দুর্বলের গর্জন নাকি অনেক সুন্দর, অনেক শক্তিশালী।


০৩

যা দেখা হয় তা মনেই দেখা হয়, চোখ তো কেবল দেখার উপায় মাত্র


০৪

ইতিহাস সত্যের কবর, সত্যের জন্য কোনো হাশরের ময়দান নেই 

History is the grave of the truth, no meadow be found for the truth 


05

প্রিয় 

ফুলের গান শুনতে চাই না, 

কবরে থেকেও ফুলের ঘ্রাণ পেতে চাই

Dear

not eager to listen a song on flower, burning need to have odor of flower even in grave.


06

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যার কোনো কাজ নাই তার কোনো শত্রু থাকার দরকার নাই— সে নিজেই নিজের শত্রু


07

এরা জীবন দিতে চায়নি, এরা জীবন দেয়ার ফাঁদে আটকে গেছে


০৮

আমরা প্রত্যেকে ভিক্ষুক। ভালোবাসা পাওয়ার ভিক্ষুক, প্রশংসা পাওয়ার ভিক্ষুক, অনুদান পাওয়ার ভিক্ষুক, সহানুভূতি পাওয়ার ভিক্ষুক।

চোখে কয়েকজন দানবীর দেখি যাঁরা প্রেমিক। 

আমি ভিক্ষাটা খুব ভালোভাবেই করি। কারণ ভিক্ষা না করলে ভিক্ষুক চেনা যায় না।


০৯

যে লোকটি ফায়ার সার্ভিসের চাকরি করে তার ঘরেও ফায়ার লাগে


১০

টেনশন করি না, কারন টেনশনে ভাত দেয় না


১১

তৃতীয় পক্ষ এখানে বিপক্ষ


১২

মমতা ও ধৈর্য দিয়ে বিশ্ব জয় করা যায়— মমতা ও ধৈর্য ছাড়া ঘরের বিলাইকেও সন্তুষ্ট করা যায় না


১৩

সিনেমা দেখার সময়ে প্রত্যেক ছেলে নায়ক আর প্রত্যেক মেয়ে নায়িকা হয়ে যায়। কেউ ভিল্যান হতে চাই না। অথচ বাস্তব জীবনে ভিলেনের  অভিনয়টা আমরা ভালো করি।

At the time of watching movie every boy for hero, every girl for heroine. It is atomic something that no one wants to be villain. But the lives within veritable flow we are indoor villain.


১৪

মানুষ শয়তানকে গালি দেয় না, মানুষ শয়তানকে দিয়ে গালি দেয়


১৫

হৃদয় এক অনিবার্য অসুখের নাম


১৬

একপক্ষ ফাঁসিতে ঝুলে জান্নাতে চলে যাবে, আরেকপক্ষ ফাঁসি দিয়ে জান্নাতে চলে যাবে, অন্যপক্ষ চুপ থেকে জান্নাতে চলে যাবে (যে চুপ থাকলো সেই নিরাপদ), আমাদের আক্কাস ভাই কোনো পক্ষের সাথেই নাই তাই তাকে সোজা জাহান্নামে চলে যেতে হবে।


১৭

অসংখ্য ভীড়ের মাঝে দুটি চোখ যৌথভাবে একা

Eyes are baloney alone within the Silva  crowd 


18

নদী পার হতে গিয়ে অনেকেই জেলে হয়ে মাছ ধরা শুরু করে, কেউ কেউ তীরে গিয়ে সূর্যধরার পথে হাঁটা শুরু করে


19

স্টেশনে প্রত্যেকেই যাত্রী— যাত্রা সত্য, গন্তব্য আলাদা


২০

যাকে ধরে ধরে কলা খাওয়া শেখাবেন সেই আপনাকে কলার বাকল দিয়ে আহত করবে


২১

সিনেমা দেখার সময় প্রত্যেকে নায়ক কিংবা নায়িকা হয়ে পর্দার ভেতরে চলে যায় কিন্তু মারামারি শুরু হয়ে গেলে প্রত্যেকে পর্দার বাইরে চলে আসে


২২

রাগের নিচে শত্রু মারা যায় না, মারা যায় রাগান্বিত ব্যক্তির মন


২৩

একটি নৌকা একদিকে ডুবে গেলে অন্যদিকে ভেসে ওঠে। আপনি যদি নৌকাটি গর্ত করে দেন তাহলে দেখবেন নৌকাটি ভেসে আছে, আসলে নৌকাটি ডুবে যাচ্ছে।


24

হে কাবার পাথর, এতো গুনা তুমি কোথায় রাখো? الحجر الأسود‎‎!?


25

আমি চাইবো আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা দিবেন সবাই স্নান করে ঘুমাতে যাবেন। তাহলে বাংলাদেশের মানুষের অসুস্থ হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে, স্বাস্থ্যখাতেও বাজেট কম দিবে হবে, ডাক্তারের উপর চাপ কমবে। 


তাতে ঔষধ কোম্পানি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর উপর মনে মনে মামলা দায়ের করতে পারে। তাতে সমস্যা নেই,  জনগন সাথে থাকলে প্রকাশ্য মামলাই মামলা না, আর কে যে বলে মনে মনে মামলা!


২৬

যে খাবার খেলে শারীরিক সমস্যা বাড়ে ডাক্তার বলে তা পরিহার করার জন্যে— যে সম্পদ অর্জন করতে গেলে মানসিক যন্ত্রনা বাড়ে তা পরিহার করার কথা বলে আত্মার বিজ্ঞানী— ত্যাগের প্রশান্তি ভোগের আনন্দের চেয়ে বেশি


27

পৃথিবী মনের ছায়া, পৃথিবী তাই করে মন যা করতে চায়, পৃথিবী তাই দেখে মন যা দেখতে চায়, পৃথিবী তাই শুনে মন যা শুনতে চায়


28

মানুষ নিজের ব্যাপারে সবচেয়ে কম জানে। কারন চোখ নিজেকে দেখে না,কান নিজেকে শুনে না। অন্যের চোখে আমরা আমাদেরকে দেখি, অন্যের বাক্যে আমরা আমাদেরকে শুনি।


29

নতুন এক ডায়েট আমদানি হয়েছে। নাম তার ক্রাস ডায়েট। মেদ কমাতে তারা ক্রাস ডায়েট করে অথচ তাদের মেয়াদ কমে যায়।


30

Ovation is an outlet spring 


31

মশার দৌড় রক্ত পর্যন্ত


32

তোমরা হয়তো নাগরিক মাংস নিয়ে, আমরা এখনো হৃদয় ঘটিত ব্যাপার নিয়ে বড্ড গোঁয়ার


33

বাঙালি প্রশ্ন করতে পারে, প্রশ্ন নিয়ে আবিষ্কার করতে পারে না


34

সকালের প্রেমপিরিতি দুপুরের ঘামের সাথে পালায়


35

আমরা কেবল চাঁদের হাসিটা দেখি, চাঁদের দুঃখ দেখার সুযোগ আমাদের নেই। চাঁদ তার দুঃখসময়ে আড়ালে চলে যায়, মানুষের চোখের সীমানা থেকে দূরে  বহুদূরে চলে যায়।


৩৬

মানুষের আকাশের দরকার হয়— বাতাসে পাখি বাস করে না


37

পরাজয় মানুষকে নিজের দিকে টেনে আনে আর জয় মানুষকে ভাসমান করে


38

absence breeds unity,unity breeds absence 


৩৯

প্রেমিকরা প্রেমিকার কাছে গেলে বাচ্চা হয়ে যায়। এক থেকে দেড় বছরের বাচ্চা। 

বলেন ত বাচ্চাদের প্রধান খাবার কী?


৪০

সুতো ছাড়া কোনো ঘুড়িকে আকাশে উড়তে দেখি না, পরে যেতে দেখি। মানুষঘুড়িতেও লেগে আছে সময়সুতো।


৪১

সূর্য কি মেঘের প্রেমিক যার তাপে মেঘ ধীরে ধীরে নি:শেষ হয়ে যায়? 


Is the cloud loveable beloved of the sun that amortizes the cloud slowly slowly?


৪২

অন্ধ ডাক্তার, অন্ধ কবিরাজ, অন্ধ ছাত্র, অন্ধ ব্যবসায়ী হতে পারে। 

অন্ধ প্রেমিক? 

অসম্ভব! 

প্রেমিক হওয়ার জন্য উন্মুক্ত দুটি চোখ থাকা আবশ্যক। একটি চোখ হলেও চলবে না। কারণ প্রেমের মন্দিরে ডিসকাউন্ট চলে না।


43

তোমাকে একটানে উপরে তোলা হবে তাও রাজনীতি একটানে তোমাকে  নিচে নামানো হবে তাও রাজনীতি


44

কপালের টিপের মতো তারা প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করে, কপাল বদলানোর ক্ষমতা না থাকলেও টিপ বদলানোর ক্ষমতা নিয়েই তারা জন্মেছে


45

দর্শক ভালো খেলে মুখে, খেলোয়াড় খেলে যায় অঙ্গে


৪৬

দায় মানে কোনো কিছুর উপর অন্যের অধিকার। কন্যাসন্তান পিতা-মাতার কাছে এক প্রকার দায়। প্রতিটি কন্যাসন্তান দায় হয়ে জন্মগ্রহণ করে  যাহাদের শরীরে অদৃশ্যভাবে লেখা থাকে চাহিবার মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবেন।


৪৭

প্রেম এক আকাশের নাম যার কোনো আকাশি নেই


৪৮

মুরুব্বিরা  গরু কিনতে যায়। গরুর দাঁত দেখে, পা দেখে, চামড়া দেখে, চামড়ার কালার দেখে, মাংস কিংবা দুধের হিসাব-নিকাশ করে।

আসলেই গরু গৃহপালিত প্রাণি! 

মুরুব্বিরা বউ কিনতে যায়। বউয়ের দাঁত দেখে, পা দেখে, চামড়া দেখে, চামড়ার কালার দেখে, চুল দেখে, আসমানী জ্ঞান কেমন আছে তা যাচাই করে।

আসলেই বউ গৃহপালিত রমণী!


৪৯

মানুষকে অবিশ্বাস করা পাপ 

পাপীদের উপর আস্থা রাখা অন্যায় 

It is crime not in trust over the man

Tenfold sin when an unfair turned into persona grata


50

প্রকৃতি ঠিক প্রতিশোধ শব্দটা জানে না। সে তার নিয়মতান্ত্রিক কাজটি করে যায়।  নিয়মতান্ত্রিক কাজটিই অনেক সময় অনিয়মকারীর কাছে এসে প্রতিশোধ হয়ে যায়। মানুষ যেমন করে প্রতিশোধ শব্দটি নাড়াচাড়া করে প্রকৃতি যদি তেমন করে নাড়াচাড়া করত তাহলে পৃথিবীতে প্রানের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতো অনেক অনেক আগে। 


প্রকৃতি পুরষ্কার শব্দটিও মানে না। সে পুরষ্কার তিরস্কারের অনেক উর্ধ্বে বাস করে। সংসারের মাথা দিয়া প্রকৃতিকে অনুধাবন করা যাবে না। তাকে অনুধাবন করতে হলে সংসারকে পকেটে অথবা আঁচলে ভরতে হবে।

বালু আর বালু

 ভয়ঙ্কর এক রোদ মাথায় নিয়ে আমরা নদী পার হলাম। পৃথিবীতে তখন জঙ্গল বলে কোনো প্রানি নেই। সবই বালু আর বালু। আই মিন মরুভূমি। হাতে প্রচুর বিদেশি টাকা জমা হওয়ার  কারনে ব্যাংকের লকার ভরে গ্যাছে বালুতে। আই মিন মরুভূমিতে। তাই যেখানেই আমরা পা রাখি সেখানেই বালু আর বালু। আই মিন মরুভূমি। মরুভূমি মানে জলের অবিশ্বাস। মরুভূমি মানে অক্সিজেনের অবিশ্বাস। দেশে এখন বালুর পাশাপাশি অবিশ্বাস চাষ হচ্ছে। 


একটা কুকুরকে নিজের মুখের খাবার দিতে গিয়ে নিজেই হকচকিয়ে গেলাম। কারন কুকুর আমাকে ভয় পেয়ে দশ হাত দূর দিয়ে চলে গেছে। এটা কুকুরের অপরাধ নয়— কুকুরের পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব। অপরাধ আর নৈতিকতা এক কথা না। নৈতিকতার কারনে অনেক দোকানকে আমরা প্রতিষ্ঠান বলি। 


নদী পার হতে হতে আমরা ভাবছি দেশে আর কৃষি জমি থাকবে না। কৃষক আর কৃষক থাকতে চান না। কৃষক তার কৃষানিকে আর ভালোবাসে না— তিনার ভালো লাগে আপডেট ক্যাটিকন্যা কাইফ। মধুপনা করতে করতে আমার শীতকম্বলে কুয়াশা নামে— শিশির জমা হয় ভগবানের সদর দরজায়।

সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

মাঝরাতে রেজার হাসি

 এক প্রাচীন নীরবতা জানালা দিয়ে বাতাসের মতো তানহা তানহা ডাক তুলে অন্ধকারে আসন রেখেছে। বিতনু প্রিয়ার মুখ মনের ঘরে শব্দ করে ডাকে। আকাশ নেই আজ— নেই আকাশের ছাদ। কম্পিউটার খুলে বসে আছে রেজা। মনিটর থেকে ভেসে আসছে হাসির বাথান— দেবী মনসা ছদ্মবেশাসন। রেজা কেনো হাসে— তাও মাঝরাতে!? তার চোখে কেনো লাল রঙের বাতিঘর-সুখ!?


সকাল ঘুমাতে যাবে— 

রাত জেগে উঠবে— 

একটা চাঁদ একাই জীবনভর— 

ব্যাজোক্তি কালে মানুষের মৃত্যু অনিবার্য— মৃত্যু যেনো মৃত্যু নয় ঠিক যেনো শীতের চাদর— উষ্ণ আরাম শরীরের জীবন। 


গাছের পাতা অটো নৃত্য করে। মাঝরাতে। বাতাসের সাথে। অতিথি অতীত সুদূরমগ্ন বিষন্ন বিকাল পাখি হয়ে বর্তমানের মাঠে রাখালি বিতান কন্যা। 

এই মিষ্টি বাতাস 

এই মিষ্টি আলো-চাঁদ-খেলা 

গোল গোল শব্দের স্বপ্নমায়া ছায়া 

মাল্টিপ্লাগে জমে থাকা সতর্ক লাল চোখ— ডাকে অবিরাম প্রতিদিন প্রতিনিয়ত প্রতিক্ষেত্রে প্রতিক্ষণ— এই মাঝরাতে ট্রেনের শব্দ কানের কাছে প্রেমিকার মতো ঠোঁটগন্ধিবেণী রঙের পরশ।


ভালো অন্ধকার আরও ভালো নম্বর পেলেও তার সাদা পোশাক আরও সাদা হয় নাকো আর— সাদা বক উড়ে যায় পৃথিবীর প্রাচীন গর্তের নির্মিত ছায়া ধরে— মাঝরাতে মনে পড়ে সব— ইশান কোনের লুকানো মেঘ ☁— সাগরের গভীরে আরও কোনো এক গভীর সাগর — সব মনে পড়ে মাঝরাতে—  সন্ধ্যা মাঝির ছলছল হাসিজল প্লাবিত আপেল-মাংস-ঠোঁট— মনে পড়ে সব— জানালার কাছে বাতাসের সুর— রুমের ভেতর গাছের নিচে দুটি দেহ এক্সেল পাওয়ারপয়েন্ট খেলাধূলা শিহরিত কম্পন। 

চলে যাওয়া 

থেকে যাওয়া 

ভেসে যাওয়া 

থেমে থাকা— মাঝরাতে নীরবে নদীর জলে 

                    পাখিমন স্বভাবের প্রভাবে গেলে 

                    দেহফল রোদছায়ায় পরিপক্ক হলে 

দেহ পাবে মন— মন পাবে দেহ— ফুল পাতা তারপর মাঝখানে মাঝরাত— তারপর মাঝরাতে রেজার হাসি ☺।

রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

পাজুন বিছুন বইল ফাজুন বিছঐন

 বইল। আমের মকুলকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের মানুষ বইল বলে। মুকুল> বুকুল> বইল অথবা বউল> বইল। 


ফাজুন মানে লাঠি।গরুকে দিয়ে হালচাষ করার জন্যে একধরনের লাঠির দরকার হতো— সেই বিশেষ ধরনের ছোট মাঝারি  শক্তিশালী লাঠিকে ফাজুন বলে। এই লাঠিটা সাধারণত বরাক বাশ দিয়ে তৈরি করা হতো। 


হালের বলদ দিয়ে মাঠে হাল বাওয়া হতো ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত— কোন কোন সময় হালের বলদ দুর্বল হয়ে শুয়ে পড়তো— আইল্লা পাজুন দিয়ে পিটানো হতো এক্টিভেট হওয়ার জন্য— তাতেও যদি বলদ সক্রিয় না হতো, তাহলে বলদের লেজের মাথায় সুঁই ঢুকানো হতো— কোনো কোনো সময় ম্যাচ জ্বালিয়ে সেকা দেওয়া হতো লেজের আগায়— সেকা খেয়ে বলদ লাফ দিয়ে উঠে পড়তো!


বিছঐন মানে পাখা— চমৎকার হাতের কারুকাজ সংবলিত পাখা। যখন বিদ্যুৎ ছিল না তখন কৃষি প্রধান বাংলার মানুষের শরীরে বাতাস করার প্রধান হাতিয়ার ছিলো বিছঐন। বিছঐন হওয়া মানে বিচলিত হওয়া— অতো বিছঐন  অইছো কেরে? বিছঔনে গ্রামবাংলার মায়েরা বউরা সুইসুতা দিয়ে চমৎকার চমৎকার কথা লিখে রাখতেন—



পাখি উড়ে গেলে নিচে থাকে ছায়া 

মানুষ মরে গেলে থাকে শুধু মায়া



ফুল ফুটে ঝরে যায় দুনিয়ার রীতি

মানুষ মরে গেলে থাকে শুধু স্মৃতি


বিছঐনে অনেক গ্রামীন নারী আবার তার মুর্শিদের নাম,তার স্বামীর নাম অথবা ছেলের নাম লিখে রাখতো। সন্তান জন্মগ্রহন করলে অনেকে বিছঐনে জন্মতারিখটি লিখে রাখতো সন্তানের নামসহ। তালপাতার বিছঐন খুবই আলোচিত ও জনপ্রিয়।  তবে কাপড় দিয়ে বানানো বিছঐন খুবই প্রচলিত ও টেকসই এবং সহজলভ্য। ফুল পাখি লতা পাতার চিত্রের সুইসুতা-অঙ্কন একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। গ্রামের মহিলারা এই শিল্পকর্মটি করতো বর্ষাকালে। কারন তখন তাদের হাতে তেমন কাজ থাকতো না— টানা বৃষ্টি হতো। 


বাংলাদেশের অনেক এলাকায় বিশেষ করে টাঙ্গাইল ও ঢাকার কয়েকটি অঞ্চলে বিছঐনকে বলে পাংখা। 'পুরাই পাংখা' এমন একটি শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। 'পুরাই পাংখা' মানে খুব আনন্দে আছে, ভাবে আছে, ইউফোরিয়া মোডে রয়েছে এমন ভাবকে নির্দেশ করে। 


সংস্কৃত ব্যজন ( বি+ অজ্+অন) মানে বাতাস করার কাজ বা পাখাকে নির্দেশ করে। পাখাকে সংস্কৃতিতে ব্যজনীও বলে। এই ব্যজনী শব্দ থেকে বিছঐন শব্দের সৃষ্টি। বর্তমানে প্লাস্টিকের বিছঐন পাওয়া যায়। রাজাদের আমলে বিখ্যাত ছিলো ময়ূর পালকের বিছঐন।


টাঙ্গাইল জেলায় বিছুন মানে বীজ— টাঙ্গাইলের কোনো কোনো জায়গায় বিছন শব্দের ব্যবহার পাখা অর্থে শুনতে পাওয়া যায়। তবে ময়মনসিংহ ও নরসিংদী জেলায় বিছুন মানে বিজনি মানে হাতপাখা। বিছুন নিয়ে আমরা আঞ্চলিক ছড়ারও খোঁজ পেয়ে থাকি,


ইছুন বিছুন

দরগার বিচুন

উঠ উঠ বউগো

মোমের ছাতি ধরগো

মোমের ছাতি উগুরা

ফাল দিয়ে ধরে ডুগুরা


বেচয়েন ফারসি শব্দ এবং এটি বিশেষন যার অর্থ অস্থির। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে 'চৈন নাই' বলে একটি শব্দ ব্যবহার হয়ে থাকে। চৈন নাই মানে স্থিরতা নাই— অস্থির। অনেকে মনে করেন বেচয়েন বা বেচৈন থেকে বিছুন শব্দের যাত্রাপথ রচিত হয়েছে।

শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

জেলে তাই মাছ খাই

 তুমি মাছ 

         আমি মাঝি 

                ক্ষুধা পেলে 

                      জেলে সাজি

ফেরানো যায় না

 'তুমি আছো' এমন বোধ মনে কাজ করে না— 'তুমি নাই' এমন বোধ মনে কাজ করে না— আমাকে হারালে তোমাকে পাই— তোমাকে হারালে আমাকে পাই— হারাতে হারাতে পেয়ে যাই— পেতে পেতে হারিয়ে যাই

দশে মিলে বা জারে যাই

 ক


কাজল রবি দাসের দোকানে গিয়ে চামড়া জুতা দেয়ার জন্যে বললাম। তিনি জেনুইন চামড়ার জুতা দিলো। সোল ব্যতীত জুতাটির আপাদমস্তক চামড়ার। 

দাদা কিসের চামড়ার এই জুতাটি? 

গরুর। 

গরু না আপনাদের দেবতা?  

এই সব কতা ইণ্ডিয়া গিয়া কন, ইডা বাংলাদেশ। 


চামড়ার জুতা পড়লে নাকি মাথা ঠান্ডা থাকে। দেবতার চামড়া থেকে যে জুতা নির্মান হলো সেই জুতা পায়ের নিচে পড়ে কেমনে মাথা ঠান্ডা রাখবো!? 



রিক্সাওয়ালাকে বললাম আমাকে আজিমপুর কলোনিতে দিয়ে আসতে। টিএসসি থেকে আজিমপুর কলোনি। 


মামা ভাড়া কত? 

৩০ টেহা দিলেও নিতে ফারমো, ৭০ টেহা দিয়াও নিতে ফারমো, আবার ২০ টেহা দিয়াও নিতে ফারমো। 


রিক্সাচালকের দরদাম শুনে আমি তো অবাক। আমি ৩০ টেহা দিয়া রাজি হইলাম। 


আল্লা গো! ইডা রিক্সা চলতাছে না, চলতাছে বিমান। মামা আস্তে চালান। মামা বেশি কতা কইয়েন না— যেমন ভাড়া তেমন চলন। 


রিক্সা থেকে নেমে আমি মোটামুটিভাবে আসমানের দিকে তাকালাম। না— জমিনেই আছি। ৩০ টেহার ভাড়াই এমন আর ২০ টেহার ভাড়ার যে কী অবস্থা ভূষণ্ডির কাকই ভালো জানে।

সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

পরাপর

 পাতাছেড়া ফুল জানে দুঃখ তার কত 

নদীছাড়া জল জানে বেদনা হাওয়া যত 

ফুল দিনশেষে গন্ধে মিশে 

জল তুলে ঢেউ সাগরের দেশে 

গন্ধ ছন্দ বাহারি খেলা 

ঢেউ জল বল প্যারাডক্স বেলা 

ফুল ফল পাতা নিয়ে সময়ের ঘর 

বেদনার সাগরে জাগে আনন্দ চর

রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

সোব্বাস ও পুরান ঢাকা

 ১৬১০ সাল। সুবেদার। বাংলার সুবেদার ইসলাম খান চিশতি ঢাকায় আসন পাতেন। সুবেদার সাহেবের সাথে অসংখ্য পশ্চিম ভারতীয়, আফগান, ইরান-আরবি তথা বহিরাগত মুসলমান-সনাতনী ঢাকায় আসেন। এই আগমন ধারা আরও প্রায় ২৫০ বছর চলমান থাকে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ধরে। সুবেদার ইসলাম খান চিশতিকে মেন্টর মনে করে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে উঠা এই বিশাল জনস্রোতের ধারাই আজকের পুরান ঢাকা। তবে আলো ব্যবসা জুতা ব্যবসা আলু ব্যবসা মাছ ব্যবসাকে কেদ্র করে প্রচুর মিশ্রিত জনস্রোত এই পুরান ঢাকায় পাওয়া যায় যা সুবেদার সাহেবের রচিত জনস্রোতের বাইরে। 


পুরান ঢাকার মানুষ যে ভাষায় কথা বলে তা মূলত সোব্বাসী ভাষা। সুখে বাস করা বা সুখবাস থেকে সোব্বাস। সোব্বাস ঢাকাইয়ারা সুখকে বলে সোখ।সুখ থেকে সোখ, ফলে সুখবাস থেকে সোব্বাস। 


পুরান ঢাকার মানুষ যে সুখে বসবাস করতে পছন্দ করে তার অনেক উদাহরন দেয়া যাবে। তবে একজন মানুষের কথা বলি। মানুষটির সাথে আমার ইদানিং পরিচয় হয়েছে। আমিনুল ইসলাম লিটন। পারিবারিকভাবে পাচ রুমের একটি ফ্লাট পেয়েছেন তিনি। নিচতলায়। কয়েকটি রুম ভাড়া দিয়েছেন, বাকি রুমে পরিবার নিয়ে থাকেন লিটন সাহেব। কোনো কাজ নেই। কোনো কাজ নেই বলতে জীবন নিয়ে পুরান ঢাকার মানুষদের ভাবনা খুবই সাদাসিধা। এতো দৌড়াদৌড়ি নেই।তাড়াহুড়ো নেই। 


লিটন সাহেব একটি চায়ের ছোট্ট দোকান দিয়েছেন নিজ ফ্লাটের একপাশে। সারাদিনে চার-ছয়শো টাকা থাকে। বন্ধুবান্দবরা আড্ডা দিতে আসে। দিব্বি আনন্দে দিন চলে যায়। যারা জীবনের অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে স্বস্তি -শান্তিময়  শব্দের সাথে কোনো দেখা নাই, দেখা নাই প্রিয় হাসি ☺ আড্ডাময় চলিত জীবনের সাথে, যারা আটকা পড়েছে যান্ত্রিক পৃথিবীর নির্মিত বিলাসিতায় তারা নিশ্চিতভাবে আমিনুল ইসলাম লিটন সাহেবের ছোট্ট চায়ের দোকানে গিয়ে খুজে নিতে পারেন জীবনের নির্ধারিত মানে। 


দুইদিন চা খেলাম। একদিনও টাকা দিতে পারি নাই। আপ্যায়ন। তাদের কাছ থেকে শুধু বিরানি খাওয়া শিখলেই চলবে না আক্কাস— আপ্যায়ন করাও শিখতে হবে। 


লিটন সাহেবের কাছ থেকে শিখে নিলাম সোব্বাসী সাতটি  বারের নাম— শানিচার। ইতোয়ার।সাম।মঙ্গল। বোধ। বৃহস্পতি।জুম্মা। 

আওকাত মানে ক্ষমতা। তাও লিটন সাহেবের কাছ থেকে শিখলাম। তবে সোব্বাস আর ঢাকাইয়া উর্দু ভাষার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। সোব্বাস আরবি উর্দু হিন্দি ইংরেজি গুজরাটি বাংলার মিশ্রনে এক ভাষা— হামাকো বাড়িমে তোমোকা দাওয়াত। 

শিয়া সম্প্রদায় ও নবাব খাজা আব্দুল গনির পরিবার ঢাকাইয়া উর্দু ভাষা ব্যবহার করতেন এবং করেন— হামলোগকা ঘারপে তুমলোগকা দাওয়াত। বলে রাখা ভালো— খাজাদের পারিবারিক কথ্য ভাষা ছিলো কাশ্মীরি ভাষা। 


লিটন সাহেব যখন কথা বলেন তখন তিনার মুখের শব্দের দিকে তাকিয়ে থাকি আমি। তিনি বাংলা ভাষায়ও চমৎকার কথা বলতে পারেন। তিনার সহজ সরল ইন্দুরদৌড় প্রতিযোগিতাহীন জীবনকে শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছে করে আমার। তাদের প্রায় চারশো বছরের পুরান ঢাকায় বহিরাগত লোকদের ব্যস্ততার ঘাম দেখে তারা নিশ্চয়ই রসিকতার অট্টালিকা হাসি ☺ দিয়ে থাকে মনে মনে— আসলেই জীবন বিক্রি করে আপনারা আমরা জীবনের ছায়া কিনছি ব্যস্ততার বিলাসিতার লোভব্যুহে।

সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০২১

আওতা

 মাটির খাবার মাটিতেই মিশে 

মানুষ কেবল পালক 

জলের কথা বাতাসে ভাসে 

আগুন শিশু বালক

রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১

ফুলদানিতে পাতার সংসার

 পাতাওয়ালা গাছের নিচে বসতে বসতে হঠাৎ গৌতম হওয়ার ইচ্ছা জাগলে ফুলদের বাড়ি যাবো— ফুলদের সাথে কথা হবে কতিপয় ফল নিয়ে। গাছের ছায়ায় পাখিমন ঘুমাতে চায় আল্পনা ছোঁয়ায়— সত্য প্রমান করতে গঙ্গা নদীতে যমুনার চাষ করতে হয় না— ইলিশ যাবে জনগনেরর পেটে।


কথা বলতে বলতে রাত বাড়বে। তারপরও কথা শেষ হবে না। ফতোয়া খতিয়ান দেখানো বন্ধ করে চলো মানুষের বাড়ি যাই একসঙ্গে। মানুষের কোনো ঘর নেই এখন— পাতাকে পছন্দ করে পাতামানব হয়ে বাস করছে গাছের নিচে নিচে। আদিকালের কথা ভুলে বর্তমান হয়ে চলো বাচতে শিখি— খুব সহজভাবে মেঘের পালকের মতো সুর লয় তাল নিয়ে। 


যত কথা বলবে সহজ কথার মতো কোনো কথা নেই— যত চালাকি করবে সহজ চাওয়ার মতো কোনো চাওয়া নেই— সব কিছু নিভে যাবে— গুন্না করে নাক দিয়ে কথা বলে লাভ নেই প্রিয়— সূর্য উঠলে মোমবাতিতর্ক কারো কাজে আসবে না— ভোরের আলোতে রেখে যাওয়া পালক আর বালকের সুরে যেনো কোকিল গান করে। 


কার কাছে সুর আছে? মানুষের কাছে? না পাখির কাছে? না বাতাসের কাছে? সুর আছে প্রেমে— সুর আছে কৃষ্ণ মোহাম্মদ আহাম্মদ গৌতমে— কালো জলে আরব ফুরাত গঙ্গা যমুনার জলভরা কার্নিশে। বৃষ্টির জলে ভেজা শরীর আলিফ লাম মীম। নিষাদ শিকারি প্রান নিলো কৃষ্ণ তোমার— জলের শরীরে জলের মৃত্যু। 


ভালোবেসে দেখো আরোপিত পাথর মানুষের নরম হৃদয়ে জন্মাবে কাল মহাকাল অবিরাম অনিন্দ্য অবিনশ্বর দেহচারুতরু। ভালোবাসার ঘর নেই উদাস বাউল— সব কিছু আছে— সব কিছু নেই— বটবৃক্ষকে মাথার ছাতা মেনে শাপলা ফুলের জলেল হাওয়ায় মনের ঘরের নিরন্তর চাওয়া কোনো সুখ— ভালোবাসো অনিবার্য মৃত্যুর মতো— মেঘবালা আড়াল করে নিশ্চিত দেখা দিবে সূর্যমুখ— ভোর আসবে সুর নাচবে প্রেম বাচবে যুগের পর যুগ।

শনিবার, ২১ আগস্ট, ২০২১

আ ফা লে র মা ছ

 1

মৃত্যু এক পর্যটন নগরী, প্রাণী বাধ্যগত পর্যটক


2

মায়ের জাত এখনো ঘরকেই জয় করতে শিখেনি, আর বাইরে তো তুমুল বৃষ্টি


3

শিশুদের চোখ নিষ্পাপ নগরী, শিশুদের হাসি হৃদয়ের ঢেউ


4

প্রতিটি ভ্রমণ একটি জন্মের কথা বলে, প্রতিটি রমণ একটি ভ্রমণের কথা বলে


5

প্রেমিকা বানরকে পছন্দ করে, প্রেমিককে মনে করে খোপার বেলী ফুল


6

মানুষের হাসির নিচে থাকে স্বার্থ, কান্নার নিচে আমিত্ব


7

প্রত্যেক নারী সাবজেক্ট- ভার্ব-অবজেক্ট, প্রত্যেক পুরুষ অবজেক্ট-ভার্ব-সাবজেক্ট 


০৮

রাত মানে অন্ধকার নয়— চোখের অসুখ 


Night is not the collection of dark body; very limitation of the eye


০৯

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেমন করে যেন ঘরের ভেতরের কথা খুব সহজ করে বাইরে নিয়ে এসে ফুলেল গন্ধময় করে তুলেন, বাইরের কথা ঘরে নিয়ে এসে ভীষন সুন্দর পূজাঅর্ঘ প্রতিমা করে তুলেন


১০

আলোর খুব কাছে থাকে পোকামাকড়— আলো থেকে সহনশীল দূরে থাকি— কারন আমি মানুষ। আলোর খুবই কাছে থাকে অন্ধকার— আলো থেকে দূরে থাকি— কারন আমি অন্ধকারের একজন হতে চাই না।

11

আমেরিকা কোনো দেশ নয়, আমেরিকা এক আইডিয়ার নাম

12

রমনের সুখ বীর্যপাতের পর থেমে যায়, ভ্রমনের সুখ দিনে দিনে বেড়ে যায়

13

মানুষ তার স্বপ্নের চেয়ে অনেক বড়। কারণ মানুষ স্বপ্ন দেখে তার আবিষ্কৃত চিন্তাশক্তি দিয়ে। অথচ মানুষের অসীম চিন্তাশক্তি অনাবিষ্কৃত থেকে যায়। 

একদিন মানুষ স্বপ দেখত পাখির মতো উড়ার। আজকে মানুষ পাখির চেয়ে গতিশীল উপায়ে উড়তে পারে।


মাছের মতো সাঁতার কাটার স্বপ্নও মানুষের ছিল।  আজকে মানুষ মাছের চেয়েও দ্রুত উপায়ে  সাঁতার কাটতে পারে। 


আসলে মানুষ অসীম ক্ষমতাবান, পারিপার্শ্বিকতা মানুষকে ছোট করে রাখে।


১৪

মন একখান সোনালি গর্দভ


১৫

যারা বন্ধুত্বের জন্য স্বার্থলেভেল মেনটেইন করে তারা পাকা আম চিনে পাকা আমের গাছ চিনে না


১৬

আইডিয়াকে গুলি করলে গুলি আইডিয়া হয়ে যায়


১৭

সমাজ পরিবর্তনে অবশ্যই লেকচারের প্রয়োজন আছে, তবে লেকচার হতে হবে বাবার মতো— যিনি লেকচার দেন আবার সন্তানের স্কুলের বেতনও দেন


১৮

মাধ্যমিক সুখে কেটে যায় বাংলাদেশের দিন

19

শুধু টেলিভিশন না, আজকাল মানুষের আচরনও বিজ্ঞাপন দেখায়

20

প্রানের মানুষের সাথে থাকলে প্রান চার্জ হয়

21

অনেক সাপকে দেখেছি পাথরে ছোবল দিয়ে বিষদাঁত হারাতে

22

আকাশকে বলতে শুনেছিলাম তারও আকাশ আছে। হৃদয় আরেকটি হৃদয় প্রার্থনা করে। হৃদয়ের গভীরে কোনো হৃদয় নেই।

২৩

আপনার মুখের চেয়ে আপনার পা সুন্দর, আপনার পায়ের চেয়ে আপনার মন সুন্দর। কিন্তু। কিন্তু আমি পুরুষ, আমাকে আপনার অন্য কিছুর প্রসংশা করতে হবে নতুবা পুরুষ সংবিধানের অনেক অনুচ্ছেদ বাতিল বলে আদেশ জারি করতে হবে।

২৪

পায়ের সাথে সবুজ ঘাসের সরাসরি  সম্পর্ক, পায়ের সাথে হাঁটা মানে গুরুত্বপূর্ন শক্তির সম্পর্ক। পাচাটা শিখুন, প্রকৃতি ও শক্তির সাথে থাকুন।


২৫

মাইলের পর মাইল দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে শরীরের ঘামে কয়েকটা নদী হওয়ার পর আমরা বুঝতে পারি হান্ড্রেড মাইল জিনিসটা ঘরের আঙিনাতেই ছিল।


২৬

রোদ কাদা বৃষ্টি অতিক্রম করে যারা স্কুলে যেতো তারাই স্কুল হয়ে ওঠেছে। তালা যেমন চাবি চায় তেমনি পৃথিবী আপনার কাছে চায় ডেডিকেশন। ডেডিকেশনের অভাবে অনেক মেধা প্রতিভা প্রজ্ঞা কবরের ঘাস হয়ে গ্যাছে, আর একমাত্র ডেডিকেশনের অবদানে অনেকে হয়ে গ্যাছে পাথরের ফুল।


২৭

তারা আমেরিকান মদ খেয়ে আমেরিকাকে গালি দেয়, তাও আবার আমেরিকা পরিচালিত ফেইসবুকে, কাজী নজরুল ইসলাম ভগবানের ( ইংরেজ) বুকে পদচিহ্ন এঁকে দেয় কিন্তু এই ভগবান তাঁকে কাগজ আর ছাপাখানার ব্যবস্থা করে দেয়। বাঙালি গালির সংস্কৃতি ভালো করেই তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে,। গালি দিয়ে মুখ চললেও, জাহাজ চলে না, জাহাজ চলতে তেল লাগে। আর তারা তেলের খবর ভালোই রাখে।


২৮

বন্ধুত্ব করার জন্য এক কাপ চা-ই যথেষ্ট, শত্রুতা করার জন্য এক কোটি টাকাও পর্যাপ্ত না 

To be a friend a cup of tea is enough, to be done an enemy complex one crore money is so much little 


২৯

প্রথাগত ভালো কাজ করা সহজ, প্রথাগত খারাপ কাজ করা কঠিন।

Being a social man is so easy but being a man is so difficult


৩০

ভালোবাসা ভালো মনের বাসা তৈরি করে। ভালোবাসা আছে বলেই বাবুই পাখির কাঁচা ঘর খাসা

Love helps making a good nest of mind. Only for love the nest of Babui is so appealing great


৩১

মানুষ হয়তো মিথ্যাবাদী কিন্তু ইশ্বর অপরাধী।


Man may be a liar but God is culprit


৩২

যারা দেখে কম তারা দেখায় বেশি, যারা দেখায় বেশি তারা নারী

One who watch a little shows a huge, a huge showing one is girl 


৩৩

মানুষ সিনেমা দেখে না, সিনেমার চরিত্রে নিজেকে দেখে

Man busy on watching his own character over the cinema 


৩৪

শিশুরা নেতা মানে না, শিশুরা বন্ধুত্বে বিশ্বাসী


Children does not believe on the leadership, children believe on the friendship. 


৩৫

আমরা প্রতিটি কাজ অনেক ভালোভাবে শুরু করি। বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক ভালোভাবে। 

মাঝখানে আমাদের বিরতি সত্যিই অনেক উৎসবমুখর। 

আমরা কোনো কাজ শেষ করতে পারি না। আমাদের যেকোনো কাজ শেষ হয় অনেক নোংরাভাবে। বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক নোংরাভাবে।


অতীত অলসতা আমাদের বর্তমান তৈরি করে। ফলে অলস বর্তমান নিয়ে আমরা শক্তিশালী ভবিষ্যতে হাঁটতে পারি না। 

We start our journey within energetic throw that is so much manipulative than others. 

The intermission is offensive and festival something.

We can't watch the final round of the game. We have to back to the pavilion before the back of nodding.

Lazy past makes our present, lazy present is unable to trace the energetic pavement.


৩৬

কোনো ব্যক্তি যখন জানবে আপনি তার চেয়ে দুর্বল ব্যক্তি তখন আপনাকে খেলনা বানিয়ে আনন্দ খেলবে, ব্যক্তি যখন জানবে আপনি তার চেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি তখন আপনাকে পূজা দিবে এবং আপনার নামে প্রসাদের বানিজ্য করবে, কোনো ব্যক্তি যখন জানবে আপনি ক্ষমতায় প্রায় তার সমান ব্যক্তি তখন আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে


৩৭

যার ডাকে সাত কোটি মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলেন তাঁর জানাযায় সাত জন সাহসী মানুষ পাওয়া যায়নি


৩৮

একজনকে কল করতে হয় অন্যজনকে রিসিভ করতে হয়— তাহলে কথোপকথন সম্ভব— দুজনই রিসিভ করলে কিংবা কল করলে মোবাইল তাদের কথোপকথনের ব্যবস্থা করে দেয় না। 


যন্ত্র নিয়ম বুঝে হৃদয় বুঝে না


৩৯

অহংকারের কাছ থেকে শিখেছি পতনের সুখ, পতনের সুখ কনডমছেঁড়া আর্তনাতের মতো আনন্দে আনন্দে নিখোঁজ


৪০

কোনো কারন ছাড়া মানুষ মানুষকে ভালোবাসতে পারে, কোনো কারন ছাড়া মানুষ মানুষকে ঘৃনা করতে পারে। মানুষ ভালোবাসা ও ঘৃনা দিয়ে তৈরি।


৪১

সৃষ্টির আচরন তার স্রষ্টার মতন


৪২

হৃদয়দায় হৃদয় দিয়ে মোচন করতে হয়, সংসারের দায় সমাজ দিয়ে


৪৩

বিপ্লবীরা প্রেমে পড়লে হিজড়া হয়ে যায়


৪৪

ইতর প্রানি ঘন ঘন প্রসব করে—বাংলাদেশে ইতর প্রানির সংখ্যা কম— মানুষের সংখ্যা বেশি


৪৫

একটা দেশকে নির্মান করতে দশজন মানুষ লাগে— দশটা দেশকে নির্মান করতে প্রয়োজন একজন মানুষ

৪৬

প্রিয় মানুষ মরে গিয়ে গন্ধ হয়ে যায় যাকে আমরা দেখতে পাই না কিন্তু অনুভব করি


৪৭

আজকাল কথাকে কোনো এক নির্জন দ্বীপের রাখাল মনে হয়


৪৮

সবজি-মশলা-আগুন আলাদা থাকলে তরকারি হয় না— প্রভু আর বান্দা আলাদা থাকলে প্রেম হয় না

৪৯

মেঘ নাই এমন আকাশ তো দেখি না


৫০

প্রত্যেকটা পরিবার থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়—বালিশ জানে না— দুই জন জানে

বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১

যেখানে এক আলাদা আলো

 সকালে। খুব সকালে। গ্রাম এলাকায় যারে বলে বিননালা। বিননালা মানে সূর্য দেখা যায়নি পুব আকাশে এমন সময়। দেখবেন আপনার জমি আর আপনার নাই।আপনার বাড়ি আর আপনার নাই। আপনার পরমা সুন্দরী রূপকথার মতো গুনবতী বউ আর আপনার খতিয়ানে নাই।ছাগল স্নান করতে যাবে সাগরে। পাহাড়ে আশ্রয় নিবে কবুতরের ডানা। মানুষ হয়ে পড়বে বৃষ্টির মতো পতনমুখী টুপটাপ টাপুর টুপুর ঝনঝন পনপন। 


এই রাত শেষ রাত

এই কথা শেষ কথা নয় 


নিজেকে দিনে দিনে বিক্রি করে যে গাড়িটা ক্রয় করলেন, যে গাড়িটা ক্রয় করলেন মানুষের মাংস বিক্রি করে, যে রেস্তোরা ঝিকমিক করে তুললেন আপনার আপন স্ত্রীর স্তন বিক্রি করে, মানুষের রক্তের কার্পেটে আপনি যে বিলাসবহুল প্রাসাদ দালাল গড়ে তুললেন— একদিন সন্ধ্যায় দেখবেন তা আর আপনার নাই— নাই আর চেয়ারম্যানগিরি ফলানোর অতি উচ্চ জমিদারি দম্ভী দামদর— বাতাসের দানার মতো উড়ে যাবে সব, সব উড়ে যাবে। 


এই রাত শেষ রাত

এই কথা শেষ কথা নয় 


হলুদ আলোর নিচে চাপা পড়বে লাল আলো, লাল আলোর নিচে চাপা পড়বে সবুজ আলো, চারদিকে হঠাৎ যেনো নদীর জলের উদ্দাম মাতলামি। সাগরের জল মানুষের আবাসভূমি পাতাপড়া গল্পের মতো নিয়ে যাবে তার ক্ষুধার্ত মুখে। মানুষের চোখ থাকবে না কান্নার জন্যে— অনুভূতি দিয়ে তারা উপলব্ধি করবে কষ্টের বিষাদের ফাপর।  


এই রাত শেষ রাত 

এই কথা শেষ কথা নয় 


আমপাতাকে গিলে খাবে জামপাতা, বড় মাছকে গিলে খাবে ছোট মাছ,বনের সব বাঘসিংহ হরিনের পায়ের কাছে এসে বসে থাকবে বিগত অপরাধ মার্জনার জন্যে, অপরাধীর মস্তিষ্কে নেমে আসবে সূর্যের অগ্নিসেল,দাউ দাউ করে জ্বলবে শীতের আগুন,গরীব হাজার বছরের কান্না ভুলে আনন্দ মিছিলে আনন্দ বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা করবে নিজের আন্তরিক আত্মার কাছে, আত্মাঘরে বসে থাকবে প্রভু— ধ্যানচোখে দেখতে থাকবে মানুষের চলমান মহাকর্ষ মহাকাল।


এই রাত শেষ রাত 

এই কথা শেষ কথা নয়

রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১

আম্মার গল্পরা

 গল্পটি আম্মার কাছ থেকে শোনা। আম্মা শুনেছে তার আম্মার কাছ থেকে— এক মহিলার তিন বিয়ে হয়েছে। তার প্রতিটি বিয়ে ভেঙে যাওয়ার একটিই কারন— স্বামী যখনই রাগ করে মহিলাকে 'তুই' বলে সে আর স্বামী-সংসার করে না। চতুর্থ বিয়ের সময় মহিলার পরিবার থেকে স্বামীকে সর্তক করে দেয়া হয়েছে যাতে ভুলেও মহিলাকে 'তুই' না বলে। 


স্বামী জমিতে কামলা নিয়ে যায়। বউকে রান্না করার জন্যে বলে যায়। কিন্তু বউ রান্না করে নাই। নাস্তা করতে এসে স্বামী তো প্রচন্ড রেগে যায়। গ্রামীন স্বামী বউকে গালি দিতে হবে— তবে 'তুই' বলা যাবে না। এখন?  গ্রামীন স্বামী এবার বউকে গালি দিচ্ছে এইভাবে—

চুতমারানি তুমি 

খেতে গেছে মুনি 

ভাত নানছ না কেরে তুমি 

কামলা লইয়া হামু কি আমি

সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১

তুমি দূরে তুমি কাছে

 মানুষ দিয়ে মানুষ গড়া 

শব্দে যেমন কবিছড়া 

দেহ জানে জলের ধারা 

বাতাস অচল তুমি ছাড়া 

কোথায় তুমি 

কেমন আছো 

কে হাসো 

কে ভাসো 

কে নাচো খোশমেজাজে 

দেহসুরে তুমি বাজে 

চিনতে বলো তোমার সাজে 

চেনার পরেও দাওনা ধরা 

মানুষ দিয়ে মানুষ গড়া 

তুমি প্রিয় দূরের তারা

বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১

সব

 — আপনি এতো সম্পত্তির মালিক হলেন কেমন করে— বলতে চাচ্ছি কেবলই আপনার পরিশ্রম ধৈর্য আর ভবিষ্যৎ দেখার ক্ষমতায় আজকে আপনি এতো টাকার মালিক!? 


— ভাই কী যে বলেন, বনের রাজা সিংহ— গাধা না, আমার মায়ের দোয়ার বরকতে আজ আপনারা আমাকে টাকাওয়ালা বলছেন।


— আচ্ছা আচ্ছা, আমাদের বুঝতে একটু ভুল হয়েছে। একটা বিষয় বলুন তো আপনি যে দুর্নীতি করেন, ঘুষখোর বলে লোকে আপনাকে, সরকারি কর ফাকি দেন,অন্যের সম্পত্তি আত্মসাৎ করেন তা কি আপনার মায়ের দোয়ারই বরকত!?  


টাকাওয়ালা এবার মুখ হা করে চোখ বড় করে আমার দিকে তাকালেন— তার হা করা মুখ দিয়ে তার মায়ের দোয়া নিশ্চয়ই মাছি হয়ে ঢুকে গ্যাছে

সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১

লেকচার

 সমাজ পরিবর্তনে অবশ্যই লেকচারের প্রয়োজন আছে, তবে লেকচার হতে হবে বাবার মতো— যিনি লেকচার দেন আবার সন্তানের স্কুলের বেতনও দেন

শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১

আলাদা

 আলোর খুব কাছে থাকে পোকামাকড়— আলো থেকে সহনশীল দূরে থাকি— কারন আমি মানুষ। আলোর খুবই কাছে থাকে অন্ধকার— আলো থেকে দূরে থাকি— কারন আমি অন্ধকারের একজন হতে চাই না।

আতকা পর্যটক

 ক


হঠাৎকে আমাদের এলাকায় বলে আতকা। আতকা ফকির আমাদের এলাকায় প্রচুর রয়েছে। আমরা আতকা ফকির না— আতকা পর্যটক। আতকা ঘর থেকে বের হয়ে যাই চোখকে পাঞ্জেরি মেনে।মান্যবর চোখ আমাদের নিয়ে যেতে থাকে গ্রাম থেকে গ্রামে শহর থেকে শহরে। 


জলসাতে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সাইদুর আঙ্কেল, আমিনুল ইসলাম ভাই, নবী হোসেন ভাই, সৈকত আর আমি। আতকা পর্যটক হয়ে উঠার ইচ্ছা জাগে। ড্রাইভার বাবুকে পেয়ে গেলাম। চলো নাছিরনগর থেকে ঘুরে আসি।বাবু নিমিষেই রাজি। আমার জানামতে আড়াইসিধা থেকে নাছিরনগর রিক্সাভ্রমন কেউ করে নাই।আমরা প্রথম ইতিহাস নির্মান করলাম।ভবিষ্যতে আরও কেউ করতে পারে। 


সরাইল কুট্টাপাড়ার মোড় থেকে নাছিরনগর আসাযাওয়ার রাস্তাটি অসাধারণ। আমাদের এলাকার মানুষ এই রাস্তাটিকে মিনি কক্সবাজার বলে। দুইপাশে জলের সারি। মাঝখানে রাস্তাটি।এই রাস্তাটি দেখার জন্যে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে এই বর্ষাকালে।  এই বর্ষাকালে মানুষের ঢল নেই।কারন করোনাকাল। তাছাড়া এই বছর ভালো মানের বর্ষা হয়নি। জল আটকে আছে উন্নয়নের জোয়ারে। 


বাবুর রিক্সা চলছে তো চলছে। সরাইল যখন আমাদের শখের বাহন তখন বৃষ্টি আসে আসে করে।আসে আসে করেও থেকে গেলো আসমানের বাতাসে। মিনি কক্সবাজারের রাস্তাটিতে সাক্ষাৎ পেলাম মলফত নামে এক শতবর্ষী চাচার। তিনি বিট্রিশ সময়, পাকিস্তান সময়,বাংলাদেশ সময় পেয়েছেন। চাচার মতে আওয়ামিলীগ সরকার দেশের বহুত উন্নয়ন করেছেন। 


কুন্ডা বিরিবাদ রাস্তাটি দিয়ে যখন আমরা চৈয়ারকুড়ি বাজারে যাওয়ার জন্যে রওয়ানা দিলাম তখন আসমানের বৃষ্টি পৃথিবীতে নেমে আসে। দারুন উপভোগ্য। একপাশে কচুরিপানা সবুজ আরেকপাশে লোকালয়। বৃষ্টি পড়ছে আমাদের মাথার উপরে।  জলে ভিজে যাচ্ছে আমাদের কায়াতনুদেহ। 


গোকর্ন সঠিক মাপের গ্রাম। বৃষ্টি পড়ছে এমন সময় নাকে আসছে পাটকাঠির অরিজিনাল গন্ধ। এক চাচি মাথায় পাটকাঠি নিয়ে বাড়ি ফিরছে। চাচির বয়স অল্প করে হলেও ষাট হবে। ষাট বছর বয়সে শহরের মানুষ নিয়ম করে ডাক্তারের কাছে হাজিরা দিয়ে থাকেন— পানের মতো ঔষধ চিবান নিয়ম করে। আর এখানে?  মানে এই গোকর্ন গ্রামে নিয়ম করে পরিশ্রম করে পারিবারিক উন্নয়নের স্বার্থে। এই গ্রামে ঔষধের নিয়মিত গ্রাহক নাই এমন কথা কেউ বলতে পারবে না। এই গ্রামেও শহুরে মানুষ রয়েছে যযথার্থ হারে।নগর পুড়িলে দেবালয় বাদ থাকে না। 


বসে আছি চৈয়ারকুড়ি বাজারে। মাছ বাজারে। লোকজনের কন্ঠে হাওড়ের টান। পাশেই হাওড়। বিশাল জলরাশি। স্যাতস্যাতে গরম। বাতাস নেই। চমৎকার রায়হান ভাইয়ের চায়ের দোকান। রায়হান ভাইয়ের বয়স পঞ্চাশ।  দোকানের সুন্দর জানালা।  জানালা দিয়ে দেখছি হাওড়ের জলরাশি।  বর্ষা শক্তিশালী হলে রায়হান ভাইয়ের দোকানের নিচে জলের ধারা চলে আসার কথা। কিন্তু আসেনি। বর্ষা তেতত্রিশ বছর কথা রাখলেও এই বছর কথা রাখেনি।  


রায়হান ভাইয়ের দোকানে এসে জানালার পাশে বসে ইচ্ছা হলো পান খাওয়ার। পান খেলাম।মিষ্টি জর্দা দিয়ে। মশিউর রহমান সৈকতেও খেলো। সৈকতের বুকে যেনো পান লেগে গেলো। মামা, পান তো আমার বুকে লেগে গেছে, পানি খাই? না। অপেক্ষা করো চলে যাবে। কিন্তু সৈকত অপেক্ষা করতে রাজি না। সৈকত রায়হান ভাইয়ের কাছে সমাধান জানতে চায়।রায়হান ভাই জানায় তার পান খাওয়ার অভিজ্ঞতা নাই। এক ষাটোর্ধ চাচা আসেন। সৈকত তার কাছে সমাধান জানতে চায়। চাচাও সৈকতকে পানি খাওয়ার কথা বলে।  আমি তখনো পানি খাওয়ার জন্যে 'না' করছি। কিন্তু চাচা বলছে পানি খাওয়ার জন্যে। সৈকত পড়লো সংশয়ের জটিলতায়। চাচা বলছে জোড় দিয়ে " মিয়া ফানি খাও, ফানের বান বড় বান,ফানের বানে অনেক মানুষ মারা যায়।" চৈয়ারকুড়ির মানুষ পানরে ফান বলে,পানিরে বলে ফানি। 


সৈকত চাচার কথা শুনে বড় আকারে ভয় পেয়ে যায়। অবশেষে সে পানি খায়। তার বুকের বানও চলে যায়। তবে চাচার কথা শুনে বুঝতে পারি হাওড় এলাকার মানুষ ভয় দেখাতে পছন্দ করে এবং তারা খুব শক্ত করে ভয় দেখায়।  


বৃষ্টি পড়ছে। হয়তো বৃষ্টিকে মাথায় নিয়ে আমরা বাড়ির দিকে যাত্রা করবো। পথে ডাকাত আক্রমন করতে পারে। মাছ বাজারের আওয়াজের মতো আমাদের মনে হয়তো দেখা দিবে অস্থিরতা। কিন্তু আমি জানি অস্থিরতা আমাদের মনে অভিনয় করে প্রতিনিয়ত। আমরা তার বাধ্যগত প্রতিনিধি না হলেই হলো। যা চলছে তা চলবে, যা থেকে গেছে তাই থেমে থাকে— দেশের অবস্থা যেনো মনের অবস্থা না হয় সেই প্রার্থনায় চলছি পৃথিবীর পথে পথে।



প্রচন্ডভাবে বজ্রপাত বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আকাশ এখনই ভেঙে পড়বে ভাবটা এমন। রায়হান ভাইয়ের ছোট্ট দোকানে আশ্রয় নিয়েছি আমরা কজন। ইতিমধ্যে শরীফ,হুমায়ুন আমাদের দলে যুক্ত হয়েছে। হুমায়ুন কোনো রাজ্যের মালিক না— ফার্নিচার দোকানের মালিক। হাওড়ের বজ্রপাত হাওড়ের মানুষের মতো শক্তিশালী— একটানা ক্রিয়াকর্ম কন্টিনিও করতে পারে।কখন বজ্রপাত বৃষ্টিপাত থামবে তা অনুমান করা যাচ্ছে না। 


সৈকতকে বাড়ি ফিরতেই হবে। বাড়ি ফেরার ব্যাপারে আমার আপাততঃ ইচ্ছা বা অনিচ্ছা বলে কিছু নেই। বৃষ্টিপাত হালকা থামতেই সৈকতের তাড়াহুড়ো। আমিও চুপচাপ, তার ইচ্ছাকে অনুসরন করলাম। 


চলছে বাবুর বাহন। আকাশে বিদ্যুৎ চমক পুরোদমে বিদ্যমান। যেকোনো সময় আমাদের উপর বজ্রপাত পড়তে পারে। আমরা হয়ে যেতে পারি ইটারনাল থিউরি। তারপরও আই এম কোল। ধুরন্তির রাস্তা বরাবর চলছে আমাদের দুরন্ত রিক্সা।  ডাকাত যেকোনো সময় এসে আমাদেরকে হালকা করার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে। গাছপালা বাড়িঘর কিচ্ছু নাই। পুলিশের টহলও নাই। সিভিলে থাকতে পারে। কারন বিপদজনক এলাকার প্রায় সবটা সময় একটা শাদা গাড়ি আমাদেরকে নজরবন্ধ রেখেছে। 


কালিগুচ্ছের কাছাকাছি এসে বাবুর বাহনের চার্জ শেষ। লক্কর ঝক্কর করে চলছে বাহন। কয়েকটি ছেলে দাড়ানো। এমন ছোট্ট উঠতি ছেলেরাই এখন ছিনতাই ডাকাতি করে।প্রফেশনাল ডাকাতদের সংখ্যা কমে আসছে। আশেপাশে নীরব। আমাদের বাহনের কাছাকাছি এসে গেছে প্রায় তারা। রিক্সা থেমে গ্যাছে। তারা হয়তো মনে করেছে তাদের দেখে রিক্সা থেমে গেছে। বাস্তবতা ভিন্ন। চার্জ নেই তাই থেমে যাচ্ছে চলছে বারবার বাবুর বাহন। 


কোথাও যাবা তোমরা? 

না ভাই, রিক্সা পেলে আইতে কইয়েন। 


এখন কী করা যায়? শফিকুল হক নামে একজন রিক্সা ড্রাইভারের সন্ধান পাওয়া গেলো। সে আমাদেরকে একটি গ্যারেজে কাছে নিয়ে গেলো। গ্যারেজের মালিক হৃদয়। এ গ্যারেজে বাবুর বাহন প্রায় এক ঘন্টা খাওয়া দাওয়া করে। এবার আশুগঞ্জের দিকে যাত্রা করি আমরা। এখনো বিপদ।কারন বাবুর বাহনের পেছনে হেডলাইট নাই। বিশাল দৈত্য বাস যেকোনো সময় ধাক্কা দিয়ে নিজের শক্তি পরীক্ষা করতে পারে।  


বাবুর বাহন চার্জে দেয়া মাত্র বিদ্যুৎ চলে গেলো। যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়। সৈকতের অস্থিরতা আরও বেড়ে গেলো। 


চৈয়ারকুড়ি থাকতেই তরে বলছি চার্জ দেয়া লাগবে কিনা।

তর মুখ দিয়া তখন কোনো কথা বের হই না। 

আজগা থেকে তর রিক্সা বাওয়া শেষ। 


বাবু চুপ। বাবুর কোনো কথা নাই। জসীম ভাই চলে এসেছেন আমাদেরকে হেল্প করার জন্যে। জসীম ভাই ইসলামি ফাউন্ডেশনে চাকরি করেন, ঢাকা কাদরিয়ার ছাত্র। তিনি বারবার বলছেন তার বাসাতে থেকে যাওয়ার জন্যে। বাবুর কাছে থাকা নাথাকা নিয়ে মতামত জানতে চাই।বাবুর মতে গভীর রাত হলেও সে বাড়ি চলে যাবে। বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করতেছে। রাত বাড়তেছে। সৈকতের টেনশন বাড়ছে। 


সৈকতের টেনশন উপটেনশন দেখে বললাল সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে এবার দায়িত্ব কী আমার উপরে দিতে পারো?  সৈকত বিদ্যুৎ বেগে রাজি হয়ে যায়। বিদ্যুৎও চলে আসে। 


এবার সবকিছু ঠিকঠাক। বাবুর বাহন আড়াইসিধা ঢুকার পর চার্জ শেষ আবার। এবার নো টেনশন। লক্কর লক্কর করতে করতে বাড়ি চলে আসি আমরা। বাবুকে বাড়িতে রেখে নিশ্চয়ই আমরা এখন গোসলে মনোযোগী হবো। পরবর্তীতে রিক্সা নিয়ে প্রায় সত্তর আশি কিলোমিটার যাত্রাভ্রমনে বের হলে রিক্সার চার্জ সম্পর্কে সচেতন হবো।গ্রামের প্রবাদের কাছে আবারো মুরিদ হলাম— আছার না খেলে কাছার চিনে না।

মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১

ফুলকন্যা ফুলকুমারি

 ফুলকন্যা ফুলের রানী 

ফুলের ❀ দেশে হাসে 

চোখের দেশে মিষ্টি কথা 

মায়ায় ডাকে পাশে 

পাতার মতো সবুজ ঠোঁট হলুদ কালো চুল 

নখে তার জলবায়ু কথা বলে গোল গোল 

চুপ থাকে নদীর মতো 

চোখে সাগর ঢেউ 

ভরা আকাশ নতানু দেহ 

বাতাস মোড়ানো চেউ

ফুলকন্যা ফুলের ❀ রানী চাঁদের নিচে রাত 

মনভুলানো ফুলের গন্ধে প্রার্থনামাখা হাত 

ফুলকন্যার দৃষ্টি রেখা কাচা আমের রঙ 

খুব সকালে পুব আকাশে লালসাদা টিংটং 

ফুলকন্যা ঘুমের দেশে ভরা নদী হাসে 

কথা পেলে কুব্জদেহ জলে স্থলে ভাসে 

ফুলকন্যা ফুলের ❀ বাগান 

আকাশ ভরা তারা 

গন্ধে ছন্দে বলে কথা 

উজলা নদীর ছড়া

বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১

কোথাও কেউ নাই

 এই যে নদী

নদীর মতো মানুষ বয়ে যায়

এই যে আকাশ

মেঘের মতো পাহাড় দিকে ধায়

গরম নরম পাহাড় মতো

ঢেউয়ে জলে শব্দ যত

কচুরিপানা জলের ঘরে

কোসা নৌকা উদাস দুপুর

গরমকালে শীতের বাতাস সকাল আসে যায়

হাসপাতালে মানুষ মরে

সুদঘুষে অফিস নড়ে

মনের ঘরে শ্যাওলা পড়ে

লোভের পথ হুজুর ধরে

ঘামের শরীর রোদে পুড়ে

মানুষ কোথাও নাই মানুষ কোথাও নাই

চলছে আকাশ 

চলছে বাতাস

ডাকছে সবুজ

কাঁদছে ছায়া 

বাড়ছে মায়া

ঝুলছে প্রোফাইল

খেলছে ফড়িং

মানুষ কোথাও নাই মানুষ কোথাও নাই

সব আকাশ দিনশেষে লোভান্তে যায়

মানুষ কোথায়?

কোথাও কেউ

কোথাও কেউ নাই

বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

কই যায়

 যায়

চলে যায়

চলে যায় নদী

চলে যায় সাগর

চলে যায় পাহাড়

চলে যায় গাছ

চলে যায় দেশ

চলে যায় মহাদেশ

যায়

চলে যায়

কই যায় তারা?

চলে গেলে তুমি

চলে গেলো ভূমি 

চলে গেলো স্মৃতির ডাকাত

চলে গেলো আমাদের আজকাল প্রভাত

মানুষ চলে যায়

মানুষ চলে যাচ্ছে

চলে যাবে মানুষ প্রান বটতলা 

কই যায়? 

জিরো হয়ে যায় কলা কৌশল ছলা 

আকাশে নদীর ছায়া

বিরাট মায়া ঢেউ তরঙ্গ জোছনা গাছ

বিরাট রাত ঘুমহীন চোখে অন্ধ সকাল

ঘাসের শরীর রূপান্তর ঢেউ 

ফলবতী দৃষ্টির এন্টাসিড প্লাস

অনেক আশার গাতা ডুবে যায় 

ডুবে যায় দেহ 

ডুবে যায় ডাক

ডুবে যায় জীবন পথ আকাশ অর্জন 

ডুবে যায় ফুল ফল গন্ধ বাতাস

ডুবে যায়

ডুবে যায়

ডুবে যায়

কত গভীরে ডুবে নিপাতনে জলবান?

কার প্রানে লাগায় মৃত্যু নতুন এক প্রান?

কারে জিগামু

কারে জিগাই

কারে জিগামু

কারে জিগাই

কই যাই?

কই যায় তারা?

মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১

প্রেমের চাবি

 হালালেতে হারাম আছে 

ভাবের বিপর্যয় 

হারাম পাখায় হালাল পাখি 

প্রেমে পরিচয়

সোমবার, ১২ জুলাই, ২০২১

পাখার নিচে বাতাস

 ক্ষেতের কিনারে জলেছোঁয়া নদী 

মধুপুর গ্রাম 

আমাদের নৌকার বাতাস 

কলমি শাক হাইচা গাছে মানুষের জীবন 

মিনিপ্যাক ঢেউয়ের সারি 

দূরে এক বন গাছের ঝুলে থাকা আসন্ন রাত 

মাঝি তোমার গাঙ আমার বসে থাকা পাল 

মাঝি তোমার জাল আমার পরানের মোড়কে মাছ আর মাছ 


নির্জন নিরুপায় গানের সুরের তালে তালে মেঘনা বড় হচ্ছে প্রতি ঢেউয়ে পারিবারিক আবহে পাতামাখা রাত 


মেশিনের নৌকা নৌকার প্রাচীন শব্দের আজান 

মেঘলা স্বপ্নের দুরারোগ্য দর্বৃষ্টিপাত 


সব মিলিয়ে যায় অন্ধকারের মতো দিনের ভেতরে

সব তলিয়ে যায় দিনের মতো অন্ধকারের ভেতরে


বসে থাকা পাখি 

গান গাওয়া দিন 

কতিপয় আলো 

হাসি আর কান্নার রাত একদিন একদিন করে নদী আর আকাশ মিলে যাওয়ার মতো মুহূর্তে চিকন ডাক শুনতে পাচ্ছে সময় 


সে আসবে 

আমিও যাবো 

সে যাবে আমিও আসবো 


অনেক নীরব জলে ভেসে থেকে দেখেছি জীবনের গান এক আজব হরফ -- ও এ ক খ 

ছায়ার বাড়িতে নেমে আসা রোদ কল্প লতা গান 

শীতল জলে গাংচিল নোনায়িত জীবন


আজকাল জাগ্রত আশা পশ্চিমের আকাশে ডুবে যায় 

পাতার আড়ালে রোদের কাপড় হয়ে শীতকাল আসে বছর বছর


আমার বছরে তোমার গরম কাল 

তোমার শীতকালে ব্যাঙ ডাকে 

দূরে আলো দেখা যায় রোম মাপ তাপে 

দূরে শ্যামাজলবতী মেঘের ডাক 

শুনতে পাই বলতে পারি না তারে 

ভালোবাসি কক্ষের ছায়া কোষের প্রেম 

প্রেমে মরে না মানুষ

প্রেমে বাঁচে না কোকিল 

মরে গেলেও অন্ধকার ঘরে জল ফেলে সময় 


সময়ের প্রশ্নে 

সময়ের জিজ্ঞাসার কাছে আলোর পাখা বিরতিহীন

তারার পাশে নতজানু আকাশ 

তারপর দেখা যাবে দেয়ালের সুখ 

আমি তাই গান গেয়ে যাই

তুমি নীরবে বসে বানাও মন ও আলোর ঘর 


শেষ হয়ে যায় 

শেষ হয়ে যায় 

শেষ হয়ে যায় সবকিছু তোমাদের গ্রাম শহর নদী

রবিবার, ২০ জুন, ২০২১

একদিকে চলছে নদীর জাল

 কাটা নিয়ে আসো 

রক্তাক্ত হয়ে পাথর হয়ে যাই 

কৃষকের সন্তান আমি 

ধানক্ষেত বুঝি 

বুঝি ফসলের সরল ভোরের ডাক 

বটবৃক্ষকে আদর্শ মানি 

মানি গাছের ছায়ার মানবিক আশ্রয় 

পানসে নদীর জলে জোছনা কোলাকুলি করে 

ফুলের ❀ ঘরে গন্ধের জাহাজ 

শিশুর চোখে বর্তমানি হাসি ☺ বুঝি 

রগস্টেট ডিপস্টিটের লিপস্টিক আমার চোখে ধরে না 

পান্তা ভাতের সাথে শুটকির ভর্তা আলুভর্তা ডাল 

পুরাতন ডেংগার ছানের সাথে প্রতি বেলার আহার 

গরম ভাতের সাথে হওরার তেল আমি বুঝি 

ম্যালথাসের জনসংখ্যা তত্ব আমি বুঝি না 

বুঝি না ইজম ফিজম থিউরি ফিউরির গরম বাতাস 

গরম ভাতের ফেন আমি বুঝি 

বুঝি ত্যাগের প্রাকৃতিক ঝরনায় আম্মার সংসার 

ফুলের গন্ধে অনুভূতি হয়ে মিশে যাই 

ডান চোখে নামে পাতার বাহার 

বাম চোখে আকাশ তুমিতমা সন্ধাফেরত ঘর পাখি

বাড়ি ফেরা 

ঘরে ফেরা 

অন্ধকারে ফেরা 

ফেরা এক গল্পের কথা 

চকলেট কথার চাওয়া আমি বুঝি 

বুঝি মানুষ এক মাতাল বাতাসের নাম

সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১

প্রেমের নবী

 আর কতকাল পথ চেয়ে রবো হে নবী 

রহমতের দরজা খুলে দেন 

আলো আসুক 

অন্তরে বয়ে যাক কল্যানের ধ্যান 

গরীবদের চোখে ধরা দেন 

গরীবদের মনে হয়ে আসুন তৃষ্ণা নিবারন প্রেম। 


হে তুলনাহীন অতুলনীয় রূপের মহাকাব্য 

আশরাফ আপনি শান্তি মহিমার গদ্য 

তুলে নেন আপনার নৌকায় আমাদের 

আপনি মহান মানুষের পথে সহজ সুন্দর সত্য। 


জান্নাতের সুগন্ধি আপনি সকলের প্রশংসা 

আপনার সেবায় রয়েছে লাখো লাখো ফেরেশতা 

আপনার দরবার মহান অসীম রয়েছে উদার মহানুভবতা 

তুলে নেন আমাদের আপনার প্রেমের নৌকায়। 


দুনিয়ার কষ্টকে জানার শক্তি দেন আমাদের 

শুকনো হৃদয়ে সবুজ ছায়ার মায়া দেন 

আপনি ছাড়া আমরা তৃষ্ণাদগ্ধ 

আপনি ছাড়া আমরা উদভ্রান্ত 

উদভ্রান্ত মনে আপনি পথের ছায়া হয়ে দিশা দেন 

বিষাদের সাগর থেকে প্রেমের ডাঙার আমাদের তুলে নেন। 


کب تلک منتظر ہم رہیں یا نبی

اپنا جلوہِ اطہر دکھا دیجئیے

ہم فقیروں کی یا احمد مجتبےٰ

پیاس قلب و نظر کی بجھا دیجئیے

ٓآپ زینت ازل کی ہیں خیرالورا

آپ رونق ابد کی ہیں صلے علیٰ

آپ خیر البشر وجہ کون و مکاں

پار بیڑا ہمارا لگا دیجئیے

عرش والے بھی تیرے ثنا خواں ہیں

اور ملائک تیرے در کے دربان ہیں

تیرے دربار عالی کی کیا شان ہے

اپنے قدموں میں ہم کو بلا لیجئیے

رنج و الم سے کردو ہم کو بری

خشک ہے دل کی کھیتی یہ کردو ہری

تشنگی بے کلی تیرگی یا نبی

رہگزاروں سے دل کی ہٹا دیجئیے

بے عمل ہم سراپا گنہگار ہیں

آہ و گِریہ سے ہم کو جِلا دیجئیے

سب سے اونچا ہے رتبوں میں رتبہ تیرا

چومتے ہیں ملائک بھی روضہ تیرا

چاہتیں دل میں ہیں،سر میں سودا تیرا

در پہ عشرت کو اپنے بلا لیجئیے

বুধবার, ২৬ মে, ২০২১

ফুলের আঘাত

 মালতী ফুলে ❀ 

ব্যথা পেয়ে যখন 

জেগে উঠে বিধাতা 

        ব্যথাই ভালো 

        গন্ধ থাকুক 

       সূর্যতাপে বলে সৃষ্টিকথা

মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১

নবীনগর উপজেলার রসুলপুর গ্রাম

 নবীনগর উপজেলার পূর্বাংশে নাটঘর ইউনিয়নের অবস্থান। নাটঘর ইউনিয়নের আয়তন ৬,৪৭৬ একর (২৬.২১ বর্গ কিলোমিটার)। জনসংখ্যা প্রায় তিরিশ হাজারের মতো।


এই নাটঘর ইউনিয়নের একটি গ্রাম রসুলপুর। মাত্র একটি ব্রিজকে কেন্দ্র করে এটি ইদানিং হয়ে উঠেছে মানুষের বিনোদন কেন্দ্র। বর্ষাকালে প্রচুর মানুষ একটু শ্বাস ফেলার ইচ্ছায় চলে আসে এই রসুলপুর গ্রামে। এই গ্রামের এক পাশে তিতাস নদী। বর্ষার জলে তিতাস নদী যখন টইটুম্বুর হয়ে ওঠে তখন চাষের জমি হয়ে ওঠে তরতাজা জলল প্রাণ। বাংলাদেশের মানুষ জল পছন্দ করে পছন্দ করে জলগোষ্ঠী জলের স্বাভাবিক ধারা-উপধারা প্রবাহ।


রসুলপুর ব্রিজ থেকে একটি রাস্তা সোজা চলে গেছে বিদ্যাকুটের দিকে। বর্ষাকালে এই রাস্তার দুই ধারের ধানি জমিতে কেবল জল আর জল । হাওড় নয় তবে হাওড়ের‌ মতো ( গ্রীষ্মকালে হাওরকে সাধারণত বিশাল মাঠের মতো মনে হয়, তবে মাঝে মাঝে বিলে পানি থাকে এবং তাতে মাছও আটকে থাকে)। 


নাটঘর ইউনিয়নের পশ্চিমে বিদ্যাকুট ইউনিয়ন, দক্ষিনে শিবপুর ইউনিয়ন ও কাইতলা উত্তর ইউনিয়ন; পূর্বে তিতাস নদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন, রামরাইল ইউনিয়ন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা এবং উত্তরে তিতাস নদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিন ইউনিয়ন ও সাদেকপুর ইউনিয়ন অবস্থিত। নাটঘর ইউনিয়ন জাতীয় সংসদের ২৪৭নং নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ এর অংশ।


আমরা তিনজন। আমি আর সৈকত। রিকশা চালাচ্ছে বাবু। আড়াইসিধা থেকে যাত্রা শুরু করলাম যাত্রাপুর হয়ে রসুলপুর গ্রামের দিকে প্রানশক্তিতে ভরপুর কোনো এক তরতাজা দুপুরে। এই গ্রামের গল্প অনেক শুনেছি। গ্রামটি দেখতে নাকি অনেক সুন্দর।সৌন্দর্য নির্ভর করে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির উপর সৌন্দর্য নির্ভর করে মানসিকতার অবস্থানের উপর। গ্রামটি দেখার ইচ্ছা অনেকদিন আগের। অনেকদিন আগের বলতে গতবছর বর্ষাকালের। এই বছর এখনো বর্ষা আসে নাই। বাবুর বিভাটেক চলছে রসুলপুর গ্রামের দিকে। প্রচন্ড গরম। দুই হাজার সালের আগে প্রত্যেকটা গ্রাম ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রাকৃতিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রকৃতির আদরে লালিত। প্রচন্ড গরম। বাবুর বিভাটেক চলছে। বিভাটেক বয়ে যাচ্ছে তারুয়া চিলোকুট নরসিংসার আদমপুর হয়ে গোকর্ণ ঘাটের দিকে।


গ্রাম আর গ্রাম নাই ভাই। গরম আর গরম। কারণ গাছপালার দেখা নাই। আদমপুর গ্রামে ১৭-১৮ বছরের এক মেয়ে গাছ থেকে আম পাড়ছে। আমি আম চাইলাম। মেয়েটি হাসি দিয়ে দুইটি আম আমাদেরকে দিয়ে দিল। আমরা হাসি দিয়ে তাকে ধন্যবাদ দিলাম। 


গ্যাসের খনি দেখতে পেলাম আদমপুর গ্রামে। আজ থেকে বিশ পঁচিশ বছর আগে আদমপুর গ্রামের এই গ্যাসের খনির দেখা মিলে। নতুন আরও গ্যাসের খনি আবিষ্কার হচ্ছে এখানে। মনটা আনন্দে ভরে গেল। এই গ্যাসের খনি প্রমাণ করে এই গ্রামে এক সময় প্রচুর গাছপালা ছিল। আজকে গ্রাম এলাকায় যেমন গাছপালা দেখতে পাওয়া যায় না তেমনি দেখতে পাওয়া যায়না গাছপালা লাগানোর প্রতি মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টা।


রসুলপুর গ্রামে অর্থাৎ রসুলপুর ব্রিজ বা গোকর্ণঘাট ব্রিজের সামনের রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠেছে কর্পোরেট রেস্টুরেন্ট বাচ্চাদের খেলাধুলার প্র্যাকটিক্যাল সামগ্রী, বসে আড্ডা দেওয়ার বহুবিধ আধুনিক সামগ্রীও দেখতে পাওয়া যায় এখানে। ঘোড়াও এখানে পাওয়া যায়-- ছবি তুললে ১০টাকা থেকে ২০ টাকা দিতে হয়। সৈকত জীবনে প্রথমবারের মত ঘোড়াতে 🏇 আরোহন করে। আহা কি আনন্দ তার চোখে-মুখে! 


নরসিংসার বাজারে গিয়ে কলা খেলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে সাধারণত কলা আসে নরসিংদী থেকে। নরসিংদী সারা বাংলাদেশে কলার জন্য বিখ্যাত। নরসিংসার বাজারের কলাওয়ালা চাচা খুব রসিক মানুষ। তিনি পাইকারি হারে কলা বিক্রি করেন। আমাদের কাছে পাইকারি মূল্যের চেয়েও কম দামে কলা বিক্রি করেন।


২০ টাকা দামের চটপটি খেয়ে আমরা আবার রওনা দিলাম বাড়ির দিকে। তখন সন্ধ্যা নামছে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে অন্ধকার নেমে আসে আমাদের মেঘনা নদীর জলে। বাবুর বিভাটেক এবার বিশ্রামে যাবে। আমরাও বিশ্রামে যাই।

রবিবার, ৯ মে, ২০২১

জলের চাঁদ

 এখন রাত। লোকজন এই সময়টাকে নিশি রাত বলে। একটু পরে ভোর হবে। একটু পরে মসজিদে আযান পরবে। আমি তোমার কথা ভাবছি। খুব করে ভাবছি। তোমাকে ফোন দিতে একটা সময় খুব ইচ্ছে করতো। এখন করে না। এখন ভাবতে ইচ্ছে করে। সহজ করে বললে তোমার কথা প্রায়ই মনে পড়ে আমার। জানতে ইচ্ছে করে কী করছো তুমি, রেগে গেলে কার সাথে ঝগড়া করো। তোমার গল্প জানতে খুব ইচ্ছে করে আমার।কেউ নাই যে তোমার কথা আমার কাছে বলবে। তুমি আমার কাছে এখন জীবিত পরকাল। কেউ মেঘদূত ☁  হয়ে  তোমার মনের দেশের খবরাখবর আমার কাছে পৌঁছে দিলে সে নিশ্চিত স্বর্গ লাভ করতো। কিচ্ছু না, তুমি কী করছো, কী ভাবছো, কি নিয়ে ব্যস্ততা যাচ্ছে, কোনো মানুষকে তোমার নতুন করে ভালো লাগছে কিনা জানতে পারলেই ভালো লাগতো আমার। এটাও সত্যি কথা যে এখন সম্পর্কের মেঘদূত নাই, আছে কেবল যমদূত!  


ভালোবাসা কাকে বলে সংজ্ঞা দিয়ে বলা যাবে না।প্রেমের পাঠশালা পৃথিবীর কোথায় মানুষ এখনো জানে না। তবে আমার মনে একটা আফসোস থেকে গেলো, তোমার সাথে আমি কথা বলতে পারিনি।পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর যে কথা সে কথাটি তোমাকে বলতে পারিনি।সবচেয়ে সুন্দর যে দৃশ্য তা আমি তোমাকে দেখাতে পারিনি।আফসোস।


এখন কী ইচ্ছে করছে জানো? ইচ্ছে করছে কোনো এক নদীর পাড়ে মৃদুমন্দ আলোতে বসে তোমার সাথে গল্প করি। গল্পের ফাঁকে ফাঁকে কোনো এক চায়ের দোকানের খুঁজে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করি।তারপর সকাল হয়ে গেলে তোমাকে তোমার আশ্রমে দিয়ে আমি বাসাই ফিরে আস্ত একটা ঘুম দিই। হায়, তুমি নাই, তুমি কই!?  


আমি খুব ভালো মানুষ। নিজের সম্পর্কে নিজের এমন কথা বলতে নাই।তারপরও বললাম। তুমি আর আমি ভালোই থাকতাম।সুন্দর জীবন হতো আমাদের। তুমি কী যে হিজিবিজি ভাবনায় দূরে চলে গেলে। ইচ্ছাকৃতভাবে জীবনে কারো ক্ষতি করি নাই।আমার ক্ষতিও কাউকে করতে দেয়া হয়নি। তোমার ক্ষতি করতে পারি এই কথা তুমি কেমনে ভাবতে পারলে!? 


খুব জানতে ইচ্ছে করে আমার কথা তুমি ভাবো কিনা।মাঝে মাঝে মনে হয় আমার কথা তোমার মনেই আসে না। মাঝে মাঝে মনে হয় আমাকে একটা আপদ মনে করে শান্তি পাও। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার কথা মনে হলেই গান ধরো " সব পেলে নষ্ট জীবন।" আবার মনে হয়, যখনই আমার কথা ভাবতে শুরু করো তখনই একটা অদৃশ্য দেয়াল চোখের সামনে ভেসে উঠে, দেয়াল সরানোর ক্লান্তিতে তুমি ঘুমিয়ে পড়ো তোমার প্রিয় অলস বিছানায় অলস বিড়ালের মতো। 


চলো একদিন আমরা সারাদিন হাটি আর গল্প করি।তারপর দুজন দুপথে চলে যাই। 

হৃদয়ে মনে মননে জমা হওয়া সব গল্প গোগ্রাসে করে ফেলি। সেরিবেলাম,পনস,মেডুলার  সমগ্র এলাকায় যে কথার বাষ্প জমা হয়েছে তা বাতাসে মিশিয়ে দিই চলো। 


কথা না বলা খুব সনাতনী স্টাইল। এখন মানুষ তার শত্রুর সাথেও কথা বলে। আমাকে শত্রু মনে করে হলেও চলো একদিন কথা বলি খোলামেলা। কবি আল মাহমুদের চুলখোলা আয়েশা আক্তারের খোলা চুলের মতো কথা বলি, চলো কথা বলি গাঙের ঢেউয়ের মতো, কথা বলি সাগরের জলের মতো সীমানাহীন সীমানায়। 


সংসার করতে ইচ্ছে করে না আমার। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সময়ে বসবাস করছি আমরা। মানুষ সময়ের ব্যবহার জানে না বিধায় দুর্যোগের কাল মনে হচ্ছে সবার কাছে। খুব শীঘ্রই মানুষ সময়কে চালাতে শিখে যাবে। এমন উন্নত প্রাগ্রসর সময়ে এসে মানুষ প্রাচীনপন্থী পদ্ধতিতে সংসার ক্যামনে করতে পারে? আসলে করতে পারে না। সংসার করে এখন সবাই মানসিকভাবে একধরনের বন্দীদশা ফিল করে। সংসার না করেও কেমন করে সুন্দর মনোরম অনুপম উপায়ে সংসার করা যায় তাই দেখাতে চাই তোমাকে। 


জীবন খেলা করে সুন্দরবনের নির্জন সবুজের পাতায় পাতায়, সাগরের দ্বীপের ভেতর সহজ সরল মানুষের চোখে কথায় হাসিতে, পাহাড়ি কন্যার চোখের নজরে অলিগলি মেঠো পথের নীরব ছায়ায়, দেখাতে চাই মেঘনার জলে পানকৌড়ির রোদেলা ডানায় কেমন করে জীবন খেলা করে। আসো একদিন। আসো মুখোমুখি বসি দুজনে মনের ডানার উদাস দুপুরে। 


ভ্যাটিকানসিটি থেকে রাশিয়া, লংইয়ারবিন থেকে চিলির পুন্টা আরেনাস,কালালিত নুনাতের নুক শহর থেকে বিশপ রকের উত্তাল জলল শহরে তোমাকে নিয়ে ঘুরবো। তোমাকে নিয়ে ঘুরবো আমি ক্রিস্টাল মিলের পাহাড়ি বাড়িটিতে। সন্ধ্যা নামবে। ঘুম থেকে মাত্র উঠবো আমি। পরিষেবা চাই না আমি। এক কাপ চা তো পেতেই পারি।দুজনে চা খেতে খেতে দেখবো অতীত গিলে খাওয়া ভবিষ্যৎ। আসো একদিন। আসো চোখে চোখ রেখে বলি পাতার চেয়েও সবুজ মানুষের জীবন। 


তোমাকে একটি ইংরেজি শুনাতে চাই। শুনবে?  নিশ্চয়ই শুনবে। তাহলে বলছি শোনো Being with you and not being with you is the only way I have to measure time. কথাটি বলেছেন এক বিদেশি ভদ্রলোক। নাম তার Jorge Luis Borges।  কোনো এক গ্রীষ্মের পাতাপতন দুপুরে তার বাড়িতে যাবো আমরা। শীতের চাদরের মতো নরম আর উষ্ণ হয়ে চুষে নেবো তার কর্ম রক্তের লাল ঢেউয়ের তরঙ্গে। 


চলো ধনাত্মক ঋণাত্মক হই আলো দিবো বলে। চলো আঙুলে আঙুল রেখে ঘুম হই কোনো এক রাতে। 


তোমার কথা খুব মনে পড়ে আমার। খুব মনে পড়ে। 


গেলাম 

    ভালো থেকো

বুধবার, ৫ মে, ২০২১

শ্যা মা জল বতী

 এই তো ভালো ভালোর সাথে ভালো যেমন থাকে 

ফুলের সাথে গন্ধ যেমন ফুলের ❀ সাথে বাচে 

নদীর সাথে জলের যেমন মাছের যেমন দেখা 

তুমি যেমন তোমার হাতে✋রাশিফলের রেখা 

আমি যেমন তোমার হাতে শুভ শুভ্র শাখা 

গাছের সাথে পাতা 

গরমকালের পাখা 

ঝুলমাংস ছিডালরুডি পিঠা 

ঝুমবৃষ্টি শ্যামাকন্যার কানের লতিশব্দ 

সাতার শেষে দুটি দেহের নখের আঁচড় 

সাতার শেষে দুটি দেহ কামে প্রেমে দগ্ধ 

আচলখোলা দুটি দেহ পেরেক অবিরাম 

বৃন্দাবালক কৃষ্ণ জানে রাধার অভিমান 

জলে ঝাল 

ডাঙায় কাল 

আকাশভরা মেঘের ☁ বাহন 

ব্যথার দেশে শব্দ ভালো 

ভালোর সাথে আছি 

ভালোর সাথে ভালো যেমন ভালো হয়ে থাকে 

অন্ধকারে কালো যেমন মুখ লুকিয়ে হাসে 

জলের মাঠে হাস যেমন জলের মতো ভাসে 

হেসে আছি

          ভেসে আছি 

                  আছি প্রেমের ত্রাসে 

আছি এখন যেমন ছিলাম তেমন থাকবো বলে 

ঘরে তোমার ডেকে নিও ঘর শুকানো হলে

বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১

বিসময়

 চলছে ঘড়ি ঠিক ঠিক 

হাটছে বাতাস ঠিক দিক 

ঝড় এলে মানুষ পালাবে 

পালাবে কোথায় ঝড়ের দেশে 

আইন ঠিক সব ঠিক 

সব ঠিক আইন ঠিক

সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১

দুই লাইন

 আকাশে বরফ জমিনে বৃষ্টি 

আকাশে মৃত্যু জমিনে সৃষ্টি

এক লাইন

 জীবনের ফুটপাতে এসে মহাসড়কপথ শেষ হয়ে যায়

সামাদ ন্যাংটার মাজার জিয়ারত

 সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা প্রকৃতির অপার মহিমায় লালিত নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের আবাস ভূমি সল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ। পরিবার সংখ্যা ৫,১৭০ টি । গ্রামের সংখ্যা ৩ টি।মৌজার সংখ্যা ৪ টি। হাট/বাজার সংখ্যা ৪ টি।  ইব্রাহিমপুর মুক্তিযোদ্ধের বধ্যভূমি, ইব্রাহিমপুর সৈয়দ মোঃ  আঃ খালেক শাহ (রা) এর মাজার শরীফ এই ইউনিয়ন পরিষদের যেনো মোমবাতি রেখা। 


আমরা সল্লাবাদ গিয়েছি। উদ্দেশ্য সামাদ শা'র  মাজার পরিদর্শন। নেংটার মাজার হিসাবেও সল্লাবাদের এই মাজারটি পরিচিতি লাভ করেছে। আভিধানিকভাবে এটি সররাবাদ দক্ষীণ পাড়া আঃ ছমেদ লেংটার মাজার শরিফ নামে বেশ জনপ্রিয়। নেংটা মানে উলঙ্গ। অর্থাৎ ছামাদ সাহেব কাপড় পরিধান করতেন না। তার পীর জলিল শাহ। জলিল শা'র বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কালিগুচ্ছ। নেংটা কাউকে মুরিদ করতেন না। যারা তার কাছে আসতেন সবাই তার ভক্ত। নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, সিলেটসহ বাংলাদেশের অনেক জায়গায় তার ভক্ত রয়েছে। তিনি কেনো কাপড় পরিধান করতেন না তার বিলকুল উত্তর কেউ দিতে পারে না। তবে কেউ কেউ বলে তিনি নাকি বলতেন, তিনি নাকি কোনো মানুষ দেখেন না, তাই কার জন্যে তিনি কাপড় পরিধান করবেন। আসলেই তো, তিনি সাধু হবেন কি করে যখন সমাজ কলোনি তাকে মেনে নিতে হবে।  


আমরা কথা বলেছিলাম নেংটার মাজারের একনিষ্ঠ ভক্ত মিজান মিয়ার সাথে। তিনি মিজান বাবা নামে পরিচিত। জানতে পারি নেংটা খাবারের মধ্যে সিদ্ধিটাই (গাঁজা, সাধারণত মারিজুয়ানা, গঞ্জিকা, গাঞ্জা, সিদ্ধি ইত্যাদি নামে পরিচিত) খেতেন ভালো করে। তবে নেংটা আরাম করে খেতেন ঘুনপোকা। ঘুনপোকা খেতেন আর বলতেন যে তিনি যেনো  অমৃত খাচ্ছেন। কেচো খেতেও তিনি পছন্দ করতেন। 


মায়ের কথা রাখতে গিয়ে সামাদ পাগলা বিয়ে করে। পাগলা বউয়ের সাথে কি আচরন করে তা দেখতে ও শুনতে হুলার বেড়ার পাশে দাড়িয়ে থাকে পাগলার উৎসুক ভাবিরা। বাসর ঘরে ঢুকেই পাগলা বউকে 'মা' বলে সম্বোধন করে। কিছু সময় বউয়ের সাথে কথা বলে শাহাদাত আঙুল দিয়ে বউয়ের পেটে একটা গুতা মারে। তাতেই তার এক সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সন্তান তার বাচেনি। বউয়ের সাথে আর কোনো যোগাযোগ রাখেনি নেংটা পাগলা। 


পাগলা গুরসিল্লা দিতেন। গুর মানে কবরস্থান। অর্থাৎ পাগলা কবরের ভেতরে কখনো একচল্লিশ দিন কখনো ষোল দিন কখনো দশ দিন একটানা অবস্থান করতেন। গুরসিল্লা কালে তার খাবার ছিলো দুধ আর গাজা। এখনো সিল্লা দেয়ার কবরটা তার মাজারের পাশে নির্দেশনা রূপে অবস্থান করছে। আমিও দশ মিনিটের একটি সিল্লা দিয়েছি বাবার গুরসিল্লা দেয়ার কবরটাতে। নবী ভাই কবরের ভেতরে গিয়ে এক মিনিট অবস্থান করতে পারেননি। কারন ভাইয়ের সাফোকেশন হচ্ছিল। এ্যারিক, সৈকত, সুমন এন্টমের প্রবলতর কোনো প্রবলেম হয়নি গুরের ভেতরে অবস্থান করতে। কবরের ভেতরে অবস্থান কালে একধরনের বিশেষ প্রশান্তি মনেপ্রানে ঢেউ খেলে যাচ্ছিল আমার।


প্রশ্ন আসতে পারে নেংটা বা সামাদ পাগলা বা সিদ্ধিখোর এই নির্লিপ্ত পাগলার কাছে মানুষ কেনো নিজেকে সমর্পণ করে দিতো। উত্তর অনেকভাবে দেয়া যেতে পারে। তবে সত্য কথা এই যে ক্রনিক ট্রমায় আক্রান্ত মানুষদের জন্যে তিনি  ছিলেন একজন প্রাকৃতিক চিকিৎসক। সামাদ পাগলা আগুনের পূজা করতো। প্রতি সন্ধ্যায় সে আগুনে প্রচুর কাঠলাকড়িকে ছাই করে দিতো। মিজান বাবা ও এলাকার অন্যান্যদের কাছ থেকে জানতে পারি অসুস্থ বাচ্চাদের নিয়ে তিনি পানির নিচে ডুব মারতেন। জলের নিচে কিছুক্ষণ থেকে আবার তিনি বের হয়ে আসতেন। বাচ্চা সুস্থ হয়ে যেতো। 


খালিয়াকান্দি খাল, সররাবাদখাল,  নিলক্ষীয়াখাল, সররাবাদ গজারিয়াবড় বিল, বড়কাজী বাড়ীবিল, ইব্রাহিমপুর বড় বিল, নিলক্ষীয়া বিল,পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের একটি শাখা নদী এই সল্লাবাদ ইউনিয়নকে জলদুগ্ধস্তন দান করেছে। বাংলাদেশ মানেই নদীমাতৃকা পললভূমি দয়িতা। এই জলধারা আর মাজারধারার মধ্যে কোথাও যেনো একটি গভীর তীক্ষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এবং আমরা দেখতে পাই অধিকাংশ মাজার, তপস্যা মন্দির জলধারার কাছাকাছি। 


বাংলার অধিকাংশ জলধারা এখন শুকিয়ে যাচ্ছে। এটা অবশ্যই হতাশার কথা। মাজারের পাশে চায়ের দোকানে বসে স্থানীয় এক কৃষকের সাথে কথা বলে কিছুটা আশা খুজে পাই। যখন কৃষকের সাথে কথা বলছি সৈকত আর ইশহাক এ্যারিক গ্যাছে বাবার মাজারে দোয়া চায়তে। পরে সৈকতের কাছ থেকে শুনতে পেয়েছি এ্যারিক প্রায় ত্রিশ মিনিটের মোনাজাতে আল্লার কাছে নেংটা বাবার জন্যে দোয়া করেছে, আমাদের সবার জন্যে দোয়া করেছে। এ্যারিক যখন মোনাজাত করছে তখন তার চোখ দিয়ে জলের একটি ধারা নেংটা বাবার মাজারের ফ্লুরের সাথে মিশে যায়। আর আমি আর সুমন এন্টম মিশে যাই কৃষকের আখ চাষের গল্পের সাথে। নবী ভাই চায়ের দোকানের বেঞ্চে ঘুমের সাথে মিশে গ্যাছে। কৃষক শুনায় গত বছর আখ চাষ করে তার আশি হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এই বছর(২১-২২) এক লাখ টাকার উপরে লাভ হবে বলে সল্লাবাদের এই ইয়াং কৃষক আশা করছে। আশার কথা শুনতে ভালোই লাগে। কারন আশাই একমাত্র জীবনের কার্যকরী ভ্যাক্সিন। 


মুক্তিযুদ্ধ এবং সমাজসেবার ক্ষেত্রে অনন্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখায় আইভি রহমানকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার-২০০৯ (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়৷ জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের ছাত্রীনিবাস, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তোরন ও নামফলক আইভি রহমানের নামে নামাঙ্কিত হয়েছে। আইভি রহমানের  সম্মানার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে ভৈরব স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে শহীদ আইভি রহমান পৌর ষ্টেডিয়াম রাখা হয়। আইভি রহমান (৭ জুলাই ১৯৪৪ - ২৪ আগস্ট ২০০৪) বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী ছিলেন। তার পুরো নাম জেবুন্নাহার আইভি। জীবদ্দশায়  তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় সদস্য। 

নাজমুল হাসান পাপন (৩১ মে, ১৯৬১) আইভি রহমানের ছেলে। কালিকাপ্রসাদ যেমন কালির প্রসাদ তেমনি নাজমুল হাসান পাপন এই সামাদ নেংটার প্রসাদ। এই তথ্য আমরা আগে জানতাম না। এই মাজারে এসে জানতে পারি। এই মাজারে এসে জানতে পারি মাজারের সবচেয়ে বড় ডেগচীটা উপহার হিসাবে দিয়েছেন আইভি রহমান। 


আইভি রহমান শহীদ হয়েছেন। আইভি রহমান বেচে থাকলে এই মাজারে আরও উন্নতি ও সমৃদ্ধি হতো বলে মনে করে মাজারঘেষা ভক্তরা। কিন্তু মাজারে যে নেংটা বাবা শুয়ে আছেন তিনি কী ভক্তদের মতো উন্নতি ও সমৃদ্ধি সিরিজের গহবরের তলে তাল মেশাতে চান!?


এখানে ভক্ত আর সাধুদের মধ্যে পার্থক্য। আবার শাহ আব্দুল করীম বলেছেন ভক্তের অধীন হওয়ার জন্যে" ভক্তের অধীন/ হও চিরদিন/থাকো ভক্তের অন্তরে", কিন্তু ভক্ত চায় দুনিয়া আর সাধু চায় দুনিয়াবিমুখীতা। এই দ্বন্দ্ব সামনে রেখে পৃথিবী ও তার রহস্য নিয়ে যখন ভাবছি তখন দেখি আকাশে শাবান মাসের পূর্নপুর্নিমা। গাছের ফাক দিয়ে পাতারং জোছনা স্বল্প স্বল্প থেকে অধিক হয়ে উঠার দৃশ্যগল্প জীবনের খাতায় জন্ম দেয় নতুন কিছু বর্নের। এই নতুন বর্ন নতুন বাক্য নির্মান করবে। এই নতুন বাক্য হয়তো পৃথিবী ও তার রহস্যের নতুন উপলব্ধি জাগ্রত করবে জীবনের সবুজ পাতায়। এরই নাম জীবন। আমরা বাড়ি যাচ্ছি। প্রত্যেককে বাড়ি যেতে হয়।

বাংলাভূমি

 নও লাল নও সবুজ 

সহজ সরল মিষ্টি লাজুক 

নও লাল নও সবুজ

ভোগে অবুঝ প্রেমে গম্বুজ

নও লাল নও সবুজ 

ভাসছে জলে কথার কাগজ 

তীর এখন তীর এখনো 

দূর বহুদূর 

বাড়ছে বয়স কমছে কাজ 

চোখে সুখ মুখে লাজ 

সাজের উপর বাড়ছে সাজ 

রাষ্ট্রবাংলা দেশটি আজ 

পাখির চোখে উড়াল ভাজ 

ন লাজ ন সবুজ 

নও লাল নও সবুজ 

জাগবে তরুন জাগবে অবুঝ 

দেখবে তুমি 

দেখ পৃথিবী 

রঙে মাতাল 

প্রেমে স্বর্গ স্বর্গপাতাল 

সবুজঢাকা 

শ্যামলপাতা

রাষ্ট্রবাংলা বাংলাভূমি

শুক্রবার, ২৬ মার্চ, ২০২১

তারপর হ্যাসটেক

 # 

চুমুর অপরাধে রেজা স্নানে গ্যাছে গঙায়-- চুল দিয়ে বাসন্তী অভিমানের ঘর বানায়


#

পায়ের পাওনায় বদলে যায় পথের ছায়া


#

দুঃখের কপালে লাল টিপ যেনো শরতের লাল সূর্য


#

সবার উপরে চোখ তুমি 

ঠোঁটের ঘরে রাত 

কোমর যেনো বসন্ত ফুল 

গন্ধে গন্ধে প্রভাত


#

পশ্চিমবঙ্গের তারা জীবনের অনেক উপরে রাজনীতিকে ঠাই দিয়েছে অথচ রাজনীতি হওয়ার কথা ছিল জীবনমুখী


#

লাউডগা ঠোঁট তোমার 

                   বাতাস লাগে আমার মনে

শিবরাত্রির আয়াত তুমি 

                         নাযিল হলে আমার শানে


#

পাপ করার জন্যে আদম পৃথিবীতে আসেনি,পাপ নিয়ে আদম পৃথিবীতে এসেছে

#

তোমার চোখে ঘুম হয়ে রাত বানাই


#

চিনি ছাড়া চা খাই-- পতাকা চিনি না










প্রিয় মানুষ তোমাদের জন্য

 চাঁদ কোনোদিন কোনো প্রানিকে তার দিকে নজর দিতে বাধ্য করে না। প্রানিকে তার প্রয়োজনে চাদের দুধসাদা জোছনার কাছে নতজানু হয়ে বসতে হয়। সূর্য কোনোদিন কোনো মানুষকে ঘুম থেকে জেগে কাজে মনোযোগী হওয়ার কথা বলে না। মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে সূর্যধর্মে নিজের কর্মধারা পরিচালনা করে। জল ডাকে না মানুষকে তার দিকে। মানুষ নিজের তৃষ্ণায় জলের দিকে ধাবিত হয়। ফুল ভুলেও ডাকে না কাউকে তার ঘরে তার সংসারে। 


কে আছো চাদের মতো 

কি আছো সূর্যের ☀ মতো 

কে আছো জলের মতো 

আমাকে ভাষা দিয়ে নয়, প্রয়োজনে টেনে নাও তোমার দিকে-- তোমার ভেতরে আরও আরও গভীরে-- ফুলের ❀ মতো গন্ধে ছন্দে ভাষাহীন ভাষায় বসাও হৃদয়ের নরম হিতানে।

Below the ribs above the hips

 Below the ribs 

Above the hips 

A mind propelled towards your space 

It’s no use crying 

It's no use crying 


Below the ribs 

Above the hips 

A preponderant focus 

Watch and listen 

Listen and watch


Below the ribs 

Above the hips 

Want to swim abruptly I

Want to trace 

Wish to touch 

It's no use crying 

It’s no use crying 


Below the ribs 

Above the hips 

Yearning for building a Castle 

I am yearning for having a kingdom of wine 

A Kingdom of Dance and Donald music 


A desert 

A water land 

A sky yard 

And I am to dream to busk your hips amid rips 

Want to sleep 

Want to go into your wild desire 

Feel it 

Dream it 

Touch it throughline your mind 

Below the ribs 

Above the hips 

I will be living there year for years