শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ব ড উ বাঙালি

 ভাষা এক হওয়ার পরও যারা এক টেবিলে বসে চাআড্ডা দেয়ার জন্যে পাসপোর্ট-ভিসাকে একমাত্র উপায় মনে করে তাদের কোনো মাতৃভাষা আছে বলে অন্তত আমি মনে করি না

দক্ষতা

 মানুষের মধ্যে কেউ কেউ জমিনে পা রেখে আকাশে উড়ালপথ নির্মান করে, কেউ কেউ আকাশে পা রেখে জমিনে উড়ালপথ নির্মান করে, একমাত্র পাখি আকাশে ও জমিনে একসঙ্গে থাকতে পারে না, তাই তো আকাশে ও জমিনে পাখির দক্ষতা সমান

শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

মানহুস

 মানুষ অনেক দূরের আকাশ দেখে কিন্তু চোখের কাছের কপাল দেখে না

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প 'সদর-অন্দর'

 বিপিন। বিপিনকিশোর। তার নামের শেষে কিশোর আছে মানে বিপিন সারা জীবন কিশোর থাকবে এমন ভাববার কোনো কারন নাই।কনক্রিট সময় মানুষকে বাস্তবতার মুখোমুখি করেই থাকে। শিশু থেকে কিশোর, কিশোর থেকে যুবক, যুবক থেকে বৃদ্ধ হওয়া পর্যন্ত যে চক্র সেই চক্রে মানুষকে পড়তেই হয়।আর তাই সময় বাস্তবতা। 


বিপিনকিশোরের জন্ম ধনীঘরে। তাই সে অর্থ ব্যয় করা জানে ভালোই।কিন্তু অর্থ উপার্জনের মন্ত্র তার তেমন ভালো জানা নাই।ব্যয়ের সাথে আয়ের ব্যালেন্স না থাকলে হিসাবের অভিধানে অপচয় বলে একাউন্ট হয়ে থাকে। অপচয়কারী শয়তানের ভাই। লোকে বলে। শয়তানের কোনো টাকা পয়সা ধন দৌলত নাই। বিপিনেরও টাকা পয়সা ধন দৌলত থাকে না। তার সম্বল দুই টাকা মাত্র। তাও শেষ পর্যন্ত রাজভৃত্য পুটের পকেট ভারী করে। 


বিপিনকিশোর আসমান থেকে পৃথিবীতে নেমে আসছিল কিনা আমরা জানি না।আমরা জানি না তার পরিবারের সদস্য সবাই করোনায় মারা গিয়েছিল কিনা। আমাদের জানানো হয়েছে তার জন্ম ধনীঘরে এবং সে অর্থ ব্যয় করতে জানে কিন্তু আয় করতে জানে না। অর্থ ব্যয় করা ও আয় করার হিসাবটা মানুষ পরিবার থেকেই লাভ করে। যেহেতু ডালপালা গজানো কোনো পরিবারের সন্ধান আমরা বিপিনের জীবনে পাইনা সেহেতু তার আয় ব্যয়ের হিসাবটা তুলা থাকুক। তবে বিপিন একেবারে ঝুলেঝালে গরিবি হালতের লোক নহে। গানবাজনায় সে কিন্তু মাথায় ঠাকুর। দেখতেও সুকুমার মূর্তি তরুন যুবক। অর্থবিত্তহীন লোকের সৌন্দর্য যে তারই অনিষ্টের কারন তা আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাবো অন্তত বিপিনকিশোরের বেলায়। 


বি.এ.পাস। রাজা চিত্তরঞ্জন বি.এ.পাস। তার আপন স্ত্রী বসন্তকুমারী। রাজা প্রায় সময় ঘরেই থাকেন। বন্য জীবন তার চালচলনে লক্ষ্য করা যায় না। খাওয়া দাওয়া ঘুমানো এমনকি খাওয়া দাওয়া ঘুমানোর জায়গা পর্যন্ত নির্দিষ্ট। 


রাজা সাহেবের থিয়েটার করার ইচ্ছা হলো। লোক দরকার। লোক পেয়েও গেলেন।বিপিনকিশোর। বিপিনকিশোর রাজার শখের থিয়েটারের লোক। রাজা বিপিনকে দারুন পছন্দ করলেন। শুধু পছন্দ বললে ভুল হবে পছন্দের অধিক কিছু যদি থাকে তবে সেটাই।রাজা বিপিনের গানে এতো তন্ময় হয়ে থাকেন যে খাওয়া দাওয়ার কথা একেবারে ভুলেই যান। ভাত ঠান্ডা হতে থাকে। রাজার আপন স্ত্রী বসন্তকুমারী তাতে গরম হতে থাকে। বসন্তকুমারী গরম হলে কি হবে রাজা আর বিপিনকিশোর আড্ডা ঠান্ডা হতে চায় না। রাজা চিত্তরঞ্জন তার পুরনো জীবন ভুলে গিয়ে নতুন জীবনে অভ্যস্ত হতে থাকে যেখানে বন্যতার ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠে। 


বিপিনের উপর রাজা কেনো এমন রবিগ্রহ টান প্রকাশ করছেন রানী বসন্তকুমারী তার কারন খুজে না পেয়ে বিপিনের উপর চরম বিরক্ত হয়ে উঠে। বিপিনকে রাজা থেকে দূর করতে পারলে যেনো রানীর হাড়ে বাতাস লাগে। 


রাজা, যুবতী স্ত্রীর ঈর্ষানল উপলব্ধি করে মনে মনে খুশি হতে থাকেন। রাজা মনে করেন মেয়েরা যাকে ভালোবাসে কেবল তাকেই ভালো জানে,জগতে যে আদরের পাত্র অনেক গুনী আছে স্ত্রীলোকের শাস্ত্রে সে কথা লেখা নাই। 


বিপিনের উপর রাজার আদর যেমন বাড়তে থাকে তেমনি সেবাদর কমতে থাকে রানীর। সদর ও অন্দরের দ্বন্দ্বে বিপিনের ভাগ্যে সেবাসুখ কেবল মুচকি হাসে। অর্থাৎ রাজকীয় খেলা বিপিনের পক্ষে সুবিধাজনক হয় নাই।


সুভদ্রাহরন গীতিনাট্য রাজার বাড়িতে মঞ্চায়ন হলো। রাজা কৃষ্ণ আর বিপিনকিশোর অর্জুনের চরিত্রে অভিনয় করে। বসন্তকুমারী বিপিনকিশোরের অভিনয়ে মুগ্ধ। রাজার চেয়েও বিপিনের অধিক গুনগ্রাহী এখন রানী। রানী বিপিনের খাবারের সুব্যবস্থা করে। অথচ এই বসন্তকুমারীর জন্যেই বিপিনের খাবারের অব্যবস্থা ছিলো এতোদিন। বিপিনের গান শুনার প্রস্তাব দেয় রানী রাজার কাছে। রাজার কাছে রানীর প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য হয়নি। পর্দার আড়াল থেকেই শুনতে চায় সে বিপিনকিশোরের গান। তাও গ্রহনযোগ্য মনে করেনি চিত্তরঞ্জন।বিপিনকিশোরের থাকার ব্যবস্থা আরও ভালো করার জন্যে রাজার কাছে অনুরোধ করে রানী। বসন্তকুমারী যতই বিপিনের প্রশংসা করতে থাকে ততই রাজা বিপিনের প্রতি বিরক্ত হতে থাকে। 


একদিন রাজা ঘরে ফিরে দেখে রানী কি যেনো পড়তেছে। রাজা পড়ার বিষয় জানতে চায়। বিপিনের খাতা এনে রানী কয়েকটি প্রিয় গানের কথা তুলে রাখছে এমনটাই জানায় রাজাকে। রাজার সিংহাসনের কোথায় যেনো খুব বড় ধরনের আঘাত লাগে। রাজা চিত্তরঞ্জন নিজের শরীরের সমস্ত সৈন্য সামন্ত ব্যবহার করে বিপিনকিশোরকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। রচিত হয় মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস। বিপিনকিশোর পুনর্মূষিক হয়ে পড়ে।


নিজের প্রয়োজনে রাজা বিপিনকিশোরের প্রশংসা করে আবার নিজের প্রয়োজনে বিপিনকে রাজগৃহ ছাড়তে বাধ্য করে। অর্থবিত্তহীন লোকদের গুন কর্ম সৌন্দর্য কোনো কাজে লাগে না। অর্থনৈতিক মেরুদন্ড পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ও শক্তিশালী দন্ড-- এই দন্ডের উপর ভিত্তি করে রচিত হয় শাষন শোষন শাষিত শোষিতের মানদন্ড। গিরীশ রাজ্যে একজন রানী কিংবা গুনাধার বিপিনকিশোর একপ্রকার পাতড়া কিংবা পলিতা। 


রানী রাজার অধীন। তার কোনো অর্থনৈতিক মেরুদন্ড নেই। তাই তার কাকে ভালো লাগলো কিংবা কাকে ভালো লাগলো না তা বিবেচনায় আনার মতো চিন্তাবিনিয়োগ করতে চায় না রাজা। 


কেউ কেউ বলতে পারেন বসন্তকুমারী ইচ্ছা করেই রাজার মনে আগুন ধরালো যাতে বিপিনকিশোরকে বাড়ি থেকে চিরতরে দূর করা যায়। তাও হতে পারে।পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিচ্ছু থাকে না। কেবল বিপিনকিশোরের পক্ষে রাজগৃহে থাকা সম্ভব হয়নি! 


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'সদর ও অন্দর' গল্পের বেদন অবেদন নিবেদন 

এমরানুর রেজা 

18022021

রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

দিন শেষে রাত আসে

 জীব জন্তু জানোয়ার নয়, মানুষ সম্পর্কে তোমাকে সাবধান করছি। মানুষ তোমাকে ভালো থাকতে দিবে না, মানুষ তোমাকে খারাপ থাকতে বলবে না, মানুষ এখন পর্যন্ত আমার দেখা একমাত্র চিড়িয়া যাদের দেখতে চিড়িয়াখানায় যেতে হয় না। জীবন নামক তরকারিতে মানুষকে লবনের মতো ব্যবহার করতে শিখো যেনো তোমার জীবন-উত্তর শেষ পর্যন্ত তুমি দিতে পারো।


কোনো মানুষকে তোমার কথা শুনতে বাধ্য করবে না। আমার কথা তুমি মানতে বাধ্য থাকবে না। কথাকে কাজে রূপান্তরিত করার আগে নিজের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ওপেন করে নিবে। নিজের চোখ সবচেয়ে বড় আদালত, নিজের মুখ সবচেয়ে বড় মার্কেট, নিজের হাত সবচেয়ে বড় গ্রুপ অব কোম্পানি,নিজের পা সবচেয়ে বড় মানবিক হাসপাতাল। নিজের চেয়ে কাউকে অধিক ভালোবাসতে যাবে না, পৃথিবীটা ভালোবাসার জায়গা নয়, দুনিয়াটা জাস্ট প্রয়োজনের জায়গা। 


কাউকে মুগ্ধ করার জন্যে হকার হয়ে উঠা বোকামি। বোকাদের মুগ্ধ হতে কারন লাগে না। সময়ের জলে কচুরিপানা হয়ে ভাসছে মানুষ। ভাসতে ভাসতে অনেক মৃত দুর্গন্ধময় লাশের সাথে দেখা হবে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে শিখো। সামাজিক হয়ে উঠার অভিনয় করবে না পুত্র আমার। লোভ থেকে যা কিছু গ্রহন করবে তাই তোমাকে পীড়ন দিবে। পেটের ক্ষুধা সমস্যা না, চোখের ক্ষুধা সমস্যা। 


প্রত্যেকটা মানুষের কোথাও না কোথাও একটা মুখোশ রয়েছে। মুখোশের বাইরে সমাজের সবাই সাদা চামড়া বাদামি পোশাক। এই মুখোশধারী বাদামি পোশাককে উন্মোচন করে দিও না।কারন তুমিও মানুষ দিনশেষে। খুব কাছ থেকে মানুষকে দেখা যায় না,কাছের যে কাউকে দেখার জন্যে উপলব্ধি করার জন্যে খুব দূরে যেতে হয়।খুব দূর থেকে অনেক কিছুই ভুলভাবে দেখা যায়, তাই সীমানা নির্ধারণক্ষমতা আসলেই একটা ক্ষমতা। মানুষ আর তোমার মধ্যে পার্থক্য মানুষ। তাই তোমার গভীরে কে বসবাস করে তাকে জানতে শিখো পুত্র আমার।মাটি থেকে ইট,ইট কিন্তু মাটি না, আবার মাটি থেকে আলাদাও না। যেমন করে মাটি থেকে ইট, ইট পরে বিল্ডিং হয়ে উঠে তেমন করে তুমিও হয়ে উঠতে পারো মানুষ থেকে আত্মা।


কথা কাজে চিন্তায় অন্যের উপকার করার মানসিকতা তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবে। কখনো শয়তানের উপকার করতে যাবে না। শয়তানকে পাঠানো হয়েছে তোমার উপকার করার জন্যে। যে লোকটা তোমার উপকার করতে আসবে তার ব্যাপারে সর্তক থাকবে, যে লোকটা তোমার ক্ষতি করার আয়োজনে অস্ত্র ধারালো করতে থাকবে তার ব্যাপারে থাকবে নির্মোহ। 


আগুন জ্বালাতে গিয়ে নিজেই অনেকে আগুন হয়ে উঠে। দিয়াশলাইয়ের কাঠি আর আগুনের মাঝখানে অবস্থান করবে সবসময়। মোমবাতি নিভে গেলে চাদের জোছনার জন্যে অপেক্ষা করবে,আকাশে চাঁদ না থাকলে সূর্যের আলোতে গতর ধৌত করে নিভে। কখনো কোনো কিছু করার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠবে না। জীবনের প্রাপ্তি ও জীবনের অপ্রাপ্তি একই নদীর দুটি তীর। 


ভয়কে জয় করা নয়, ভয়কে জানতে শিখো পুত্র আমার। মানুষের পরে তোমার পথে সবচেয়ে বড় শত্রু তোমার ভয়। কখনো মানুষের আরেক নাম ভয়, কখনো ভয়ের আরেক নাম মানুষ। 


মানুষকে বুকে নয়, পীঠস্থানে নয়,মাথায় নয়, পায়ে নয়-- চোখে রাখতে শিখো অনাগত সন্তান আমার। চোখ দিয়ে যতদূর দেখা যায় ততদূর সম্পর্ক। সম্পর্ক এক ঔষধের নাম-- প্রয়োজন ও পরিমানের বাইরে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ সম্পর্ক জীবনের জন্যে ক্ষতিকর। 


তুমি নিজে একটা রাষ্ট্র একটা পৃথিবী। তোমার রাষ্ট্রের ব্রিজ কালভার্টের উন্নয়ন করার আগে মস্তিষ্কের উন্নয়ন করবে। বেক্কলের সম্পত্তির উপর আক্কলের দশ আনা অধিকার থাকে। গ্যালাক্সির সবচেয়ে আপডেট নলেজ যেনো তোমার মাথায় গিলবিল করে চাদের জোছনার মতো। অবশেষে তোমার অর্জিত জ্ঞান প্রজ্ঞা প্রতিভা মেধা অভিজ্ঞতার জন্যে তোমাকে শাস্তিভোগ করতেই হবে। প্রস্তুত থেকো পুত্র আমার প্রস্তুত থেকো।

শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

থিংক আউট দ্যা বক্স

 

চলে গিয়ে দেখি চলনঘর বসে আছে সূর্যের মুখোমুখি



রোজা রাখতে রাজি যখন দেখবো সামনে ইদ আছে


প্রিয় হুজুর ভাইয়েরা,আসসালামু আলাইকুম, আপনারা যখন সোসাল মিডিয়ায় নারীর পর্দা নিয়ে ওয়াজ করেন তখন আপনাদের ওয়াজের ফাকে ফাকে বেপর্দা নারী বিজ্ঞাপন নিয়ে বার বার হাজির হয়। আপনাদের ওয়াজ শুনতে গিয়ে কোনো সরলমনা মুসলিম যদি গুনাহের কবলে পড়ে তার দায় আপনারা নিবেন কী!?



উত্তর দেয়া অনেক বড় প্রকারের দাসত্ব
Answering is a giant slavery

তোমার সাথে তোমার দেশে

 আমিও আছি তোমার সাথে দূর পরবাসে 

সূর্য যেমন থাকে 

ফুল যেমন বাতাস পেলে মুচকি মুচকি হাসে 

নদী যেমন জেগে উঠে জলের কলতানে 

আমিও আছি তোমার সাথে তোমার পরবাসে 

তোমার পায়ে বরফ যেমন মিষ্টি মেয়ে নাচে 

তোমার বুকে শীতের সকাল যেমন করে বাচে 

যেমন করে জোনাকি কবি বসে রাতের পাশে 

আমিও আছি তোমার দেশে তোমার পরবাসে 

সকাল যেমন থাকে 

দুপুর যেমন ভাসে 

সন্ধ্যা যেমন বহে 

চোখের পাতা যেমন করে চোখের ঘরে বসে 

আমিও আছি তোমার দেশে তোমার পরবাসে 

ঢেউ যেমন জলের সাথে 

পাতা যেমন গাছের সাথে 

জোছনা যেমন চাদের সাথে 

জন্ম যেমন মরন দিয়ে নতুন করে বাচে 

আমিও আছি তোমার সাথে তোমার পরবাসে