মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

আবার শান্তিনিকেতনে

লাইব্রেরি। লাইব্রেরির পাশে মেলার মাঠ। ভাষা ভবন। ভাষা ভবনের পাশে মেলার মাঠ। মেলার মাঠের কোনায় কোনায় তাদের আড্ডা। আড্ডায় বসে তারা বিলি করে দেশবিদেশের চরিত্রের সনদ পত্র। কে ভালো কে পাপী
কে পন্ডিত মশাই কে মাস্টার মশাই
কোন দাদার সাথে কোন দিদির টক কিংবা ঝাল সম্পর্ক তা এখানে বসে জানতে পারে বিশ্ব। অথবা ইহা শান্তিনিকেতনের ভাসমান নিউজরুম। এই নিউজরুমের কোনো প্রকার পরিবর্তন হয় না। প্রতিনিধি বদলায় কিন্তু নিধিরাম আচরন বদলায় না।
অধ্যাপক বাবু দুবছর আগে যেমন করে রাস্তা মেপে মেপে হাঁটাচলা করতেন, এখনো করেন, এখন শুধু তার চোখের নিচের আকাশে ফন একখান স্বপ্নের জন্ম হয়েছে, বাবা হলে প্রত্যেক পিতার এমন একখান ভাবধাম আসে।

অর্কিড বন্ধ হয়ে গ্যাছে। অর্কিডের আচরন নিয়ে শান্তিনিকেতনে মাস্তানি করছে আড্ডা। আড্ডায় জন্মদিনে লাল নীল হলুদ কালারের প্রেম খেলাধূলা করে, ভালোবাসা এক কোনে কথা বলতে আসে, অর্কিডের দিকে তাকিয়ে বিসসাস শব্দটি ঘৃনা করতে চায় মপর্না। বামতলার লোকেরা পায়ের আওয়াজ নিয়ে আড্ডায় বসে, তাদের ওয়াজ চলে তরু ছায়া মসী মাখা দিনখানি মেঘে ঢাকা বেলা থেকে বেলা।

রাস্তার পাশে ছিল বৌদির দোকান। দাদাকে ভালোবেসে দিদি পেতেছিল সংসার। ভালোবাসার ফলও এসেছিল পৃথিবীতে। ভালোবাসা পেয়ে পেয়ে ভালোবাসালোভী হয়ে ওঠে কেউ কেউ। বৌদি আরও ভালোবাসার লোভে চলে গেল চলে গেল অন্য কারো ঘরে। তাছাড়া গাছের নিচের সংসার আর কতদিন চলে, সংসার মানে ভাত, ভাতের সাথে তরকারি, আমিষ হলে আরও ভালো।

রতনপল্লী ভালো আছে। রাতে জমে দিবারাত্রির গল্প। বিদেশী এলাকা বলে কথা। নতুন নতুন খাবার নতুন নতুন মুখ। কথাবার্তা থালাবাসনে কানায় কানায় মাপজোখ। খুব সকালে রতনপল্লী যেন রতনের মতো অসহায়-- পালে বাতাস নিয়ে শিক্ষিত বাবু চলে যাচ্ছে পৃথিবীতে কে কাহার তত্ত্ববানী প্রচার করে।

পূর্বপল্লীর গেস্ট হাউজে এখন আর শিল্টু তাহে না। শিল্টুর হাসিতে তার হৃদয় দেখা যেতো। এখন সবাই যেন প্রফেশনাল হাসিতে কাস্টমার সন্তুষ্ট করতে চায়। দুইশত চব্বিশ নাম্বার রুমটা প্রায় বন্ধ থাকে। জানালায় চেয়ে চেয়ে  এখন আর কেউ সাইকেল চালানো কোনো গায়ত্রীর জন্য অপেক্ষা করে না। সময় এমনি করে আলকাতরার মতো গাঢ় হয়ে আসে, বসন্ত কখনো এক হৃদয়ে আসে না, বসন্তও পাহাড় সমতল মেনে চলে।

সৃজনী শিল্প গ্রামে বদল হয়েছে বাউল। বাতাস আগের মতোই আছে। কেবল দিক পরিবর্তন করেছে খানিকটা। বসার জায়গায় আগের মতো ঘাস জমে ধুলো জমে,জলের সুব্যবস্থার খবর এখন সবাই জানে। কিন্তু এখানে রবীন্দ্রনাথ নেই। তবুও যুগল প্রেমের স্রোত এখানে আছে, ইতিহাসও ছিল একদিন। পুকুরের জলে আর হাঁস হাসে না-- কিছু স্মৃতিছবি ভেসে ওঠে বারবার।

লাল মাটির শান্তিনিকেতন খুব সহজে কাছে টেনে নেয় আরামে আরামে, খুব সহজে দূরে ঠেলে দেয় বিরানে বিরানে।

পৃথিবীর সব কিছু ঘুরছে, লাল মাটিও একদিন ঘুরে যাবে বলহীন আবেগে। পৃথিবী ঘুরছে, লাল মাটি মিলিত হবে চকলেট মাটির সাথে। সাঁওতাল যারা জেনে যাবে তারা তারাও মানুষ .... 

সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

এতটা

তিতাস একটি ট্রেনের নাম। ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া থেকে ঢাকা,ঢাকা থেকে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া  তিতাস দৌড়ঝাঁপ করে।

রেজা তিতাস ট্রেনের যাত্রী। রেজা ট্রেনে ওঠা মানে একটি সাধারন ক্লেশে  ঘটনার কথা বলবেই। অর্থাৎ টিটির সাথে দেখা অথবা সুন্দরী কোনো নারী তার চোখে চোখ রেখেছে কিংবা ভাড়া না দিয়ে রেজা কেমন করে চকলেট মার্কা হাসি দিয়ে টিটিকে বিদায় করেছে, ইত্যাদি ইত্যাদি। ঘটনা সত্য-- রেজা এমন আত্মরতি মুগ্ধতায় প্রায় ভোগে।

তিতাস একটি ট্রেনের নাম। কমলাপুর থেকে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া পর্যন্ত তেইশ স্টেশন তার এলাকা। রেজা ভৈরব থেকে ট্রেনে ওঠেছে। যাবে নরসিংদী। গতকাল সে বাড়িতে ছিল। টানা পনেরো দিন ইন্ডিয়া জার্নির পর রেজার শরীরে হালকা পাতলা ক্লান্তি। কিন্তু রেজা তিতাস ট্রেনে কোনো সিট পাইনি। দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিনের মতো রেজার ট্রেন জার্নি বর্ননায় যিনি আসেন তিনি আসলেন। মানে টিটি আসল।

কোথায় যাবেন?

নরসিংদী।

ভাড়া কত?

টিটি লেমিনেট করা কাগজের ভাড়া লিস্টখানা দেখলেন।

পঁচিশ টাকা। আপনি কুড়ি টাকা দেন।
রেজা টিটির হাতে পঁচিশ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন পাঁচ টাকা কম নিবেন কেন ...

টিটি হাসলেন। তারপর রেজার পীঠস্থান চাপরাইয়া বললেন এতোদিনে একজন মানুষ পাইলাম।

রেজা টিটির কথা শুনে খুব কষ্ট পেল। কারন টিটির চাকরিকালীন সময়ে একজনই মানুষ! অথচ হাজার হাজার মানুষ এই তিতাস ট্রেনে ভ্রমন করে প্রতিদিন!

রেজা তখন জানালার দিকে তাকায়। সবুজ গ্রাম দেখা যায়। তবুও রেজা মনে মনে পির পির করছে--

বাংলাদেশটা ভালো নেই
কিরা আর কিরা
কবিরাজ মশাই ঔষধ দিচ্ছে
গোলাপ জল আর জিরা

রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সহৃদয়তা

পথ আমি চিনি না। কোনো পথ। কোনো পথে আমার বাড়িঘর নেই। এই যে এই পথটি। মানে বিনয় ভবনের রাস্তাটিকে চিনতে পারছি না। অথচ কত চেনা ছিল সে আমার, কত সুর ছিল তার আচরনে বিচরনে, শরীর ভর্তি ছিল তার নদী জল স্রোতের মাহফুজ-- জল পাখিদের কলরব। পথিক ভাঙা পথে আজ সে কাগজের ফুল-- অধরা গন্ধে অধিকারহীন ব্যাকুল।

কলেজ স্ট্রেটের চায়ের কাপে গরমের তেজ অথচ ধুপ নেই তেমন,নাগরিক কলকাতা এমনই হয় প্রিয়তমা-- তুমি তা জান না, তুমি তা জান না-- জিন্সের পেন্টাগ্রামে বিনয় ভবন হাঁটে না।

পথ আজ নীরব
গুসসা করে পথ হারাচ্ছে সময়ের যৌবন
পথ ভুলে যাচ্ছে তার নিজের পথিক

অবিরাম আয়োজন করে প্রিয়জনকে ভুলে থাকা যায়? যায় না। দহনকাল সময়ে অসময়ে দেখা দেয় অমাবস্যা কিংবা বর্ষাকালে-- প্রেমদহনে গ্যালে বর্ষার ঢল নামে হৃদয়ে বারবার-- মুক্তি নাই মুক্তি নাই-- বিনয় ভবনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসা তুমি জানে অপেক্ষার কাল-- গাছের পাতারা নালাপথে চলে যাবে যার যার ঘরে-- অন্ধকার হয়ে এলে মনের আলোয় পথ আমাদের ঠিকই চিনে-- হৃদয়তমা মপর্না আমার

শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

প.

ইন্ডিয়ান রেলওয়ে প্লাটফর্মের সিটগুলা বড় নির্মমভাবে একা, তাদের নীরবতার কোনো মুখ নেই 

নু

অনেক সুন্দর। অনেক সুন্দর আজ। জানালার ফাঁকে মায়াবী রোদ নামে। ফেনের মতো ঘন হয়ে আসে সুখ। ভ্রমনকালীন জীবন আমার সারারাত সারাদিন। একদিনের কথা মনে পড়ে। এক জোছনামাখা রাতের কথা মনে পড়ে। এক বিকেল শৈশবের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে না এই তো চোখের সামনের সাজুগুজু সময়ের কথা

কথাদের কোনো ব্যক্তিগত বিমান নেই
কথাদের কোনো ব্যক্তিগত আকাশ থাকে না
কথারে আমার সাইকেল চালায় কম খরচে ক্যালরিতেলে রাত বিরাইতে-- আকাশ থামে বৃষ্টি সকাল খুব প্রভাতে

মর্জিমাফিক ছায়ার পাশে রোদ ঘুমিয়ে যায়, গভীর হতে হতে পাতলা হয়ে আসে কতিপয় মরীচিকা

বিকেলে বিকেলে রাত
রাতে রাতে সকাল
সকালে সকালে দুপুর

অনেক সুন্দর আজ। অনেক সুন্দর মানুষের কাল। ভর্তার ঘ্রানে জিভে জল আসে, ছনের ঘরে আনন্দ কালে চলতে থাকে ছাইউৎসব। সবুজের পাশে নগর, বিলকুল জীবন-- বৈদ্যুতিক তারে জমা থাকে প্রিয়তমা সম্পর্ক, পাওয়ারে পাওয়ারে হিসাব নিকুচি মেঘলা আকাশ পাতাসহ ঘন, আপন হাতে একলা সিটে বসে থাকে মন। 

মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ভালো

তাজমহলের আশপাশ এলাকায় এক ইউরোপিয়ান রিকসা চালানোর চেষ্টা করছে।

কীভাবে?

যেভাবে জিমে সাইকেল প্রেকটিসের মধ্যে দিয়ে শরীরচর্চা করা হয় সেইভাবে।

অভ্যাস কিংবা মানসিক গঠন রিকসাকেও জিমসাইকেল হিসাবে ভাবায়.....

মিনার

কুতুব মিনারে প্রতি রাতে নেমে আসে মৃত কিছু আত্মা। অহংকার হতে থেকে থেকে জিকিরে মশগুল তারা। হক মওলা ইল্লাল লা। ইল্লাল্লাহু ইল্লাল লা। রাত যখন কোনো কথা বলে মানুষ চুপ হয়ে যায় তখন। তখন কবর থেকে কান্নার রব আসে কানে। তখন গভীর এক অন্ধকার পৃথিবীর পথে। তখন আমাকে ট্রেনের গতিতে ভাসাতে প্রমায়া জাগে হৃদয়ের আয়নাতে।

চুপ হয়ে যাই আমি
চুপ হয়ে যায় কবর
কেবল অতীত এসে অতিথি অতিথি ভাব ধরে শ্রীরাম সুরে

কুতুবি পাথর হিন্দু মন্দিরের আলপথে মুসলমান হলে জানালার চোখে পর্যটক আলো দেখে, বহুকাল আগে যারা আলো চাষ করে ঘুমিয়ে গ্যাছে তাদের ধূলো মিনারে মিনারে ছায়ার মতো গতরে লাগে, তাদের ডাক শুনতে পাই
সবুজ ডাক
ধান পাঁকা ডাক
রোদচশমা ডাক

কোথায় যেন আমি থেমে যাই-- মানুষ বলতে পারি না নিজেকে, চোখের ভেতর যেন কালো মাঠ-- মনের মিনার। মনের মিনারে ভ্রমন করতে মুনাফাভোগ দিতে হয় না, শুধু চোখের মতো চোখ থাকা চায়, থাকা চায় গভীর জলের শীতল ঝিললু।

বড় হলে কবরকেও কথা বলতে দেখবো মুখের মতো, চোখের মতো কবরও দৃশ্য খুঁজে হয়রান হবে। আমার চোখ কতশত দৃশ্য দেখে, দেখা না কেবল তোমায়। তুমি তো বেঁচে আছো মৃত্যুর মতো মিনারে মিনারে। কবরের সাথে তাই কবর হয়ে থাকি, মরতে পারলে দেখা হবে জানি। 

সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

জে এন ইউ

সিকিউরিটি ঢুকতে দিবে না। দিবে না তো দিবে না।  আমার সাথের তারা আশা ছেড়ে দিয়েছে। আমি শালা সহজে পরাজিত হওয়ার মানুষ না। আমি জানি পৃথিবীতে নিজের ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য কোনো না কোনো উপায় থাকে। জাস্ট আবিষ্কার করতে হয়।

আমাদের কেন ঢুকতে দিবে না?

কারন আমরা জওহরলাল নেহেরু  বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না।

রেজা ভাই, চলেন চলে যায় ....

কোনো কথা না বলে সিকিউরিটির কাছ থেকে দূরে গেলাম, গেলাম গেইটের কাছে বসা এক ছাত্রের কাছে। সমস্ত বিষয় খোলাখুলি বললাম। হিন্দি তেমন পাড়ি না। তারপরও আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।

ভূপেন্দ্র দা যথেষ্ট সহযোগিতা করলেন। হামিদ ভাই নিজের আইডি কার্ড দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা জে এন ইউ ক্যাম্পাসে ঢুকতে সক্ষম হয়েছি।

ক্যাম্পাসটি মুগ্ধকর। অনেকটাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অথবা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের টাইপের। তবে চরিত্রগত পার্থক্য তো আছেই। দিল্লি আর ঢাকা বলে কথা। এখানকার প্রত্যেকটি হল নদীর নামে করা। আমার প্রিয় নদী ঝিলাম নদীর নামে জে এন ইউতে হল আছে। মেয়েরা এখানে গোয়ালের অধিবাসী নহে। মেয়েরা অনায়াসে ছেলেদের রুমে যেতে পারে কিন্তু ছেলেরা দৌড়ঝাঁপ করতে পারে মেয়েদের হলের গেস্টরুম পর্যন্ত।

এখানে মেরুদন্ড আছে এমন ছাত্র অনেক। আট হাজার ছাত্রের মধ্যে সাত হাজার ছাত্রের সিটের ব্যবস্থা আছে, এক হাজার ছাত্রের তা নেই। মেরুদন্ডওয়ালারা সেই এক হাজার ছাত্রের সিটের জন্য আন্দোলন করে।

লাইব্রেরিতে ঢুকলাম। সিট খালি নেই। তবে চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির মতো এখানে একটি নতুন দৃশ্য দেখি-- লাইব্রেরিতে ল্যাপটপ নিয়ে পড়াশোনা করা। ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা জে এন ইউ ক্যাম্পাসের ছাত্রছাত্রীরাও করে। তবুও ফ্রিডম চত্ত্বর বলে জে এন ইউতে একখান প্রমিথিউস এলাকা তো আছে যেখানে এখনো কিছু মানুষের গান চলে।

দিল্লী জামে মসজিদে কোনো ফ্রিডম চত্ত্বর নেই। এখানে মানুষ আসে প্রার্থনার কাছে বন্দী হতে। আমিও এখানে এসে প্রার্থনার কাছে বন্দী হলাম.....

বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সাজে

সব সুধারা যখন ভুলে যায় অমলের সুধা তখনো তাকে মনে রাখে 

সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

Itself

কলকাতা শহর মানুষের জঙ্গল। কলকাতা শহর মুনাফার এক সুবোধ জায়গা। ঢাকা শহরে যে পরিমান যানবাহন আছে কলকাতা শহরে সেই পরিমান যানবাহন নেই। দুই বছর আগে কলকাতা শহর যেমন ছিল এখন আর তেমন নেই। কলকাতা শহরের গতরে উজ্জ্বল উজ্জ্বল একখান ভাব নাযিল হয়েছে। কর্তৃপক্ষ শহরটাকে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করে।

আকবর মিয়া। কলকাতার রিক্সাচালক। তার দুই ছেলে। আর সন্তান নেয়ার ইচ্ছাপত্র সে পাঠ করতে চায় না। সে বলে বাংলাদেশের মানুষ নাকি টেনে টেনে কথা বলে। যেমন মাকে টেনে বলে আম্মা, মেয়েকে টেনে বলে মাইয়্যা। বাংলাদেশের অনেক রিক্সাওয়ালা খুব সুন্দর করে গান করে, আবার কবিতা লেখে, আবৃত্তি করে। আর কলকাতার রিক্সাওয়ালাকে দেখলাম ভাষাপরিবর্তন বিষয়টাও মাথায় রাখে।

আমার চোখের সামনে টেলিভিশন চলছে। চ্যানেলটি a2z। চ্যানেলটি বেশ ভালো লেগেছে। বাজার কীভাবে ধরতে হয় চিনের মতো ইন্ডিয়াও শিখে গ্যাছে। এই চ্যানেলটি আপনাকে শেখাবে কোন সেলাই মিশিন কেমন কাজ করে, কোন খাবারের বক্স খাবারের নান্দনিক অবস্থান নির্ধারন করে, সেলাই মিশিনের সাথে সাথে সুই সুতার ওয়াজটাও চ্যানেলটি করে।

ছোট পোশাক পরে রাস্তায় নেমে আসে কলকাতার মেয়েরা। মেয়েদের ছোট পোশাক পরিধান করার সাথে সাথে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কোনো যোগাযোগ আছে কিনা আমি জানি না। তবে মিডিয়া এখন এক গুরুত্বপূর্ন অর্থনীতি এমন কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

বাংলাদেশ থেকে যারা কলকাতায় আসে তারা প্রথমে টাকাকড়িকে ডলারে রূপান্তর করে, ডলারকে আবার রুপিতে রূপায়ন করে। ইহা এক বিশাল জটিল প্রক্রিয়া। অর্থের একটি আন্তর্জাতিক একক মুদ্রা থাকা চাই। কেবল অস্ত্র আবিষ্কার করলে তো হবে না, সুবিধাও আবিষ্কার করতে হবে।

Marquis Street এর দাওয়াতে আজ lunch করলাম। দাওয়াতের খাবারে ইন্ডিয়ান স্বাদ পুরোদমে নেই। কিন্তু খাবারের মান আলহামদুলিল্লাহ বলার মতো। সন্ধ্যায় দুটি কমলা কিনে খেলাম। বেশ ভালো। রসালো এবং ফলেল আয়েসভের আছে।

দুই বছর আগে কলকাতা শহর থেকে একটি লেদারের মানিব্যাগ কিনতে চেয়েছিলাম। পর্যাপ্ত সময় থাকা সত্ত্বেও সময় হয়নি। অথচ আজ আমার পকেটে রাশি রাশি সময়। মানিব্যাগ কিনলাম। একদিন সময়কেও কিনে নিয়ে আসবো আমাদের বাড়িতে, মেঘনা নদীর পাড়ে...

শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

নিথুয়া

নিথুয়া দেহের ভেতর কারখানা-- সমাজ ভাবনা
মহুয়া সুখ বাঘ মাসের পূর্নিমা-- সমাজ ভাবনা

সমাজ ভাবনার ভেতর হাজার হাজার শ্রমিক বাস করে
আলোর কাফনে সাজানো প্রেমের পালকি
গাজি কালো হক মওলা রবে সমাজ ভাবনার সুপারম্যান

বনে বনে মজনু
মনে মনে লায়লি

লায়লি মজনু গল্প হলেও আমরা পূজা করে সুখ পাই

আমার ভেতর কিছু প্রিয়তমা অন্ধকার ছাড়া কিছুই নেই
তুমিও সূর্যের আলোয় অন্ধকার মেখে পথ থেকে সরে যাও
বারবার সরে যাও
অনেকবার সরে যাও এবং অমলের মতো পথচারী সুখ হৃদয়ে রাখো-- ভালো আছো?

একহাত বাংলাদেশ ভালো আছে রক্তের ভেতর।

ভাষার এজেন্সি নিরুপমা ফ্যান্টাসি-- ধূসর হয়ে আসে সমাজের ভাবনার রঙে

আরও গল্প হবে

সিগারেটের শেষ টান থ্রিডি মনিটরের এককোনা প্রান

আরও গল্প হবে
মাছ হবে
গাছ থেকে অনিমেষ ভাবনা

আমি হব মাঘের জোছনার সাইডুলি স্রোত, ফাল্গুনে গুনগুন--  বসন্ত এসে গ্যাছে-- তুমিও ফিরে গ্যাছে হলে আমার জিহ্বার পাতায় কিছু মানবিক কালি রেখে-- সময়ের মতো আমিও অর্পনার হাতে-- বসন্ত এসে গ্যাছে। 

শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সে

তিনি মা। তিনি কর্নফুলী ট্রেনে। পড়াশোনা শেষ করা মেয়েটি কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশনে এসেছে। মাকে সি অফ করার জন্য। ট্রেন ছেড়ে দিলো। মায়ের চোখ থেকে টুপটাপ জল পড়ছে। আওয়াজ নেই। কান্নায় যথেষ্ট আবেগ।
মায়ের বাড়ি নরসিংদী।

আম্মার কথা মনে পড়লো। আম্মার আম্মার কথা মনে পড়লো। নানি বাড়ি আর আমাদের বাড়ি মিনিট দশকের পথ। তবুও দেখতাম আম্মা তার আম্মার বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে আসার সময় নানির চোখের জল কাহাকে বলে। অনেক সময় দেখা যেতো নানি কানতে কানতে আমাদের বাড়িতে চলেই আসতেন। আমাদের বাড়িতে এসে আবার দুজনের একপশলা কান্না।

আমি কখনো কান্নার মানে বুঝি না। কান্না দেখলেই আমার নদীর কথা মনে পড়ে। আগে নদী ছিল অনেক। মানুষের চোখে জলও ছিল অনেক। এখন আর মানুষের চোখে তেমন জল নেই ....

বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

আগুন

আগুন জ্বলে বস্তিতে
বৃদ্ধ মা নেই স্বস্তিতে
ফুলেল শিশুর বুক কাঁপে
চোখের জলে বুক ভাসে
অনেক পরে অনেক পরে
জল কামানের আগুন আসে
কালো কালো পোশাক আসে
অনেক আগে অনেক আগেই
নিউজ লেখার লোক আসে
সব জেনে যাই তাই হাসি
এতো ঘৃনা কই রাখি
ভদ্ররা সব অফিসে
চিকেন কাবাব ফাস্টফুডে
ভালো আছি ভালোই আছি দেশটাতে 

বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

কোথাও চলে যাওয়া দরকার

খুব দরকার
ভেতর থেকে দরকার
একদম দরকার
এখুনি দরকার

যেখানে মানুষ নেই, যেখানে মাটি নেই, যেখানে সময় নেই, নেই কোনো আবাদি আদেশ উপদেশ অনুরোধ।

কোথাও চলে যাওয়া দরকার

খুব করে দরকার
লাল পতাকার মতো দরকার
সবুজ গাছের ছায়ার মতো দরকার
আজই দরকার

কাল বলে কোনো কথা নেই, কাল এক ফাসিক ইতিহাস, অতীত মুনাফিক, বর্তমানের ভেতর চাষ করি নগদ বীজ, বীজ থেকে শুন্যতার মিছিল-- তারপর ফসল।

এই তো ভালো ফসলে ফসলে নেহাল প্রেম
এই তো সুন্দর সকলে সকালে প্রিয়তমা

রাজহাঁস নৌকা চালায় জলে জলে-- তোমাকে আজকাল চায়ের কাপে দেখা যায় না-- অনেক অভিমান গভীর রাতের মতো আমার চোখে নামে-- তোমাকে দেখা যায় না-- প্রতিদিন প্রতিরকম হলে আমাদের শৈশব পাড়ায় কবিরাজ ডাকে-- কবিরাজ বউয়ের মতো চুড়ির ভাংতি শব্দ কানে আসে-- হৃদয়ে দেখা দেয় ঘাসফুল ভুল...

আলোকবর্ষের সাথে দেখা হয় রোজ
কথা হয় রোজ
বসা হয় রোজ

ভালোবাসার কথা বলতে গেলেই কেমন যেন সংসার সংসার ভাব-- গরীব দেওয়ানা বসে থাকে সীমানায়--  বেহতার বেহতার জীবনের আশায়।

আশার পেছনে ছুটে হারালাম হৃদয়, হৃদয়ের মালামাল-- গরীব হয়ে সংসার পেতেছি ঘরে নুন নাই, মনে নুন নাই-- ছায়াময়ী রোদ হয়ে গেলে আমি চলে যাই সীমানায়। 

সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

চা

চালাক নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, বুদ্ধিমান অন্যকে আলোকিত করে। কারন চালাক থামতে জানে না, বুদ্ধিমান পরাজয়ে হাসতে জানে। 

রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

অসুখ

বাতাসে তাল দিলে হাওয়ার গতি বদলে যায়-- হাত নড়ে হাওয়ার গতি মোতাবেক-- রান্নাবান্না হচ্ছে না তবুও ভাত প্রয়োজন-- গল্প কী আর গল্প হবে যখন ভাত নেই পেটে?

তোমার আবেগ প্রকাশের সময় নাই
তাহার আবেগ প্রকাশের সময় নাই
তাহাদের আবেগ প্রকাশের সময় নাই

যেটুকু ভদ্রলোকের মতো বলা যায় সেটুকুতে মানুষের সময়, সেটুকু আমাদের সমাজ, সেটুকু আমাদের কল্পনা

স্বামীপ্রেম
ঘরপ্রেম
পরিবারপ্রেম
হানিমুন মোহ থাকে না, থাকে না দীর্ঘদিন, মগজে বড়ই গরীব আমরা।

কালকে শুনানি হবে-- মানুষের পাড়ায় দেখা দিবে রাজনৈতিক অসুখ।

অসুখ মানে সুখ নেই এমন
অসুখ মানে সর্বনামহীন নেটওয়ার্ক
অসুখ মানে হৃদয়হীন যোগাযোগ
অসুখ মানে গুটিবাজ রংবাজ
অসুখ মানে প্রেমহীন আওয়াজ

অসুখ মাথায় উকুনের বসবাস-- তেলহীন মাথায় যতসব চিরুনির কাজ-- দেশের ভেতর পুরাতন অভ্যাস-- অভ্যাসে স্বাভাবিক মানুষের ঘর-- অভ্যাসে প্রানীকুল নারী আর নর। 

শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

শহরে

শহুরে জীবনে জিকির যার যার
ডেন্টাল তাকওয়া মাছের খামার
রাতের শহরে নামে কর্পোরেট আমল
কলসির জল এখন প্লাস্টিকের বোতল
মাছ ছিল
ভাত ছিল
ছিল আলু আর পটল
ছিপহীন মাছহীন আমার জীবন, আমার ঘরে নামে জোছনা কমল
কাল তুমি আসবে-- বাঁশ বনে ডাকবে
যতসব অভিমান জলে জলে ভাসবে
ভেসে যাবো
ভেসে যাবে
কথা হবে
কথা রবে
মুখোমুখি চোখাচোখি যাপিত জীবন
প্রায় শহর লিথুনিয়ায় আমার মরন