সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

জে এন ইউ

সিকিউরিটি ঢুকতে দিবে না। দিবে না তো দিবে না।  আমার সাথের তারা আশা ছেড়ে দিয়েছে। আমি শালা সহজে পরাজিত হওয়ার মানুষ না। আমি জানি পৃথিবীতে নিজের ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য কোনো না কোনো উপায় থাকে। জাস্ট আবিষ্কার করতে হয়।

আমাদের কেন ঢুকতে দিবে না?

কারন আমরা জওহরলাল নেহেরু  বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না।

রেজা ভাই, চলেন চলে যায় ....

কোনো কথা না বলে সিকিউরিটির কাছ থেকে দূরে গেলাম, গেলাম গেইটের কাছে বসা এক ছাত্রের কাছে। সমস্ত বিষয় খোলাখুলি বললাম। হিন্দি তেমন পাড়ি না। তারপরও আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।

ভূপেন্দ্র দা যথেষ্ট সহযোগিতা করলেন। হামিদ ভাই নিজের আইডি কার্ড দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা জে এন ইউ ক্যাম্পাসে ঢুকতে সক্ষম হয়েছি।

ক্যাম্পাসটি মুগ্ধকর। অনেকটাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অথবা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের টাইপের। তবে চরিত্রগত পার্থক্য তো আছেই। দিল্লি আর ঢাকা বলে কথা। এখানকার প্রত্যেকটি হল নদীর নামে করা। আমার প্রিয় নদী ঝিলাম নদীর নামে জে এন ইউতে হল আছে। মেয়েরা এখানে গোয়ালের অধিবাসী নহে। মেয়েরা অনায়াসে ছেলেদের রুমে যেতে পারে কিন্তু ছেলেরা দৌড়ঝাঁপ করতে পারে মেয়েদের হলের গেস্টরুম পর্যন্ত।

এখানে মেরুদন্ড আছে এমন ছাত্র অনেক। আট হাজার ছাত্রের মধ্যে সাত হাজার ছাত্রের সিটের ব্যবস্থা আছে, এক হাজার ছাত্রের তা নেই। মেরুদন্ডওয়ালারা সেই এক হাজার ছাত্রের সিটের জন্য আন্দোলন করে।

লাইব্রেরিতে ঢুকলাম। সিট খালি নেই। তবে চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির মতো এখানে একটি নতুন দৃশ্য দেখি-- লাইব্রেরিতে ল্যাপটপ নিয়ে পড়াশোনা করা। ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা জে এন ইউ ক্যাম্পাসের ছাত্রছাত্রীরাও করে। তবুও ফ্রিডম চত্ত্বর বলে জে এন ইউতে একখান প্রমিথিউস এলাকা তো আছে যেখানে এখনো কিছু মানুষের গান চলে।

দিল্লী জামে মসজিদে কোনো ফ্রিডম চত্ত্বর নেই। এখানে মানুষ আসে প্রার্থনার কাছে বন্দী হতে। আমিও এখানে এসে প্রার্থনার কাছে বন্দী হলাম.....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন