শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

সুনাম

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বিশেষ। প্রতিটি দিন প্রতিটি সময় সমান গুরুত্বের দাবিদার। সময় এবং জীবন আলাদা কোনো সত্ত্বা নহে। শরীরের কোনো অংশ কোনো কারনে বিশেষ গুরুত্ব পাওয়ার অধিকার এককভাবে রাখে না। শরীরের প্রত্যেকটি অংশ বিশেষভাবে সমান গুরুত্বপূর্ন।

তবে অন্ধের কাছে চোখ বিশেষ আকাঙ্খার জায়গা থেকে, অভাববোধের জায়গা থেকে। যাদের কাছে বিশেষ কোনো দিন নেই তারাই বিশেষ দিন তৈরি করে। 

শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬

এরপর

দুপুরের ভেতর দিয়ে চলে যায় আন্তনগর ট্রেন-- চাঁদনী রাত।

নদী পড়েছে অফিসিয়াল পোশাক, আমাদের পুরাতন মাঝি সেই আগের লেবাসেই আছে, মাইকে মাইকে বাজতে থাকে হামদ কিংবা নাত।

ভিক্ষুক এখনো দরজায় পাতে হাত।

দরজার নিজস্ব কোনো শব্দ নেই, হাজার বছরের জানালা আমার চোখের সমান।

জমানো কথার ভেতর ফ্রিল্যান্স দৃশ্য আসে বারংবার, পানপাতার মতো মুখ কেন হারায় নিজের ভিটা তা তো জানবার কথা, তা তো জানবার কথা।

চোখে আসে সীমানা
মনে থাকে হিসাব
একটি নীল রঙের সকাল থেকে জন্ম নেয় সবুজ রঙের বিকাল।

চোখের ভেতর দিয়ে চোখ দেখতে গেলেই যতসব আলোর মেলা
থোকা থোকা আলো
বিন্দু বিন্দু আলো
চুপচাপ চুপচাপ এক দুনিয়া

কামনার ঘরে মপর্না হিসাবের চারা রোপন করে ধীরে ধীরে
সেই আন্তনগর ট্রেন দুপুরের মতো চলে যায় রাতের ঘরে। 

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

দুই

দুচার কলম লিখতে না লিখতে বই বের করতে হবে। বই বের করতে না করতেই পুরষ্কার পেতে হবে। পুরষ্কার পাওয়ার  কয়েকদিনের মধ্যে লেখক টেন্ডারবাজি  শুরু করতে হবে। তারপর শুরু হবে ফতোয়া দেয়া, মোনাজাত করা আর খেচুড়ি খাওয়ার ধুম।

আর দালাল শ্রেনি কিন্তু হাজির, পত্রিকা বের করবে, পত্রিকা বের করে করে কোথাও খাবারের সুযোগ নিবে, কখনো চাকরী পাওয়ার সুযোগ নিবে, কোথাও সোস্যাল ক্যাপিটাল অর্জন করার লোভে থাকবে, কখনো আবার নিজের সম্পাদনা যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে কোনো মহলের পাচাটা গোলাম হবে।

তারা খুব সুন্দর করে সৌন্দর্যের কথা বলবে। তাদের সৌন্দর্যের সুন্দর বর্ননা শুনে বুঝা যাবে না তারা আসলে শয়তান ডট কমের এজেন্ট। তাহলে কখন বুঝা যাবে? বুঝা যাবে যখন তারা ফলাফলের দিকে যাবে। ফলাফলে তারা বলবে সৌন্দর্য মানে প্রিয়াংকা কারকি অথবা ফেয়ার এন্ড লাভলী।

এ ত

বিগত দিনের আমি রোজ একদিন হয়ে যায়, গিটারের আওয়াজ, মিউজিক চেয়ারের সেই অভ্যাসে বহুগামীতার চিরাচরিত স্বভাব জেগে থাকে বেঁচে থাকে, বেঁচে নেই কেবল বন্ধুর বাড়ি, নদীর ঢেউ।

নদী কথা বলতে চায়
কথা দেখা করতে চায়
চাওয়া চায় পাওয়ার মতো একখান হাসি।

আওয়াজ দিতে জানলেই পৃথিবীকে চোখের সামনে নামিয়ে আনা যায় না, পৃথিবীরও রয়েছে জন্মগত কিছু টান, পৃথিবীকেও তার পৃথিবীর কাছে হিসাব দিতে হয়-- রোটিন মেনে যেতে হয়েছে জন্মের কাছে, আবার রোটিন মেনে যাবে মৃত্যুর তালতিলে জীবনের কাছে।

জীবন আছে
জীবন থাকে
জীবন থাকবে বলে আজও মনে হয়

কেবল পুরাতন বাড়ির ভেতর ভূতের চিৎকারে মানুষটি ঘুমাতে পারে না।

মানুষটি হাসতে পারে না
মানুষটি দেখতে পারে না
মানুষটি হাঁটতে পারে না

মানুষটি আলোর ভেতর ছায়া দেখে আরও আরও গভীর থেকে গভীরে,
বিগত দিনের মানুষটির ভেতর তুমিহীন শুন্যতার চাষ হবে, কাগজে ফুলে গন্ধ নিবে আজকের তারা।

সব সারা
সব হারা
আকাশ নিশ্চিতভাবে হয়ে যাবে আকাশের তারা 

বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

বানরটি

মাথা বরাবর অনেক কিছুই থাকে না
মাথার কাছেও অনেক কিছু থাকে না
চোখের সামনে সত্যি ডিভোর্স দেয় সত্যকে
হাইকোর্ট জজকোর্ট দেখায় বিজ্ঞাপনের মফিজ
কাল থেকে অন্ধকার নামবে কুয়াশার নাভিমূলে
মহাস্থান আবাল সুর দিবে ইতিহাসের মালবাহী দোকানে
চলছে থামবে
থামবে চলছে
থামা আর চলার মাঝে বাতাসের সংসার
সংসারে দেখা দেয় যতসব অযথা আলাপ

কোন মানুষ কেমন, কোন ঘরে আলো জ্বলে, কোন বানরের লেজে লেগে যায় কত লিটার উপরি তেলের খরচ জেনে হয় না কোনো জমির একখন্ড কাজ, শীতকালে মানুষের ভীষন আরাম।

কুয়াশার চাকরি করে সুখ আসে মনে, সুখ আসে জনে।
ঘরমুখো সুখ
মানুষবাহী সুখ
সুখ থেকে সুখ
সুখে পালাতে পালাতে কাল রাখে না হাত পায়রার হাতে
ঘাসের ঘরে খুব ভোরে রোজ রাতে কিছু কথা থাকে কিছু কথা থাকে

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

জু

কুয়াশার জন্য প্রার্থনা। কুয়াশা এলো। সাইবেরিয়ান পাখিও ভালোবাসা চায়। ভালোবাসা পেলো। হিমবায়ু আসবে বলে আসেনি তবুও পাখিদের ঘরে কোলাহল আছে, আছে রোদ পোহানোর পাখিগত উৎসব। একটি পুকুরে প্রতি বছর ফোটে একটি নীল শাপলা, এই বছরেরও তাকে দেখা যায় পুকুরের ঠিক মাথায়। শুরু হলে কুয়াশার খেলা ঘুমিয়ে থাকা অন্যায়।  

সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

ধন্যবাদ

সিগারেটের ধোঁয়ার মতো উড়ে যায় প্রেমিকার ওড়না
শোকাবহ চোখে ভেসে আসে বহুদিন আগের এক ঝরনা
কারা যেন বলে তুমি ছিলে
কে যেন বলে তুমি আছো
ছিলে হয়তো
আছো হয়তো
কুয়াশার ভেতর জমা থাকে না ভোর
পুলিশের চোখ দেখে না মানুষের হৃদয়
একটি সকালের আশায় রাতের পথ ধরে ঘুমচোখে হেঁটে চলা
একসময় ঠিকই কোকিলের সাথে দেখা হবে
নিভে যাওয়া সূর্যের সাথে কথা হবে
ম্লান মুখে হাসি দিবে অনেক দিন আগের এক অন্ধকার
আকাশ যেখানে থামবে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকবে আমার মতো একটি গাছ
কোনো দুঃখ নয়
কোনো অভিমান নয়
কোনো অভিযোগ নয়
একটি গাছের কাছে কেবল আরেকটি গাছের ছায়ার প্রার্থনা 

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

..:..:

রোদ পোহাতে পোহাতে সূর্যের বাড়ি থেকে টেনশন নেমে আসে
রেললাইনের পাথরে দেখা দেয় সেলফি ম্যানিয়া

মানুষ কথা বলতে জানে, মানুষ ভালোবাসতে জানে, মানুষ জানে নিজেকে একমাত্র ভাবতে

আরও গভীরে গেলেও ভাসমান সব মৃত্যুর মতো দেখাবে, গন্ধ ছাড়াও ফুল আছে পৃথিবীতে, কাঁটা ছাড়াও মাছমাংসের স্বাদ মিলে জিহ্বায়

কিছু বাড়তি ভালোর জন্য অসুখ বিক্রি করে যারা তারাও মশার কামড়ে ব্যথা পায়, সরিষা ফুলের মতো হাসতে পারাটাই কাজ, বোকা হয়ে ত্যাগী হতে পারাই সমাজ, কাঁদতে পারলে তুমিও সূর্য হবে

:.

আমার ভোর রাত করে বাড়ি ফিরে 

স্ট

তাকে রক্ষা করবে তার আল্লা। বিষয়টা খুব মজার। কিন্তু সে জানে না আল্লা রক্ষা করা ধবংস করার দায়িত্বে নাই। দুনিয়া এক সিস্টেমের নাম। সিস্টেমে আছো তো এমনিতেই সব রক্ষা পাবে। আমি তাকে ভয় দেখাতে চাই নি। সে ভয় পেয়েছে। তার ভয় পাওয়ার কারনও সিস্টেম।

চাচা, এই রুমটাকে  কী নামে ডাকে?

সে ইশারা দিল লেখাটির দিকে।

একটি লেখা যেখানে বুলেট করে লেখা Guard।

আপনিই এই ট্রেন চালান?

হুম।

কীভাবে?

এই প্রশিক্ষন নিয়েই আমি এখানে বসেছি। সরকার তো আর এমনিতেই আমাকে পচাঁত্তুর হাজার টাকা মাস শেষে দিয়ে দেয় না।
আমিও বললাম 'হুম'।
তারপর সে ওযু করতে গেল। সালাত কায়েম করবে। খুব আস্তে আস্তে সালাত কায়েম করতে থাকে সে। সালাত শেষ। এখন প্রভুর কাছে হাত তুলে সে। এই হাত তুলল, এই হাত নামাল। খুব অল্প সময়ের ব্যাপার।

ভৈরব স্টেশন থেকে আমি দাঁড়িয়ে আছি। পকেটে টিকেট আছে। তবে সিট নেই। একটু নীরবতার জন্য এই পরিচালকের কামড়াটি বেছে নেয়া। এই কামড়ায় আরও কয়েকজন আছে। তারা পরিচালককে একশ টাকা করে দিয়েছে। আমিও একশত টাকার একটি পুরাতন নোট দিয়েছি। পুরাতন টাকার নোট জাল হবার সম্ভাবনা কম থাকে সে বলে। জ্বি চাচা, পুরাতন টাকার নোট জাল হবার সম্ভাবনা একেবারেই নাই তবে একটু আকটু ফুটো হয়ে থাকে। সে ত্রিশ টাকা রেখে আমাকে বাকি টাকা ফেরত দেয়।

ট্রেন চলছে।

আমার পা মেয়েটির বোরখার লেজের উপরে পড়ে। অনেকক্ষন কেউ আমরা টের পাইনি। হঠাৎ মেয়েটি এক্সকিউজমি বলে গলার শব্দ তারায় নিয়ে যায়। মনে মনে ভাবলাম সাপের লেজে পা দিলাম না তো!

ছোট্ট কালে মাছ ধরতে গিয়ে সাপের লেজে একবার পা দিয়েছিলাম। সাপ ছুতকরে আমার পায়ে তার দাঁত বসিয়ে দেয়। ভয়ঙ্কর ভয় পাই। আবার সচেতনও হয়ে উঠি। কামড়ের উপরে শার্ট খুলে বেঁধে ফেলি। তারপর সাপের দিকে তাকাই। ওমা! সাপ ছটফট ছটফট করছে। আমি চেয়ে আছি। কী করবো বুঝতে পারছি না। সাপটা ছটফট করতে করতে মারা যায়। অথচ মরে যাওয়ার কথা আমার, আমি এখনো বেঁচে আছি।

আপনি গান করেন?

না, কেন?

আপনার এক্সকিউজমি শব্দে জানালার কাঁচ ফেটে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছিল তো তাই। আপনি কিন্তু গান করলে ভালো করবেন, আপনার কন্ঠের বেইজ ভালো।
অপমানিত হয়েছে না সম্মানিত হয়েছে মেয়েটি বুঝতে পারেনি। তার মুখে নেমে আসে লাজুক হাসি।
আম্মু চেয়েছিলেন আমি সং করি, কিন্তু আব্বু তা লাইক করতেন না।

অ তাই। তারপর আমি কানে হেডফোন দিলাম।

ট্রেন চলছে।

চাচা আমার জন্য একটি দোয়া করবেন?

অবশ্যই।

কী দোয়া জানেন তো ....

কী?

পচাঁত্তুর হাজার টাকা বেতন পাওয়ার পরও যেন আমাকে ত্রিশ টাকা, একশ টাকা ভিক্ষা না করতে হয়।

চাচা এবার ক্ষেপে গেলেন। অল্পশিক্ষিত অহংকারী মানুষ ক্ষেপে গেলে ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করে। সে অনর্গল ইংরেজিতে লেকচার দিয়েই চলেছে।

চাচা, আমি ইংরেজি ভাষা বুঝি না, এখনো আমিও বাঙ্গাল। তবে একটি কুরানের  আয়াত মুখস্থ করেছিলাম-- ইন্না সালাতা তানহা আনিল ফাকসাইর ওয়াল মুনকার।

অর্থাৎ সালাত মানুষকে বেহায়া, মিথ্যা, লজ্জাকর, ভিক্ষা করা থেকে বিরত রাখে।

শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

গ্যা

রোদে শুকাতে দিয়েছি বয়স-- শীতকাল
পোষাকের কান থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত জল আর জল-- শীতকাল
বাতাস ভুলে গ্যাছে সাকপ্রিয় সুখ-- শীতকাল
সূর্য চলে গ্যাছে চোখের পরপারে, পোষাক তখনো ঝুলে আছে তারে, শীতকাল ঝুলে আছে কার্তিক মাসের ঠাকুরমার ঘরে 

✔এ

মেঘের আড়ালে তুমুল যুদ্ধ 

চাউ

চায়ের কাপে বিশ্ব কাঁপে
দৃশ্য কাঁপে ঠোঁটে
মন পাগলা নৌকা চালায়
বৈঠা চলে স্রোতে 

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬

মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬

সাহিত্য

যাদের সাহিত্য চর্চার শেকড় খুব গভীর না তারা আসলে কচুরিপানার মতো স্রোতের টানে ভেসে চলে। তাদের ব্যক্তিত্বের কোনো নিজস্বতা নেই। হাততালি তাদের একমাত্র লক্ষ্য। প্রাপ্ত হাততালিকে তারা প্রসাধনীর মতো ব্যবহার করে যা তাদের ভোগের চেহারাকে উজ্জ্বল করে।

সাহিত্য কিন্তু আপনার পাগলা ঘোড়া না যার পীঠে চড়ে আপনি সংসার মাঠ পাড়ি দিবেন, সাহিত্য হল ছোট্ট নৌকা যেখানে আপনার ঠাঁই হবে না। 

!!

স্টেশন
        অন্ধকার
                      মানুষ 

শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

প্রতি

ইচ্ছেগুলো পাখির মতো আকাশে উড়তে থাকে। যে গাছ নড়ছে দুলছে সে গাছে পাখি বসে না। পাখির জন্য প্রয়োজন হয় একটি স্থির গাছ। স্থির গাছে পাখি বসে, বাসা বানায়, আরও পাখি জন্ম দেয়। একসময় গাছটি হয়ে যায় পাখিদের গ্রাম।

যে মানুষ অস্থির, নড়ছে দুলছে সে মানুষের মনে ইচ্ছা, স্বপ্ন কখনো বাসা বানাতে আসে না। স্বপ্ন তার মনেই বাসা তৈরি করে যার মন প্রত্যয়ী পদক্ষেপ ফেলে প্রতিটি সময়ের মাঠে। 

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

ঠিক

মাটির ঢেলার মাঝে সবুজ ঘাসগুলা একা 

বার্তা

জীবন একটা উপহার। উপহার কেউ সাজিয়ে রাখে, কেউ ব্যবহার করে, কেউ আবার রাগ করে আগুনে পুড়ায়।

উপহারের কোনো বিনিময় মূল্য হয় না, উপহার মূল্যহীন বলেই অনেক মূল্যবান। জীবন নামক উপহার মানুষ কোথা থেকে পেয়েছে তা অনেক গভীর বিষয় যেখানে কবি নীরব।

প্রত্যেক মানুষ কমাতে বসবাস করে কিন্তু দাঁড়ির আলোচনায় তার চুল সাদা হয়, চোখের সামনের দৃশ্যরা ঝাপসা হয়ে আসে, জিহব্বাটি স্বাদ্গুন হারায়।

মানুষ জানে না মানুষ অতি কষ্টে মানুষ। কুয়াশার মতো চেতনাকে আজকাল মানুষ বলে চালিয়ে দেয়া হলেও মানুষ কিন্তু আছে। 

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬

উত্তর

রেজা ভালো হয়ে যাও। এখন গভীর রাত। সকাল হবার আগেই ভালো হয়ে যাও। পয়সা টয়সা লাগবো না। চোখ বন্ধ করে হৃদয়ের কথা শুনে দেখো বোবা পৃথিবী অযথা চিল্লায়। পুঁটি মাছ নাচে অযথা বেশি, বৃদ্ধ চাচার কন্ঠে থাকবেই কাশি। তোমার আকাশ এখনো অসীম, এখনো শতভাগ ব্যবসায়ী হতে পারনি, ভালো হবার সুযোগ আছে তোমার শতভাগ।

কূপকে যারা মৃত্যুর ফাঁদ ভেবেছিল তারা জানে না কূপ কেমন করে অসহায়  ইউসুফকে নবী বানায়,  রাজা বানায়; তারা জানতেও পারবে না।
তারা কেবল নিজের ভেতর গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে একদিন ভালো মানের কূপ হয়ে যাবে। তুমি গর্তের সন্ধানে মাটির ঢেলার সাথে মিশে যাবে তা সে চায় না, তোমাকে সে আগুনে দিবে তবে মাটির চেয়ে আরও শক্তিশালী করার জন্যে। সে তোমাকে ধীরে ধীরে তার দিকে নিয়ে যাবে, তুমি বুঝতেও পারবে না।

তুমি ইচ্ছা করলেই ভালো হতে পারবে না রেজা, ভালো হওয়া কোনো কঠিন কাজ না তবে কঠিনতর কঠিন, কঠিনতম কঠিন।

জীবনকে প্রশ্ন করা যায় না রেজা, জীবন ঠাঁইহীন নৌকার মতো ঢেউয়ের তালে চলে, যেমন করে দূরে থাকে সে তেমন করে ধরে। রেজা ভাই, ভালো হওয়া তোমার চাই-ই চাই। 

শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

নতুন


চট্রগ্রামে গেলে ভাইয়ের সাথে দেখা করি। ভাই আমার দেশের সেবায় নিয়োজিত। তিন বছর আগে চট্রগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে যাওয়া হয়। তিন বছর পর আবার আসলাম। জায়গায় জায়গায় কড়া চেকিং। তারউপরে মুখে আমার দুর্বাঘাস দুর্বাঘাস দাড়ি। সন্দেহের শেষ নেই। সব সন্দেহের অবসানে অবশেষে টাইগার পয়েন্টে যেতে পারি।

টাইগার পয়েন্টে যাওয়ার আগে ক্যাফে 24 নজরে আসে। ক্যাফে 24 মানে চব্বিশ ঘন্টার ক্যাফে নয়, 24 মানে 24 পদাতিক। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে এমন জনসাধারন অবাধ বিচরন বিনোদন থাকবে তা আমার কাছে সুবিধাজনক মনে হয়নি। যাহাইহোক সুবিধা অসুবিধা ভাববার অনেক লোক আছে। ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়ার সাথে সাথে একটি দুঃখজনক সংবাদ পাই। ডাকাতির সংবাদ।

বৌদি ঢাকা যাবে। সকাল সকাল বাড়ি থেকে বের হয়। সূর্য তখনো চোখের সামনে আসেনি। রিকসা আলম নগর যেতে না যেতেই তিনজন মহামান্য এসে হাজির। বৌদি তার কানের দুল পর্যন্ত খুলে দিতে বাধ্য হয়। তিনজন অস্ত্রধারী মানুষের কাছে তিনজন অস্ত্রহীন মানুষ অসহায়। কত্ত অসহায়!

ঘটনাটি শুনে কষ্ট পেলাম। যাদের আচরনে প্রাগৈতিহাসিক মনোভাব নেই তারা ব্যতীত সবাই কষ্ট পাওয়ার কথা। ছোট্ট কাল থেকে শুনে আসছি আশুগঞ্জ নাকি শিক্ষিত ভদ্র মানুষের এলাকা। অনেকে বলতে পারেন যেখানে হযরত মোহাম্মদ থাকেন সেখানে আবু জাহেল থাকতেই পারে, যেখানে গাছ থাকে সেখানে আগাছা থাকা অস্বাভাবিক কিছু না। এমন করে বলে ভাষার দায় এড়ানো যায় কিন্তু হৃদয়। হৃদয়ের থার্মোমিটার সত্যকে আরও বেশি সত্য বলে জানে-- শুধিতে হইবে ঋন।

বাস থেকে আশুগঞ্জ নামলাম। খুব সকাল। হালকা হালকা কুয়াশা। আড়াইসিধা যাবো। রিকসা ভাড়া চল্লিশ টাকা। আমার সাথে মানিব্যাগ, মোবাইল, ব্যাগ। ব্যাগে কিছু বই আর একটি  ইতালিয়ান ব্র্যান্ডের রেবলিন লোশন। ব্যাগটি উপহার হিসাবে পাওয়া। মেইড ইন ফ্রান্স। ব্যাগটির মূল্য পঞ্চাশ ইউরো। আমার কাছে ব্যাগটির মূল্য পঞ্চাশ কোটি ইউরো কিংবা তারচেয়ে বেশি। রিকসা চলছে। ভয়ার্ত আমি। আলম নগরের দুই রাস্তার মোড় অতিক্রম করতেই পেছনে থেকে ডাক আসে-- দাঁড়া, এই দাঁড়া। রিকসা স্টপ।

আমার আপতা আরশে মহল্লায় চলে গ্যাছে। ছুড়ি চকচকে করছে। আমার ডানে বায়ে দুইজন, রিকসা চালকের সামনে একজন। প্রথমে মোবাইল দিলাম, তারপর মানিব্যাগ। তারপর ব্যাগটি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ব্যাগটি দেয়ার আগেই ডাকাত মোবাইল মানিব্যাগ রেখে এক দৌঁড়। বিশাল এক দৌঁড়। কিছুক্ষনের মধ্যে আমার চোখের সামনে থেকে তারা উধাও।

কেন? কেন? কেন?

আমি শুধু বলেছি ভাই ব্যাগটি নাও সমস্যা নেই কিন্তু ব্যাগের ভেতরের পিস্তলটা দিয়ে যাও ....

পিস্তল শব্দটি শুনতে দেরী হলেও দৌড়ঝাঁপ দিতে দেরী হয় নাই। ব্যাগের ভেতরের ইতালিয়ান ব্রান্ডের লোশনটিকে অনেকবার ধন্যবাদ দিলাম, ধন্যবাদ দিলাম আমার বলা মিথ্যা কথাটিকে।

আসলেই কখনো সখনো মিথ্যা সত্যের চেয়েও সুন্দর। 

নদীটির

দেখতে যেতাম একটি নদী, নদীতে শিউলি ফুলের ওভারব্রিজ থাকতো যদি 

বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

গালি

সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে যে মানুষটি পা ভেঙে ফেললো তার চোখের জল আমরা দেখি না, আমরা দেখি বার্নিশ করা চোখের নিচে কোনো কালো দাগ পড়ল কিনা, যার ফ্রিজভর্তি খাবার তার জন্য গ্রামের পুকুর থেকে কোনো মাছ আনা যায় কিনা, বোবা কৃষক কাঁদতে জানে না, তাঁদের কান্না কেউ কোনোদিন শুনতেও চায় না, মানবতার টুপি পড়ে তারা সিমিনার করে, মানুষের মানুষ নামে পুরষ্কার সাজায় ঘরে বাইরে, সুন্দর সুন্দর বক্তৃতা দেয় মাইকের সামনে, তারা ছিল সেই কাল থাকে, তারা থাকবে বলেই উত্তরসূরীর পসরা সাজায় থরে বিথরে 

রং

চোখ বুজলে মনের ভেতর একখান আকাশ দেখি কিন্তু কোনো পাখি দেখি না, মনের ভেতর একটি বিশাল সমুদ্র দেখি কিন্তু কোনো মাছ দেখি না।

এতো রঙ আসে কোথা থেকে?

মনের ভেতর তো কোনো রঙের চাষ হয় না। মানুষ তো মানুষ না-- রঙের ডিব্বা। 

স.

প্রভুর ক্ষমতার নাম দয়া 

মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

থামিয়ে

মৃত্যুর মতো চলে যায় প্রিয়তমা ট্রেন
বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে দেখি গতকাল পুরসুর সুপর্না লেন
কাক উড়ে গেলে যতটুকু কালো ছায়া নিচে থাকে তাও রাখে না সে
চলে যায়
আবার আসে
পুনরায় যায়
চিহ্নটুকু থেকে যায় লাল শালুকের দানার মতো বেদনায়
লাল হতে হতে একদিন তা নীল হয়ে যায়
নীলের ভেতর লোকোমাস্টার হয়ে দেখি সময়টা কেবল সিগন্যালের
এই থামো
এই চলো
থামতে থামতে চলতে চলতে নরম সন্ধ্যা নামে, বাঁশপাতার ফাঁক দিয়ে অনেক প্রাচীন এক মাগরিব দেখা যায় 

চিল

গরীবের এক চোখে ক্ষুধা, অন্য চোখে যন্ত্রনা,গরীবের মুখে তাই চিৎকার  

রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

ভ্র

সরাইল কুকুরের জন্য বিখ্যাত। সরাইল্লা কুকুর একটি গালি। সরাইলের পাশের গ্রাম চুন্টা। আমরা চুন্টা গ্রাম আবিষ্কারে জন্য বের হয়েছি। কিন্তু যে চুন্টা গ্রামের উদ্দেশে আমরা বের হয়েছি তা এখানে নেই-- মানুষ আছে, জঙ্গল নেই। মানুষের সাথে জঙ্গল না থাকলে আমাদের শুটিং ক্যামেরা চলবে না।

চুন্টা গ্রামের খাবারদোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম সে সুন্নি কিনা। সে জবাব দেয় যে সে ওহাবী। মিস্টিদোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি সুন্নি না ওয়াহাবী। ওমা, অনায়াসে বলে দিলো যে সে ওহাবী। আড়াইসিধা গ্রামে কেউ যদি এমন অনায়াসে ওহাবী বলে নিজের অবস্থান নির্ধারন করে আমি নিশ্চিত তার শরীর হাসপাতালে যাবে অথবা তার জন্য আড়চোখ বাধ্যতামূলকভাবে নির্ধারিত হবে। পরে জানতে পারি মিস্টিদোকানদার হিন্দু।

আমরা রিকসা করে সরাইল গ্রামে চলে আসি। সাগরদিঘীকে দুই বছর আগে যত বড় মনে হয়েছে এখন কিন্তু তত বড় মনে হয়নি। আমার চোখ বড় হয়ে গেছে নাকি সাগরদীঘি ছোট হয়ে গ্যাছে তা তদন্তের বিষয়। সাগরদীঘির পাশেই মসজিদ, মসজিদের পাশে মাজার, মাজারে হাজার বছরের পুরাতন বাবা ঘুমিয়ে আছে।

মসজিদের নির্মান ইতিহাসও কেউ বলতে পারে না। মাজারে যে আম্মা চাচিরা কুরআন আবৃত্তি করতে আসেন তারাও জানে না। আসলে ইতিহাসের দিকে আমাদের নজর খুবই কম, আমাদের নজর কেবল হাজার বছরের অদেখা বাবার দয়ার দিকে। 

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

বেশ

ভেতরে ভেতরে আমরা সবাই কমবেশি বেশ্যা, বাইরে বাইরে শতভাগ মাওলা আল্লামা 

নিভে যাওয়া

প্রয়োজনের সংসারে মানুষ আর কয়জন আছে
প্রয়োজন মতো সবই প্রয়োজন আগে পিছে
চুপ করে বসে আছে যারা তারা জেনে যায় অবশেষে স্রোতের ধারা
মানুষের কালে ডাকু পাখি ডাহে পাতার ফাঁকে ফাঁকে
নীরব এক সাপ রাস্তার পাশে বিষদাঁত গুনে
জীবন এমনই সকাল দুপুর রাতের মতো-- দেখা যায় আবার নিভে যায়

ভালো হয়ে যাও রেজা সময় আছে, দেখবে আসমান তালে তালে নাচে

ভালো হয়ে যাওয়া কাকে বলে আজও জানি না, মন্দের ঘরে তালাচাবি দিলে পূন্যের বাজারে লাগবে আগুন
চোখের ভেতর নেমে আসে চোখ, ঘুমের ভেতর ঘুম

সবাই দেখে চোখের নিচে, হৃদয়ে কানপাতা দোকান বদল হয়েছে বহু আগে
জানালার পর্দা বাতাস থাকলেও নড়ে, না থাকলেও নড়ে 

মঞ্চ

আবৃত্তি মানে দৃশ্যকে কন্ঠে তুলে ধরা, নৃত্য মানে দৃশ্যকে অঙ্গে তুলে ধরা, কন্ঠ এবং অঙ্গ যেখানে একসাথে খেলা করে সেটাই মঞ্চ।

মঞ্চ মানে নিজেকে দেখানো না, নিজেকে দেখার জায়গা মঞ্চ।

মঞ্চে যাওয়ার আগে এক হাজার ভাবা আবশ্যক। কারন নিজেকে দেখার আনন্দ যেমন আছে তেমনি যন্ত্রনাও অধিক। নিজেকে দেখেই মুসা নবী অজ্ঞান হয়েছিলেন, মুনসুর হাল্লাজ হয়েছিলেন পাগল, মজনু হয়েছিল উন্মাদ।

বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬

একদিন তুমি নারী হয়ে যাবে

একদিন তুমি নারী হয়ে যাবে, এখন যতটুকু নারী আছো তার চেয়ে অধিক
আমি শিশু হয়ে, এখন যতটুকু আছি তার চেয়ে অধিক ক্রিকেট খেলবো মাঠে ঘাটে

তোমার উঠোনে নৃত্য করবে আমার শৈশব
তোমার জানালার কাঁচ ভাঙবে আমার বল

খুব ভয়ে ভয়ে বল আনতে যাবো
ঘরের ভেতর থেকে দুষ্টের দল দুষ্টের দল বলে বলে জানালার দিকে আসতে থাকবে তুমি

আমার হাতে ব্যাট আর চোখে ভয়
তোমার চোখে আরও পুরাতন একটি চশমা, ঠোঁটে অনেক দিন আগের একটি কম্পন

মুখোমুখি তুমি আর আমি
মুখোমুখি যৌবন রাতের কিছু রোদ, কিছু তাপ

বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬

আলোর

এখন আমি আলোতে লুকাই
সামনে রক্ত পেছনে দায়
তুমি এলে তুমিই বললে যাই
স্বপ্নভাজা হৃদয় আমার কার আকাশে উড়াই 

ঝা

মরিচ হয়তো জানে না তার মূল্যায়ন ঝালে 

ঘুম

এখন দেশে প্রচুর প্রজাপতি, ফসল ভালো হবে, আবার শীতকাল, ফসল তো ভালো হতেই হবে, জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি অবশ্যই গ্রহন করতে হবে নতুবা জনসংখ্যা আরও বেড়ে যাবে, শীতকালে কিন্তু প্রসাধনী নষ্ট হয় না, সুতরাং পেটের পীড়া হইতে সাবধান, মুরুব্বীরা কইতেন বাল্বের আলোতে কাপড় না কিনতে 

পাটশাক

পাটশাক আমার খুবই প্রিয়। পাটশাকে আমার সবচেয়ে অপ্রিয় বিচ্ছুর জন্ম। পাটশাকে বিচ্ছুর জন্ম বলে বিচ্ছুকে আমি আমার পছন্দের তালিকায় নিতে পারি না। 

মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬

প্র

প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেলে তারা মাছ কিংবা সাপ হয়ে যায় 

সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৬

দিতে চাইলাম বড়শি, নিতে চাইলে মাছ  

কাফ

পৃথিবীর গার্ডিয়ান বিপ্লবী, বিপ্লবীদের দীর্ঘশ্বাসে থাকে মানুষ 

রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬

শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

অচল

পোষাকের ভীড়ে অচেনা অনেকজন 

সৌ

নাকের ভেতর মরা মানুষের শব্দ শুনতে পাই 

যায়

ঢাকা শহর ইনটেনসিভ কেয়ারে আছে, যেকোন সময় কোমায় চলে যেতে পারে

সিয়াম

প্রত্যেক ইবাদত ভাই ভাই। প্রত্যেক ইবাদত জলের মতো যৌথকোষ। ইবাদত মানে নিজের প্রতি সচেতন থাকা। জলের কোনো অংশে ঢিল মারলে যেমন জলকোষে ঢেউ লাগে তেমনি কোনো ইবাদতে মনোনিবেশ করলে ইবাদতকোষে ঢেউ লাগে।

সালাতে সিয়াম, যাকাত, হজ্ব রয়েছে। সালাত বান্দার সাথে আল্লার সম্পর্ক যা হজ্বের নামান্তর, সালাতে শরীরের যাকাত দেয়া হয়ে যায়, সালাত একপ্রকার সিয়াম কারন সরিষা পরিমান খাবারও সালাতরত অবস্থায় খাওয়া যায় না।

ইসলামে সালাত কেন?

সালাতের উদ্দেশ্য মানুষকে মানুষমুখী করা, উগ্রতা থেকে মানসিকতাকে হেফাজত করা।

কুরানে আছে তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করেছি, তোমাদের আগেও ফরজ করা হয়েছিল যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।

আলোচ্য বিষয় যেন তাকওয়া অর্জন করতে পারো। মানে সিয়ামের উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন।

তাকওয়া হল মানসিকতার স্তর। মানসিকতা মানুষমুখী হলে আইনের শাষনের প্রয়োজন নেই যেখানে প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেক মানুষের কল্যানের চিন্তা করবে। আর ইবাদতের অর্থই হল মানসিক স্টেশন তৈরি করা, মানুষকে আরও আরও মানবিক করে তুলা-- পাঞ্জাবি টুপি বোরখা ধর্ম না, ধর্ম এক বোধগত চর্চার নাম, মতবাদগত আচরনের নাম। 

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

পছন্দের

মানুষের পছন্দবোধ দিয়ে উপলব্ধি করি মানুষের নদী যেখান থেকে সে মাছ ধরে, জল আনে কিংবা যেখানে মানুষ স্নান করে। মানুষের অপছন্দবোধ থেকে অনুধাবন করি মানুষের সাগর যেখান থেকে তার উৎপত্তি। 

রাতে

ঘর থেকে বের হলেই রাস্তা
রাস্তাকে ভর করে নেমে আসে সকাল-দুপুর সন্ধ্যা রাতের মহৎ অন্ধকার

রাজনগর থেকে শান্তিনিকেতন,শান্তিনিকেতন থেকে যাদবপুর-- সবকিছুই রাস্তার হিসাব
লিলিথ নামে তোমার সাথে রাস্তার জের ধরেই দেখা, কথা বলা, কাছে আসা, শুন্যস্থানে অনুভূতির চাষ করা

আবার সরল রাস্তা নামে কেউ কেউ করে রাজনীতি
গাছের তলে বসে রাস্তা গুনে সাধক
রাস্তার কথা বলে অফিসার সাজায় কর্পোরেট হাউজ,শিবলিঙ্গে নারী দেয় পূজা

রাস্তা পেল না বলে বাউল অসহায়
রাস্তার শরীরে পা দিয়ে ছাতা পড়া দেহে নামে আলতা প্রলেপ, অরেঞ্জ চ্যাপষ্টিক

আর রাস্তার?

রাস্তার সেই সুখী মানুষটির মতো ঘর নেই, বাড়ি নেই, অফিস-আদালত নেই, গতর ঢাকার মতো ভালো কেন, একটা ছেঁড়া কাপড়ও নেই 

বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬

প্রেমের

জনম দুঃখী প্রকৃতিকে দেখতে খুব ভালো লাগে। কারন মাইনাসে মাইনাসে প্লাস। আনন্দের কোনো ঘর বাড়ি নাই, দুঃখের বসত ভিটা আছে। কুকুরের কোনো দুঃখ আছে বলে আমার মনে হয় না। কুকুর প্রভুকে খুব তেল দিতে পারে। তেল খেয়েও প্রভু মাঝেমাঝে রাগের ভান করে, আসলে প্রভু কুকুরের প্রতি বিশেষ সন্তুষ্ট থাকে।

আজকে হলের সামনে একটি নারী কুকুর ও একটি পুরুষ কুকুর দেখলাম। তারা বেশ আনন্দে আছে। বিবাহ ছাড়া তারা রাত্রিযাপন করতে পারে।  তারা আনন্দে থাকবে না তো মানুষ আনন্দে থাকবে?

বাবা কুকুরের কাজ কেবল বীর্য দান করা, মা কুকুরের কাজ কেবল একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাচ্চাকে দেখাশোনা করা, তারপর প্রত্যেকের নিজস্ব জৈবিক জীবন।

কুকুর দুটি অনেকক্ষন ধরে প্রেম খেলায় মত্ত। কুকুর ফেইসবুকের ইনবক্সে প্রেম করে না, তাদের প্রেম সরাসরি শারীরিক। কুকুর পরিবারে পরকীয়া প্রেম বলে কোনো কথা নেই, প্রত্যেক প্রেম তাদের জীবনে স্বকীয়া প্রেম।

অবাক হলাম একটি জায়গায়। এরা এতক্ষন ধরে প্রেম করছে কিন্তু বীর্যপাতের দিকে কোনো বিশেষ নজর নেই। জাস্ট অর্গাজম প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত। আমি নিশ্চিত কুকুর দুটি বাউল কুকুর হবে যারা কাম সাধনায় ব্যস্ত এবং যাদের জীবনে বীর্যপাত প্রান হত্যা করার মতো অপরাধ। অবশ্যই আধুনিক বাউল কনডম ব্যবহার করে।

একটা সময় কুকুর দুটি একটি পোকা শিকার করে আনে। পোকাকে উলট পালট করে দেখা তাদের কাজ হয়ে পড়ে। পুরুষ কুকুরটি পোকাটি নিয়ে খেলছে দুলছে, আবার রানীর সাথে শীতের উষ্ণ আরামও শেয়ার করছে।

রাত গভীর হতে থাকে, তাদের প্রেমও গভীর হতে থাকে। তখন গোটা পৃথিবীই তাদের। এমন সময় যদি কোনো মানুষকে চোখের সামনে দেখে তখন তাদের রেগে যাওয়া স্বাভাবিক। তাদের কথা হলো দিনটি মানুষের আর রাত তাদের।

জিয়া হলের ভেতর যেখানে হাসনাহেনা ফুল গাছটি সেখানেই এখন তারা দাঁড়িয়ে আছে। জানি শব্দোচ্চতা কুকুরকে বিশেষভাবে ভাবায়। কিন্তু ফুলের গন্ধও কেন তাদের ডাকবে?

না, গন্ধে তারা ফুলের কাছে আসেনি। ফুল গাছের নিচে কিছু গর্ত, গর্তের নড়াচড়া দেখেই তারা এখানে কিছু স্থির দৃষ্টি রেখেছে।

হাসনাহেনা ফুলগাছে সাপ আসে। জিয়া হলের ভেতর এতো কঠিন বেষ্টনী ভেদ করে এমন জনপদক্ষেপের জায়গায় সাপ আসতে পারে বিশ্বাস করতে পারতাম না যদি না গাছের নিচে গর্তগুলো দেখতাম। ইচ্ছা ছিল বলেই কঠিন বেষ্টনী ভেদ করে সাপ লখিন্দরের বাসরঘরে ঢুকে, সাপের ইচ্ছা সত্যিই বাস্তবের উপরে বাস্তব।

প্রেমিক সাপের চেয়েও প্রত্যয়ী, প্রেমিক সাপের চেয়েও গভীর, প্রেমিক তোমার ছায়ার নিচে অনেক গর্ত করে রাখবে, জাস্ট তোমার গন্ধে কিছুক্ষন স্নান করবার জন্যে, তুমি কোনোদিনই জানবে না, কোনোদিনই জানতে পারবে না। 

চো

চোখের এখন খুব সকাল। একটু পরে পৃথিবীর ঘুম ভাঙবে, সরব হবে ইলেকট্রনিক বাজার 

বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬

মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬

আকাশে

রোজ আকাশের ঠিকানায় চিঠি আসে, আমারও যে ঠিকানা আছে জানে না সে, সে জানে কিন্তু আমার ঠিকানার চেয়ে আকাশের ঠিকানা তার কাছে অনেক আস্থাশীল, অনেক অসীম 

শান্তির

আনন্দকে শান্তিদায়ক বলি না, অনেক আনন্দ রাতে ঘুমাতে দেয় না 

আসা

ফিরে আসা রাত জানে আলোর কান্দন 

সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬

পোস্ট

লেজ নাড়ানো কুকুরের স্বভাব, চোখ এবং মনের বড়ই অভাব 

হাই

আমি অন্ধ
বন্ধ কেন তোমার দোয়ার
নেমে আসো প্রিয় আমার
মনে রেখে মন বলি কিছু কথা
এখন গভীর রাত
সূর্য ওঠার আগে যতসব কালিমা নিপাত যাক
হৃদয়ের চোখে একবার তোমায় যেন দেখি
ভালোবাসার মুখে তোমায় যেন ডাকি
কথা আর কাজের ফাঁকে তোমারে যেন খুঁজি
পৃথিবীর কোটি খেলায় মানুষ জানে কয়েকটা
বেদনা গভীর হলেই শান্তির ভাঁজ
রহস্যের ভাঁজ রেখে দাও অতীতের কোলাহলে
এখন থেকে শুরু হোক হৃদয়মাখা প্রেমের কাজ 

আমি.

তাদের কাছে আমি শব্দটি কেবল পা থেকে মাথা পর্যন্ত। অথচ আমরা ( মা বাবা) থেকে আমির জন্ম, আমরার মধ্যে (সমাজ) আমি লালিত। কোনো কারনে আমরা থেকে আমি আলাদা হয়ে গেলে সেই আমিকে আর সুস্থ বলা যায় না। 

নষ্ট

নষ্ট হচ্ছে ঘর
   নষ্ট হচ্ছে বাড়ি
     নষ্ট হচ্ছে মপর্না সেন
       নষ্ট হচ্ছে নারী
চেপে আছে মন
মৌমাছি ভনভন
নষ্ট হচ্ছে প্রিয় হাসি
     নষ্ট হচ্ছে রাখাল বাঁশি
       নষ্ট হচ্ছে অফিসার
          নষ্ট হচ্ছে টিচার
           নষ্ট হচ্ছে গতকাল
             নষ্ট হচ্ছে আগামীকাল
                  নষ্ট হচ্ছে আজ
                       নষ্ট তাদের সাজ
নষ্ট হচ্ছে অভ্যাস
নষ্ট হচ্ছে ঘুমের রাত
নষ্ট হচ্ছে অনেক কিছু
আকাশ পাতাল উঁচুনিচু
নষ্ট হচ্ছে মায়ের কুলে জন্ম নেয়া শিশুটিটু
নষ্ট হচ্ছে ঘরের চাবি আজন্ম এক সত্য যীশু

রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৬

মিলে

মানুষ তার কষ্টের সমান বড়, মানুষ তার আনন্দের হমান ছোট 

ইট

শ্রমিক বানায় ইট। ইট দিয়ে তৈরি হয় মন্দির মসজিদ। ইটের কোনো ধর্ম নেই। অথচ ইটের শরীরেও লেপে দেয়া হয় ধর্মের তকমা। তারা মন্দির মসজিদ ভাঙে। না। তারা শ্রমিকের রক্ত জলে ভাসায়!

শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬

বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬

মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৬

চট্রগ্রাম

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইবার আসলাম। তিন বছর আগে এসেছিলাম ছোট বোনকে ভর্তি করানোর জন্য, আবার এইবার আসলাম আমাদের সবার ছোট বোনকে ভর্তি করানোর জন্য। আগে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আমার ধারনা ছিল গুড বেটার বেস্ট জাতীয় স্কেলে। এখন সিদ্ধানে অবস্থান নিয়ে কিছু কথা বলা যেতেই পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জনের জায়গা না, জ্ঞান চর্চার জায়গা। মানুষ জ্ঞান অর্জন করে মানুষের কাছ থেকে, তার পারিপার্শ্বিকতার জায়গা থেকে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মানুষ কখনো জ্ঞান অর্জন করতে পারে না। অর্থাৎ জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি পারিবারিক বলয়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পারিবারিক বলয়ের এক জীবন্ত ব্লাকহোল-- এখানে সবাই আসে বিচ্ছিন্ন মানসিকতা নিয়ে কিন্তু এক পারিবারিক মানসিকতা নিয়ে বের হয়ে যায়। চলনে বলনে এমন যৌথ খামার পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল যদিও বিপুলা এই পৃথিবীর কতটুকু আর জানি।

পাহাড় থেকে জুদা হওয়া এক সৌন্দর্য কন্যার নাম চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। পাহাড়ি অতিথি মাঝেমাঝে হৃদয়ের টানে বেড়াতে আসে লোকালয়ে। তাই কোনো  সকালে আপনি হয়তো মর্নিংভ্রমনে হাঁটতে বের হলেন, দেখবেন হরিন এসে আপনার সামনে কিছু গোপন দৃষ্টি বিনিময় করছে। চিতা বাঘও নেমে আসে। তবে রাতের আড়ালে ডাকাতের মতো, আবার সিদুঁরকাটা চোরের মতো চলেও যায়। নাগও কিন্তু নাগিনীকে নিয়ে হানিমুন করতে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে-- ছাত্ররা তাদের বিশেষ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে, তবে অধিকাংশ সময় নাগনাগিনী মনুষ্যআপ্যায়নের কোনো সুযোগই গ্রহন করে না।

টিব্যাগের চা এখানে পাইনি। কোমল পানীয় এখানকার ছাত্ররা তেমন পান করে না! বিটিভির রুটিনমাফিক প্রোগ্রাম এখনো এখানকার পাহাড়ি মাটির ঘরে একমাত্র চ্যানেল। কোথাও কোথাও অবশ্যই ডিশ চ্যানেলের আধিক্য দেখা যায়। ফাস্টফুড দোকানের আধিক্য নেই। জোবরা গ্রামের সিএনজি চালক ওসমান অবশ্যই ইংরেজিতে কথা বলে নিজেকে আন্তর্জাতিক মানুষ হিসাবে প্রমান করতে চায়। তাহলে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বারী ভাই? বারী ভাই তো বারী ভাই!

বারী অর্থ পবিত্র, বিরত থাকা, সব কিছুর উর্ধ্বে। বারী ভাই অন্তত বিয়ে করা থেকে বিরত থেকে নিজের নামের যথার্থ গুরুত্ব রক্ষা করেছে। তার নামে প্রীতিলতা হলের পাশে হতাশার মোড় তৈরি হয়েছে। প্রেমিকা না পাওয়ার কারনে বিনয় মজুমদার চলে গেলেন গ্রামে, হেলাল হাফিজ বসবাস করতে লাগলেন আবাসিক হোটেলে আর বারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। বারী ভাই প্রীতিলতা হলের সামনে যে জায়গাটিতে দীর্ঘশ্বাস উড়ায় সেই জায়গাটি আজকে
 হতাশার মোড় নামে পরিচিত। মিস্টার বারী কিন্তু সত্যিই একজন জ্ঞানী মানুষ, কথায় কথায় ইংরেজি শব্দ বলে নিজেকে আন্তর্জাতিক মানুষ প্রমান করতে চায় না।

জিরো পয়েন্ট থেকে ফরেস্টি বিভাগের দিকে হাঁটতে লাগলাম। আমার সাথে শাওন, বয়াতি, রুবেল। শাওন লেখক মানুষ। চেহারায় মাটির গন্ধ। বয়াতি গায়ক মানুষ। কন্ঠে জীবনচেতনা, মর্মে প্রেম। রুবেল ছোট ভাই। পাহাড়ি রাস্তা পাহাড়ি কন্যার মতো হৃদয়ে প্রেম তৈরি করে, দৃষ্টিতে নিয়ে আসে ওঁম শান্তি।

রাত তখন এগারো। কবিতা স্মরনী রাস্তায় যেতেই মানুষ দেয়া আলো অফ, নেমে আসে প্রকৃতির শাসন। পাহাড় থেকে গাছের ফাঁকে ফাঁকে নেমে আসছে চমৎকার মিষ্টি অন্ধকার, পাহাড়ি অন্ধকার জীবনে প্রথমবারের মতো দেখা, অব্যক্ত ভালো লাগা হৃদয়ের কুরছিতে জমা হতে থাকে-- বাসর রাতে বউকে দেখার মতো পাহাড়ি অন্ধকারকে লাজুক চোখে খুড়ে খুড়ে দেখতে হয়। তারপর চলে পাহাড়ের অনেক ভেতরে কোনও এক গোপন আস্তানায় বাঁশি আর গানের একটানা সুর।
আজ চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছে চলে  আসছে। সরকার আমিন ভাই ফোন করে জানতে চাইলেন আমি কোথায়। তারপর জানতে চাইলেন চট্রগ্রামে চাঁদ আছে কিনা। বললাম খুব আছে, সুন্দর করে আছে, ঝাউফুলের ফাঁকে ফাঁকে আছে।

ছিনাল জোছনা গতরে মেখে আমরা ঝুপড়ি থেকে শাটল ট্রেনের উদ্দেশে হাঁটছি। আমরা বলতে বয়াতি, পাথর, দীপান্বিতা, শাওন, অনিক, সুমন, রুবেল আর আমি এমরানুর রেজা। পাথর চমৎকার প্রানশক্তির অধিকারী এক নারী, সদানন্দময়ী, উচ্ছ্বাসে সাইডুলি। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সে প্রথম কোনো নারী যে আঞ্চলিক সংগঠনের সভাপতি। চরম আড্ডাবাজ। গতরের কালারে অবশ্যই আমি আর সে কোরাম করতে পারি। তবে আমরা কোরামচর্চা করতে রাজি না। আমরা মনে করি মানুষ শেষ পর্যন্ত মানুষের কাছে বেঁচে থাকে, আবার মানুষের কাছ থেকেই মানুষের মৃত্যু ঘটে। তাই আমাদের কোরামের নাম হৃদয়, মনুষ্যহৃদয়।

দীপান্বিতা ব্রাক্ষ্মনবাড়ীয়ার মেয়ে। প্রান থেকে হাসে। অনিকের পান চিবানোর মধ্যে একটি রসিক রসিক ভাব আছে, তার দৃষ্টিতে কোথায় যেন একখান ঢাকনা আছে, সহজে পাঠ করা যায় না। সুমনের হৃদয়স্পর্শী একটি সবুজ মাঠ আছে যেখানে কোনো এক ভোরে দৃষ্টি বিনিয়োগ করার কথা।

আমরা হাঁটছি। বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির সামনে আসতে কোনো এক ছলাৎছলাৎ শব্দের দিকে আমার কান যায়। চমৎকার সুন্দর মিষ্টি এক নারী যেন চাঁদ দিয়ে বানানো এক বিশেষ অবয়ব। চাঁদের দিকে তাকাব, না মেয়েটির দিকে তাকাব বুঝতে পারছি না। আমাকে বুঝতে হবে, কারন আমার হাতে বেশি সময় নেই, কারন আমাকে আজকে বাড়ি যেতে হবে, কারন আমাকে শাটল ট্রেন ধরতে হবে।

শাটল ট্রেন একটি বিনোদন পার্কের নাম। শহরে যে ছাত্ররা থাকে তারা এই পার্কে করে ক্লাস করার জন্য আসে। লাইভ কনসার্ট এই পার্কের নিয়মিত উপন্যাস। এখানে সিনেমার ব্যবস্থাও আছে, আবার রেটিনার মতো বস্তুকে উল্টো করে দেখার প্রবনতাও রয়েছে-- মস্তিষ্ক একসময় তার মতো করে উল্টো সাজেশনকে সোজাও করে নেয়। শাটল ট্রেনে যে লাইভ কনসার্ট চলে সেটা আসলে প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। ফাইনাল রাউন্ড চলে ঝুপড়িতে এসে।

ঝুপড়ি অনেকটাই চায়ের দোকান। ঝুপড়ির টেবিল মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট। চায়ের চামচ, গ্লাসও সঙ্গীতানুষ্ঠানে সহযোগিতা করার জন্য আসে। ঝুপড়ি কেন্দ্রিক গানের যে আসর সত্যিই তা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করার মতো, তারন্য দিয়ে আবেগ খরচ করার মতো।

ট্রেনে উঠে গেলাম। তাদের আন্তরিক চোখগুলো দৃষ্টিসীমানার আড়ালে চলে গেলো। কানে বাজতে থাকে শাওনের কথাটি--

রেজা ভাই, খুব  রুমমুখো হয়ে গিয়েছিলাম, আবার হয়ে যেতে হবে। 

সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬

রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৬

শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৬

সে

মনের জেলখানার নাম প্রেম। প্রেমই পারে মনকে বন্দী করতে। অন্যথায় মন মিশে যেতে চায় দশের সাথে, জলের সাথে। আমার মনও পতেঙ্গার মতো সার্কাস সার্কাস।
মেঘনা মায়ের ছেলে আমি। বঙ্গোপসাগর  আমার খালাম্মা।

জোয়ারতমা, ঢেউয়ের ভাঁজে আমার নামটি  রাখিও জমা 

শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৬

বুঝতে

মানুষের তো বিষদাঁত নেই, মানুষের আছে বিষকথা। বিষদাঁত সরাসরি মেরে ফেলে আর বিষকথা মৃত্যুর যন্ত্রনা দেয়। 

মেনে

গাছের একটি ডাল সবার থেকে আলাদা হয়ে আকাশের দিকে যাত্রা করেছে। আকাশের দিকে যাত্রা করলেও সবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া সমাজমুখী পাপ। সবাই মিলে পাপের উৎসব করলেও নাকি পুন্য।
আকাশমুখী ডালের উপর দিয়ে পাখি উড়ে গেলো। পাখির ছায়া ডালের উপরে নেমে আসার কথা। আসেনি। কারন ছায়া আর ডালের মাঝে বর্ডারসীমানা  হয়ে থাকলে তুমি এবং তুমি। 

যাও

চিলের ঠোঁটে মোরগীর ছাও, কোকিল তুমি গান গেয়ে যাও 

বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৬

সাজে.

সৌন্দর্য পড়ে আছে নক্ষত্র পতনের মতো। হাসিটা ঠিক হাসি নয়, একগুচ্ছ পাহাড়ি অন্ধকার, চায়ের কাপে নেমে আসা আলুতালু দৃষ্টির ক্যাপ-- যারা আছে তারা থাকে, যারা গ্যাছে তারাও আছে-- হৃদয়ের কোনো কৃপনতা নেই, হৃদয় অদেখার মতো অনেক দৃশ্য, অজানার মতো অসীম। হাসি আর মৌনতার কাছে মুরিদ হয়েছি বারংবার-- বলতে চাই ওয়া ক্যান আছো-- জীবন একটাই-- অচেনা বলে কোনো কথা নেই -- চলে আসো যেমন করে আসার ইচ্ছাটা থাকে। 

বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৬

যেন

ব্যস্ততার কুয়াশা ফাঁকি দিয়ে বেদনার সূর্য উঁকি দিতে চায়, ঠোঁটভরা অভিমান নিয়ে যারা চলে গ্যাছে কাশফুল মৌনতায় তারা তো এখনো আছে হৃদয়ের খুব কাছে
রোজ বৃষ্টি নামে রিমঝিম
                  চাঁদও আসে রাতের ডানায়
আকাশটা ঠিক আগের মতো নাই 

মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬

সে যেন

ট্রেনে বসে আছি। স্নিগ্ধা কামড়ায়। প্রথমবারের মতো কোনো ট্রেনকোচকে বাংলাদেশী বলতে ইচ্ছে করছে না। পুরাই আন্তর্জাতিক একটা ভাব। মানুষগুলোর মধ্যে এখনো আন্তর্জাতিক আচরন আহে নাই।

আমার পেছনের সিটে প্রেমিক আত্মা। তাদের চোখাচোখি হাসাহাসি খাওয়াখাওয়ি বেশ চলছে। মেয়েটি পোশাক সচেতন আর ছেলেটি খাবার সচেতন।ছেলেরা খাবার সচেতন হলে সংসারে অভাব থাকে না, মেয়েরা পোষাক সচেতন হলে সংসারে সৌন্দর্যের জোয়ার নেমে আসে। প্রভু তাদের প্রেমকে দীর্ঘস্থায়ী করো।

আমার প্রভু আমার লগে বসবাস করে। আমার প্রভু আমার কাছে এক উপলব্ধির নাম। তাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য আমাকে মন্দির মসজিদে যেতে হয় না। কুরআনে আছে আল্লা বান্দার ঘারের শাখা রগের চাইতে আরও নিকটে। তাই যারা আল্লারে আসমানে রাখতে পছন্দ করে তাদের জন্য আমার সমবেদনা।

আমার পাশের সিটে বসে আছেন তাবলিগি হুজুর আর তার পরিবার। তাবলিগি হুজুর আয়েসভের ভঙ্গিতে পান খাচ্ছেন। তাবলিগি হুজুরের পেছনের সিটে নাগরিক পুরুষ আর তার পরিবার। নাগরিক পুরুষ চাওমিং খাচ্ছে, তার পরিবারও খাচ্ছে তবে মুখহুফার ফাঁক দিয়ে আস্তে আস্তে।

তাবলিগি হুজুর তার ছেলের নাম রাখলেন রিহান। রিহান অর্থ ডালিম। বেদানা, আনার বা ডালিম এক রকমের ফল। ইংরেজি নাম pomegranate। হিন্দি, উর্দু, ফার্সি ও পশতু ভাষায় একে আনার বলা হয়। কুর্দি ভাষায় 'হিনার' এবং আজারবাইজানি ভাষায় একে 'নার' বলা হয়। সংস্কৃত এবং নেপালি ভাষায় বলা হয় 'দারিম'। এর আদি নিবাস ইরান এবং ইরাক। ককেশাস অঞ্চলে এর চাষ প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। সেখান থেকে তা ভারত উপমহাদেশে বিস্তার লাভ করেছে।

আমগো আড়াইসিধার এক বড় ভাইয়ের নাম ডালিম। ভালো বল ও ব্যাট করতো। তার বোলিং ইকোনোমি যথেষ্ট ভালো ছিল। সুতরাং বলতেই পারি আগামী দিনে বাংলার সন্তানদের নাম হবে খেজুর, ফ্রিজ, ট্রেন, মোবাইল।

অনেকদিন পর জানালার ফিক্সড কাঁচ দিয়ে মুক্তা গাছ দেখা হলো। মুক্তা গাছ যেখানে  আছে  সেখানে এখনো পুঁজিবাজার আযান দিয়ে প্রবেশ করতেই পারে নাই। মুক্তা গাছ দিয়ে পিস্তল বানিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ খেলতাম। আহারে, কাকতাড়ুয়া শৈশব আমার! শীতল পাডির উষ্ণ শীতল ছোঁয়া এখনো ডানা মেলে হৃদয়ে হৃদয়ে-- হেতেরে আমরা দিনে দিনে যারগু দুনিয়ায় নিয়ে যাচ্ছি।

মুক্তা নামে যে মেয়েটি আমার আড়াআড়ি বসা সে যথেষ্ট মার্জিত রুচির অধিকারী। পরিধেয় পোষাক দেখে বলাই যেতে পারে মেয়েটি তার ফিগার সম্পর্কে সচেতন। সচেতন শত্রুকেও আমার ভালো লাগে। যদিও আমি কোনো মানুষকেই শত্রু মনে করতে পারি না।

মুক্তা তার ট্যাবলেট কম্পিউটারে শব্দ মুভিটি দেখছে। শব্দ মুভি অথবা শব্দ মুভির মতো কোনো একটি আর্টফিল্মের একটি সংলাপ এখনো আমার কানে লেগে আছে --``পাগলকে আমরা পাগল বলি কেন, তাদের সংখ্যা কম বলেই তো, যদি তাদের সংখ্যা বেশি হতো?

পাগল শব্দের সমার্থক শব্দ বাতুল। বাতুল শব্দ থেকে বাউল শব্দের আগমন বলে অনেকে মনে করেন। আবার অনেকে মনে করেন বায়ু শব্দের সাথে আরও কিছু যোজনে তৈরি হয়েছে বাউল শব্দটি।

বাউল সম্প্রদায় অবশ্যই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখেন। লালন ফকির নিজেও বলেছেন হাওয়ার গতি আগে জানবার জন্যে। আসলেই মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত এই সহজ প্রক্রিয়াটির জন্য বেঁচে আছে।

কে বলে জীবন এতো জটিল?

জীবন অত্যন্ত সহজ সুন্দর সত্য। তাইতো বাউলদের সহজিয়া জীবন। তারা সবকিছু উপর থেকে দেখে। ফলে অনেকের কাছে যা পাহাড় পর্বত নদী নালা তাদের কাছে  তা সমতল ভূমি। তাদের কাছে বর্নপ্রথা গুরুত্বপূর্ন নহে, বর্নচোরা সত্তার আবিষ্কারের জন্য বাউলদের নিরন্তর প্রচেষ্টা।

অক্সিজেন আসার সাথে সাথে ব্যানারে একটি চমচমে বাক্য দেখলাম যেখানে লেখা সবার উপরে দেশ। জানতাম সবার উপরে মানুষ। আরও কত কিছু যে নতুন করে জানতে হবে ভগবানই ভালো জানেন। 

সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬

পানাম

হেমন্তের অলঙ্কার কাশফুল। কার্তিক মাসের শেষ পর্যায়ে হেমন্ত তার অলঙ্কারকে নদীর জলে বিসর্জন দেয়। কাশফুল জলে জলে ভাসতে থাকে। কাশফুলের বিরহে প্রকৃতিতে কান্দন শুরু হয়। কার্তিমায়া কান্দন। একদুই সপ্তাহ ধরে এই কান্দন চলতেই থাকে। এমন সময় ঘর থেকে বের হতে মানা। মাটিবাংলার তখন অন্য রকম সাজ। ঘরে বসে চাল ভাজা খাওয়ার মজাই তখন আলাদা।

কয়েকদিন টানা বৃষ্টির পর মাটিবাংলায় নেমে আসে কুয়াশার উঁকিঝুঁকি। কাশফুল তখন আকাশে উড়ে-- শাদা শাদা কাশফুল। কাশফুল আকাশে উড়বার সাথে সাথে তাদের নাম পরিবর্তন হয়ে বক নামে পরিচয় লাভ করে। বিকালের আকাশে বকের মেলা-- শীতের আগাম বার্তা বকের পাখনার নিচে বসবাস করে।

ছয় ঋতুর দেশ হলেও মূলত দুই ঋতুর সাথে মানুষের সম্পর্ক একটু বেশি-- গ্রীষ্ম ও শীত। শীত আসে আসে এই সময়ে পঙ্খিরাজ খাল কোন নারীর চোখের জল ধারন করে বিকশিয়া রবে বয়ে চলতো জানি না, জানি না পানাম নগরে এই সময়ে কোন প্রজাশত্রু প্রভু সাকির পেয়ালায় মাতাল হয়ে নারীর ঠোঁটনদীতে বাইত যৌবননৌকা।

মেঘনা আর শীতলক্ষ্যাকে মাথায় পায়ে ধারন করে বুকপীঠ হৃষ্টপৃষ্ট করে বড় নগর কিংবা খাস নগর নয়, পানাম নগর। এই নগরে সন্ধ্যা হলে শোনা যেত অলি-কুতুবদের সহজিয়া সামাসুর, মন্দিরের কীর্তন আর বাউলদের বাতাসি কথাসুর।
ছোট্ট ছোট্ট কামরায় এখনো কোমরবিছার আওয়াজ শুনতে পাই, মসলিনের কাপড় পরে রানী প্রায় মহিলাটি পুরুষের সামনে বসে আছে পানের পসরা সাজিয়ে।

আর আমি তখন বাতাসের সাথে বন্ধুত্ব করে পৃথিবীতে নেমে আসার পরিকল্পনা করছিলাম। নীলকুঠি হয়তো আমার আগমনের কথা হালকা অনুমান করতে সক্ষম হয়েছিল। সোনাবিবির সাথে দেখা হওয়ার কথা কিন্তু হলো না। সোনাবিবির দীর্ঘশ্বাস জলের শব্দের মতো কানে আসতেছে কেবল। 

শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬

দ্র

দৃষ্টির সীমানা থেকে যত দূরে যাবে ততই কাছে রচনা হবে কালের সীমানা, ইচ্ছামতো দৌঁড়াবে জানি দূরে যেতে পারবে না

জানে

কাতিকমাইয়া বৃষ্টি সাপের মতো সুড়সুড়ি তুলে মনের শরীরে, চোখের প্রান্তিক এলাকায় নেমে আসে ক্লান্তির ভায়া, মায়া তো চামার বাড়ির অনিলের বাবার মতো হাসি মুখে কথা বলা লোক-- শান্তির ঘরে অপরাধী মদের আসর জমে, অলস লোক অযথা শান্তি খোঁজে, অযথা মদের পেয়ালা সাজানোর লোকাগমের কমতি নেই এমন কাতিকমাসা ঘরে-- সাতদিন ধরে কাতিককন্যা নাইওর যাইবো বাপের বাড়ি, পাঁচদিন ধরে ফেরত আইবো তাইনের ঘরে, এখনই সময় পুরাতন গাতা ছেড়ে নতুন গাতায় যৌবন ডুব দেবার, অনিয়মও মাঝেমধ্যে বড় বেশি নিয়মের দাবি রাখে আপনে পরে ঘরে বাইরে 

শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৬

মানে

গাছের সাথে যখন ফলের সম্পর্ক থাকে না তখন সেই ফল প্রানীর কাজে আসে, ফলমাংসের সাথে যখন বীজের সম্পর্ক থাকে না তখন সেই বীজ পৃথিবীর কাজে নামে, বীজের কাছ থেকে যখন বীজমূল আলাদা সংসার করে তখন তা জীবনের কাজে আসে।

মৃত্যু এক জীবনমুখী ভ্রমনের নাম। 

বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬

!

সাবালক পৃথিবী নাবালক মানুষের হাতে 

উপায়

বুঝতে হয়েছিল আমার, বুঝতে হয়েছিল তোমাদের, নদীর বুকেও জমা থাকে বন্য কিছু আবেগ, আলেয়া ঘুড়ির সাথে নাটাই ছেড়েছে গতকাল আজ আর আগামীকালের সম্পর্ক, সুতা আছে আপন সুখে বেশ, নাটাই আছে বিশ্রামে, ঘুড়ি হালি হমানে উড়ে হমানে উড়ে, দূরত্ব সুতার সংসারে একমাত্র মনের, মন তো ভালোই থাকে কাদায় কিংবা জলে 

বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬

সাথে

জীবনডারে ব্যাখ্যা করার আগে মনডারে একবার চোখের জলের সুইমিংপুলে সাঁতার দিয়া আনেন মিয়া  

মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১৬

শাখাওয়াত

আমার লেখকবন্ধু শাখাওয়াত। ইতিমধ্যে সে তিনচারটি বইয়ের পিতা। সে আবার ফোলটাইম রাজনীতিও করে। সে আবার বিসিএসও দিয়ে থাকে। রেজাল্ট ভালো না হলেও তার মন খারাপ হয়। বই মেলা আসলে তার একটি বই বের হওয়া চায়ই চায়। উপন্যাস নামে তার বিগত বই বাজারে এসেছে। এখন গল্প নামে নতুন বই বাজারে আসবে।

তার আসন্ন গল্পের চরিত্রের নাম কোরবান। কোরবান ঢাকা শহরে লেগুনা চালায়। রাবেয়া নামে একটি মেয়েকে একবারের দেখায় ভালোবাসতে শুরু করেছে। কিন্তু রাবেয়া থাকে গ্রামে। কোরবান থাকে শহরে। রাবেয়ার কথা মনে হতেই কোরবান একটি গান ও একটি গজল গাইতে শুরু করে। গানটি হলো : তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই। আর গজলটি হলো : ঐ মদিনার পথে ঐ মদিনার পথে। পথে শব্দটি উচ্চারন করতে না করতে কোরবান চিৎকার করে ওঠে, রাবেয়া রাবেয়া শব্দ তখন কোরবানের সুরে চলে আসে।

রাবেয়া, কোরবানের সাথে আমাকে পরিচয় করাতে শাখাওয়াত দুইতিন ধরে আমার খোঁজ করছে। আমি তো আজাইরা কাজ বেশি করি। তাই প্রয়োজনমতো কাউকেই সময় দিতে পারি না।

আজকে আমিন ভাইয়ের সাথে মেডিটেশন ক্লাসে গিয়েছিলাম। আমিন ভাই ছিলেন আলোচক। আলোচ্য বিষয় মুহূর্তে বাঁচা সংক্রান্ত বিষয়াদি। তিনি চমৎকার আলোচনা করলেন। হলভর্তি শ্রোতা। হলভর্তি পীনপতন নীরবতা। কারো নজর এক মুহূর্তের জন্য অন্য দিকে ছিল না। চাঁদের দিকেও মানুষ এতো মনোযোগ সহকারে দৃষ্টি বিনিয়োগ করে না।

করবে কেন?

চাঁদ তো আর আমিন ভাইয়ের মতো জীবনবাদী কথা বলতে পারে না। যে রিক্সা  দিয়ে আমিন ভাইকে বাসায় রেখে আসলাম সেই রিক্সা করেই  হলে চলে আসি। যেহেতু সকাল সকাল হলে ফিরতে পারছি , ভাবছি শাখাওয়াতকে ফোন দেই। ফোন দিয়ে রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি সে সালাত পড়ছে। সালাতে থেকেই সে আমাকে বলে বসো। আমি একসাথে অবাক এবং স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ার অবশ্যই কারন আছে।

আমার ঠাকুরদা যখন সালাতে মগ্ন থাকতেন তখন ঘরের বাইরে থেকে বুঝতে পারতাম। মালগাড়ির মতো আস্তে আস্তে এক ইউনিক সুরে আয়াত আবৃত্তি করতেন, আর ঘরের ভেতরে গেলে সালাতে থেকেই তিনি জানতে চায়তেন কোনোকিছু।

ধরেন, সালাতে থেকে তার জানতে ইচ্ছা হচ্ছে এখন কয়টা বাজে, যখনই কাউকে চোখের সামনে দেখতো তিনি জিজ্ঞেস করে বসতেন কয়টা বাজে রে। ঠাকুরদার প্রশ্ন শুনে মনে মনে হাসতাম। অবশ্যই আওয়াজ না করে। আওয়াজ করলে আবার জিজ্ঞেস করবে হাসো কেনো।

একদিন ঠাকুরদা ফজরের সালাত পড়ার জন্য মসজিদে গেলেন। সালাত শেষে সবাই হাসতে শুরু করে।

কেন কেন?

কারন ঠাকুরদা ঠাকুরমার শাড়িকে চাদর ভেবে পাঞ্জাবির উপরে পরিধান করে মসজিদে যায়। সাখাওয়াতও যখন কাউবয়ের ক্যাপ পরিধান করে সালাত সম্পূর্ন করার কাজে ব্যস্ত তখন আমার চরম হাসি পাই।

এখন সে কোরবানকে আমার সামনে উপস্থাপন করছে। কোরবানের প্রতি সে বিশাল ক্ষুব্ধ। কোরবান নামক কাল্পনিক চরিত্রটি  শাখাওয়াতের বাস্তব জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাকে লিখতে হচ্ছে নতুবা সে আটদশটি ম্যাথ প্রেকটিস করতে পারতো। তাই শাখাওয়াত প্রতিজ্ঞা করেছে কোরবান চরিত্রটিকে সে ন্যাংটা করে ছাড়বে। এখন সে কীভাবে কোরবানকে ন্যাংটা করবে এই থপথপে পথপরিক্রমা নিয়ে ব্যস্থ, আমিও রুমে চলে আসার জন্য ব্যস্থ হয়ে পড়ি ....

সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৬

সাজে ..

সাম্যবাদী স্লোগানধারী সম্প্রদায়কে সিগারেটের মোড়ক মনে হয় যেখানে লেখা ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর 

রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬

কালা নানা

এই মুহূর্তে আমার কালা মিয়ার কথা মনে পড়ছে। কালা মিয়া মানে কালা নানা। কালা নানা মানে আমাদের স্কুলের দাপ্তরিক কাজের একজন। সে দেখতে নাকি কালো ছিল, তাই তার নাম কালা মিয়া। কিন্তু আমার চোখে এখন তার যে রং ভাসতেছে তা মোটেও কালো নয়, কফি কালারের সাথে মেটে মেটে একটি রং।

প্রতিটি ঘন্টার নীরব স্বাক্ষী ছিল সে। তার দুটি হাত এবং দুটি মুখ ছিল। হাত ও মুখ যখন কারো সমান সমান হয় ব্যক্তিটি তখন বাঁকাপন্থী। বাঁকাপন্থী মানুষ ভালো বা খারাপ এমন কোনো মন্তব্য করতে রাজি না। তবে বলতে পারি ঘটনাকে বাঁকা করে দেখা এবং বলার মধ্যে তাদের সুখ।

এখন আসি কাজের কথায়। স্কুলে  একজন ভদ্র  ছাত্র এবং একজন ভদ্র ছাত্রীকে  পুরষ্কার দেয়া হবে। খেলাধূলা, ভালো ছাত্রের পুরস্কার ততদিনে আমার হাতে চলে আসছে। এখন যদি ভদ্র ছাত্রের পুরষ্কার নিতে পারি তাহলে তো হলোই-- বাংলা সিনেমার নায়ক রুবেলের যে পার্ট আমার গতরে এমন একখান পার্ট নাইম্মা আইবো।

তারপর সব দুষ্টুমির মুখে লাগাম দিলাম। ক্লাস শুরু হবার আগে স্কাউটের নিয়মমাফিক ব্যায়াম করানো হতো, ব্যায়াম  শুরু হবার আগে কোরআন তেলাওয়াত হতো। জনাব তোফাজ্জল স্যার আমাদের স্কাউট টিচার।

রেজা কোথায়?

জ্বি স্যার।

সারির একেবারে পেছনে আমি দাঁড়াতাম। পেছনে দাঁড়ানোর একটি রাজনৈতিক কারন আছে। পেছন থেকে সামনে আসতে আসতে সময় লাগতো তো দুইএক মিনিট। দুইএক মিনিটের পুরো সময়টাই সবার অপেক্ষামন ছিল আমার দিকে। এই বিষয়টি খুব ইনজয় করতাম।


কোরআন তেলাওয়াত শুরু করতাম। আমি প্রথম স্কুলে তেলাওয়াতের পর বাংলা অনুবাদ করতাম। মাঝেমাঝে প্রথমে কোরআন তেলাওয়াত, তারপর তেলাওয়াতকে ইংরেজিতে অনুবাদ, তারপর বাংলা অনুবাদ। আমাদের স্কুলে কোনো বিদেশি ছাত্র বা শিক্ষক ছিল না। তাহলে কেন আমি ইংরেজিতে অনুবাদ করতাম? করার একটাই উদ্দেশ্য ছিল-- নিজেকে জাহির করা-- সবাই জানুক আমি ইংরেজিতে পারদর্শী। জাহির করার পেছনের কারন হলো ভদ্র পুরষ্কার। অর্থাৎ এমনভাবে তৈরি হচ্ছি যেন ভদ্র পুরস্কার আমার দিকে আসতে কোনো বাধাই না থাকে।

আব্বা কোনোদিনই অভিভাবকগিরি দেখানোর জন্য স্কুলে যায় নাই। অথচ তার প্রত্যেক সন্তান স্কুলের মেধাবীদের একজন ছিল। সেদিন হেডস্যার আব্বাকে কেন যেন ডাকলেন। আব্বাকে স্কুলে দেখে আমি রীতিমত বিস্মিত।

কালা নানা আব্বাকে দেখামাত্র আমাকে বলে 'লাক, আজকে তোর নামে বিচার দিমু। আমি তো জানি আমার নামে বিচার দেয়ার কিছু নেই। তারপরও সে হেডস্যারের সামনে আব্বার কাছে আমার সম্পর্কে বিচার দিয়েছিল। কী বিচার দিয়েছিল আব্বা আমাকে কোনোদিন বলেনি। আম্মার কাছ থেকে জানতে পারি আমার নামে কালা মিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ দাখিল হয়েছিল।

তিনচার দিন পর ভদ্র পুরস্কার ঘোষনা করা হয়। ভদ্র পুরষ্কারে আমার নাম নেই! এতো আলোময় সূর্যটা হঠাৎ করে নিবে যায়, রাতের আকাশে অনেক তারা থাকার কথা কিন্তু কোনো তারা নেই, কার্তিক মাসের অনবরত বৃষ্টি আমার হৃদয়ে বয়ে যেতে লাগলো।

বাড়ি গেলে কালা মিয়ার সাথে দেখা হয়। এখন আর সে স্কুলে নেই। তাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। স্কুল থেকে বের করে দেয়ার কারন জানতে চাই। কালা মিয়া কারন জানে না। স্কুলের কথা বললেই তার অধর আর ওষ্ঠের মাঝপথ দিয়ে একটি চিকন দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসে, আমি তখন তাকে একটি মালবরো এডবান্স সিগারেট কিনে দেই। সে তখন আস্তে আস্তে সিগারেট টানে। সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে সাথে তার গরম দীর্ঘশ্বাস আরও দীর্ঘ হতে থাকে 

শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬

পু

মানুষ তার শত্রুকে চিনে না, মানুষ তার বন্ধুকেও চিনে না, মানুষ চিনে তার নিকটতম প্রয়োজনকে, মানুষ শুনে ঠোঁটের কাছের কথা, হৃদয়ের শব্দ আর তারা শুনতে পাই না। পুকুরের পানি পরিবর্তন করা লাগবে।

শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬

কবে

কবিতা ইজ কবিতা, ভালো কিংবা খারাপ বলে কিছু নেই। হয় কবিতা নতুবা কবিতা নয় এমন। ভালো ভগবান, খারাপ ভগবান বলে কিছু নেই। হয় ভগবান নয় অসুর।।

আমার ভগবানের নাম কবিতা, রোজ তার দেখা পাই স্বপ্নের ভেতর শিশুর মতো হাঁটতে থাকে। আমি তার শরীরে পূজা দেই, নিজেকে সমর্পন করি তার সামনে আপন মহিমায়।

তোমাদের ভগবানও কবিতার মধ্য দিয়ে নিজেকে দেখায়। কবিতার মতো করে ভগবানকে চিনি। ভগবানও কবিতার ভাঁজে ভাঁজে মেলে ধরে নিজের শরীর, মানুষের মুখে মুখে আরও শুনি যতসব লেখাবাজ কথামালা কবিতার দলিল।

ভগবান কবিতার কাছে নতজানু হয়েছি আজ। কবিতার সাথে প্রেমের বাড়িতে বসে থাকা, অনেকটা চাঁদের বুড়ির মতো আমার কাজ।। মন্দির প্রার্থনা স্বরসতী অর্চনা সবকিছু গেছি ভুলে, আমার হৃদয় সময়ের খেলা খেলে কবিতার দলে, কবিতা চললে আমার হৃদয় চলে। 

চয়া

কারো হৃদয়ে যখন ভালো চিন্তা থাকে সেই ভালো চিন্তার জায়গাটিকে আমি ফুলের বাগান বলি যার গন্ধ মানুষ পায় মৌমাছি থাকুক কিংবা না থাকুক 

Will

Will not I go in the space
Will not I go in the moon
I am here among the men within the agony and peace
Dislike the death though it is much possible doze
Here is here is the accident lips sweetest kiss
No way to go no wish is bound of the abroad step
Here is heaven in the prophet of sense
See nothing say nothing just keep poking in the sense of time
Everything in mind every cultivation on eye is possible
Blind door firing alone
Go for book go for the bond dear
Keep singing and singing and will be I right there in time 

বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬

ভান্ডার

আমাদের ভানুসিংহের আক্ষেপ ছিল মাঝে মাঝে তার দেখা পায় চিরদিন কেন পায় না। চিরদিন যারে পাওয়ার ইচ্ছা তার দেখা মাঝে মাঝে পাইলেই বেটার। শীত আর সূর্যের আদরে যে গাছ বেড়ে ওঠে তার পুষ্টিমান অনেক ভালো। তাইতো প্রতিদিন নিয়মতান্ত্রিক ব্যস্ততার মধ্যে যখন একদুইদিন ছুটি পাওয়া যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই আলিফ লাইলার সিন্দবাদ হয়ে রাতের জলে জাহাজ ভাসাতে ইচ্ছা করে এবং বাস্তবায়নও করি।

এখান থেকে সেখানে, সেখান থেকে এখানে-- এমন করে রাতজাগাপাখি হয়ে ছুটি উপভোগে ব্যস্ত কতিপয় বিন্দুবোধের দল। আমরা যারা বিন্দুবোধের সদস্য তারা তাবৎ পৃথিবীর তাবলিক রাতের জলে ভাসা জাহাজে নিয়ে আসি, আর বাতাসের স্রোতে ভাসিয়ে দেই আমাদের বিশ্লেষন।

আজকে কথা হচ্ছিল সার্বিয়া নিয়ে, কথা হচ্ছিল জেনেভা ক্যাম্প নিয়ে, কথা হচ্ছিল ওমর মুভিটি নিয়ে যেখানে প্রেমিক দম্পতি বাংলাদেশ হানিমুনে আসার ব্যাপারে হাস্যরসের কারখানায়, কথা হচ্ছিল পুরান ঢাকা আর কলকাতার মধ্যে সাদৃশ্য নিয়ে, কথা হচ্ছিল আমগো ডিপজলকে নিয়ে, পিডোফাইল বিষয়টি নিয়ে। আরও আরও বিষয় নিয়ে। কথা ফুরায় না, ছুটির সময় ফুরিয়ে যায়! 

মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬

আলোর

আলোর খেলা জাস্ট সুইচ অফ আর অনের মতো
দেহের মাঠে চলছে শ্বাস প্রশ্বাসের মেলা
কেউ গান করে
কেউ ভান ধরে
কেউ চায় প্রান প্রানের টানে
সবাই তো বাতাসের সন্তান
গভীর প্রেমে মানুষ
তেলাপোকা ভাসমান
আরো চাই চেতনা আরো চাই প্রান 

সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৬

প.

গতকাল আমি যা বলেছি আজ তা মিথ্যা যদি আমার চিন্তার উন্নতি হয়ে থাকে 

দ.

দুই ইঞ্চি আঙ্গুলের ফাঁকে সব স্বপ্নরাজ্যের আলাদিন থাকে 

শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৬

দ্রর

দৃষ্টি বলের দিকেই রাখতে চাই, গ্যালারির দিকে নয়। কেউ কালে থাকতে পারে না যদি না কাল ব্যক্তিকে গ্রহন করে। আমার কাছে আমি একটি গুরুত্বপূর্ন শব্দ। এই আমির ভেতর আমরা শব্দটি নিহিত। তাই আমি যত বেশি আমি হয়ে ওঠবো ততই আমরার দেখা পাবো।

আমার সমাজ, আমার খাবার এক আমির জন্ম দিয়েছে, সেই আমির মধ্যে কল্যানকর কিছু নেই। নির্মিত আমির গুরুত্ব পৃথিবীর জন্য জরুরী। বনজ পাতা থেকে যেমনভাবে প্রক্রিয়াকরন  করে ঔষধ আবিষ্কার  করতে হয় তেমনি আমিকে ফিল্টারিং করে নিজের খোঁজ পেতে হয়। নিজস্বতা আবিষ্কার ব্যক্তির অহংকার, পৃথিবীর সোনার ফসল।

যে খেলোয়াড় বলের চেয়ে দর্শকদের প্রতি অধিক মনোযোগী তার আউট হবার সম্ভাবনা অধিক হবে তাই স্বাভাবিক। কাল এক গভীর ব্যাপার। গভীর হলেই কালের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন সম্ভব। কালের বন্ধু হলেই রথ দেখা সম্ভব আর সাথে কলা বিক্রির বিষয়টি তো আছেই। 

গজপ্রতি

ঘুমিয়ে ছিলাম। চোখ বন্ধ। চোখে সজাগ দৃষ্টি। মন চোখের আগেই সজাগ হয়ে গেলো। জানালা দিয়ে সোজা আকাশের দিকে। অনেক আলো চাঁদের গতরে। অনেক আলোই চাঁদের একাকীত্বের বিজ্ঞাপন করেছে। আমি অন্ধকার ঘরে শুয়ে আছি। আমার একাকীত্বের কোনো বিজ্ঞাপন নেই।

শুয়ে শুয়ে চাঁদ দেখার আনন্দই আলাদা-- আনন্দ মনের মাঠে আন্দোলন করে। তাদের মতো অনেক টাকার মালিক হলে ছাদ দিয়ে আকাশ দেখা যায় এমন ব্যবস্থা করবো।

গরীবের ছাদের নাম অবশ্যই আকাশ। গরীবের ছাদ দিয়ে সব কিছু সোজা সোজা আসে-- বিষ্টি কিংবা রইদ। গরীবের রোগ হলেও সোজা মৃত্যুর দেশে চলে যায়। মাঝখানে চিকিৎসা, হাসপাতাল, ডাক্তার, আইসিও এমন কোনো মিডিয়া নাই। গরীবের সব কিছু সোজাসাপ্টা।

টাকাওয়ালারা কী আমার মতোই  আকাশ দেখে, অন্ধকার ঘরে মাঝরাতে, একা একা, শুয়ে শুয়ে?

তাদের আকাশ দেখার, চাঁদ দেখার প্রয়োজন হয় না। তাদের রুমেই আকাশ, চাঁদ বসানো থাকে। ইচ্ছা হলেই তারা আকাশ আর চাঁদ একসাথে পায়।

আমরা গরীব, আমাদের আকাশে ইচ্ছাকৃত চাঁদ তাহে না, আমাদের চাঁদ ইচ্ছাকৃত আকাশে তাহে না। অধীনস্ত জীবন আমাদের। আমাদের প্রেম কাম যম ধন সব কিছু উপরওয়ালার হাতে। তার ইচ্ছা হলেই শ্রীনিধির কুলে একটু তীরের দেখা পাই, মাঝরাতে একটু চাঁদের দেখা পাই অন্ধকার ঘরে একা একা। 

শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

ভয়হীন

অনেক কথা বলার ছিল নদীর কিনারে বসে। মাথার উপর থেকে আমাদের কথায় নেমে আসতো কাকভুলা জোছনা। ঝিরিঝিরি ঢেউ বাতাসের সাথে। ঝিরিঝিরি স্বপ্ন আমাদের চোখে। দূর থেকে ভাসান মাঝির ঢেউ কানে সুরের মতো খেলা করে সূর্যবেলার লালিমা হয়ে আস্তেধীরে চলে যেতো কোনো এক নতুন গ্রামে।

জোছনার জলে নৌকা ভাসালে মন্দ হতো না। তীর ভেঙে ভেঙে জল নৌকার সীমানা বাড়াবে। নতুন নদীতে আমরা দুজন। তখন তুমি বাউল গান ধরবে। আর আমি? আমি ওয়াজ করতে থাকবো বাতাসের হাকিকত নিয়ে।

ভাববাদ আর জীবনবাদ আমাদের আলোচ্য বিষয়। ঢেউখেলানো নৌকায় আরও কাছে চলে আসবে তুমি। আরও কাছে, যত কাছে এলে চোখ তার কাজ ভুলে যায়, নাক ভুলে যায় গন্ধ নেয়া, জিব্বার সাথে ব্যস্ত থাকে জিব্বা তত কাছে। কাছে আসলেই রোগের উপশম ঘটে, দেহের কাছে আসলেই পটাশিয়াম লবন মানুষের কাছে উপকারী প্রান।

দেহ থেকে দেহ দূরে থাকলে কথার নৈকট্য গাছের কাঁঠাল। স্বপ্নের কাছে মানুষ সুন্দর বলে সত্যের কাছে বাস্তব। দেহ যখন  ভুলে যায় দেহের ইবাদত প্রেমের কাছে তখন কষ্টেরা আপন। ঠোঁটের কাছে ঠোঁট রেখে দেখো এই অচেনা মানুষটি কত যে আপন, কত যে আপন। 

বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৬

কত অসীম তুমি তোমায় দেখি না বলে
এই হাতের কাছে অধরা তোমার আকাশ, আকাশের তারা, যৌবন রাতে দেখা যাওয়া চকিত নীহারিকা
তোমার ঠোঁটের রাজপথে জোছনার হেঁটেচলা
একদিন গেলো, দুই দিন গেলো, বর্ষার জলে ভেসে থাকা শাপলা ভুলে গেছে যৌবন জ্বালা
সময়ের স্বরসতী তোমার মন্দিরে এখনো পূজাপ্রেম সাজাই
নীরব দুপুরে সুজন মাঝির গান গাই
বিড়ালপায়ে তুমি কেবল মনমন্দিরে হেঁটে যাও
মার্বেল খেলা শৈশব আমার বারবার ভুলে যাই বারবার ভুলে যাই-- আকাশের পথে বিমানচোখ ভাসতে থাকলে তুমিও সীমানার মতো দেখায় 

বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬

ফুলের

নিজেকে না জানিয়া ফুলের দেশে ভুলের গন্ধে মাতাল, শেকড়ে শিখরের ছায়া, ফুলের শেকড়ে রাতঘুমে আছে সাপের মায়া 

দাও

ভেতরে ভেতরে রক্তের ঘাট
বাইরে বাইরে প্রেমের দাগ 

মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৬

ছাড়াও

ছায়ায় থাকলে নিজের ছায়া দেখা যায় না, নিজেকে দেখার জন্য ছায়ার কাছে যাই বারবার, যতবার ছায়া মারি ততবারই আমার আমি নাই, আমার আমি নাই 

আসেন

আদিতে সব কিছু এক, তিনিও এক, তিনি সৃষ্টিও করবেন একটাই-- মাঝখানে সসীমে অসীমে দৌড়ঝাঁপ 

ঝাঁ

শব্দের ঝামেলা নেই
কর্মের ঝামেলা নেই
মর্মের ঝামেলা নেই
এখানে হৃদয় এসে বসে থাকে 

শাখা

ভাঁজ না দিলে শাড়ি পড়া যায় না, ভাঁজ না খুললে নারী হওয়া যায় না 

মেঘ

মেঘ হয়ে ভেসে দেখো
আমি বৃষ্টির জন্য স্থির দাঁড়িয়ে থাকবো
কেউ যেন না বলে ভুলে গেছি তোমায়
ভুলে যাওয়ার মতো ভুল আর নেই একটাও
সেই হাতে রেখেছিল হাত এই হাত
হাতে রাখা হাত ভুল ছিল
এক ভুল দুইবার আর হবে না
এক ভুল দুইবার আর হবে না 

সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৬

নো

নোবোডি মানুষটি আজ তোমার এ্যাবরিবোডি 

সাথে

শয়তান বেয়াদব। কারন তার জ্ঞানের অভাব আছে এমন না। বিশ্লেষনের অভাব আছে এমন না। শয়তানের ভক্তির অভাব। ভক্তি থাকলে মুক্তি মিলবেই। যেখানে ভক্তি নাই কিন্তু জ্ঞান এবং বিশ্লেষন সক্রিয় সেখানে শান্তির বদলে আগুন খেলা করে।

রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৬

:::::

Return! you have to realize must what is the rationality of the serious 

আরেক

মেয়েরা সাধারনত তার বাবার মতো ছেলেদের পছন্দ করে, আর ছেলেরা পছন্দ করে মিডিয়ায় প্রচলিত সুন্দরের মতো মেয়েদের। ফলে মেয়েদের সত্যজ্ঞান মনে আর অধিকাংশ ছেলেদের সত্যজ্ঞান চোখে।

আর্থিকভাবে খুব বেশি স্বয়ংসম্পূর্ন না এমন ছেলেমেয়েদের পছন্দের নাম সমাজ। সমাজ যেদিকে পাল তোলে তারা সেই দিকে দৌঁড়াতে থাকে-- তারা জীবনে না পায় গতি না দেখে বাতি।

তবে এখনো মেয়েরা মা হয়ে জন্মগ্রহন করে। ফলে সন্তান ধারনের বিষয়টি তার মাথায় থাকে। সমাজে যদিও পিতা অভিভাবক, অভিভাবকসুলভ মানসিকতা মায়েরই বেশি। মা তো পিতারও অভিভাবক। তাই আর্থিকজ্ঞান মা জাতিরই বেশি থাকে। মেয়েটি অবশ্যই ছেলেটির আর্থিক দিক খুব গুরুত্বসহকারে অবজার্ভ করে। 

:?:

রাজ্যসুখ নামে রাতদুপুর

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৬

আয়নাবাজি

বাংলা সিনেমা হিসাবে আয়নাবাজি  যথেষ্ট ভালো হয়েছে এমন কথা আমি বলতে রাজি না। বলতে পারি বাংলা সিনেমার এই ক্রাইসিস মুহুর্তে আয়নাবাজি বাংলাদেশীদের স্বাদ ধরতে পেরেছেন অমিতাভ রেজা চোধুরী। বাংলা সিনেমার দর্শক নাই এমন কথা আর মুখ বড় করে বলতে পারবে না হল মালিকেরা।
আয়নাবাজিতে আয়না ভালো অভিনয় করেছে। আয়নার কস্টিউম ভালো ছিল। ভালো হবে না কেন! সুদূর কলকাতা থেকে কস্টিউম ইঞ্জিনিয়ার আমদানি করা হয়েছে।

অতি অল্প খরচে ভালো কিছু করা সম্ভব এমন সত্যের মুখোমুখি আমরা বারবার হয়েছি। সুখ শান্তির জন্য যারা মঙ্গলগ্রহে বাড়ি বানাতে ইচ্ছুক তারা আসলে আজাইরা মানুষ। দর্শক বরাবরই সিনেমাতে বাস্তব কিছু চায়। যে সমাজের চোখের সামনের ঘটনা দেখার ক্ষমতা নাই তাদেরকে রাডার সেটেলমেন্টের কাহিনি শোনালে দেশ একেবারে উন্নত হয়ে যাবে এমন বলি আওড়ানোর সময় এখনো আসেনি।

আয়নাবাজি ছায়াছবিতে খরচ তেমন হয়নি। কিন্তু পারিপার্শ্বিক নান্দনিকতা দেখানোর প্রয়াস লখিন্দরযোগ্য দৃষ্টি রাখে।

আয়নাবাজিতে চমৎকার সুন্দর বৃষ্টি আওয়াজসহ দেখতে পাই। চোখে এখনো আয়নার কান্দন আর ঝুম বৃষ্টি লেগে আছে। শিশুরা ভালো অভিনয় করে, একেবারে বাস্তবের মতো করে-- তা আয়নাবাজিতে দেখতে পাই আবার দেখতে পাই মাজিদ মাজিদির The Song Of Sparrow মুভিতে।

The Song Of Sparrow মুভিতে রেজা নাজির জীবনের মতো নয় হুবহু জীবন আমাদের উপহার দিয়েছেন। এমন আচরনস্রোত ক্যামেরার সামনে প্রবহমান রাখা রেজা নাজির আর নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকীর পক্ষেই সম্ভব। বদলাপুর কিংবা By Pass এ নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকী যা করেছেন তা কেবল তার পক্ষেই সম্ভব।

আয়নাবাজি জাস্টকেবল অভিনয় গ্যালারি অথবা অভিনয়ের কোলাজ। ফলে দর্শককে প্রতিনিয়ত অভিনয় সত্যের মুখোমুখি হতে হয়।

আর মাজিদ মাজিদির The Song Of Sparrow সমাজ বিপ্লবের সিনেমেটিক আখ্যান। রেজা নাজির ও শিশুরা যখন পুরাতন কূপ পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত তখনই তাদের একজন মুরু মুরু ( সাপ সাপ)  বলে চিৎকার করে ওঠে,  আবার তাদেরই একজন সাপের গলা টিপে ধরে। একজন সমস্যা দেখায় আরেকজন সমাধানে নেমে পড়ে-- এমনই তো হওয়া উচিত না,  আবশ্যক।

প্রত্যেক সমাজে কিছু ফতোয়াবাজ আছে যাদের কামই হইলো দেয়াল তৈরি করা, তারা কখনো দেবীর পূজা করতে আসে না, তারা আসে দেবীর নাম বিক্রি করে সুনামি অর্জন করতে। সুনামিবাজদের জন্য আজ ঘরের পাশে ঘর আছে কিন্তু প্রতিবেশী শব্দটি জোড়ালোভাবে নেই।

চড়ুই পাখির গান মুভিতে প্রতিবেশী দিন আর রাতের মতো প্রাকৃতিক। রেজা নাজিও সাবেক সহকর্মীকে দেখে মুখ ফ্যাকাসে করে অন্যদিকে চলে যায় না, নিজের মোটর বাইকে তুলে নেয়।

আরে ভাই, ছবি বানাইলেই হবে? ছবি বানানো মানে সম্পর্ক স্থাপন, সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা তো থাকতে হবে, তাই না? 

গ্যারান্টি

ন্যাংটা চোখ হালি চাইয়া চাইয়া দেখে
বোরখার ভেতর শান্তির ঘুম দেয় প্রিয় দেশ
কপট হাসি ঝিলিক মারে স্নো পাউডার মেখে
দেশ বিক্রির ঘটক ছাতার নিচে মুখ রাখে
দেশ ভালো আছে পৃথিবী অনেক ভালো আছে
পাপ তাপ যতসব লজ্জার কথা তারা সব খানদের মতো মুসলমান হয়ে গ্যাছে
স্বাধীনতা অনেক ভালো আছে মুক্তির সংগ্রাম অনেক ভালো আছে 

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৬

অভ্র

এক হাতে কোদাল আর কাস্তে দিয়া পিতার লাহান পুরুষেরা আমগোরে চিনাইছে মা মাটি মার্তিরডম অর্কিড। আমরা দিববি অভিনয় করেছি।

চোরচক্র রেলওয়ে স্টেশনের বাত্তি নিবায় দিছে। আমরা তখনো অভিনয় করছি ভদ্রতার।

কবিরাজ ঘরে আইসক্রিম খেলায় প্রেগন্যান্ট করছে হাজার হাজার রমনী। আমরা তখনো অভিনয় করছি সরল সহজ মানুষের।

সুন্দর এনজিও মার্কা হাসি দিয়ে সরল মানুষের ঘরে নামাইছে শনিবারের জ্বীন আরব দেশের সেই দালাল। আমরা একটু আরাম কইরা কাঠের চেয়ার ছাইরা ইজি চেয়ারে বইছি।

বিদ্বানের নাম লইয়া তিনারা শিশু মনের উপর চালাচ্ছে বুলডুজার। আমরা খোকা ঘুমানোর গান গেয়ে পাড়াকে পাঠাচ্ছি চিন দেশে।

বিদেশের জিকির করতে  করতে ভুলে গেছি স্কুল পালানো সময়ের কথা, ভুলে গেছি হুলার ভেতর ফলাফলি খেলার কথা, আমরা ভুলে গেছি আমাদের কথা। 

মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৬

এদিকে

উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা। আমি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলাম, রেজাল্টও প্রকাশ হলো। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলেই ...।

আমাদের মতো ছাত্রদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশাল স্বপ্নের জায়গা। টিএসসির নাম শুনলেই একটি শান্তির ঝরনা হৃদয়ের কোনো একটি রেখা বরাবর বয়তে শুরু করে। আমি একটি ফর্মই তুললাম। ভর্তি হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই হবো। আমাকে সিট দেয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্য ছাত্রদের সিট দিবে এমনই গোঁয়ার আত্মবিশ্বাস। অনেকে আমাকে পরামর্শ দিলেন অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফর্ম সংগ্রহ করার জন্য। আমি সিদ্ধান্ত  নিয়ে নেয়ার পর আর কারো পরামর্শ গ্রহন করি না।

বৃহস্পতিবার। ট্রেনে করে ঢাকা আসি। থাকি মোস্তফা ভাইয়ের সাথে। পিলখানার আশেপাশে। মোস্তফা ভাই কোনো এক পরিবারের সাথে সাবলেট থাকে। পরিবারের সবাই শরিয়তি মানুষ। সাত বছরের মেয়ে বাবুটাও ঘরের ভেতর পর্দা করে। আমাকে দেখামাত্র পর্দা করা বাবু সালাম দেয় 'আসসালামু আলাইকুম '।

রাতটা শেষ হতে চায় না। তারপরও শেষ হলো। সকাল সকাল নাস্তা করে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে চললাম। আমার সিট এমবিএ ভবনে। ক্যাম্পাসে আসি পনেরো মিনিট আগে। তারপর সিট খোঁজার পালা। ওমা! সিট খোঁজে পাই না। এক লোক বলে এক কথা, অন্য লোক বলে অন্য আরেক কথা। নির্ধারিত সময় থেকে পাঁচ মিনিট চলে গেলো। আমার হার্টবার্ন শুরু হয়ে যায়। তারপরও সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করি। মন কিছুতেই শান্ত হতে চায় না।

হঠাৎ দেখলাম ভীড় থেকে অনেক দূরে এক লোক দাঁড়িয়ে বাদাম খাচ্ছে।

ভাই, এই সিট নাম্বারটা কোন ভবনে?

লোকটি প্রথমে আমার মাথায় হাত দেয়। শান্ত হও, এতো অস্থির হবার কিছু নেই।

লোকটি কে আমি তাকে চিনি না। কিন্তু তার স্নেহভরা কন্ঠ, স্নেহ তুলতুলে হাত আমাকে একদম শান্ত করে দেয়।

এই যে তোমার সামনের এই বিল্ডিং দেখছো,এর এগারো তলার কোনার রুমটা তোমার। যাও, একদম অস্থির হবে না।

লিফট কেবল টিচারদের জন্য। হেঁটে ওঠো রেজা। চোখ বন্ধ করে সিঁড়ি ভাঙ্গতে লাগলাম। রুমে যাওয়ার পর চোখে কিচ্ছু দেখছি না। ঘামে শরীর ভেজা ভেজা। পনেরো মিনিট হেজ গন! অপটিক্যাল মার্ক রিডার ও প্রশ্ন নিয়ে সিটে বসলাম।

একদিকে অস্থিরতা, অন্যদিকে শারীরিক ক্লান্তি, অন্য দিকে একটি মাত্র সুযোগ। চোখ বন্ধ করে শ্বাসপ্রশ্বাস নিজের নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করি। আমার নজর যখন শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কাজে ব্যস্ত তখনই নাকে চমৎকার সুন্দর একটি গন্ধ আসে। চমৎকার সুন্দর গন্ধে ত্রিশ সেকেন্ডের মতো মগ্ন ছিলাম। চোখ খুলে দেখি ইশান কোনের মেঘের মতো কালো বর্নের একঝাঁক চুল। আমার চোখ ঝলসে যায়, মন ভুলে যায় পরীক্ষার চাপ।  এই চুলের সাথে কিছুক্ষন কল্পনা বিলাসী হয়ে উঠি। চুল দেখা গেলেও বনলতা সেনের মুখ দেখা যায় না। টিচার স্বাক্ষর খাতা নিয়ে আসেন। মেয়েটি স্যারের দিকে তাকায়। তার মুখ দেখার পর আমি আর পরীক্ষাতেই নাই। তার মুখ আর চুল নিয়ে মনে হলো হোসেন মিয়ার ময়না দ্বীপে চলে যাই।

স্যার ধমক দিলেন, এই ছেলে ফর্ম ফিল আপ করো।

এতোক্ষনে মনে হলো আমি পরীক্ষা দিতে আসছি। নাম লিখছি। লিখবো MD, লিখে ফেলছি MP। এমন সময় চোখ পড়ে একটি লেখায়-- OMR এ কোনো প্রকার কাটাকাটি করলে পরীক্ষা বাতিল বলে গন্য হবে। oh my God!

মন একদম অস্থির হয়ে যাবার কথা। কিন্তু মন একদম শান্ত। এমন সুন্দর চুল আর মুখ চোখের সামনে থাকলে নাবিক তার পথ হারাতে পারে না। আমিও পথ হারায়নি।

যা পারি তা উত্তরপত্রে পূরন করতে লাগলাম। এক মিনিট বাকী থাকতেই টিচার সতর্কবার্তা দিলেন। সময় শেষ হয়ে গেলো। পরীক্ষাও শেষ। মোবাইল ফোন অন করি। অসংখ্য ফোন আসতে শুরু করে। কথা বলি। কখন যে সেই মুখ আর চুল ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে যায় বলতেই পারিনি। আমার আর ময়না দ্বীপে যাওয়া হলো না....

সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৬

কখনো

বহুদিন হয়ে গেলো রাতের ভেতর আঁকি না শস্যফুল, কাঁশবনে পালায় না প্রিয়তমা রাধা, ফুল ফুটে বাহার বাহার, প্রেম নাই প্রেম নাই, প্রথম বিপ্লবী মন তার ভগন্দর বাহানায়, কামঘরের কামিনী ভুলে যায় যতসব প্রতিজ্ঞাগতরাত-- বাজারহিসাব বাজারহিসাব।

সব বাজারি উটের পীঠের মতো দেখায় হৃদয়ের পাহাড়। যাহাদের এতোটুকু হৃদয় আছে বলে মনে হয়, তাহাদের দিকে পীঠ দেখায় এই আমার বাজারি মন।

বাজারে থেকে বাজারি হয়ে গেছি বহু আগে, ক্যালেন্ডারের পাতায় ঝুলে প্রেমিক হৃদয়, প্রয়োজনের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি মারে খাবি খাওয়া মাছের সদয়। 

শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৬

টমি

গল্পটি শোনা।
কোথাও পড়িনি।
গল্পটি আইনস্টাইনকে নিয়ে।
আইনস্টাইন একদিন ট্রেনে করে কোথাও যাচ্ছেন। টিকেট চেকার আসলেন। তো আইনস্টাইন টিকেট খুঁজে পাচ্ছেন না। টিটি আইনস্টাইনকে চিনত। তাই সে বললো সমস্যা নেই আপনাকে আমি চিনি। আইনস্টাইন জবাব দিলেন সমস্যা টিকেট পাওয়া কিংবা না পাওয়াতে না, সমস্যা হলো টিকেটে লেখা আমি কোথায় যাবো।

আইনস্টাইনের মতো লোক কোথায় যাবেন এই বিষয়টি তাঁর মনে নেই। তাহলে বিষয়টি  পরিষ্কার অন্য কোনো বিষয়ে তিনি শতভাগ মনোযোগী। তাই তিনি কোথায় যাবেন তা মনে রাখতে চান না। আসলেই তো তাই-- যা বই খুললে পাওয়া যায় তা কেন মাথায় থাকবে, মাথা তার পছন্দমতো সংগ্রহ করবে বিপুলা এই প্রকৃতির বিশাল আয়োজন থেকে।

আমাদের মাথা পছন্দমত কিছু সংগ্রহ করতে পারে না। মাথা কেন মুখও পারে না। প্রত্যেক খাবারে জনাবদের পছন্দ অনুযায়ী মেশানো হচ্ছে ভেজাল। গ্রামে থাকতে দুধে ভেজাল মানে বুঝতাম পানি মেশানো। আর এখন যখন আমি পুরোদস্তুর শহুরে তখন দুধে ভেজাল মানে দুধের সবটা অংশই পানি, সাথে দুধফ্লেবার।

শরীরে অপুষ্টি, মস্তিষ্কে অপুষ্টি-- এমন দুই অপুষ্টি নিয়ে বাংলাদেশী ক্যামনে পাড়ি দিবে জীবননদী। মাঝিও বৈঠা নিতে পারবে না। কারন তার শরীরেও শক্তি নাই। তুফান আসলে শিক্ষিত বাবুও মারা যাবে, সাঁতার জানা মাঝিও মারা যাবে।

এখন কিন্তু শিক্ষিত বাবুও তৈরি হয়না, পন্ডিতও তৈরি হয় না-- তৈরি হওয়ার মেশিন প্রায় নষ্ট হয়ে গ্যাছে। নষ্ট মেশিন কাজের চেয়ে শব্দ করে বেশি। নষ্ট মেশিনের উদ্ভট শব্দে কাজের মানুষ কাজ করতে পারে না। মশার কামড়ের চেয়ে মশার গান খুবই বিরক্তিকর।

মশার গানসহ কামড়, সমাজের লতাচাপালী তাচ্ছিল্যকে সহ্য করে যারা কাজ করে যান তাঁরা  সমাজের ফাউন্ডেশন। তাঁদের দলে কাজী নজরুল ইসলাম থাকতে চান-- আমি আজ তাহাদের দলে যাহারা কর্মী নন ধ্যানী।

ধ্যানী মানুষেরা প্রচার বিমুখ এমন না, তাঁরা বরং প্রচারে উৎসুক,  কিন্তু তাঁরা ততটুকুই প্রচার করে যতটুকু তাঁদের মানায়।

আইনস্টাইন তখনো আবিষ্কারক হিসাবে পরিচিতি লাভ করেননি। জীবিকার প্রয়োজনে  বিভিন্ন প্রতষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করেন। কোথাও তাঁর চাকরি হয় না। কয়েকদিন পর যখন  তিনি e= mc√ তত্ত্ব পৃথিবীকে উপহার দিলেন তখন প্রতিষ্ঠানগুলি আইনস্টাইনের আবেদনপত্র তাদের অফিসের সামনে ঝুলিয়ে রাখলেন যার মধ্য দিয়ে তারা জানাতে চায় দেখো আমাদের প্রতিষ্ঠান কত ভালো আইনস্টাইন এখানে চাকরির আবেদন করেন।

প্রতিষ্ঠান এমনই-- ছোট্ট টমিকে অবজ্ঞা করে কিন্তু এই টমিই যখন টমাস আলভা এডিশন হয়ে ফিরে আসে তখন তাঁকে মাথায় তুলে নাচে-- তখন আমার বঙ্কিমচন্দ্রের বড় বাজার প্রবন্ধটির কথা মনে পড়ে যেখানে দেখানো হয়েছে মানুষ আর মানবিকতার মাঝে প্রধান দেয়াল অর্থজ্ঞান প্রবনতা, প্রকৃত মানুষের কোনো আবেদনই নাই-- ঠাঁই নাই ছোট সে তরী। 

জতেক

কত সকালে চলে গেলে তুমি বিকালে
এখনো আমি খেলি ফলাফুলি লাই পুকুরের জলে
ব্যাঙাচি শরীর আমার ব্যাঙাচিগতি আমহার মনে 

তারপর

খুব বেশি প্রতিবেশী চোখে জলের নুয়ে পড়া দেখি
দেখি ঘাটশিলা থেকে নেমে আসা একঝাঁক যৌবন
সবুজ পাহাড় থেকে লাল রঙের সূর্যটা পানসে মাঝির নৌকা চালাতে চালাতে বাজায় কাপালিক সুর

আস্তে আস্তে তারা জঙ্গলে যেতে থাকে
মাটির পাত্রে চাচি বসালেন জীবনগন্ধী রান্না
শিশুসুলভ চানাচুর চালের সাথে কথা কই
ধারাগিরির আরাম কোনায় তোমার পা ফাসিক বেদনায় আটকে পড়ে
পতনের শব্দ হৃদয়ে আসে, তবুও ঢেউ তুলে না-- আজ অনেক বছর হয়ে গেলো আমাদের গ্রীষ্মকাল-- রোদাহত হৃদয়

ওগো দুধসাধা মেঘ তাদেরকে বলো আমারও আছে আকাশনীলা সুখ--
কান্নার মতো চুয়ে চুয়ে আসা কাজল নিয়ত নয়না মুখ

প্রেমিকা ছাতিম ফুলের নিচে আজ হৃদয়ের আসন
ম্যাগনোলিয়ার বুক পকেটে চিরায়ত হাসি
তার কোনো সুখ নেই
তার সুখ থাকতে পারে না
তাহাদের চোখে কেবল বিষন্ন যৌবন
তার ফুল হতে খসে পড়া ভুল
বিলিয়ন বিলিয়ন ভুল নলাতুলা পথে চলে
দোল সুখে হাওয়া খাওয়া তারা জানে না, ঘুমন্ত পুরুষের দুঃসপ্ন দোষ

দিনশেষে সেও জোছনা ও জননী

ছিদ্র দিয়ে চোখ রাখা বারন
দরজা খোলে রাখো রাতভর
একরাত একরাত করে জেনে যাবে ডাকাতির কারন।
ছায়ার রাত শেষ হবে কিসসার মতো, খুব অপ্রেম দেখাবে আকাশে বাতাসে রচনাতীত জীবন 

বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৬

জোব

দেবী দশ হাতে সুন্দর হতে পারে, মানুষ দুই হাতেই সুন্দর 

বাতিঘর

জুতার কালার এক হলো না
এক হলো না সবুজ গ্রামের বাতাবি সুখ
পালের তালে সকাল সাজে
বৃষ্টি ভেজা বিকাল মুখ
ভীষন ভীষন মনে পড়ে
বৃষ্টি নামে বৃষ্টি নামে আমার ঘরে
তারা কেবল নাচতে জানে হাসতে জানে
খুব রাতে ভোর রাতের সুর বাজে
ফ্যানের তালে বাতাস ভাসে বাহা পথে
শ্যামা লাটিম ঘুরতে জানে ঘুরতে জানে
চেয়ে থাকি আকাশপথে
বাতাসপাখি উড়াল দিলে উড়াল দিলে 

মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৬

সাথে

গরীবের দুঃস্বপ্ন সাপ বা কুকুরের কামড়, টাকাওয়ালার দুঃস্বপ্ন প্রতিষ্ঠানে আগুন 

সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬

উপর

অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার আগে একবার যেন ভাবি প্রভুর দুনিয়ায় আমিও বড় অপরাধী 

রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬

গুঁড়া

গভীরে যেতে যেতে ভাসমান হয়ে আসে চোখ, মনের ভেতর ক্রিকেট খেলে শৈশব। হেল্পার ছাড়া বাস কখনো দেখা হয়নি, হেল্পার ছাড়া কতকিছু করে এই মন, বেলা শেষ হয়ে আসে, মেঘের মৃত্যু বৃষ্টি নামে পরিচয় পেতে থাকে, মেঘের বেদনা কেউ দেখে না। সারারাত ঘুমহীন ছটফট করে প্রিয়জন, ঘুমের ভেতর ছটফট করি।

বিশাল বিশাল ছটফট ঘড়িটা কেমন করে সহ্য করে! বাতাসের মতো আকারহীন হলে ঘুমের সাথে কথা হতো সরলরৈখিক ভোরে।

ভোর আর কতদূরে!

প্রিয়জন কান্দে ঘুমহীন সুরে 

ভা

কার সুরে যেন আমার মনতবলা বাজে
আমি যেন তার হয়ে যাই
মন বসে না মন বসে না কাজে 

বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আ✔ন

আমেরিকা পলিসি মেইনটেইন করে চলে। এই পলিসিতে কেউ ইচ্ছা করলেই ফেরেশতা হতে পারে না, শয়তান হতে পারে না, এমনকি মানুষও হতে পারে না। প্রত্যেকে পলিসিকে ধর্মদর্শন মনে করে বাঁদরের মতো ঝুলে থাকে। 

যাবো

ছোট কালে আমি ছিলাম একশো পার্সেন্ট বানর। কেউ আমাকে শতভাগ আদর করার সাহস পেতো না-- কারন সবাই চায় মাথায় শতভাগ চুল রাখতে। আমাকে আদর করা মানে খুব কাছে যাওয়া, তারপর মাথায় ওঠা, তারপর একটি একটি চুল খুব আয়েসভের মোডে তুলে ফেলা।

আমাকে শতভাগ আদর করার সাহস যিনি দেখালেন তিনি আমার খালাম্মা। আদর কাকে বলে আমি তাঁর কাছ থেকে বুঝতে শিখেছি। আমার জন্য তাঁর হৃদয়ের জানালাটা আলাদাভাবে উন্মুক্ত ছিল।

আজ আর তিনি নেই!

জীবিত আশীর্বাদের একটি সজীব জানালা মৃত্যুপর্দায় ঢাকা পড়েছে!

তিনি কোথায় গেলেন আমরা জানিনা। তিনি আমাদের সাথে আমাদের মতো করে আর কথা বলতে আসবেন না এতটুকু জানি।

তিনি হয়তো মেঘ হয়ে গ্যাছেন কিংবা দেখা যায় না এমন কোনো তারা। পাগলা নদীর জলের সাথেও তিনি মিশে যেতে পারেন বিকাল পাখি হয়ে উড়বার নেশায়।

খালাম্মা আমাকে আদর করবেন বলে পৃথিবীতে আগে এসেছিলেন, আবার আগে আগে চলে গেলেন পরকালে আমাকে আদর করবেন বলে।

24 09 2016

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

থাকা

রতন থিয়াম থিয়েটারের লোক। মনিপুর এলাকায় তাঁর নিবাস। বাবা মা নৃত্য জগতের বিখ্যাত মানুষ। ইমফলের মতো ছোট্ট শহর থেকে তাঁর যাত্রা শুরু। থিয়েটারকে তিনি dark chamber হিসাবে আখ্যায়িত করেন। থিয়েটারের ব্যাপারে তিনি human energy কে গুরুত্ব দেন। তাঁর বিখ্যাত বক্তব্য I want to satisfy myself।

গ্রামের মানুষও নিজেকে সন্তুষ্ট করতে চায়। তবে রতন থিয়ামের মতো যৌথ জায়গা থেকে নয়। রতন থিয়ামের সন্তুষ্টির মানে হলো সবাই মিলে ভালো থাকা-- একজনের বিপদে আরেকজনের পাশে থাকা, সবাই মিলে বিপদের রাস্তাটাকে যত বেশি হ্রাস করা যায় সেই দিকে নজর রাখা সাপেক্ষে কাজ করা।

গ্রামের মানুষের দৌড়ঝাঁপ খাবারের প্লেট পর্যন্ত। খাবারের প্লেটে আঘাত আসছে তো সব বাদ-- চাচা আপন পরান বাঁচাজাতীয় ঘটনা।

অথচ গ্রামের সহজ সরল পরিবেশ মুগ্ধ হওয়ার মতো। সকালের সূর্য থেকে শুরু করে রাতের জোনাকিপোকার ডাকাডাকি পর্যন্ত প্রকৃতির একনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থাকে তারা। আর প্রকৃতির প্রত্যেক উপাদান প্রত্যেক উপাদানকে সহযোগিতা করে চলেছে। কিন্তু গ্রামের মানুষ বধির, বোবা, অন্ধ। প্রকৃতির এই নবুওয়াত শিক্ষা তারা গ্রহন করে না।

তারা ততক্ষন পর্যন্ত মাটিঘেঁষা মানুষ যতক্ষন পর্যন্ত তাদের প্রয়োজনে আঘাত আসবে না।  তারা লিখে রেখো একফোঁটা দিলাম শিশির জাতীয় উপকার করবে তাও আবার উপকার প্রত্যাশী মানসিকতাকে সামনে রেখে।

জসীম উদ্ দীনের সেই গ্রাম আর এখন নেই। এখন ডালিম গাছের তলে দাদির কবর থাকে না,  নয়নের জল বহু আগে চলে গ্যাছে কর্পোরেট ব্যস্ততার ঘর বাড়িতে। লাঙল আর কয়েকদিনের মধ্যে জাদুঘরে পাওয়া যাবে। বৌদি আর তামাসা করার মানসিকতা রাখে না, বৌদিরা এখন হিংসা রোগে আক্রান্ত।

প্রত্যেক মানুষকে প্রথমে তার বেসিক প্রয়োজনগুলি মেটানোর দিকে নজর দিতে হয়। তারপর সঞ্চয় মানসিকতা। তারপর বিলাসিতা। গ্রামে যেহেতু কারিনা কাপুর অনেক আগেই চলে গ্যাছে তাই গ্রামের মানুষ এখন বিলাসি হয়ে ওঠেছে পুরোদস্তুর। আবশ্যিক প্রয়োজন মেটানোর সামর্থ যে মানুষের নেই সে যখন বিলাসি জীবনযাপনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে তা অবশ্যই ভয়ঙ্করভাবে বিপদজনক।

ছেলে যেহেতু বিদেশে থাকে সেহেতু তাদের কাছে অর্থ আছে কিন্তু অর্থের বিনিয়োগ জায়গা নেই।  অর্থ আর অস্ত্র মানুষের স্বাভাবিক আচরনে পরিবর্তন নিয়ে আসে। ফলে ভাসমান অর্থের ধারক হয়ে তারাও ভাসমান আচরনের মালিক যেখানে মূলঘ্রান পাওয়া যায় না। কোনো আচরনে যখন মূলঘ্রান পাওয়া যাবে না তখন স্বাভাবিকভাবেই সেই আচরন সমাজে শৃঙ্খলা আনতে পারে না। রতন থিয়াম সেই বিশৃঙ্খল জায়গায় কাজের স্বপ্ন দেখান এবং সে স্বপ্নবাজ মাঝি যার কাছে ঢেউ কোনো বিপত্তির নাম নহে -- এক প্রশিক্ষনের নাম। 

সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

তা.

তারা এখন বড্ড বিকেল রাস্তায় নেমে আসে
টনাভরা হাঁসের মতো বুক দেখিয়ে হাঁটে 

সাজে

জলের মতো চলে যাবে সবাই সাগর না চিনে
জলের মতো চলে যাবে সবাই সাগরের টানে 

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বহতা

আজও মনে পড়ে তাকে। আজও মনে পড়ে তার সেই হাসি। আজও মনে পড়ে তার সেই চোখ।

বাংলা বিভাগে ভর্তির যাবতীয় কাজ শেষ করলাম। এখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। মনে আনন্দ আর আনন্দ।

কলাভবনের দ্বিতীয় তলায় আমাদের বাংলা বিভাগ। রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ এই কড়িডোর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করতেন, আমি এখন এই কড়িডোর দিয়ে পায়চারী করে রোদেলা সময় যাপন করবো। এতো আনন্দ আমি কোথায় রাখি!

আনন্দ মনে গানে গানে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামি। ডিন অফিসের সামনের দরজায় বের হয়ে যাবো। দেখি ডিন অফিসের সামনে কস্টিউম করা সুন্দরী মেয়েরা ম ম করছে।

এক সুন্দরী মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম এখানে কী?

মেয়েটি হাসিমাখা চোখে উত্তর দেয়-- নাট্যকলা ও সঙ্গীতের ভাইভা হচ্ছে।

ও তাই।

জ্বী তাই।

তারপর মেয়েটি আমার সম্পর্কে জানতে চায়লো। আমি আপনি আপনি আমার আনন্দের নিউজটা প্রকাশ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি, তারউপরে আবার ঢোলের বারি।

গড়গড় করে সব বলতে লাগলাম। আমার কথা শুনে যখন সে মুগ্ধ তখন তাকে টিপস দিতে লাগলাম, কী করে ভাইভা ফেইস করবে সেই টিপস।

একপর্যায়ে তার সাথে আমিও লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ি। আমিও ভাইভা ফেইস করবো।

নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগে পড়ার ইচ্ছা আমার নেই। জাস্ট গ্রাম থেকে আসা এক ছেলের কৌতূহল থেকে এমন কাজ করার অভিলাষ।

সাতজন করে লাইন। এখন আমাদের লাইন রুমের ভেতরে যাবে। আমি লাইনের একপ্রান্তে। আমি পরিধান করেছি কালো টিশার্ট, টিশার্টে গোল একখান লাটিম, জিন্স পেন্ট, পায়ে কেটস, পেছনে ব্যাগ। ব্যাগ নিয়ে অফিস রুমের ভেতরে ঢুকে পড়ি-- আমাকে দেখামাত্র ধমক-- এই ছেলে, এই ছেলে ব্যাগ রেখে আসো।

ধমক শুনে ব্যাগ বাইরের চেয়ারে রেখে আসি। যখন রুমের ভেতরে আসি তখনই পকেটে মোবাইল বেজে ওঠে-- আবার আমার দিকে তীব্রবেগে নেমে আসে ধমক। তাড়াতাড়ি মোবাইল অফ করি।

এখন শুরু হয় নিয়মতান্ত্রিক ভাইভা। ভাইভা প্রধান রহমত আলী স্যার, তাঁকে প্রায় টিভিতে দেখে অভ্যাস্থ। এখন সরাসরি দেখছি, তাও আবার আমার ভাইভা নিচ্ছে। সব মিলিয়ে অন্য রকম অবস্থা। কিন্তু মনেপ্রানে আমি চাচ্ছি যেন সিলেকশন না হই।

একটি মিউজিক বাজবে। মিউজিকের তালে তালে তোমরা হাঁটতে থাকবে।

আমরা তাই করলাম।

আরেকটি মিউজিক বাজবে। তোমরা  মিউজিকের তালে তালে হাঁটবে।

আমরা তাই করলাম।

চারজন সামনে আসো। তিনজন পেছনে যাও।

আমি পেছনে গেলাম।

এই ছেলে তুমি সামনে আসো।

যখন আমাকে সামনে যেতে বলে আমি ভয় পেয়ে যাই। কারন আমি চাই আমি যেন সিলেকশন না হই। তারপরও প্রাথমিভাবে টিকে গেলাম। যারা  বিদায় নিলো তাদের জন্য মনে মনে মায়া হলো।

দ্বিতীয় সেশনে মেয়েটি নৃত্য করে, আরো দুজন ঢোলতবলা বাজিয়ে দেখায়। আমার পালা-- এই ছেলে গান পারো?

জ্বী স্যার, হালকা হালকা।

গাও ....

আমি গান ধরি, যে গানের কথায় নদীর জলে দুঃখ লুকিয়ে থাকে।

রিদম দিয়ে গাও আরেকটি গান।

আমি কাহারবা তালের একটি গান ধরি যেখানে পাহাড়ি কন্যার কথা আছে।

তারপর তারাও গান গায়। তাদের কন্ঠের আশেপাশেও আমার কন্ঠ নাই, তাদের সুরেলা কন্ঠ আমাকে বেশ মুগ্ধ করে।

এই ছেলে একটি কবিতা আবৃত্তি করো।

আমি চোখ বন্ধ করে বনলতা সেন কবিতাটি আবৃত্তি করি। তারপর তারা আমার জন্মস্থান জিজ্ঞেস করে।

ব্রাক্ষ্মনবাড়ীয়া।

প্রত্যেকে প্রত্যেকের চোখের দিকে কেন যেন তাকায়। আমার ভয় আরও বাড়তে থাকে। তারপর একটি কবিতার বই হাতে দিয়ে বলে একটি কবিতা আবৃত্তি করার জন্য। এমন কবির নাম আমার জীবনেও শুনেনি। তারপরও আবৃত্তি করার চেষ্টা করি-- কী  জটিল জটিল শব্দ রে বাবা।


একজন সামনে আসো, বাকীরা পেছনে যাও।

আমি প্রথমেই পেছনে চলে যাই।

এই ছেলে তুমি সামনে আসো।

আমার স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হয়ে আসে, নিজয়েন্টে একদম শক্তি পাচ্ছি না।

তোমার নাম কী, মিরিট পজিশন কত?

স্যার, আমি বাংলায় আজ ভর্তি হলাম, এখন এখানে কী ভর্তি হতে পারবো?

সাথে সাথে রহমত আলী স্যারসহ সবাই রেগে গেলেন।

তোমাকে এখনি পুলিশে দেয়া দরকার।

বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ন রহমান স্যার । তিনি ভাইভা বোর্ডে বসা। আমি তিনাকে চিনি না। তিনি আস্তে করে কী যেন বলেন। তাঁর বলা বাক্যটি শুনিনি, দেখি রুমের ভেতর শীতল বাতাস বইতে লাগলো।

যাও, আর কখনো এমন করবে না।

আমি পিলপিল পায়ে হাসি হাসি মুখে ভাইভা রুম থেকে বের হয়ে আসি।

বাইরে এসে দেখি মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে, তার মুখে পৃথিবীর মেঘ, চোখে শীতের কুয়াশা।

তার অসহায় চোখেমুখে দৃষ্টি রেখে আমি আর একটি শব্দও উচ্চারন করতে পারিনি। অসহায় পদক্ষেপে আমি কলাভবন ত্যাগ করি। মেয়েটি নিথর দেহে দাঁড়িয়ে থাকে।

কিছুদূর অতিক্রম করে পেছনে তাকাতেই দেখি ফেসিয়াল টিস্যু তার কস্টিউম করা চোখে।

আজও আমি তার সেই চোখটি ভুলতে পারিনি। আজও তার নিথর দেহের অসহায় দৃষ্টি ভুলতে পারিনি। 

বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সৌ

মানুষের সৌন্দর্য দেখার জন্য আমি তার নীরবতা পর্যন্ত অপেক্ষা করি 

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

রাধাকৃষ্ণ

যুক্তপ্রদেশ থেকে উত্তর প্রদেশ। উত্তর প্রদেশে ছোটো ও বড়ো মিলে মোট বত্রিশটি  নদী রয়েছে। তার মধ্যে স্বরসতী ও বেতোয়া আমার প্রিয় নদী। যমুনা নদীও উত্তর প্রদেশের জনপ্রিয় নদী।

উত্তর প্রদেশে জেলার সংখ্যা পঁচাত্তর। মথুরা একটি। মথুরা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ন শহর বৃন্দাবন। বৃন্দাবন আর যমুনা নদীর সাথে আশশ্যাওড়ার মতো জড়িয়ে আছে রাধাকৃষ্ণ।

প্রেমের এক পর্যায়ে কৃষ্ণ বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরা চলে যায়। রাধার হাহাকার দেখে ( এবে কেহ্নে গোআলিনী পোড়ে তোর মন /পোটলী বান্ধিঞাঁ রাখ নহুলী যৌবন) মনে হতো বৃন্দাবন থেকে মথুরার দূরত্ব বুঝি মাইলের পর মাইল। তাই বুঝি রাধার মাইল মাইল হাহাকার। কিন্তু না,  রাধাকৃষ্ণের এই বিরহ দূরত্ব মূলত মানসিক দূরত্ব। অভিমানের দেয়ালের কারনে তাদের কর্মীপ্রেম সক্রিয় হয়ে ওঠতে পারেনি।

দূরত্ব গননা যন্ত্রে পরিমাপ করা যায় কিন্তু অভিমানের দূরত্ব, মানসিক দূরত্ব পরিমাপ করার যন্ত্র সৃষ্টির আদি লগ্ন হতে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি, হওয়ার না।

শিশুর কোনো জাহান্নাম নেই। কারন জান্নাতের প্রতি তার কোনো লোভ নেই, পাগলেরও তাই।

No hell for the child as they have no a little yearning for the heaven is to the crazy dab  

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বিশ্বাস

একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাসকে অপ্রয়োজনীয় বলতে গেলে আরেকটি বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করা লাগে। আর বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ঝড়ের দিনের আম হলে চলে না, হতে হবে রক্তবীজের মতো প্রানদায়ক। 

রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

গেছে

কপালের টিপের মতো তারা প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করে, কপাল বদলানোর ক্ষমতা না থাকলেও টিপ বদলানোর ক্ষমতা নিয়েই তারা জন্মেছে 

শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

খে

দর্শক ভালো খেলে মুখে, খেলোয়াড় খেলে যায় অঙ্গে

হিসাব আছে

হিসাব আছে বন্ধু, সবকিছুর গভীর এবং জটিল হিসাব আছে। এই চোখ কেবল চোখ না, মনের খতিয়ান। এই হাত শুধু হাত না, কর্মের সামনের হাতিয়ার।

যা করো তা দ্বিগুন বেগে তোমার দিকে ফিরে আসবে বন্ধু-- ভালো কিংবা মন্দ, গরম কিংবা মন্দা। সবকিছুর হিসাব হবে চোখের সামনে। বিগত অতীত জোম হয়ে হয়ে চোখের সামনে ভাসবে। হৃদয়ের কাছে পোষা সত্যিরা এসে শুনাবে সান্ত্বনার গান-- ভালো আছি ভালো থেকো প্রিয় আমার।

রোদের সাথে তাল মিলিয়ে ঝড় আসে না-- আইলা, অভিশাপের দেবী আসে একরঙা রাতে অল্প কিছু সময়ের সাথে।

অল্প কিছু ঘাস জানে বিস্তর ব্যথার কারন।  বিস্তর ব্যথা জানে হৃদয় কেন আকাশের দিকে তাকায়। আমি জানি, আমি জানি রোদের শেষে রাত। সত্যকে মেনে নিয়ে সূর্যের কর্মসূচী শেষে চাঁদের প্রিয়তম মুখ আসে, আমার মৃত্যুর পর তুমি আসে-- এতোসব আসা যাওয়ার ভেতর গভীর এক হিসাব আছে বন্ধু, গভীর এক হিসাব আছে।

শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

!:

নদীর উপরে নৌকা, নৌকার উপরে আমি, আমার উপরে চাঁদ 

বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

গ্রাম.

বাজারচারতলা। মেঘনা নদী। খেয়া ঘাট। তারপর চরচারতলা। চরচারতলা আশুগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। বাজারচারতলা আড়াইসিধা ইউনিয়নের অন্তভুর্ক্ত।

চর থেকে চরচারতলা, বাজার থেকে বাজারচারতলা। চরচারতলা আর বাজারচারতলার মাঝে সীমানা নির্ধারনকারী নদীর নাম মেঘনা। মূল মেঘনা এখানে আসে না। এখানে মেঘনার মাসির বাড়ি। বর্ষাকালে মেঘনা এখানে বেড়াতে আসে। মূল মেঘনা আরও কয়েক কিলোমিটার পশ্চিমে।

মেঘনাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড। হাজার হাজার লোক এখানে কাজ করে। সারা বাংলাদেশ থেকে চাকরির জের ধরে আসা লোক এখানে নির্মান করেছে কলোনি-- আমার শৈশবের লন্ডন।

বাজারচারতলা থেকে খেয়া নৌকা যেখানে গিয়ে নোঙর গাড়ে সেই জায়গাটি লালপুরের কোনা হিসাবে পরিচিত। আমরা চিনি হাউজিঙয়ের কোনা হিসাবে। এই কোনায় একসময় ডাকাতি হতো। এখন ডাকাতি ব্যবসাটি অনেকটা বাজার হারিয়েছে। বাজার যে একেবারে নেই তা বলা যাবে না। আছে, অল্পবিস্তর।

রাত দশটা পর্যন্ত খেয়া নৌকা পারাপার চলে। সবচেয়ে পুরাতন খেয়া মাঝি আমাদের শামসু কাহা। তার রাগের সুনাম আছে! এখনো মাগরিবের নামাযের পর এই জায়গাটি দিয়ে লোক চলাচল কমে আসে। কারন একটাই-- ডাকাতের ভয়।

হাউজিঙয়ের এই কোনায় একদিন এক ডাকাতের লাশ পাওয়া যায়। ডাকাতের নাম শাকির। দায়িত্বরত আনসার তাকে তিনটি গুলি করেছিল। শাকির এক ডায়ালগ দিতো-- বিল নাই বিল নাই। বিল মানে বেলা। অন্য মানুষকে এই ডায়ালগ দিয়ে সে সরাসরি টিস করতো। অথচ একদিন সাধারন আনসারের হাতে তার বিল শেষ হয়ে গেলো।

এই কোনা দিয়ে বিকাল বেলা আমি প্রায় হাঁটতে যাইতাম। হাঁটা ছিল উপলক্ষ্য। লক্ষ্য ছিল অন্য কিছু। বিকাল বেলা সুন্দর নারীরা ছাঁদে হাঁটতে আসতো। তাদের কোনো একজন যদি আমার দিকে তাকায় আর হাসি দেয় তাহলে আমার জীবন ধন্য হয়ে যাবে এমন লক্ষ্য মনে মনে পোষন করতাম। কিন্তু যদি কোনোদিন বাস্তবতার মুখ দেখেনি, যদি যদিই রয়ে গেলো!

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

চা♬

আমরা কেবল চাঁদের হাসিটা দেখি, চাঁদের দুঃখ দেখার সুযোগ আমাদের নেই। চাঁদ তার দুঃখসময়ে আড়ালে চলে যায়, মানুষের চোখের সীমানা থেকে দূরে  বহুদূরে চলে যায়। 

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ত.উ

বাংলাদেশের ইদ সবাইকে গ্রামে নিয়ে আসে। ইদ এক গ্রামীন ব্যাপার। 

ও.

বৃষ্টি।
প্রানেল বৃষ্টি।
ঘুম আর ঘুম।
বাড়ির পাশে ঐতিহাসিক ইদগা। আজকে লোক নেই। বৃষ্টি আছে। প্রানেল বৃষ্টি। প্রকৃতির কাছে ইদের আলাদা কোনো মূল্য নেই। প্রকৃতি মানুষের আনন্দের দিনও হরদম কান্না করতে পারে।

বৃষ্টি এলো বলে মামু আসেনি, ইদের দিন জমবে না আমাদের টকশো। প্রকৃতি এমনই মামু ভাগনের টকশোমর্ম জানে না, বিশালের কাছে ছোট্ট খোঁজ তাহে না।

আনন্দ ভেসে যায় বৃষ্টির জলে। ইদের আনন্দ না নমাযে, না খাবারে, না টুপিতে-- ইদের আনন্দ ত্যাগে, ত্যাগের মতো মনে। 

ছা.

ছায়ার কপালে চুমু দিয়ে তারা বাবার মতো মায়া দেখায় 

সা

সাগরের নীল জলে তুমি শাড়ি হয়ে ভাসে 

নেয়া

ঘরে আকাশ নেমে আসে। তারা উড়ে রাতে, চাঁদ দেখা দেয় হালকা করে। অসম্ভব নীরব সুন্দর আকাশ। সোফা বই খাতা ফ্রিজ আব্বা আম্মা বোনদের ঘুম মাইকের আওয়াজের মতো বাতাসে ভাসে। মাথার মূর্তিটি কেবল পৃথিবীর গভীরে অন্য এক পৃথিবী নির্মান করে যাচ্ছে। ফ্যান আস্তে আস্তে হেঁটে চলে মেঘনা নদীর ঠাঁইহীনা জলে। ককশিটে লেখা সবুজ আর লাল কালিতে মা তুমি অদ্বিতীয়।

ফর্মাঘেষা আনন্দ এখানে আসে না, এখানে ফুল আর পাতার মেলা আশেকে মাশুকে। রঙের সম্মোহনে আকাশ টেনে নেয় যতসব চোখ, যতসব মত, যতসব দেহাত্নবাদী ভ্রুন। নীরব হলে জানা যায় যতসব নির্জনতার গুন।

আকাশ হাজার হাজার কবরের হমান। কবরে পেঁয়াজের চাষ হলে মানুষের ব্যবসা ভালো হতে চায়। ব্যবসা ভালো হবে না, ব্যবসা তো মানুষবাহী ক্যান্সার খুব গোপনে, পশুর কাছেও পশু আপন পশু গুনে। 

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আমি যদি হতাম বনহংস

আমাদের সমাজ বোনকে বোঝা মনে করে। কোনো বোন যখন পৃথিবীতে আসে তখন আযান দেয়ার রীতি নেই। অথচ ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী কোনো মানুষ জন্মগ্রহন করলে তাকে নতুন পৃথিবীতে স্বাগতম বার্তা হিসাবে আযান দেয়ার রীতি ধর্মবৈধতা লাভ করেছে। কিন্তু আমাদের সমাজে কেবল বেটাছেলে পৃথিবীতে এসেই স্বাগতম বার্তা লাভ করে। স্বাগতম বার্তার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিষম বাহুর হিসাব নিকাশ যেখানে তিন বাহু কখনো এক হয় না।

দেখা যায় সমদ্বিবাহুর বিপরীত কোনের মানে অবস্থান করে নারী আর বেটাছেলে একেবারে নব্বই ডিগ্রি। অর্থাৎ দুজন মেয়ে সমান একজন ছেলে।

আদিমকালে প্রত্যেক সম্প্রদায় প্রার্থনা করতো মাটিতে অধিক ফসলের, গাভীর অধিক বেটিসন্তান আর অধিক উর্বর নারীর। আদিম ধারনার পরিবর্তন কিছুটা হয়েছে। এখন সমাজ অধিক সন্তান কামনা করে না।

গ্রামে দেখতাম গাভী যখনই বেটাসন্তান প্রসব করতো তখন বুরুব্বির মুখ ম্লান হয়ে যেতো। কারন বেটিবাছুর যেমন অর্থময় বেটাবাছুর তেমন অর্থময় না । পক্ষান্তরে পুরুষসন্তান হলে গ্রামের মানুষ খুব খুশি, জরিনা কিংবা সখিনা হলে মুরুব্বিরা তেমন খুশি না। কারন গ্রামের মানুষ মনে করে বেটাশিশু মানে বংশের চেরাগ, অর্থের যোগান; মাইয়্যা তো চলে যাবে অন্যের ঘরে।

ফলত দেখা যায় মেয়েটি বাপের বাড়িকে অস্থায়ী বাড়ি মনে করে, আবার স্বামীর বাড়িকে নিজের বাড়ি মনে করতে পারে না। ফলে আমাদের সমাজে নারী ভাসমান কচুরিপানার মতো ভাসতে থাকে যাদের কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্য বা ঘর নেই।

মেয়েছেলের প্রাকৃতিক সম্পর্ক এখানে ট্যাবু। প্রেম শব্দটি এখানে ট্যাবু। এখানকার গালিগুলি মা জাতির উপরে গিয়ে বর্তায়। শালা গালিটি একসময় মনে করতাম খারাপের ভালো। পড়ে দেখা গেলো শালা গালিটির ভেতরেও পুরুষসুলভ অহংকার খেলা করে। শালা গালিটি মানে তর বোন আমার নিচে, আমার অধীনে। শালা গালিটির মধ্য দিয়ে ভাইটিকে মনে করিয়ে দিতে চায় তর বোন এখনো আমার দাস। অন্য গালিগুলির কথা না-ই বললাম।

বর্ষাকালে আমাদের এলাকায় বেদে সম্প্রদায় আসে। ছোট্ট কাল থেকে বেদে সম্প্রদায়ের প্রতি আমার এক বিশেষ আকর্ষন আছে। বেদে সম্প্রদায়ের মেয়েরা আমাদের সমাজের ছেলেদের মতো কাজকর্ম করে। আর ছেলেরা নৌকায় বসে রান্নাবান্না করে। খুব কাছ থেকে দেখেছি তাদের দাম্পত্য জীবনে সুখ আছে, শান্তি আছে। বেদেমেয়েদের শরীরে রক্ত সঞ্চালনও বেশ ভালো। আর আমাদের বোনদের শরীরে চিংড়ি মাছের রক্ত বসবাস করে। বোনেরা রান্নাবান্নার সাথে জড়িত অথচ তাদেরই একান্ত আন্তরিক রোগের নাম গ্যাস্ট্রিক।

গয়নার বাক্স ছবিতে ভূত বুড়িমার যৌবনের টান ওঠে। ক্ষুধা না চিনে জাতের বাহার। কাজের ছেলের সাথে যৌনচাহিদা শেয়ার করতে চায় সে। কিন্তু কাজের ছেলে আর যৌবনের বুড়িমার সামনে দেয়াল রচনা করে সমাজ। সমাজ এমনই ভদ্র মানুষ যে আপনি ক্ষুধাতুর মনে কাতরাতে থাকবেন কিন্তু খাবার দিবে না, তবে আপনাকে বলা হবে আপনি যেন চুরি না করেন।

অর্থাৎ যে ছেলেটি মাস্টরের বেত্রাঘাত খেয়ে সাতদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল সেই যখন মাস্টর হয় তখন সে আবার তার ছাত্রকে বেত্রাঘাত করে হাসপাতালে পাঠায়।

ম্যানিলা মুভিতে একটি ছেলে এক সুন্দর মেয়ের প্রতি আকর্ষন অনুভব করে। মেয়েটিকে কিশোর ছেলেটি অনুসরন করতে থাকে। মেয়েটি যখন কাপড় বদল করে ছেলেটি ফোঁকর দিয়ে চেয়ে থাকে। অনেক কষ্ট করে মেয়েটির ব্রা সংগ্রহ করে রাতে ব্রা নিয়ে ঘুমিয়ে থাকে। ছেলেটির অভিভাবক বিষয়টি লক্ষ করে এবং সোজা তাকে পতিতালয়ে নিয়ে যায়।

কল্পনা করা যায় বাবা তার ছেলেকে পতিতালয়ে নিয়ে যাচ্ছে! ম্যানিলা মুভির এই ছেলেটি যখন ভারতবর্ষের ফড়িং ছবিতে আসে তখন তাকে অনেক মানসিক যন্ত্রনার শিকার হতে হয়। স্বাভাবিক সত্য সুন্দর বিষয় নেয়ার মানসিকতা এখানে নেই।


কেন নেই?

কারন এখানকার মানুষ কাজধর্ম পালনে আস্থা রাখে না, ভাবধর্মে বিশ্বাসী। কাজধর্মে আস্থা রাখলে মা জাতির সঠিক মূল্যায়ন আমরা বুঝতে পারতাম।

রান্নাঘরে যে পৃথিবী উৎপাদন হতে পারে তা আমাদের উপলব্ধিতে আসতো। আমাদের সুন্দর বুড়িমা কখনো ভূত বুড়িমা হওয়ার সুযোগ থাকতো না। ছেলেটি ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল মিনিটে নিজের জীবনের বীর্য নষ্ট করতো না, টুকরো টুকরো মৃত্যু আর থাকতো না -- আমি যদি হতাম বনহংস, বনহংসী হতে যদি তুমি! 

শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ব্যাকরণ

সালাম থেকে সেলাম, সেলাম থেকে সেলামি। সেলামি মানে সালাম দেয়ার জন্য প্রাপ্য অর্থ। এখানে সেলামি মানে সালাম করার কারনে প্রাপ্য অর্থ। সালাম করার রীতি মুসলিম কালচারে নেই। সনাতনী কালচারে প্রনাম করার রীতি চালু আছে। যারা একসময় প্রনাম করতে অভ্যস্ত ছিল তারাই এখন সেলাম করে। 

সালাম অর্থ শান্তি ~ আসসালামু আলাইকুম Peace be upon yours (not you) = আপনাদের উপর শান্তি নেমে আসুক। কারন এখানে কা শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি, করা হয়েছে কুম (আলাইকুম)। কা ' র বহুবচন কুম। কা ( জমির বা সর্বনাম) অর্থ আপনি বা তুমি কিন্তু কুম অর্থ আসে আপনাদের বা তোমাদের। 

তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে একজন ব্যক্তিকেও কেন আসসালামু আলাইকুম বলবো। বলবো এই কারনে যে মুসলিম বিশ্বাস মনে করে ব্যক্তি কখনো একা না, ব্যক্তির সাথে সব সময় দুইজন ফেরেশতা ( কেরাবান, কাতিবিন)  থাকে যারা আমলনামা লেখার কাজে ব্যস্ত।  

আসসালামু আলাইকুম অর্থ কখনো আপনার উপর রহমত বর্ষিত হোক ' এমন অনুবাদ করা যাবে না। রহমত আর শান্তি এক কথা না। রহমত শব্দটি রাহমান বা দয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট ( ওমা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আলামিন ~ হে নবী আপনাকে রহমত হিসাবে প্রেরন করা হয়েছে) । দয়া আগে, শান্তি পরে। অর্থাৎ দয়ার পরের ঘটনা শান্তি। অন্যভাবে বললে দয়া একটি ফেকাল্টি আর শান্তি ডিপার্টমেন্ট। 

নম অর্থ নত হওয়া ( শিষ্টাচার)। প্রনাম মানে বিশেষভাবে নত হওয়া। প্র উপসর্গটি এখানে বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সনাতনী কালচারে বহুপদ্ধতিতে প্রনাম করার রীতি চালু আছে, বহুপদ্ধতির মাঝে নমস্কার ( কল্যানমূলক ধ্বনি) বলা একটি। মুসলিম কালচারে আসসালামু আলাইকুম ( কল্যানমূলক ধ্বনি) উচ্চারন সাক্ষাৎমাত্র ওরাকল পদ্ধতি। 

English weather একটি pharase। যার অর্থ changing weather। যখন এটি মানুষের আচরনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে তখন এটি mood swing বিষয়টিকে বুঝিয়ে থাকে। অর্থাৎ English weather মানে ঘন ঘন আচরনের পরিবর্তনকে বুঝায়। যেহেতু ইংলিশদের সকালের আবহাওয়ার সাথে বিকেলের, সন্ধ্যার আবহাওয়ার মিল নেই। তাই আবহাওয়া ভালো থাকা তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। তাইতো তাদের কল্যান ধ্বনি good morning, good evening, good night প্রভৃতি।  

সা শব্দটির চেয়ে সে শব্দটি অধিক পরিচিত। আর গ্রামের মানুষের স্বজনপ্রীতি প্রখর। তাইতো সালাম না বলে, সেলাম বলে। 

সেলামি = দন্ড দেয়া  যখন সেলামির আগে আক্কেল শব্দটি বসে ( আক্কেল সেলামি = অতি চালাক বা অতি বোকামির জন্য প্রদত্ত ক্ষতিপূরন)। তারা কিন্তু আক্কেল বলে না, বলে আহল। ল আর ক বর্ন পাশাপাশি থাকলে তারা ক বর্নটির প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ে। যেমন তারা বেক্কল বলে না, বলে বেহল ; বাকল বলে না, বলে বাহল। 

আরবিতে আহলে, আহলো, আহল সম্প্রদায় অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।যেমন :  আহলে সুন্নাত। আহলে সুন্নাত হলো এমন এক ইসলামি সম্প্রদায় যারা মনে করে হযরত মোহাম্মদ (স) নূর দিয়ে তৈরি, তিনি দেখতে মানুষের মতো কিন্তু মানুষ না, তিনি মানুষ রূপ ধরে পৃথিবীতে এসেছিলেন। আবার সনাতনী ধর্মের দেবতার মতো না। 

দেবতারা তো স্বয়ং ভগবান। ভগবান, ভগবান হয়ে পৃথিবীতে আসতে পারেন না, তাই মানুষ হয়ে পৃথিবীতে আসেন। ভগবান শব্দটি বিশ্লেষন করলে আমরা পাই -- ভগ ধারন করে আছে যে। ভগ মানে যোনি। 

এক স্রষ্টা অভিশপ্ত হলেন। ফলে তাঁর সারা অঙ্গে যোনি দিয়ে ভরাট হয়ে যায়। পরে অভিশাপ তুলে নেয়া হলো সেলামির বিনিময়ে। কিন্তু অঙ্গে যোনি না থাকলেও নামে যোনি চলে আসে। ভগবান।। আদম নবীও সেলামির বিনিময়ে হাওয়ার সাথে অবশেষে পৃথিবীর বুকে সংসার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

ডায়েট

নতুন এক ডায়েট আমদানি হয়েছে। নাম তার ক্রাস ডায়েট। মেদ কমাতে তারা ক্রাস ডায়েট করে অথচ তাদের মেয়াদ কমে যায়। 

জ✔.

আমি চাইবো আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা দিবেন সবাই স্নান করে ঘুমাতে যাবেন। তাহলে বাংলাদেশের মানুষের অসুস্থ হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে, স্বাস্থ্যখাতেও বাজেট কম দিবে হবে, ডাক্তারের উপর চাপ কমবে।

তাতে ঔষধ কোম্পানি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর উপর মনে মনে মামলা দায়ের করতে পারে। তাতে সমস্যা নেই,  জনগন সাথে থাকলে প্রকাশ্য মামলাই মামলা না, আর কে যে বলে মনে মনে মামলা! 

বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

গ.

হঠাৎ বুকের ভেতর যখন শুরু হয়ে যায় এক কোয়া কান্না, এক সোয়া নদী আসে চোখের ধারায়, নিথর এক শব্দ নেমে আসে নদীর চেনাজানা আলপথ ধরে। কতটুকু পেছনে গেলে অনেক দূরের অচেনা পথটা তবুও চেনা হয়ে যায় মন তখন জানে না।

পাগল মনেরও একটি বাড়ি আছে, খুব গোছালো এক বাড়ি, সেখানে সে বাজার করে, রান্না করে, রোজ নিয়ম করে ঘুমায়, আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল করে। কতটুকু পাগল হলে সেই পাগল মনের দেখা পাওয়া যায় এ অবুঝ মন তা জানে না।

আমাদের সবার একদিন সব কিছু ছেড়ে পথে বসতে হবে। কেউ হয়তো দালান বানায়, কেউ বানাবে পাহাড়। বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকা কেবল। ব্যস্ততা এক ঔষধের নাম। কত ঔষধ খেলে হৃদয় ভুলে যায় হৃদরোগ হৃদয় তা জানে না। 

ত.

জীবন এমন করে বয়ে যাবে ফুলে আর ভুলে
তবুও যেন
তবুও যেন
রাতগুলো বেঁচে থাকে রাতের ঘরে 

:

এসো তাই স্বপ্ন দেখি 

চানাচুর

এখন বর্ষাকাল। রোজ রাত নেমে আসে আমাদের চোখে মুখে নাকে। আমাদের ঘুমেরা আর জ্বালাতন করে না। আমাদের স্বপ্নরা আর আমদানি করে না রাতজাগাপাখি। বস্তা বস্তা দুঃখ ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয় দূরে, অনেক দূরে।

শাহবাগ চুপচাপ শ্রীরামচন্দ্রের ধ্যানী আসনের মতো।

আমাকে যদি এখনই পৃথিবীর প্রধান করে দেয়া হয় তাহলে আমি এখনই পদত্যাগ করবো, নতুবা সন্ত্রাস দমন করবো নিজ হাতে বাঁচি কিংবা মরি।

আসন পাবার পর হয়তো আমার মানসিকতাও বদল হয়ে যেতে পারে-- সন্ত্রাস দমনের পরিবর্তে আমার চেয়ারের নিচে থাকবে কতিপয় পোষা সন্ত্রাস। নিজে পদত্যাগের পরিবর্তে আমার বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের কপালে লেখা হবে পদত্যাগের শাব্দিক হিসাব।

আসনের লোভ আসলেই কপালের লাল টিপের মতো, কেবলই নিজেকে দেখায়। 

কাস্টমস

সজ্জনের সজলা মনের মতো তমসানদী আমার
কালে কালে পলে পলে বাড়ছে তোমার রূপের বাহার
রাম-লক্ষ্মন-সীতা শুনেনি তোমার করুন বারন
নদীর আবেদন জানে না বিতস্তা,  ঝমঝম কূপের কারন
প্রিয়তমা ঘোর রাতের আধাঁর, শাপলা ফুল
রোজ নিয়ম করে বাঁশপাতার আড়ালে ঝুলে থাকে গোপন কিছু ভোর

গোপন কথা গোপন থাকে না কাছে কিংবা দূর

বিপাশা নদীর জলে সন্ধ্যার চুলে নামে বাউল নামে উদাসীন এক সুর
দাঁতের সাথে জিব্বা যুদ্ধ করে বাঁচে
সরস্বতী নদীকূল
বাল্মীকির মনে আসা প্রিয়ফুল
বারবার জেগে উঠে সজলা মনের কাছে
মনের তৃপ্তি চোখসুলভ
কাশফুলে না মিটে কাশফুলে না মিটে

বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

একদিকে

একটি নৌকা একদিকে ডুবে গেলে অন্যদিকে ভেসে ওঠে। আপনি যদি নৌকাটি গর্ত করে দেন তাহলে দেখবেন নৌকাটি ভেসে আছে, আসলে নৌকাটি ডুবে যাচ্ছে। 

মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শেখানো

আমি প্রতিদিন রাতে একগ্লাস জুস খাই। পেঁপের বা আমের বা কলার জুস। একটি দোকান থেকেই খাই। পকেটে যেহেতু টাকা এবং মনভর্তি স্বাধীনতা আছে সেহেতু যে কোনো দোকান থেকেই খেতে পারি। কিন্তু খাই না। যেখানেই থাকি জুস খাওয়ার জন্য আমি সেই দোকানে চলে আসি(ঢাকা থাকলে)।

লেনদেন আমি একজায়গা থেকে করতে পছন্দ করি। আমার মোবাইল কোনো কারনে অন্য চার্জজার দিয়ে চার্জ দিলে মোবাইল গুসসা করে অনেকটা বাংলা সিনেমার এককালীন চমৎকার অভিনেত্রী শাবানার মতো। সে তখন ভালোভাবে কাজ করতে চায় না। তাই যেকোনো লেনদেনে আমি বহুগামীতা পছন্দ করি না।

একবছর যাবৎ আমি সেই দোকান থেকে জুস খাচ্ছি। কিন্তু দোকানদার আমার সাথে অন্য কাস্টমারের মতোই আচরন করে। প্রতিদিন দোকানে গিয়ে আমাকে বলতে হয়, ভাই প্রয়োজনে টাকা বেশি নেন কিন্তু আমার জুস যেন ভালো হয়। সে এমন এক ভাব ধরে যেন আমার কথা হয়তো শুনেছে হয়তো শুনেনি।

দোকানদাদের এই বিচারবুদ্ধিহীন আচরনের জন্য মনে মনে আমি খুব কষ্ট পেতাম। আরে বেটা প্রতিদিন তর এখানে একটি ছেলে একগ্লাস জুস খাওয়ার জন্য আসে সে তো স্বাভাবিকভাবেই একটু ভালো আচরন আশা করে। মাঝে মাঝে দেখতাম অন্য কিছু কাস্টমারের সাথে হাসি দিয়ে কথা বলছে এবং সে তার সেবা পৌঁছে দিচ্ছে।

তাহলে আমি কী দোষ করলাম?

সব কিছুরই শেষ দেখার একটি মানসিকতা আমি রাখি। শেষ দেখে শুরুর সিদ্ধান্ত আমি নিয়ে থাকি। ফলে তখন আমার সিদ্ধান্তে এসে জমা হয় অভিজ্ঞতা, বাস্তবতা, নৈতিকতার এক জমকালো খতিয়ান। মনে মনে প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম তার দোকান থেকে আর জুস খাবো না। যেকোনো অভ্যাসগত জায়গা আমি আস্তে আস্তে ত্যাগ করি ( Run fast leave slow)।

চীন থেকে দেশে ফিরলাম। ইদের ছুটিতে সবাই বাড়ি চলে গ্যাছে। আমিও চলে যাবো। রাতে সাইফুল ভাইয়ের দোকানে গেলাম। জুস খাবো। দেখি সে একহাত দিয়ে জুস বানাচ্ছে।

ভাই , আপনার অন্য হাতে কী?

দেখেন না ক্যামন ঘা হয়েছে?

কী করে?

দুইদিন আগে কেটে যায়, তখন ওয়ানটাইম দিয়ে বেঁধে রাখি, ওয়ানটাইম খুলে দেখি এই অবস্থা!

দোকান এখন বন্ধ করেন। সে তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে। তারপর তাকে নিয়ে যাই ঢাকা মেডিকেলে। ইমার্জেন্সি গেইট দিয়ে ঢুকি। চিকিৎসক চিকিৎসা করতে চায় না। তারপরও আমি ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কথা বলাতে ডাক্তারের সুমর্জি হয়। তার আঙুলে কয়েকটি সেলাই দিয়ে একমাসের ঔষধ দিয়ে বিদায় করে।

সে দোকানে চলে আসে, আমিও তাকে সমস্ত ঔষধসেবন বিধি বুঝিয়ে দিয়ে আমার হলে চলে আসি। পরদিন সকালে বাড়ি চলে যায়।

এখনো তার দোকানে প্রতিরাতে জুস খেতে যায়। সে দেখামাত্র একটি হাসি দিবে। কী চমৎকার হাসিরে বাবা! তারপর সুন্দর করে গ্লাস ধৌত করবে, তারপর মজা করে একগ্লাস জুস দিবে।

মাঝে মাঝে অনেক রাত হয়ে যায়। তারপরও দেখি তার দোকান বন্ধ হয়নি। কেন দোকান বন্ধ করেনি তা আমি জিজ্ঞেস করি না। কারন আমি জানি আমার জন্যই তার এই রাতজাগা।

যে মানুষটি আমার চোখে চোখ রেখে কথা বলতো না, সে এখন আমার জন্য রাত জেগে থাকে, হৃদয়ভর্তি ভালোবাসা জমা রাখে। আসলেই মানুষকে ভালোবাসা শেখাতে হয় ....

সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

দুইজন

দুই হাজার এগারো সালে আমি একখান কম্পিউটার কিনি। দুই হাজার তের সাল পর্যন্ত তার সাথে আমার সম্পর্ক ভালোই ছিল। দুই হাজার তের সালের পর তার সাথে আমার সম্পর্ক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। যেহেতু আমি ব্রেকআপ নীতিতে বিশ্বাসী না সেহেতু বলতে পারছি না তার সাথে আমার ব্রেকআপ হয়েছিল কিংবা বলতে পারছি না পিরিতি ভাঙিয়া গেলে নাহি লাগে জুড়া।

আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার আরামসে ঘুমে ব্যস্ত, আমিও তাকে কোনো প্রকার বিরক্ত করতাম না। সে যেখানে ঘুমিয়ে থাকতো সেখানেই আমি আমার দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখতাম। তার কানের কাছ দিয়ে আমার হাত চলাফেরা করত কিন্তু কখনো তার শরীরে হাতের  স্পর্শ সজাগ করেনি।

কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল আমি ডাক দেয়া মাত্র আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার কাজ করতে আরম্ভ করবে। অনেক কম্পিউটার বিশারদ আমাকে অনেকভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে। আমি ভয় পাইনি। কারন আমি সম্পর্ককে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করি, কোনো বৈষয়িক দেয়াল আমাদের মাঝে ফাটল তৈরি করতে পারবে বলে আমার মনে হয়নি। হয়তো দুজন দুপথে দুইভাবে আছি, এর মানে এই নয় দুজন দুজনের কাছ থেকে দূরে চলে গেছি।

প্রয়োজনে কাছাকাছি আসা যেমন যায়, আবার প্রয়োজনে দূরেও যাওয়া যায়। দুজনের প্রয়োজন এক হলে কাছে কিংবা দূরে থাকা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ন বিষয় নয়। প্রয়োজনে চাঁদ লুকিয়ে যায় কিন্তু নদীর মাঝি ঠিকই জানে চাঁদ লুকিয়ে গেছে মানে চিরতরে দূরে সরে গ্যাছে না। ভালো যোদ্ধা যেমন যুদ্ধ করতে পারে তেমনি যুদ্ধ থেকে পালাতেও পারে।

আমি আর আমার কম্পিউটার সম্পর্ক থেকে পালিয়ে ছিলাম সম্পর্কের গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্যে।

আজ আবার কম্পিউটার ওপেন করলাম। চার্জ নেই তাই চার্জ দিলাম। সে ঠিক আগের মতোই আছে। একটুও বদলায়নি। আমার আস্থা ছিল সে বদলাতে পারে না।