বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬

আলোর

এখন আমি আলোতে লুকাই
সামনে রক্ত পেছনে দায়
তুমি এলে তুমিই বললে যাই
স্বপ্নভাজা হৃদয় আমার কার আকাশে উড়াই 

ঝা

মরিচ হয়তো জানে না তার মূল্যায়ন ঝালে 

ঘুম

এখন দেশে প্রচুর প্রজাপতি, ফসল ভালো হবে, আবার শীতকাল, ফসল তো ভালো হতেই হবে, জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি অবশ্যই গ্রহন করতে হবে নতুবা জনসংখ্যা আরও বেড়ে যাবে, শীতকালে কিন্তু প্রসাধনী নষ্ট হয় না, সুতরাং পেটের পীড়া হইতে সাবধান, মুরুব্বীরা কইতেন বাল্বের আলোতে কাপড় না কিনতে 

পাটশাক

পাটশাক আমার খুবই প্রিয়। পাটশাকে আমার সবচেয়ে অপ্রিয় বিচ্ছুর জন্ম। পাটশাকে বিচ্ছুর জন্ম বলে বিচ্ছুকে আমি আমার পছন্দের তালিকায় নিতে পারি না। 

মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬

প্র

প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেলে তারা মাছ কিংবা সাপ হয়ে যায় 

সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৬

দিতে চাইলাম বড়শি, নিতে চাইলে মাছ  

কাফ

পৃথিবীর গার্ডিয়ান বিপ্লবী, বিপ্লবীদের দীর্ঘশ্বাসে থাকে মানুষ 

রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬

শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

অচল

পোষাকের ভীড়ে অচেনা অনেকজন 

সৌ

নাকের ভেতর মরা মানুষের শব্দ শুনতে পাই 

যায়

ঢাকা শহর ইনটেনসিভ কেয়ারে আছে, যেকোন সময় কোমায় চলে যেতে পারে

সিয়াম

প্রত্যেক ইবাদত ভাই ভাই। প্রত্যেক ইবাদত জলের মতো যৌথকোষ। ইবাদত মানে নিজের প্রতি সচেতন থাকা। জলের কোনো অংশে ঢিল মারলে যেমন জলকোষে ঢেউ লাগে তেমনি কোনো ইবাদতে মনোনিবেশ করলে ইবাদতকোষে ঢেউ লাগে।

সালাতে সিয়াম, যাকাত, হজ্ব রয়েছে। সালাত বান্দার সাথে আল্লার সম্পর্ক যা হজ্বের নামান্তর, সালাতে শরীরের যাকাত দেয়া হয়ে যায়, সালাত একপ্রকার সিয়াম কারন সরিষা পরিমান খাবারও সালাতরত অবস্থায় খাওয়া যায় না।

ইসলামে সালাত কেন?

সালাতের উদ্দেশ্য মানুষকে মানুষমুখী করা, উগ্রতা থেকে মানসিকতাকে হেফাজত করা।

কুরানে আছে তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করেছি, তোমাদের আগেও ফরজ করা হয়েছিল যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।

আলোচ্য বিষয় যেন তাকওয়া অর্জন করতে পারো। মানে সিয়ামের উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন।

তাকওয়া হল মানসিকতার স্তর। মানসিকতা মানুষমুখী হলে আইনের শাষনের প্রয়োজন নেই যেখানে প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেক মানুষের কল্যানের চিন্তা করবে। আর ইবাদতের অর্থই হল মানসিক স্টেশন তৈরি করা, মানুষকে আরও আরও মানবিক করে তুলা-- পাঞ্জাবি টুপি বোরখা ধর্ম না, ধর্ম এক বোধগত চর্চার নাম, মতবাদগত আচরনের নাম। 

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

পছন্দের

মানুষের পছন্দবোধ দিয়ে উপলব্ধি করি মানুষের নদী যেখান থেকে সে মাছ ধরে, জল আনে কিংবা যেখানে মানুষ স্নান করে। মানুষের অপছন্দবোধ থেকে অনুধাবন করি মানুষের সাগর যেখান থেকে তার উৎপত্তি। 

রাতে

ঘর থেকে বের হলেই রাস্তা
রাস্তাকে ভর করে নেমে আসে সকাল-দুপুর সন্ধ্যা রাতের মহৎ অন্ধকার

রাজনগর থেকে শান্তিনিকেতন,শান্তিনিকেতন থেকে যাদবপুর-- সবকিছুই রাস্তার হিসাব
লিলিথ নামে তোমার সাথে রাস্তার জের ধরেই দেখা, কথা বলা, কাছে আসা, শুন্যস্থানে অনুভূতির চাষ করা

আবার সরল রাস্তা নামে কেউ কেউ করে রাজনীতি
গাছের তলে বসে রাস্তা গুনে সাধক
রাস্তার কথা বলে অফিসার সাজায় কর্পোরেট হাউজ,শিবলিঙ্গে নারী দেয় পূজা

রাস্তা পেল না বলে বাউল অসহায়
রাস্তার শরীরে পা দিয়ে ছাতা পড়া দেহে নামে আলতা প্রলেপ, অরেঞ্জ চ্যাপষ্টিক

আর রাস্তার?

রাস্তার সেই সুখী মানুষটির মতো ঘর নেই, বাড়ি নেই, অফিস-আদালত নেই, গতর ঢাকার মতো ভালো কেন, একটা ছেঁড়া কাপড়ও নেই 

বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬

প্রেমের

জনম দুঃখী প্রকৃতিকে দেখতে খুব ভালো লাগে। কারন মাইনাসে মাইনাসে প্লাস। আনন্দের কোনো ঘর বাড়ি নাই, দুঃখের বসত ভিটা আছে। কুকুরের কোনো দুঃখ আছে বলে আমার মনে হয় না। কুকুর প্রভুকে খুব তেল দিতে পারে। তেল খেয়েও প্রভু মাঝেমাঝে রাগের ভান করে, আসলে প্রভু কুকুরের প্রতি বিশেষ সন্তুষ্ট থাকে।

আজকে হলের সামনে একটি নারী কুকুর ও একটি পুরুষ কুকুর দেখলাম। তারা বেশ আনন্দে আছে। বিবাহ ছাড়া তারা রাত্রিযাপন করতে পারে।  তারা আনন্দে থাকবে না তো মানুষ আনন্দে থাকবে?

বাবা কুকুরের কাজ কেবল বীর্য দান করা, মা কুকুরের কাজ কেবল একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাচ্চাকে দেখাশোনা করা, তারপর প্রত্যেকের নিজস্ব জৈবিক জীবন।

কুকুর দুটি অনেকক্ষন ধরে প্রেম খেলায় মত্ত। কুকুর ফেইসবুকের ইনবক্সে প্রেম করে না, তাদের প্রেম সরাসরি শারীরিক। কুকুর পরিবারে পরকীয়া প্রেম বলে কোনো কথা নেই, প্রত্যেক প্রেম তাদের জীবনে স্বকীয়া প্রেম।

অবাক হলাম একটি জায়গায়। এরা এতক্ষন ধরে প্রেম করছে কিন্তু বীর্যপাতের দিকে কোনো বিশেষ নজর নেই। জাস্ট অর্গাজম প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত। আমি নিশ্চিত কুকুর দুটি বাউল কুকুর হবে যারা কাম সাধনায় ব্যস্ত এবং যাদের জীবনে বীর্যপাত প্রান হত্যা করার মতো অপরাধ। অবশ্যই আধুনিক বাউল কনডম ব্যবহার করে।

একটা সময় কুকুর দুটি একটি পোকা শিকার করে আনে। পোকাকে উলট পালট করে দেখা তাদের কাজ হয়ে পড়ে। পুরুষ কুকুরটি পোকাটি নিয়ে খেলছে দুলছে, আবার রানীর সাথে শীতের উষ্ণ আরামও শেয়ার করছে।

রাত গভীর হতে থাকে, তাদের প্রেমও গভীর হতে থাকে। তখন গোটা পৃথিবীই তাদের। এমন সময় যদি কোনো মানুষকে চোখের সামনে দেখে তখন তাদের রেগে যাওয়া স্বাভাবিক। তাদের কথা হলো দিনটি মানুষের আর রাত তাদের।

জিয়া হলের ভেতর যেখানে হাসনাহেনা ফুল গাছটি সেখানেই এখন তারা দাঁড়িয়ে আছে। জানি শব্দোচ্চতা কুকুরকে বিশেষভাবে ভাবায়। কিন্তু ফুলের গন্ধও কেন তাদের ডাকবে?

না, গন্ধে তারা ফুলের কাছে আসেনি। ফুল গাছের নিচে কিছু গর্ত, গর্তের নড়াচড়া দেখেই তারা এখানে কিছু স্থির দৃষ্টি রেখেছে।

হাসনাহেনা ফুলগাছে সাপ আসে। জিয়া হলের ভেতর এতো কঠিন বেষ্টনী ভেদ করে এমন জনপদক্ষেপের জায়গায় সাপ আসতে পারে বিশ্বাস করতে পারতাম না যদি না গাছের নিচে গর্তগুলো দেখতাম। ইচ্ছা ছিল বলেই কঠিন বেষ্টনী ভেদ করে সাপ লখিন্দরের বাসরঘরে ঢুকে, সাপের ইচ্ছা সত্যিই বাস্তবের উপরে বাস্তব।

প্রেমিক সাপের চেয়েও প্রত্যয়ী, প্রেমিক সাপের চেয়েও গভীর, প্রেমিক তোমার ছায়ার নিচে অনেক গর্ত করে রাখবে, জাস্ট তোমার গন্ধে কিছুক্ষন স্নান করবার জন্যে, তুমি কোনোদিনই জানবে না, কোনোদিনই জানতে পারবে না। 

চো

চোখের এখন খুব সকাল। একটু পরে পৃথিবীর ঘুম ভাঙবে, সরব হবে ইলেকট্রনিক বাজার 

বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬

মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬

আকাশে

রোজ আকাশের ঠিকানায় চিঠি আসে, আমারও যে ঠিকানা আছে জানে না সে, সে জানে কিন্তু আমার ঠিকানার চেয়ে আকাশের ঠিকানা তার কাছে অনেক আস্থাশীল, অনেক অসীম 

শান্তির

আনন্দকে শান্তিদায়ক বলি না, অনেক আনন্দ রাতে ঘুমাতে দেয় না 

আসা

ফিরে আসা রাত জানে আলোর কান্দন 

সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬

পোস্ট

লেজ নাড়ানো কুকুরের স্বভাব, চোখ এবং মনের বড়ই অভাব 

হাই

আমি অন্ধ
বন্ধ কেন তোমার দোয়ার
নেমে আসো প্রিয় আমার
মনে রেখে মন বলি কিছু কথা
এখন গভীর রাত
সূর্য ওঠার আগে যতসব কালিমা নিপাত যাক
হৃদয়ের চোখে একবার তোমায় যেন দেখি
ভালোবাসার মুখে তোমায় যেন ডাকি
কথা আর কাজের ফাঁকে তোমারে যেন খুঁজি
পৃথিবীর কোটি খেলায় মানুষ জানে কয়েকটা
বেদনা গভীর হলেই শান্তির ভাঁজ
রহস্যের ভাঁজ রেখে দাও অতীতের কোলাহলে
এখন থেকে শুরু হোক হৃদয়মাখা প্রেমের কাজ 

আমি.

তাদের কাছে আমি শব্দটি কেবল পা থেকে মাথা পর্যন্ত। অথচ আমরা ( মা বাবা) থেকে আমির জন্ম, আমরার মধ্যে (সমাজ) আমি লালিত। কোনো কারনে আমরা থেকে আমি আলাদা হয়ে গেলে সেই আমিকে আর সুস্থ বলা যায় না। 

নষ্ট

নষ্ট হচ্ছে ঘর
   নষ্ট হচ্ছে বাড়ি
     নষ্ট হচ্ছে মপর্না সেন
       নষ্ট হচ্ছে নারী
চেপে আছে মন
মৌমাছি ভনভন
নষ্ট হচ্ছে প্রিয় হাসি
     নষ্ট হচ্ছে রাখাল বাঁশি
       নষ্ট হচ্ছে অফিসার
          নষ্ট হচ্ছে টিচার
           নষ্ট হচ্ছে গতকাল
             নষ্ট হচ্ছে আগামীকাল
                  নষ্ট হচ্ছে আজ
                       নষ্ট তাদের সাজ
নষ্ট হচ্ছে অভ্যাস
নষ্ট হচ্ছে ঘুমের রাত
নষ্ট হচ্ছে অনেক কিছু
আকাশ পাতাল উঁচুনিচু
নষ্ট হচ্ছে মায়ের কুলে জন্ম নেয়া শিশুটিটু
নষ্ট হচ্ছে ঘরের চাবি আজন্ম এক সত্য যীশু

রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৬

মিলে

মানুষ তার কষ্টের সমান বড়, মানুষ তার আনন্দের হমান ছোট 

ইট

শ্রমিক বানায় ইট। ইট দিয়ে তৈরি হয় মন্দির মসজিদ। ইটের কোনো ধর্ম নেই। অথচ ইটের শরীরেও লেপে দেয়া হয় ধর্মের তকমা। তারা মন্দির মসজিদ ভাঙে। না। তারা শ্রমিকের রক্ত জলে ভাসায়!

শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬

বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬

মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৬

চট্রগ্রাম

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইবার আসলাম। তিন বছর আগে এসেছিলাম ছোট বোনকে ভর্তি করানোর জন্য, আবার এইবার আসলাম আমাদের সবার ছোট বোনকে ভর্তি করানোর জন্য। আগে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আমার ধারনা ছিল গুড বেটার বেস্ট জাতীয় স্কেলে। এখন সিদ্ধানে অবস্থান নিয়ে কিছু কথা বলা যেতেই পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জনের জায়গা না, জ্ঞান চর্চার জায়গা। মানুষ জ্ঞান অর্জন করে মানুষের কাছ থেকে, তার পারিপার্শ্বিকতার জায়গা থেকে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মানুষ কখনো জ্ঞান অর্জন করতে পারে না। অর্থাৎ জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি পারিবারিক বলয়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পারিবারিক বলয়ের এক জীবন্ত ব্লাকহোল-- এখানে সবাই আসে বিচ্ছিন্ন মানসিকতা নিয়ে কিন্তু এক পারিবারিক মানসিকতা নিয়ে বের হয়ে যায়। চলনে বলনে এমন যৌথ খামার পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল যদিও বিপুলা এই পৃথিবীর কতটুকু আর জানি।

পাহাড় থেকে জুদা হওয়া এক সৌন্দর্য কন্যার নাম চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। পাহাড়ি অতিথি মাঝেমাঝে হৃদয়ের টানে বেড়াতে আসে লোকালয়ে। তাই কোনো  সকালে আপনি হয়তো মর্নিংভ্রমনে হাঁটতে বের হলেন, দেখবেন হরিন এসে আপনার সামনে কিছু গোপন দৃষ্টি বিনিময় করছে। চিতা বাঘও নেমে আসে। তবে রাতের আড়ালে ডাকাতের মতো, আবার সিদুঁরকাটা চোরের মতো চলেও যায়। নাগও কিন্তু নাগিনীকে নিয়ে হানিমুন করতে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে-- ছাত্ররা তাদের বিশেষ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে, তবে অধিকাংশ সময় নাগনাগিনী মনুষ্যআপ্যায়নের কোনো সুযোগই গ্রহন করে না।

টিব্যাগের চা এখানে পাইনি। কোমল পানীয় এখানকার ছাত্ররা তেমন পান করে না! বিটিভির রুটিনমাফিক প্রোগ্রাম এখনো এখানকার পাহাড়ি মাটির ঘরে একমাত্র চ্যানেল। কোথাও কোথাও অবশ্যই ডিশ চ্যানেলের আধিক্য দেখা যায়। ফাস্টফুড দোকানের আধিক্য নেই। জোবরা গ্রামের সিএনজি চালক ওসমান অবশ্যই ইংরেজিতে কথা বলে নিজেকে আন্তর্জাতিক মানুষ হিসাবে প্রমান করতে চায়। তাহলে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বারী ভাই? বারী ভাই তো বারী ভাই!

বারী অর্থ পবিত্র, বিরত থাকা, সব কিছুর উর্ধ্বে। বারী ভাই অন্তত বিয়ে করা থেকে বিরত থেকে নিজের নামের যথার্থ গুরুত্ব রক্ষা করেছে। তার নামে প্রীতিলতা হলের পাশে হতাশার মোড় তৈরি হয়েছে। প্রেমিকা না পাওয়ার কারনে বিনয় মজুমদার চলে গেলেন গ্রামে, হেলাল হাফিজ বসবাস করতে লাগলেন আবাসিক হোটেলে আর বারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। বারী ভাই প্রীতিলতা হলের সামনে যে জায়গাটিতে দীর্ঘশ্বাস উড়ায় সেই জায়গাটি আজকে
 হতাশার মোড় নামে পরিচিত। মিস্টার বারী কিন্তু সত্যিই একজন জ্ঞানী মানুষ, কথায় কথায় ইংরেজি শব্দ বলে নিজেকে আন্তর্জাতিক মানুষ প্রমান করতে চায় না।

জিরো পয়েন্ট থেকে ফরেস্টি বিভাগের দিকে হাঁটতে লাগলাম। আমার সাথে শাওন, বয়াতি, রুবেল। শাওন লেখক মানুষ। চেহারায় মাটির গন্ধ। বয়াতি গায়ক মানুষ। কন্ঠে জীবনচেতনা, মর্মে প্রেম। রুবেল ছোট ভাই। পাহাড়ি রাস্তা পাহাড়ি কন্যার মতো হৃদয়ে প্রেম তৈরি করে, দৃষ্টিতে নিয়ে আসে ওঁম শান্তি।

রাত তখন এগারো। কবিতা স্মরনী রাস্তায় যেতেই মানুষ দেয়া আলো অফ, নেমে আসে প্রকৃতির শাসন। পাহাড় থেকে গাছের ফাঁকে ফাঁকে নেমে আসছে চমৎকার মিষ্টি অন্ধকার, পাহাড়ি অন্ধকার জীবনে প্রথমবারের মতো দেখা, অব্যক্ত ভালো লাগা হৃদয়ের কুরছিতে জমা হতে থাকে-- বাসর রাতে বউকে দেখার মতো পাহাড়ি অন্ধকারকে লাজুক চোখে খুড়ে খুড়ে দেখতে হয়। তারপর চলে পাহাড়ের অনেক ভেতরে কোনও এক গোপন আস্তানায় বাঁশি আর গানের একটানা সুর।
আজ চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছে চলে  আসছে। সরকার আমিন ভাই ফোন করে জানতে চাইলেন আমি কোথায়। তারপর জানতে চাইলেন চট্রগ্রামে চাঁদ আছে কিনা। বললাম খুব আছে, সুন্দর করে আছে, ঝাউফুলের ফাঁকে ফাঁকে আছে।

ছিনাল জোছনা গতরে মেখে আমরা ঝুপড়ি থেকে শাটল ট্রেনের উদ্দেশে হাঁটছি। আমরা বলতে বয়াতি, পাথর, দীপান্বিতা, শাওন, অনিক, সুমন, রুবেল আর আমি এমরানুর রেজা। পাথর চমৎকার প্রানশক্তির অধিকারী এক নারী, সদানন্দময়ী, উচ্ছ্বাসে সাইডুলি। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সে প্রথম কোনো নারী যে আঞ্চলিক সংগঠনের সভাপতি। চরম আড্ডাবাজ। গতরের কালারে অবশ্যই আমি আর সে কোরাম করতে পারি। তবে আমরা কোরামচর্চা করতে রাজি না। আমরা মনে করি মানুষ শেষ পর্যন্ত মানুষের কাছে বেঁচে থাকে, আবার মানুষের কাছ থেকেই মানুষের মৃত্যু ঘটে। তাই আমাদের কোরামের নাম হৃদয়, মনুষ্যহৃদয়।

দীপান্বিতা ব্রাক্ষ্মনবাড়ীয়ার মেয়ে। প্রান থেকে হাসে। অনিকের পান চিবানোর মধ্যে একটি রসিক রসিক ভাব আছে, তার দৃষ্টিতে কোথায় যেন একখান ঢাকনা আছে, সহজে পাঠ করা যায় না। সুমনের হৃদয়স্পর্শী একটি সবুজ মাঠ আছে যেখানে কোনো এক ভোরে দৃষ্টি বিনিয়োগ করার কথা।

আমরা হাঁটছি। বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির সামনে আসতে কোনো এক ছলাৎছলাৎ শব্দের দিকে আমার কান যায়। চমৎকার সুন্দর মিষ্টি এক নারী যেন চাঁদ দিয়ে বানানো এক বিশেষ অবয়ব। চাঁদের দিকে তাকাব, না মেয়েটির দিকে তাকাব বুঝতে পারছি না। আমাকে বুঝতে হবে, কারন আমার হাতে বেশি সময় নেই, কারন আমাকে আজকে বাড়ি যেতে হবে, কারন আমাকে শাটল ট্রেন ধরতে হবে।

শাটল ট্রেন একটি বিনোদন পার্কের নাম। শহরে যে ছাত্ররা থাকে তারা এই পার্কে করে ক্লাস করার জন্য আসে। লাইভ কনসার্ট এই পার্কের নিয়মিত উপন্যাস। এখানে সিনেমার ব্যবস্থাও আছে, আবার রেটিনার মতো বস্তুকে উল্টো করে দেখার প্রবনতাও রয়েছে-- মস্তিষ্ক একসময় তার মতো করে উল্টো সাজেশনকে সোজাও করে নেয়। শাটল ট্রেনে যে লাইভ কনসার্ট চলে সেটা আসলে প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। ফাইনাল রাউন্ড চলে ঝুপড়িতে এসে।

ঝুপড়ি অনেকটাই চায়ের দোকান। ঝুপড়ির টেবিল মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট। চায়ের চামচ, গ্লাসও সঙ্গীতানুষ্ঠানে সহযোগিতা করার জন্য আসে। ঝুপড়ি কেন্দ্রিক গানের যে আসর সত্যিই তা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করার মতো, তারন্য দিয়ে আবেগ খরচ করার মতো।

ট্রেনে উঠে গেলাম। তাদের আন্তরিক চোখগুলো দৃষ্টিসীমানার আড়ালে চলে গেলো। কানে বাজতে থাকে শাওনের কথাটি--

রেজা ভাই, খুব  রুমমুখো হয়ে গিয়েছিলাম, আবার হয়ে যেতে হবে। 

সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬

রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৬

শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৬

সে

মনের জেলখানার নাম প্রেম। প্রেমই পারে মনকে বন্দী করতে। অন্যথায় মন মিশে যেতে চায় দশের সাথে, জলের সাথে। আমার মনও পতেঙ্গার মতো সার্কাস সার্কাস।
মেঘনা মায়ের ছেলে আমি। বঙ্গোপসাগর  আমার খালাম্মা।

জোয়ারতমা, ঢেউয়ের ভাঁজে আমার নামটি  রাখিও জমা 

শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৬

বুঝতে

মানুষের তো বিষদাঁত নেই, মানুষের আছে বিষকথা। বিষদাঁত সরাসরি মেরে ফেলে আর বিষকথা মৃত্যুর যন্ত্রনা দেয়। 

মেনে

গাছের একটি ডাল সবার থেকে আলাদা হয়ে আকাশের দিকে যাত্রা করেছে। আকাশের দিকে যাত্রা করলেও সবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া সমাজমুখী পাপ। সবাই মিলে পাপের উৎসব করলেও নাকি পুন্য।
আকাশমুখী ডালের উপর দিয়ে পাখি উড়ে গেলো। পাখির ছায়া ডালের উপরে নেমে আসার কথা। আসেনি। কারন ছায়া আর ডালের মাঝে বর্ডারসীমানা  হয়ে থাকলে তুমি এবং তুমি। 

যাও

চিলের ঠোঁটে মোরগীর ছাও, কোকিল তুমি গান গেয়ে যাও 

বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৬

সাজে.

সৌন্দর্য পড়ে আছে নক্ষত্র পতনের মতো। হাসিটা ঠিক হাসি নয়, একগুচ্ছ পাহাড়ি অন্ধকার, চায়ের কাপে নেমে আসা আলুতালু দৃষ্টির ক্যাপ-- যারা আছে তারা থাকে, যারা গ্যাছে তারাও আছে-- হৃদয়ের কোনো কৃপনতা নেই, হৃদয় অদেখার মতো অনেক দৃশ্য, অজানার মতো অসীম। হাসি আর মৌনতার কাছে মুরিদ হয়েছি বারংবার-- বলতে চাই ওয়া ক্যান আছো-- জীবন একটাই-- অচেনা বলে কোনো কথা নেই -- চলে আসো যেমন করে আসার ইচ্ছাটা থাকে। 

বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৬

যেন

ব্যস্ততার কুয়াশা ফাঁকি দিয়ে বেদনার সূর্য উঁকি দিতে চায়, ঠোঁটভরা অভিমান নিয়ে যারা চলে গ্যাছে কাশফুল মৌনতায় তারা তো এখনো আছে হৃদয়ের খুব কাছে
রোজ বৃষ্টি নামে রিমঝিম
                  চাঁদও আসে রাতের ডানায়
আকাশটা ঠিক আগের মতো নাই 

মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬

সে যেন

ট্রেনে বসে আছি। স্নিগ্ধা কামড়ায়। প্রথমবারের মতো কোনো ট্রেনকোচকে বাংলাদেশী বলতে ইচ্ছে করছে না। পুরাই আন্তর্জাতিক একটা ভাব। মানুষগুলোর মধ্যে এখনো আন্তর্জাতিক আচরন আহে নাই।

আমার পেছনের সিটে প্রেমিক আত্মা। তাদের চোখাচোখি হাসাহাসি খাওয়াখাওয়ি বেশ চলছে। মেয়েটি পোশাক সচেতন আর ছেলেটি খাবার সচেতন।ছেলেরা খাবার সচেতন হলে সংসারে অভাব থাকে না, মেয়েরা পোষাক সচেতন হলে সংসারে সৌন্দর্যের জোয়ার নেমে আসে। প্রভু তাদের প্রেমকে দীর্ঘস্থায়ী করো।

আমার প্রভু আমার লগে বসবাস করে। আমার প্রভু আমার কাছে এক উপলব্ধির নাম। তাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য আমাকে মন্দির মসজিদে যেতে হয় না। কুরআনে আছে আল্লা বান্দার ঘারের শাখা রগের চাইতে আরও নিকটে। তাই যারা আল্লারে আসমানে রাখতে পছন্দ করে তাদের জন্য আমার সমবেদনা।

আমার পাশের সিটে বসে আছেন তাবলিগি হুজুর আর তার পরিবার। তাবলিগি হুজুর আয়েসভের ভঙ্গিতে পান খাচ্ছেন। তাবলিগি হুজুরের পেছনের সিটে নাগরিক পুরুষ আর তার পরিবার। নাগরিক পুরুষ চাওমিং খাচ্ছে, তার পরিবারও খাচ্ছে তবে মুখহুফার ফাঁক দিয়ে আস্তে আস্তে।

তাবলিগি হুজুর তার ছেলের নাম রাখলেন রিহান। রিহান অর্থ ডালিম। বেদানা, আনার বা ডালিম এক রকমের ফল। ইংরেজি নাম pomegranate। হিন্দি, উর্দু, ফার্সি ও পশতু ভাষায় একে আনার বলা হয়। কুর্দি ভাষায় 'হিনার' এবং আজারবাইজানি ভাষায় একে 'নার' বলা হয়। সংস্কৃত এবং নেপালি ভাষায় বলা হয় 'দারিম'। এর আদি নিবাস ইরান এবং ইরাক। ককেশাস অঞ্চলে এর চাষ প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। সেখান থেকে তা ভারত উপমহাদেশে বিস্তার লাভ করেছে।

আমগো আড়াইসিধার এক বড় ভাইয়ের নাম ডালিম। ভালো বল ও ব্যাট করতো। তার বোলিং ইকোনোমি যথেষ্ট ভালো ছিল। সুতরাং বলতেই পারি আগামী দিনে বাংলার সন্তানদের নাম হবে খেজুর, ফ্রিজ, ট্রেন, মোবাইল।

অনেকদিন পর জানালার ফিক্সড কাঁচ দিয়ে মুক্তা গাছ দেখা হলো। মুক্তা গাছ যেখানে  আছে  সেখানে এখনো পুঁজিবাজার আযান দিয়ে প্রবেশ করতেই পারে নাই। মুক্তা গাছ দিয়ে পিস্তল বানিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ খেলতাম। আহারে, কাকতাড়ুয়া শৈশব আমার! শীতল পাডির উষ্ণ শীতল ছোঁয়া এখনো ডানা মেলে হৃদয়ে হৃদয়ে-- হেতেরে আমরা দিনে দিনে যারগু দুনিয়ায় নিয়ে যাচ্ছি।

মুক্তা নামে যে মেয়েটি আমার আড়াআড়ি বসা সে যথেষ্ট মার্জিত রুচির অধিকারী। পরিধেয় পোষাক দেখে বলাই যেতে পারে মেয়েটি তার ফিগার সম্পর্কে সচেতন। সচেতন শত্রুকেও আমার ভালো লাগে। যদিও আমি কোনো মানুষকেই শত্রু মনে করতে পারি না।

মুক্তা তার ট্যাবলেট কম্পিউটারে শব্দ মুভিটি দেখছে। শব্দ মুভি অথবা শব্দ মুভির মতো কোনো একটি আর্টফিল্মের একটি সংলাপ এখনো আমার কানে লেগে আছে --``পাগলকে আমরা পাগল বলি কেন, তাদের সংখ্যা কম বলেই তো, যদি তাদের সংখ্যা বেশি হতো?

পাগল শব্দের সমার্থক শব্দ বাতুল। বাতুল শব্দ থেকে বাউল শব্দের আগমন বলে অনেকে মনে করেন। আবার অনেকে মনে করেন বায়ু শব্দের সাথে আরও কিছু যোজনে তৈরি হয়েছে বাউল শব্দটি।

বাউল সম্প্রদায় অবশ্যই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখেন। লালন ফকির নিজেও বলেছেন হাওয়ার গতি আগে জানবার জন্যে। আসলেই মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত এই সহজ প্রক্রিয়াটির জন্য বেঁচে আছে।

কে বলে জীবন এতো জটিল?

জীবন অত্যন্ত সহজ সুন্দর সত্য। তাইতো বাউলদের সহজিয়া জীবন। তারা সবকিছু উপর থেকে দেখে। ফলে অনেকের কাছে যা পাহাড় পর্বত নদী নালা তাদের কাছে  তা সমতল ভূমি। তাদের কাছে বর্নপ্রথা গুরুত্বপূর্ন নহে, বর্নচোরা সত্তার আবিষ্কারের জন্য বাউলদের নিরন্তর প্রচেষ্টা।

অক্সিজেন আসার সাথে সাথে ব্যানারে একটি চমচমে বাক্য দেখলাম যেখানে লেখা সবার উপরে দেশ। জানতাম সবার উপরে মানুষ। আরও কত কিছু যে নতুন করে জানতে হবে ভগবানই ভালো জানেন। 

সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬

পানাম

হেমন্তের অলঙ্কার কাশফুল। কার্তিক মাসের শেষ পর্যায়ে হেমন্ত তার অলঙ্কারকে নদীর জলে বিসর্জন দেয়। কাশফুল জলে জলে ভাসতে থাকে। কাশফুলের বিরহে প্রকৃতিতে কান্দন শুরু হয়। কার্তিমায়া কান্দন। একদুই সপ্তাহ ধরে এই কান্দন চলতেই থাকে। এমন সময় ঘর থেকে বের হতে মানা। মাটিবাংলার তখন অন্য রকম সাজ। ঘরে বসে চাল ভাজা খাওয়ার মজাই তখন আলাদা।

কয়েকদিন টানা বৃষ্টির পর মাটিবাংলায় নেমে আসে কুয়াশার উঁকিঝুঁকি। কাশফুল তখন আকাশে উড়ে-- শাদা শাদা কাশফুল। কাশফুল আকাশে উড়বার সাথে সাথে তাদের নাম পরিবর্তন হয়ে বক নামে পরিচয় লাভ করে। বিকালের আকাশে বকের মেলা-- শীতের আগাম বার্তা বকের পাখনার নিচে বসবাস করে।

ছয় ঋতুর দেশ হলেও মূলত দুই ঋতুর সাথে মানুষের সম্পর্ক একটু বেশি-- গ্রীষ্ম ও শীত। শীত আসে আসে এই সময়ে পঙ্খিরাজ খাল কোন নারীর চোখের জল ধারন করে বিকশিয়া রবে বয়ে চলতো জানি না, জানি না পানাম নগরে এই সময়ে কোন প্রজাশত্রু প্রভু সাকির পেয়ালায় মাতাল হয়ে নারীর ঠোঁটনদীতে বাইত যৌবননৌকা।

মেঘনা আর শীতলক্ষ্যাকে মাথায় পায়ে ধারন করে বুকপীঠ হৃষ্টপৃষ্ট করে বড় নগর কিংবা খাস নগর নয়, পানাম নগর। এই নগরে সন্ধ্যা হলে শোনা যেত অলি-কুতুবদের সহজিয়া সামাসুর, মন্দিরের কীর্তন আর বাউলদের বাতাসি কথাসুর।
ছোট্ট ছোট্ট কামরায় এখনো কোমরবিছার আওয়াজ শুনতে পাই, মসলিনের কাপড় পরে রানী প্রায় মহিলাটি পুরুষের সামনে বসে আছে পানের পসরা সাজিয়ে।

আর আমি তখন বাতাসের সাথে বন্ধুত্ব করে পৃথিবীতে নেমে আসার পরিকল্পনা করছিলাম। নীলকুঠি হয়তো আমার আগমনের কথা হালকা অনুমান করতে সক্ষম হয়েছিল। সোনাবিবির সাথে দেখা হওয়ার কথা কিন্তু হলো না। সোনাবিবির দীর্ঘশ্বাস জলের শব্দের মতো কানে আসতেছে কেবল। 

শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬

দ্র

দৃষ্টির সীমানা থেকে যত দূরে যাবে ততই কাছে রচনা হবে কালের সীমানা, ইচ্ছামতো দৌঁড়াবে জানি দূরে যেতে পারবে না

জানে

কাতিকমাইয়া বৃষ্টি সাপের মতো সুড়সুড়ি তুলে মনের শরীরে, চোখের প্রান্তিক এলাকায় নেমে আসে ক্লান্তির ভায়া, মায়া তো চামার বাড়ির অনিলের বাবার মতো হাসি মুখে কথা বলা লোক-- শান্তির ঘরে অপরাধী মদের আসর জমে, অলস লোক অযথা শান্তি খোঁজে, অযথা মদের পেয়ালা সাজানোর লোকাগমের কমতি নেই এমন কাতিকমাসা ঘরে-- সাতদিন ধরে কাতিককন্যা নাইওর যাইবো বাপের বাড়ি, পাঁচদিন ধরে ফেরত আইবো তাইনের ঘরে, এখনই সময় পুরাতন গাতা ছেড়ে নতুন গাতায় যৌবন ডুব দেবার, অনিয়মও মাঝেমধ্যে বড় বেশি নিয়মের দাবি রাখে আপনে পরে ঘরে বাইরে 

শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৬

মানে

গাছের সাথে যখন ফলের সম্পর্ক থাকে না তখন সেই ফল প্রানীর কাজে আসে, ফলমাংসের সাথে যখন বীজের সম্পর্ক থাকে না তখন সেই বীজ পৃথিবীর কাজে নামে, বীজের কাছ থেকে যখন বীজমূল আলাদা সংসার করে তখন তা জীবনের কাজে আসে।

মৃত্যু এক জীবনমুখী ভ্রমনের নাম। 

বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬

!

সাবালক পৃথিবী নাবালক মানুষের হাতে 

উপায়

বুঝতে হয়েছিল আমার, বুঝতে হয়েছিল তোমাদের, নদীর বুকেও জমা থাকে বন্য কিছু আবেগ, আলেয়া ঘুড়ির সাথে নাটাই ছেড়েছে গতকাল আজ আর আগামীকালের সম্পর্ক, সুতা আছে আপন সুখে বেশ, নাটাই আছে বিশ্রামে, ঘুড়ি হালি হমানে উড়ে হমানে উড়ে, দূরত্ব সুতার সংসারে একমাত্র মনের, মন তো ভালোই থাকে কাদায় কিংবা জলে 

বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬

সাথে

জীবনডারে ব্যাখ্যা করার আগে মনডারে একবার চোখের জলের সুইমিংপুলে সাঁতার দিয়া আনেন মিয়া  

মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১৬

শাখাওয়াত

আমার লেখকবন্ধু শাখাওয়াত। ইতিমধ্যে সে তিনচারটি বইয়ের পিতা। সে আবার ফোলটাইম রাজনীতিও করে। সে আবার বিসিএসও দিয়ে থাকে। রেজাল্ট ভালো না হলেও তার মন খারাপ হয়। বই মেলা আসলে তার একটি বই বের হওয়া চায়ই চায়। উপন্যাস নামে তার বিগত বই বাজারে এসেছে। এখন গল্প নামে নতুন বই বাজারে আসবে।

তার আসন্ন গল্পের চরিত্রের নাম কোরবান। কোরবান ঢাকা শহরে লেগুনা চালায়। রাবেয়া নামে একটি মেয়েকে একবারের দেখায় ভালোবাসতে শুরু করেছে। কিন্তু রাবেয়া থাকে গ্রামে। কোরবান থাকে শহরে। রাবেয়ার কথা মনে হতেই কোরবান একটি গান ও একটি গজল গাইতে শুরু করে। গানটি হলো : তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই। আর গজলটি হলো : ঐ মদিনার পথে ঐ মদিনার পথে। পথে শব্দটি উচ্চারন করতে না করতে কোরবান চিৎকার করে ওঠে, রাবেয়া রাবেয়া শব্দ তখন কোরবানের সুরে চলে আসে।

রাবেয়া, কোরবানের সাথে আমাকে পরিচয় করাতে শাখাওয়াত দুইতিন ধরে আমার খোঁজ করছে। আমি তো আজাইরা কাজ বেশি করি। তাই প্রয়োজনমতো কাউকেই সময় দিতে পারি না।

আজকে আমিন ভাইয়ের সাথে মেডিটেশন ক্লাসে গিয়েছিলাম। আমিন ভাই ছিলেন আলোচক। আলোচ্য বিষয় মুহূর্তে বাঁচা সংক্রান্ত বিষয়াদি। তিনি চমৎকার আলোচনা করলেন। হলভর্তি শ্রোতা। হলভর্তি পীনপতন নীরবতা। কারো নজর এক মুহূর্তের জন্য অন্য দিকে ছিল না। চাঁদের দিকেও মানুষ এতো মনোযোগ সহকারে দৃষ্টি বিনিয়োগ করে না।

করবে কেন?

চাঁদ তো আর আমিন ভাইয়ের মতো জীবনবাদী কথা বলতে পারে না। যে রিক্সা  দিয়ে আমিন ভাইকে বাসায় রেখে আসলাম সেই রিক্সা করেই  হলে চলে আসি। যেহেতু সকাল সকাল হলে ফিরতে পারছি , ভাবছি শাখাওয়াতকে ফোন দেই। ফোন দিয়ে রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি সে সালাত পড়ছে। সালাতে থেকেই সে আমাকে বলে বসো। আমি একসাথে অবাক এবং স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ার অবশ্যই কারন আছে।

আমার ঠাকুরদা যখন সালাতে মগ্ন থাকতেন তখন ঘরের বাইরে থেকে বুঝতে পারতাম। মালগাড়ির মতো আস্তে আস্তে এক ইউনিক সুরে আয়াত আবৃত্তি করতেন, আর ঘরের ভেতরে গেলে সালাতে থেকেই তিনি জানতে চায়তেন কোনোকিছু।

ধরেন, সালাতে থেকে তার জানতে ইচ্ছা হচ্ছে এখন কয়টা বাজে, যখনই কাউকে চোখের সামনে দেখতো তিনি জিজ্ঞেস করে বসতেন কয়টা বাজে রে। ঠাকুরদার প্রশ্ন শুনে মনে মনে হাসতাম। অবশ্যই আওয়াজ না করে। আওয়াজ করলে আবার জিজ্ঞেস করবে হাসো কেনো।

একদিন ঠাকুরদা ফজরের সালাত পড়ার জন্য মসজিদে গেলেন। সালাত শেষে সবাই হাসতে শুরু করে।

কেন কেন?

কারন ঠাকুরদা ঠাকুরমার শাড়িকে চাদর ভেবে পাঞ্জাবির উপরে পরিধান করে মসজিদে যায়। সাখাওয়াতও যখন কাউবয়ের ক্যাপ পরিধান করে সালাত সম্পূর্ন করার কাজে ব্যস্ত তখন আমার চরম হাসি পাই।

এখন সে কোরবানকে আমার সামনে উপস্থাপন করছে। কোরবানের প্রতি সে বিশাল ক্ষুব্ধ। কোরবান নামক কাল্পনিক চরিত্রটি  শাখাওয়াতের বাস্তব জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাকে লিখতে হচ্ছে নতুবা সে আটদশটি ম্যাথ প্রেকটিস করতে পারতো। তাই শাখাওয়াত প্রতিজ্ঞা করেছে কোরবান চরিত্রটিকে সে ন্যাংটা করে ছাড়বে। এখন সে কীভাবে কোরবানকে ন্যাংটা করবে এই থপথপে পথপরিক্রমা নিয়ে ব্যস্থ, আমিও রুমে চলে আসার জন্য ব্যস্থ হয়ে পড়ি ....