রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৪

পাতার মরণ

আমার পৃথিবী পাতা নয়
পাতার শিরা-উপশিরা কিংবা পেরিফেরাল পুলক অথবা চোখের পাতা আর চোখের দূরত্বের মতো ছোট
কাহ্ন পার গুরুশাস্ত্রে ভক্তি নেই শ্রীরাম
নিজের মনে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করি
গুরু -শিষ্য আমার ইচ্ছার এপিঠ -সেপিঠ
তবু ঝড়ো হাওয়া তুমি আশ্রয় নিলে এই জীবের ডানায়
আমাকে জানলে তুমি কানায় কানায়
আশা দিলে নিয়ে যাবে স্বপময় শুন্যদেশে
শুন্য হয়ে গেলাম, স্বপ্ন আসেনি
ঝড়ো হাওয়া চলে গিয়ে ভুল করোনি
ক্ষুদ্র জীবন, কষ্ট আর কত বড়!
ও সাথী আমার দেখে যেও পাতার মরণ

রক্ষক আমি, না তুমি

সাজানো বাস্তবতা = দিন
চোখের শান্তি =ঘুম
ঘুমের বাড়ি = রাত

রাত হয়ে বসে থাকো তুমি --রাহমান --ভগবান --জয়গান! দিন হয়ে বয়ে চলি মুহ্যমান স্রোতে বহমান তীরে। তাহলে রক্ষক আমি, না তুমি? 

যুগপূর্তি

আধুনিক নারী :    হাসির ব্যথায় নীল হয়ে যায়
মধ্য যুগের রমণী : নীল ব্যথায় কৃষ্ণকে চায়
প্রাচীন জননী : আপনা মাংসে তরতাজা কারবার 

শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৪

সঙ্গ

জুতা নির্বাচনে আর সঙ্গ নির্বাচনে খুব বেশ চোজি হতে হয়। দুটাই চলার মিহি গতিতে থামিয়ে দিতে পারে কিংবা জীবনের গতিতে করতে পারে মসৃণ বেগবান।। 

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৪

নদী নয়, সাগর ই ছিলাম

নদী ছিলাম
ছোট হাওর কিংবা ডোবা  নয়
সাগরই ছিলাম সাগরিকা
অভিজ্ঞতার ঝকমকে রস যদি জ্ঞান হয়
জ্ঞানী নয়, জ্ঞান জন্ম হচ্ছে  সবুজে শ্যামলে
জীবন যখন টাইগ্রিস-ইউফ্রেটাস যূপকাষ্ঠে পূর্ণ
ঝরনাকন্যা স্বজাতি ত্যাগ করে নীলসাধু জলে
তখন তুমি গানিতিক মানুষ জলের পাড়ে
আমাকে হিসাব কর ত্রিকোণমিতিক এ্যাঙ্গলে
পাই -থিটার মানে মাপো আমার মানসিক বাহু
আমিও হয়ে গেলাম গানিতিক ফর্মুলা
এখন তোমার চোখে জীবন নেই
আমি আছি
নদী নয়, সাগরই ছিলাম

বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৪

ইতিহাস এক নর্থপোল

রুমের ভেতর ঘর আঁকি
মনের ভেতর ছবি
কল্পনায় ব্লাকধোঁয়া
রক্তস্রোতে কবি
ইতিহাস একটুর উপরে আধটুকু অলস। তোমার পাশে কাঁটাবন রাখবেনা। তুমি হবে কাঁচালেবু মসৃণ। অ্যাপোলো,  চোখ রাঙালে কেন? প্রেমের মরা জলে ডুবে না। জ্বল এবার, ড্যাফনি ফিরেও তাকাবে না। কিউপিডের ধনুক তেল মাখে না।রক্তচোষা চিবুক ফুলিয়ে চলে। ইতিহাস মানে  জলস্রোত কবি, নারীভোলানো ছবি, আমার উপর তোমার হাত, কল্পনার রবি।
তবু আমি রক্তস্রোতে কবি
শুষ্ক পাথরে প্রেমের নবী 

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৪

ক্লান্তির কান্না

পাখাগুলোর ক্লান্তি নেই ।ক্লান্তি নেই তার প্রতিবেশী টিউবলাইটারের ।মৃত মানুষের কান্নার মতো নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে ফ্লোরের উপরে দাঁড়ানো বেঞ্চগুলো ।যেন পাখা আর টিউব -লাইটারের উদারতাকে মাথা নত করে কৃতজ্ঞতার উৎসবে  শরীক করল নিজের সুবোধ সত্ত্বাকে ।জানালাগুলোও অলস নয় ।রুম মহাশয়ের সহানুভূতি ,সহমর্মিতা  প্রকাশক জানালার ইচ্ছাশরীর ।অবসরের ফুরসত নেই ক্লাসরুমের ধূলোবালির ।ছাত্রদের পায়ের আঘাতে আঘাতে মোট-তাজা হচ্ছে ধূলোর শরীর ।ছাত্রদের পা এখন প্রায় অলস ।

 দুটি ক্লাস হয়েছে ।তৃতীয় ক্লাসের জন্য প্রস্তুত ছাত্রদের ঝুলন্ত  বিবেক ।সদ্য জাগ্রত নবোঢ়া মেয়ের চুলের সাদৃশ্য প্রতিটি ছাত্রের পৃথক পৃথক সত্ত্বা ।ঘড়ির কাঁটার আলিঙ্গন ক্লাস হওয়ার সঠিক সময়ের যৌবনা স্রোতে ।তবুও আসছেন না মাননীয় শিক্ষক !ইউনিভার্সিটির টিচার বলে কথা । সময় যাদের হাতে জন্ম নেয়, তারা জন্মে না!  স্বর্গলোকে তারা দেবতা ছিলেন, তাইতো পৃথিবীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। যাদের কাছে কলিজা পোড়ার ঘ্রাণ পাওয়া যায়। প্রতিনিয়ত পুরোনো হতে হয় নতুন মোড়কে।  তবুও লজেন্স মানসিকতায় সময় কাটায় অন্ধপ্রদেশ!
 -স্যার আসছে ,স্যার আসছে
 -এই ওঠ ,আমাকে বসতে দে
 -দোস্ত ,তুই ভেতরে যা না

  সেকুলাসে বেজে ওঠে ভয়ার্ত প্রজার করুণ ধ্বনি ।উড়ন্ত বাতাসগুলোও মেনে চলে জনাব স্যারের হর্ষধ্বনি ।স্যারের পা রাজসিক উৎসবে  ওঠা -নামায় ব্যস্ত ।ক্লাসরুম চুপচাপ ।

 -১০২ ,১০৯ ,২০৯ আছো ক্লাসে
 -নেই স্যার
 -১০২ ,১০৯ ,২০৯গত ক্লাসেও ছিল না ।যারা গত ক্লাসে ছিল তাদের সবার উপস্থিতি দিয়ে দিচ্ছি  ,সময়ের দাম আছে

ক্লাস চলছে ।প্রজাকে নীল চাষ করার পদ্ধতি শেখানোর অবিকল নকল ।ক্লাসের দেয়ালে লেখা মিটমিট বাক্যগুলো পড়ছে রতন

   -কাউকে দাম দিও না
   -দাম দিলে লাভ নেই
   -দাম না দিয়ে চড় দেয়া উচিত
  -তাহলে কি চড় ফ্রি খাবে
 - আর কতদিন এফ ,এম ,রেডিওর লেকচার চলবে
 উদ্ভট বিরক্ত নিয়ে স্যারের বক্তব্য আশ্রয় নিচ্ছে রতনের কানের আশ্রমে
  -শাজাহান নাটকের বঙ্গ বিভাজন ব্যাপক প্রভাব ফেলে
  -সব মানুষের মধ্যে একজন কিং লিয়ার বসবাস করে ।
  -শাজাহানের একদিকে রাজত্ব অন্য দিকে পিতৃত্ব ।
হঠাৎ  নেমে আসে স্যাঁতস্যাঁতে অন্ধকার ক্লাসের চোখে -মুখে ।আলো -তৃষ্ণা দৃশ্যত ক্লাসের সন্তানদের অভিপ্রায়ের উপত্যকায় ।চুপচাপ বসে আছে জনাব স্যারের  হাসির সৌরভ ।স্যারের কপালের উঁচু ভিটায় দু -চারটে লবণাক্ত পানির ফোঁটা -- সম্মুখের ফাঁকা -ফাঁকা কয়েকটি চুলের শেকড় থেকে উৎসারিত ।কারণ মামলা করার কোনো ব্যাপার নয় ।টিউবলাইটার ও পাখাগুলোর শক্তি নেই ।মিনিট খানেকের মধ্যে তারা শক্তি লাভ করে -- জ্বলে ওঠে টিউবলাইটারের আত্মা , পাখাও ব্যস্ত হয়ে পড়ে  ।বিজয়ের আলো সবুজ হয়ে ওঠেছে স্যারের চোখে-মুখে ,প্রকাশ করতে থাকে তরতজা সবুজ ভাষা -
 -তোমরা শয়তানের প্রার্থনা করছিলে
 -আমি ঈশ্বর প্রার্থনা করছিলাম ,রাবীন্দ্রিক ঈশ্বর ।
ঈশ্বর আকাশে থাকেন না
 স্যার আবারও হাজার বছরের পুরনো কাজে ।লেকচারের আয়োজনে ।দুর্বার ফ্যালফেলিয়ে তাকানোর সীমানা স্যারের কপাল ক্যাম্পাস ।লেকচার দেখছে ,শুনছে না ।কানে তার ইয়ার ফোন ।দুর্বার পেছনের বেঞ্চে বসে আছে দুর্জয় ।সে দুর্বার চুলের সৌরভ পান করছে
 -ইশ !চুল কত সুন্দর ।
 -বনলতা না ,কাজললতার চুল ।
দুর্জয়ের উরুর পাদদেশে চিমটিকাঁটা রোপণ করে মাসুম ।আঙ্গিক ইশারা
 -স্যার তোর দিকে তাকিয়ে আছে ।
 -ভালো করে বস ।
স্যার গর্জে ওঠে
-এই ছেলে তোমার সমস্যা কি ?ক্লাস করতে ভালো লাগে না ,তো চলে যাও ।
-না স্যার ব্যাপারটা এমন নয় ,রাতে ঘুমাতে পারিনি ,ছারপোকার বাড়াবাড়ি ।তাদেরকে রক্ত-কর দিয়ে ঘুমাতে হয় তো
-ঠিক আছে ,বসো ।
যথারীতি আবার ক্লাস চলছে ।যে ক্লাসের অর্থ খুঁজে পায় না পর্দা ।
 পর্দা ।ক্লাসের নারী বিপ্লবী ।হাস্যেজ্জ্বল তার নীরবতা ।চিন্তার চেতনা কেবল শোষণ মুক্তি ।পুঁজিবাদের অঢেল দল নিয়মিত যেন ক্ষতবিক্ষত হয় তার বিশ্বাসের তলোয়ারে ।নিয়মিত ক্লাস করা ,পুঁজিবাদের দালালদের জি স্যার ,ইয়েস স্যার সম্বোধনে মোটা মোটা মার্কস তুলে নেয়া তার আর্জি নয় সময়ের ঈশ্বরের কাছে ।
  আজ ক্লাস নেয়া নির্ধারিত সময়সূচিতে ছিল না। স্যারই নির্ধারণ করলেন ।
  নামকরা ইউনিভার্সিটির নামিক টিচার বলে কথা ।তাও আবার অধ্যাপকের তালিকায় বেশ মোটা দাগে নাম তিনার ।পর্দার চেতনা ভাষার আবেদনে বিকশিত -
-স্যার ,বাইরে যাব
-কেন ?
-মিছিল আছে
-যদি যেতে চাও ,তবে যাও ,আমার ক্লাসে আর আসতে পারবে না
-ঠিক আছে (পর্দার চলে যাওয়ার নীরব ভাষা )
- কোন মিছিলে গেল ও ,'বাম রাজনীতির মিছিল স্যার' বসে থাকা বিড়াল ছানাদের উচ্চারণ ।
-'কি শেখায় নেতারা ,জিজ্ঞেস করব' বাতাসে আছাড় খেয়ে পড়ে একসময়কার সক্রিয় বাম রাজনীতির সুবিধাভোগী অধ্যাপকের ঢুল ঢুল উচ্চারণ ।সময় তাকে সুযোগ-সুবিধার মেকআপের ফ্রেমে বন্দি করেছে ।

 সময়ের পায়ের মতো ক্লাস চলছে ।চশমার ফাঁকে বেরিয়ে আসছে স্যারের প্রতিভার ধোঁয়া ।যা কি না অদৃশ্য মননের দৃশ্যত জীবাণু ।বিড়ালছানাগুলো কলমের হাতিয়ারে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে শুভ্র পাতার কোমল বুক ।

 মাথার উপরে মাকড়শার জালগুলো কুসুম ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরেছে ছাদের শরীর ।তবুও কেন যেন মাকড়শার  স্বাস্থ্য ভঙ্গুর হওয়ার ব্যালেন্স জের প্রকাশ করে ।নৈতিকতার খতিয়ান এলোমেলো ,এলোমেলো ইউনিভার্সিটির খতিব !


সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৪

মৃত্যু

আমার জন্ম হয়নি; মৃত্যু, সে তো অনেক পরের যাত্রা। তেলাপোকা ঘোষণা দিয়ে নিজের দেহ দান করে যায়। আর আমিসহ অনেকেই ঘোষণা ছাড়া থেকে যায়, রেখে যায়। 

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৪

কবিতার মানুষ, মানুষের কবিতা

সাগর, মহাসাগর ।সংখ্যার বাঁধনে বাঁধা যায় না এমন অ-বলা ,অবর্ণনীয় জলরাশি বুকে পিঠে ধারণ করে তাদের দিনযাপন ।প্রতিটি জলকণার জীবন ,মনন ,প্রকৃতি ,প্রত্যয় ,জীবনবলয়ের অব্যয় ভিন্ন থেকে ভিন্নতর কখনো কখনো ভিন্নতম। কখনো এক জলকণাবর্গের সাথে অন্য জলকণাবর্গের প্রচণ্ড তর্জন ,গর্জন ,আন্দোলন হয়ে থাকে । তার ফলস্বরূপ জন্মগ্রহণ করে তৃতীয় একটা দৃশ্যমান কিছু -ফেনা- তাই কবিতা ।
 আর কবি হলেন সেই ব্যথা ,কথা ,প্রথা যিনি বুঝেন কখনো কখনো বোঝান ।তবে কবি কখনো গৃহ শিক্ষকের মতো বোঝানোর উদ্দেশ্য কলম ধরেন না । তাঁর কলম কথা বলতে আরম্ভ করে যখন চিন্তার গোলায় আগুন লাগে ।আগুনের দুটি রূপ -- আলো ,তাপ । কখনো তাপের তাড়নায় কবি লেখেন আবার কখনো আলোর ঘ্রাণে লেখেন ।কবির লেখা মূলত অন্তরে চাষকৃত সম্প্রসারিত আগুনের অনুপ্রকাশ । আবুল হাসানের কবিতায় যখন পায়চারি করি তখন মন বলে তিনি যথার্থই বলেছেন--
ঝিনুক নীরবে সহো
ঝিনুক নীরবে সহো
 ঝিনুক নীরবে সহে যাও
ভিতরে বিষের বালি
 মুখ বুঝে মুক্তা ফলাও
সাগর ।ঝিনুকের দেশ ।সাগরের জল যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন ঝিনুক খাবারের সন্ধানে বের হয় ।জলের ঘুম হঠাৎ আসে হঠাৎ  চলে যায় ।তাইতো সাগরের মাতৃরূপ ও বীররূপ দৃশ্যমান ।ঝিনুক শান্ত , ঘুমন্ত সাগরের জল থেকে 'প্লাঙ্কটন' খাবার হিসেবে গ্রহণ করে ।হঠাৎ সাগরের তর্জন ,গর্জন শুরু হয়ে যায় ।বালি ঢেউয়ের দেয়ালে আছাড় খেয়ে ঝিনুকের মুখের ভেতরের কাঁচা মাংসে আশ্রয় লাভ করে ।চোখে বালি পড়া অসহ্য ।তার চেয়ে অসহ্য বিব্রতকর অবস্থায় মুখোমুখি ঝিনুক । কাঁচা মাংসে প্রচণ্ড পেইন অনুভূত হয় ।আর এই পেইন থেকে রক্ষা পাওয়ার নিমিত্তে সে রস নিঃসরণ করে-  বালিকে কেন্দ্র করে । নিসৃত রস বালির চারদিক ঘিরে ফেলে ।এক সময় বালির চারিদিকে একটা আবরণ তৈরি হয় - অনেকটা মার্বেলের মতো - তাই মুক্তা ।ঝিনুক সাগরের গভীর দেশে চলে যায় (ঝিনুকে মুক্ত হলে চুপ মেরে যায় মুখ মেলে না /যায় যে চলে গভীর জলে /কিনারেতে আর আসে না)। সাগরের গভীর দেশে চলাচলকারী ঝিনুক আর পূর্বের সামাজিক ঝিনুক এক নয় - সে এখন মুক্তাওয়ালা ঝিনুক ।এক ঝাঁক ডুবরি তাকে  খুঁজতে সাগরের গভীর দেশে তল্লাশি চালায় ।কারণ পেইন ঝিনুকের মধ্যে জন্ম দিয়েছে মুক্তা -  কবিতা ।যা ঝিনুকের ব্যথার ফল ।
হে ব্যথা তুমিই কবিতা ।তাইতো অন্তরে ঘুমিয়ে থাকা অনুভূতিকে বেত্রাঘাত করে ভাষার আস্তরণে নিয়ে আসো -  প্রলেপ দিয়ে যাও বিভিন্ন রীতিবদ্ধ নিয়মের সারিবদ্ধ প্রাপ্তির । তুমি বেঁচে থাক ব্যথা ,বেঁচে থাক ।লালিত -পালিত হও তুমি প্রতিটি সৃষ্টিশীল সত্তায় –
 আমি একটা পাখি পুষি
 গোলাপ ফুলের কুঁড়ি পুষি
 ব্যথা ।
 কুড়ির থেকে গোলাপ ফোটে
 পাখি নাচে পাখি ওড়ে
ব্যথা নাচে ব্যথা ফোটে
 ব্যথা।
                             আমি একটা ব্যথা পুষি । আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
অনেকে মনে করেন কবি সমাজের অসঙ্গতি সামাজিক মানুষের কাছে তুলে ধরেন ,সমাজকে বদলানোর চেষ্টা করেন ।আসলে কী তাই ? সমাজ বদলানোর জন্য কী তাঁর লেখনি ।মোটেও না । কবিতার মানুষটির কাছে কবিতা হলো খাদ্যগ্রহণের মতো একটি জৈবিক কাজ । বনে বাস করে সাধক । তাকে খাদ্যগ্রহণ করতে হয় ।বনে চাল ,মাছ পাওয়া যায় না । রান্না করার উপকরণ এখানে স্বপ্ন ।তবুও সাধক বাঁচতে চায় ।পাখিরাও সেখানে বাঁচে ।ফল খেয়ে ।সব ফল আবার সাধকের খাবার নয় ।পাখি যে ফল খায় ,সাধক তা খেতে পারে ।কারণ ,পাখি যে ফল খেয়ে মারা যায় না ,সাধকও মারা যাবে না ।সাধক --পাখির খাদ্য ফল ,নিজের খাদ্য হিসেবে বেছে নিলো ।পাখি কোনোদিন বলেনি তুমি তা খাও ।সাধকের নিজের প্রয়োজনে তা খেতে হয় ।তাই বলছি -- কবিতা হলো চিন্তার জৈবিক বলয়ে ঠিক পাখির খাদ্যের মতো ।সে সমাজকে বলে না তোমরা কবিতা পড় ।  তবে সমাজকে তার অস্তিত্ব রক্ষার দাবিতে কবির জৈবিক বলয়-- কবিতার দেশে যেতে হয় ।আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ একথাটিই খুব সুন্দর করে তাঁর কবিতায় বলেছেন –
 যে কবিতা শুনতে জানে না
 সে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে ।
যে কবিতা শুনতে জানে না সে দিগন্তের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে ।
 যে কবিতা শুনতে জানে না সে আজন্ম ক্রীতদাস থেকে যাবে ।
              আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি : আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
 হয়তো সে কারণে কবিরা কবিমানুষের কবিতার দেশে বিচরণ করে । আমি প্রায়ই বলি যাদের অনুভূতি আছে তারাই কবি -- আর কবিতা হলো সেই অনুভূতির প্রকাশ । তবে আমরা ভুল করব যদি বলি প্রতিটি মানুষ কবি না ।প্রতিটি মানুষই কবি তবে অনুভূতির সাপেক্ষে ।কবিতার আসনে ভর করে কবি হয় না ,কবির আসনেই কবিতার জন্ম ।
 তবে কবিতার মানুষ আর কবির মধ্যে একটি পার্থক্য আছেই ।কবি সারা জীবন অনুভূতিকে গারগিল করে আর কবিতার মানুষ সেই অনুভূতিকে হজম করে শক্তি আহরণ করে ,জীবনের আয়োজন ও প্রয়োজনের মধ্যে সমন্বয় ঘটান । কবিগণ আজীবন শিশু থেকে যায় কিন্তু কবিতার মানুষ মরণ অবধি অনুভূতির বাজারে নতুন নতুন চিন্তার চাষ করে কালের যোনিতে স্থাপন করে ।মনে পড়ে গেল John Keats তাঁর বন্ধুকে (John Hamilton Reynolds) ১৮১৮সালের ১৯ফেব্রুয়ারিতে লেখা চিঠির কয়েকটি লাইন , An old man and a child would talk together and the old man be lead on his path and the child left thinking ... অনুভূতি তুমিই কবি- তবে কবিতা নও !
সূর্য অন্ধকারের দেশে যাচ্ছে ।ঘুমাবে ।সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত ।বাল্মীকি ।এক ডাকাতের নাম ।তবে তারও অনুভূতি আছে ।বসে আছে অনুভূতির সাগরে চিন্তার শরীরকে ডুবিয়ে ।জীবনে প্রোথিত নিয়ম মেনে দুটি ক্রৌঞ্চ পাখি প্রণয়লীলায় ব্যস্ত । হঠাৎ এক শিকারির চোখে দোল খায় পাখিদ্বয়ের প্রণয়কার্য ।শিকারির ধনুকের আঘাতে মারা যায় ছেলে পাখিটি-- পড়ে থাকে তার মৃত দেহ ।স্বামীর বিরহে মেয়ে পাখিটি লাশের চারদিক ঘুরতে থাকে ।আর কান্না করতে থাকে ।ডাকাত বাল্মীকির অনুভূতির এম্বুলেন্স তখন কবিতার হাসপাতালে ।সৃষ্টি হয়ে যায় কবিতা—
 মা নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতী সমাঃ ।
যৎ ক্রৌঞ্চমিথুনাদেকবধীঃ কামমোহিতম্ ।।

 কবি বাল্মীকি হয়ে গেলেন কবিতার বাল্মীকি ! আমি সিঙ্গাপুরের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবিকণ্ঠ লী জু পেং কে সাধুবাদ জানাই | কারণ কবিতা সম্পর্কে তাঁর কথা নয় ,ভাবের সাথে সত্যিকারের কবি ও কবিতার বিষয়বস্তু অনেকটা তথ্য -উপাত্তের সঠিকতা খুঁজে পাওয়া যায় বলে --কবিতা লেখাটা হলো ম্যাজিসিয়ানরা যেভাবে হ্যাটের ভেতর থেকে এটা ওটা বের করে তেমনি ।তবে একটা পার্থক্য :ম্যাজিসিয়ানরা জানে কি বের হবে ।কিন্তু কবিরা লিখতে আরম্ভ করলে বুঝতে পারে না ,শেষ পর্যন্ত কি লিখবেন । প্রশ্ন উঠতে পারে কবিতার মধ্যে শিল্প থাকবে কি না ।অবশ্যই শিল্প থাকবে ।ভালোবাসা ।কবিতার শিল্প ।ভালোবাসা ছাড়া মানুষ অচল -কবিতাও তাই ।এ ভালোবাসা কেবল নারীর মাংস ,পুরুষ ও নারীর মনে সীমাবদ্ধ নয় ।কোনো ভালোবাসা ,প্রেম স্বর্গ থেকে আসে না ,আসে মানুষের অনুভূতির শেকড় থেকে ।আর সেখানে মানুষ যত সুন্দর যত সাবলীল তার সজ্জিত অনুভূতিগুলোতে চিন্তা ততোই নান্দনিক ।ব্যক্তিমানুষ হয়ে যায় স্বর্গমানুষ ।ফলে তার মন হয় স্বর্গের চারণভূমি ।আর এই স্বর্গ কবিতার মানুষের কবিতা -কবিতার দেশ ।যেখানে উপকরণ অনেক ,উপকরণ প্রণেতা একজন –
 Alone ,alone all ,all alone
Alone on a wide wide sea

আর একের কুঞ্জে কবির কবিতা বাস করে ।তাই হল ঈশ্বর ।সংকোচনে বললে কবিতার মানুষ ।কবিতার ঈশ্বর সমাজে প্রচলিত ঈশ্বর ,দেবী ,দেবতা তৈরি করেছেন ,করে থাকবেন ।কিন্তু হাসি ।একা একা ।সাথে অবশ্যই মনদেবতাকে ডিসকাসমেট হিসাবে নিই যখন শুনি ,দেখি --সৃষ্ট ঈশ্বর ,দেব ,দেবী কবিতার ঈশ্বরকে কাব্যজ্ঞান দান করে –
পুরাকালে সরস্বতী পুত্র কামনা করিয়া হিমালয় পর্বতে তপস্যা করিয়াছিলেন ।সন্তুষ্ট মনে ব্রক্ষা তাঁহাকে বলিলেন -'আমি তোমার পুত্র সৃষ্টি করিতেছি ।'(রাজশেখর ও কাব্যমীমাংসা: শ্রীনগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী )ফলে সৃষ্টি হয় কাব্যপুরুষ । কিন্তু আমার অন্তর পাড়ে বেদনার সুনামি বার বার আঘাত হানে যখন কবিতার ঈশ্বররা সৃষ্ট ঈশ্বরের কাছে কাব্য সৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে ,পূজা নিবেদন করে - -
বন্দি চরণাবিন্দ অতি মন্দমতি
আমি , ডাকি আবার তোমায় ,শ্বেতভুজে
 ভারতি !যেমতি ,মাতঃ,বসিলা আসিয়া ,
বাল্মীকির রসনায় (পদ্মাসনে যেন )
যবে খরতর শরে ,গহন কাননে ,

তাহলে কবিতার মানুষ মাইকেল ,তোষামোদকারী ?সমাজে প্রচলিত দেবীর বন্দনা করে সে কি কবিসত্তাকে নর্দমায় নামায়নি ? তাকে কবিতার ঈশ্বর বলা যায় ?নাকি সে বিদেশি সাহিত্যের অন্ধ অনুকরণে নিজের চিন্তায় গা ভাসিয়ে দিয়েছে –
Sing to me of the man , Muse ,
 the man of twists and turns
 driven time and again off course
 Once he had plundered the hallowed heights of Troy
 (The Odessa-Robert Fagles ,Translation 1996)

 O Muse ,o high genius ,aid me now
O memory that engraved the things I saw ,
 Here shall your worth be manifesto to all !
             Dante Alighieri canto of the Inferno- Anthony Esoler translation ,2002

তবে মনোজগতে সান্তনার হাওয়া দোল খায় ঢলে ঢলে এই ভেবে মিউজ কিংবা সরস্বতী চরিত্রগুলো অন্য কোন কবিতার মানুষ তথা ঈশ্বরের সৃষ্টি ।এখানে কেবল পুরাতন অনুভূতির নতুন সংযোজন ছাপিয়ে উঠেছে ।আর কবিতার মানুষ তো অনুভূতি নিয়েই খেলা করে –
 Poetry is the spontaneous over flow of powerful feelings ,it takes its origin from emotion recollected in tranquility .
             ( Wordsworth)

কবিতার মানুষের সার্থকতা এখানেই এঁরা পরিচিত বিষয়টাকে অনুভূতির মশলা মিশিয়ে এমনভাবে উপস্থাপন করে যেন তা চিরনতুন ,চিরযৌবনা ,রক্ত-মাংসের ফুলেল শরীরের মতো আবেদনময় ।সম্পূর্ণ নতুন ।প্রচলিত চিন্তায় যদি মননের আশ্রয়ে আরেকটি নতুন সংযোজন না হয় তবে তা কবিমানুষের ব্যর্থতা –
 It (poetry)awakens and enlarges the mind itself ...poetry lifts the veil from the hidden beauty of the world,and makes familiar object be as if they were unfamiliar .
 (A Defence Of Poetry by Shelly )

অনুভূতির প্রকাশ ,বিকাশ ঘটিয়ে যে কবিতার জন্ম হয় তা কখনো দৃশ্যমান নয় ।দৃশ্যমান কেবলই লেখা ,আঁকাআঁকি ।সৃষ্ট কবিতার জায়গা মনে ,বোধে ।তাইতো কবিতা বুঝার জন্য অবশ্যই একটা প্রস্তুতিপর্বের দরকার ।কবিতা বুঝার জন্য সাত সমুদ্র তের শত নদী পাড়ি দিতে হয় ।কবিতা আলো নয় --রশ্মি ।কবিতা তো বাতাস নয় --তার শিহরণ ।কবিতা তো ভেজা বৃষ্টি নয় --তার বাণ ।কবিতা তো ছায়া নয়-- তার আবরণ । তাইতো আজও আমার কাছে বসওয়েল জনসনের কবিতা কি প্রশ্নের উত্তরটি অর্থসহ মনে হয়-- কবিতা কি নয় সেটা বলে দেওয়াই সবচেয়ে সহজ ।আলো কি জিনিস আমরা সকলেই জানি ।কিন্তু আলো কি সেটা বলা আদৌ সহজ নয় । তাই আবারও বলছি কবিতা দৃশ্যমান নয় ।অদৃশ্য কবিতা অদৃশ্য মননের পুষ্টি সাধন করে থাকে । ফলে কবি হয়ে ওঠে চিন্তাশীল ,মননশীল ।তবে মনে রাখা দরকার -ভাবনার একক -- অনুভূতি ।কবিতাকে সাধারণত দুটি দিক থেকে বিচার করা হয় ।তার ভাষা ও ভাবনা ।ভাষা ও ভাবনা পরিপূরক ।ভাষা ভাবনাবৃক্ষের আশ্রয়ে লালিত পালিত হয় ।তবে ভাবনার একটা ফাউন্ডেশন রয়েছে -- বিষয়বস্তু ।তাই কাব্য বিচারে ভাষা ও ভাবনার মধ্যে বিষয়বস্তু অবশ্যই বিচার্য বিষয় । রবীন্দ্রনাথের কাব্যভাষা সম্পর্কে কালীপ্রসন্ন কাব্যবিশারদের মন্তব্য : উড়িসনে রে পায়রা-কবি খোপের ভিতর থাক ঢাকা , বাকবাকম আর ফোঁসফোঁসানি তাও কবিত্বের ভাব মাখা তাও ছাপালি গ্রন্থ হল নগদ মূল্য এক টাকা । মিঠে কড়া :কালীপ্রসন্ন কাব্যবিশারদ রবি ঠাকুর সম্পর্কে কালীপ্রসন্ন কাব্যবিশারদের মন্তব্য কেন ?বিষয়বস্তু পছন্দ হয়নি ,নাকি বাবু অনুভূতির বাজারে আগুন লাগাতে পারেনি ?তাঁর বিচার সময়ের আয়োজনে ।তবে বলতে পারি অনুভূতির প্রকাশ যেহেতু হয়েছে সেহেতু কবিতার জন্মও হয়েছে- এখন মহাকাল তাকে গ্রহণ করবে, কি করবে না, তা মহাকালের বিবেচ্য বিষয় ।অন্ধকার সরাতে আলোর আগমন ।আর সেই আলোতেই জন্মগ্রহণ করে ঈশ্বর ,কবিতার মানুষ ।আর কবিতার মানুষের প্রকাশিত বিষয়--যা প্রকাশ করার মাধ্যমে অপ্রকাশিত তা-ই কবিতা । কবিতা কী ?এই প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাহলে এখন আমরা বলতে পারি যে ,কবিতা আসলে শব্দ নয় ,বরং শব্দকে ব্যবহার করবার এক রকমের গুণপনা ।ভাষার মধ্যে যা কিনা অন্যবিধ একটি দ্যোতনা এনে দেয় ।অথবা বলতে পারি কবিতা আসলে ভাষার একটি স্তর যা অনুভূতির আশ্রয়ে গড়ে ওঠে ।কবিভাবনা অবশ্যই ভাষার আশ্রয়ে তরতাজা হয়ে ওঠে –
অর্থ নয় ,কীর্তি নয় ,সচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
 আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে
              আট বছর আগের একদিন : জীবনানন্দ দাশ
কবিভাবনা প্রকাশের জন্য খুব অলঙ্কার শাস্ত্রের পারদর্শিতার প্রয়োজন নেই--প্রয়োজন ভালোবাসার ।ভাবনার প্রতি প্রীতি ।নদীর জলের সাগরের প্রতি ভালোবাসাই নদীকে সাগরে নিয়ে যায় ।ছন্দ তো নির্দিষ্ট নিয়মের পুনরাবৃত্তি ।আর শিল্প হলো সেই নির্দিষ্ট নিয়মের ভালোবাসার সংমিশ্রণ
The word poetry imports something quite peculiar in its nature ;something which may exist in What is called prose as well as in verse ;something which does not even require the instrument of words ,but can speak through the other audible symbols called musical sounds ,and even through the visible ones which are the language of Sculpture ,painting,and architecture-all this we believe,is and must be felt,though perhaps indistinctly,by all upon whom poetry in any of its shapes produces any impression beyond that of tickling the ear .
              What is Poetry by John Stuart Mill (1806-1873)

 তবুও বলি কবিতা বিষাদের ফল ।দুঃখের আবরণ ।আনন্দে কবিতা হয় না -নৃত্য হয় ।যেহেতু প্রতিটা মানুষই কবি ।তাই তার দুঃখ ,আনন্দ দুই ই আছে ।তবে আনন্দের মাঝে দুঃখের প্রলেপ আসবেই ।দুঃখের মধ্যে আনন্দ(হরিষে বিষাদ)মনোতীর্থের ব্যাপারমাত্র ।দুঃখকে ভাষায় রূপ দেয়া হচ্ছে কবিতা -- সেই কবিতার স্রষ্টাই হচ্ছে কবিতার মানুষ –
 "সদর স্ট্রীটের রাস্তাটা যেখানে গিয় শেষ হইয়াছে ,সেইখানে বোধ করি ফ্রি স্কুলের বাগানের গাছ দেখা যায় ।একদিন সকালে বারান্দায় দাঁড়াইয়া আমি সেইদিকে চাহিলাম । তখন সেই গাছগুলির পল্লবান্তরাল হইতে সূর্যোদয় হইতেছিল ।চাহিয়া থাকিতে থাকিতে হঠাৎ এক মুহুর্তের মধ্যে আমার চোখের উপর হইতে যে একটা পর্দা সরিয়া গেল ।দেখিলাম ,একটি অপরূপা মহিমাময় বিশ্বসংসার সমাচ্ছন্ন ,আনন্দে এবং সৌন্দর্যে সর্বত্র তরঙ্গিত । আমার হৃদয়ে স্তরে স্তরে যে একটা বিষাদের আচ্ছাদর ছিল তাহা নিমিষেই ভেদ করিয়া আমার সমস্ত ভিতরটাকে বিশ্বের সমস্ত আলোক একেবারে বিচ্ছুরিত হইয়া পড়িল । " ফলে বিষাদ ফেটে জন্ম নিল রবি ঠাকুরের 'নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ' কবিতাটি । তবে কবিতার মানুষ কবিতা প্রসব করার সাথে সাথে ভুলে যায় সমস্ত দুঃখ ,ব্যথা ,যন্ত্রণা ।কবিতার ফুটফুটে মুখের দিকে চেয়ে কবিতার মানুষ 'পুষ্পের হাসি' হাসে ।যদি কবিতার মানুষ তখন জাহান্নামেও থাকে । কবিতার মানুষ অকপটে নিজের দুঃখগাঁথা কবিতামানবীর কাছে বলে ।বলে যাওয়ার মধ্যে তার সান্ত্বনা ,প্রাপ্তি ।এক সময়ে মানুষ ঘুমিয়ে যায় ।অনুভূতিও ঘুমিয়ে যায় ।ঘুমিয়ে যায় কবিতার মানুষ ।কবিতা ।মহাকাল শুধু রেখে যাওয়া সংঘবদ্ধ অনুভূতিগুলো নিয়ে খেলা করে—
 'শ্রাবণ গগন ঘিরে ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে
শূন্য নদীর তীরে রহিনু পড়ি
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী '
 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর :সোনার তরী

 ঘুমিয়ে যাওয়া কবিতার মানুষ আর বলে না –
হে বঙ্গ ,ভাণ্ডারে তব বিবধ রতন
তা সবে ,(অবোধ আমি )অবহেলা করি
 মাইকেল মধুসূদন দত্ত :বঙ্গভাষা
 My country! in the day of glory past
 A beauteous halo circled round the brow
 And worshipped as a deity thou must ;
(To India--my Native Land :H .L.V.Derozio)
  'Poet a nasciture ,non fit .'তাই বলছি- - কবিরা কবি হয়েই জন্মায় ,তাঁদের তৈরি করে তোলা যায় না ।

শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৪

ভ্রমণচারী মেঘের সাথে আমি



অনতিউচ্চ পর্বত আর উপত্যকার উপর বাতাসে ভেসে বেড়ানো
একখণ্ড মেঘের ফালির মতো আমিও ভ্রমণ করেছিলাম একাকী
সহসা আমার চোখে আসতে থাকল
জনতার জীবনপ্রবাহ, অসংখ্য দূর্বাফুলের কাঁচা শরীর ;
মৃদু বাতাসভূমিতে দৃশ্যত তাদের আনন্দমিছিল আর নৃত্যাৎসব
মাতাল করে তুলছিল স্বর্গের হ্রদবাসী আর মর্ত্যের জনারণ্যকে।
বিরতিহীনভাবে চলছিল পুষ্পরাজির নৃত্যক্রিয়া
যেমন করে
নক্ষত্রতারা আলো  বিলায় আর মিটমিট ছন্দে চলতে থাকে প্রশস্ত ছায়াপথে
উপসাগরের কূল ছুঁয়ে সরলরেখার মতো তারা ছড়িয়ে পড়ল অন্তত সারিতে
এক পলক বিনিয়োগ করেই আমার দৃষ্টি সীমায় হাজারো পুষ্প
যাদের আনন্দগর্ভে জন্ম নিচ্ছিল অনিন্দ্যসুন্দর সন্তান।
অনিন্দ্যসুন্দর সন্তানের পত্তন ইথারকেও নাচিয়ে ছিল
তথাপি
সকল আনন্দের আয়োজন তাদের আনন্দের কিরণে
আমার কবিত্ব আত্মা নেচে উঠল
এ রকম এক আশ্চর্য আনন্দে
চোখের পাতা কপালের সাথে সেলাই করে
চেয়ে থাকলাম --
এবং শুধু চেয়ে রইলাম, চিন্তা বিযুক্ত মন
তখনো করিনি অনুধাবন ;কী ঐশ্বর্য উদ্ভাসিত
হয়েছিল আমার আমির দেশে।
যখন অবকাশে পালঙ্কে গা হেলিয়ে দিই
স্বর্গীয় চিন্তামগ্ন মনে
তারা চুমুর আবেশ ছড়িয়ে দেয় আমার শিহরণে
যা শুন্য মনে জন্ম দেয় শান্তির কবিতা
আর তখনই আমি প্রশান্তির ভেলায় চড়ে পাড়ি জমায় শান্তির দেশে
আর নেচে উঠে আমার মন দূর্বাঘাসের সাথে।

মূল : উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ 

-শব্দের মাতৃভাষা -

আসব >আমু, যাব >যামু, খাব > হামু , রাঁধব >রান্দুম, দেখব > দেহুম, শুনব >হুনুম,
মারব >মুরামু ,ডাকব >ডাহুম = তরে মুরাইয়্যা বাফ ডাহামু
করব > কুরুম, মরব > মুরুম = তরার যন্ত্রণায় আজা মুরুম (বিশেষত মায়ের উক্তি)

উচ্চারণের সময় `ব'  ধ্বণিটি 'ম' হিশেবে উচ্চারিত। কখনো মাঝের বর্ণটি উধাও ;আবার প্রথম বর্ণে ` উ' কার চলে আসে। শেষের বর্ণেও 'উ' উচ্চারিত হতে শোনা যায়।


বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৪

বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৪

একদিন আমিও নারী ছিলাম

একদিন আমিও নারী ছিলাম
পৃথিবীর যোগ্য করে সৃজনী আমায় শাষনে কোমলে
জরায়ুঘর থেকে জোদা করে দিয়ে বলে 'আমি পুরুষ'
আমি পুরুষ হলাম
আবার নারী হতে ইচ্ছা করে
কিন্তু পুরুষ তো কখনো নারী হয় না 

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৪

ছায়াবন্ধু

সত্যিকারের বন্ধু ছায়ার মতো মিশে থাকে। কখনো কাঁটার মতো প্রতি মুহূর্তে নিজের উপস্থিতি জানান দেয় না। জানতে চাইলে জানা যায়, অনুভব করা যায়। অন্ধকারেও ছায়াবন্ধু কাছে থাকে কিন্তু তখন দেখা দেয় চোখের অসুখ, অনুভবের ব্যর্থ দ্রাঘিমা! 

ঘুম

ঘুমতাড়ুয়া ঘুমে এসোনা
চোখের ভিটায়  ঘুমের প্রেষণা 

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪

বেশ

      ক্যামেরা তোমাকে সুন্দরী বানিয়েছে
    আমাকে বানিয়েছে লেখক
  কলা গাছে তেল মেখে
সাহিত্য পাতার দেখক

স্মৃতির রামধনু


কথা ও সুর : এমরানুর রেজা

    নরসিংদীর এই পলাশ
    আর সেই দিনকার কথা
    পুকুর গায়ে হাঁসের হেসে চলাফেরা,
  সবই আছে ঠিকঠাক
  কেবল তুমি নেই আশপাশ ।।

বলেছিলে সেইদিন আমার মতো পাগল       জীবনেও আসেনি
পাগলামিটা এখন আমার অঙ্গা-অঙ্গি সাথি
আমাকে কেবল ভুলে গিয়ে তুমি ভীষণ ভীষণ খুশি।।

তোমার মতো আমিও ভুলে একদিন যাবো
রূপ নারায়ণের কূলে তোমাকে খুলে খুলে দেখব
মনে রেখো সেইদিনও আমি আজকের মতো সত্য।।

পেঁচা

পেঁচা সোনা মানুষ চোখে চোখ রাখে ক্যান
মানুষ কী তার চোখের ঘরের রাধাশ্যাম?

Why owl keeps eyes onto man's sight
Is Radha complex acute accents in her sense dine?

শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৪

স্টাডি রুম

পৃথিবী থেকে বড় কোনো পাঠ্যপুস্তক নেই। মানুষ, পশু -পাখি, প্রাণিবর্গ এক একটি জীবন্ত অধ্যায়।।

The earth is still study book, more alive, much docile . Everything of the many things is the active portion for the whole study room. 

শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৪

আন্ধার

কিছু মুখ থেকে যাক না অন্ধকারে
  অন্ধকারটা এখনো ফরমালিন মুক্ত
   কিছু স্বপ্ন আঁকা হোক  বাতাসের গায়ে
     বাতাসেরা এখনো নিজ পায়ে হাটে

বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৪

তাবিজ

মহানগর গোধূলী চলছে। দরজার পাশে দাঁড়ানো  রেবের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার। তার সিট ভৈরব পর্যন্ত বৈধ। ভৈরবের স্টেশনে তার সিট দখল করে  টিকেটধারী যুবক। যুবক সিটে হেলান দিয়ে চোখের দরজা বন্ধ করে। অফিসার দরজার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
ছেলেটি সিট পেয়েও দাঁড়ানো । মহানগর নরসিংদীর কাছাকাছি। ছেলেটি আনোয়ারকে আচমকা  জিজ্ঞেস করলেন --
'আপনার মনে হয় পৃথিবীতে বৈষম্য আর বেশি দিন থাকবে না?"
বিমান বাহিনী থেকে কেডেটপ্রাপ্ত অফিসার বলল
 'তা সম্ভব না। বৈষম্য থাকবেই।'
 ছেলেটি বলল 'থাকবে না!  প্রমাণ চান।'
অফিসার  হাসল। ছেলেটি তার হাতে টিকেট তুলে দিল। টিকেট নাম্বার ঢ 23। বললেন একটু আগেও আপনি জানতেন না, আপনি সিটে বসে যাবেন। বিশ্বাসী হোন,  পৃথিবী আপনার প্রতি বিশ্বস্ত হবে।
অফিসার ছেলেটিকে বলল
তাহলে আপনি
আমি নরসিংদী নেমে যাব
ট্রেন তো চলছে
ছেলেটি তখন লাফ দিল। এবং মাটিতে পা রেখে চিৎকার করে বলল
"সাহসী হোন, পৃথিবী বদলে যাবে "

বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৪

আমার ইচ্ছা লেখালেখি

জীবনকে কখনো কখনো ডমেস্টিক ট্রেন মনে হয়। চলছি তো চলছি । তবে চালানো হচ্ছে। স্টেশনে স্টেশনে নোঙর রাখি। মানুষ দেখি, পাখি দেখি, দেখি ক্লান্ত মেয়ের ঘুম। যে মেয়েটি সারা রাত দেহ বিক্রি করে ঘুমের ভারে ভারাক্রান্ত।তারপর অভিজ্ঞতাগুলো বগিতে তুলে যাত্রা শুরু করি অন্য কোনো স্টেশনের উদ্দেশ্য।
মাঝে মাঝে জীবনকে মেঘনা নদীর জেলেও মনে হয়। সারাদিন জেলে ঘুমায়। রাতকে দিন বানায়, মাছ শিকার করে । লাইটার সার্চ খেয়ে শক্তি জমা করে শক্তিঘরে। কারণ সে-ই তো জেলের রাতের সূর্য। সকালে ব্যাগভর্তি মাছ। জীবনের মাছ। মাছ দেখে বউটার তার আকাশের মতো হাসি দেয়। যে হাসিকে পুঁজি করে জেলে প্রতিটি দিন ঘুমে ঘুমে কাটিয়ে দেয়।
এইভাবেই ভাবনার চলাফেরায় জীবনে দাড়ি আসতে পারতো। কিন্তু আসলো না। ভাবনাগুলো পৃথিবীতে বেচেঁ থাকার ইচ্ছা পোষন করে। আমিও কেন যেন তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করি। কলমের ঘটকালিতে চিন্তা -ভাবনাকে বাইরের জগতের কাছে বিয়ে দেই। লিখি। প্রতিনিয়ত লিখি। লেখা আমার প্রিয়া। যার স্রোতস্বিনী চোখে ডুব দিয়ে গতি লাভ করি, যার হাসি আমার মানসিক খাবার।
এই লেখালেখির পাশে জীবনভর থাকতে চাই। তাইতো লেখালেখি আমার  লক্ষ্য, প্রশান্তির আস্তানা। আর লেখক জানে শান্তি কত প্রকার ও কী কী। ফলে তারাই পৃথিবীতে প্রবাহিত করতে পারে প্রশান্তির বৃষ্টিময় ধারা। আমি লিখতে চাই প্রশান্তিকে জন্মের মতো আপন করে নিতে। মৃত্যুর মতো বাধ্য করে পেতে। আমার ইচ্ছা লেখালেখি।

মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৪

প্রশ্নগুলো জীবন

তোমার চোখে আমার চোখ
আমার চোখে সাগর
জলকেলিতে জীবন চলে
তিক্ত নোনা জল

Your eyes born in mine
Mine is alight for the ocean
Waterlogged I am and there my growth
Bitter with salty in the water room



পেঁচা সোনা মানুষ চোখে চোখ রাখে ক্যান
মানুষ কী তার চোখের ঘরের রাধাশ্যাম?

Why owl keeps eyes onto man's sight
Is Radha complex acute accents in her sense dine?

Art Drama

Art!
Its so laughing stock and peal pole for the deception. It is on vacant flow without father and mother. Art is able to appear at presence by the sprit of various semen. It is kept moving ,  defined and designed .Reality is QUITE afar so for. Dream term kisses her rain body on for and on Then. Though it is brisk sure that seen event in front of eye always unable to radiate the ray as for ray something . Only for that art is much more alive in the dream cottage .Specially art is the shadow of troll. And dole troll is very fanatic to the folk .So for this is the way to catch fish under the norm of dark by the surface of the art.
In whole living smoothly is the best thought in the roaming gloom. So why colonial surgery art is essential?
Essential, must essential to have valuable surpass to make the general servant by the name of fucked art!
Core value is not curable within the art value. Because anyone can't able to utter such a bravo words that go beyond the art figure. So patient sense is must to live with others and live by others.
Art is very smart when it is the current of river. She comes and goes but no one makes her bound to have her flow. And then we can get not delivered but natural delightful drove or animal village. 

সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৪

রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৪

বাঙালি তুমি কোথায়?

বাঙালি বিজ্ঞান বুঝে কিনা?
 সব কিছু আয়ত্ত করার পূর্বশর্ত আগ্রহ। আগ্রহ থেকে চেষ্টা। চেষ্টার পর বোঝা,  না-বোঝার প্রশ্ন উঠে। বিজ্ঞান বিষয়ে বাঙালির আগ্রহ নেই বললেই চলে। কারণ হিশেবে ভাবগত এলাকার আধিপত্য বলা যায়। প্রার্থনা করলে যদি বৃষ্টি আসে সেচকূপের কী প্রয়োজন। আমরা শিখি H√O =পানি, D√O=পানি। কিন্তু কোনটা কোনো ধরনের পানি জানার প্রয়োজন অনুভব করি না। কারন তাতে পরীক্ষার মার্ক কমে যাবে, ইঁদুর দৌঁড় প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়তে হবে। শুনেছি রক্ত দেয়া ভালো কাজ, শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। কিন্তু রক্ত দেয়ার আগে আমি কী ভাবি রক্তে থ্যালাসেমিয়ামাত্রা কেমন? ভাবা দূরের কথা, থ্যালাসেমিয়া একটি ফলের নাম কিনা এই নিয়ে ব্যস্ত । ভাবগত এলাকা যেখানে আমরা আমৃত্যু বসবাস করি তাও কাঁচা বাশেঁর মতো ভেজা--

ওঁ স্বরসতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে
 বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাংদেহী নমোহস্ততে

এই মন্ত্রের গভীরে কোনো প্রকার ব্যঞ্জনা আছে, আছে কিনা হাজার বছরের অজ্ঞতা, মাথা হেলানোর দরকারটুকু অনুভূতিতে নেই।কারণ আমাদের শেখানো হচ্ছে 'পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে '।খেয়ে থাকায় তো আসল কথা, তাই না?
ফলে টিউবলাইট মানসিকতা নিয়ে হুজুগে পাড়ায় অযু - কুযুতে দিন চলে যাচ্ছে। আর বিজ্ঞান প্রযুক্তির মহান মেলা থেকে নিজেকে দূরে রেখে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন--

'রাব্বি জিদনী ইলমা '

হেরাগুহা মানব  সুখেই নিজেকে যাপন করছে। তাই কেন যেন মনে হয় বাঙালিকে শাষন করা যায় না, শোষণ করতে হয়। শোষিত, শোষক যেখানে থাকে সেখানে শৃঙ্খলা থাকে না --

আলিএ কালিএ বাট রুন্ধেলা।
তা দেখি কাহ্ন বিমণা ভইলা।।
কাহ্ন কহি গই করিম নিবাস। 

শুন্য হতে শুরু

তুমি আমি মাতাল মৌয়াল
দুচালা এক ঘর
নেশার টানে পেশা করি
আসুক নেমে ঝড়

শনিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৪

9

খুব করে সাজলে তুমি চোখের আয়নায়
পর্দা কেবল উঠালে না মনের বায়নায়

Pretty you are so in the eye of alive
Curtain tune is night in the eternal mind

শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৪

ঘুম

 ..............।।।।...........।।।.............।।।।................
ঘুমও হুমরা ডাকাত। সুযোগ সন্ধানী। শরীরের ভাঁজে ভাঁজে যখন জমা হয় ক্লান্তির জল তখন সে নৌকা চালায়। ভাটিয়ালী সুরে গান ধরে। মাছ ধরে। আর বলে 'আমি মাছের বেপারী নই, শিকারি'।
.............।।।.................।।।।...............।।।...........

বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০১৪

এইভাবে কতকাল?


কথা ও সুর : এমরানুর রেজা

একটা নারী কতকাল নারী থাকে
একটা পাখি কতকাল পাখি থাকে
আমি তো চলেছি, চলেছি পথে
ঘরে ফেরার তাগাদা নেই মনে

তুমি তো তারা হলে
আমি তো জমিনে
কতকাল, কতকাল এইভাবে রবে
এইভাবে কতকাল, কতকাল রবে 

মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০১৪

চোখ

চোখ কত কিছু দেখে! দেখে না কেবল নিজেকে। সে মরে যাবে কিন্তু জানবেনা তার শরীরখানা কেমন। কালো কালো, নাকি মাজা মাজা। তার কী কান নেই? হয়তো নেই। থাকলে অবশ্যই সে শোনত  আল্লামা সক্রেটিসের অমরবাণী  "নিজেকে জানো "। দেখার সাথে জানার, জানার সাথে দেখার মিউচুয়াল সম্পর্ক। কেননা ব্রহ্মাণ্ডতো ভাসমান সিনেমা। চোখ তার দর্শক। একই দৃশ্যের বার বার প্রবেশ-প্রস্থানের ফলে চোখ মুখস্থ করে সিকোয়েন্স; সিকোয়েন্সের হাত ,পা ,নখ। কেবল অপঠিত থেকে যায় নিজের শরীরদৃশ্য।
আহারে! পৃথিবীর জন্ম যে চোখে সে তার দৃশ্যইতিহাস জানে না!!