শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭

আমি মানে তুমি

কিছু লিখতে গেলেই রাত চলে আসে, ঘুম চলে আসে, অন্ধকার চলে আসে। চলে আসে বলতে চিল হয়ে তারা আমার মনে আকাশে ওড়াউড়ি করে। তাদের শক্তি অনেক। তাইতো তাদের পরিহার করতে পারি না। প্রতীকবাদীরা বলবেন রাত ঘুম অন্ধকার বিষন্নতার পাল তুলে মনে আসে। হয়তো তাই।

জানালার পাশে রাত। রাতের দেশে এখন হনহনে অন্ধকার। অন্ধকারে ব্যাঙ তার ক্লাসিক্যাল মিউজিক বাজাচ্ছে ছন্দ তাল মাত্রা শতভাগ মেনে। পৃথিবীতে কতশত আধুনিক ভার্সন আসলো। ব্যাঙের ডাকসঙ্গীতের কোনো আধুনিক ভার্সন নেই। পুরাতন রাতে অন্ধকারটা পুরাতন, পুরাতন অন্ধকারে ব্যাঙের জিকিরসঙ্গীত এখনো পুরাতন।

একটা মেশিন বসানো যেতে পারে যেকিনা রাতকে অজগর সাপের মতো গিলে গিলে খাবে। অজগর সাপের বিষ নেই, সাপ যত ছোট হয় তার বিষ তত কড়া। ছোট মরিচের ঝাল বেশি আমরা সবাই জানি।

মেশিন রাতকে খেয়ে ফেললে মধ্যরাত আর আসবে না। না না, তা হতে পারে না।  আমার কাছে মধ্যরাত মানে প্রার্থনা, তোমার সাথে গল্পের পিক আওয়ার।

আরেকটি কথা, কিছু লিখতে গেলে সেই কিছুর মধ্যবিন্দুতে তুমি তোমার চলে আসে।

তাহলে আমি মানে কী ঘুম?
আমি মানে কী রাত?
আমি মানে কী অন্ধকার?
আমি মানে কী তুমি?

অবশ্যই আমি মানে তুমি
আর তুমি মানে সাপেক্ষ নদী
তিন ভাগ জল একভাগ ভূমি

রবিবার, ২৫ জুন, ২০১৭

অনেকদিন পর আমাদের দেখা হবে

সব সুখদের ডেকে এনে একসাথে বাড়ি যাবো। বাড়িতে বর্ষাকাল বসে থাকে আমপাতার ফাঁকে ফাঁকে ডালিমের স্লিম কানের কুসুম মাংসের আতি ধরে।

এই তো আমাদের বাজার
বাজারের পাশে জলের মেলা, জলের মেলায় সন্ধ্যায় এক ডুবুরি সূর্য নামে পশ্চিম দিকের চক্রবাল পথে।

পথ এক মহান কবিরাজ মশাই, যশোমতী নন্দ গোপালময় পৃথিবী আমার, বৃন্দাবন থাকে, থাকে রাধে, কানুর ঘরে কংসাবতী অবরোধ তবুও তো যমুনার জলের মাঝি আমি, অনেক বছর পর আজ মেঘনার সাথে দেখা।

কোথায় রাধে?
কোথায় যমুনা?
কোথায় বৃন্দাবন?
কোথায় আমার সেই পলাতক তমালজন?

ইতিহাসপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, পরিত্যক্ত সুখ পিঁপশঙ্কের লাইনের মতো বেঁচে থাকে হৃদয়ে হৃদয়ে।

তুমি আমার আবছা ছায়া দাড়িকমা পথের আবাল বনিতায় যৌবনের সেই জলাবতী নৌকা খেলায়--
দেখেছিলাম
দেখছি
দেখতে থাকবো একদম।

পন্যের জীবনচক্রের মতো হারিয়ে গেলে কোনো এক সন্ধ্যায় বৃষ্টিভেজা কাকের পাখনায় আমাকে খুঁজে নিও প্রিয়তমা স্মৃতিরা আমার।

আজ বাড়ি যাবো
অনেকদিন পর বাড়িতে গেলে তুমিও আমার সাথে দেখা করতে এসো।

পথ আমায় ঠিকমতো নিতে পারবে তো?

অনেক পথ সচল অতীতের মতো আগলে ধরে বর্তমানের বুক। অতীতের কর্মঠ হাতে আমিও ভাই নষ্টালজিক মানুষ অতীব অবুঝ।

না না ...

সব সুখদের একসাথে ডেকে এনে একসাথে বৃষ্টিভেজা শরীরে মেঘের বাড়ি বেড়াতে যাবো, কালকের বাড়িতে নামবে সাদা আর কালো রঙের বর্ষা-- অনেক অনেক গল্প হবে।

গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেলে আমাকে ডেকে দিও, এখুনি আমি ঘুমাতে চাই না, অনেক চাওয়া পাওয়া হলে পাখিদের সকাল হয়ে একসাথে নদীতে যাবো--
নদীমাতা জীবন
নদীবন্ধু জীবন
নদীতুমি জীবন
জলের জানালায় দেখে নিবো তোমার চলন
ঝিনুকমুক্তা হয়ে ফিরে আসবো তোমার গলায় তখন
তোমার সাথেই আমৃত্যু আজীবন
আমার কোনো ঘর নেই বলে তোমার পথে হাজার হাজার রূপান্তর 

শনিবার, ২৪ জুন, ২০১৭

বিশেষ দিন

বিশেষ কোনো দিনের প্রতি আমার কোনো আকর্ষন নেই, আমার আকর্ষন প্রত্যেক দিনকে বিশেষ বানানোর দিকে

শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০১৭

মেয়েরা

ভারতবর্ষের মেয়েরা লম্বা ছেলে পছন্দ করে। ছেলে যত লম্বা হবে মেয়েদের কাছ থেকে তত নাম্বার বেশি পাবে। মেয়ের আকৃতি যত ছোট হবে তার নজর তত বড় আকৃতির পোলার দিকে যাবে। মেয়েটি একবারও ভাবতে যাবে না তার সাথে ছেলেটির শারীরিক ব্যালেন্স হলো কিনা। কারন কিন্তু একটাই-- দিন শেষে মেয়েরা আশ্রয় চায় এবং ইনফিউরিটি কমপ্লেক্স নামে একটি software মেয়েদের মনে  ইন্সটল করা থাকে।

Ride করার জন্য তারা কখনো উঁচু ঘোড়া নির্বাচন করবে না, করবে তার সাইজের সাথে যায় এমন কোনো ঘোড়া নির্বাচন। কারন কিন্তু একটাই-- ভয়।

ভয়, আশ্রয় চাওয়ার মানসিকতা, ইনফিউরিটি কমপ্লেক্সকে সামনে রেখে আমাদের নারীরা এখনো সুস্বাদু রান্না করে ....

নাচানো

এ জাতিকে নাচানো খুব সহজ! মোরগী ডিম পাড়ার আগে যতটুকু কককক করে ডিম পাড়ার পর আরও বেশি কককক করে। ডিম এই জাতির অত্যন্ত প্রিয় খাবার। 

বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭

অনেক ব্যথার পর

অনেক ব্যথার পর জন্ম নেয় একজন মানুষ
তবুও তো কথা থাকে মানুষের ঘরে
বিমান থেকে উড়ো আসে কতিপয় মেঘ
মেঘেরও ডানা থাকে
মেঘেরও থাকে কিছু আনন্দ আন্দালিব

অনেক দূর থেকে যমুনার ঘরে জলের কলতান আস্তে করে দেখে নিতে হয়
জলের কাছে কেবল জল, মনের কাছে কেবল মন, মাছের কাছে কেবলই মাছ-- এই আমাদের চোখ, আমাদের সমাজ।

গাছের শরীরে ছুরিকাঘাতে লাঞ্চিত করে প্রাকৃতিক সুখ-- কারা?
বহু আগে যারা গুরু নামে স্বার্থের সাথে কেটে নিয়েছিল একলব্যের বীরশ্রেষ্ঠ অনামিকা তারা ...
আমি তাদের সাথে বসবাস করি, খাই দাই আনন্দ করি
অনেক ব্যথার পর হয়তো আমিও আমি হয়ে ওঠি! 

বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭

সরলতা

দশ তলা বিল্ডিংয়ের চেয়ে উঁচু মানুষের সরলতা। বিল্ডিং করতে টাকা লাগে, সরল হতে  টাকা লাগে না।

সত্য যে

সবার উপরে খাওয়া সত্য তাহার উপরে নাই
খাওয়ার উপরে হাওয়া সত্য তাহার উপরে নাই 

মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০১৭

গ্রামের খুব কাছে নদী

গ্রামের খুব কাছে মেঘনা নদী
গ্রামের নদী হতাম যদি
বাষ্প হয়ে বাতাসে বাতাসে
মেঘ হয়ে আকাশে আকাশে
জলচোখে চিনে নিতাম বন্ধু তোমার বাড়ি

তারপর কোনো এক দিন
তৃষ্ণায় তুমি চিন চিন
ঠিক তখন ঠিক তখন
আমি তোমার একমাত্র আপন
কানকথা নেই
ভুলদেখা নেই
নেই কোনো দর্জি মেশিন
তোমার চাওয়া আমি
আমার চাওয়া তুমি
চাওয়া চাওয়া এক হয়ে আমরা তখন স্রোতস্বিনী নদী
ঢেউয়ে ঢেউয়ে সংসার
জলকেলি কালচার
প্রেমে মনে গুলজার
একে একে একেকার
আমি যে তোমার
তুমি যে আমার
আমি যেন দেহ
তুমি আমার আত্মা
তারা যেন না বলে
তারা যেন না বলে
তুমি আর আমি ভিন্ন সত্তা

শনিবার, ১৭ জুন, ২০১৭

ইছামতি.

রাত গুনতে গুনতে সকাল হয়ে গেলো। ইছামতি এখন বাড়ি যাবে। আমিও যাবো। দুজনে একটি বাড়িতে যাবো। আমাদের বাড়ির নাম ঘুম। ঘুম আসলে পৃথিবীকে ডাস্টবিন মনে হয়। পালাতে পারলে যেন বেঁচে যায়।

ইছামতির বয়স যখন ছয়েক তখন সে প্রথম ঘুমে আমাকে স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নে আমাকে ঠিক ঠাহর করতে পারে না। কিন্তু কিছু একটা সে দেখেছে এ বিষয়ে সে নিশ্চিত। ধীরে ধীরে ইছামতি ভূতের গল্পের সাথে পরিচিত হয়। ভূত সে দেখে না। ভূতের গল্প শুনে পড়ে। স্বপ্নে আসা স্বপ্নটিকে সে ভূত ভাবতে শুরু করে। আজও সে ভূত দেখেনি। কিন্তু স্বপ্নের পুরুষটিকে প্রায় সে দেখে, হয়তো প্রতি রাতে দেখে।

ইছামতি আর ভূত এখন ঘুমাতে যাবে ....

বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০১৭

বুধবার, ১৪ জুন, ২০১৭

চুরি যেন

ডাকাতি করার ক্ষমতা আছে
তবুও তোমায় চুরি করি
মধ্য রাতের পেঁচা হয়ে
আস্তে আস্তে কানে ডাকি
অচেতন এক ফুলটি হয়ে
তোমার খোপার পাশে বসি
ভালোবাসি ভালোবাসি 

মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০১৭

শিশু তাই

তুমি শিশু তাই আমার মনকে খেলাঘর করে প্রায় নোংরা করে ফেলো 

তুমি সকাল হলে প্রথম রোদটা আমি তোমার গায়ে মেখে দিতাম 

অচেনা আকাশ

অচেনা এক আকাশ এসে সূর্য দেখালো আমায় 

সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭

প্রেম ইজ প্রেম

সংসারে থেকে আসলে প্রেমটা হয় না। সংসার ইজ সংসার, প্রেম ইজ প্রেম।

যে রাধা রান্নাঘরে নিজের মনকে ব্যস্ত করে তুলে সে রাধা আর রাধা থাকে না, রাঁধা ( রন্ধন>রাঁধা, রান্না) হয়ে যায়।

এভারেস্ট যদি সেলিম ভাইয়ের চায়ের দোকান হয় তাহলে এভারেস্টে চড়ার আনন্দ কেন থাকবে, থাকবে না। যিনি মুভি এডিট করেন আর যিনি মুভি দেখেন দুজনের আনন্দানুভূতি একেবারে আলাদা। এডিটরের থাকে সংসার ধারনা আর দর্শকের মনে থাকে আনন্দ বা প্রেম।

ধরুন, একটি চমৎকার kiss scene আসলো-- দর্শক চমৎকারভাবে রোমাঞ্চিত হবে আর এডিটর ভাববেন  লাইটিংয়ের আগাপাছা, বেকগ্রাউন্ড মিউজিক, চরিত্রের কস্টিউম ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে।

সংসার হলো অনেকটা বনসাই গাছ যেখানে স্বাভাবিক বিকাশকে অনেক কাটছাঁট করে (শক্তভাবে বললে, স্বাভাবিক বিকাশকে ধর্ষন করে)  সৌন্দর্যের বোরখা পরানো হয়।

সংসার দেখলে প্রেম পালায় পালায়, সংসারও পারে না প্রেমের কাছে পৌঁছে যেতে।

জীবন তাই সেই চূড়ান্ত হিসাব যার ব্যালেন্সজের কোনোদিন মিলে না। তাইতো পরকাল, স্বর্গসুখ, পাপপুন্য নামক বিবিধ খরচ এসে চূড়ান্ত হিসাব মেলানোর চেষ্টা করে মাত্র।

তবে জীবন, প্রেম গহীন বনের সেই গাছ যে জানে জীবন সীমিত কিন্তু সীমিত জীবনের সবটাই জানে।

রবিবার, ১১ জুন, ২০১৭

রমজান মাস

মুসলমান মানে সেই লোক যার হাত থেকে যার মুখ থেকে অর্থাৎ যার প্রত্যেক আচরন থেকে অন্য মানুষ নিরাপদ। অর্থাৎ মুসলমান কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো মানুষের ক্ষতির কারন হতে পারে না।

আমি ট্রেনে ওঠলাম। টিকেট কাউন্টার জানাল টিকেট কাটা যাবে না, কারন সময় নেই। টিকেট না কেটেই ট্রেনে ওঠলাম। টিটি টিকেট চেক করছে। আগে আগে পুলিশ এসে জানতে চাচ্ছে টিকেট আছে কিনা। যাদের টিকেট নেই তাদেরকে পুলিশ আড়ালে নিয়ে যাচ্ছে। আমিও গেলাম।

জরিমানাসহ একশত আশি টাকা আসে, আপনি একশত কুড়ি টাকা দেন।

আমি তাকে একশত কুড়ি টাকা দিলাম। সে আরও চার জনের কাছ থেকে একশত কুড়ি টাকা করে নিল।

আপনি রোজা রেখেছেন আঙ্কেল?
হুম।
নামায পড়েছেন?
হুম।

আমার টাকা যেহেতু নিয়েছেন সেহেতু টিকেট দেন।
তাহলে তো জরিমানা করতে হবে।
আমি অবশ্যই জরিমানা দিবো, তবুও আমার টিকেট লাগবে।

একশত আশি টাকা দিয়ে টিকেট নিলাম।

যারা ফাঁদ পেতে মানুষের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেয় তাদের সাওম করার কোনো মানে আছে কিনা আমি জানি না।

আরে ভাই, আগে মুসলমান হন, তারপর আপনার জন্য রোজা, নামায। আপনি মুসলমান হলেন না কিন্তু রোজা নামাযের জন্য পাগল হয়ে গেলেন, এ সব লোক দেখানো কর্মকান্ডের মানে কী!?

আসুন, বাংলাদেশের গাইড ব্যবসায়ীদের একটি কর্মকান্ডের কথা আপনাদের জানায়। ধরেন বাজারে বাংলার জন্য পাঁচটি গাইড আছে। পাঁচ গাইডের এজেন্ট বাংলা শিক্ষকের কাছে যাবে, গিয়ে বলবে ভাই আমার গাইডটা দেখবেন, সাথে একটি শাদা কাগজের খাম রেখে যাবে। এই শাদা কাগজের খামেই আছে আলী বাবা রহস্য-- মিনিমাম চল্লিশ হাজার টাকা। এইবার শিক্ষক ক্লাসে যাবে, ক্লাসে গিয়ে ঔ গাইডটি কেনার জন্য ছাত্রদের বলবে। আর সব ছাত্র দলে দলে স্যারের আদেশ মনেপ্রানে মান্য করে গাইড কিনতে থাকে, ফলে গাইড এজেন্ট স্যারের প্রতি মহা খুশি।

শাদা খামে পকেটভারী করা স্যারও সাওম পালন  করেন ইফতার করেন, একা করেন না, জামায়াতের সাথে করেন। কারন জামায়াতের সাথে ইফতারে অনেক নেকি। এমন আরও, এমনকি তাদের চেয়ে বড় বড় নেক্কার বান্দা বাংলাদেশের জমিনে আছেন যারা সাওম পালনকারীদের খাবার খাওয়ানোর নামে বিষ খাওয়াচ্ছে। এসব নেক্কার বান্দাদের দেখে আমার কেবল হাছন রাজার কথাটি মনে হয় "নামায রোজা ছাইড়া দিছি বেহেশতে যাইবার ভয়ে।"

হায়রে সংযমের মাস, এই মাসেই মানুষের রাগ বেড়ে যায়,এই মাসেই দুর্নীতি বেড়ে যায়, এই মাসেই মানুষ সবচেয়ে বেশি খায় ....

শনিবার, ১০ জুন, ২০১৭

পালাবে

সব সুখ পালাবে লেবু পাতার ছায়া থেকে
বৃষ্টি হবে না
চাষ হবে মানুষের
সব মানুষ পালাবে লেবু পাতার ছায়া থেকে 

আমাদের পৃথিবী

আমার সৌন্দর্যসীমা তুমিতে থেমে গেলে পৃথিবীর মন খারাপের কাল

চলো আমরা আকাশ বানাই
মানুষ মেঘ হলে বৃষ্টি লুকাবে আমাদের ডানায়

হাঁটতে গিয়ে পথ ভুলে যাবো
ভাবতে গিয়ে আদর্শ নৈতিকতা ভুলে যাবো একেবারে
শুধু আমাকে মনে রাখবে তুমি আর তোমাকে আমি

আমি আর তুমি থেকে জন্ম নিবে নতুন এক পৃথিবী

আমাদের পৃথিবীতে কেউ কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়বে না, সব কিছু যেন বিনম্র প্রতিষ্ঠান

সবাই সব কিছু জানবে যার যার মতো
সকাল হলে পাখির মতো ডাকবে
দুপুরে অভিসারে যাবে ইমোশনাল বায়ু নেই এমন বিছানায়
সন্ধ্যায় প্রার্থনা
আমাদের প্রার্থনায় কোনো চাওয়া নেই কোনো পাওয়া নেই
কেবলই নিজের দিকে ছুটে চলা

রাতে মুছে যাবে সব আলো
মনেপ্রানে অন্ধকার ঘুম আর ঘুম

শুক্রবার, ৯ জুন, ২০১৭

গলে

বীর্যপাতের এই কালে
জান না মন হৃদয় কত আষ্টেপৃষ্ঠে গলে 

বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০১৭

উচাটন

তখন তুমি আমার ঘরের শান্ত দুপুর রাত
এখন তুমি মন উচাটন আলোধরা ঘাত

.✔

অন্ধকার আমার প্রিয় ঋতু 

ইছামতি

বাইরে খুব গরম। ইছামতি পুরাই গরম। গরমের সাথে ইছামতির কোনো সম্পর্ক নেই এমন কথা সমাজের কেউ বলতে পারবে না। গরম ইয়েস বললে ইছামতি বলে ডাবল ইয়েস।

কচুরিপানা ইছামতির গতরে নিথর দাঁড়িয়ে থাকে। জলের পানার কোনো ক্ষমতা নেই চলাচল করবার। জল চললে পানা চলবে, জল না চললে পানা চলবে না। ইহাই পানার নিয়তি।

ইছামতি

কী?

মেঘনা দেখতে আসবে?

আসি যদি মেঘনায় কলস গলায় দিয়ে মরতে হবে না তো আমায়?

বেঁচে থাকার খুব ইচ্ছা বুঝি?

ইস, নিজে বুঝি বাঁচতে চাই না!

ইছামতির জলে নেমেছে আর জীবন নিয়ে ফিরেছে এমন কথা আজও শুনেনি পৃথিবীর মানুষ। ইছামতি হৃদয় হন্তারক। তার মনে তবুও থাকে বেদম প্রেমের জ্বালা, কৃষ্ণ এসে বাঁশি বাজায়, যমুনার ঘাটে হাহাকার, সাঁওতাল লেজ নিয়ে হাজির হয়।

আরেকটু পরে পৃথিবীর উপর এক ফোঁটা জল পড়বে, আপনি মুখ হা করে রাখতে পারেন।

বুধবার, ৭ জুন, ২০১৭

এমনটাই সত্য

পিঁপড়া পৃথিবীর উপর দিয়ে হেঁটে যায়, বেহুলা কেঁপে কেঁপে ওঠে, অর্জুন তামাক টানে বসে বসে।

ইছামতি এমনভাবে ভুল করে যা মৃত্যুর মতো দেখায়। ইছামতি ডাঙ্গা এবং জলের পার্থক্য শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারেনি। বক ইছামতির প্রেমে পড়বে স্বাভাবিক, তাই বলে ইছামতি পাখার প্রেমে পড়বে ভাবা যায়!

পাখার সেই ক্ষমতা নেই যে ক্ষমতা সাগরের আছে। ইছামতি সাগরের ধ্যানে থাকবে এমনটাই স্বাভাবিক এমনটাই সুন্দর এমনটাই সত্য। ইছামতির এই ধ্যান ভঙ্গের কারন বহুবিধ রোগের ইঙ্গিত দেয়। হয় ইছামতি সুস্থ হবে নতুবা পাখাকে পাখিকে অসুস্থ করবে।

পিঁপড়া কেবল কয়েকবার পৃথিবীর উপর দিয়ে হেঁটে যাবে।

রবিবার, ৪ জুন, ২০১৭

বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমি

থাকি জিয়া হলে। জিয়া হলে থাকি বলে আপনারা ভাববেন না এখানে জিয়া সৈনিকদের বাড়িঘর। বাংলাদেশ তো। তাই পুরাই উল্টা। জিয়া হলে বঙ্গবন্ধু সৈনিকের একচেটিয়া আস্তানা। মজা পাবেন একটি কথা শুনলে-- আমাদের হলের যিনি প্রভোস্ট তার নামও জিয়া।

আমার রুমের পাশেই মহাসড়ক। মহাসড়কে চব্বিশ ঘন্টা গাড়ি চলে! আর আমাদের মাথার ভেতর চলতে থাকে পু পা বে বো। গরুর নতুন শিং ওঠলে যেমন সবারে গুতা দিতে চায় তেমনি বাংলাদেশী ড্রাইভাররা সারাজীবন শিংধারী নতুন গরু থাকিয়া যায়।

সাবেক বছর এমন দিনে আমার ঠান্ডা লাগে। আমার স্মৃতিশক্তি বলে নাই, বলিয়াছে ফেইসবুকের on this day appsটি। ইতিহাসের কী মহান কুদরত এমন দিনে আবারও আমার শরীর ঠান্ডার কবলে পড়িল। সামনে বিশাল কাজ। শরীরে ঠান্ডা থাকিলে হইবে না। তাই ঠান্ডার কৃষ্ণলীলা দূর করিবার মিশন হাতে নিলাম।

এক ডাক্তার ভাইকে ফোন দিলাম, সে ম্যাসেজ করিল ঔষধের নাম লিখিয়া। আরেক ডাক্তার ভাইকে ফোন দিলাম সে একেবারে নিজেই নিয়া গিলা ঔষধ আনিবার লাগিয়া। ঔষধ হাতে দিয়া ডাক্তার ভাই আমারে কইলো ' এ ঔষধ সেবন করিলে মহান এক ঘুম চোখে আসিবে।' এমনিতেই আমি বেড়ালের মতো ঘুমের সুযোগে থাকি, তারউপর ঔষধ ক্রিয়া। আমি মহান মহা ঘুমের প্রস্তুতি নিলাম।

ঘুমানোর আগে এক সুন্দরীকে ম্যাসেঞ্জারে আমার ঠান্ডার কথা জানাইলাম। সুন্দরী পাঠাইলাম এক হিন্দি গান।  আমি বলিলাম ইহা কী ঠান্ডার ঔষধ। সুন্দরী দিল ' হা হা হা ', মানে বিশাল এক হাসি। আমার এক বড় ভাই বলতেন সুন্দরীদের হাসির মধ্যে ভিটামিন ডি থাকে। আমি ভিটামিন ডি লইয়া একটু আরামবোধ করিতে লাগিলাম। চোখে ঘুম ঘুম ভাব। ছোট বোন একখান বানানের শুদ্ধ রূপ জানিতে চাইল, বলিলাম, তারপর ছোট বোন (ডিপার্টমেন্টের) বলিল রেজা ভাই আমাকে কিন্তু কবিতা বুঝাবেন। ঘুমের ভেতর থাকিয়াই আমি বলিলাম ঠিক আছে। আমার চোখে ততক্ষনে ঘুম পুরাই ওঠে গ্যাছে। ঘুমে ভাবতেছি দয়াল জানে কয়দিন যে ঘুমাইতে হয়।

দুইঘন্টা ঘুমানোর পর চোখে আমার ঘুম নাই। সুসংবাদ হলো ঠান্ডাও নাই। কিন্তু শরীরে লেপ দিয়া ফ্যান চালিয়ে ঘুমাতে ইচ্ছে হয়। এবং তাই করবো। আমার রুমমেটের আজ পরীক্ষা। তাই সে বসে গ্যাছে পড়াশোনা করিতে। দুইদিন আগে ওর চিকনগুনিয়া জ্বর হয়েছিল। এই জ্বর প্রেমিকদের লাহান অঙ্গে অঙ্গে ব্যথা নিয়ে আসে। এই রোগটি পূর্ব আফ্রিকায় ধরা পড়ে। বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত কোনো রোগের নামকরন করিতে পারে নাই। সরি সরি। পেরেছে। কলেরা একশত উনচল্লিশ ও রোগটির নামকরন বাংলাদেশ করিতে পারিয়াছে। বাংলাদেশে কেন ভালো মানের ঔষধ বিশেষজ্ঞ তৈরি হয় না? হবে না। এখানে ডাক্তারের সার্টিফিকেট নিতে চাইলে  সংবিধান মুখস্থ করিতে হয়। আর সেই দেশগুলোতে ....? যখন তারা দেখে কোনো ছাত্রের মধ্যে গবেষনা করার মানসিকতা আছে তখনই তাকে কর্তৃপক্ষ সুনজরে নিয়ে নেয়। ছাত্রটি তখন দুই তিন বছরে একটি ডিম পাড়ে, আর সেই ডিম বিক্রি করে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে কাড়ি কাড়ি টাকা তুলে নিয়ে যায় তারা। ইহাই আমাদের নিয়তি!

রুমমেটের আজকে কলেরায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ছিল। ইফতারের পর সে আমারে বলিতেছে রেজা ভাই পেট কেমন কেমন করে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। কারন ছেলেটার পরীক্ষা।

এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধসময়(গ্রীষ্মকালীন এবং ইদের)। কিন্তু আমগো ঢাহা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু কর্মঠ বিভাগ আছে যারা মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিলেই আমাদের সেই বন্ধ গ্রহন করিতে হইবে!  তাই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ সময়কে সবিনয়ে অগ্রাহ্য করিয়া পরীক্ষা নেয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পনেরো রমজানের পর প্রায় হল ফাঁকা হয়ে যায়, ক্যান্টিনে খাবার প্রায় পাওয়া যায় না। খাবার খেয়ে না খেয়ে মহান ছাত্ররা পরীক্ষা দেয়ার মহান কাজটি করিতে থাকেন। ঘরের ভেতর চমৎকার চমৎকার সুস্বাদু সুস্বাদু রান্না করা খাবার খেয়ে খেয়ে মহান অভিভাবকরা পরীক্ষার ডিউটি পালন করতে আসেন আর আনন্দে আটখানা হয়ে প্রশান্তির জলে ভাসিতে থাকেন। দায়িত্ব সম্পূর্ন হচ্ছে বলে কথা। কিন্তু একটি কথা আমার মগজে ধরে না-- বন্ধসময় পাওয়া ছাত্রের অধিকার, ছাত্রদের অধিকার ছাত্রকে বুঝিয়ে দেওয়া শিক্ষকদের দায়িত্ব। দায়িত্ব ছিনিয়ে নিয়ে দায়িত্ব পালন এ কেমন দায়িত্ব!

যাক, আমার এতো কথা বলিবার দরকার নাই, ছোট মুখে বড় বড় কথা বলে বাংলায় একটি প্রবাদ আছে। প্রবাদটি অবশ্যই মানিয়া চলিতে হইবে। বাউল বলিয়াছেন ভাবিলেও পৃথিবী চলিবে না ভাবিলেও পৃথিবী চলিবে। আমার এখন চলিবার দরকার। চলিলাম। আপনারা ভালো থাকবেন ....

তুমি তো সংসার হয়ে রয়ে গেলে

মানুষের কাছে গেলে মানুষ তবে এক অসুখের নাম
পুরনো গানের মতো যার গায়ের রঙ বদলে যাওয়া সিকিপয়সা মনে হয় তাকে অথচ চমৎকার আমপাকা রঙ ছিল তার আমার ঘরে

অন্ধকারে সব মুখ অন্ধকারের মতো রঙিন
আলো এক উদ্ভুত আয়না সব কিছু হেডলাইন করে দেখায় যে যার মতো

ঘরে আছো? ভালোই আছ

রোদের সংসারে এসে বন্য হলে সংসার সুখ পালাবে পালাবে
সংসারে থেকে থেকে কত পাখি হারিয়েছে পাখার ক্ষমতা, কত পাখি ভুলে গ্যাছে সুনীল আকাশ ষোলোকলা বাতাস

তুমিও ভুলে যাচ্ছ ধীরে ধীরে

মানুষের কাতারে নেমে আসা মানুষ যারা আমি রয়ে যাবো তাদের খুব কাছে-- তাদের ঘরে সংসার নামক আসবাব নেই
নেই কোনো ব্যক্তিগত বিছানা
টিভি নেই, নেই কোনো জানালা
আছে কেবল আকাশ আকাশের উপরে আকাশ