শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

সুনাম

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বিশেষ। প্রতিটি দিন প্রতিটি সময় সমান গুরুত্বের দাবিদার। সময় এবং জীবন আলাদা কোনো সত্ত্বা নহে। শরীরের কোনো অংশ কোনো কারনে বিশেষ গুরুত্ব পাওয়ার অধিকার এককভাবে রাখে না। শরীরের প্রত্যেকটি অংশ বিশেষভাবে সমান গুরুত্বপূর্ন।

তবে অন্ধের কাছে চোখ বিশেষ আকাঙ্খার জায়গা থেকে, অভাববোধের জায়গা থেকে। যাদের কাছে বিশেষ কোনো দিন নেই তারাই বিশেষ দিন তৈরি করে। 

শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬

এরপর

দুপুরের ভেতর দিয়ে চলে যায় আন্তনগর ট্রেন-- চাঁদনী রাত।

নদী পড়েছে অফিসিয়াল পোশাক, আমাদের পুরাতন মাঝি সেই আগের লেবাসেই আছে, মাইকে মাইকে বাজতে থাকে হামদ কিংবা নাত।

ভিক্ষুক এখনো দরজায় পাতে হাত।

দরজার নিজস্ব কোনো শব্দ নেই, হাজার বছরের জানালা আমার চোখের সমান।

জমানো কথার ভেতর ফ্রিল্যান্স দৃশ্য আসে বারংবার, পানপাতার মতো মুখ কেন হারায় নিজের ভিটা তা তো জানবার কথা, তা তো জানবার কথা।

চোখে আসে সীমানা
মনে থাকে হিসাব
একটি নীল রঙের সকাল থেকে জন্ম নেয় সবুজ রঙের বিকাল।

চোখের ভেতর দিয়ে চোখ দেখতে গেলেই যতসব আলোর মেলা
থোকা থোকা আলো
বিন্দু বিন্দু আলো
চুপচাপ চুপচাপ এক দুনিয়া

কামনার ঘরে মপর্না হিসাবের চারা রোপন করে ধীরে ধীরে
সেই আন্তনগর ট্রেন দুপুরের মতো চলে যায় রাতের ঘরে। 

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

দুই

দুচার কলম লিখতে না লিখতে বই বের করতে হবে। বই বের করতে না করতেই পুরষ্কার পেতে হবে। পুরষ্কার পাওয়ার  কয়েকদিনের মধ্যে লেখক টেন্ডারবাজি  শুরু করতে হবে। তারপর শুরু হবে ফতোয়া দেয়া, মোনাজাত করা আর খেচুড়ি খাওয়ার ধুম।

আর দালাল শ্রেনি কিন্তু হাজির, পত্রিকা বের করবে, পত্রিকা বের করে করে কোথাও খাবারের সুযোগ নিবে, কখনো চাকরী পাওয়ার সুযোগ নিবে, কোথাও সোস্যাল ক্যাপিটাল অর্জন করার লোভে থাকবে, কখনো আবার নিজের সম্পাদনা যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে কোনো মহলের পাচাটা গোলাম হবে।

তারা খুব সুন্দর করে সৌন্দর্যের কথা বলবে। তাদের সৌন্দর্যের সুন্দর বর্ননা শুনে বুঝা যাবে না তারা আসলে শয়তান ডট কমের এজেন্ট। তাহলে কখন বুঝা যাবে? বুঝা যাবে যখন তারা ফলাফলের দিকে যাবে। ফলাফলে তারা বলবে সৌন্দর্য মানে প্রিয়াংকা কারকি অথবা ফেয়ার এন্ড লাভলী।

এ ত

বিগত দিনের আমি রোজ একদিন হয়ে যায়, গিটারের আওয়াজ, মিউজিক চেয়ারের সেই অভ্যাসে বহুগামীতার চিরাচরিত স্বভাব জেগে থাকে বেঁচে থাকে, বেঁচে নেই কেবল বন্ধুর বাড়ি, নদীর ঢেউ।

নদী কথা বলতে চায়
কথা দেখা করতে চায়
চাওয়া চায় পাওয়ার মতো একখান হাসি।

আওয়াজ দিতে জানলেই পৃথিবীকে চোখের সামনে নামিয়ে আনা যায় না, পৃথিবীরও রয়েছে জন্মগত কিছু টান, পৃথিবীকেও তার পৃথিবীর কাছে হিসাব দিতে হয়-- রোটিন মেনে যেতে হয়েছে জন্মের কাছে, আবার রোটিন মেনে যাবে মৃত্যুর তালতিলে জীবনের কাছে।

জীবন আছে
জীবন থাকে
জীবন থাকবে বলে আজও মনে হয়

কেবল পুরাতন বাড়ির ভেতর ভূতের চিৎকারে মানুষটি ঘুমাতে পারে না।

মানুষটি হাসতে পারে না
মানুষটি দেখতে পারে না
মানুষটি হাঁটতে পারে না

মানুষটি আলোর ভেতর ছায়া দেখে আরও আরও গভীর থেকে গভীরে,
বিগত দিনের মানুষটির ভেতর তুমিহীন শুন্যতার চাষ হবে, কাগজে ফুলে গন্ধ নিবে আজকের তারা।

সব সারা
সব হারা
আকাশ নিশ্চিতভাবে হয়ে যাবে আকাশের তারা 

বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

বানরটি

মাথা বরাবর অনেক কিছুই থাকে না
মাথার কাছেও অনেক কিছু থাকে না
চোখের সামনে সত্যি ডিভোর্স দেয় সত্যকে
হাইকোর্ট জজকোর্ট দেখায় বিজ্ঞাপনের মফিজ
কাল থেকে অন্ধকার নামবে কুয়াশার নাভিমূলে
মহাস্থান আবাল সুর দিবে ইতিহাসের মালবাহী দোকানে
চলছে থামবে
থামবে চলছে
থামা আর চলার মাঝে বাতাসের সংসার
সংসারে দেখা দেয় যতসব অযথা আলাপ

কোন মানুষ কেমন, কোন ঘরে আলো জ্বলে, কোন বানরের লেজে লেগে যায় কত লিটার উপরি তেলের খরচ জেনে হয় না কোনো জমির একখন্ড কাজ, শীতকালে মানুষের ভীষন আরাম।

কুয়াশার চাকরি করে সুখ আসে মনে, সুখ আসে জনে।
ঘরমুখো সুখ
মানুষবাহী সুখ
সুখ থেকে সুখ
সুখে পালাতে পালাতে কাল রাখে না হাত পায়রার হাতে
ঘাসের ঘরে খুব ভোরে রোজ রাতে কিছু কথা থাকে কিছু কথা থাকে

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

জু

কুয়াশার জন্য প্রার্থনা। কুয়াশা এলো। সাইবেরিয়ান পাখিও ভালোবাসা চায়। ভালোবাসা পেলো। হিমবায়ু আসবে বলে আসেনি তবুও পাখিদের ঘরে কোলাহল আছে, আছে রোদ পোহানোর পাখিগত উৎসব। একটি পুকুরে প্রতি বছর ফোটে একটি নীল শাপলা, এই বছরেরও তাকে দেখা যায় পুকুরের ঠিক মাথায়। শুরু হলে কুয়াশার খেলা ঘুমিয়ে থাকা অন্যায়।  

সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

ধন্যবাদ

সিগারেটের ধোঁয়ার মতো উড়ে যায় প্রেমিকার ওড়না
শোকাবহ চোখে ভেসে আসে বহুদিন আগের এক ঝরনা
কারা যেন বলে তুমি ছিলে
কে যেন বলে তুমি আছো
ছিলে হয়তো
আছো হয়তো
কুয়াশার ভেতর জমা থাকে না ভোর
পুলিশের চোখ দেখে না মানুষের হৃদয়
একটি সকালের আশায় রাতের পথ ধরে ঘুমচোখে হেঁটে চলা
একসময় ঠিকই কোকিলের সাথে দেখা হবে
নিভে যাওয়া সূর্যের সাথে কথা হবে
ম্লান মুখে হাসি দিবে অনেক দিন আগের এক অন্ধকার
আকাশ যেখানে থামবে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকবে আমার মতো একটি গাছ
কোনো দুঃখ নয়
কোনো অভিমান নয়
কোনো অভিযোগ নয়
একটি গাছের কাছে কেবল আরেকটি গাছের ছায়ার প্রার্থনা 

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

..:..:

রোদ পোহাতে পোহাতে সূর্যের বাড়ি থেকে টেনশন নেমে আসে
রেললাইনের পাথরে দেখা দেয় সেলফি ম্যানিয়া

মানুষ কথা বলতে জানে, মানুষ ভালোবাসতে জানে, মানুষ জানে নিজেকে একমাত্র ভাবতে

আরও গভীরে গেলেও ভাসমান সব মৃত্যুর মতো দেখাবে, গন্ধ ছাড়াও ফুল আছে পৃথিবীতে, কাঁটা ছাড়াও মাছমাংসের স্বাদ মিলে জিহ্বায়

কিছু বাড়তি ভালোর জন্য অসুখ বিক্রি করে যারা তারাও মশার কামড়ে ব্যথা পায়, সরিষা ফুলের মতো হাসতে পারাটাই কাজ, বোকা হয়ে ত্যাগী হতে পারাই সমাজ, কাঁদতে পারলে তুমিও সূর্য হবে

:.

আমার ভোর রাত করে বাড়ি ফিরে 

স্ট

তাকে রক্ষা করবে তার আল্লা। বিষয়টা খুব মজার। কিন্তু সে জানে না আল্লা রক্ষা করা ধবংস করার দায়িত্বে নাই। দুনিয়া এক সিস্টেমের নাম। সিস্টেমে আছো তো এমনিতেই সব রক্ষা পাবে। আমি তাকে ভয় দেখাতে চাই নি। সে ভয় পেয়েছে। তার ভয় পাওয়ার কারনও সিস্টেম।

চাচা, এই রুমটাকে  কী নামে ডাকে?

সে ইশারা দিল লেখাটির দিকে।

একটি লেখা যেখানে বুলেট করে লেখা Guard।

আপনিই এই ট্রেন চালান?

হুম।

কীভাবে?

এই প্রশিক্ষন নিয়েই আমি এখানে বসেছি। সরকার তো আর এমনিতেই আমাকে পচাঁত্তুর হাজার টাকা মাস শেষে দিয়ে দেয় না।
আমিও বললাম 'হুম'।
তারপর সে ওযু করতে গেল। সালাত কায়েম করবে। খুব আস্তে আস্তে সালাত কায়েম করতে থাকে সে। সালাত শেষ। এখন প্রভুর কাছে হাত তুলে সে। এই হাত তুলল, এই হাত নামাল। খুব অল্প সময়ের ব্যাপার।

ভৈরব স্টেশন থেকে আমি দাঁড়িয়ে আছি। পকেটে টিকেট আছে। তবে সিট নেই। একটু নীরবতার জন্য এই পরিচালকের কামড়াটি বেছে নেয়া। এই কামড়ায় আরও কয়েকজন আছে। তারা পরিচালককে একশ টাকা করে দিয়েছে। আমিও একশত টাকার একটি পুরাতন নোট দিয়েছি। পুরাতন টাকার নোট জাল হবার সম্ভাবনা কম থাকে সে বলে। জ্বি চাচা, পুরাতন টাকার নোট জাল হবার সম্ভাবনা একেবারেই নাই তবে একটু আকটু ফুটো হয়ে থাকে। সে ত্রিশ টাকা রেখে আমাকে বাকি টাকা ফেরত দেয়।

ট্রেন চলছে।

আমার পা মেয়েটির বোরখার লেজের উপরে পড়ে। অনেকক্ষন কেউ আমরা টের পাইনি। হঠাৎ মেয়েটি এক্সকিউজমি বলে গলার শব্দ তারায় নিয়ে যায়। মনে মনে ভাবলাম সাপের লেজে পা দিলাম না তো!

ছোট্ট কালে মাছ ধরতে গিয়ে সাপের লেজে একবার পা দিয়েছিলাম। সাপ ছুতকরে আমার পায়ে তার দাঁত বসিয়ে দেয়। ভয়ঙ্কর ভয় পাই। আবার সচেতনও হয়ে উঠি। কামড়ের উপরে শার্ট খুলে বেঁধে ফেলি। তারপর সাপের দিকে তাকাই। ওমা! সাপ ছটফট ছটফট করছে। আমি চেয়ে আছি। কী করবো বুঝতে পারছি না। সাপটা ছটফট করতে করতে মারা যায়। অথচ মরে যাওয়ার কথা আমার, আমি এখনো বেঁচে আছি।

আপনি গান করেন?

না, কেন?

আপনার এক্সকিউজমি শব্দে জানালার কাঁচ ফেটে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছিল তো তাই। আপনি কিন্তু গান করলে ভালো করবেন, আপনার কন্ঠের বেইজ ভালো।
অপমানিত হয়েছে না সম্মানিত হয়েছে মেয়েটি বুঝতে পারেনি। তার মুখে নেমে আসে লাজুক হাসি।
আম্মু চেয়েছিলেন আমি সং করি, কিন্তু আব্বু তা লাইক করতেন না।

অ তাই। তারপর আমি কানে হেডফোন দিলাম।

ট্রেন চলছে।

চাচা আমার জন্য একটি দোয়া করবেন?

অবশ্যই।

কী দোয়া জানেন তো ....

কী?

পচাঁত্তুর হাজার টাকা বেতন পাওয়ার পরও যেন আমাকে ত্রিশ টাকা, একশ টাকা ভিক্ষা না করতে হয়।

চাচা এবার ক্ষেপে গেলেন। অল্পশিক্ষিত অহংকারী মানুষ ক্ষেপে গেলে ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করে। সে অনর্গল ইংরেজিতে লেকচার দিয়েই চলেছে।

চাচা, আমি ইংরেজি ভাষা বুঝি না, এখনো আমিও বাঙ্গাল। তবে একটি কুরানের  আয়াত মুখস্থ করেছিলাম-- ইন্না সালাতা তানহা আনিল ফাকসাইর ওয়াল মুনকার।

অর্থাৎ সালাত মানুষকে বেহায়া, মিথ্যা, লজ্জাকর, ভিক্ষা করা থেকে বিরত রাখে।

শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

গ্যা

রোদে শুকাতে দিয়েছি বয়স-- শীতকাল
পোষাকের কান থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত জল আর জল-- শীতকাল
বাতাস ভুলে গ্যাছে সাকপ্রিয় সুখ-- শীতকাল
সূর্য চলে গ্যাছে চোখের পরপারে, পোষাক তখনো ঝুলে আছে তারে, শীতকাল ঝুলে আছে কার্তিক মাসের ঠাকুরমার ঘরে 

✔এ

মেঘের আড়ালে তুমুল যুদ্ধ 

চাউ

চায়ের কাপে বিশ্ব কাঁপে
দৃশ্য কাঁপে ঠোঁটে
মন পাগলা নৌকা চালায়
বৈঠা চলে স্রোতে 

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬

মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬

সাহিত্য

যাদের সাহিত্য চর্চার শেকড় খুব গভীর না তারা আসলে কচুরিপানার মতো স্রোতের টানে ভেসে চলে। তাদের ব্যক্তিত্বের কোনো নিজস্বতা নেই। হাততালি তাদের একমাত্র লক্ষ্য। প্রাপ্ত হাততালিকে তারা প্রসাধনীর মতো ব্যবহার করে যা তাদের ভোগের চেহারাকে উজ্জ্বল করে।

সাহিত্য কিন্তু আপনার পাগলা ঘোড়া না যার পীঠে চড়ে আপনি সংসার মাঠ পাড়ি দিবেন, সাহিত্য হল ছোট্ট নৌকা যেখানে আপনার ঠাঁই হবে না। 

!!

স্টেশন
        অন্ধকার
                      মানুষ 

শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

প্রতি

ইচ্ছেগুলো পাখির মতো আকাশে উড়তে থাকে। যে গাছ নড়ছে দুলছে সে গাছে পাখি বসে না। পাখির জন্য প্রয়োজন হয় একটি স্থির গাছ। স্থির গাছে পাখি বসে, বাসা বানায়, আরও পাখি জন্ম দেয়। একসময় গাছটি হয়ে যায় পাখিদের গ্রাম।

যে মানুষ অস্থির, নড়ছে দুলছে সে মানুষের মনে ইচ্ছা, স্বপ্ন কখনো বাসা বানাতে আসে না। স্বপ্ন তার মনেই বাসা তৈরি করে যার মন প্রত্যয়ী পদক্ষেপ ফেলে প্রতিটি সময়ের মাঠে। 

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

ঠিক

মাটির ঢেলার মাঝে সবুজ ঘাসগুলা একা 

বার্তা

জীবন একটা উপহার। উপহার কেউ সাজিয়ে রাখে, কেউ ব্যবহার করে, কেউ আবার রাগ করে আগুনে পুড়ায়।

উপহারের কোনো বিনিময় মূল্য হয় না, উপহার মূল্যহীন বলেই অনেক মূল্যবান। জীবন নামক উপহার মানুষ কোথা থেকে পেয়েছে তা অনেক গভীর বিষয় যেখানে কবি নীরব।

প্রত্যেক মানুষ কমাতে বসবাস করে কিন্তু দাঁড়ির আলোচনায় তার চুল সাদা হয়, চোখের সামনের দৃশ্যরা ঝাপসা হয়ে আসে, জিহব্বাটি স্বাদ্গুন হারায়।

মানুষ জানে না মানুষ অতি কষ্টে মানুষ। কুয়াশার মতো চেতনাকে আজকাল মানুষ বলে চালিয়ে দেয়া হলেও মানুষ কিন্তু আছে। 

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬

উত্তর

রেজা ভালো হয়ে যাও। এখন গভীর রাত। সকাল হবার আগেই ভালো হয়ে যাও। পয়সা টয়সা লাগবো না। চোখ বন্ধ করে হৃদয়ের কথা শুনে দেখো বোবা পৃথিবী অযথা চিল্লায়। পুঁটি মাছ নাচে অযথা বেশি, বৃদ্ধ চাচার কন্ঠে থাকবেই কাশি। তোমার আকাশ এখনো অসীম, এখনো শতভাগ ব্যবসায়ী হতে পারনি, ভালো হবার সুযোগ আছে তোমার শতভাগ।

কূপকে যারা মৃত্যুর ফাঁদ ভেবেছিল তারা জানে না কূপ কেমন করে অসহায়  ইউসুফকে নবী বানায়,  রাজা বানায়; তারা জানতেও পারবে না।
তারা কেবল নিজের ভেতর গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে একদিন ভালো মানের কূপ হয়ে যাবে। তুমি গর্তের সন্ধানে মাটির ঢেলার সাথে মিশে যাবে তা সে চায় না, তোমাকে সে আগুনে দিবে তবে মাটির চেয়ে আরও শক্তিশালী করার জন্যে। সে তোমাকে ধীরে ধীরে তার দিকে নিয়ে যাবে, তুমি বুঝতেও পারবে না।

তুমি ইচ্ছা করলেই ভালো হতে পারবে না রেজা, ভালো হওয়া কোনো কঠিন কাজ না তবে কঠিনতর কঠিন, কঠিনতম কঠিন।

জীবনকে প্রশ্ন করা যায় না রেজা, জীবন ঠাঁইহীন নৌকার মতো ঢেউয়ের তালে চলে, যেমন করে দূরে থাকে সে তেমন করে ধরে। রেজা ভাই, ভালো হওয়া তোমার চাই-ই চাই। 

শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

নতুন


চট্রগ্রামে গেলে ভাইয়ের সাথে দেখা করি। ভাই আমার দেশের সেবায় নিয়োজিত। তিন বছর আগে চট্রগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে যাওয়া হয়। তিন বছর পর আবার আসলাম। জায়গায় জায়গায় কড়া চেকিং। তারউপরে মুখে আমার দুর্বাঘাস দুর্বাঘাস দাড়ি। সন্দেহের শেষ নেই। সব সন্দেহের অবসানে অবশেষে টাইগার পয়েন্টে যেতে পারি।

টাইগার পয়েন্টে যাওয়ার আগে ক্যাফে 24 নজরে আসে। ক্যাফে 24 মানে চব্বিশ ঘন্টার ক্যাফে নয়, 24 মানে 24 পদাতিক। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে এমন জনসাধারন অবাধ বিচরন বিনোদন থাকবে তা আমার কাছে সুবিধাজনক মনে হয়নি। যাহাইহোক সুবিধা অসুবিধা ভাববার অনেক লোক আছে। ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়ার সাথে সাথে একটি দুঃখজনক সংবাদ পাই। ডাকাতির সংবাদ।

বৌদি ঢাকা যাবে। সকাল সকাল বাড়ি থেকে বের হয়। সূর্য তখনো চোখের সামনে আসেনি। রিকসা আলম নগর যেতে না যেতেই তিনজন মহামান্য এসে হাজির। বৌদি তার কানের দুল পর্যন্ত খুলে দিতে বাধ্য হয়। তিনজন অস্ত্রধারী মানুষের কাছে তিনজন অস্ত্রহীন মানুষ অসহায়। কত্ত অসহায়!

ঘটনাটি শুনে কষ্ট পেলাম। যাদের আচরনে প্রাগৈতিহাসিক মনোভাব নেই তারা ব্যতীত সবাই কষ্ট পাওয়ার কথা। ছোট্ট কাল থেকে শুনে আসছি আশুগঞ্জ নাকি শিক্ষিত ভদ্র মানুষের এলাকা। অনেকে বলতে পারেন যেখানে হযরত মোহাম্মদ থাকেন সেখানে আবু জাহেল থাকতেই পারে, যেখানে গাছ থাকে সেখানে আগাছা থাকা অস্বাভাবিক কিছু না। এমন করে বলে ভাষার দায় এড়ানো যায় কিন্তু হৃদয়। হৃদয়ের থার্মোমিটার সত্যকে আরও বেশি সত্য বলে জানে-- শুধিতে হইবে ঋন।

বাস থেকে আশুগঞ্জ নামলাম। খুব সকাল। হালকা হালকা কুয়াশা। আড়াইসিধা যাবো। রিকসা ভাড়া চল্লিশ টাকা। আমার সাথে মানিব্যাগ, মোবাইল, ব্যাগ। ব্যাগে কিছু বই আর একটি  ইতালিয়ান ব্র্যান্ডের রেবলিন লোশন। ব্যাগটি উপহার হিসাবে পাওয়া। মেইড ইন ফ্রান্স। ব্যাগটির মূল্য পঞ্চাশ ইউরো। আমার কাছে ব্যাগটির মূল্য পঞ্চাশ কোটি ইউরো কিংবা তারচেয়ে বেশি। রিকসা চলছে। ভয়ার্ত আমি। আলম নগরের দুই রাস্তার মোড় অতিক্রম করতেই পেছনে থেকে ডাক আসে-- দাঁড়া, এই দাঁড়া। রিকসা স্টপ।

আমার আপতা আরশে মহল্লায় চলে গ্যাছে। ছুড়ি চকচকে করছে। আমার ডানে বায়ে দুইজন, রিকসা চালকের সামনে একজন। প্রথমে মোবাইল দিলাম, তারপর মানিব্যাগ। তারপর ব্যাগটি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ব্যাগটি দেয়ার আগেই ডাকাত মোবাইল মানিব্যাগ রেখে এক দৌঁড়। বিশাল এক দৌঁড়। কিছুক্ষনের মধ্যে আমার চোখের সামনে থেকে তারা উধাও।

কেন? কেন? কেন?

আমি শুধু বলেছি ভাই ব্যাগটি নাও সমস্যা নেই কিন্তু ব্যাগের ভেতরের পিস্তলটা দিয়ে যাও ....

পিস্তল শব্দটি শুনতে দেরী হলেও দৌড়ঝাঁপ দিতে দেরী হয় নাই। ব্যাগের ভেতরের ইতালিয়ান ব্রান্ডের লোশনটিকে অনেকবার ধন্যবাদ দিলাম, ধন্যবাদ দিলাম আমার বলা মিথ্যা কথাটিকে।

আসলেই কখনো সখনো মিথ্যা সত্যের চেয়েও সুন্দর। 

নদীটির

দেখতে যেতাম একটি নদী, নদীতে শিউলি ফুলের ওভারব্রিজ থাকতো যদি 

বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

গালি

সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে যে মানুষটি পা ভেঙে ফেললো তার চোখের জল আমরা দেখি না, আমরা দেখি বার্নিশ করা চোখের নিচে কোনো কালো দাগ পড়ল কিনা, যার ফ্রিজভর্তি খাবার তার জন্য গ্রামের পুকুর থেকে কোনো মাছ আনা যায় কিনা, বোবা কৃষক কাঁদতে জানে না, তাঁদের কান্না কেউ কোনোদিন শুনতেও চায় না, মানবতার টুপি পড়ে তারা সিমিনার করে, মানুষের মানুষ নামে পুরষ্কার সাজায় ঘরে বাইরে, সুন্দর সুন্দর বক্তৃতা দেয় মাইকের সামনে, তারা ছিল সেই কাল থাকে, তারা থাকবে বলেই উত্তরসূরীর পসরা সাজায় থরে বিথরে 

রং

চোখ বুজলে মনের ভেতর একখান আকাশ দেখি কিন্তু কোনো পাখি দেখি না, মনের ভেতর একটি বিশাল সমুদ্র দেখি কিন্তু কোনো মাছ দেখি না।

এতো রঙ আসে কোথা থেকে?

মনের ভেতর তো কোনো রঙের চাষ হয় না। মানুষ তো মানুষ না-- রঙের ডিব্বা। 

স.

প্রভুর ক্ষমতার নাম দয়া 

মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

থামিয়ে

মৃত্যুর মতো চলে যায় প্রিয়তমা ট্রেন
বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে দেখি গতকাল পুরসুর সুপর্না লেন
কাক উড়ে গেলে যতটুকু কালো ছায়া নিচে থাকে তাও রাখে না সে
চলে যায়
আবার আসে
পুনরায় যায়
চিহ্নটুকু থেকে যায় লাল শালুকের দানার মতো বেদনায়
লাল হতে হতে একদিন তা নীল হয়ে যায়
নীলের ভেতর লোকোমাস্টার হয়ে দেখি সময়টা কেবল সিগন্যালের
এই থামো
এই চলো
থামতে থামতে চলতে চলতে নরম সন্ধ্যা নামে, বাঁশপাতার ফাঁক দিয়ে অনেক প্রাচীন এক মাগরিব দেখা যায় 

চিল

গরীবের এক চোখে ক্ষুধা, অন্য চোখে যন্ত্রনা,গরীবের মুখে তাই চিৎকার  

রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

ভ্র

সরাইল কুকুরের জন্য বিখ্যাত। সরাইল্লা কুকুর একটি গালি। সরাইলের পাশের গ্রাম চুন্টা। আমরা চুন্টা গ্রাম আবিষ্কারে জন্য বের হয়েছি। কিন্তু যে চুন্টা গ্রামের উদ্দেশে আমরা বের হয়েছি তা এখানে নেই-- মানুষ আছে, জঙ্গল নেই। মানুষের সাথে জঙ্গল না থাকলে আমাদের শুটিং ক্যামেরা চলবে না।

চুন্টা গ্রামের খাবারদোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম সে সুন্নি কিনা। সে জবাব দেয় যে সে ওহাবী। মিস্টিদোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি সুন্নি না ওয়াহাবী। ওমা, অনায়াসে বলে দিলো যে সে ওহাবী। আড়াইসিধা গ্রামে কেউ যদি এমন অনায়াসে ওহাবী বলে নিজের অবস্থান নির্ধারন করে আমি নিশ্চিত তার শরীর হাসপাতালে যাবে অথবা তার জন্য আড়চোখ বাধ্যতামূলকভাবে নির্ধারিত হবে। পরে জানতে পারি মিস্টিদোকানদার হিন্দু।

আমরা রিকসা করে সরাইল গ্রামে চলে আসি। সাগরদিঘীকে দুই বছর আগে যত বড় মনে হয়েছে এখন কিন্তু তত বড় মনে হয়নি। আমার চোখ বড় হয়ে গেছে নাকি সাগরদীঘি ছোট হয়ে গ্যাছে তা তদন্তের বিষয়। সাগরদীঘির পাশেই মসজিদ, মসজিদের পাশে মাজার, মাজারে হাজার বছরের পুরাতন বাবা ঘুমিয়ে আছে।

মসজিদের নির্মান ইতিহাসও কেউ বলতে পারে না। মাজারে যে আম্মা চাচিরা কুরআন আবৃত্তি করতে আসেন তারাও জানে না। আসলে ইতিহাসের দিকে আমাদের নজর খুবই কম, আমাদের নজর কেবল হাজার বছরের অদেখা বাবার দয়ার দিকে। 

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

বেশ

ভেতরে ভেতরে আমরা সবাই কমবেশি বেশ্যা, বাইরে বাইরে শতভাগ মাওলা আল্লামা 

নিভে যাওয়া

প্রয়োজনের সংসারে মানুষ আর কয়জন আছে
প্রয়োজন মতো সবই প্রয়োজন আগে পিছে
চুপ করে বসে আছে যারা তারা জেনে যায় অবশেষে স্রোতের ধারা
মানুষের কালে ডাকু পাখি ডাহে পাতার ফাঁকে ফাঁকে
নীরব এক সাপ রাস্তার পাশে বিষদাঁত গুনে
জীবন এমনই সকাল দুপুর রাতের মতো-- দেখা যায় আবার নিভে যায়

ভালো হয়ে যাও রেজা সময় আছে, দেখবে আসমান তালে তালে নাচে

ভালো হয়ে যাওয়া কাকে বলে আজও জানি না, মন্দের ঘরে তালাচাবি দিলে পূন্যের বাজারে লাগবে আগুন
চোখের ভেতর নেমে আসে চোখ, ঘুমের ভেতর ঘুম

সবাই দেখে চোখের নিচে, হৃদয়ে কানপাতা দোকান বদল হয়েছে বহু আগে
জানালার পর্দা বাতাস থাকলেও নড়ে, না থাকলেও নড়ে 

মঞ্চ

আবৃত্তি মানে দৃশ্যকে কন্ঠে তুলে ধরা, নৃত্য মানে দৃশ্যকে অঙ্গে তুলে ধরা, কন্ঠ এবং অঙ্গ যেখানে একসাথে খেলা করে সেটাই মঞ্চ।

মঞ্চ মানে নিজেকে দেখানো না, নিজেকে দেখার জায়গা মঞ্চ।

মঞ্চে যাওয়ার আগে এক হাজার ভাবা আবশ্যক। কারন নিজেকে দেখার আনন্দ যেমন আছে তেমনি যন্ত্রনাও অধিক। নিজেকে দেখেই মুসা নবী অজ্ঞান হয়েছিলেন, মুনসুর হাল্লাজ হয়েছিলেন পাগল, মজনু হয়েছিল উন্মাদ।

বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬

একদিন তুমি নারী হয়ে যাবে

একদিন তুমি নারী হয়ে যাবে, এখন যতটুকু নারী আছো তার চেয়ে অধিক
আমি শিশু হয়ে, এখন যতটুকু আছি তার চেয়ে অধিক ক্রিকেট খেলবো মাঠে ঘাটে

তোমার উঠোনে নৃত্য করবে আমার শৈশব
তোমার জানালার কাঁচ ভাঙবে আমার বল

খুব ভয়ে ভয়ে বল আনতে যাবো
ঘরের ভেতর থেকে দুষ্টের দল দুষ্টের দল বলে বলে জানালার দিকে আসতে থাকবে তুমি

আমার হাতে ব্যাট আর চোখে ভয়
তোমার চোখে আরও পুরাতন একটি চশমা, ঠোঁটে অনেক দিন আগের একটি কম্পন

মুখোমুখি তুমি আর আমি
মুখোমুখি যৌবন রাতের কিছু রোদ, কিছু তাপ