বঙ্গবন্ধু বিজয় হাফ ম্যারাথন২০২১— ১৭/১১/২০২১। শরীরে যথেষ্ট ক্লান্তি। চিটাগং থেকে ১৬ তারিখ সকালে টানা ছয় ঘন্টা ট্রেন জার্নি করে বাড়ি আসি। শরীরে যথেষ্ট ক্লান্তি। বাড়িতে চার ঘন্টা ঘুমানোর পর বিকালে তিন ঘন্টা ট্রেন জার্নি করে ঢাকা যাই। রাতে মাত্র তিন ঘন্টা ঘুম হয়। শরীরে যথেষ্ট ক্লান্তি। ১৭ তারিখ সকালে হাতিরঝিল রানস্পটে ভোর ৫ঃ ৩৮ মিনিটে উপস্থিত। শরীরে পর্যাপ্ত ক্লান্তি। ভাবছি কেমন করে পাড়ি দিবো ২১ কিলোমিটার পথ।
যথাসময়ে রান শুরু হয়। তখনো চোখের সামনে ২১ কিলোমিটার, মনে মিষ্টি মিষ্টি ভয় ও আতঙ্ক। ঠিক সেই সময় আমার মনের ভয় দূর করে দিলো মিষ্টি মেয়ে 'মে'। মে টেক্সাস ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট— আমেরিকান বালিকা— বাংলাদেশের অবস্থিত আমেরিকান এ্যাম্বাসির মানুষ। দৌড়ে আর গল্পে আমাদের পথ চলতে থাকে সামনের দিকে।
মে'র সাথে পায়ে পায়ে তাল আর মুখে মুখে গল্পে ১৭ কিলোমিটার পাড়ি দিবার পর রানসঙ্গ বদল করি। এবার আমরা তিনজন— বাবুল আক্তার, প্রসেনজিৎ আর আমি। বাবুল আক্তার ভাই শুনালেন তার জীবনের গল্প— কেমন করে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়েও তিনি আজ গ্রামীণ ফোনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সেই গল্প। প্রসেনজিৎ চমৎকার এক কৌতূহলী মানুষ— ব্রাক ইউনিভার্সিটির এমএসসির ছাত্র।
মে'র মায়ের নাম জুন। মে ইংরেজি মে মাসে জন্মগ্রহণ করেনি। মে'র মায়ের নাম জুন বিধায় তার নাম মে। মানে জুনিয়র জুন। আর জুনিয়র জুন মানে মে। মে আমেরিকান মানুষ হলেও আমেরিকার জীবন তার ভালো লাগে না। বাংলাদেশ তার কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে ডে বাই ডে। মে গোড টকার— তবে প্রথম প্রথম সে খুব ইন্ট্রভাট।
২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে আমার সময় লেগেছে প্রায় ২ঃ ৩৩ মিনিট। মনে আনন্দ। শরীরে ক্লান্তি। তবে মনে প্রশান্তি। এই ম্যারাথনের মধ্যে দিয়ে নিজের সক্ষমতা অন্যভাবে আবিষ্কার করতে পেরেছি— ফলে মন বলছে আইরন ম্যান হওয়া এমরানুর রেজা ভাইয়ের জন্যে খুব ইজি না হলেও ইজি হবে। ইজি জীবনের পথে যেমন সত্য রয়েছে তেমনিভাবে রয়েছে পরিশ্রমের প্রিয়তমা দারুল প্রশান্তি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন