রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪

আড্ডা

কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম রুব্বান আর রাবেয়া চাচীর সাথে। তারা একই এলাকার(মানিকদিয়া) মেয়ে। দুজনের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্ব। ফুল বিক্রি করে। ফুল বিক্রি উপলক্ষ, লক্ষ্য অর্থ উপার্জন করা।

অহনকার মাইয়্যা-ছিরিরা ফুল কিনত চা না

তারপরও ছেলে-মেয়েদের যুগল বসে থাকা  দেখলেই তারা ফুল বিক্রি করার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে। তাদের  ব্যাকুলতা দেখে কেউ কেউ আধুনিকভাবে অর্থ দিয়ে দেয় কিন্তু ফুল কিনে না। একটা সময়ে ফুল ছিল প্রেমিক যুগলের দ্বিতীয় প্রেম। হয়তো এই কারনেই আপেল মাহমুদ লিখেছিলেন "মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি "। এখন আর প্রেম শব্দটি খুবভাবে শুনতে পাইনা, শুনতে পাই relationship, girl friend, boy friend যাদের স্লোগান If any relationship does not serve you let him/her go alone।

চাচীরাও ফুলের ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাছাড়া ভিক্ষুকদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে অর্থাৎ ভিক্ষুকরাও বেকার সমস্যার করাল আগ্রাসনে পড়ার জোরালো সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

রুব্বান চাচী স্মার্টলি সিগারেট টানে। তার নাসিকা ছিদ্র দিয়ে প্রধোঁয়া নেমে আসে পৃথিবীতে। তার স্বামী `হাফিজ' তাকে সিগারেট খাওয়া শেখায়। তিনি ছিলেন হাফিজের তৃতীয় বউ। তাকে বিয়ে করার পরও হাফিজ আরো দুটি বিয়ে করে। পাকিস্তানি যুদ্ধের সময় চাচী চলে আসেন তার ভাইয়ের কাছে। ভাইয়ের সাথে এখনো আছেন। ভাইটাই তার সুখের- দুংখের ভাগিদার। ভাইটা খুব অসুস্থ।

রাবেয়া চাচীর স্বামী থেকেও নেই। রাবেয়া চাচীর স্বামী যখন দ্বিতীয় বিয়ে করে তখন সে স্বামীত্যাগ করেন। একমাত্র কন্যাকে সাথে নিয়ে নিজগ্রামের অভিমুখে চোখমুখ ফেরায়। কন্যাকে বড় করে, এক হোটেল মালিকের সাথে কন্যাকে বিয়ে দেন, কন্যার সন্তান হয়, তাদেরও বিয়ে হয়ে গেছে প্রায়।

তাদের অর্থ উপার্জনের এলাকা ঢাকা ইউনিভার্সিটি। তাদের শিকার ছাত্রছাত্রীরা। করুনার পণ্যে তারা অর্থ উপার্জন করেন। অনেক ধর্মপ্রাণা টাকা দেয় আর দোয়া প্রার্থনা করে যেন একটি সুন্দর পোলা  পাই, আবার অনেক ধর্মপ্রাণ টাকা দেয় আর দোয়ার আর্জি করে যেন একটি সুন্দর মাইয়্যা পায়। এই বিষয়টি চাচীদেরকে কুড়ি বছর আগে নিয়ে যায়, চাচীরা তাদের স্বামীর কথা মনে করে,তাদের স্বামীরা ছিল বিয়েবিলাসী যাদের কারনে আজ তারা ভিক্ষুক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন