আশুগঞ্জ গোল চত্ত্বর। বাস দাঁড়ানো। বাসে উঠলাম। সমস্ত বাস ফাকাঁ। ড্রাইবারসহ আমরা তিনজন। বাস চলতে আরম্ভ করল। উজান ভাটি হোটেল অতিক্রম করার আগেই বাস পরিপূর্ণ। বিষয়টি জাদুর মতো মনে হল। আশুগঞ্জের মানুষ আবার জ্বিনে যতটুকু বিশ্বাসী পরকালেও ততটুকু বিশ্বাসী নয়। আমিও আশুগঞ্জের যোগ্য অধিবাসী। তাই আমাকে না জানিয়ে মন সংশয় প্রকাশ করতে শুরু করল যে এরা আবার জ্বিন না তো!
আয়তুল কুরসী " জানা আছে, জ্বিন হলেও আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তাছাড়া সকালে যেহেতু সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করে বাড়ি থেকে বের হয়েছি সেহেতু আল্লার বিশেষ ফেরেশতা তো আমার হেফাজতে নিয়োজিত আছেই।
বাস চলছে। মহিলাদের সিট বাসের সামনে থাকে। মহিলাদের জন্য আলাদা সিট রাখার পক্ষে আমি না। তাই মহিলাদের সিটে বসলাম। শাঁ শাঁ করে বাস চলছে। দৃশ্যগুলো ছোট থেকে বড়, বড় থেকে ছোট হয়ে যাচ্ছে। বিপরীতমুখী বাস যখন আমাদের বাসটি অতিক্রম করে মনে হয় দূর্ঘটনা ঘটে গেল বুঝি।
মাঝে মাঝে মোবাইলে স্নেক গেইম খেলি। খুব ঝুকিপূর্ন। একটু কন্সেন্ট্রেশন ব্রেক হলে নিশ্চিত পরাজয়। বাসে উঠে দেখতে পেলাম প্রত্যেক ড্রাইবার সরাসরি স্নেক গেইম খেলছে। আমরা তো জাতি হিসাবে কৃপণ নয়,
তবে রাস্তার জায়গা নির্ধারণে এতো কৃপণতা কেন?
যাক, কোনো রকম দূর্ঘটনা ঘটেনি। বাস যথারীতি থামল। আমিও যথাস্থানে এসে পৌঁছালাম। ব্রাক্ষণবাড়ীয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে রিক্সা করে গাঁও গেরাম রেস্তোরাঁয় এসে পৌঁছলাম। রেস্তোরাঁটি অত্যন্ত ছোট পরিসরে কিন্তু গোছানো। তিতাসের পাড় ঘেষে তার অবস্থান। আমি এখানে অবস্থান করেনি। কারণ ততক্ষণে তিতাস আমাকে ডাকতে শুরু করেছে।
তিতাসের এক কোণে স্নান করছে পৃথিবীর মানুষ। তিতাস মানুষদের ময়লামুক্ত করে। শুধু দেহের ময়লা নয়, মনের ময়লাও বটে। আমার মনের জমাটবদ্ধ ময়লাগুলো গলতে আরম্ভ করে। আমিও তিতাসের ভেতর থেকে ভেতরে ঢুকতে থাকি। লজ্জার আবরণে ঢাকা তিতাস। দামের পোশাক পরিধান করে আছে তিতাস। কচি লতার মতো তার শারীরিক বাঁক। তার গর্ভে সুস্বাদু মাছের শিল্পশালা। তিতাসজেলের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তারপরও সীমিত জেলের ঘর-বাড়ি তিতাসের উদাম দেহে।
ইজুলিয়া বিলে ঘর বানিয়েছে জেলে। ফারুক মিয়া সরকারের কাছ থেকে এই দোগাঙ্গি বিলকে ইজারা নিয়েছে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে। শীতকাল যখন পূর্ণ যুবতী তিতাস তখন শতবছরের বৃদ্ধ। ফলে ধান চাষের মওসুম শুরু হয় এবং এই ইজুলিয়া বিল হয়ে পড়ে গোচড়ানোর চারণভূমি। শীতকাল বলে তিতাসের মাটির গন্ধও পেলুম খুব করে, আপন করে। তিতাসের মাটির গন্ধে স্বাধীন এক মমতা আছে, মমতাময়ী স্নেহভরা আকুতি রয়েছে। সেই মমতা, সেই স্নেহ আমি এড়াতে পারিনি। তাইতো গ্রাম্য মেয়ের সম্মতিসূচক চোখের পাপড়ির মতো ধ্যানস্থ হয়ে রইলাম। ধ্যানে ধ্যানে চলে গেলাম গোকর্ণ ঘাটে।
গুফন ঘাটে অনন্তের মার সাথে দেখা। হাতে তার এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট। তিতাসের জল থেকে কলসী কাঁখে সে আর জল আনেনা। এখন তার বাড়িতে টিউবওয়েল। কিশোরকে সে ফেইসবুকে খুঁজে, ভুল নাম্বারে প্রেমের মেসেজ পাঠায়, মেসেজের উত্তর আসেনা। তবুও তিতাসের জলের দিকে তাকিয়ে আছে অনন্তের মা, আমার ধ্যানস্থ আকাঙক্ষা
ও তিতাসের পানি
জানো তুমি, জান কী তুমি?
কোনো নিয়মে জীবন এতো দামি?
আয়তুল কুরসী " জানা আছে, জ্বিন হলেও আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তাছাড়া সকালে যেহেতু সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করে বাড়ি থেকে বের হয়েছি সেহেতু আল্লার বিশেষ ফেরেশতা তো আমার হেফাজতে নিয়োজিত আছেই।
বাস চলছে। মহিলাদের সিট বাসের সামনে থাকে। মহিলাদের জন্য আলাদা সিট রাখার পক্ষে আমি না। তাই মহিলাদের সিটে বসলাম। শাঁ শাঁ করে বাস চলছে। দৃশ্যগুলো ছোট থেকে বড়, বড় থেকে ছোট হয়ে যাচ্ছে। বিপরীতমুখী বাস যখন আমাদের বাসটি অতিক্রম করে মনে হয় দূর্ঘটনা ঘটে গেল বুঝি।
মাঝে মাঝে মোবাইলে স্নেক গেইম খেলি। খুব ঝুকিপূর্ন। একটু কন্সেন্ট্রেশন ব্রেক হলে নিশ্চিত পরাজয়। বাসে উঠে দেখতে পেলাম প্রত্যেক ড্রাইবার সরাসরি স্নেক গেইম খেলছে। আমরা তো জাতি হিসাবে কৃপণ নয়,
তবে রাস্তার জায়গা নির্ধারণে এতো কৃপণতা কেন?
যাক, কোনো রকম দূর্ঘটনা ঘটেনি। বাস যথারীতি থামল। আমিও যথাস্থানে এসে পৌঁছালাম। ব্রাক্ষণবাড়ীয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে রিক্সা করে গাঁও গেরাম রেস্তোরাঁয় এসে পৌঁছলাম। রেস্তোরাঁটি অত্যন্ত ছোট পরিসরে কিন্তু গোছানো। তিতাসের পাড় ঘেষে তার অবস্থান। আমি এখানে অবস্থান করেনি। কারণ ততক্ষণে তিতাস আমাকে ডাকতে শুরু করেছে।
তিতাসের এক কোণে স্নান করছে পৃথিবীর মানুষ। তিতাস মানুষদের ময়লামুক্ত করে। শুধু দেহের ময়লা নয়, মনের ময়লাও বটে। আমার মনের জমাটবদ্ধ ময়লাগুলো গলতে আরম্ভ করে। আমিও তিতাসের ভেতর থেকে ভেতরে ঢুকতে থাকি। লজ্জার আবরণে ঢাকা তিতাস। দামের পোশাক পরিধান করে আছে তিতাস। কচি লতার মতো তার শারীরিক বাঁক। তার গর্ভে সুস্বাদু মাছের শিল্পশালা। তিতাসজেলের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তারপরও সীমিত জেলের ঘর-বাড়ি তিতাসের উদাম দেহে।
ইজুলিয়া বিলে ঘর বানিয়েছে জেলে। ফারুক মিয়া সরকারের কাছ থেকে এই দোগাঙ্গি বিলকে ইজারা নিয়েছে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে। শীতকাল যখন পূর্ণ যুবতী তিতাস তখন শতবছরের বৃদ্ধ। ফলে ধান চাষের মওসুম শুরু হয় এবং এই ইজুলিয়া বিল হয়ে পড়ে গোচড়ানোর চারণভূমি। শীতকাল বলে তিতাসের মাটির গন্ধও পেলুম খুব করে, আপন করে। তিতাসের মাটির গন্ধে স্বাধীন এক মমতা আছে, মমতাময়ী স্নেহভরা আকুতি রয়েছে। সেই মমতা, সেই স্নেহ আমি এড়াতে পারিনি। তাইতো গ্রাম্য মেয়ের সম্মতিসূচক চোখের পাপড়ির মতো ধ্যানস্থ হয়ে রইলাম। ধ্যানে ধ্যানে চলে গেলাম গোকর্ণ ঘাটে।
গুফন ঘাটে অনন্তের মার সাথে দেখা। হাতে তার এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট। তিতাসের জল থেকে কলসী কাঁখে সে আর জল আনেনা। এখন তার বাড়িতে টিউবওয়েল। কিশোরকে সে ফেইসবুকে খুঁজে, ভুল নাম্বারে প্রেমের মেসেজ পাঠায়, মেসেজের উত্তর আসেনা। তবুও তিতাসের জলের দিকে তাকিয়ে আছে অনন্তের মা, আমার ধ্যানস্থ আকাঙক্ষা
ও তিতাসের পানি
জানো তুমি, জান কী তুমি?
কোনো নিয়মে জীবন এতো দামি?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন