বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭

আজাইরা দ্বন্দ্ব

মাঠের পর মাঠ মাঠের পর মাঠ এবং মাঠের পর মাঠ। ট্রেন চলছে তো চলছে। আসামির মতো বসে আছে, শুয়ে আছে নিজ সিটে তারা। জানালার চোখ দিয়ে সবুজ মাঠে শাদা বকের মতো মন্দির দেখা যায়। শরৎ বাবুর কোনো উপন্যাসের কোনো একটি চরিত্র খুব মনে পড়ছে।

আকাশ হতে থেকে থেকে নেমে আসছে জাপানি রোদ। তাহলে বুঝতে পারলুম পৃথিবীর সব জায়গায় কমবেশি রোদ থাকে। এতো রোদের মাঝেও কারা যেন অন্ধকারের চাষ করে। রবিবাবুর অমলের মতো বসে আছি জানালার পাশে। অনেক পথের সাথে দেখা হচ্ছে। অনেক পথ। কোনো পথ সোজা, কোনো পথ অদ্বয়, কোনো পথ পাড়াত আবার কোনো পথে নেমে আসে ধান সবুজ। কোনো পথই মানুষের মনের মতো এতো লোভাতুর নয়। প্রত্যেক পথ একটি ভ্রমনের কথা বলে। আর মানুষ চিনে সীমানা।

চোখের সীমানা দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলছে ভারতীয় স্তন-- মোটরবাইকে  বসা তিন যুবক চলছে কোনো এক সীমানার দিগন্তে। মানুষ সহজে সীমানা পেয়ে যায় যন্ত্রের মতো। অথচ মানুষ কোনো সীমান্তের বাজার নহে। সীমান্ত বাজারে দ্রব্যমূল্যের ডাকাতি, দ্রব্যমূল্যের চিৎকার। বিনিময় মূল্যজ্ঞান থেমে গেলে মানুষ হবে এক কল্যানের নাম, এক সুন্দরের নাম।

কানপুর স্টেশন অনেক আগেই অতিক্রম করেছি আমরা। স্লিপার ক্লাসে আজ শুধু ঘুম। অনেক ঘুমের পর মানুষ কথা বলতে শিখে। কিন্তু এখানে কেউ কথা বলে না। কথা বলতে গেলে প্রয়োজন ধারনা থাকা চায়। এখানে প্রয়োজন বাজার করতে আসে না। তাই সবাই যার যার নীরবতায় ব্যস্ত। এমন নীরবতা অনেকের কাছে গনকবর নয়-- সভ্যতা।

আহারে পৃথিবীর সভ্যতা! কবিরাজ মশাই সত্যের পথে যাত্রা করেছিলেন। হঠাৎ তার তেল শেষ হয়ে যায় , তখন তিনি তেল কেনার জন্য সভ্যতা নামে এক হিজিমনির আয়োজন করে। কবিরাজি কথার ফাঁকে পরে আমরা ভুলে গেছি ঘুমানোর আগে অনেক কাজ আমাদের করে যেতে হবে থরেবিথরে।

একটু পরে রাত হয়ে যাবে। ট্রেন তখনো চলবে। সিমলা যাবো বলেই তো ট্রেন নামক নিয়মে গতর রাখলাম। জীবন তো আর সিনেমার সরাসরি দৃশ্য নহে কিংবা আগরতলা টিভি স্টেশনের কোনো নদীর ফেনায়িত দৃশ্য। তাই গতকাল বলে এক কুড়ি সময় আমদানি করেছি। মানুষ আমদানিতে যতখানি বাঁচে তার চেয়ে বেশি বাঁচে সৃষ্টিতে-- বাঙালি বাঁচে আজাইরা দ্বন্দ্বে।

আমার উপরে সিটে তারিক আজিজ, সে সালাত  কায়েম করে আবার পাদও দেয়। তার পবিত্র কিংবা অপবিত্র আয়াতের সাক্ষী আমি। সাক্ষী নিরপেক্ষ হলে চলার পথে থাকে একরঙা শৈশব। শৈশবের সুন্দর আচরন কেউ না নিতে পারে। সবাই কেমন যেন বৃদ্ধ হতে চায়-- চুপচাপ টুপটাপ।

ফিরোজাবাদ ভারতীয় চুড়ির বেহতার আস্তানা। চুড়ির কাজ শুধু আওয়াজ তুলা নয় মাংসের হাতিরে, চুড়ি সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে থাকে-- অনেক রোগ নিয়ে আজ তারা পথিক

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন