সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৬

✔✔

আবুল বাশার নামে আমাদের একজন কাহা ছিলেন। এলাকার কাহা। তাকে চোখে দেখিনি। তার অনেক গল্প শুনেছি। খুবই ভালো মানুষ ও স্পষ্টভাষী। পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তেন, কারো কাঁচা লাইলে ভুল করেও পা দিতেন না। ইদগার পাশেই তার বাড়ি। ইদ্গা ছিল আমাদের খেলার প্রিয়তম মাঠ।

বিছানায় শুয়ে শুয়ে সারাদিন খেলার কথা ভাবতাম-- কোন বলটা কীভাবে খেলার দরকার ছিল অথচ কীভাবে খেলেছি, কোন শর্টটি খুবই চমৎকার ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি।

সকালে বিছানা থেকে ওঠে যে প্রিয়তমা মুখটি চোখের সামনে ভেসে ওঠতো সেটিই ইদ্গার মাঠ। রোদ কিন্তু এখানে ক্ষমতা দেখাতে আসতে পারতো না। কারন সুপ্রাচীন কড়ই গাছ ছিল ছায়া দেয়ার ভূমিকায়।

আমাদের ক্রিকেট বল যখন নুরু ভাইয়ের বাড়ি কাছে যেতো তখন আমরা ভয়ে আঁতকে ওঠতাম। নুরু ভাইয়ের বাড়ির পশ্চিম দক্ষিন কোনাটি ছিল আমাদের ভয়ের কারন। কারন এখানে আবুল বাশার কাহার লাশ পাওয়া যায়!

তার লাশটি অর্ধেক কাদার নিচে, অর্ধেক কাদার উপরে ছিল। লাশের গলায় অনেক আঁচড় পাওয়া যায়, শরীরের বিভিন্ন অংশে নখের হামছা ছিল। সবাই বিশ্বাস করে কাহার হত্যার জন্য দায়ী জ্বিন। এখনো সবাই জানে আবুল বাশার কাহাকে জ্বিনই  হত্যা করেছিল। তাই বাশার কাহার লাশ পাওয়া জায়গাটিকে আমরা জ্বিনের বিশেষ এলাকা মনে করতাম। তাই বিশেষ ভয়ের কারনও ছিল।

তখন কিন্তু জ্বিনভূত প্রায় মানুষ মেরে ফেলতো। তখন বলতে কিন্তু দশ পনেরো বছর আগের কথা। দেখা যেতো কোনো বিলে, কোনো নির্জন চরে, কোনো নদীতে মানুষের লাশ পড়ে আছে।

কে মেরেছে কে মেরেছে?

জ্বিনভূত মেরেছে। জ্বি ভূত আর যাইহোক বেয়াদবী পছন্দ করে না, হয়তো মৃত লোকটি জ্বিনভূতের সাথে বেয়াদবী করেছে। কিন্তু সমাজে তখন অনেক নামিদামী বেয়াদব ছিল,  জ্বিনভূত তাদের মারবে তো দূরের কথা  কোনো ভয়ও   দেখায়নি।

এখন জ্বিনভূত আর মানুষকে মারে না। জ্বিনভূত কী তাহলে পৃথিবী থেকে দূরে চলে গেলো, নাকি তারা ভদ্র সৌম্য আচরনে মানুষের সাথেই বসবাস করে! 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন