রবিবার, ২২ মে, ২০১৬

আমরা তিনজন

সৈয়দ শামসুল হকের মানুষ' গল্পটি পড়লাম যেখানে মানুষ মানুষকে বিশ্বাস করতে পারে না, যেখানে মানুষ মানুষের ভয়ের কারন।

আসলেই মানুষের পৃথিবী এক উদ্ভুত জগতের আলো-ছায়া। মানুষের ঘরে যেমন চাল ডাল থাকা আবশ্যক তেমনি আবশ্যক বিলাসিতার সামগ্রী তেমনি আবশ্যক ব্যক্তিচিন্তার সফল বাস্তবায়নের আবাসিক ভূমি। আমিই সঠিক, আমার পরে আর কোনো সঠিক চিন্তা থাকতে পারে না-- এমন বোধ মানুষকে তাড়া করে প্রতিনিয়ত টর্নেডো সাইক্লোন যেমন তাড়া করে সর্বদা। তবে প্রকৃতি কখনো মানুষের উপর অযাচিত কোনো আচরন করার মানসিকতা রাখে না। তাছাড়া আমরা বিপুলা প্রকৃতির কতটুকু জানি!

চারপাশে কেবল চিন্তাবিদদের আনাগোনা। এক একজন চিন্তাবিদ যেন এক একটি সাগর। আর আমার মতো আনাড়ি মাঝি যারা আছেন তারা তাদের ভাঙা নৌকা নিয়ে সাগর পাড়ি দিবে তো দূরের কথা মেঘনা নদীর শাখা নদী পাগলা নদীর জলপাকে পড়ে বিপাকে আছে।


কিন্তু বুদ্ধদেব বসুর আমরা তিনজন' গল্পের মতো যদি আমরা সামাজিক সম্পর্কগুলো দেখতে পেতাম তাহলে কেমন হতো!

আমরা তিনজন' গল্পে তারা তিন বন্ধু।  তারা যেন সমাজের তিনটি গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ। মানুষ গল্পে যেমন মানুষের প্রতি মানুষের অপ্রীতিকর জায়গা দেখানো হয়েছে ঠিক তেমনি আমরা তিনজন গল্পে দেখানো হয়েছে সামাজিক সম্পর্কের এক সুন্দরম এলাকা। ত্যাগের মহিমা সুন্দর বলেই দ্রৌপদীর পাঁচপতি যেমন জীবনাচারের চিত্র আমাদেরকে উপহার দিতে পারেননি তেমন কিংবা তার চেয়ে আস্থাশীল জীবনাচারের বোধপ্রতিমা আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন অসিত, হিতাংশু, বিকাশ এবং হীরেনবাবু( হীরেনবাবু অন্তরার স্বামী)।

অর্জুনকে আইন(বারো মাসের জন্য দ্রৌপদীর এক পতির সাথে থাকা আইন ) অমান্য করার কারনে বনবাসে যেতে হয় কিন্তু বুদ্ধদেব বসুর আমরা তিনজন গল্পে কোনো প্রকার আইন নেই।

আইন আছে,
এই আইনের নাম ভালোবাসা, এই আইনের নাম ত্যাগের মানসিকতা।

অন্তরাকে তারা ধারন করেছে হৃদয়ে, তাই তাকে তাদের ঘরের পালঙ্কবালিশ না বানালেও চলবে.... প্রেম এমনই অন্ধ, প্রেম এমনই লাভবাদী ভোগবাদী এলাকাকে ছাড়িয়ে নতুন এক এলাকা, নতুন এক পৃথিবী যেখানে প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির দেয়াল গড়ে ওঠে না, গড়ে ওঠে কেবল পথচলার মসৃণ আস্থাশীল পদক্ষেপ....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন