বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৬

আমি আছি রাজ্য জয়ের নেশায়
তুমি বন্ধু মাপছো আমায় উকুন বাছার পেশায় 

ডাহুক

রাতের অন্ধকারে ডাহুকের ডাক, ঘুম ভাঙানিয়া ডাহুকের ডাক, মদন জ্বালায় কাতরায় দেহ আমার, হৃদয় উঠান ভরা প্রেম আমার রোদে শুকায় বারে বার, গতিপথ রতিপথ কামশখ রেখে ধরি বৃন্দাবনের জাহাজ সকাল-বিকাল, বিরহের আগুনে যে আলো পাই আন্দার কেটে কেটে তুলে আনি প্রভাত, রাতের গভীরে ডাহুকের ডাক, প্রেমের গভীরে কামাতুর হাক-- সকাল থেকে বিকাল, বিকাল থেকে সকাল,
নিদ্রারত তৃষ্ণা গো আমার ভুলে গেছি ভুলপথ আসলে তোমার 

বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬

রেজা

আমি এক এমরানুর রেজাকে চিনি যার বাড়ি মেঘনা নদীর তীরে। সে কত কিছু করে, সব কিছুই ডেমো। তার ডেমোকে ট্রেন মনে কইরা অনেকে ওঠে বসে। সময় ফুরিয়ে যায়, মাগার ট্রেন তো চলে না। একসঙ্গে যাত্রী সকল গালি দিয়া নাইম্মা পড়ে এক সময়। এমরানুর রেজা তখন মাথায় গামছা বেঁধে মেঘনা নদীতে নৌকা চালাইতে যায়, গুদারা ঘাট থেইক্কা ডাক আহে -- এই মাঝি নিয়া যাও, নিয়া যাও। নারী কণ্ঠের ডাক।

এমরানুর রেজা তখন হালুবালু কইরা গুদারা ঘাটের দিকে যায়। নারী নৌকায় ওঠে -- হিলহিল কইরা হাসতে থাকে মাঝির বইটা। বইটা চালাইতে চালাইতে মাঝি ক্লান্ত হয়ে যায়, দূরে কিনারা দেখা যায়, কিনারার লাগাল পাইনা মাঝি। নদীর মাইদদে নৌকা থেমে যায়।

আতকা আচানক এক বাতাস আহে, ঘূর্ণি বাতাস-- এমরানুর রেজা, তার নৌকা আর সেই নারী কোথায় যেন হারিয়ে  যায়!

হেদিন থেইক্কা এমরানুর রেজার আর দেখা নাই....

আমি এক এমরানুর রেজাকে চিনতাম! 

মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১৬

   অস্ত্র ভালোমন্দ বুঝে না -- চালাইলেই চলে! চালক, তেলের হিসাব যেন ভালো করে থাকে .... 

টলমল

প্রত্যেক বাড়িতে একটি টয়লেট থাকে নতুবা পুরো বাড়ি টয়লেট হয়ে যাবে। তারপরও কিন্তু আমরা বাড়িকে টয়লেট বলি না-- না বলাটাই আমাদের সচেতন মানসিকতার পরিচায়ক। প্রত্যেক মানুষের মনবাড়িতেও একটি টয়লেট থাকে, থাকাটাই স্বাভাবিক অথচ আমরা মনবাড়ির টয়লেট নিয়ে বেশি কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তাহলে এর কারন খুঁজতে আমাদেরকে গ্রামের সেই অমৃত বাক্যের দ্বারস্থ হতে হবে(?)-- টয়লেট টয়লেট মাসতুতো ভাই ....

রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০১৬

আমার কত সীমাবদ্ধতা, অথচ অন্যের সীমাবদ্ধতা আমি মেনে নিতে পারি না। অন্যের সীমাবদ্ধতা চোখে স্থায়ী দৃশ্য তৈরি করার কারনে আমার সীমাবদ্ধতা চোখে পড়ে না, হাতির যেমন কানের কারনে তার নিজের শরীর তার নিজের চোখে আসে না....

শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৬

::::

সূর্যকে মানুষ তত ভালোবাসে না যত ভালোবাসে চাঁদকে। কেননা চাঁদ ফিল্টারিং জানে। চাঁদ জানে কতটুকু অন্ধকার দূর করতে হবে, কতটুকু আলো রাখতে হবে। আর সূর্যের কেবল আমি আমি ভাব, অন্ধকারকে একটুও পাত্তা দেয় না। মানুষ আমি আমি ভাবকে সহ্য করার ক্ষমতা এখনো অর্জন করেনি। গনতন্ত্রের সংজ্ঞা ভালো করে উপলব্ধি করার জন্য চাঁদের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়ার প্রয়োজন আছে....  

শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০১৬


সবাই জানে সবার মতো সুখ কিংবা দুঃখ
অনুভূতির আসল কবর গোপন একটি বুক 

ল্যাবরেটরি

অসংখ্য অপ্রাপ্তির মাঝে কিছু প্রাপ্তি  ল্যাম্পপোস্টের মতো দাঁড়িয়ে থাকে আলো দিবে বলে। আলো যে দেবী দূর্গার কানহা কানহা মাতম, অযান্ত্রিক মনোবলের আস্থাবল। একটা চিড়ধরা হৃদয়ে ঘাস জমবে বলে বৃষ্টি আসবে বলে আসেনি, কান্না থামবে বলে থামেনি-- দূর থেকে ভেসে আসে আগামীর হলুদ সন্ধ্যা, আগামীর ঝিমধরা নেটওয়ার্ক। কেউ গতকালের কথা বলতে পারেনি, গতকাল অন্ধকারের মতো মায়া তৈয়ারি করে। আগামীকাল মুখ্যম সময় দিনের স্বচ্ছ নীলাভ জলের আলোয়। তারা তো জানতো নদীর মতো কথা বলতে তবুও পুকুরে পুকুরে ঘোরাঘুরি করে তাদের চিন্তার ফেনা, তবুও প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে থাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী আশার ছলনে ভুলি। 

বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৬

:

চাঁদ আমাকে মাতাল করে আলপথে
নালা থেকে প্রেমবনে
কে তুমি বারে যাও
চাঁদকে রেখে ....

!

একটু থামতে হয়
ট্রেন থেকে নামতে হয় 

!?

গা ঢাকা দিতে চাই
আটশ খুনের আসামির মতো
আমদানিতে রাজ করা কয়েদির মতো
কেউ চিনবে না তরতাজা প্রানের কেতন
কেউ জানবে না আমার নিত্য কর্মখতিয়ান
নতুনভাবে শুরু হবে জীবনের হিসাব
জীবনের সব লেনদেন বনলতা সেন
ভুলে যাবো আমিও ছিলাম আমিও ছিলাম
আমারও ছিল আটারো দিনের প্রেম 

বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬

পাপেট

পাপেট শো জনপ্রিয়। এখন না, এক সময়। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায়। সহজ সরল মানুষের কাছে। যারা পাপেট শোর পেছনের রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা রাখে না তারা তো পাপেট শো দেখে আনন্দে হিলহিল। আর যারা পাপেট শোর ইতিউতি সব জানে তাদের কাছে পাপেট শো এক প্রকার শিল্প।
এখন আর পাপেট শো তেমন দেখা যায় না। এখন পাপেট শোর জায়গা দখল করে নিয়েছে ক্রিকেট। 

,

বাঁকানো হাসির সাথে বাঁকানো চাঁদ
হাসিতে জীবন নেই সবটুকু ফাঁদ 

মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০১৬

জানি

এই দিনে তুমি আমি আর আমাদের উদ্দাম আবেগ
সৃজনী শিল্পগ্রামের কনক্রিটের ঘর
মনের ভেতরে বন্য লাফালাফি
পৃথিবীর আকাশে কোনো এক প্রভাত
কি ছিল,কে ছিল কেন ছিল
একনিষ্ঠ অজানায় জনান্তিক তুমি
ব্যবধানে সাবধানে সকাল, দুপুর, বিকাল, সন্ধ্যা এবং রজনী
দোল খেলায় মাতম করেনি প্রিয় কোনো সুখ
কেবল উদভ্রান্ত আবেগ, বিবেকের দুঃখ
শপথ করিনি বিপথে যাবার, শপথ করিনি কাছে থাকার
তবে কিছু একটা ছিল শপথের উপরে শপথ, এখনো আছে বলে মনে করে আন্তরিক জীবন
পাথর ভেঙে নদী হলো, রাধাজোয়ারে ভেসে গেলো কৃষ্ণ
তবুও অপ্রিয় কাকের মতো কা কা করি মরা ডালের আশাহীন শাখায় বসে
দেখবো বলে দেখবো বলে কথা কইবো বলে 

তাইতো

বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশ দিয়ে অনেকবার আসা যাওয়া করেছি। কখনো ভেতরে যাওয়া হয়নি। শুধু চেয়ে দেখতাম আকাশের মতো ওচা এক বিল্ডিং। আকাশে পাখি উড়ে, আর পাখির মতো যে সব মানুষের ছোট-বড় পাখা আছে তারাই হয়তো বাংলদেশ ব্যাংকের আকাশে উড়াউড়ি করে। আমার তো আর পাখা নেই!

কী করে থাকবে?

আমি তো কৃষকের পুলা!

কৃষকের পুলাদের পাখা থাকতে নেই, থাকলেও কেটে ফেলে দেওয়া হয়।

একদিন গেলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকে গেলাম। গেলাম বললে ভুলই হবে, যেতে হলো। ভেতরে ঢুকেই ভালো লাগলো বেশ। পরিবেশ প্রশংসা করার মতো।

কেন যেতে হলো?

সৈকত বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির আবেদন করেছে। সৈকত আমার শৈশবের বন্ধু। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র সে। পাসওয়ার্ড হারানো সংক্রান্ত ঝামেলা, আর এই ঝামেলা মেটানোর জন্য  বাংলাদেশ ব্যাংকে যাওয়া।

ওরে বাপ! কথা বলার জন্য পাশ নিতে হবে। আরেক মহরম ঝামেলা। ইনি বলে  তিনির কাছে যাওয়ার জন্য,  তিনি বলে ইনির কাছে যাওয়ার জন্য। ভেতরে ভেতরে আমার রাগ জমা হচ্ছে। সৈকত টের পাচ্ছে। তাই বিভিন্ন দার্শনিক মতবাদ নিয়ে আলোচনা করে আমাকে ব্যস্ত রাখতে চাইছে। কিন্তু আমি তো জানি কাজটি অতি অল্প সময়ের যদি তারা আমাদেরকে সেবা দিতে চায়, যদি তারা নিজেদেরকে সেবক মনে করে।

আইটি সেক্টরে যাবো, পাশ দেন

দেয়া যাবে না ( মুখ গম্ভীর করে)

চাইলেই দিতে পারেন ( গম্ভীরভাবে)

লাঞ্চের পরে আসেন, এখন সবাই লাঞ্চ করতে গেছে ( হাসি দিয়ে)

ভাবলাম হাসি দিয়ে যেহেতু কথা বলেছে সেহেতু অপেক্ষা করতে পারি। লাঞ্চসময়ও প্রায় শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু লাইনে দাঁড়াতে হবে কিছুক্ষণ। আমি তো লাইনে দাঁড়াতে অভ্যস্ত নয়। ভাবছি তাহলে কী হবে ....

ব্যাংকের ক্যাম্পাসে হাঁটাচলা করছি। এমন সময় তিন ভাইয়ের সাথে দেখা। তাঁরা সৈকতের ক্যাম্পাসের সিনিয়র ভাই। তাঁরা সমস্যার কথা জানলেন এবং সাথে সাথে পাশের ব্যবস্থা করে দিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য যার সাথে দেখা করতে হবে তার নাম এবং ফ্লোর নাম্বার বলে দিলেন।

আমরা তার কাছে গেলাম। সেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমাদের সাথে পারিবারিক কিছু গল্প করলেন, চা খাওয়ালেন। চমৎকার চায়ের ফ্লেবার। এমন চায়ের ফ্লেবার বাংলাদেশ ব্যাংকের স্যারদের রুমেই পাওয়া যায়, ইমাম মামার টিস্টল, অরশ্রী মার্কেটে পাওয়া যায় না। কারন স্যারেরা এমন সাধারণ মানের টিস্টলে আসেন না। চা আর গল্পের কোন ফাঁকে কাজ হয়ে গেছে টেরই পাইনি।

বাংলাদেশ ব্যাংককে পেছনে ফেলে জনতার রাস্তার দিকে হাঁটছি। রাস্তার পাশে একটি লোক ফাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, লোকটির মুখে চায়ের কাপ, আমরা ঢুকার আগেও দেখেছিলাম লোকটি দাঁড়িয়ে ছিল তখন তার হাতে ছিল একটি  জলন্ত সিগারেট। লোকটির হয়তো বড় কোনো পরিচিত ভাই নেই এই বাংলাদেশ ব্যাংকে, তাই হয়তো তার পাশ মেলেনি, বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকার পাশ....

রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১৬

ঘেমো

ওয়াজ শুনে বাড়ি ফিরছি। তাঁর ওয়াজ আমি শুনি। তাঁর ওয়াজের বিশ্লেষণ ভালো লাগে। যেমন একদিন তিনি ওয়াজ শুরু করলেন এইভাবে--

আমাদের পিয়ারা নবী দোজাহা ইমানদার না!

শ্রোতাদের কান খাড়া হয়ে গেছে,  মাওলানা এ কী বলে! একটু পরে তিনি বিশ্লেষণে গেলেন এবং বললেন--

আমাদের নবী দোজাহা হযরত মোহাম্মদ () ইমানদারের ইমাম। অর্থাৎ তাকে বিশ্বাস করে আমি আপনাকে ইমানদার হতে হবে...

তাঁর বক্তব্যের টুয়িস্ট চমৎকার। বাড়ির দিকে যাচ্ছি আর তাঁর বক্তব্যের বিভিন্ন বাঁক নিয়ে ভাবছি। রাস্তায় নিষ্পাপ অন্ধকার। রাস্তার চারপাশে কাঁচা ধান গাছ, ধান গাছ থেকে সবুজ গন্ধ তরতর করে মস্তিষ্কে আসতেছে। ভয় পাওয়ার মতো একাকী রাস্তা। একাকী আমি চলছি ভাবনাকে সাথে নিয়ে। ভাবনা কোনো ব্যক্তির নাম না। ভাবনা আমার চিন্তা প্রক্রিয়া। বাড়ির কাছাকাছি চলে আসছি এমন সময় এক কুকুর আক্রমণ করে বসে। আক্রমণ বলতে শব্দের আক্রমণ। অনেক অনেক উচ্চ শব্দে ( প্রায় আশি ডেসিবেল) ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। ভয় পাচ্ছি আবার ভয় পাচ্ছিও না। কোনোক্রমে আস্তে আস্তে বাড়ি ঢুকে গেলাম। বাড়ি ঢুকার পরও  কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ করা থামেনি। কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ এ্যাবুয়েড করে ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে যখন নামাজ শেষ করে হাঁটতে বের হলাম তখনই দেখি কুকুরটির মৃত দেহ পড়ে আছে রাস্তার পাশে...

তখন থেকেই কেউ যখন ঘেউ ঘেউ বেশি করে আমার ছোট্ট কালের সেই অভিজ্ঞতার কথা মনে হয়, মনে হয় সেই কুকুরটির কথা যার মৃত দেহ রাস্তার পাশে পড়ে থাকুক আমি চাইনি....

লেহমা

কোনো কোনো লেখককে আমার কুকুর অথবা কাকের বংশধর মনে হয়। সামনে হাড্ডি অথবা মাংস পড়লে এতো টানাটানি শুরু করেন যে সাধারণ মানুষ চোখ কপালে তুলতে বাধ্য....

✔উ

চোখের সামনের মুভিতে যে নায়ক নায়িকা আমরা দেখি তারা কখনো চলমান সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা চকচকে নীল  জলে  শরীর ধৌত করে, তাদের শরীরে যতটুকু প্রাকৃতিক আবহ তার চেয়ে বেশি কৃত্রিম আবহ।

কৃত্রিম কিছুর প্রতি প্রাকৃতিক মানুষের একধরনের মুগ্ধতা  আছে। এই মুগ্ধতা মূলত নতুনের প্রতি মুগ্ধতা। এই মুগ্ধতা মূলত অধরার প্রতি মুগ্ধতা। কিন্ত যারা এই কৃত্রিম জীবন কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে তারা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারে কৃত্তিম জীবনের দহন কত যন্ত্রণাদায়ক!

যন্ত্রণাদায়ক জীবন থেকে তারা আবার বেরও হতে পারে না। ফান্দে পড়ে বগা তখন কান্দে। বগার কান্দনই চলমান সমাজের দৃশ্য। কিন্তু বগার কান্দন কখনো সাউন্ডপ্রুফ রুম থেকে বস্তির ছোট রুমের টিভি সেটের সামনে আসে না....

শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬

সাইনবোর্ড

তোমার চোখ যেদিন গাছ হয়ে গেলো সেইদিন অনেকবার আমি গাছের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

এই শহরে গাছ কোথায় পাই বলো?

একখান আধখান গাছের যখন দেখা পাই তখন সেই গাছ আবার তোমার স্পর্শজাত সন্তান পৃথিবীর পরগনায়।

তোমার ঠোঁটে কড়া লিপস্টিক বড় বেশি আনকোরা লাগে-- লিপস্টিক তো ঠোঁটের সাইনবোর্ড, তাই না? তোমার ঠোঁট এমনই ললিত নীল যেমন তেমন হাজার টাইপের সাইনবোর্ডকে ম্লান করে দেয় সহসা।

তোমার ঠোঁট যেন মধ্য রাতের সমুদ্রের গর্জন। আর আমি সেই একলোটন পথস্থির মানুষ যে গর্জনে বার বার নিজেকে ফানা করে দিতে চায়-- হয়ে ওঠে না, কিচ্ছু হয়ে ওঠেনি। গর্জন আর আমার মাঝখানে দেয়াল তুলে সমাজ, সমাজ এতো বেশি নিয়মের কথা কই ক্যান, ক্যান জনাব সমাজ মিয়া বুঝে না অনিয়মেরও একটু সুস্থ সাবলীল নিয়ম রয়েছে?

মাঝে মাঝে তুমিও সমুদ্রের গর্জন শোনো, আমি টের পাই, তুমি তখনই আমার কাছে একলাফে চলে আসো,
সমুদ্রের গর্জন শুনে তুমি যখন আমার বুকে আলতো কোমল স্পর্শ রাখো তখন আমি যুবা জলের মতো সাগরমুখী হতে থাকি, সাগর থেকে মহাসাগরের দিকে ছুটে চলি।

লিলিথ, আমার বন্ধু , কেমন আছো তুমি?

কেমন আছো' জিজ্ঞাসাটি  ভালো করেই বলতে পারি, ভালো রাখার পথ আমি একটুও ভালো জানি না।

কেমন করে ভালো রাখি বলো?

ভালো থাকা কিংবা ভালো রাখা শব্দটি যে আমার শৈশবের বন্ধু যে কথায় কথায় গুসসা করে, আমার লগে অভিমান করে নিজেও কষ্ট পায়, আমারেও কষ্টে রাখে ....

ফল

ফল বীজের চেয়েও বয়সে বড়, বড় অভিজ্ঞতায় কিন্তু প্রাজ্ঞতায় নয়। কারন ফল প্রাজ্ঞ হলেই আরেকটি বীজের জন্ম দিতে পারে। সব ফল বীজের জন্ম দিতে পারে না। 

হাতেনাতে

চোখের সামনের ভালোবাসাগুলো কেমন যেন কিন্ডার গার্ডেন স্কুল হয়ে গেছে। প্রতিদিন হাজিরা খাতায় নিজের উপস্থিতি জানান দিতে হয়, মাসে কয়েকবার পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করতে হয় যে সে কিংবা তারা ভালো প্রেমিক কিংবা প্রেমিকা।এখানে নকল করার সুযোগও আছে, কেউ কেউ ধরা পড়ে হাতেনাতে, কেউ কেউ থাকে সন্দেহের তালিকায়, কেউ কেউ এতো পাকাপোক্ত নকলবাজ যে সারা জীবনেও ধরা পড়ে না....

শুক্রবার, ১৮ মার্চ, ২০১৬

ইতেকাফ

রমজান মাস। ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। কিছু একটা করতে হবে। অবশ্যই ভালো কিছু। আত্মা সমৃদ্ধ হয় এমন কিছু। আমি কিছু করতে চাইলে কখনো আমার পরিবার আপত্তি করেন না। সেই কারনে আমার পরিবারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

ইতেকাফ করবো। দশ দিনের জন্য। মসজিদে করতে পারি। কিন্ত মসজিদে যারা ইতেকাফরত থাকেন তারা পৃথিবীর বাইরে যেতে পারেন না। আমি পৃথিবীর বাইরে যেতে পছন্দ করি। এখনো আমি পৃথিবীর বাইরে চলে যায় দুই-একদিনের জন্য। পৃথিবীর বাইরে থেকে পৃথিবীকে যখন দেখি তখন কেমন যেন নিজেকে আলগা আলগা লাগে।

রমজান মাসের বিশ তারিখ। ছোট্ট রুমটিতে বসে গেলাম। ইতেকাফরত দুনিয়াবি কথা বলা হারাম। দুনিয়াবি কথা তো দূরের বিষয় কথাই বলি না। একদিন একদিন করে পাঁচ  চলে গেলো।

তারপর সেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ রাত। রাত শ্রেষ্ঠ হলে ভালোই লাগে, কারন অন্ধকার আমার প্রিয় খাবার। মসজিদ থেকে শানে হাবিব, শানে রাসূল টাইপের ওয়াজ কানে আসতেছে। আমি নবীজির দরূদ পাঠে মশগুল। ভোর রাত, দুপুর রাত চলে গেলো। এখন বিকেল রাত। আমি দরুদ পাঠে মশগুল।

হঠাৎ দেখি টিনের চালা চোখের সামনে থেকে উধাও!  সারা শরীরে শীতল প্রবাহ শুরু হয়ে গেলো। আসমান-জমিন সমান এক লোক। লোকটির শরীরের তুলনায় মাথা নিতান্ত ছোট। শিকারি চিলের মতো লোকটি চেয়ে  থাকে। থরথর করে কাপতে থাকি। চিকন ঘাম বের হচ্ছে। আমাকে শোয়ানো হলো। মাথায় জল ঢালছেন মা, সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা চলছে -- কিচ্ছু হয়নি পুত, কিচ্ছু হয়নি, সব ঠিক অইয়্যা যাইবো, একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো বাপজান আমার...।
আমার চোখ দিয়ে জলের ধারা নেমে আসছে। কখন যেন লোকটিকে, চোখের জলকণাকে ফাঁকি দিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম, বুঝতেই পারিনি।

ঘুম থেকে জেগে দেখি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ রাত উধাও, আসমান-জমিন সমান লোকটিও উধাও। কিন্তু ভয় রয়ে গেলো আমার অন্তরে অন্তরে। ভয়ে ভয়ে সবাই যখন ইবাদত করে আমি তখন ভয়ে ভয়ে ইবাদত করি না -- লোকটি যদি আবার চলে আসে, আবার যদি শরীর বেয়ে চিকন ঘাম বের হতে থাকে, আবার যদি আমাকে ঘুমিয়ে যেতে হয় ....

ঘুমের

ঘুমের ভেতর আমি থাকি, থাকি আমি জলজ্যান্ত আড্ডার ভেতর, আমাকে পাওয়া যাবে বাজারের চায়ের দোকানে, আমাকে পাওয়া যাবে পোশাকের ভেতর, আমাকে পাওয়া যাবে জলের ঘাটে, আমাকে পাওয়া যাবে ধর্মগ্রন্থের নিদ্রিত পাড়ায়, আমাকে পাওয়া যাবে সুরের কোনো গোপন কথায়।

আমি আছি সবখানে।

আমি ছাড়া তুমি কিংবা তারা নেই। তুমি কিংবা তারা আমারে উপস্থিতি দিয়ে তুমি কিংবা তারা হয়ে উঠো। আমাকে চিনতে চিনতে তোমাকে সালাম দিতে পারি, তোমার বিশ্ব বলে যা আছে তার পাশে হারা হয়ে সেলফি তুলি। 

বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৬

?

একই কলম, একই খাতা
একই কালি, একই কথা
তবুও স্বপ্ন আলাদা
তবে স্বপ্ন আলাদা 

বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০১৬

সাবধান

আলো থেকে সাবধান, অন্ধকার থেকে সাবধান
মহামান্য ছায়া থেকে সাবধান, জ্বিনের আছর থেকে সাবধান
পোলাপান থেকে সাবধান, মাইয়্যা থেকে সাবধান

সাবধান! সাবধান!! সাবধান!!!

সবখানে, সবঘরে, সবতরে সাবধান
থেকে থেকে সাবধান
বাড়ছে ব্যবধান, বাড়ছে ব্যবধান 

মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১৬

অভিযান


রাতের মতো তোমার প্রতিটি দিন হবে
ঘুমাবে এবং ঘুমাবে
কথা বলতে হবে মেপে মেপে
দর্জি যেমন মেপে মেপে ডিজাইন করে পোশাকের অলিগলি
চোখে কখনো জল আসবে না
চোখে থাকবে সামাজিক হাসি
বুকের ভেতর জমানো বরফ
রাত অনেক গভীর, অনেক গভীর 

সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০১৬

টেহা আর টেহা

মাঝি নৌকা চালাবে-- চালাও। ঘাটে বসে আছে মহাজন কাহা। পাই টু পাই আদায় করবে পরিশ্রমের সামান। পরিশ্রমে কোনো কালে ধন আনেনি। ধন বাবাজী কিসমতের খেলা। কে কত ঠকাতে পারে সেই কিসমত। কিসমত একবার বাজিমাত হলেই ঘাটে বসে থেকে থেকে টেহা আর টেহা, পান চিবানো টেহা।

মাঝি, তোমার ঘামের তেলে যে বৈঠা চলে সেই বৈঠার মূল্য কোথাও নাই -- ঘাটে, মাঠে, পথে, রথে এমনকি তুমার ঘরেও না। মহাজন তুমারে হাটাবে, বলদের মতো হাটাবে। তারপর কইবো যাও বলদ গোয়ালে গিয়ে একটু রেস্ট নাও, বনের রেসিপি দিবে। বন খেয়ে খেয়ে মাঝি আবার ঘুমাবে, ঘুম থেকে ওঠে দেখবে গামলাই পড়ে আছে হাজার বছরের ঐতিহ্য-- ভাতের ফেন। 

বাংলা ভাষায় সর্বনামের ব্যবহার আছে কিন্তু নারী-পুরুষের জন্য আলাদা করে কোনো সর্বনাম নেই।

আপনি কেন নারীবাদী তথ্য এখানে বাজারজাত করার চেষ্টা করেন? আপনার সর্বনামে He and she ব্যবহার আছে বলে, আপনার জমিরে হা এবং হু'র ব্যবহার আছে বলে?

বাংলা ভাষা সূর্যের সর্বনাম He আর চানের সর্বনাম She করে না। বাংলা ভাষা দেশকে কেবল মায়ের সাথে তুলনা করে, তাও আবার শ্রদ্ধার জায়গা থেকে।

এখানে লক্ষী, স্বরসতী, কালী নামে দেবীর সন্ধান পাওয়া যায়, অনেক বিখ্যাত, পবিত্র গ্রন্থে নারীদের উল্লেখযোগ্য অবস্থান পাওয়া যায় না, বাংলা ভাষা নারীদের সম্মান দিয়েছে আম্মা শব্দের মধ্যদিয়ে, প্রেমিকা শব্দের মধ্যদিয়ে। জননী শব্দটি সৃষ্টির সাথে জড়িত তাই শব্দটির দৃশ্যমান অবয়বজুড়ে গোলাপ গোলাম আবহ পাওয়া যায়।
বাঙালিদের জীবনে উঁচু-নিচু, জাত-পাতের চর্চা হয়েছে বেশ, তাইতো সর্বনামে তিনি, আপনি, উনি, তুমি প্রভৃতি শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়। 

রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১৬

সহজে

ও সহজিয়া!
তুমি কেন নিজের আগুনে জ্বলে মরো
আগুনেরও ছিল কিছু ব্যক্তিগত সহমরন 

নদীতে হাতুর কাটতে গেলে অনেক পেনা সরাতে হয়। পেনাগুলো গরুর কাজে আসে, মানুষের না 

মানুষ দেখবে বলে আকাশে চান ওঠে না, আকাশে চান ওঠে বলে মানুষ দেখে 

শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬

ভালো চাইলে

অন্তর যার কথা সারাক্ষণ বলে তাকে একটি বিশেষ মুহূর্তে ক্যামনে আনি!   আত্মার সাথে আত্মার অমায়িক বন্ধনে দুটি প্রাণ যখন এক মহাকাল তাকে বন্ধু বলে। তোমাকে তো আমি পৃথিবীর এতো নিকষ কালো অন্ধকারে খুঁজতে যাই না, তুমি আছো আমার আদিম অন্ধকারে যেখানে নিয়ম এসে লজ্জা পেতে বাধ্য। নিয়ম নিয়ে পড়ে থাকুক যাদবপুরের আশি নাম্বার লেন, আমরা আগা-মসি-লেনের এককালীন পর্যটক।

তুমি এতো সুন্দর যা তুমি জানো না, ইশ্বর জানে আর জানি আমি, মাঝে মাঝে আমি আর ইশ্বর তোমাকে নিয়ে গল্প করি,গল্পগুলো তোলা থাকে মহাকালের পাতায়, পৃথিবীর মানুষ তা জানে না,
আমিও জানি তুমি কেউ 'র পর্যায়ভুক্ত নও, তুমি কেউ-কেউকে ছাড়িয়ে গড়ে ওঠা লিলিথ।

ঘুমের দেশে যাই যেখানে আমি আর আমার বন্ধু এক, যাই স্বপ্নের দেশে যেখানে আমাদের মাঝে কোনো দেয়াল নাই, নাই কোনো কবুলবলা ফৌজদারি আইন।

হুকুমের আশায় আছি ওহে মায়াময় ....

শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০১৬

চান্দের জোছনার মালিকানা নেই, বাল্বের আলো মুদির দোকানে বিক্রি হয় রোজ  

কিছু

সবাই বলে আমি আমরা
কিছু লোক বলে তুমি তোমরা
কেউ কেউ বলে সে তারা
আমি আমরা তুমি তোমরা সে তারা-- পৃথিবীতে এতো দেয়াল কেন
যুদ্ধের মুখোমুখি আমরা তোমরা তারা 

বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১৬

কান

বাঙালি চিলের পেছনে ছুটতে পছন্দ করে, তাই তাদের কান না থাকলেও চলে 

ঢুক

নিজেকে অলস ভেবে যখন রোদপথে হাটতে থাকি তখন দেখি আশি বছরের উঠোন আমার কাপে থরথর, আল্লা গো এমন রোদে মাইনসে ঘুমায় ক্যামনে, ক্যামনে মানুষ করে হাড়ভাঙা পরিশ্রম,  উঠোনে বৃষ্টি নামে, টুনটুনি খেলে যায় হাজার বছরের মন্তু। একলাফে হাজার বছর, একলাফে কোটি বছর, একলাফে ঘুমের ভেতর লাফালাফি করে কই মাছ, আমার লাগাতার শৈশব, শৈশবের ধান ক্ষেত, ডেইন দিয়া আমার শৈশবের হাবভাব অতলা অতলা আরাম তুলে আনে, আমার শৈশবের নাকে যদি একটি মাঠ বসাতে পারতাম তাইলে বুঝাইতাম বাবুরাম খেলে যা কারে কই, কারে কই আফনার পর।

আমার শৈশব বিয়া দেখলে কত সুন্দর ইদ ইদ খেলতো। আর অহন? কেমন করে চুপ হয়ে যায়, কেন যেন অহন বিয়ার মাইদদে হালি তারে চোখে দেখে,  তা অহন তাহাদের কথা শিরোনামে বক্তৃতা দেয়, আর আমি একটু পরে পরে কষ্টের ঢুক গেলি। কষ্টের আইনে যেজন জেলখানায় ঢুকে তার নিস্তার নাই, নিস্তার নাই, নিস্তার নাই....

বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬

একদিন

একদিন দেখা হবে
বহুদিন পরে
তোমার আমার কোনো এক দুপুরে
ক্যাম্পাস শ্যাডো, টিআররোড কিংবা স্বাধীনতা উদ্যানে
তুমি তখন অনেক বড় প্রধান টাইপের কেউ
চোখের জলে কথা হবে না-- হৃদয়ে অভিমানের ঢেউ

দেখা হবে না, দেখা হবে না, দেখা হবে না

সংগ্রামের মতো তুমি প্রিয় ও অপ্রিয়
জীবনের মতো কাছে ও দূরে

রাত হলেই দেখি ঘড়ির কাঠি এগারোর ঘরে

দূর থেকে দেখে যাবো
দূর থেকে শুনে যাবো
ছায়ার মতো রবো সময়ে অসময়ে

কেমন আছো বন্ধু
আছো তো ভালো

আমার মতো তোকে বুঝবে না কেউ, বুঝবে না কেউ
একদিন বুঝবে হারালে কাকে, কে ছিল তোর কলিজার ঢেউ 

মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০১৬

তাই যেন

ঘর থেকে বের হলে প্রত্যেকে পরমানুষ
তোমাদের ঘরকে পর ভেবে বিদায় নিলাম।



নদীর নক্ষত্র থেকে একরাশ বাতাস আসে
সে বাতাস মানুষের প্রতিনিধি
কে তুমি আছো বন্ধু
এসে বীজ  বপন করে যাও
মানুষের বীজ।



'তুমি' শব্দটা খুব বেশি আভিধানিক
'আমি' শব্দটা খুব বেশি সাংবিধানিক।



চুম্বন তোমাদের দৈনিক হিসাবের ব্যালেন্সজের
টেলিভিশন প্রোগ্রামের টিআরপি
অথচ চুম্বন  ছিল তাদের দৈনিক খাবার
কে বেশি সভ্য তোমরা? না তারা?



প্রেম থাকলে শূন্যতা জেগে উঠে আগুনের উচ্ছ্বাসে।



মানুষগুলো জীবনের মানে জানেনা
মানুষগুলো শূন্যতা নিয়ে বড় বেশি বড়াই করে
মানুষগুলো শূন্যতার খবর রাখে না। 

সোমবার, ৭ মার্চ, ২০১৬

রাগ

রাগ হলো  ভালোবাসার জ্বর 

বন্ধু

বন্ধুত্ব এবং ক্ষমা প্রার্থনা এক সাথে থাকতে পারে না। হয় বন্ধুত্ব থাকবে নয় ক্ষমা প্রার্থনা থাকবে। বন্ধুত্ব হিসাব বিজ্ঞানের চূড়ান্ত হিসাব না যেখানে ডেবিট ব্যালেন্স ও কেডিট ব্যালেন্স সমান হতে হয়। বন্ধুত্ব বীজ আর ফল যারা একে অন্যের প্রেক্ষাপট।

রবিবার, ৬ মার্চ, ২০১৬

পরাজয়

পরাজয় থেকে একদিন জয়ের জন্ম হয়েছিল, মানুষ তার শেকড় ভুলে যায় 

টয়লেট

গ্রামের বাড়িতে টয়লেট দূরে থাকে, ঘর থেকে দূরে। টয়লেট যেহেতু দুর্গন্ধ ছড়ায় সেহেতু তা মূল ঘর থেকে দূরে থাকা ভালো। সময় আধুনিক হচ্ছে। আধুনিকতার দাবি নিয়ে টয়লেটের নাম বদলে গেছে।
এখন টয়লেটের নাম ওয়াশরুম।
এখন ওয়াশরুম, বাথরুম, বেডরুম কাছাকাছি বসবাস করে। এখন দুর্গন্ধ আর সুগন্ধ ভাই ভাই, ভাই ভাই না হলেও ভাই -ভাইস্তা তো বটেই। 

শনিবার, ৫ মার্চ, ২০১৬

লিভিংরুম

প্রথমে একটি গেইট। তারপর একটি রুম। আরেকটি দরজা। তারপর লিভিংরুম। লিভিংরুমে  ডিম্বাণুর বসবাস। গোল গোল ডিম্বাণু। গেইট, দরজা অতিক্রম করে অনেক অনেক শুক্রাণু ডিম্বাণুর রুমে প্রবেশ করে। প্রবেশ করা মাত্র শুক্রাণু ডিম্বাণুর ভেতরে ঢুকে যাওয়ার তীব্র চেষ্টা চালায়। যখনই একটি শুক্রাণু ডিম্বাণুর ভেতরে ঢুকে যেতে পারে তখনই ঢুকাঢুকির খেলা অফ।

গর্ভবতী ডিম্বাণু চুপচাপ, নিরব, নিস্তব্ধ হয়ে যায়। সে আর সামাজিক থাকে না। আস্তে করে সে লিভিংরুমের দেয়ালের সাথে লেপ্টে যায়, দেয়াল থেকে ধীরে ধীরে খাবার সংগ্রহ করতে থাকে। জল আর মলে বড় হতে থাকে তার দেহ।

গর্ভাশয় মানুষের নার্সারি। নার্সারির মানুষটি পৃথিবীতে ক্রিয়ারত মানুষের চেয়ে বয়সে বড়। কারন বীজকে ধারণ করেই ফল।

মায়ের ছাদ ছেড়ে সন্তান একসময় পৃথিবী নামক ছাদের নিচে আশ্রয় নেয়। পৃথিবীও মানুষের নার্সারি। কারন পৃথিবী শিক্ষা দিতে থাকে কেমন করে আরেক পৃথিবীর যোগ্য বাসিন্দা হতে হয়।

কিন্তু খুব জানতে ইচ্ছে করে মায়ের পৃথিবীতে যখন ছিলাম তখনও কী আমরা বাজারে যেতাম, প্রিয় অনুরাগে চোখে জল আনতাম কিংবা তার জন্য পূর্বপল্লীর গেস্ট হাউজে অপেক্ষা করতাম!? 

শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১৬

বলছি না

 বলছি না আপনাকে আমার সাথে একমত হতে হবে। আমি বলছি আমাদের একমতের একটি কমনরুম থাকতে পারে যেখানে আমরা খাওয়া-দাওয়া করবো, দন্ত পরিষ্কার করবো, ওয়াশরুমে  যাবো কিংবা আরাম করে আত্মভোলা একটি ঘুম দিবো।

আমি জানি ফুলের সৌন্দর্য অনেকে আবিষ্কার করতে পারবে না, কারন অনেকের চোখে সমস্যা থাকবে, মানুষ তো চোখের সমস্যা সমাধান করতে পারবে না, কারন মানুষ ডাক্তার না, মানুষের মাঝে কেউ কেউ ডাক্তার। 

বুধবার, ২ মার্চ, ২০১৬

বেড়াল

আমাদের বাড়িতে একটি বেড়াল আছে। বিড়ালটির দুটি চোখ, একটি নাক, একটি মুখ, দুটি পা আছে।

বিড়ালটির প্রিয় খাবার তাজা ইন্দুর। অনেক পাহাড়ি মেয়েরা তাজা ইন্দুর রান্না করে খায়। অনেকে শখ করে বিড়াল পোষে। কারন বেড়াল আদুরে প্রাণি-- সুড়সুড়ি দিতে ও নিতে পছন্দ করে।

বেড়াল দেখতে বাঘের মতো কিন্তু বাঘ না। আমার একজন প্রিয় মানুষ বেড়াল কাছে রাখে কারন সে চায় বাঘের অপভ্রংশ অন্তত কাছে থাকুক-- বাঘ নাই তো তাতে কী!

যে বিড়ালটি আমার প্রিয় সেটি শিকারি। তাজা ইন্দুর আর তাজা টিকটিকি শিকার করে। শিকারি বেড়াল ম্যাথ ভালো জানে। তাইতো স্বামী না থাকলেও বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে তার সংসার ভালোই চলে।

এক জন সাহাবীর নাম ছিল বেড়ালের বাপ বা বেড়ালের অভিভাবক। বাড়ি গেলে বিড়ালটি দৌড় দিয়ে আমার পায়ের কাছে আসে বাজার থেকে বাবা বাড়িতে গেলে তার নাতি-নাতনি যেমন দৌড়ে কাছে আসে। আমিও একটি বেড়ালপরিবারের অভিভাবক। বেড়ালের অভিভাবক হয়ে দেখেছি তারা কেবল প্রেমের কাঙাল।

নূহ নবীর নৌকায় বাঘ উঠেছে। বাঘের ঠাণ্ডা-জ্বর। বাঘ হাছি দিলো। বাঘের হাছির সাথে বের হয়ে আসলো বেড়াল। হাছি আসে জান্নাত থেকে। তাই বেড়াল সরাসরি জান্নাত থেকে আমদানীকৃত।জান্নাতে আদম-হাওয়ার জায়গা হয়নি। বিড়ালকেও তাই চলে আসতে হলো । বেড়াল মানুষের আত্মীয় হতে হতে প্রমাণিত হলো প্রত্যেক শক্তি  একমুখী।

আমাদের বিড়ালটি চুরি করতে জানে না, ডাকাতি করে। তাই তার আসামি আসামি মনোভাব নেই। আমাদের বেড়ালটি রোমান্টিক ডাকাত। অনেক প্রথিতযশা পৃথিবীর ইতিহাসে তেমন এক নায়ক কারন তারা রোমান্টিক ডাকাত।

আমাদের বেড়ালের দুটি চোখ ও একটি মুখ আছে।