শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪

ভ্রমর

ফুল মারা যায়,
ভ্রমর ফুলের স্বল্পদৈর্ঘ্য জীবনকে স্বার্থক করে
 ভ্রমর মারা যায়,
সময় তার দায়িত্বটুকু পালন করে
সময়ের মরণ নেই,
সময় ইশ্বরের আংশিক জীবন 

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৪

সিঁড়ি

তোমাদের রাত হয় সিনেটের সিঁড়িতে দুতলা সন্ধ্যায়
কত যুবকের সাথে তোমার চেনাজানা
আজকে ভালো লাগা, কালকে কাটাকাটির দেনা
এক বোতল মনের কিছুই তো বাকী নেই
এক চামচ শরীর নিয়ে শুধু বেচাকেনায়  ধর ধর
বন্য মনে সামাজিক লাগাম
বন্য মনে ধর্মের ফেনায়িত ঢেউ
আর কতকাল গোপন হবে দেসদিমনা
তোমাকে গোপন করবে কেউ

বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৪

ফেরেশতা

ফেরেশতা (Arabic: ملائكة , Malāʾikah)  একটি  ডিবাইস। এই ডিবাইসে নিদিষ্ট প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকে। ইনস্টলকৃত প্রোগ্রাম ব্যতীত ডিবাইসটি অন্য কোনো কাজ করতে পারে না। যন্ত্র আর ফেরেশতার মধ্যে মোটাদাগের পার্থক্য হচ্ছে -- যন্ত্রের স্রষ্টা দৃশ্যমান আর ফেরেশতার স্রষ্টা অদৃশ্য!
ফেরেশতার মতো হওয়া মানে যন্ত্র জীবনের অনুকরণ, অনুসরণ। মানুষ যন্ত্রের মতো জীবন বহন করবে না ,এটাই মানুষের গৌরব, অহংকার।
যন্ত্রও ( Harut and Marut Arabic: هاروت وماروت‎) মানুষের মতো জীবনযাপন করতে পারবে না, এটাই যন্ত্রের সীমাবদ্ধতা, স্বাভাবিকতা।

অনুবাদ

যৌথ একক

যে দৃশ্য ধারণ করে, দুংখের যে জলে স্নান করে জীবনের পথ হাঁটা,
কুসুম যে সুখ বিকশিত করেছে অনেকের জীবনধারা
আমার শৈবাল শৈশব ছিলনা এমন
রহস্য থেকে জাগতিক আবর্তনে যা বর্তায়
আমার জীবনলীলার গভীর খেলায়
একাই হয়েছি রাজা, অনুভূতির রাজাধিরাজ
নদীর স্রোতধারা, ঝরনার আকুতি ব্যাকুল, সূর্যের অন্তিম হাসি, পাহাড়ের অন্তত ধৈর্য রেখেছি জীবনে ভাসমান
মৃত্যু থেকে উঠে আসে যেমন তেমন ঘাসলতা
হেঁটেছি তাতেও বরং আবিষ্কারের নেশায়
পাইনি কিছু আমি কেবল অনুভূতির দাস

এডগার এলান পো
অনুবাদক: এমরানুর রেজা
28102014

সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৪

নগ্নতাই

নিজের সামনে দাঁড়িয়ে দেখি
সভ্যতা এক নগ্ন পৃথিবী
আজকের পাপ গতকালের আদিম খাবার
কোনো এক বনে জন্ম আমার
সভ্যতা মানুষজন্মের জেলখানা
দুংখের হলাহল, দীর্ঘশ্বাসের কারখানা
হায় ইদিপাস
ওহে নীতিবাদ
পৃথিবীকে যতটুকু দেখা যায় ততটুকু না
জানার গভীরে আছে গভীর এক অজানা 

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪

মহাপ্লাবনে

মহাপ্লাবন শুরু হবে। প্লাবনে ভেসে যাবে সব কিছু। প্লাবনে ভাসমান থাকবে কেবলই একটি কিস্তি। মহা আয়োজনে চলছে কিস্তি বানানোর কাজ। এই কিস্তি জাগতিক মানুষের হাসির কারণ। জাগতিক সভার অধিকাংশ  হাসে আর আড়ালে আয়েশ করে মল ত্যাগ করে কিস্তিতে।
একদিন সত্যিই শুরু হলো মহাপ্লাবন। যারা কিস্তিতে উঠতে পারলো তারাই কেবল রক্ষা পেল।
সব কিছু জোড়ায় জোড়ায় তোলা হলো কিস্তিতে। বিড়াল তখনো পৃথিবীতে আসেনি। তাই সেই কেবল কিস্তিতে রাব্বাইক বলতে পারেনি।
ইন্দুরও কিন্তু নৌকার অধিবাসী। প্রাণিরা নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে খুবই সচেতন। ইন্দুরও নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছে। ইন্দুরের পালিত দায়িত্ব মানুষের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াল। ভাসমান মানুষ দূরদর্শী নেতার( হযরত নূহ্) কাছে সমস্যার ইতিউতি জানালেন। নেতা Supreme energy কাছে প্রার্থনা করলেন। Supreme energy সাথে নেতার গভীর বন্ধুত্ব। Supreme energy নেতার প্রার্থনা কবুল করলেন। Supreme energy কোনো কিছুই প্রত্যক্ষভাবে  করেন না, পরোক্ষভাবে করান।
একদিন বাঘের হাড়কাঁপানো জ্বর হলো। ঠাণ্ডা জ্বর। কোল্ড এলার্জির পারিবারিক আক্রমণও বলা যায়। মাঘ হাচ্ছি দিল ( হাচ্ছি আসে জান্নাত থেকে, আইম আসে জাহান্নাম থেকে)। হাচ্ছির সাথে বেরিয়ে আসে বিড়াল। আজো বিড়ালকে দেখতে বাঘের মতো মনে হয়।
জান্নাতি বেড়ালকে দেখে ইন্দুর ভীতসন্ত্রস্ত। প্রতিকূলতা স্বকীয় ঐক্যের পক্ষে হিতকরী। ইন্দুর  এক সাথে মিটিং করে, মিছিল করে নীরবে নীরবে। বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার জোড়ালো আলাপ চলে, নীতি নির্ধারিত হয়, মাননীয় বিড়ালসভাপতির স্বাক্ষর সম্বলিত আইন পাশ হয় কিন্তু বাস্তবে ইন্দুর আইন্দার ঘরে কান্দে।
আজো বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা হলো না....কোনোদিন হবে না ...ইঁদুর যে মরতে জানে না ...মরণ যে ভাইরাস, মরিবার সাহস মরনের এ্যান্টিভাইরাস ...
সাহসের ইতিহাসে বিড়ালের ছাও এক, ইন্দুরের ছাও অনেক সমানে হমান

সফেদ মেঘ

সফেদ মেঘ চলে যায় আকাশে আকাশে
আকাশ ছেড়ে
যে মেঘ চলে গেল আকাশ ছেড়ে সাগরের পরপারে
জানলো না আকাশের উপরেও আকাশ আছে
যেখানে বন্য প্রেমে রাত কাটে
প্রথম চুম্বনে আশীর্বাদ ঝড়ে, ঝড়ে পড়ে চিরতরে বিগত কালিমা
একহাজার চুম্বনের পর শুরু হয় প্রথম যৌবনের নিয়ত
জানলো না
আকাশেরও রয়েছে নিজস্ব সাগর
চংক্রমন যৌবনের নীলাভূমি
সব পথ ছেড়ে, সব মত ভুলে
কেবলই অভিযোগের প্লাবন, দুকূল উপচে পড়া ঢেউ
ফেনায়িত কথার মেলা
কেবলই
অদৃশ্য বাতাসে ওথেলো সিনড্রোম

পাখির প্রতিবেশী মেঘ
পাখির  মতো উড়ে চলে যে মেঘ সে আর কতটুকু আকাশ চিনে
দয়াগুনে আকাশ যদি ধরা না দেয়
আকাশ কোনোদিন নিচে নামে না
তাইতো আকাশ
বড় হওয়ার আগে বড় একা হয়ে গেলাম
ছোট বলেই আমি আকাশ চিনিলাম

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৪

নদীর মতো

নদী ও নারীর জোয়ার আসে
নদী ও নারী সাগরে মিশে

Flow tide for the capital of river and girl
River and girl get admixed with ocean 

অসীম কেন একা

ভোর যদি চলে যায় সকালের কাছে
দিনের কী আসে যায়
দিন যদি অভিমানে থমকে দাঁড়ায়
সিনথিসিস মহাকাল কেঁদে বুক ভাসায়
আজো থামেনি স্বপ্নের খেলা
বিজুরি বাতাসে চলে দেউলের ভেলা
প্রচারে নেমেছে বুজুর্গ কাল
বরফগলা নদী জানে সূর্যের প্রতাপ
এক থেকে নয়ের পর শুন্য রাজা
এক যদি চলে যায় নাফেরার দেশে
শুন্য রাজা হয়ে অসীম সুখে

বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৪

বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৪

!

One minute is wild enough to win the world 

মনের কারবার

দূরের কাশবন ঘন মনে হয়
মনে হওয়া মনের কারবার, কাশবনের নয়

The long afar Cashban Seeming impenetrable
It is a consortium of mind nor of Cashban 

মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৪

কালের পর কাল

একবার অস্থির হলে জন্ম অনিবার্য। কতকাল মৃত্যুগন্ধ নিয়ে বেচেঁ থাকা যায়। বেচেঁ থাকা বেড়ে উঠার রোগ, রোগে রোগে বাড়ছে বয়স,  মানুষের মহাকাল। ফাইলো মন অসীম ব্লেডে কেটে কেটে টুকরো,
অর্থনীতি বলে, বাড়ছে বাজার।
অজানা নেশায় ছুটছে পণ্ডিত, গভীর রাতের সরল সহবাস
শিশুটি কেবল আংশিক মানুষ, সব কাঁচা রোবট, যন্ত্রে বসবাস
সময় একটা পাগলা নেশা, ক্ষমতার জ্বালানীতে জ্বলছে বারংবার
কালের পর কাল

চুবা

শুক্কুরবার< শুক্রবার

রইববার <রোববার

হে আল্লাহ < এল্লা

বেহা < বেকা< বাকা < বাঁকা [ ক' বর্ণ, `হ' বর্ণ হয়ে  উচ্চারিত ]

তাইলে < তাহলে [ হ' লুপ্ত, ই'আবির্ভাব]

চমক= বিস্মিত হওয়ার মতো কিছু

চগম = মই

কইতাম < কহিতাম[সাধারণ বর্তমান কালেও `কইতাম' শব্দটি ব্যবহৃত হয় ~ আব্বা আমি একটা কতা কইতাম চাই]

আক্কল = জ্ঞান, প্রজ্ঞা
হাদা = আপ্যায়ন  [ Gentle hospitality ]

চুবা= জলে ডোবানো ( passive word)[শব্দটি রাগ থেকে উৎসারিত ~ হেরে চুবা দিয়া আন, সব পাগলামি ছুইটা যাইব]

গাঙ= মাঝারি নদী :  গঙ্গা > গাঙ

বিলাই = বিড়াল [বিলাই হয়ে যাওয়া = অসহায় হয়ে যাওয়া]
মাইন্দার গাছ = একধরনের কাঁটাযুক্ত শিমুল গাছ
আওর = ফসলের মাঠ বর্ষায় যা পরিপূর্ণ বিল ~ আওর < হাওড়
খতম > হতম = শেষ করা, হত্যা করা, সিল মোহর দিয়ে সনাক্ত করা

সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৪

ধাঁধা

মানুষের পৃথিবী এক জটিল ধাঁধা
অর্ধেক মন তার অর্ধেক কাদা

What a bemused murky the earth of the man
Half for mind half for shell 

একদিন চৈতার খালে ভ্রমণ

গ্রামের মানুষ ভয় পেতে ভালোবাসে। ভয় সমেত জীবনযাপনে বেশ আরামবোধ করে তারা। ভয় তাদের অভ্যাসগত, চেতনাগত। ভয়কে জয় করার মতো যে মনন, যে মেধা প্রয়োজন তা তাদের হয়ে উঠে না। অনন্ত প্রচেষ্টায় অসম্ভব সম্ভব হতে বাধ্য। হয়তো তাদের মধ্যে চেষ্টার ঘাটতি প্রবলভাবে, হয়তো ভয়কে লালন করা তাদের বেঁচে থাকার ম্যানিয়া।

ভয়ের উপকরণ, উপাদান তাদের গ্রাস করে ফেলে -- তাও তারা নিয়তির দান হিসাবে মেনে নেয়। আহারে, তৃপ্তিও কত অসাধারণভাবে অজ্ঞ হতে পারে!
সহজ, সরল মানুষের আজন্ম লালিত ভয়কে পুঁজি করে গড়ে উঠে এক শ্রেণির গ্রাম্য ডাক্তার। এই গ্রাম্য ডাক্তাররা ওঝা, কবিরাজ, পীরবাবা, হিরালী নামে পরিচিত।

যারা সাপের বিষ নামায় তাদেরকে বলা হয় ওঝা, আর যারা কঠিন শিলার আঘাত থেকে মন্ত্র বলে মাঠের ফসলকে রক্ষা করে তাদেরকে বলা হয় হিরালী।

কুন্দলাল হিরালী। মাঠকে যে দেশের লোক `আওর' বলে কুন্দলাল সে দেশের লোক।
বর্ষায় আওর এলাকায় চমৎকার বৃষ্টি হয়। বর্ষার আওর দেখতে নিষ্পাপ আর লাবন্যময়ী। আওর, পানি, ধানের যুবতী যুবতী শিষ যেন সৌন্দর্যের এক অনিন্দ্য মোহনা। একসময় আকাশ থেকে নাযিল হয় শিলাবৃষ্টি ,দুধেভরা  যুবতী শিষগুলোর কুমারী দেহ রক্তাক্ত করে। সম্মান নিয়ে তারা আর আকাশের দিকে তাকাতে পারে না। আকাশকে বিয়ে করার যে তীব্র ইচ্ছা শিষগুলো ধারণ করে তা ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
কুন্দলাল অনেক আওররাণীর ( ধানের শিষ) সম্মান রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। তাতেই তার কদর এলাকাতে প্রবল। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে আওরটি ( শনির আওর)  তার সম্মান রক্ষা সে করতে পারেনি। চাষীরাও তা কপাল বলে মেনে নেয় (There are two senses in which the term "luck" is used, the prescriptive, and the descriptive. Luck, in the descriptive sense, is merely a name we use in describing fortunate events after they have already happened. However, luck in the prescriptive sense is what is meant when one says they either have, or don't have, a belief in luck)। কুন্দলাল চুপচাপ বসে থাকে, চুপিচুপি চোখের জল বির্সজন দেয় আওরের মানুষ।

হতাশপ্রাণ আওরের মানুষের জীবনস্রোতে আশা নিয়ে আসে চৈতা। সে পূর্ব দেশের সুসং পাহাড়ের কাছ থেকে আসে। অল্প বয়স হলেও পাকা হিরালী।

বিশ্বাস করাও গ্রামের মানুষের জৈবিক কাজ। তারা চৈতাকে বিশ্বাস করে মনেপ্রাণে। লক্ষীও চৈতাকে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস সংক্রামিত। চৈতাও লক্ষীকে বিশ্বাস করে। বিশ্বাসের বাজারে দেখা মেলে ভালোবাসার, দেখা মেলে প্রেমের।
চৈতা-লক্ষী প্রেমের আবডালে আড়ালে উড়াউড়ি করে। সবুজ ধানের সাথে মিশে যায় সবুজ লক্ষী, শুধু লাল কাপড়ের আঁচলটুকু দূর থেকে চৈতার চোখের কোণে খেলা করে। নতুন একটা পুলকে বিবশ হয়ে হয়ে যেতে চায় চৈতার সারা দেহমন।

ছোটবেলা থেকে চৈতা একা। এই প্রথম চৈতা সামাজিক। চৈতা আজ পরিপূর্ণ পুরুষ। লক্ষীর উদাম হাসি ( হাসতে হাসতে লক্ষী বলে, খুব রাগ করবাম, তোমার মতো মাইনষের লগে রাগ করবাম না তো কী করবাম? তুমি কী রকম বোকা) চৈতার আবেগের আনায় ফেনা তোলে। ফেনার ঢেউ লক্ষীর বাড়ির সবপাশ ঘুরপাক খায়।
একদিন আকাশ ফেটে বৃষ্টি নামে (এমনি দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়! )। বৃষ্টির নৃত্য প্রেমিক মনকে উতলা করে। প্রেমিক মন ছুটে চলে কুন্দলালের বাড়ি ( লক্ষী কুন্দলালের একমাত্র কন্যা)। উঠানের মাঝে তখন ছড়া কেটে নাচতে নাচতে দুহাত দিয়ে বৃষ্টির জলকে জড়িয়ে ধরছে লক্ষী। মুগ্ধ হয়ে যায় চৈতা, বলে উঠে, লক্ষীরাণী। ঝড়ের মতো ছুটে এসে লক্ষী লুটিয়ে পড়ে চৈতার প্রশস্ত বুকে। নিবিড়ভাবে লক্ষীকে জড়িয়ে ধরে নিস্পন্দ পাথরের মতো নিশ্চল হয়ে যায় চৈতা।
ঠিক সেই মুহূর্তে উঠানে এসে দাঁড়াল সত্য  প্রেমের শত বাধা `কুন্দলাল'।
বাবা, তাদের প্রণয়কাব্যকে স্বীকৃতি দেয়নি।  গ্রামের মেয়েদের জীবন এমনই। তাদের স্বপ্ন নির্ধারণ করে স্বপ্নহীন অবিভাবক।
নতুনপুরের রতন দাসের সাথে লক্ষীর বিয়ে হয়।
লায়লী এখন ঘুরে মনের বনে আর মজনু ফুলের বাগানে। এক প্রেমে দুইজন মরা। শান্তি নেই  মনে,   প্রশান্তি নেই বাগানে।
এখন চৈতার মিশন ` শনির আওর ' রক্ষা। তাতে তার জীবনের ঝুঁকি প্রবল। তাতে কী? সে একা ছিল, দুজন হলো, আবার একা না হয়ে শুন্য হয়ে যাওয়া ভালো।
শুরু হয় চৈতার মন্ত্রপাঠ। আকাশে পুঞ্জীভূত পাথর অঝোরে চৈতার মাথার উপরে পড়তে থাকে। বাতাসে একটি এতিম শব্দ একবারে জন্য শোনা যায়। এরপরই সব চুপ।
চুপ হয়ে যায় নীলু দাসের ( 1930-2004) ``চৈতার খাল " গল্পটি।
গল্পটা সম্ভাব্য লেখকের প্রথম প্রকাশিত গল্প।এটি  মাহে-নেও ( আবদুল কাদের সম্পাদিত)  পত্রিকায় 1957 সালের আগষ্ট মাসে প্রকাশিত হয়।

এই গল্পে শেক্সপিয়ারসিনড্রোম স্পস্ট। স্পষ্ট বর্নাঢ্য বর্ণনা। বর্ণনার মানদণ্ড সময় নয়, স্মৃতি। বর্ণনা বিকশিত হতে থাকে বৃক্ষবিস্তারের মতো। প্রথমে গল্পকথক, তারপর জয়চরণ, আর জয়চরণের মুখে  কিংবদন্তীর বুনন। গল্পকার এখানে নিছক ফটোগ্রাফার। ফলে আমরা পাই লোকায়িত জীবনের যাপিত জীনববোধের জাবরকাটা গরম ফোটেজ, এক অখণ্ড সৌন্দর্যবোধ।

শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৪

কাঁটাতার

এক এলাকার কুকুর অন্য এলাকার কুকুর সহ্য করতে পারে না। কোনো কুকুর যদি ভুলক্রমে অন্য এলাকায় প্রবেশ করে তবে তার জন্য মহা নয় ভয়ঙ্কর বিপদ।
মানুষ তো  কুকুর নয়, কুকুর শব্দটি মানুষের কাছে গালি। সীমানা নির্ধারণে মানুষও কুকুরের মতো।

চোখের ভৌগোলিক স্বাধীনতা আছে, মানবিক স্বাধীনতা নেই, পাশবিক মানসিকতা থেকে   সীমানার কাঁটাতারের জন্ম।

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৪

প্রিয়ার আগে প্রিয়

যে প্রেম একা হয়ে যায়
সেই প্রেম আমার নয়
বৃষ্টি থেকে তুলে আনি এক হাজার পালক
মধ্য পথে এসে পথের সাথে হারিয়ে যাই
একবারে হারালে পথ দ্বিতীয় বার জাতিস্মর
প্রথম হারিয়ে পথ পেয়েছি খাইবার গিরিপথ
অনার্যরক্ত আমার শরীরের আনায় কানায় কানায় কালকেতু কান্দে অনার্যরক্তে নীরব নিরালায়

ক্যাফেইন উল্লাস এক থেকে দেড় হাজার মাইল অতিক্রম করে ছুটে আসে তোমার ঠোঁটে।
প্রেম,
তোমার একা হওয়ার সুযোগ নেই। তুমি হয়তো আজ স্টেজ করো না, মাতোয়ারা করো না যৌবনঠাসা কোনো যুবকের চোখ এবং চোখের নিচে শুয়ে থাকা কবর। কিন্তু শরীর ঝিমঝিম করার লোভে যে প্রিয় প্রতি রাতে ঘুমিয়ে পড়ে এ্যালকোহেলের দেশে, ঘুমেও তোমার চর্যা রোদ করেনি, করতে পারবে না।
 প্রিয় প্রেম,
তুমি এমনই নেশাকর! তৈরি করো বেঁচে থাকার নেশাদল!!
প্রেম,
তুমি প্রিয়ার আগে প্রিয়

মানুষের নেই কান

রাতযাপনে ফুলের বাসর
দিনযাপনে পাপ
গভীর পাপে সমাজ চলে
চোর পাইনা মাফ
মুখের সামনে নীতিকথা
কথার শেকড়ে ঘা
নকল চোখে রঙ্গিন গ্লাস
বাড়ছে মুখোশপরা
রোদের দেখায় পাখি ডাকে
ভোরের গভীর টান
সকাল হচ্ছে রোদের সকাল
ভোরের মহাপ্রয়াণ
সত্য কথা বাতাসে ভাসে
মানুষের নেই কান

বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৪

তোরা যাও সেন

সামনে ইদ। কোরবানির ইদ। শিশুদের কাছে ইদ মানে জামাকাপড় কেনা, নতুন জামাকাপড় সমেত নিজেকে  প্রদর্শনী করা। আজকের শিশু আগামীকালের ভবিষ্যৎ। এই ভবিষ্যতের কাছে কোরবানীর ইদ মানেও প্রদর্শনী। তবে জামাকাপড় নয়, মোটামোটি চারপাওয়ালা হালাল জন্তু। কার গরু-মহিষ কত দামী, কেমন হৃষ্টপুষ্ট তাই ভবিষ্যতের কাছে গবেষণাময় অহংকারের কারণ, আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। ইদের দিন সকালে শুরু হয় পশুনিধন অভিযান, শুরু হয় জীবিত পশুদের লাফালাফি, মাংসের বিপুলা আয়োজনে পূর্ণ হয় ঘরের ফ্রিজ!
কোরবানির ইদ বলেই বাড়ি যাবে গোধূলি।
গত রমজানের ইদে সে বাড়ি যায়নি। সারাদিন ঢাকা শহরের একটি নির্জন রুমে একা। চলে কেবল নিজের সাথে নিজের কথা।
কতক্ষণ জলের মতো একা একা কথা বলা যায়?
নিজেকে আড়াল করার অভিধান খুঁজে গোধূলি। ট্রিপটেন সেবন করে। চলে ঘুম-ঘুম খেলা। দুতলা বাড়ির সবটাই তার, তার একাকিত্বের একতলা। ঔষধের যৌবন ফুরিয়ে যায়, জেগে উঠে গোধূলির চৈতন্য। চেতনার চোখে সে দেখে --
 মা তার নতুন শ্বশুর বাড়িতে বেশ আমোদে আছে, বাবা তার নতুন বউয়ের সাথে পার করছে হানিমুন সময়। তাঁর খোঁজ নেয়ার আধটুকু সময় নেই তাদের খতিয়ানে। তাদের কাছে উৎসব আসে রঙ্গিলা সাজে আর গোধূলি দুংখের চুলায় সরবরাহ করে জ্বালানী।
গ্রামে জ্বালানী বেশ সস্তায় পাওয়া যায়। এই ইদে গোধূলি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে। তার বাবারও মমতার সদর দরজা হঠাৎ যেন খুলে গেল। ইদ উপলক্ষে স্পেশাল অফার। কোরবানির ইদ বলে কথা। বাবার গাড়ি করেই গোধূলির ইদের বাড়ি যাওয়া।
গোধূলির বয়স আঠারো। বয়স বৃদ্ধিতে দুংখের অবদান অনস্বীকার্য। তাইতো গোধূলির মানসিক বয়স কবেই আটাশের উপরে।
গ্রামের মাটিতে পা রাখার পর গোধূলির বয়স সাত-আটে নেমে আসে। শিশুবয়সী খেলায় মেতে উঠে। বউছি, কানামাছি, গোল্লাছুট, ক্রিকেট অর্থাৎ যখন যা সুযোগে আসে তাই নিয়ে ভেসে বেড়ায় চেনাজানা গ্রামের এপাশ-ওপাশ।
গোধূলি যখন প্রজাপতির ডানার মতো উড়তে থাকে তখন এক অচেনা তবুও চেনা দুটি চোখ করুণ রাগের ঘুড়ি উড়ায়। ঘড়িটা গোধূলির ডানায় আশ্রয় নিতে যায় কিন্তু বাস্তবতার নাটাই তাকে টেনে ধরে রাখে। আবেগমোড়ানো যে বোধ তা যে প্রবোধ মানে না! সামাজিক নিয়মকে কলা দেখিয়ে বন্যমন প্রকাশ করে চলমান সত্য--

-লিজা, শোন তো এনা
-হালা মোর সাথে আসে এত্তু কোনা পরে আস স, অক বাইত দিয়া আস
-না এলাই শোন
-তোরা ক্যাংকা আসেন?
-মুই ভালোই আসো, কিসু কবু?
-মুই যে তোমাক সারাদিন দেখ, তোরা কি স্যাটে জানেন না?
-হ জানয় তো, সবাই দেকে, তার কি হোসে?
-মুই ত সারাদিন দ্যাকো, কিশক তোরা বুজেন না?
-তোমাক মোর ভালো নাগে স্যাটে কি তোরা জানেন না?
-না জাননা, তুই দেকিস ক্যা?
-তোমাক মুই ভালোবাসো, সেই জন্য
-ভালা, তুই পড়িস?
-হ, মাদ্রেসাত যাও, বকরা ইদে সুটিত আইসো, আব্বা ফির জাবা মানা কসসেল, একন তোমার জন্য যাম
-ভালা, তুই যদি পড়া শ্যাস করি ঢাকাত ভালো চাকরি নিব্যা পারিস তাহলে তোক দি বিয়্যা বশিম
-ভালা, মোনে থোন কোল, পরে ফির ভুলি যান না
-ভালা, একন বাইত যা কুটকুট্যা আন্দার হোসে, ভয় নাগবি এ্যালা

লাটিম আনন্দে আনহা আনহা করতাছে। এতো কাল যার জন্য মনের জমানো কথাগুলো ছিল অকহতব্য, আজ তা সফল কুহুকথা। নদীর বয়ে চলা যেন আনন্দের ফুল্লুধারা। এতো সহজে বলা যায়নি সহজ কথাটি কিন্তু কী সহজে হয়ে গেল মানা!
লাটিম এখন পড়াশোনা করবেই। বনের পাখিকে খাঁচায় বন্দী করার ব্যাপারে সে প্রত্যয়ী। শহুরের খাঁচায় যে পাখি বন্দী থাকে সে পাখি যে পৃথিবীর খাঁচায় অমায়িক তা লাটিমের জানবার কথা নয়। আর সব কথা জেনে লাটিমরা জীবন চালনাও করে না, তাদের জীবন যন্ত্রের চেয়ে একটু নয় অধিকাংশ উপরে!

-আব্বা, মুই এ্যালাই কামত নাগব্যা নো, ফির পড়ব্যা যাম
-তাহালে তোক ভাত কাপড়া দিবি কে?
-মোরটা মুই করিম,তোমাক দিব্যা নাগব্যা লায়, তোরা যদি বেশী বিত্যাবিতি করেন তাহালে মুই কোল একবারে বাইত তে বাড়ে যাম, ব্যাটার মুক আর দেকপ্যা পাবা নেন, কয়া দিনু

গোধূলির সংক্ষিপ্ত সময় শেষ, শেষ জ্বালানী সংগ্রহের সময়। লাটিমের অসীম সময় শুরু। লাটিম রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে গোধূলিকে বিদায় জানাবে, স্মৃতিময়  শুদ্ধ চোখের জল গোধূলির পায়ে রাখবে, যে পা আস্তে আস্তে শহরের সেই জেলখানায় প্রবেশ করবে, প্রবেশ করবে চেনা তবুও অচেনা মানুষটির নিকোটিন রুমে!


-তোরা যাও সেন..? ফির কুন্দিন আস্মেন?
-আসিম.। ইস্কুল সুরটি দিলেই আসিম....

রাজা

অন্ধকারও ছিল একদিন পৃথিবীর রাজা
রাজা বদলায়, রাজ্য পুরাতন হয়েও আধুনিক সেনা

মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৪

সমাধান

মনে যখন কোনো সমস্যা আসে তখন সমস্যাকে বলি,
`প্রিয় বন্ধু,
তোমার সাথে রাতে আড্ডা দিবো।'
রাতে তার সাথে কথা বলি, সেও আমার সাথে আন্তরিকভাবে কথা বলে। একসময় সমস্যা দুর্বল হয়ে পড়ে। বুঝতে বাধ্য হয় আমার মন তার জন্য স্বাধীন এলাকা নয়। পরাধীনভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে স্বাধীনভাবে মরে যাওয়া স্বাস্থ্যকর। নিজের যোগ্যতা নিয়ে সমস্যাটি মারা যায়।
জয় হয় স্বকীয় আমির।
জয় হবো না কেন?
অসংখ্য শুক্রাণুকে পরাজিত করে পৃথিবীতে আসি।
জয় আমার রক্তে মিশে আছে, সমস্যা সমাধানের ইতিহাস আমার ডিএনএ- এর গোপন কথা! 

সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৪

আনা = স্রোত

আনা =স্রোত
বেবুজ = বোকা, নির্বোধ
হরদম = একের পর এক
ফুংডা = যৌন লিপ্সায় নিযুক্ত ব্যক্তি
টাক্কি= টয়লেট [ সাধারণত বাঁশ, কলা পাতা, লোকজ কাঁচামাল দিয়ে তৈরি ]
আরা = ঝোপঝাড়, ছোট জঙ্গল
হাইছ = ঝোপঝাড়, বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা
নামাত = বাড়ির ভাঁটা জায়গা, নিচের অংশ
কুনাইচ্ছা= আড়াআড়িভাবে
হিউজ্জা = দূরে যা [ তাচ্ছিল্য অর্থে ]
তফাত যা < ত ফা তুন = দূরে যাওয়া, দূরে যাওয়ার নির্দেশ
হেসা= সত্য, হেসান্তি = সত্যি
 তরতরা = সবজি
 হাত হওয়া = সন্তুষ্ট হওয়া
ডাইলা = মাথা মুণ্ডু, মাথায় চুল নেই এমন
ফাইলা= মাটির পাতিল
হারি কাফুর < হাড়ি কাপড় < শাড়ি কাপড় [ `স'  `হ'তে রূপান্তরিত ]
ছায়া = শাড়ির নিচে মহিলারা লুংগির মতো যে কাপড় পড়ে, পেটি কোট
ছয় = শিম
আস < হাঁস [ `হ ' বর্ণ `আ' বর্ণে উচ্চারিত ]

রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৪

সৃষ্টি

আকাশ ফেটে রক্ত ঝড়ে
পৃথিবী দেখে বৃষ্টি
মেঘের নিচে রোদের নাচন
মৃত্যু শেখায় সৃষ্টি 

শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৪

মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখা

আজ( 11,10,2014,10:5) আমার মৃত্যুদিবস হতে পারতো!
অস্বাভাবিকভাবে  মানুষ যেমন বেঁচে থাকে আমিও বেচেঁ আছি। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হলো। আমার পাশের সিটের মানুষগুলো মুনকার-নাকিরের সওয়াল জবাব দিবার জন্য হয়তো প্রস্তুতি নিচ্ছে!
আর আমি!
প্রতিদিনের মতো আজকেও জন্মদিন পালন করছি! অনেক আগে থেকেই প্রতিটি দিনকে শেষ দিন মেনে প্রতিদিনের আনন্দ-দুঃখ ইনজয় করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
মহাকালের কাছে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই, প্রত্যাশা আমার চোখের সামনের আশা ও স্বপ্নের কাছে, প্রত্যাশা এইমাত্র মনের ভেতর খেলা করা ফুলের কাছে।
আমি আজকে চলে গেলে আমার কিছুই হতো না, তারেক মাসুদের কিছু হয়নি। কিন্তু তারেক মাসুদের শুন্যতা বাংলাদেশর যোগাযোগ ব্যবস্থা পূর্ণ করতে পারবে!!
মৃত্যু থেকে বেঁচে আসা সৈনিক চোখের জলকে পুঁজি করে আপনাদের (যোগাযোগ ব্যবস্থা  যারা ভালো করতে পারেন) অনুরোধ করে বলছি,
প্লিজ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে আপনারা আন্তরিক দৃষ্টিপাত করুন।
মৃত্যু আসবে কিন্তু নিশ্চিত মৃত্যুর যমদূতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট!
আমরা তো নয় মাসে দেশ স্বাধীন করতে পারি, আমরা কেন পারবো না যোগাযোগ ব্যবস্থাকে  ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান দিতে! 

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৪

সন্ধ্যার প্রকৃতিতে চাঁদনী রাত

বালি চকচক করছে। বালির উপর জোছনার কচকচ আওয়াজ। বালি আর জোছনার বিছানায় শুয়ে আছে মধ্য রাতের কুকুর। কুকুরের চোখ দুটি বন্ধ, পা সামনের দিকে সরলরৈখিকভাবে স্থির। কালো পিঁপড়া কুকুরের  শরীরের দাঁরিয়ে বান্দা খেলছে। কুকুরের কান মাঘনিশীথের পাতার মতো একটু একটু নড়ছে। তাতে পিঁপড়ার মনে কোনো পুলিশীভয় তৈরি হচ্ছে না। কারণ পিঁপড়া জানে না কান নড়ার অর্থ কী!
বালি, জোছনা, পিঁপড়ার এই লাইভ শো দেখে তারেন  অবাক নয়। অবাক হওয়ার কারণ অন্য কিছু। অন্য কিছুটা হলো  মধ্য রাতে কুকুরের ঘুম।
কেন সে ঘুমাচ্ছে?
তারেন  গ্রাম্য কলেজের মাস্টার। গ্রামের মানুষেরা অধ্যাপক, প্রভাষক বুঝে না, মাস্টার বুঝে। মাস্টার শব্দটি তাদের অভ্যাসে, তাদের ভাষিক রক্ত প্রবাহে। এই শব্দটির আড়ালে যে ভয়ের বাণিজ্য লুকিয়ে আছে, লুকিয়ে আছে হাজার বছরের শোষণের স্রোতধারা তা তারা বুঝতে চায়না। গ্রামের মানুষের পীর সাবের নাম হুজুগ, গ্রামের মানুষের কেবলার নাম নগদ!
তারেন আজ রুমে যাবে না, যেতে পারবে না। তার রুমের দাপটে বাসিন্দা আজ মৌমাছি।
এইতো কিছু দিন আগে মৌমাছি রুমে আসে। ধীরে ধীরে বাসা বাঁধে। তারেন মাস্টার সুখবোধ করে। ভাবে প্রকৃতির কত কাছাকাছি সে। প্রকৃতিকে বাড়ির ছাদে, ড্রইংরুমে নিয়ে আসার চেষ্টা এই সময়টার একটা বাতিক।
মৌমাছির চাক বড় হচ্ছে, বড় হচ্ছে তারেন মাস্টারের দৈনিক সুখবোধ। তার মনে ভেসে উঠে চাক ভাঙার রসালো দৃশ্য। চাক ভাঙার সময় হয়তো তার দুই-এক জন প্রিয় বন্ধু সাথে থাকবে। তারা চিয়ার্স করবে। রুমটা প্রাকৃতিক আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এন্ড্রয়েড ক্যামেরা ধরে রাখবে বিরল কিছু সময়।
কিন্তু প্রকৃতি ক্ষেপে উঠলো। বিনা নোটিশে তারেন মাস্টারের চোখে আক্রমণ। মমতাময়ী মৌমাছি এমন রেগে যেতে পারে!
আহত চোখে রুমে থাকার সাহস করেনি  মাস্টার। আফ্রিকার মেয়েদের ঠোঁটের মতো তার ডান চোখটি ফুলে উঠেছে।বাম চোখটি  এখনো অক্ষত। এই চোখটিকে অক্ষত রাখার জন্যেই  তারেন মাস্টারের রুমে না ফেরার অভিযান, কুকুর, জোছনা আর পিঁপড়ার সাথে কিছু মুহুর্তে ভাগাভাগি।
হঠাৎ কুকুর ঘেউ ঘেউ করে চেচামেচি শুরু করে।
অ, কুকুর টি তাহলে ঘুমাচ্ছিল না, রেস্ট নিচ্ছিলো। রাতে কুকুর রেস্ট নেয় না।
তাহলে?
প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের সাথে চুপিচুপি কথা বলার কোনো পায়চারী হয়তো।
অলস সময় অনেক ভাবনা তৈরি করতে পারে। তারেন মাস্টারও ভাবছে, হতে পারে আগাছা কিংবা পরগাছা ভাবনা। ভাবনা অলস সময়কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কুকুরের ঘেউ ঘেউ আওয়াজ থেকে দূরে চলে আসে তারেন!
এইভাবে আর কত দূরে চলে আসবে তারেন মাস্টার?
নিজের শিশুমনটাকে কতকাল সান্ত্বনার চকলেট দিয়ে পুষ্টিগুণ অক্ষুন্ন রাখবে --
When I find myself in times of trouble
Mother Mary comes to me
Speaking words of wisdom, let it be
And in my hour of darkness
She is standing right in front of me
Speaking words of wisdom, let it be
Let it be, let it be
Let it be, let it be
Whisper words of wisdom, let it be

বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৪

ব্যথানাশক

অভিযোগ বিষাক্ত(বিষ মিশ্রিত)।অভিযোগকারী বিষধর(বিষ ধারণ করে যে)। অভিযোগের সমুদ্রে বসে আমি করি তৃপ্তির মেডিটেশন। আমি জানি, তৃপ্তি ব্যথানাশক।
Accusation is toxic. One who complaints having adder. In the realm of accusation I am busy myself in the content of satisfactory. 

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৪

দুর্ভোগ

যে বৃষ্টি নিয়ে আপনি কবিতা লেখেন
সেই বৃষ্টিই আমার দুর্ভোগের কারণ
You write in poetry on rain
That rain makes my disaster, episode of hell 

রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৪

Let there be light

ভোর মানে কুয়াশার ললিত চাহিদা। প্রতিটি ভোরে যদি কুয়াশা ফোটে একাকার হতো। প্রেমদহন গেয়ে যেত সাঁওতালী গান।
জন্মের সাথে মৃত্যুর শোকসংবাদ। মৃত্যু মানে তালিকাভুক্ত মাটির খাবার। রূহ তরতাজা হয়ে মগ্ন থাকতো কালিদাসপাপে।
পাপ আর পূন্যের তালিকায় জীবন হচ্ছে ভার!
অথচ
জীবন নিয়ে খেলছে সদা অদৃশ্য ডাকাত!
আলেয়ায় পা রাখে না, মন রাখে আজকের সর্দার
তবুও বলে যায় হাসির চিৎকার Let there be light! Let there be light

শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৪

স্বার্থপর

Selfish = Self + -Fish,
Self = One's own self, His better self
Fish = Belonging to

স্বার্থপর = স্বার্থের উপর < স্ব অর্থের উপর

স্বার্থপরতা গুরুত্বপূর্ণভাবে আবশ্যক। স্ব অর্থ বা নিজ সম্পর্কে যার ধারণা পরিষ্কার না, তার মাধ্যমে সমাজের উপকার হতে পারে না। স্বার্থপর হওয়া মানে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার ব্যাপারে মৌলিক পদক্ষেপ। স্বার্থপরতা প্রতিটি প্রাণির জন্মগত ও স্বাভাবিক আচরণ।
স্বার্থপরতা আর ভোগবাদী মানসিকতা এক নয়।
আমাদের প্রত্যেকের শরীরে একটি নিদিষ্ট তাপমাত্রা থাকে। এই নিদিষ্ট তাপমাত্রাকে আমরা জ্বর বলি না। বরং এই নিদিষ্ট স্কিলে তাপমাত্রা যদি শরীরে উঠা-নামা না করে তবেই ক্ষতিকর।
তাপমাত্রা যখন নিদিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করে আমরা এই বর্ধিত তাপমাত্রাকে জ্বর হিসাবে সনাক্ত করি যা কেবল ক্ষতি কর নয়,  ভয়ানক ভাবে ক্ষতিকর।
স্বার্থপরতা যখন নিদিষ্ট মাত্রায় উঠা-নামা করে তখন তা কল্যাণে মঙ্গলময়। যখন মাত্রা অতিক্রম করে তখন তা ভোগবাদী স্রোতের গতিপথ।
তাই
স্বার্থপরতা জিন্দাবাদ,
ভোগবাদী নিপাত যাক! 

আমিও একদিন মানুষ ছিলাম

ইদানিং কানে একটু কম শুনি
শিশু বয়সের অনেকটা সময় যেমন কম শুনতাম
চোখেও কম দেখি
যদিও সূর্যের তাপ, চাপ, আলো আগের চেয়ে অনেক বেশী
মাটির দিকে চোখ রেখে হাঁটতে হাঁটতে অনেক আগেই ভুলে গেছি আকাশ বলে কিছু একটা ছিল
চোখের জলও বিক্রি করে দিয়েছি মাহাজনের কাচঘরে
আমি এখন অবাক মানুষের মতো চোখ দিয়ে কথা শুনি
কান দিয়ে ঘ্রাণ নেই
মন পেতে প্রার্থনা করি অদৃশ্যের কাছে
অদৃশ্য কোনো সাংবিধানিক গন্তব্য নয়
চিলেকোঠায় বসে বৃষ্টির শব্দ শোনার মতো সবল
শব্দ শোনার মতো সরল
মনের নগ্ন মাঠে জায়নামাজ পেতে রাতের গভীরে মোমবাতি জ্বালাই
আগুনের সাথে কথা কই
পরিচয়হীন কথা
মানুষের কাহিনি যতসব
আমিও একদিন মানুষ ছিলাম
হাত-পা চোখ সমেত মানুষ
আমার ছিল নদীভরা অহংকার
ফুলে পূর্ণ ঘ্রাণ
কিছু নেই আজ, কিছু থাকাতে জীবন থাকে না

শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৪

রাগ

আমার উপর কেউ রাগ কিংবা অভিমান করবে এটাই আমার যোগ্যতা
Some one may be anger on me is my quality credit

মানুষ

মানুষ নিজের মতো করে অন্যকে বিবেচনা করে; অন্যের মতো করে নিজেকে বিশ্বাস করে
Man considers others likely his brainbox and believes himself in the eye of others

বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৪

মস্তিষ্ক বনাম গবেষণা

সেন্সর এ্যারিয়া মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। সেজিটাল সেকশন আরেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এমন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে মানুষের মস্তিষ্ক (The brain, together with the spinal cord, constitutes the central nervous system. It is responsible for monitoring and regulating unconscious and voluntary action and reaction in the body. It is also the intellectual center that allows thought, learning, memory and creativity)।
মন বলতে যা বুঝানো হয় মস্তিষ্ক অনেকটা তাই। কেননা অনুভূতির সাংকেতিক ডিজিট সাজানো থাকে মস্তিষ্কে। ফলে মানুষ সাদা- কালো, টক- মিস্টি প্রভৃতি সনাক্ত করতে পারে।
প্রাথমিকভাবে মস্তিষ্ককে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় --
ডান মস্তিষ্ক
বাম মস্তিষ্ক।
ডান মস্তিষ্ক যাদের খুব বেশী সক্রিয় তারা ডানপিটে স্বভাবের। আর যাদের বাম মস্তিষ্ক সক্রিয় তাদের গাম্ভীর্য পরিমাণ আলোচনা করার মতো। তবে আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশী অপছন্দ করে মুখস্থ করা। যখন আমরা শুধুই মুখস্থ করতে থাকি তখন আমাদের সৃজনীশক্তি হ্রাস পেতে থাকে।
এক জোড়া সক্ষম চোখকে যদি কালো ফিতা দিয়ে বেধেঁ দেয়া হয় তাহলে একমাস পর চোখজোড়া অক্ষম হয়ে যাবে। তেমনি ভাবে মুখস্থকরণ ফিতা দিয়ে আমাদের মস্তিষ্ককে বেধেঁ দেয়া মানে এর মূল কার্যক্ষমতা বিনষ্ট করে দেয়া।
অনেক শিক্ষা ব্যবস্থায় দারুণ কৌতুক হয়ে থাকে। সৃজনীশক্তি যখন পুরোপুরি হত্যা হয়ে গেছে তখনই গবেষণার পবিত্র দায়িত্ব দেয়া হয়। বেশ জমকালো গবেষকও প্রোডাকশন হয়ে থাকে।
কীভাবে?
গবেষকরা রাতের আঁধারে ` কাটপেস্ট ', ` কপিপেস্ট '--এর পতিতালয়ে যাওয়া-আসা করে।  তাতে কাজও উদ্ধার হয়, অর্থনৈতিক ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি খ্যাতির ক্যালরিও সমৃদ্ধ হয় বেশ।
সময় এইভাবেই চলে যেতে পারতো যদি সময়ের প্রতিটি বিন্দু মিজানের পাল্লায় না তোলা হতো। সময় প্রয়োজনে নিষ্ঠুর হতে পারে ; পারে বিধায় `কাটপেস্ট' করা জামানার হুজুরদের গবেষণা লাল কালি দিয়ে ক্রস চিহ্ন এঁকে দেয় আর উচ্চারণ করতে থাকে
``সাবধান! এটি কাটপেস্ট, কপিপেস্ট এলাকা "

মানুষের সন্ধানে

পৃথিবীতে যদি একজন মানুষের সন্ধান পেতাম তাহলে তাঁর কাছ থেকে দীক্ষা নিতাম কীভাবে মানুষ হতে হয়!

If I meet a man by chance, I will learn by heart how to be a man!

বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০১৪

শুষ্ক কেন?

যে শুষ্ক সে-ই কেবল রসের মূল্য বুঝে ( কুরানের অনেক বর্ণনায় নহরের বা মিঠাপানির রসালো বর্ণনা আছে; গ্রীকপুরাণে বসন্ত সমেত উন্মুক্ত প্রান্তরের বর্ণনা ব্যাপকভাবে; ``আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে" ভারতীয় মনুষ্যচিন্তায়; আইহনের রাধার কান্না কৃষ্ণের জন্য; ক্যারিবিয়ান সাহিত্যে উন্মুক্ত আকাশের বন্দনা)।
একবার রস-কস হীন হলেই তো রসের মূল্য ধারণ করা যায়(The more I rustic the more I civilized)। ধারণার চেয়ে ধারণ করা ফরজে আইন জাতীয় বিষয়।
 ধারণায় কথা বলা যায়, ধারণে বিচারের ক্ষমতা তৈরি হয় যে বিচারে লোক বিশেষের মতামত নয়, মত বিশেষের সভ্যতা পাওয়া যায় ....

আলাস্কা

মনে করতাম বাতাসের সমগোত্রীয় কিছু
যখন শরীরের তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে সহ্যের গতিসীমা
তখন তোমার সুশীতল পরশ আমার কোষাগারের জমা করবে স্নিগ্ধতার আলাস্কা
আবার যখন শৈত্য প্রবাহে তাপমাত্রা নেমে আসবে হিমাঙ্কের নিচে
তোমার তহবিল থেকে উত্তোলন হবে উষ্ণতার পর্যাপ্ত ব্যালেন্স আমার জন্য
কেবলই আমাদের জন্য
বাস্তবে দেখলাম সিনেমার অন্য দৃশ্য
তুমি তো তুমি আর আমি তো আমি
আঙ্গুল টু আঙ্গুল কাছাকাছি, পাশাপাশি
তবুও যেন অনেক দূরে আছি, দূরত্ব নিয়ে বাঁচি
আমার স্থলভাগে যে টর্নেডোর মিশন পাঠাও এক থেকে একাদশ
তখনই আমি দ্বাদশ ব্যক্তি হয়ে লুকিয়ে পড়ি মেঘের আড়ালে
পরিসেবার আশায় নয়, প্রতারিত হবার বাসনায়
এক আমিকে একাধিকবার দেখি আয়নায়
কাজ আমার বেড়ে যায়,
কল্পনাকে তখন হাতে ধরে দিয়ে আসি পাচারকারীর কাছে
তোমার চোখটা তখন জয়মাল্য মুখোপাধ্যায় দৈহিক কাভারে

ধর্ম পুরনো বিধায় ধর্ম মানা হয়ে উঠে না তোমার
অথচ কী মহান তোমার সৌন্দর্যের বাসি চেতনা
চোখের ভালো লাগাগুলো কী সুন্দর থরে-বিথরে সাজানো  মনের গেস্টরুমে
আর আমি তোমার মনের বেডরুমের এক নয়, দ্বিতীয় বাসিন্দা
যেদিন একা হয়ে যাবো, একা করে তুলবো তোমার মনের আঙিনা
জন্ম একবারই, মৃত্যু অঙ্গাণু অঙ্গাণু বহুবার
শুনেছি মানুষের মৃত্যু ইশ্বরের আযান