রবিবার, ২ আগস্ট, ২০১৫

অভিজ্ঞতা

আমি তখন খুব ছোট। বয়স ছয়-সাত হতে পারে। ছয়-সাত হলে কী হবে অনেক পাকা।  বাংলা সিনেমার পোকা।
প্রত্যেক শুক্রবার বিটিভিতে সিনেমা দেখানো হতো। সিনেমার জন্য শুক্রবার ছিল আমার ছোট ইদ। আর বিটিভি ইদের ময়দান। মাঝে মাঝে টিভির পেছনে যেতাম আমাকে যদি পর্দায় দেখা যায়। আমি কিন্তু তখন জানতাম না টিভির পেছনে দাঁড়ালেই পর্দার সামনে দেখা যায় না।
বিটিভির পর্দায় আমার ছবি ভাসবে এমন ইচ্ছা  মনে গেঁথে গেল। তখন মানসিকভাবে সিদ্ধান্ত নিলাম নায়ক হবো। আর নায়ক হলে শুধু বিটিভি কেন, সিনেমা হলেও আমার ছবি আর আমার নায়িকার ছবি একসঙ্গে প্রদর্শিত হবে।

তখন থেকেই আমি শুধু নিজেকে জাহির করতে চাই। নিজেকে জাহির করলে ভালো লাগে। কেউ আমার প্রসংশা করলে উদ্যমী হয়ে উঠি।

আমার এই ছোট্ট বয়সে অনেক সংগ্রাম, অনেক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি। সংগ্রাম আর বাস্তবতা প্রতিনিয়ত শিক্ষকের ভূমিকায় উপস্থিত হয়েছে। গভীর জলে পড়েও স্বপ্ন থেকে এক বিন্দু দূরে সরে যাই নি।

আমার শিক্ষক ( সংগ্রাম আর বাস্তবতা) এখন আমাকে অনেক বড় করে তুলেছেন। এখন আমি বিটিভির পর্দায় নিজেকে প্রদর্শন করতে চাই না, বিটিভির মালিক হতে চাই,
এখন নায়ক হতে চাই না,
নায়ক তৈরি করতে চাই।

গত 30, 07, 2015 বিটিভি আমাকে ডাকে। আমাকে খুব করে বলা হয় আমি যেন উপস্থিত থাকি। এমন একজন আমাকে বললেন যাঁর মুখের উপর না করার ক্ষমতা আমার নেই। তাই বিটিভিতে গেলাম। শিল্প ও সাহিত্য অনুষ্ঠান। ভিডিও রেকর্ড হলো। লাইভ হবে আগামী বুধবার চারটা পাঁচ মিনিটে। আমার রেকর্ডিং প্রথমবারেই নিয়ে নিয়েছেন ক্যামেরাম্যান। অথচ অন্যদের কয়েকবার করে শুট নিতে হয়েছে।আমি শুধু শুনেছি,

লাইট- ক্যামেরা- এ্যাকশন।

আমিও শুরু করেছি আমার কাজ। কোনো প্রকার কম্পন নেই, কোনো প্রকার দ্বিধা নেই।

কীভাবে থাকবে?

টিভির পেছন থেকে পর্দার সামনে যাওয়ার প্রস্তুতিটা যে আমার সেই ছোট কাল থেকেই। এখন তো শুধু অবস্থানের বদল ঘটেছে-- ক্যামেরার সামনে থেকে বিটিভির পর্দায় যাওয়ার পরিভ্রমণ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন