শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

সিন্দবাদ

আমার দেখা প্রথম নায়ক সিন্দবাদ। আলিফ লায়লার সিন্দবাদ। সিন্দবাদের বিপদগুলো সিঁড়ির মতো-- আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠে। উপরের দিক মানে ঝড়ো হাওয়ার প্লাবিত গুঞ্জন। কোনো বিপদই সিন্দবাদের মানসিক শক্তির কাছে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারিনি। সিন্দবাদের মানসিক নৌকা যখন বৈঠা ছাড়া হয়ে যেত তখনই সে প্রেমসুরে কাতর নয়নে চলে যেত তার স্মরণে --

আল্লা মাদাত কর
আল্লা মাদাত কর

তখন থেকে আমি জানি সমাজে চারটি লেয়ার-- সিন্দবাদ, শয়তান, আল্লা, মানুষ। তখন থেকেই আমি সিন্দবাদের উত্তর পুরুষ।

আমার মানসিক জল থেকে যখন সোনালি সূর্য চলে যায় তখন আমি হিজল গাছের নিচের শান্ত সমাহিত জল। যে জল ভয়শুন্য গ্রামের বাসিন্দা সেই জল। সেই জল থেকে একদিন সিন্দবাদের জন্ম।

আমার প্রথম হিরো সিন্দবাদ।

আমার দুই চোখে সিন্দবাদ, আমার লৌহ কণিকার পাড়ে পাড়ে সিন্দবাদ।

আমি সিন্দবাদের আধুনিক ভার্সন -- জিন্দাবাদ।

জিন্দাবাদ বাংলা সিনেমা দেখে কিন্তু ঘটনা কিংবা ঘটনার প্রতিক্রিয়া হয় না। কেবল ঘটনার কারণ হয়ে কখনো কাঁদে, কখনো হাসে।

হাসিগুলো ঝুলে থাকে হিংসার বারান্দায়, কান্নাগুলো তাচ্ছিল্য হয়ে বরফগলা নদী।

জিন্দাবাদ বয়ে চলে,
বয়ে চলে বসন্তের বাতাস হয়ে ডালে ডালে,
জ্যৈষ্ঠের বাতাস হয়ে ফলে ফলে,
আবার শীতের বাতাস হয়ে ঝরা পাতার প্রাত্যহিক সংসারে।

জিন্দাবাদ এমনই, বিপদ থেকে তুলে আনে একখণ্ড জীবন, পথ দেখায়, পথের প্যারামিটার হাতে তুলে দিয়ে বলে, বিদায় বন্ধু, বিদায়।

জিন্দাবাদ ভালো করেই জানে সুঁই-সুতা দিয়ে    কেমন রচনা করা যায় এক বিশ্ব জীবন -- জীবনের কাছে কতবার দেউলিয়া হওয়া যায়? যতবার জীবন ততবার।

জিন্দাবাদ একের ভেতর একাধিক, সীমার মাঝে অসীম তবুও আমি সিন্দবাদকে এড়াতে পারি না।

আমার দেখা প্রথম হিরো সিন্দাবাদ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন