সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫

বিশ্ববিদ্যালয়

সাহিত্যের চরিত্রগুলো আর কতটুকু সাহিত্যিক? যতটুকু সাহিত্যিক তার চেয়ে বেশি বাণিজ্যিক। চরিত্রগুলোকে পণ্য করেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টররা টিকে আছে,সময়মতো ডাল-ভাত-গিলতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যিক হুজুরেরা মানিক বাবুর উপর ওয়াজ-মাহফিল করে, তবারকের আয়োজন করে। একদিনের ওয়াজ-মাহফিলের কস্টিউম খরচে যা ব্যয় হয়,তার অর্ধেক পেলেই মানিক বাবুর হাসি কিছু দিনের জন্য হলেও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারতো। তবারক আবার আমদানি করা হয় ফাইভ স্টার হোটেল থেকে।ফাইভ স্টার হোটেলের নাম শুনলে আমার মানিক বাবুর শ্লেষকর্ম চোখে আসে--

``ঈশ্বর থাকেন ওই গ্রামে, ভদ্র পল্লিতে....।"

তবু বিরানির তাজা গন্ধে বিশ্বিবদ্যালয়ের মাস্টরদের গোবর-এষোণা শুনতে মাঝে মাঝে যেতে হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রতিত রুমে বসে তাদের খুৎবা শুনতে শুনতে চোখে ঘুম চলে আসে। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে শীতল বাবুরে স্বপ্নে দেখি যে কয়েকটি মাছ চুরি করেছিলো।

মানিক বাবু, জানো তুমি?
তোমাকে জানতেই হবে, তোমার চরিত্রগুলো নিয়ে আজ সন্ত্রাসী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টররা।

একদিন পরীক্ষার হলে আমি। আমাদেরকে দেয়া হলো 'প্রাগৈতিহাসিক' গল্পের বিষয় ও শিল্পরূপ লিখতে। আমি সামনের বেঞ্চে বসা। আমার সামনে আর কোনো ছাত্রবেঞ্চ নেই। আছে টিচারদের সিংহাসন। টিচাররা সিংহাসনে বসে হোমমেড তেলতেলে গন্ধে মাতম খাবার খাচ্ছে। আমার নাকে তখন গন্ধখাবার,কস্তুরি গন্ধখাবার আর মস্তিষ্কে খেলা করছে ভিখু-হৃদয়ের হাহাকার। খাতায় তখন আমি আর কিছু লিখতে পারিনি। চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা  জল গড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষার খাতা ভিজে যায়। ভিজে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়।

আমার চোখের জল হয়তোবা ভিখু-হৃদয়ের হাহাকারের সমান নয়, কিংবা সমানের কাছাকাছিও নয়।
কিন্তু
আজ আমি জানি,কোন বুদ্ধিজীবী সন্ত্রাস ভিখুর মতো ডাকাত তৈরি করে।

কোন বুদ্ধিজীবী সন্ত্রাস স্যাডিজম চর্চা করে।

কোন বুদ্ধিজীবী সন্ত্রাস সামাজিক ব্রাত্য পর্দায় সমাপণ করে শিল্পীর বনলতার শেষকৃত্য।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন