সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

প্রথম লেখা

আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব পনেরো মিনিটের পথ। বিরতি দেয়া হতো দুপর একটায়। এক ঘণ্টার বিরতি। পনেরো মিনিটে আসা, পনেরো মিনিটে যাওয়া, পনেরো মিনিটে খাওয়া। আর বাকি পনেরো মিনিট  সালাত কায়েম করার কাজে ব্যবহার করতাম।

সালাত বললাম এই কারণে যে সালাত আর নামায এক কথা না, এক কথা না সাওম আর রোজা। রোজা মানে উপোস থাকা আর সাওম মানে প্রভুর হুকুমে উপোস থাকা এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ফাস্টিং ব্রেক করা। নামায মানে স্মরণ। আর সালাত মানে নিয়মতান্ত্রিক স্মরণ, অবশ্যই আল্লার স্মরণ।

দুপুরের খাবার শেষ করে মসজিদের দিকে যাচ্ছি। মসজিদ আমাদের বাড়ি থেকে এক ডাকের পথ। রাস্তায় নেমেই দেখি একটি শিশু কাঁদছে, আরেকটি শিশু তার কান্না দেখে হাসছে, মহান হাসি। হাসি শিশুটির কান্না আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। উপেক্ষা করতে পারছি না শিশুটির মায়াময় কান্না, উপেক্ষা করতে পারছি না শিশুটির অকপট হাসি। সবচেয়ে বড় প্যারাডক্স হল আমিও তখন শিশু। আমার শিশুমনে তখন এক ধরনের পেনসিভ মুড তৈরি হল। তখন কয়েকটি লাইন টপ টপ করে পৃথিবীতে নেমে আসে

বিচিত্র ধরায় আমি আসিয়াছি বিচিত্র রূপে
কারো দেখে মুগ্ধ হই কারো দেখে হাসি
কারো মুখে লাবণ্যের হাসি
কারো নেত্র তরে বারি যাইতেছে ভাসি।

শিশুমন আমার একেবারে হালকা হয়ে গেল। ফুরফুরে এক মেজাজ নিয়ে সালাত কায়েম করে স্কুলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি।
তখন থেকে লেখালেখি আমার জৈবিক কাজ। লিখলে শান্তি পাই।
আমি জানি মরণশীল এই পৃথিবীতে লেখকরা কখনো অসুস্থ,
কখনো পাগল,
কখনো আবার হাস্যকর প্রাণি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন