বৃহস্পতিবার, ২৮ মে, ২০১৫

হাসান

হাসান।
জিয়াহল বন্ধন মেসের ওয়েটার। তার মাসিক বেতন তিন হাজার টাকা। তিন হাজার টাকার মধ্যে দেড় হাজার টাকা সে মোবাইল ফোনে বিনিয়োগ করে। রাত এগারটার পর পর তার সহকর্মীরা ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু হাসানের চোখে ঘুম নেই। হাসানের কান গরম হয়ে যায়।  তবুও মন মোবাইল ছাড়তে চায় না। সারা রাত ফিস ফিস। কত কথা! মাথার নিচে বালিশ আছে কিনা, থাকলে বালিশের তুলা নরম কিনা -- এমন আরো, আরো গভীর গভীর কথা!

অকারণে ঝগড়া।
তখন হাসানের মন ভালো থাকে না। মন খারাপের সময়  ওয়েটার কিংবা মানুষ হাসানকে খুঁজে পাওয়া যায় না। হাসান তখন একেবারে অন্য রকম, বিদ্যুৎহীন বাল্বের মতন।

হঠাৎ হাসানের মুখে হাসি, হাসি দেখলেই বোঝা যায় আবহাওয়া স্বাভাবিক।

গত বৃহস্পতিবার ছিল সাত নাম্বার বিপদ সংকেত। প্রিয়ার গায়েহলুদঝড় হাজার মাইল বেগে হাসানের ভার্চুয়াল পৃথিবীর দিকে তেড়ে আসে। ঝড়ের আক্রমণে হাসান বিধ্বস্ত, মৃতপ্রায়।
শুক্রবারে হাসানের প্রিয়ার বিয়ে হয়। হাসান কাঁদে আর কাঁদে, তার চোখের নিচে জলের নালা, মনে প্রিয়হারা বেদনার কান্নার সুর। যে শরীর হাসানের অর্থভূমি সেই শরীরে প্রাণ নেই।

প্রাণহীন হাসান কতকাল সজীব জল ফেলবে?

হাসানও একদিন জেনে যাবে অনুরাগবিচ্ছেদে চোখের জল বিয়োগ করার চেয়ে ক্রিকেট খেলে ঘাম ঝরানো অনেক ভালো!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন