শনিবার, ২৩ মে, ২০১৫

ভালো থাকবে পৃথিবী

মাই টিভির সামনে সমির চা-স্টল। চা-স্টল হলেও সকালে নাস্তা তৈরি করা হয়। বাংলামোটর দিয়ে যাচ্ছি, চায়ের তৃষ্ণা পেয়েছে বেশ।  চা খেতে আমি সমির চা-স্টলে। চা দিতে যথেষ্ট লেইট করছে।

 মামা, চা খেতে মক্কা যাওয়ার সময় লাগবো নাকি?

বহেন, লেইট অইবো।

তাড়াতাড়ি দাও।

সইয়া-রইয়া খাইতে চাইলে বহেন নতুবা চলে যান।

আমার উপরে এমন কথা!  ওর সাহস দেখে অবাক হলাম। আবার ভাবলাম মূর্খ মানুষ অধিক সাহসী হয়( হাতি ঘোড়া গেল তল /ভেড়া বলে কত জল)। আমার ডান পকেটে  Ak47, বাম পকেটে যে বাংলাদেশ ব্যাংক থাকে এই খবর হয়তো সমিরের নেই। উঠে চলে আসছি এমন সময় একটি শব্দ কানে আসে--

যতসব বেহুদা মানুষ।

মাথাটা আর ঠিক রাখতে পারলাম না। সমিরের মাথাটা হাসপাতালে পোস্টটিং করে দিলাম। তার ফাটা মাথা এখন হয়তো চিন্তা করতে পারবে বেহুদা মানুষ কাকে বলে।


বৃহস্পতিবার। রেজিস্টার বিল্ডিংয়ে গেলাম। উদ্দেশ্য হারিয়ে যাওয়া মার্কশিট উত্তোলন। মুহিত দাকে বললাম,

``ভাই, আজকেই আমার মার্কশিট লাগবে, রোববারে পিএসসিতে আমার সমস্ত কাগজ-পত্র জমা দিতে হবে।"

মুহিত দা মুখস্থ হাসি দিয়ে আমার পক্ষে সম্মতি জানাল।
কিন্তু মুহিত দা আমার মার্কশিটের কাজ সমাপ্ত করেনি। পিএসসিতে আমার কাগজ জমা দেয়া হলো না।  রাগ করলেও আমার শরীরের রক্ত স্বাভাবিকভাবেই প্রবাহিত হয়। একটু গভীরে গিয়ে ঘটনাটা জানার চেষ্টা করলাম।

মুহিত দার বাসা মাই টিভির সামনে। সে প্রত্যেক দিন সকালে সমিরের দোকানে নাস্তা করে। বৃহস্পতিবার সকালেও সে নাস্তা করতে যায়। কিন্তু গিয়ে দেখে দোকান বন্ধ। সে অন্য কোথাও নাস্তা না করে সরাসরি ডিউটিতে চলে আসে। বিজ্ঞান বলে হাংগার মোড থাকলে মানুষ স্বাভাবিক মেজাজে কাজ করতে পারে না, অনেকের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। মুহিত দা যেহেতু হাংগার মোডে ছিল তাই সে আমার কাজটি সমাপ্ত করতে পারে নি, করে নি। আমারও বিসিএস দেয়া হলো না।

এখন আমি ভাবি, আমি কী সমিরের মাথা ফাটিয়ে ছিলাম, না আমার! 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন