একটু পাগল হলে পরে
ভালোবাসা বাড়ে
জ্ঞানীগাছে প্রেমের ফল
হালকা পাতলা ধরে
একটু পাগল হলে পরে
ভালোবাসা বাড়ে
জ্ঞানীগাছে প্রেমের ফল
হালকা পাতলা ধরে
বাংলার কৃষক মরেছে দেখো
বাংলার ঘরে ঘরে
পুত্র আজ পিতার বিপক্ষে
বিলাসী গান ধরে
কৃষকের ঘামে পাচ্ছে সোনা বাড়ছে যাদের দাম
তাদের কাছে ঘৃণ্য জঘন্য কিষাণ কিষাণীর কাম
কৃষক কৃষি ডুবে গেলে
ডুবে যাবে দেশ
হাসিভরা মায়া কন্যার নড়বে না আর কেশ
গল্প লেখার সোনার কলম বাজবে না আর বেশ
সময় তোমার এখনই সময়
বাচাও কৃষক বাচো তুমি সোনার বাংলাদেশ
ভয় থেকে পেয়েছো যা
সবই তোমার ক্ষয়
সাহস করে দেখো বিশ্ব
মনের মাঠে মেলা করে
অবাক বিস্ময়
কাম আছে মানে কাজ আছে। কাম আবার দরকার অর্থেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। হেরা বাড়িতে আমার একটা কাম আছে— মানে দরকার বা প্রয়োজন আছে।
কামদেবতা আবার মদন দেবতা যিনি মানুষের মনে তীর নিক্ষেপ না করলে মানুষ প্রেমে পড়ে না। ইংরেজি Cupid (ল্যাটিন Cupido যার অর্থ কাম) রোমান পুরাণের কামদেবতা। যুদ্ধের দেবতা মার্স এবং প্রেমের দেবী ভিনাসের পুত্র। গ্রিক পুরাণে তাঁর নাম ইরস।
কাম থেকে কামলা। গামলা এবং কামলা আলাদা হলেও গামলার সাথে কামলার রোজ কয়েকবার দেখা হতো। কামলা মানে যে ব্যক্তি মজুরির বিনিময়ে জীবিকা অর্জন করে। দিনমজুর। কোনো কোনো বাড়িতে বার্ষিক কামলাও থাকতো। বার্ষিক কামলাদের প্রধান কাজ ছিলো বা আছে গবাদি পশুর দেখভাল করা। আর গবাদি পশুকে যে পাত্রে জলখাবার পরিবেশ করা হয় তাই গামলা।
—হিলা কিন্তু আসল কামলা,সাবধানে থেকো— এমন কথা ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের মানুষের মুখে শুনতে পাওয়া যায় যেখানে কামলা অর্থ বুদ্ধিমান, চালাক, নির্দিষ্ট কাজে পারদর্শী, বোকাসোকা কিন্তু আসলে চালাক এমন ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করে।
কাম, যৌনতা, ধর্ষণ— যৌন হলো যোনিসম্বন্ধী, কন্যাদানাদি, বৈবাহিক। কাম হলো ইচ্ছা। অর্থাৎ যৌনতা কামের অন্তর্ভুক্ত তবে কয়েকটি টার্ম এন্ড কন্ডিশন যৌনতাকে পালন করতে হয় কামপরিবারে নিজের জায়গা স্পষ্ট করার জন্যে। ধৃষ্ ধাতু থেকে ধর্ষণ শব্দটি আগত। ধৃষ্ অর্থ হিংসা। ধর্ষণের মূলে কাজ করে হিংসা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধর্ষণ উচ্চারিত হয় দরসন হয়ে— দর্শনও উচ্চারিত হয় দরসন হয়ে।
— দরসনের হবর পেফারে বার অইছো! ইতা ডিফা দিয়া রাহন যানা।
পেপারকে পেফার, ব্যাপারকে বেফার, নাপা ট্যাবলেটকে নাফা বুরি বলার সহজাত মানসিকতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের মানুষ রাখে। অর্থাৎ প বর্নকে ফ হিসাবে উচ্চারণ করা।
মজার ব্যাপার হলো 'বার' শব্দটা কখনো সংখ্যা আবার কখনো সময় আবার কখনো প্রকাশি হওয়া বা জাহির হওয়াকে নির্দেশ করে। হাটবার মানে হাটের সময়, বার হওয়া মানে বের হওয়া বা প্রকাশিত হওয়া, বার বার (হে আমার কাছে আজগা বার বার আইছে)— বার বার মানে বারো(১২) বার আবার বারবার মানে অনেক বার।
নরসিংদীর রায়পুরা অঞ্চলে 'র'কে 'ল' উচ্চারণ করে। রায়পুরা উপজেলার সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার যেসব উপজেলা রয়েছে তারও 'র'কে 'ল' উচ্চারণ করে। নরসিংদী জেলায় অনেকে চাকরিকে চারকি বলে, একলাকে বলে এলকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাতে ডিফাতালি খুবই জনপ্রিয় শব্দ, কিশোরগঞ্জেও। তবে কিশোরগঞ্জের খুবই পাশে অবস্থিত নরসিংদীর মনোহরীতে ডিফা উচ্চারিত হয় ডিমলা হয়ে— ডিমলাতালি।
ডিমলা আর নাইমলা কিন্তু এক না। ডিমানো শব্দটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ডিমানো মানে হাল্কা করা— গেসের চুলাডা ডিমানো দরহার।
ধী মানে বুদ্ধি, জ্ঞান, মেধা। ধীমান মানে পন্ডিত, বিবেচক। ধিমা বা ধিমে মানে সামান্য, হালকা ( আগুনের ধিমে আঁচ)। ধিমা> দিমা> ডিমা।
নাইমলা ফসল মানে শেষ দিকের ফসল। নামাতে যাওয়া মানে নিচে যাওয়া, শেষের দিকে যাওয়া। নামা>নাইমলা। ডিমলা শব্দটি নরসিংদীর মনোহরদীর মানুষ বলে থাকে আর নাইমলা শব্দটি আশুগঞ্জ নবীনগরের মানুষ যাপিত জীবনে বেশি ব্যবহার করে থাকে।
নাম্বা কিন্তু আবার নামা শব্দ থেকে আসে নাই। নাম্বা মানে লম্বা। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষ নাম্বারকে নম্বর বলে।
—নাম্বা মাইনসের আটুতে গিয়ান।
— হালি নম্বর ফাইলে অইতো না, গিয়ানি অইতে অইবো।
উয়ারি এবং বটেশ্বর দুটি স্বতন্ত্র গ্রাম। উয়ারি এবং বটেশ্বরের পাশের গ্রামের নাম লাকপুর, রাজারবাগ,কামরাব, আজকিতলা,ভেড়ামারা— এইসব এলাকায় নাইমলাকে বলে নামিলা, লম্বাকে বলে নাম্বা এবং লাম্বা— এই এলাকাতে তাল গাছকে লম্বার প্রতীক হিসাবে এবং তালের আলিকে নেতিবাচক পরিপক্বতার প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বীজ> বিচি> আলি।
— বাল ফাননা তালের আলি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কিশোরগঞ্জ গাজিপুর অঞ্চলে কলাগাছ দুর্বলতার প্রতীক হিসাবে এবং বটগাছ অভিভাবকের প্রতীক হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। আর মান্দার গাছ শক্তির প্রতীক হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে।
— কলাগাছের ডাগগা বেডা অইলে আগগা।
ডাগগা মানে শাখা বা ডাটা। আগগা মানে সামনের দিকে যাওয়া বা এগিয়ে যাওয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ গাজিপুর মুন্সিগঞ্জের মানুষ কাজ ও কামকে একত্রে উচ্চারণ করে কাজকাম এবং কাজকাম শব্দটি ব্যস্ততাকে নির্দেশ করে( বর্ষাকালে কৃষকের তেমন কোনো কাজকাম তাহে না)— যদিও কাজ ও কাম দুটি আলাদা শব্দ। এইসব অঞ্চলের মানুষ আরেকটি শব্দ ব্যবহার করে— লতাডুগা বা আগাডুগা। ডগা> ডুগা। ডগা মানে আগা বা কোনো লতানো অংশের অগ্রভাগ। তবে তারা যখন আগাডুগা একত্রে উচ্চারণ করে তখন বুঝাতে চায় কোনো সবজির অগ্রভাগের অংশ। আর লতা তো লতাই— কচু শাকের শরীরে জন্ম নেয়া মাটিজড়ানো লতানো অংশ।
কবি মরে না
কবি যা কিছু ধরে রাখে তাও মরে না
সে মারা পরে যে কবির সাথে থাকে না
সে মরে যায় যে কবিকে বুঝে না
কবিতার ঘর ভাবে সাজানো শান্তির মিছিল
কবির দরজায় মন পেতে পাথর হয়ে উঠে শ্যামল ছায়া
হয়ে উঠে তুলতুলে নরম মাহফিল
কবিতার কোনো বয়স নেই
সে বৃদ্ধ হয়ে জন্মে শিশু হয়ে খেলা করে ভাষার মাঠে
কবি জানে তার অতীত
কবি স্পষ্ট দেখতে পায় তার ভবিষ্যৎ
কবির কোনো ভয় নেই শঙ্কা নেই
নেই কোনো চিন্তার আঘাত
সময় থেকে কবির জন্ম
কবিতা স্বয়ং জরথুসত্র সময়
কবিকে ভালোবাসা হৃদয়ের উজান অনুভূতির অনুবাদ
নতজানু হৃদয় জানে কবিতা প্রেমের অনিবার্য প্রভাত
কবি মরে না
সুঘ্রাণে সৌন্দর্যে পৃথিবী মাতানো ফুলও ম্লান হয়ে যায়
হলুদ হয়ে যায় স্মার্ট সবুজ
কারণ সে কবিতা জানেনা
কলসিতে চেয়ে দেখি
কলসিরও তল আছে
কলসির তল দেখতে দেখতে
মনে আমার ভাব নাচে।।
তুমি ভাবো
আমি ভাবি
ভাবনারও দেশ আছে
ভাবনার দেশ খুঁজতে খুঁজতে
নিজে হারাই নিজেকে।।
নিকষ কালো অন্ধকারে
শা শা করে নুর আসে
নুরের তল খুঁজতে গিয়ে
ভাবে আমার সুর নাচে।।
আন্দোলন মিটিং মিছিল হচ্ছে না— বহু দেনা জমে গ্যাছে!
বাসুদেব— জনগণ তো ভালোই আছে। মিটিং মিছিল কেন করবে?
বিপ্লবী— জনগণ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকি না বাসুদেব।
বাসুদেব— আচ্ছা, তোমরা তাহলে জনগণের শোকও সহ্য করো না আবার সুখও সহ্য করো না।
বিপ্লবী— আপনি তো সবই জানেন। আমরা চাই জনগণ সুখ ও শোকে যেনো স্থির না হয়, তাদেরকে সুখ ও সাম্যের কথা বলে ফায়দা লুটি, আবার শোকের সময় তাদের পাশে আছি বলে ফায়দা লুটি। আমরা মূলত মানবতার নামে লুটতরাজ চালাই বাসুদেব।
বাসুদেব— তোমরা এই কাজ কেনো করো? মাঠে নাম, ঘাম ঝরাও, পরিশ্রম করো।
বিপ্লবী— কথা বলে টাকা ইনকাম করতে পারি বাসুদেব, টাকাওয়ালারা দারুণ শোষক, শোষক ও শোষিতের মাঝখানে আমরা ছারপোকা বাসুদেব— ঘুমন্ত মগজ থেকে আমরা রক্ত খাই— দুই পক্ষ থেকে রক্ত চুষে খাওয়ার এমন সহজ পথ আর আমাদের জানা নাই বাসুদেব।
বাসুদেব— আমার কাছে কেনো আসলা? আমি কি করতে পারি?
বিপ্লবী— আপনার কাছে না এসে কই যাবো? হুজুরদের কাছে যাবো? হুজুররাও আমাদের মতো কথাজীবি, তারাও আপনার কাছে আসবে। দেন না বাসুদেব, মিটিং মিছিলে আন্দোলনের ব্যবস্থা করে দেন না— কয়েকটা টাকা ইনকাম করি।
বাসুদেব মুচকি হাসলেন এবং একটি ইংরেজি প্রবাদ বললেন— He who saves the people is the king but he who saves the king is anonymous.
বাসুদেব— শীঘ্রই আমি একজন অ্যানোনিমাস পাঠাচ্ছি।
মনে আমি লিখে রাখি প্রেম বয়ানের শাস্ত্র
মনের মধ্যে মন ফুটানোর প্রেমই আসল অস্ত্র
এলা মানে এলাচের সংক্ষিপ্ত রূপ। আবার এলা মানে আলগা, খোলা, ছড়িয়ে দেওয়া,অবশ হওয়া,আকুল করা, শিথিল করা।
নরসিংদী জেলার মানুষ এলা শব্দটা ব্যবহার করে এবলা অর্থে। এবলা মানে এই বেলা অথবা এখন।
আকাশে মেঘ ☁ করেছে, এলা তুমি কই যাবা?
এবলা শব্দটা ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ আরেকটি শব্দ ব্যবহার করে— এ্যারা। এ্যারা মানে বিধবা। এ্যারা মানে আবার অলস অর্থেও ব্যবহার হয়ে থাকে। কারণ লোকাল জনগণ মনে করে স্বামীর ভাত তারাই খেতে পারে যারা পরিশ্রমী ও ধৈর্যশীল।
অমন এ্যারা বিলা জামাইর ভাত হাইবো কেমনে?
লালন ফকির ল্যাংটি এ্যারা
আট বসেনা কোনোমতে।।
অন্যের উপর যারা সম্পূর্ণ নির্ভরশীল তাদেরকেও এ্যারা বলা হয়— যারা অন্যের উপর দিয়ে চলে কিন্তু স্বীকার করে না তারাও এ্যারা বা মানসিক বিকলাঙ্গ। তবে যারা অন্যের নুন খায় কিন্তু স্বীকার করে না তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের মানুষ 'নিমু হারাম' বলে। নিমক মানে লবন। নিমক খাওয়া মানে অপরের নিকট থেকে উপকৃত হওয়া। নিমক-হারাম মানে যে উপকারীর উপকার স্বীকার করে না। নিমক-হালালি— উপকারীর উপকার স্বীকার করেন যিনি।
Hunger waits for no delicacy— নুন আনতে পান্তা ফুরায়— নুন বা লবন বা নিমক মানুষের জীবনে আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া একসময় গ্রামের মানুষ বাজার থেকে কিনে আনতো নুন বা লবন, কেরোসিন, গুড়— এমন কয়েকটা জিনিস ব্যতীত সবকিছু তারা নিজেরাই উৎপাদন করতো অর্থাৎ গ্রাম মানে পরিপূর্ণ জীবন ও জীবন চাহিদার আধার। কিন্তু এখন গ্রাম একেবারে গেরাম হয়ে গেছে! ওজন বাপার একক গেরাম— ব্রাহ্মণবাড়িয়া কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের মানুষ ওজন মাপার একককে গ্রাম বলে না। গ্রামকে আবার দাদি নানিদের মুখে গাওগেরামও বলতে শুনি। একসময় গ্রামে কলেরা নামক বেরাম লেগে থাকতো— প্রচুর লোক মারা যেতো— গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেতো।
এই যে নিমক নিয়ে এতো বড় আলাপ দিলাম 'নিমক' কিন্তু উর্দু শব্দ। প্রচুর উর্দু শব্দ বাংলা ভাষায় জায়গা করে নিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া নরসিংদী কিশোরগঞ্জ ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষ একটি শব্দ শিশুকাল থেকে শুনতে শুনতে বড় হয়— শব্দটি হলো ডর। ভয় পাওয়া অর্থে ডর শব্দটা ব্যবহার হয়ে থাকে। এই ডর শব্দটা উর্দু ভাষা থেকে বাংলায় জায়গা করে নিয়েছে। নাওয়া মানে গোসল করা। নাওয়া শব্দটা এসেছে উর্দু নাহানা থেকে। বাহানা শব্দটি আশুগঞ্জ-সরাইলবাসী ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে— অথচ শব্দটি উর্দু। আমরা অজুহাত শব্দটা ব্যবহার করি কম, আমরা ব্যবহার করি বাহানা। বাহানা বানানো মানে অজুহাত বানানো। অনেক সময় শব্দ এবং আওয়াজকে এক করে ফেলি। বাঙালি যাকে শব্দ বলে জানে, উর্দুভাষীরা তাকে আওয়াজ বলে জানে। আওয়াজ থেকে এসেছে ওয়াজ মানে উচ্চতর স্বরে কোনো কিছু জানানো কোনো বিশেষ মহল বা সম্প্রদায়কে।
বাতাস ঘোরে ঘুরছে ঘুড়ি
বিলাস নেশায় বাড়ছে বাড়ি
শ্রাবণ মাসে মেঘের সারি
বৃষ্টি হয়ে ঝরে
পথ হারানো পথিক মন
চোখের নেশায় নড়ে
নড়তে নড়তে ঘুরতে ঘুরতে
জীবন চলে যায়
দীর্ঘ হচ্ছে পথের রেখা
বাড়ছে কেবল দায়
জানো এই পাতা বিষ ছড়ায়
তারপরও কেনো ছিড়তে গেলে
মরতে যদি এতোই স্বাদ
পাতা কেনো মাটিচাপা দিলে
তারপরও তোমার কথার তাবিজ
ঝুলতে থাকে সুযোগ পেলে
ভাবছো তুমি উঠবে না সকাল
তুমি না জাগলে তবে
ভাবছো তুমি ডুববে না চাঁদ
তুমি না ঘুমাতে গেলে
উঠবে সকাল
ডুববে চাঁদ— এই নিয়ে তুমি ভেবো না আর
বড়শির ফাদ পাতা চারপাশে
ক্ষুধা টেনে নিবে তার কাছে
ক্ষুধার্ত জেলে বসা বড়শির পাছে
দুজনের চাওয়া পাওয়া দুজনের কাছে
একজন মরে গেলে আরেকজন বাচে
এক দরবেশ জঙ্গলে বসে মোরাকাবা করছেন— এমন সময় এক হরিণ দৌড়ে আসে— দরবেশের সামনে দাঁড়িয়ে হাপাচ্ছিল। দরবেশ চোখ মেলে দেখেন হরিনের শরীরে দুটি তীর বসে আছে। তাড়াতাড়ি হরিণটিকে দরবেশ তার আস্তানায় নিয়ে যান।
প্রথমে হরিণের শরীর থেকে তীর খুলেন। তারপর রক্ত বন্ধ করার জন্যে প্রয়োজনীয় ভেষজ ঔষধ প্রয়োগ করেন। রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায় একসময়। রক্ত পড়া বন্ধ হলেও ঘা অনেক গভীরে চলে যায়— শুকাতে বেশ সময় লাগবে।
হরিণ তার স্বজাতি দেখলেই দৌড়ে তাদের কাছে যেতে চায়— দরবেশ তাকে যেতে দেন না— কারণ তার ঘা শুকায়নি পরিপূর্ণভাবে— এইভাবে এক মাস দুই মাস তিন মাস চলে গেলো দরবেশের আস্তানায়— হরিণের চোখ দিয়ে জল টপটপ করে পড়ে! দরবেশ তা দেখেন কিন্তু দেখেন না— কারণ তার শরীরের ক্ষতঘা শুকায়নি।
একদিন দরবেশ হরিণটিকে তার স্বজাতির কাছে ছেড়ে দিলেন— স্বজাতিকে পেয়ে হরিণটি দারুণ খুশি ☺।
— এতোদিন কোথায় ছিলে?
— এক দরবেশ আমাকে বন্দি করে রাখে।
— দরবেশকে তো আমরা চিনি, তিনি তো কাউকে বন্দি করে রাখেন না।
— আরে না, এখনকার দরবেশ আর আগের দরবেশ এক না।
হরিনটির কথায় হরিণ সম্প্রদায় বিস্মিত হলো— এখন দরবেশ দেখলে দৌড়ে পালায়।
দরবেশ আসমানের দিকে তাকিয়ে বলেন— প্রভু, এই পৃথিবীতে হরিনের যা-ও এক বন্ধু ছিলো তাকেও শত্রু বানিয়ে দিলে!
সামনে গাধা
পেছনে গাধা
চলছে গাধা মুলার টানে
ভাবছে গাধা জিতে গেছে আজকাল
জানে না গাধা
জানেনি কখনো
পরাজয়ের পাতায় জয় লিখে সাধু মহাকাল
বহুদিন আগের কথা। তখন জাহাজ টাহাজ টিভি ফ্রিজের যুগ আসেনি। তখন সাধুরা কম্পিউটারের সামনে বসে সেক্স শিক্ষা লাভের সুযোগও পায়নি। ঠিক তখন এক জঙ্গলে বিশাল এক বন্যা আসে। বিশাল মানে বিশাল।
সেই বন্যায় ডুবতে যাওয়া এক বিচ্ছু এক ব্যাঙের কাছে সাহায্য চায়— আমাকে বাচাও আমাকে বাচাও ব্যাঙ বন্ধু— তোমার পীঠে বসিয়ে আমাকে নদীর পাড়ে নিয়ে যাও।
— তুই তো বিচ্ছু— তুই তো যেকোনো সময় আমাকে কামড় দিতে পারিস। তোকে যদি আমি পীঠে বসাই তাহলে সবার আগে তুই-ই আমাকে কামড় দিবি।
— বন্ধু এ কি বলো! তোমাকে কেনো কামড় দিতে যাবো— তুমি মরে গেলে তোমার সাথে আমিও তো ডুবে যাবো।
ব্যাঙ বিচ্ছুর কথা শুনে মুগ্ধ হলো এবং আশ্বস্ত হলো বটে। কিন্তু! কিন্তু যখনই তারা মাঝনদীতে গেলো তখনই বিচ্ছু ব্যাঙকে বিরাট এক বিষাক্ত কামড় দিয়ে বসলো!
মরতে মরতে ব্যাঙ বিচ্ছুকে জিজ্ঞেস করে— তুই এটা কেন করলি!?আমার সাথে তুইও তো ডুবে যাবি।
বিচ্ছু তখন বলে।
বিচ্ছু তখন কী বলে?
হ্যাঁ— বিচ্ছু তখন বলে 'এটাই আমার নেচার।'
যখন আমি তোমার দেশে
দেখছি তোমায় হেজাবে আজমত
ভুলে গেছি জ্ঞান গরিমা
ভুলে গেছি হাল্কা ভারী মসজিদেরই পথ
গ্রামে বসবাসকারী জনসংখ্যা এখনো বেশি— বাংলাদেশে। একসময় বাংলাদেশের মানুষ হাসপাতালে যেতো না বললেই চলে। কারন তারা পর্যাপ্ত পরিমানে কায়িক শ্রমের সাথে যুক্ত ছিলো। কারন তারা সতেজ ভেজালমুক্ত খাবার গ্রহণ করতো।কারন তারা সতেজ নির্মল বাতাস শরীরে মগজে মেখে নিতো। আর এখন কোনো প্রকার ফর্মালিটি ছাড়াই খাবারে ফর্মালিনসহ আরও আরও ক্ষতিকর কেমিক্যাল জায়গা করে নিয়েছে।
হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার আরেকটি বড় কারণ ভুল চিকিৎসা। ভুল চিকিৎসা যতটা না ভুল কারনে হচ্ছে তারচেয়ে বেশি ভুল উপায়ে হচ্ছে।
এরশাদ সরকার— শুনেছি তিনি নাকি পল্লীবন্ধু। এই পল্লীবন্ধু বাংলাদেশের প্রত্যেক উপজেলায় জেলখানা বানাতে চেয়েছিলেন। তিনার ফর্মুলা এখানে শেষ পর্যন্ত টিকে নাই। এখন বাংলাদেশের প্রত্যেক উপজেলা না শুধু— প্রত্যেকটা পরিবার ঔষধের জেলখানায় বন্দী— এই জেলখানার জেলার হলেন ডাক্তার— যার কাছ থেকে রোগী কেবল জামিনে মুক্তি পান— একেবারে মুক্তি পাওয়া মানে মৃত্যু!
একবার ভেবে দেখুন— শিশুর জন্মে হচ্ছে হাসপাতালে— আবার মানুষ মারা যাচ্ছে হাসপাতালে। কিছুদিনের মধ্যেই আর মাইকে বাজবে না উমুক বা তমুক তিনার 'নিজ বাড়িতে' ইন্তেকাল করেছেন। যমদূত হাসপাতালেই আসবেন।
হাসপাতাল এখন মসজিদ মন্দিরের মতো প্রয়োজনীয় জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মসজিদ মন্দিরের জন্যে চ্যারিটি ফান্ড থাকলেও হাসপাতালের জন্যে কোনো প্রকার চ্যারিটি ফান্ড নাই সেই অর্থে।
কেনো?
কারন খুব সোজা— আমরা সওয়াবের হিসাব সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা রাখি না।
চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়েও আমরা একচোখা নীতি নাযিল করেছি। চিকিৎসা মানে এলোপাথাড়ি এ্যালোপ্যাথি। হোমিওপ্যাথি ইউনানি আয়ুর্বেদিক পাহাড়ি চিকিৎসা পদ্ধতিকে অবৈজ্ঞানিক বলে বেশ শান্তি লাগে আমাদের। অথচ সুস্থ আড্ডা যেখানে চিকিৎসার কাজ করে সেখানে কেমন করে হাজার বছর ধরে চলে আসা চিকিৎসা পদ্ধতিকে খারিজ করে দিচ্ছি!?
ইউনিয়ন পরিষদের হাসপাতালে তেলাপোকার ঘরবসতি— ডাক্তার নাই— ঔষধ যাচ্ছে ঠিকই— ঔষধ খাচ্ছে সিন্ডিকেট। ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি হাসপাতালে হোমিওপ্যাথি আয়ুর্বেদিক ডাক্তার নিয়োগ দিলে বেশ ভালো হতো। সব ভালো আবার এই দেশের মানুষের কাছে ভালো না— আলুর বাজার গরম হলেও আমরা বৈশ্বিক যুদ্ধকে দায়ী করি। দায়ী করা আমাদের মজ্জাগত অধিকার— মৌলিক অধিকারও বলা যেতে পারে।
বাংলাদেশের গ্রামে বসবাসকারী জনসংখ্যা এখনো বেশি।তাদের শারীরিক মানসিক স্বাস্থ্য ভালো মানে বাংলাদেশ ভালো আছে এবং ভালো থাকবে। আমরা যখন আমাদেরকে ভালো রাখার চেষ্টা করবো তখন আসমানের বৃষ্টি আমাদের ভূমিতে কাজ করবে নতুবা আসমানের বৃষ্টি এখানে এসে দিল্লিকা লাড্ডু হয়ে যাবে।
রাসুল (সঃ) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন-
“হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি নিজের অবসর সময় তৈরী কর ও ইবাদতে মন দাও, তাহলে আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র ঘুচিয়ে দেব। আর যদি না কর, তবে তোমার হাতকে ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব কখনোই দূর করব না।
[তিরমিযী: ২৬৫৪, ইবন মাজাহ: ৪১০৭]
তাহলে আল্লাও কী হুমকি দেন!? তাহলে আল্লা আর আমগো আক্কাসের মধ্যে পার্থক্য থাকলো কোথায়!? আক্কাসও তো বলে— ' আমার কথা না শুনলে সবকিছু বন্ধ করে দিবো, তোমগো রে পাঠাই দিবো ভুট্টো সাহেবের দলে, বাংলাদেশে তোমগো ঠাই নাই'।
এমপি সাহেবের সামনে নিয়মিত হাজিরা দিয়ে মন নত না করলে এমপি সাহেবও দেখি তদবির টতবির হুনতে চান না— তাহলে আল্লার বৈশিষ্ট্য কী এমপি সাহেবের মধ্যে জন্মগত? আসলে এসব খুব কঠিন ব্যাপার! মাথায় সহজে আইতে চাই না।
হে আল্লাহ আমাকে ধৈর্য দাও— অহনি দাও!
অধিকারে কথা বলি
অভিমানে নয়
সাত পাচে থাকি বেচে
ছয় নয়ে ভয়
বহুদিন আমি মিস্টার আক্কাসের সাথে আড্ডা টাড্ডা দিলাম। মিস্টার আক্কাস টাক্কাসের রসাইয়া রসাইয়া নিন্দা করেন।
আমি বললাম 'ঠিকাছে'।
বহুদিন টাক্কাসের সাথে আড্ডা দিলাম। মিস্টার টাক্কাস আক্কাসের নিন্দা রসাইয়া রসাইয়া করেন।
আমি বললাম 'ঠিকাছে'।
ইদানিং আক্কাসের সাথে আড্ডা দেয়া হয় না এবং টাক্কাসের সাথেও আড্ডা টাড্ডা দেয়া হয় না।
আক্কাস এবং টাক্কাস এখন প্রায় আড্ডা দেন এবং দুজন মিলে আমার নিন্দা টিন্দা করেন।
আমি শুনলাম এবং বললাম ' ঠিকাছে'।
ধানমন্ডির ১৫এ।বসে আছি।বসে আছি একটি সাধারণ কিচেন এবং জুসঘরে। পেপের জুস অর্ডার দিলাম। জুস রান্না হচ্ছে😀। অপেক্ষা করছি— এমন সময় একজন লোক আসে। লোকটি কফি অর্ডার দেন।
আমিনুল ইসলাম। দোকানের মালিক।
আপনি না একটু আগে কফি নিলেন?
নিলান কিন্তু হাত থেকে কফি পড়ে গেলো।
আমার পেপের জুস চলে আসে। লোকটিও কফি পেয়ে যায়। লোকটা টাকা দিতে গেলে আমিনুল ইসলাম টাকা নিলেন না। আমার হাত থেকেও তো কফি পড়ে যেতো পারতো— দুর্ঘটনা ইজ দুর্ঘটনা— তা আপনার বেলা যেমন সত্য আমার বেলাও সত্য।
পেপের জুস চলে আসে।দারুণ মিষ্টি। চিনি মেশানো হয়নি। মিষ্টি পেপের জুস খাচ্ছি আর ভাবছি আমিনুল ইসলামের বিক্রিচারন পেপের জুসের চেয়েও মিষ্টি।
আমার জিব্বা পেপের জুসের মিষ্টিস্বাদ ভুলে যাবে, আমার ব্রেইন আমিনুল ইসলামের মিষ্টিচারন ভুলবে না।
ওগো শীতকালের গাছ— পাতাহীন জীবন তোমার থাকবে না বেশিদিন— আবার বসন্ত আসবে— পাতা আসবে— আসবে পাখি— নড়বে তুমি বাতাসে — চলবে আবার হেলেদুলে।
তোমার প্রয়োজনে তোমার শরীরে পাতা আসে— আবার তোমার প্রয়োজনে তোমার কাছ থেকে পাতা ছুটি নিয়ে থাকে— তোমার অফিসে যে পাতা চাকরি করে তারও ছুটির দরকার পড়ে— দরকার পড়ে গ্রামের বাড়িতে কিছু সরল মানুষের সাথে চোখে চোখ রেখে হাসি ☺ বিনিময়ের।
ভোর পালন হয়ে গেলে
দিনান্তের আলো বৈধ সুখের আশায়
পথ থেকে পথে পাতার আড়ালে
পরম সবুজ গাছ লকলক করে দেয় অক্সিজেন ছাওনি
ভালো ভালো কথা নামে মানুষের আড্ডায়
স্বার্থে লোভে হিংসায় জর্জরিত মোমবাতি আলো
কালো টিপ সাদা কপাল
কালো কপাল লাল টিপ— হালকা আলো সন্ধ্যা রাত
ভেতরের নদীতে আর জল বয়ে চলে না সতত
ডাকে না ডাহুক উঠে না মানুষ চেতনার নরম ভোরে
ধানক্ষেতের ছোট মাছ— স্বাদের ডগায় এখনো বাজে
পানখাওয়া দাদির থুতনিতে চুল মেজাজ ফুরফুরে
নদীর ঘাটে কলসিকন্যা শরীরে তার নরম আকাশ
সুর হয় প্রেম হয় সে যেনো তারা যেনো দিনরাত বাজে
প্রভুর প্রেমে ডুবেছে যে মন
সেই মন ভুলে গেছে ছায়ার শরীর
ভুলে গেছে শরীরের দিন মাস সন
আমি নদীপাড়ের ছেলে। পানসে নদী— মেঘনার সরাসরি সন্তান। মেঘনার মন খারাপ থাকলে যে খুব প্রথমে ফিল করতে পারে সে এই পানসে। মেঘনার আনন্দ যার মনে প্রথম জোয়ার তুলে সে এই পানসে নদী। বর্ষাকালে পানসে নদী আর মেঘনাকে আলাদা করা যায় না— তারা এক এবং একেবারে একাকার।
নদী পাড়ের মানুষ বিসর্জনের অর্জন খুব করে উপভোগ করতে পারে— দেখতে জানে বৃষ্টি কত সুন্দর করে নদীর জল হয়ে যায়।
আমার চোখের জল যখন তোমার মনে গিয়ে নদী হয়ে যাবে তখন তোমাকে আমার শৈশব যৌবনের বেদনা ও প্রার্থনার পানসে নদী— পানসে নদীটা তোমার নামে লিখে দেবো।
অর্জুন— ব্যক্তি পাপ করতে না চাইলেও সে পাপকর্ম করতে বাধ্য হয় কি করে? কে তাকে দিয়ে পাপকর্ম করায়?
কৃষ্ণ— ব্যক্তিকে পাপকর্ম করায় তার নিহিত স্বার্থ, তার মোহ। স্বার্থহীন কর্মে কোনো পাপ থাকেনা। স্বার্থহীন কর্ম সর্বদা সমাজ-কল্যানকারী হয়৷
অর্জুন— তাই?
কৃষ্ণ— হুম। তবে কর্মে যখন স্বার্থমোহ জড়িয়ে যায়, তখন ব্যক্তিকে রাগ-দুঃখ, কষ্ট, হতাশা, জ্বালা, যন্ত্রণা মুহূর্তে মুহুর্তে কুরে-কুরে খায়৷
অর্জুন— তাহলে আপনি রাধার সাথে কোনো অন্যায় করেননি?
কৃষ্ণ— পাল্লাগ্রাম বস্তুর ওজন করে। পাল্লাগ্রামকে ওজন করে কে?
অর্জুন— কে?
কৃষ্ণ— পাল্লাগ্রাম ওজন হয়েই আসে।
অর্জুন— আচ্ছা, বুঝতে পারলাম।
মহান নেতা। এক মহান নেতা দুপুরের খাবার খেতে বসে— ভাত আর দুটি ডিম। আর কোনো তরকারি রান্না হয়নি সেদিন— এমন সময় দুজন মেহমান আসে— তারাও ক্ষুধার্ত। মহান নেতা তাদের জন্যে দুটি বাসনে ভাত পরিবেশন করে। তরকারি তো নাই! মহান নেতা নিজের দুটি ডিম দুজনকে দিয়ে দেন— মহান নেতার থালায় কেবল সাদা ভাত— একজন মেহমান নিজের আস্ত ডিম থেকে অর্ধেকটা নেতাকে দেন, আরেকজন মেহমান দেন অর্ধেকটা ডিম। ফলে নেতার হয়ে যায় একটা ডিম, আর মেহমানরা খাবার শেষ করে অর্ধেকটা ডিম দিয়ে।
~প্রিয় নেতা ভাই, খাওয়ার লোভটা ছেড়ে দেন— খাওয়ানোর চিন্তা করুন— মৃত্যুর দিন পর্যন্ত জনগণ আপনাকে উপোস রাখবে না— জনগণ উপোস থাকলে আপনাকে না খেয়ে মরতে হবে
চামড়া মাংসের পোশাকে
বেড়েছে যত জ্বালা
মনে তাই প্রেমের খরা
চোখে বিলাসি মালা
আমার শরীরে জ্বর
তোমার মনেতে ডর
লোকে যেনো না বলে
তুমি আর আমি পর
এই যে ফুল ❀
বসে আছো পাতার তলে
চোখ দুটি বন্ধ করে
হাসো আবার উঠো নড়ে
কার ভাবনাঝড়ে?
ফেলে আসা দিন?
নাকি আসন্ন সময় অসীম?
ভালো লাগে দেখতে— ভাবো কিংবা কাদো
হাসো কিংবা রাগো
এই যে ফুল ❀
বসে একা পাতার ঘরে
হলুদ জামা গতর জুড়ে
চোখ দুটি বন্ধ করে
তোমার মন কার বাতাসে নড়ে?
মনসময়ে ডুবে যাওয়া আকাশ?
নাকি চোখে লাগা খুব সকালে প্রথম প্রেমের বাতাস?
ভালো লাগে দেখতে— নীরব কিংবা সরব
কিংবা জলভাসা তোমার কলরব
তুমি না থাকলেও এই আমি রাজা
তুমি ছিলে না তবুও মা আমার রেখেছে নাম রেজা
প্রিয়তমা আমার সবুজবীথি নিশিযাপন ওগো
আমাকে ফুলবাবু নয়— ফুটবল ভেবে
হেড মেরে পৌছে দিতে চাও গোলপোস্টে
দর্শকের হাততালি তোমাকে কনফিউজড করে
পরাজিত হও তুমি কৃষ্ণচূড়ার ফুলপাতা ছলে
আলো নয় বাতাস নয় আরও আরও মনোযোগ দরকার
ফুটবল যতটা গোল ততটা গোল নয় আমি
মানসিক সঞ্চয়
বিকালের হলুদ আলো
হঠাৎ সন্ধ্যা
বিকালের হলুদ আলো থেকে হঠাৎ সন্ধ্যা হয়ে গেলে
গোলকধাঁধা মেঘ ☁ বৃষ্টি ছেড়ে বাচে
জোয়ারে যা আসে ভাটায় তা ভেসে যায়
মাঠ ভিজে
ভিজে গেলে মাঠ পরে থাকে মার্জিত ঘাস গোলপোস্ট
ফুলপাতা শাড়ি লিপিবদ্ধ ঠোঁট বৃষ্টিজলে ভিজে গেলো
আমায় নিয়ে ঘরে ফিরো ফুলবাবু নয়— ফুটবল ভেবে
পা থেকে মাথা
মাথা থেকে পা
মাঝে মাঝে বুকে— তাও আশ্রিত মাটির গাছমতো নয়
গোলপোস্টে পৌঁছে দিতে পারলে সর্বার্থ জনম তোমার
সেইজন্য আমি প্রস্তুত— মূলত প্রস্তুত করা হয়েছে
তোমার পা থেকে যে ভাষা আমার দিকে তেড়ে আসে—
তাই আমার নিয়তি
তোমার মাথা থেকে যে কথা আমায় শেখানো হয়—
তাই আমার কর্ম
তোমার বুকে আমার জন্যে যতটুকু গন্ধ ফুটে—
তাই আমার প্রশান্তি
মাঝে মাঝে কেবল রাত নামে
অন্ধকারে চোখ বিছানা পাতলেও হাটা যায় না
হাটতে যে মনালো লাগে
লাগে আরও আরও মনোযোগ ক্যাফে
ফুটবল জানে—
তার দাড়ি চুল কথা চলে তোমার অন্তত ইচ্ছা লাফে
আশা নদীর পাড়ে বসে লিখি জীবনকথা
কৃষক আমি ফসল তুলে জয় করি সব ব্যথা
আষাঢ় শ্রাবণ বর্ষা আমার
জলজোয়ারে থাকি
কষ্ট পেলে মনের কথা গপ্পেসপ্পে আকি
তোমরা যারা কৃষক কেটে বানাও রাতের সুখ
শাষণ তাপে সূর্য গলে ভাঙে আমার বুক
মদের গ্লাসে মিছিল মিলন চলে এসিশোক
শ্রমিক আমি ঘামে কথা মর্মে আমার দুক
তোমার চোখে গাধা আমি মূল্যহীন এক লোক
ষড়ঋতুর কালেও আমি ফসলঋতুর মানুষ
তোমরা যারা উঁচু গলায় বাজাও পুতুল সুর
নও কৃষ্ণ
তোমরা আসল দুর্যোধনের হুশ
বেচে থাকলে বাচাও কৃষক বাচতে আমি চাই
রাজা হবে কর্মে কৃষক ভেদাভেদ তার নাই
বনফুলের একটি গল্প পড়লাম। রাত অনেক। দুইটা বাজে। বৃষ্টি তার আয়োজন করছে পৃথিবীতে নেমে আসার। আজকে সারাদিন দারুণ বৃষ্টি ছিলো। ও! একটি কথা বলা হয়নি— আজকের ইদের দিন। আজকে না ঠিক। ঠিক করে বললে গতকাল ইদের দিন ছিলো। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মানুষ পশুকে রান্নার উপযোগী করে তুলেছে। টিনের চালে বৃষ্টি পড়লে আমার মন আনন্দে নাচতে থাকে। সরকার আমিন ভাই সুন্দর করে বলেন একটি কথা— বৃষ্টি সৃষ্টির মদ!
বনফুলের যে গল্পটা পড়ি তার নাম "হিসাব"— পদ্মাবতী যার ডাকনাম পদি, রামচরণ, গল্পকথক 'হিসাব' গল্পের রক্তপ্রবাহ।
পদ্মাবতী দেখতে বেশ সুন্দর কিন্তু আর্থিকভাবে নির্ভরশীল। গল্পকথক পদিকে বলেছেন 'গরিবের মেয়ে'— ফলে পাড়াপড়শির ফরমাশ শুনাও পদির অনিবার্য কাজ। গল্পটা পদির বিয়ে হওয়া নাহওয়ার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে।
গল্পে রামচরণ বিবাহিত পুরুষ— বেশ জাদরেল লোক— হাজারখানেক অথবা হাজার দেড়েক টাকা পাইনে পায় রাজসরকারের কোষাগার থেকে— চার ছেলে চার মেয়ে তার— আহারে! পরিবার পরিকল্পনা ছিল না তার জীবনে— অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবাও পৃথিবীতে অধিক সন্তান আনার পক্ষে ছিলেন— ফলে বন্যাজলের মতো এই ভূখণ্ডে জনসংখ্যার প্লাবন বয়ে গেলো। আরেকটি কথা— রামচরণ পদ্মাবতীকে বিয়ে করে— রামচরনের সন্তানদের মা মারা যাওয়াতে রাম বাবুর এমন প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন।
আজ কিন্তু ১৫ আষাঢ় ১৪৩০। সকালে সূর্য দেখা যাওয়া মাত্র ১৬ আষাঢ় ১৪৩০ হয়ে যাবে। আষাঢ়-শ্রাবণ আসলে বাংলার কৃষকের আরাম করার মাস। আমি সেই অর্থে কৃষক না— তবে কৃষকের নাতি,কৃষকের সন্তান। ভালো করে বৃষ্টি পড়া শুরু হলে ঘুমটা দারুণ হতো— ইশ! বৃষ্টি আর ঘুম দারুণ ইয়ামি ইয়ামি ব্যাপার।
পদির বিয়ে হবে এমনটা আশা করিনি কেউ— কেউ আশা না করলেও আইসক্রিম গলে— তবে পদ্মাবতী কেনো ট্রেনের সাজানো কামড়ায় বসে অজ্ঞান হয়ে গেলো তা বিজ্ঞান বলতে পারে না। বিজ্ঞান যখন দুই আর দুই চার করবার চেষ্টায় ছিলেন তখন পদ্মাবতী ছোট্ট একটা মাদুলি পরে সেরে গেল হঠাৎ। ঘুমানোর আগে একটি গান মনে এসে গেলো—
ও মোর বানিয়া বন্ধু রে
একটা তাবিজ বানাইয়া দে।
একটা মাদুলি বানাইয়া দে।
ওরে মরিয়া গিয়াছে
বিয়ার সোয়ামী স্বপনে আইসে।।
খরগোশের মতো জোছনা সুন্দর বিড়ালের বাচ্চাটা এক লাফে আমার পাশে এসে বসলো এবং আমার চোখে চোখ রেখে বললো— মেও!
বন্ধুর কুলে মাথা রেখে
বেড়াতে যাবো মেঘের ☁ দেশে
মেঘবালিকা হেসে হেসে
নিয়ে যাবে তার দেশে।
বন্ধু হাসলে আমি ভাসি
বন্ধুর চোখে আমি হাসি ☺
বন্ধু আমি হেসে ভেসে
বেড়াতে যাবো মেঘের ☁ দেশে।
বন্ধু আমার পাখিছানা
উড়াল দেয় সে উড়তে মানা
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে
বেড়াতে যাবো মেঘের ☁ দেশে।
বিকাল মাচায় বসে আছি সন্ধ্যাপথ ধরে
জলকন্যা ডাকছে আমায় আড়িয়ালখার ঘরে
রোদ পড়েছে চুলের ঘ্রাণে জলকন্যা হাসে
প্রিয়া আমার নদী বাংলা জল শরীরের ঘাসে
নদী জানে
সব জানে
জানে সবার কথা
অন্ধকার ডানায় ডানায় নাড়ছে বাতাস পাতা
অন্ধকারের সামনে বসা মন বসানো ফুল ❀
আশা নদীর পাড়ে বসে মাঝি আকছে কূল
ডাকছে ব্যাঙ উড়ছে ফড়িং উদাস করে মন
বৃষ্টিজলে আড়িয়ালখা স্মৃতি বৈঠা বন
জলের আগে তুমি ছিলে
আমিও ছিলাম পাশে
সময় খেয়ে আমরা এখন আড্ডা খেলার তাসে
ভূমি অফিস বাংলাদেশের এক মহান জায়গা। এক শতক জায়গা আছে এমন বান্দারও ভূমি অফিসে জিয়ারত করতে যেতে হয়। আপনারা শুনে অবাক হবেন বাংলাদেশের অধিকাংশ ফৌজদারি মামলা হওয়ার পেছনে প্রধান কুতুব এই ভূমি। ভূমি সংক্রান্ত ঝামেলার প্রধান আতুরনিবাস বাংলার আঞ্চলিক ভূমি অফিস। ভূমি অফিসে যারা কাজ করেন তারা নিজেকে এই আধুনিক যুগেও খুব উঁচু মানের জমিদার মনে করেন— আর খাজনা প্রদানকারীরা খুব নিচু জাতের প্রজা।
নব্বই দশকে জমিজমার জরিপ হয়েছে যা বিএস বা বাংলাদেশ সার্ভে নামে পরিচিত। তখন মেয়েরা বাপের বাড়ি থেকে নিজ হক নেয়াকে লজ্জাকর মনে করতো— কেউ কেউ মনে করতো ইসলাম বাপের বাড়ি থেকে সম্পত্তি নেয়া নিষেধ করে। ভাই ভাই সম্পত্তি বন্টন করে ফেলতো যেখানে বোনদের জিজ্ঞাসা করার ন্যুনতম প্রয়োজন বোধ করতো না। বোনেরা লজ্জায় লাল হয়ে শাড়ির আচল মাথা থেকে কপালে এনে বলতো— ভাইয়েরা বোনদের দেখবাল করলেই হবে— ভাইয়েরা বোনদের এমন উন্নত দুর্বলতার স্বর্নযুগ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মক্কায় হজ্জ করতে গিয়ে দুইপাচটা খেজুর আর জমজম কূপের পানি এনে বোনের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বোনের হক হজ্জ করা টুপির নিচে হজম করে ফেলতো। তাছাড়া জরিপ করতে এসে কীভাবে লোকাল কোর্ট স্থাপন করা হলো বোনরা তার খবর পেতো না বললেই চলে।
ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ ( দরুদ ও সালাম তিনার শানে) বলেছেন তিন শ্রেণির মানুষের দোয়া ইসলামের আল্লাহ সরাসরি কবুল করেন—
— মা-বাবার দোয়া তার সন্তানের জন্যে।
— অত্যাচারিত নিপিড়ীত মানুষের দোয়া এবং অন্যায়ের প্রতিবাদকারীর দোয়া।
— মুসাফিরের দোয়া!
ফোকাস পয়েন্ট বা কথা হলো এমন শক্তিশালী তিন শ্রেনির মানুষের দোয়াও কাজে লাগে না ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে যে অন্যের হক মারে। এখন আমাকে বলুন আপনারা বোনের ভাইয়ের হক মেরে দিয়ে ভাবছেন আপনারা অনেক বড় বিল্ডিং বানাইয়া ফেললেন আর আপনাদের আল্লাহ বলছে আপনারা গর্তে পড়ে গ্যাছন।
কোনো কোনো ব্যক্তি ঘামের টাকা দিয়ে সম্পত্তি কিনতে গিয়ে আরও গর্তে পরে। কারন সম্পত্তি কিনার আগে জানা জরুরি বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তিটি ওয়ারিশসূত্রে, না কেনাসূত্রে। ওয়ারিশসূত্রে হলে অবশ্যই সঠিক ওয়ারিশসনদ আবশ্যকীয়ভাবে যাচাই করা প্রয়োজন। ওয়ারিশ সম্পত্তি কেনাবেচা করার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার অফিসের ওয়ারিশসনদের বিষয়টি অত্যন্ত সুক্ষাতিসুক্ষ উপায়ে নজরে রাখা উচিত— কেবল বিএস নামক টুপির উপর আস্থাশীল হলে হবে না— আমরা জানি শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের চেয়ে আগাছা বেশি।
আবার অনেক সময় বাংলাদেশ সার্ভে করতে আসা সরকারি লোক জামাই আদর পেয়ে সরকারি জায়গায়ও তার আপ্যায়নকারী শ্বশুরের নামে রেকর্ড করে দিয়ে যায়— খাস জমি নিজের নামে রেকর্ড করতে পেরে আপ্যায়নকারী শ্বশুর এমন এক হাসি দেয় যা নামজারির বর্তমানকালেও অব্যাহত আছে।
জমিজমার প্রধান তিনটি প্রমানের নাম দলিল, খতিয়ান, নকশা। আপনি নিশ্চয়ই জানেন দলিল আপনার প্রমাণ, খতিয়ান রেকর্ড সরকারের প্রমাণ আর নকশা আপনার এবং সরকারের প্রমাণ। দলিলে যে পরিমাণ সম্পত্তির অংশ উল্লেখ আছে অনেকসময় বিএসে তারচেয়ে কম উল্লেখ থাকে,অনেক সময় বিএসে যে পরিমাণ সম্পত্তির অংশ উল্লেখ আছে নকশাতে তারচেয়ে কম বা বেশি উল্লেখ থাকে। কারন আগের দিনের সোনার মানুষরা নিজের ইচ্ছেমতো জায়গা দলিল করে নিতে পারতো— বিএস সিএস খতিয়ান প্রদর্শনের প্রয়োজন পরতো না সাবের সামনে— সাবের সামনে বাড়ির তরতাজা লাতামোরগ হাজির করলেই হতো।
ভূমি অফিস বাংলাদেশের এক মহান পবিত্র জায়গা— সেখানে পা ফেলা মাত্র আপনি নিজেকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অপরাধী বলে ফিল করতে থাকবেন—অথবা মনে হবে টেস্ট পরীক্ষায় চার সাবজেক্ট ফেল করা ছাত্র আপনি নিষ্ঠুরতম প্রধান শিক্ষকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন— আর সেই প্রধান শিক্ষক চশমার ফাক দিয়ে চোখ উচু করে আপনাকে নিরীক্ষণ করছে।
বর্তমান সময়ে ভূমি মন্ত্রণালয় এক নতুন নিয়ম চালু করেছে। জমি আর নতুন করে খারিজ করতে হবে না— দলিল করার সাথে সাথে অটোমেটিক নামজারি হ'য়ে যাবে দলিলকারীর নামে। আনডাউটলি গোড স্টেপ। তবে একটা কিন্তু থেকে যায়! এমতাবস্থায় স্যাটেলমেন্ট,ম্যানেজমেন্ট, রেজিস্ট্রার এক রাস্তায় না হাটলে চোরবাটপার সুযোগ নিবে আপন মনে সোনাবন্ধুর গান গায়তে গায়তে।
অনেক সময় দেখা যায় দলিল এবং দখল একজনের নামে— বিএস খতিয়ান আরেকজনের নামে। যেহেতু কেনাবেচা বিএস খতিয়ান দিয়ে হয়ে থাকে, ভায়া দলিল না থাকলেও চলে সেহেতু বিএস দিয়ে দলিল হবে,দলিল হয়ে থাকে এবং সেই দলিল আবার নামজারি আদেশ পেয়ে যাবে দলিলকারী— দলিলকারী খাজনা দিয়ে 'পড়ে না চোখের পলক আনন্দে' আমলিচু খেতে খেতে মধুমাস যাপন করবে। এইদিকে প্রকৃত জমির মালিক ও দখলদারের দেওয়ানিমামলার শোনানির তারিখ গুনতে গুনতে জুতার ছাল থাকে না।
ভূমি মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় দুজন দুপথে দুভাবে— কে কাকে টেনে ফেরাবে— সাব রেজিস্ট্রার অফিস আবার আলাদা অনুশীলননীতি মেইনটেইন করে যেখানে দলিল লেখক (মাথায় টুপি সাদা পাঞ্জাবি পাচ ওয়াক্ত নিয়মিত নামায পড়া লোকটিও) ন্যূনতম একটি গুনাহের কাজও করেনা— ফলত দলিলপাড়ায় প্রতিনিয়ত আল্লাহ ও ভগবানের জিকির ও জপ চলতে থাকে এবং চলতে থাকে! গুনাহগার বান্দারা তাদের সোহবত মোহকা নিয়ে প্রায় আল্লাহর ওলি হয়ে ফিরে আসে— সুবাহানাল্লা!
মহান ভূমি মন্ত্রণালয় বিএস সিএস আরএস নিয়ে যে পরিমাণ সক্রিয় সক্রেটিস হয়ে বসে আছেন সেই পরিমাণ সক্রিয় মনোভাব তিনি দলিল নিয়ে হচ্ছেন না। তাছাড়া জনগণের হাতে দলিল ঠিকঠাক মতো নেই— স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেকের দলিল হারানো গ্যাছে— মানুষ দলিল সংগ্রহ করতো মাটির পাত্রে, টাংকে, বস্তার ভেতরে কাপড়ের সাথে,বালিশের নিচে— ইদুর-বৃষ্টি-তেলাপোকার আক্রমণের ফলে অনেকে দলিল নামক কাগজকে হেফাজতে রাখতে পারেনি। নকল তোলাও মহা মুশকিল! কত সালে দলিল করা হয়েছে নতুন জেনারেশন তা জানে না— ফলে খোঁজ দ্যা সার্চ— আর খোজ দ্যা সার্চ মানে টাকা আর টাকা!
ভূমি মন্ত্রণালয় ইচ্ছে করলে সমগ্র দলিল অন্তর্জালে আপলোড দিতে পারে— বাতাস থেকে মানুষ দলিল সংগ্রহ করে নিবে— আচ্ছা, সমগ্র দলিল বাতাসে আপলোড করতে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হলে আরেকটি কাজ করলে ক্যামন হয়— দলিলের নাম্বার, দলিলের তারিখ, দলিলের শ্রেনি ও প্রকার, মালিকের নাম পর্যায়ক্রমে বাতাসে তো আপলোড করা যেতেই পারে। নাকি— তা করারও পর্যাপ্ত প্রমাণপত্র আপনাদের হাতে নেই!?
মাননীয় ভূমি মন্ত্রণালয় আপনার জানা উচিত— অনেক সহজ সরল মানুষের ভূমি রয়েছে নিজের দখলে কিন্তু নিজের দখলে নানা কারনে দলিল নাই— ফলে মনের কষ্ট মনে লইয়া দিবানিশি কান্দে শুইয়া— বালিশ ভিজে— কেউ জানে না বউও জানে না!
দলিল, দখল, দাখিলা— এই তিন মহানায়কের সামনে বাংলাদেশের মানুষ নতজানু। কারো কাছে দলিল আছে কিন্তু দখল ও দাখিলা নেই— কারো কাছে দখল আছে কিন্তু দলিল ও দাখিলা নেই। আবার কারো কাছে দাখিলা আছে কিন্তু দলিল ও দখল নেই। ফলে স্বাধীনতা অর্জনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ যে ভূমি পেয়েছে তার শৃঙ্খলা আজও অর্জিত হয়নি।
দেশভাগের পর প্রচুর সনাতন ধর্মাবলম্বী লোক দেশত্যাগ করে— থেকে যায় তাদের ভূসম্পত্তি— তাদের ভূসম্পত্তি স্বাভাবিকভাবে আট নাম্বার রেজিস্ট্রার বইতে জায়গা পাওয়ার মধ্যে দিয়ে সরকারি সম্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা— কিছু হয়েছে, অধিকাংশ হয়নি! কারণ কী!?কারণ এই অঞ্চলের সুপারম্যানদের মাথা— এই অঞ্চলের চালাক মানবিক সুপারম্যানরা ফ্রিহিটে গ্যালারির উপর দিয়ে বাউন্ডারি মারে।
দেবোত্তর সম্পত্তি নিজের নামে দলিল করে নিয়েছে এমন সেবায়েত খুজে পাওয়া যাবে কিনা চশমা দিয়ে দেখার সুবার্তা এখন বাতাসে। প্রয়োজন হলে চশমার শক্তি বাড়ানো যেতে পারে। ওহে নিষাদ— দেবতার অভিশাপ কিন্তু তোমার কপালে— জেগে উঠো নতুবা তোমার প্রজন্ম কোনোদিন জাগবে না— পাবে না প্রতিষ্ঠা কোনোদিন।
খাজনা পরিশোধের বিষয়টি অনলাইনে করা হয়েছে— খুবই আনন্দের কথা— কষ্টের কথা হলো প্রায় নব্বই ভাগ ভূমিখাজনা পরিশোধকারী জনগণ অনলাইনে প্রোফাইল তৈরি করা এবং পেমেন্টের মাধ্যমে খাজনা পরিশোধ করার নিয়মকানুনের সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠেনি— ফলে খাজনা পরিশোধের জন্যে তাদেরকে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যেতে হচ্ছে— ইউনিয়ন ভূমি অফিস মহাব্যস্ত! বিশ্বাস করেন অথবা না করেন সাধারণ জনগণ ভূমি অফিসে যেতে ভয় পায়।
খতিয়ানে পুরনো মালিকের নামের জায়গায় নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপন করানোকে নামজারি বা মিউটেশন বলে— বাংলাদেশে ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন অনুযায়ী তার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ আইন ১৯৫০ এর ১৪৩ ধারার পথ ধরে ওয়ারিশ সনদ অনুযায়ী খতিয়ান নাম্বার একই রেখে নামজারি করা হয়। তবে বন্টননামা দলিল থাকলে আলাদা খতিয়ান নির্মাণ করা যায়।
রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ আইন ১৯৫০ এর ১১৭ ধারা মোতাবেক দলিল মূলে মালিকের মধ্যে জমা খারিজের কাজটি সম্পাদিত হয় এবং তাতে নতুন তলব(হোল্ডিং) ও খতিয়ানের সৃষ্টি হয়।
১৯৫০ সালের ১১৬ ধারা অনুযায়ী জমা একত্রিকরনের কাজটি করা হয়— নতুন খতিয়ান সৃষ্টি না করে পুরাতন খতিয়ানে নতুন জমি যুক্ত করে দেয়া হয়— সাধারণ জনগণ এইসব আইনকানুন বুঝে না— তারা বুঝে জমি— জমির মালিক যেনো তার জমিতে সুন্দর উপায়ে নিজের অস্তিত্ব খুজে পায় সেইজন্য সহোযোগিতা করবে ভূমি অফিস। অথচ ভূমি অফিসে ভূমিমালিক যেতে ভয় পায়— সংশয় সন্দেহ ভয় শঙ্কা ভূমিপুত্রদের মনে সদা বাজতে থাকে। কেনো!? সাপ অকালে সাবালক হয়ে গেলে তার মাথা ঠিক থাকে না— ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারী ভুলে যায় তাদের দায়িত্ব— সাপের মতো অকালে সাবালক হয়ে জনগণের মনে বিষবাষ্প ঢালতে থাকে ফায়দা হাসিলের নির্বাহী আশায়— হায়রে অভাগা জাতি হায়রে লাগামহীন লোভের ফাঁদ!
কষ্টের কথা হলো এইখানে মানে এই বাংলাদেশে যা সহজ হওয়ার কথা ছিলো তা হয়েছে কঠিন, যেখানে থাকার কথা ছিলো অনিবার্য সহযোগিতা সেখানে এখন অনিবার্য বানিজ্য— বানিজ্যের তালে যারা গীত রচনা করতে পারে তাদের কথার ও বিলাসিতার মাটিতে চাপা পড়ে সাধারণ মানুষদের নৈতিক দৈনিক জীবন!
০১
আমাদের হরতালের দিন কেউ রাস্তায় নামেনি, ঠিকই একটি পাখি রাস্তায় নেমেছিল এবং সবদিক কম্পিত করে বলেছিল ' হরতাল মানি না'। দুঃখের বিষয় আমরা কেউ পাখির ভাষা বুঝি না।
০২
চকচক করলে সোনা হয় না— স্বর্ন চকচকই করে।
০৩
রাজহাঁস জলের মধ্যে থেকে দুধকে আলাদা করে নিতে জানে— মেয়েরাও ভীড়ের মধ্যে থেকে তার নিজের পুরুষকে আলাদা করে নিতে জানে— তবে রাজহাঁস দুধকে আলাদা করে — মেয়েরা প্রায়ই আলাদা করে জল— ফলে বিয়ের কয়েকদিন পর বালিশ ভেজে যায় জলে।
০৪
বিয়ে এক উদ্ভট জুয়াখেলা— এই খেলায় দুইপাশে সমান উত্তেজনা— উত্তেজনার উত্তম পরাজয়।
০৫
মাটির গুনাগুনের উপর নির্ভর করে ফসলের গুনাগুন—ভালো বীজ ভালো মাটিতে শেকড় ছড়ালে ভালো ফসল— কেবল মাটির উপরে ভালো কাজ করলেই মাটির নিচে ভালো থাকা যায় না— মাটিরও রয়েছে কিছু প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ।
০৬
কারো সাথে থেকে যাই না— আবার কারো কাছ থেকে চলে যাই না— বাসস্থানে অবস্থান করি, অবস্থানে বাসস্থান বানাই না।
০৭
গাছ থেকে পাতাও পরে ফলও পরে— ফল পরলে গাছের নিচে মানুষের ভীড় জমে— পাতা পরলে ভীড় জমে গাছের একান্ত নিজস্ব কিছু শোকের—পাকা জামের শাখায় উঠি রঙিন করি মুখ।
০৮
যে তোমাকে সাময়িক বিপদ থেকে সাময়িকভাবে রক্ষা করে সে ফেরেশতা— যে তোমাকে বিপদ থেকে চিরস্থায়ী উপায়ে রক্ষা করে সে প্রভুর চিরস্থায়ী প্রতিনিধি— যে তোমাকে সাময়িক বিপদে ফেলে সে শয়তানের প্রতিনিধি— যে তোমাকে চিরস্থায়ী বিপদে ফেলে সে মানুষ নামে শয়তান।
০৯
যে সূর্যকে দেবতা মনে করতো এবং যে দেবতাকে দেবতা মনে করে না সে একই ব্যক্তি।
১০
চোখ অন্ধ না হলে অনুভূতি চোখে দেখে না।
১১
সবচেয়ে ভালো হওয়ার পথে ভালোর শত্রু সবচেয়ে ভালো।
১২
কৃষ্ণের ধর্মও দুর্যোধনের কাছে এসে শকুনির ধর্ম হয়ে যায় অথবা পবিত্র ধর্মগ্রন্থও উইপোকার খাবার।
১৩
দ্বিমতের যখন ঐক্যমত থাকে তখন কেউ আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করলে আমি সেই দ্বিমতের সাথে একমত।
১৪
ঘোড়া চলতে জানে— চালক জানে কেমনে চালাতে হয়— চালক যখন ঘোড়ার কথামতো চলতে শুরু করে তখন জনসংসদের নাম হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
১৫
মানুষ তার মহামূল্যবান বস্তু যেমন সবার সামনে উপস্থাপন করতে চায় না— আবার মূল্যহীন বস্তুও লোকচেনার আড়ালে রাখতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে।
১৬
যতটুকু বুঝি না ততটুকুই প্রেম।
১৭
ওয়াইড অর্ফে হুয়াইট বলে ব্যাট না চালালেও রান আসে— বরং হুয়াইট বলে ব্যাট চালানো বিপদ।
১৮
শক্তির একটি মহান ব্যাপার হলো আঘাত করা এবং আঘাত থেকে রক্ষা করা।
১৯
মানুষ যদি আপনাকে নিয়ে আবুল-তাবুল না বলতে পারে তাহলে মানুষ আপনাকে নেতা বানাবে না।
২০
চুমুর নামে যার ছেপ বা থুথু খেয়ে থাকেন তার সাথে ইগো দেখানোর অর্থ হলো আপনি একটা বিখ্যাত মানের বলদ এবং এমন বিখ্যাত বলদ যে তার লেজে ঘন্টা ঝুলিয়ে হাটে।
২১
তারা জানে তারা কথা বললে জেলে যাবে— তাই তারা জেলে না গেলেও জেলকে মাথায় নিয়ে ঘুরে।
২২
বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত বড়দের কথা শুনতে হয়—ছোটোদের বুঝানোর আগে তাদেরকে বুঝতে হয় জনাব।
২৩
প্রয়োজনের দুনিয়ায় প্রিয়জন খুজে বের করা বাস্তবিক শৈল্পিক কাজ— প্রিয়জনের মাঝে ফুলের ❀ ঘ্রানের মতো প্রয়োজন মেশানো থাকে— শুধু প্রয়োজন যেখানে কাকের কালারের মতো ভেসে থাকে সেখানে প্রিয়জন মর্মটি মর্মান্তিকভাবে নিহত।
২৪
Mercy is cruelty enough when enough cruelty is available everywhere.
২৫
মেশিনগানের সাথে থাকলেই গুলি হওয়া যায় না— শিলাবৃষ্টি মাটিতে মরে যায়— আর পাথর মাটিতে জন্মলাভ করে।
২৬
চোখে দেখা সত্য আগুনের মতো পুড়ানোর ক্ষমতায় সিদ্ধ— মনে দেখা সত্য সূর্যের মতো অন্ধকারনাশী।
২৭
ক্ষনস্থায়ী জীবনে টেনশনকে দীর্ঘস্থায়ী করা শার্টের চেয়ে গেঞ্জি বড় করে পরিধান করার মতোই অপরিপক্ক ব্যাপারস্যাপার।
২৮
গোবরপচা দুর্গন্ধ ছড়ায়— এই গোবরই আবার উন্নত মানের সার যখন তা যোগ্য কৃষকের হাতে পড়ে— ব্যবহার করতে জানলে বিষও ঔষধ হয়ে যায়।
২৯
কলসির ভেতর পরিষ্কার না করে আমরা কেউ সেই কলসি থেকে জল পান করি না— অথচ ভেতরে চারিত্রিক আবর্জনা রেখে ঠিকই ওযু করি, পাক হওয়ার নিয়তে গোসল করি— আমরা সবাই প্রজা তোমাদের রাজার রাজত্বে।
৩০
অতিসর্তকতা একধরনের ভয়ের ফসল— ভয় আসে অজ্ঞতা থেকে— অতিসর্তকতা আর অসর্তকতা একই ব্যাপারস্যাপার।
৩১
দিতে দিতে কারো সাথে যদি ভালো থাকতে হয়— নিতে নিতে তারা আপনাকে ভালো থাকতে দিবে না।
৩২
অধিকাংশ লোকের কাছে গাছের চেয়ে আম প্রায়োরিটি পায়— কিছু লোকের কাছে আমের চেয়ে গাছ প্রাধান্য পায়— তারা মনে করে গাছ থাকলে আম থাকবে— আর তারা মনে করে আমের জন্যে গাছ— যারা আমের সাথে বাচে তারা আমলোক— যারা গাছের পক্ষে থাকে তারা পৃথিবীর লোক।
৩৩
অবিশ্বাসীদের কারনে বিশ্বাসীদের অবিশ্বাস করা একধরনের ভয়ঙ্করী পদক্ষেপ— দুই দিনের দুনিয়ায় আবু জাহেল যেমন আছে তেমনি রয়েছে আবুবক্কর।
৩৪
যখনই আপনার প্রশংসা পাওয়ার তীব্র ইচ্ছে হবে তখনই জেনে রাখবেন আপনার খরগোশটা আপনার কচ্ছপকে গিলে ফেলেছে।
৩৫
বাতাস হলেই আকাশের সীমানা জানা যায় না— আকাশ নিজেই জানে না তার নিজের সীমানা।
৩৬
যত গভীরে বয়ে যায় জল তত বেড়ে যায় তার গতি— জল মিশে যাবে সাগরে— মানুষ না জানলেও তার হয় না কোনো ক্ষতি।
৩৭
লোকটি পাড়ে বসে আছে— সামনে সমুদ্র— হঠাৎ জলে ঝাপ দিলো— সাতরাতে সাতরাতে সাতরঙা জীবন বয়ে গেলো— শেষ জীবনে পাড়ে ফিরে আসার তীব্র বাসনা পোষণ করলো— লোকটা ফিরে এলো তীরে— অনেকেই মারা পরে জলে— সমুদ্রের পরপারে তরুছায়া মসীমাখা গ্রামখানি মেঘে☁ ঢাকা দৃশ্যের মেলা।
৩৮
নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রথম সম্পর্কটি শারীরিক(আবেগ)— তারপর অর্থনৈতিক— নারী-পুরুষের মধ্যে শারীরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের মৃত্যু ঘটা মানে নারীর কাছে পুরুষটি মৃত, পুরুষের কাছে নারীটি মৃত— তারপরও কিছু সম্পর্ক থাকে বিবেচনা বিবেকের— আবেগ বাতাস হয়ে নাড়া না দিলে বিবেকের পাতা নড়ে না জনাব।
৩৯
ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায় কেনো জানেন? গরীবের ঘরে জানালা থাকে না— যা থাকে তা মূলত পালানোরই দরজা।
৪০
গরীবের এক চোখ আকাশে অন্যচোখ পাতালে— গরীব তাই ঝুলে থাকে— উড়তে পারে না— পাখিটা বন্দী আছে লোভের খাচায়।
৪১
লোভীরা পেট ভরে খায় না— মন ভরে খায়— তাই দেশ সাগর হয়ে গেলেও তারা জলের গান গায়।
৪২
পচে গেলে নরম হবো— এর আগে নরম হওয়ার সুযোগ নেই।
৪৩
জ্ঞানী বাতাসের উপর দিয়ে বিমান চালায়— জ্ঞানপাপী বিমানের উপর দিয়ে বাতাস চালায়— এক যে ছিলো মজার দেশ সবরকমে ভালো।
৪৪
মিথ্যাবাদী মনে করে তার শ্রোতারা সত্যবাদী— মিথ্যাবাদী নিজেকে বিশ্বাস না করলেও তার শ্রোতাদেরকে বিশ্বাস করতে হয়।
৪৫
চিন্তা যেখানে প্রকট হয় সেখানেই বিজ্ঞান অথবা চিন্তার সন্তানের নাম বিজ্ঞান।
৪৬
মেঘও আকাশের আবর্জনা— একজন বিমানচালক জানে— জানি তবু তুমি মেঘ ☁ নিয়ে মেঘদূত লিখবে।
৪৭
কোনো মানুষ আমার প্রতিপক্ষ হতে পারে না— আমার প্রতিপক্ষ আমার নিজের সময়— সময়কে সাথে নিয়ে ফুটবল খেলি গোলপোস্ট বানাই।
৪৮
পাতা যে নড়ে সেটা পাতার নিয়তি নয়— বাতাসের কর্মের ফল— কার ফল কে যে খায় সুযোগ থাকলেও জানা নাই।
৪৯
আপনার কাছে অপরাধের অনেক সংজ্ঞা থাকতে পারে— আমার কাছে অপরাধ মানে অন্যের হক নষ্ট করা বা মেরে দেয়া।
৫০
বুক চিন চিন করার আগ পর্যন্ত এই দেশের ছেলেমেয়েরা কাছে চাওয়ার কথা বলতে পারে না— বুক ফেটে গেলেও মুখ ফাটে না— এই জাতির যত সমস্যা বুকে— তারপরও জীবনানন্দ দাশ ধানক্ষেতের হাস হওয়ার স্বপ্ন দেখে তার হাসিনির সাথে— হাসও বুকে ভর দিয়ে হাটে।
দয়া তোমার না পেলে
লাভ হবে কী বলো
চাওয়া হলে সতত সচল
ছলে বলে কৌশলে
তুমি প্রেম
প্রেমের মহল
আমার আমিরও কাছে এক করিতকর্মা নুর
পাইনা দেখা আলোরেখা যোজন যোজন দূর
তুমি দয়া দয়াল দয়াময় গিরিশ-নন্দিনী
স্বয়ং দয়ার সাগর তবু
প্রেমহীন কারো সাথে সম্পর্ক রাখে না প্রভু
মরা মাছ বাজপাখি শিকার করে না কভু
প্রেম জানে চাতক পাখি বৃষ্টিধরা জল
ইলেক্ট্রন প্রোটন যতসব খটাখট প্রেমের ফসল
ঘ্রান হয়ে এলে
বানপনে গেলে
রেজা কবি ডুবে আছে
স্মৃতির মায়া জলে
তোমার হাতের দিকে বয়ে যাচ্ছে আমার হাত
আমার হাত থেকে দূরে সরে সরে যাচ্ছে তোমার হাত
আকাশের চোখের বিছানায় তোমার বাড়ি বানাবো বলে
বলি— চলো একসাথে বাচি
হাতে না রেখে হাত বাচা যায়
বললে তুমি
চোখে রেখে চোখ চলো সমুদ্র বানাই
চোখে না রেখে চোখ হাটা যায়
বললে তুমি
পায়ে পায়ে ছন্দে তালে চলো মাখি ঘ্রাণ সভ্যতার
পা থেকে পায়ের দূরত্ব কষলেও দেখা যায়
দূরত্ব কষলেও দেখা যায় প্রাকৃতিক গ্রাম
বললে তুমি
দুজনের কানে দুজনে রোপণ করি চলো
রোপণ করি চলো প্রেমফুল শব্দপাঠ
কথাশব্দ বাহার না জেনেও বানানো যায় বসতির হাট
বললে তুমি
আমরা পাশাপাশি— আমাদের হাত পা চোখ কান প্রতিটি গ্রহের মতো কক্ষপথ বেছে নিয়েছে— আমরা কেবল বেছে নিতে পারিনি আমাদের পথ।
লাল সূর্যের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া সন্ধ্যাপাখি জানে
শরীরভরা মন নিয়ে বাড়ি ফেরার অনিবার্য মানে
তোমার প্রেমের রোগী
চোখ খুললে যেমন দেখি
চোখ বুজলে তেমন
তোমার নরম নুরের হৃদয়
আমাকে করেছি রোপণ
যেমন খুশি তেমন করে
করো আমায় সৃজন
মহাকাব্য কলম তুমি
তুমিই অমর কাল মহাকাল
রেখো আমায় প্রেমে
প্রেম মহিমার দামাল
হাসিহীন জীবন অর্থহীন
অর্থহীন হাসি ☺ পাগলামিপনা
যাপন করো মন
যাপন করো মনের সব পাগল আলপনা
প্রত্যেক পাগলামির নিজস্ব গতিপথ রয়েছে
গতিরও রয়েছে নিজস্ব সুগন্ধি ছায়ামেলা যন্ত্রণা
পাখি হয়ে আকাশে উড়ে উড়ে
দেখলাম
মানুষ একটা ছোট পাখি
বাতাস হয়ে ঘুরে
ভালোবেসো ফুল
ভালোবেসো ফুলের ❀ মতো যারা
কেটে যাবে যতসব হৃদয়ের খরা
চোখেমনে নামবে
চোখেমনে জাগবে নতুন এক ধরা
—একটা কথা বলতে চাই, আপনি মাইন্ড করবেন বাসুদেব?
— আগে বলো, তারপর মাইন্ড করি।
—হা হা হা, বাসুদেব আপনি রসিকতার রাজা।
— আপনাকে অনেকে লম্পট, নারীলিপ্সুক বলে।
— হা হা হা, যারা বলে অতিসত্য কথা বলে, তবে সত্য বলে না।
— কেমন বিষয়টা বাসুদেব, ঠিক মাথার উপর দিয়ে গেলো?
— অর্জুন গাছের ছাল থাকে না, জানো তুমি?
— জ্বি বাসুদেব, হরিণের সুস্বাদু মাংস যেমন হরিণের শত্রু তেমনি অর্জুন গাছের ছালের অধিক উপকারিবোধ তাকে গাছের সাথে থাকতে দেয় না।
— যে নারী আমাকে অধিক ভালোবাসে সেই আমার উপর কলঙ্কের অলঙ্কার লেপন করে যাতে শেষপর্যন্ত আমার শরীরে ছাল থাকে।
— শোনো অর্জুন, তোমাকে একটা কথা বলি।
— বলুন বাসুদেব, আমার মনোযোগ আপনার দাসত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত।
— জোলেখা ইউসুফকে জেলে দিয়েছিল, অনেকে অনেক কারন বলে থাকে, মূল কারন আরেকটা— জোলেখা চেয়েছিল ইউসুফের সৌন্দর্য অন্যকোনো নারী না দেখুক এবং জোলেখা প্রায়ই চুপিচুপি কারাগারে ইউসুফকে দেখতে যেতো।
— ও মাই গড! একি বললেন বাসুদেব!!
— শোনো অর্জুন, নারীর দেয়া আঘাতেও মমতা থাকে, সেই মমতা ধারণ করতে পারলে মায়ার জগতে যাবে তুমি— মায়া থেকে এই মহা জগতের সৃষ্টি— মহাকাল মায়ার মোহনজালে টিকে আছে।