বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩

বনফুলের গল্পের হিসাবে

 বনফুলের একটি গল্প পড়লাম। রাত অনেক। দুইটা বাজে। বৃষ্টি তার আয়োজন করছে পৃথিবীতে নেমে আসার। আজকে সারাদিন দারুণ বৃষ্টি ছিলো। ও! একটি কথা বলা হয়নি— আজকের ইদের দিন। আজকে না ঠিক। ঠিক করে বললে গতকাল ইদের দিন ছিলো। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মানুষ পশুকে রান্নার উপযোগী করে তুলেছে।  টিনের চালে বৃষ্টি পড়লে আমার মন আনন্দে নাচতে থাকে। সরকার আমিন ভাই সুন্দর করে বলেন একটি কথা— বৃষ্টি সৃষ্টির মদ!


বনফুলের যে গল্পটা পড়ি তার নাম "হিসাব"— পদ্মাবতী যার ডাকনাম পদি, রামচরণ, গল্পকথক 'হিসাব' গল্পের রক্তপ্রবাহ।


পদ্মাবতী দেখতে বেশ সুন্দর কিন্তু আর্থিকভাবে নির্ভরশীল। গল্পকথক পদিকে বলেছেন 'গরিবের মেয়ে'— ফলে পাড়াপড়শির ফরমাশ শুনাও পদির অনিবার্য কাজ। গল্পটা পদির বিয়ে হওয়া নাহওয়ার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে।


গল্পে রামচরণ বিবাহিত পুরুষ— বেশ জাদরেল লোক— হাজারখানেক অথবা হাজার দেড়েক টাকা পাইনে পায় রাজসরকারের কোষাগার থেকে— চার ছেলে চার মেয়ে তার— আহারে! পরিবার পরিকল্পনা ছিল না তার জীবনে— অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবাও পৃথিবীতে অধিক সন্তান আনার পক্ষে ছিলেন— ফলে বন্যাজলের মতো এই ভূখণ্ডে জনসংখ্যার প্লাবন বয়ে গেলো। আরেকটি কথা— রামচরণ পদ্মাবতীকে বিয়ে করে— রামচরনের সন্তানদের মা মারা যাওয়াতে রাম বাবুর এমন প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন। 


আজ কিন্তু ১৫ আষাঢ় ১৪৩০। সকালে সূর্য দেখা যাওয়া মাত্র ১৬ আষাঢ় ১৪৩০ হয়ে যাবে। আষাঢ়-শ্রাবণ আসলে বাংলার কৃষকের আরাম করার মাস। আমি সেই অর্থে কৃষক না— তবে কৃষকের নাতি,কৃষকের সন্তান। ভালো করে বৃষ্টি পড়া শুরু হলে ঘুমটা দারুণ হতো— ইশ! বৃষ্টি আর ঘুম দারুণ ইয়ামি ইয়ামি ব্যাপার।


পদির বিয়ে হবে এমনটা আশা করিনি কেউ— কেউ আশা না করলেও আইসক্রিম গলে— তবে পদ্মাবতী কেনো ট্রেনের সাজানো কামড়ায় বসে অজ্ঞান হয়ে গেলো তা বিজ্ঞান বলতে পারে না। বিজ্ঞান যখন দুই আর দুই চার করবার চেষ্টায় ছিলেন তখন পদ্মাবতী ছোট্ট একটা মাদুলি পরে সেরে গেল হঠাৎ। ঘুমানোর আগে একটি গান মনে এসে গেলো—


ও মোর বানিয়া বন্ধু রে

একটা তাবিজ বানাইয়া দে।

একটা মাদুলি বানাইয়া দে।

ওরে মরিয়া গিয়াছে

বিয়ার সোয়ামী স্বপনে আইসে।।


খরগোশের মতো জোছনা সুন্দর বিড়ালের বাচ্চাটা এক লাফে আমার পাশে এসে বসলো এবং আমার চোখে চোখ রেখে বললো— মেও!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন