শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩

এক দরবেশ এবং হরিণের নিয়তি

 এক দরবেশ জঙ্গলে বসে মোরাকাবা করছেন— এমন সময় এক হরিণ দৌড়ে আসে— দরবেশের সামনে দাঁড়িয়ে হাপাচ্ছিল। দরবেশ চোখ মেলে দেখেন হরিনের শরীরে দুটি তীর বসে আছে। তাড়াতাড়ি হরিণটিকে দরবেশ তার আস্তানায় নিয়ে যান।


প্রথমে হরিণের শরীর থেকে তীর খুলেন। তারপর রক্ত বন্ধ করার জন্যে প্রয়োজনীয় ভেষজ ঔষধ প্রয়োগ  করেন। রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায় একসময়। রক্ত পড়া বন্ধ হলেও ঘা অনেক গভীরে চলে যায়— শুকাতে বেশ সময় লাগবে। 


হরিণ তার স্বজাতি দেখলেই দৌড়ে তাদের কাছে যেতে চায়— দরবেশ তাকে যেতে দেন না— কারণ তার ঘা শুকায়নি পরিপূর্ণভাবে— এইভাবে এক মাস দুই মাস তিন মাস চলে গেলো দরবেশের আস্তানায়— হরিণের চোখ দিয়ে জল টপটপ করে পড়ে! দরবেশ তা দেখেন কিন্তু দেখেন না— কারণ তার শরীরের ক্ষতঘা শুকায়নি। 


একদিন দরবেশ হরিণটিকে তার স্বজাতির কাছে ছেড়ে দিলেন— স্বজাতিকে পেয়ে হরিণটি দারুণ খুশি ☺। 


— এতোদিন কোথায় ছিলে?

— এক দরবেশ আমাকে বন্দি করে রাখে।

— দরবেশকে তো আমরা চিনি, তিনি তো কাউকে বন্দি করে রাখেন না।

— আরে না, এখনকার দরবেশ আর আগের দরবেশ এক না।


হরিনটির কথায় হরিণ সম্প্রদায় বিস্মিত হলো— এখন দরবেশ দেখলে দৌড়ে পালায়। 


দরবেশ আসমানের দিকে তাকিয়ে বলেন— প্রভু, এই পৃথিবীতে  হরিনের  যা-ও এক বন্ধু ছিলো তাকেও শত্রু বানিয়ে দিলে!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন