রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬

বক্ররেখা

নদীর তীরে কোনো মানুষ ছিল না। আমার হাতেও কোনো টর্চ নেই। একটু আগে যখন বৃষ্টি নামে তখন পরিত্যক্ত বাড়ির বারান্দায় অবস্থান করি। চারদিকে নীরবতার মিছিল। মাঝে মাঝে আকাশের ডাক। বাতাসও কেমন ভয় জাগানিয়া শব্দ করে। বৃষ্টি পড়ছে তো পড়ছে। একলা আমি। নবী রাসুলের নাম স্মরন করছি। আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছি। প্রকৃতি ধীরে ধীরে আমার কাছে চলে আসতেছে, আমার সারা শরীরে অদৃশ্য কম্পন শুরু হয়ে গ্যাছে।

লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন " বার বার আবৃত্তি করছি কিন্তু তাতে আমার জিব্বার পানি শুন্যতা কেবল দেখা দিচ্ছে। গাছের মরা ডালকেও মনে হচ্ছে বিষধর আক্রমনাত্মক সাপ। গড়িয়ে যাওয়া রাস্তার জল যা নদীর অভিমুখে যেন মানুষের তাজা রক্ত।

ঝড় থেমে গেলো। ঝড় থামবে বলে মনে হচ্ছিল না। ঝড়ও থেমে গেলো। চমৎকার অন্ধকার নেমে আসছে রাস্তায়। সাধারনত বড় ঝড়ের পড় রাতকে হালকা আলোময় দেখায়। আজকে তা মনে হচ্ছে না।

আশেপাশে কোনো মানুষের ঘ্রান নেই। যা হবার হবে তা হবে,  অন্ধকার কেটেই বাড়ি যাবো!

পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বের হলাম। ডান দিকে চোখ পড়তেই আলোর ঝিলিক। একজন লোক। হাতে তার টর্চ। লোকটির পায়ের দিকে তাকালাম। পা স্বাভাবিক। শুধু পায়ে কোনো বৃষ্টির ছাপ নেই, কোনো জ্বিনভূতের চিহ্নও নেই।

লোকটি আমাকে দেখে মৃদু হাসি দিলো। মৃদু হাসির ফলাফল গোয়েন্দা উপন্যাসের মতো রহস্যময়। আমিও চলছি, লোকটিও। কারো মুখে কোনো কথা নেই।

বাড়িতে এসে গেলাম, লোকটিকে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য পাশ ফিরে তাকালাম, দেখি লোকটি নেই, একটি জোনাক পোকা আমার এপাশ থেকে ওপাশ, ওপাশ থেকে এপাশ করছে 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন