ঘুম থেকে ওঠে দেখলাম সোহাগ প্রতি প্লেট পেঁপের মূল্য নির্ধারণ করেছে দশ টাকা।
দুই দিন আগে প্রতি প্লেট পেঁপের মূল্য এক ধাপে পাঁচ টাকা বেড়ে যায়। মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি আমার জন্য পীড়াদায়ক। কারণ পাঁচ টাকা উপার্জন করতে কী পরিমাণ ঘাম ঝরে তা একজন কৃষকের ছেলের না জানার কথা নয়।
আলুর দাম যদি তিন টাকা বেড়ে যায় তাহলে একজন কৃষক মরিচ কিনতে পারেন না। ধানের দাম যদি মণ প্রতি পাঁচ টাকা কমে যায় তাহলে একজন কৃষকের নতুন একটি লুঙ্গি কেনা হয় না। তাই দুই টাকা, তিন টাকা, পাঁচ টাকার মূল্যজ্ঞান অর্থনীতিবিদদের না থাকলেও আমার মতো কৃষকের ছেলের রাখতে হয়।
সোহাগের প্রতি অনেক আনন্দ হলো। হঠাৎ পেঁপের মূল্য কমিয়ে দেয়ার কারন জানতে পারেনি। শুধু মনে পড়ে একদিন সকালে দুই প্লেট পেঁপে ত্রিশ টাকা দিয়ে খেয়ে আস্তে করে বলেছিলাম প্লেট প্রতি পেঁপেমূল্য দশ টাকাই তো ভালো ছিল।
আস্তে করে কথা বলার মূল্য আমি অনেক পেয়েছি। আজও পেলাম। তাই আস্তে করে কথা বলার প্রতি আস্থা বেড়ে গেলো।
মানুষ এতো জোরে জোরে কথা বলে কেন? তিনি যে শক্তিশালী তা কি স্পষ্ট করতে চান? জোরে কথা বলার মধ্যে ব্যবসায়িক সফলতা হয়তো আছে তবে কূটনৈতিক বিফলতার কথাও কিন্তু অস্বীকার করা যায় না।
পেঁপে খেয়ে এক রিক্সাচালক মামাকে ডাক দিলাম। বিনম্র ভাষায় জানতে চাইলাম কাঁটাবন যাবেন কিনা। মামা কবুল বললেন। আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম আপনার বাড়ি কোথায় ...
চাদঁপুর
আমার বাড়ি কোথায় জানতে চান তিনি...
ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়া ...
ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়া তো অনেক অভিজাত এলাকা। আমাগো এলাকার মানুষ আফনাগো এলাকায় কাম করতে অ্যাইয়ে ...
আল মাহমুদের কথা মনে পড়ে। আল মাহমুদ তাঁর ``যেভাবে বেড়ে উঠি" গ্রন্থে ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়ার মানুষকে অনেক অভিজাত, উন্নত মানসিকতার, সংস্কৃতিবান মানুষ হিসেবে তথ্য দিয়েছেন।
রিক্সাচালক মামার সাথে বেশি কথা হয়নি। শুধু কুশল জিজ্ঞাসা এই যা। মুহিব ভাইয়ের দোকানের সামনে তিনি রিক্সা থামালেন। আমি টাকা দেয়ার জন্য মানিব্যাগ হাতে নিলাম।মামা টাকা নিতে চান না। অনেক পীড়াপীড়ি করলাম। মামা টাকা নিবে না তো নিবেই না।
ও মা, এ কী! কার্যকারণ কিচ্ছু মেলাতে পারছি না।
কতজনকে দেখি ভাড়া কম দেয়ার জন্য জোরে জোরে চিল্লাচিল্লি করতে, রিক্সাচালকও আরও জোরে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। তাহলে ইনি কে? যিনি টাকা নিতে চান না।
আমি তো আস্তে আস্তে মামার সাথে কিছুক্ষণ কুশল-কথা বলেছি মাত্র।
যাক, তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিলাম। শুধু বললাম টাকা নিলে ভালো লাগতো। তিনি বললেন, না নিয়ে আমার ভালো লেগেছে ....
মুহিব ভাইয়ের দোকানে ঢুকলাম।
ভাই, একটি লেখা প্রিন্ট দিতে হবে।
প্রিন্টার তো কাজ করে না। সকাল থেকে অনেক চেষ্টা করেছি।
আস্তে করে বললাম, দেন না দেখি।
মুহিব ভাই প্রিন্ট দিলেন।
ঝকঝকে প্রিন্ট, ফকফকা লেখা।
মুহিব ভাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন। আমার অবাক হওয়ার মতো কিছু ছিল না। কারণ আমি জানি আস্তে কথা বলার শক্তি কত!
দুই দিন আগে প্রতি প্লেট পেঁপের মূল্য এক ধাপে পাঁচ টাকা বেড়ে যায়। মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি আমার জন্য পীড়াদায়ক। কারণ পাঁচ টাকা উপার্জন করতে কী পরিমাণ ঘাম ঝরে তা একজন কৃষকের ছেলের না জানার কথা নয়।
আলুর দাম যদি তিন টাকা বেড়ে যায় তাহলে একজন কৃষক মরিচ কিনতে পারেন না। ধানের দাম যদি মণ প্রতি পাঁচ টাকা কমে যায় তাহলে একজন কৃষকের নতুন একটি লুঙ্গি কেনা হয় না। তাই দুই টাকা, তিন টাকা, পাঁচ টাকার মূল্যজ্ঞান অর্থনীতিবিদদের না থাকলেও আমার মতো কৃষকের ছেলের রাখতে হয়।
সোহাগের প্রতি অনেক আনন্দ হলো। হঠাৎ পেঁপের মূল্য কমিয়ে দেয়ার কারন জানতে পারেনি। শুধু মনে পড়ে একদিন সকালে দুই প্লেট পেঁপে ত্রিশ টাকা দিয়ে খেয়ে আস্তে করে বলেছিলাম প্লেট প্রতি পেঁপেমূল্য দশ টাকাই তো ভালো ছিল।
আস্তে করে কথা বলার মূল্য আমি অনেক পেয়েছি। আজও পেলাম। তাই আস্তে করে কথা বলার প্রতি আস্থা বেড়ে গেলো।
মানুষ এতো জোরে জোরে কথা বলে কেন? তিনি যে শক্তিশালী তা কি স্পষ্ট করতে চান? জোরে কথা বলার মধ্যে ব্যবসায়িক সফলতা হয়তো আছে তবে কূটনৈতিক বিফলতার কথাও কিন্তু অস্বীকার করা যায় না।
পেঁপে খেয়ে এক রিক্সাচালক মামাকে ডাক দিলাম। বিনম্র ভাষায় জানতে চাইলাম কাঁটাবন যাবেন কিনা। মামা কবুল বললেন। আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম আপনার বাড়ি কোথায় ...
চাদঁপুর
আমার বাড়ি কোথায় জানতে চান তিনি...
ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়া ...
ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়া তো অনেক অভিজাত এলাকা। আমাগো এলাকার মানুষ আফনাগো এলাকায় কাম করতে অ্যাইয়ে ...
আল মাহমুদের কথা মনে পড়ে। আল মাহমুদ তাঁর ``যেভাবে বেড়ে উঠি" গ্রন্থে ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়ার মানুষকে অনেক অভিজাত, উন্নত মানসিকতার, সংস্কৃতিবান মানুষ হিসেবে তথ্য দিয়েছেন।
রিক্সাচালক মামার সাথে বেশি কথা হয়নি। শুধু কুশল জিজ্ঞাসা এই যা। মুহিব ভাইয়ের দোকানের সামনে তিনি রিক্সা থামালেন। আমি টাকা দেয়ার জন্য মানিব্যাগ হাতে নিলাম।মামা টাকা নিতে চান না। অনেক পীড়াপীড়ি করলাম। মামা টাকা নিবে না তো নিবেই না।
ও মা, এ কী! কার্যকারণ কিচ্ছু মেলাতে পারছি না।
কতজনকে দেখি ভাড়া কম দেয়ার জন্য জোরে জোরে চিল্লাচিল্লি করতে, রিক্সাচালকও আরও জোরে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। তাহলে ইনি কে? যিনি টাকা নিতে চান না।
আমি তো আস্তে আস্তে মামার সাথে কিছুক্ষণ কুশল-কথা বলেছি মাত্র।
যাক, তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিলাম। শুধু বললাম টাকা নিলে ভালো লাগতো। তিনি বললেন, না নিয়ে আমার ভালো লেগেছে ....
মুহিব ভাইয়ের দোকানে ঢুকলাম।
ভাই, একটি লেখা প্রিন্ট দিতে হবে।
প্রিন্টার তো কাজ করে না। সকাল থেকে অনেক চেষ্টা করেছি।
আস্তে করে বললাম, দেন না দেখি।
মুহিব ভাই প্রিন্ট দিলেন।
ঝকঝকে প্রিন্ট, ফকফকা লেখা।
মুহিব ভাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন। আমার অবাক হওয়ার মতো কিছু ছিল না। কারণ আমি জানি আস্তে কথা বলার শক্তি কত!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন