শীতের সকাল। স্নানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমিন ভাইয়ের ফোন। পরীক্ষা আছে কিনা জানতে চাইলেন। জানালাম পরীক্ষা নেই। বললেন বাংলামোটর অবস্থান করতে। জাস্ট এগারটায়।
কারন জিজ্ঞেস করিনি।
প্রশ্ন আসতে পারে কেন কারন জিজ্ঞেস করিনি।
বন্ধু কখনো বন্ধুর কাছে ব্যাখ্যা চায়না। বন্ধু যদি ব্যাখ্যা দেয় তবে তা বোনাস।
ব্যাখ্যাকে আমি ছোট্ট করে দেখছি না। ব্যাখ্যাবিদ যারা আছেন বিষয়টি তারা দেখবেন। এখনো আমি বন্ধুত্বের জায়গাটিকে উপলব্ধির আতুঁড়ঘর মনে করি, যেখানে কেরাবান-কাতিবানের প্রবেশাধিকার নেই।
হল থেকে বের হলাম। প্রকৃতিতে পা রাখি। প্রকৃতি অপূর্ব একা। কুয়াশা আর রোদকে ব্লেন্ডারিং করলে যে দৃশ্যটি দেখা দিবে আজকে কিন্তু প্রকৃতির এমন অবস্থা।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সামনে আমরা অবস্থান করছি। আমরা বলতে আমি, আমিন ভাই, জীবন চৌধুরী। গাড়ি নিয়ে আসতেছেন মিন্টু ভাই। জাপানি কোম্পানির গাড়ি।
চার জনের কাফেলা। অবশ্যই অযান্ত্রিক গল্পে জগদ্দলও একটি চরিত্র। সেই হিসেবে পাঁচ জনের কাফেলা। উদ্দেশ্য ব্রাক্ষণবাড়িয়া। জাপানি মাইক্রো চলছে।
হানিফ ফ্লাইওভার অনেক বার চোখে দেখেছি কিন্তু তাকে ব্যবহার করা হয়নি। এইবার প্রথম তাকে ব্যবহার করছি। চমৎকার রাস্তা। আসমানের উপর দিয়া ভাসছি।
আমিন ভাই, ভূমিকম্প ঢাকা শহরকে শেষ করে দিতে চায়...
না, আগামী কয়েক দশক ঢাকা শহর ভূমিকম্পনের ধবংসলীলার হাত থেকে নিরাপদ....
কেন?
ইদানিং কয়েকটি ভূমিকম্পনের ফলে মাটি জুতসইভাবে নিজেদের ভিত শক্ত করে নিয়েছে...
গাড়ি চলছে। মিন্টু ভাই চমৎকার ড্রাইভ করে। সিনেমা মুভিতে দেখতাম এমন চমৎকার গাড়ি ড্রাইভ।
কাচপুর ব্রীজে আমাদের গাড়ি। ব্রীজের নিচে শীতলক্ষ্যা। পৃথিবীতে অনেক দূর্গন্ধ। দুর্গন্ধরা এক জায়গায় মিলিত হতে চায়। মিলিত হয়েছেও। অবশ্যই এই পবিত্র জায়গাটি আমাদের কাচপুর ব্রীজ। তাই কাচপুর ব্রীজের এই দুর্গন্ধের ইস্তেমায় আমি পারত মোনাজাত তুলতে আসি না।
কিছুক্ষণের মধ্যে আমার ভেতর যা আছে তা বের হতে চেষ্টা করছে। তীব্র চেষ্টা। প্রথমে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করি। কিন্তু ব্যর্থ। বের হয়ে যাক। বের হয়ে গেলে বড় ধরনের একটি শান্তি পাবো। বড় অশান্তির পর বড় প্রশান্তি।
গাড়ি চলছে, আমার বমিটিং চলছে। স্রাববমি। জীবন চোধুরী আমার পাশে বসা। আমার ভেতর কি ঘটছে সে বুঝতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। ভেতরে যা আছে সব বের হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ। এখন চিনচিন মাথা ব্যথা। বমির পর এই ব্যথাটা শুরু হয়ে থাকে।
নয়াপুর গ্রামে ঢুকলাম। গাড়ি গ্রামের রাস্তায়। চা-টা খেলাম, আমিন ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে কিছু ছবি তুললাম। তারপর আমরা আমিন ভাইয়ের প্রশান্তির বাড়িতে যাবো, তারপর হয় ব্রাক্ষণবাড়িয়া, হয় নরসিংদী নয় মাওয়া ফেরীঘাটে।
গাড়িতে বসি। গ্রামের রাস্তায় গাড়ি চলছে। আমার অস্বস্তি চরম আকার ধারণ করেছে। জাপানি গাড়ির সাথে এখনো সহ্যতা গড়ে ওঠেনি, হয়তো আমার দেহ বাহনকলোনী মানতে পারছে না। আবার সমস্যার কথা বলতেও চাচ্ছি না। কারন আমি চাই না আমার প্রত্যক্ষ ভূমিকায় ট্যুরটা নষ্ট হয়ে যাক।
গাড়ি চলছে। যখনই গাড়ি গ্রামের রাস্তা থেকে প্রধান সড়কে উঠবে বলে বাঁক নিচ্ছে তখন ইঞ্জিন স্টপ!
কী হলো? কী হলো?
আমরা জানি না।
তাহলে কে জানে?
একজন মেকানিক্যাল ম্যান জানে।
আমিন ভাই আর মিন্টু ভাই চলে গেলেন মেকানিক্যাল ম্যানের খোঁজে। আমি আর জীবন দা বসে আছি গাড়ির পাহারায়। গল্প করছি। তিনি মিউজিকের মানুষ আর আমি মিউজিক পাগল। তিনি শান্তিনিকেতনে কিছুদিন পড়াশোনার কাজে ব্যয় করেছেন।
আচ্ছা, জীবন দা, কলকাতার মোস্ট অব দি টি স্টলে মাটির পাত্রে চা দেয়া হয় এবং চা-কাপ দ্বিতীয় বার ব্যবহার করা হয় না। কারন তা এঁটো....
হুম, তাইতো দেখলাম....
এঁটো জিনিসের প্রতি তাদের গভীর মন্দাভাব বুঝলাম। কিন্তু দাদা, এঁটো মানুষের প্রতি তাদের কোনো মন্দাভাব নেই কেন .... একটি ঠোঁট সহজেই আরেকটি এঁটো ঠোঁটে কিস বসাচ্ছে, জব্বর কিস ....
জীবন চোধুরী হাসলেন। আমাদের হাসির মাঝামাঝি সময় মেকানিক্যাল ম্যানসহ তাঁরা হাজির। গভীর সমস্যা। গাড়ি এক্টিভেট হতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যাবে। সমস্যা নেই" আমিন ভাইয়ের স্বভাবসুলভ উক্তি। সমস্যা তো আমার থাকার কথা না, কারন আমি সমস্যা থেকে বেঁচে গেছি।
আমিন ভাই শুরু করলেন গল্প। তাঁর গল্প বলার ভঙ্গিতে যথেষ্ট ওয়েব আছে, আছে অভিজ্ঞতা, আছে প্রাণ। আমরা গল্পের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে চলে আসলাম।
গাড়ি মেরামত শেষ হলো। তখন রাত আটটা। ভ্রমণপরিকল্পনা ক্যান্সেল। এখন জাপানি গাড়ি ঢাকার অভিমুখে। আমার সরাসরি সামনে মনিরুজ্জামান মিন্টু, পাশে জীবন চোধুরী, মনিরুজ্জামান মিন্টুর পাশে সরকার আমিন, আমার কানে হেডফোন। গান শুনছি। দুরবীন শার গান -- নামাজ আমার হইলো না আদায় রে আল্লা, নামাজ আমার হইলো না আদায় ....
কারন জিজ্ঞেস করিনি।
প্রশ্ন আসতে পারে কেন কারন জিজ্ঞেস করিনি।
বন্ধু কখনো বন্ধুর কাছে ব্যাখ্যা চায়না। বন্ধু যদি ব্যাখ্যা দেয় তবে তা বোনাস।
ব্যাখ্যাকে আমি ছোট্ট করে দেখছি না। ব্যাখ্যাবিদ যারা আছেন বিষয়টি তারা দেখবেন। এখনো আমি বন্ধুত্বের জায়গাটিকে উপলব্ধির আতুঁড়ঘর মনে করি, যেখানে কেরাবান-কাতিবানের প্রবেশাধিকার নেই।
হল থেকে বের হলাম। প্রকৃতিতে পা রাখি। প্রকৃতি অপূর্ব একা। কুয়াশা আর রোদকে ব্লেন্ডারিং করলে যে দৃশ্যটি দেখা দিবে আজকে কিন্তু প্রকৃতির এমন অবস্থা।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সামনে আমরা অবস্থান করছি। আমরা বলতে আমি, আমিন ভাই, জীবন চৌধুরী। গাড়ি নিয়ে আসতেছেন মিন্টু ভাই। জাপানি কোম্পানির গাড়ি।
চার জনের কাফেলা। অবশ্যই অযান্ত্রিক গল্পে জগদ্দলও একটি চরিত্র। সেই হিসেবে পাঁচ জনের কাফেলা। উদ্দেশ্য ব্রাক্ষণবাড়িয়া। জাপানি মাইক্রো চলছে।
হানিফ ফ্লাইওভার অনেক বার চোখে দেখেছি কিন্তু তাকে ব্যবহার করা হয়নি। এইবার প্রথম তাকে ব্যবহার করছি। চমৎকার রাস্তা। আসমানের উপর দিয়া ভাসছি।
আমিন ভাই, ভূমিকম্প ঢাকা শহরকে শেষ করে দিতে চায়...
না, আগামী কয়েক দশক ঢাকা শহর ভূমিকম্পনের ধবংসলীলার হাত থেকে নিরাপদ....
কেন?
ইদানিং কয়েকটি ভূমিকম্পনের ফলে মাটি জুতসইভাবে নিজেদের ভিত শক্ত করে নিয়েছে...
গাড়ি চলছে। মিন্টু ভাই চমৎকার ড্রাইভ করে। সিনেমা মুভিতে দেখতাম এমন চমৎকার গাড়ি ড্রাইভ।
কাচপুর ব্রীজে আমাদের গাড়ি। ব্রীজের নিচে শীতলক্ষ্যা। পৃথিবীতে অনেক দূর্গন্ধ। দুর্গন্ধরা এক জায়গায় মিলিত হতে চায়। মিলিত হয়েছেও। অবশ্যই এই পবিত্র জায়গাটি আমাদের কাচপুর ব্রীজ। তাই কাচপুর ব্রীজের এই দুর্গন্ধের ইস্তেমায় আমি পারত মোনাজাত তুলতে আসি না।
কিছুক্ষণের মধ্যে আমার ভেতর যা আছে তা বের হতে চেষ্টা করছে। তীব্র চেষ্টা। প্রথমে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করি। কিন্তু ব্যর্থ। বের হয়ে যাক। বের হয়ে গেলে বড় ধরনের একটি শান্তি পাবো। বড় অশান্তির পর বড় প্রশান্তি।
গাড়ি চলছে, আমার বমিটিং চলছে। স্রাববমি। জীবন চোধুরী আমার পাশে বসা। আমার ভেতর কি ঘটছে সে বুঝতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। ভেতরে যা আছে সব বের হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ। এখন চিনচিন মাথা ব্যথা। বমির পর এই ব্যথাটা শুরু হয়ে থাকে।
নয়াপুর গ্রামে ঢুকলাম। গাড়ি গ্রামের রাস্তায়। চা-টা খেলাম, আমিন ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে কিছু ছবি তুললাম। তারপর আমরা আমিন ভাইয়ের প্রশান্তির বাড়িতে যাবো, তারপর হয় ব্রাক্ষণবাড়িয়া, হয় নরসিংদী নয় মাওয়া ফেরীঘাটে।
গাড়িতে বসি। গ্রামের রাস্তায় গাড়ি চলছে। আমার অস্বস্তি চরম আকার ধারণ করেছে। জাপানি গাড়ির সাথে এখনো সহ্যতা গড়ে ওঠেনি, হয়তো আমার দেহ বাহনকলোনী মানতে পারছে না। আবার সমস্যার কথা বলতেও চাচ্ছি না। কারন আমি চাই না আমার প্রত্যক্ষ ভূমিকায় ট্যুরটা নষ্ট হয়ে যাক।
গাড়ি চলছে। যখনই গাড়ি গ্রামের রাস্তা থেকে প্রধান সড়কে উঠবে বলে বাঁক নিচ্ছে তখন ইঞ্জিন স্টপ!
কী হলো? কী হলো?
আমরা জানি না।
তাহলে কে জানে?
একজন মেকানিক্যাল ম্যান জানে।
আমিন ভাই আর মিন্টু ভাই চলে গেলেন মেকানিক্যাল ম্যানের খোঁজে। আমি আর জীবন দা বসে আছি গাড়ির পাহারায়। গল্প করছি। তিনি মিউজিকের মানুষ আর আমি মিউজিক পাগল। তিনি শান্তিনিকেতনে কিছুদিন পড়াশোনার কাজে ব্যয় করেছেন।
আচ্ছা, জীবন দা, কলকাতার মোস্ট অব দি টি স্টলে মাটির পাত্রে চা দেয়া হয় এবং চা-কাপ দ্বিতীয় বার ব্যবহার করা হয় না। কারন তা এঁটো....
হুম, তাইতো দেখলাম....
এঁটো জিনিসের প্রতি তাদের গভীর মন্দাভাব বুঝলাম। কিন্তু দাদা, এঁটো মানুষের প্রতি তাদের কোনো মন্দাভাব নেই কেন .... একটি ঠোঁট সহজেই আরেকটি এঁটো ঠোঁটে কিস বসাচ্ছে, জব্বর কিস ....
জীবন চোধুরী হাসলেন। আমাদের হাসির মাঝামাঝি সময় মেকানিক্যাল ম্যানসহ তাঁরা হাজির। গভীর সমস্যা। গাড়ি এক্টিভেট হতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যাবে। সমস্যা নেই" আমিন ভাইয়ের স্বভাবসুলভ উক্তি। সমস্যা তো আমার থাকার কথা না, কারন আমি সমস্যা থেকে বেঁচে গেছি।
আমিন ভাই শুরু করলেন গল্প। তাঁর গল্প বলার ভঙ্গিতে যথেষ্ট ওয়েব আছে, আছে অভিজ্ঞতা, আছে প্রাণ। আমরা গল্পের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে চলে আসলাম।
গাড়ি মেরামত শেষ হলো। তখন রাত আটটা। ভ্রমণপরিকল্পনা ক্যান্সেল। এখন জাপানি গাড়ি ঢাকার অভিমুখে। আমার সরাসরি সামনে মনিরুজ্জামান মিন্টু, পাশে জীবন চোধুরী, মনিরুজ্জামান মিন্টুর পাশে সরকার আমিন, আমার কানে হেডফোন। গান শুনছি। দুরবীন শার গান -- নামাজ আমার হইলো না আদায় রে আল্লা, নামাজ আমার হইলো না আদায় ....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন