শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭

ধারনাজ্ঞান

আপনার বন্ধুর গার্লফ্রেন্ড আপনার সম্পর্কে যেমন ধারনা রাখে আপনি আসলে আপনার বন্ধুর কাছে তেমন, আপনার বয়ফ্রেন্ডের বন্ধু আপনার সম্পর্কে যেমন ধারনা রাখে আপনি তার চেয়ে একটু হলেও ভালো

তিনি

তিনি আসেন চলে যেতে, তাইতো তার থেকে যাওয়া

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপেক্ষিতা

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন গল্পবাজ৷ উপেক্ষিতা তাঁর একটি গল্প। এই গল্পটি নিয়ে খুবই ভালো মানের সিনেমা টিনেমা হতে পারে। হয়েছে হয়তো, হয়তো হয়নি, হবে। গল্পটিতে হুগলী জেলার একটি গ্রামের কথা আছে। সমস্যা নেই। নরসিংদী কিংবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে এমন গ্রাম অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যাবে।

কিন্তু বিমল নামে যে চরিত্রের দেখা পাই তাকে আমরা ভালো লাগেনি। বড় ধরনের বিশ্বাসঘাতক এবং সুবিধাভোগী মনে হয়েছে।

প্রথমে যখন বিমলের সাথে পরিচিত হই তখন তাকে খুবই ডিসেন্ট মানসিকতার বালক মনে হয়েছে। কিন্তু পরে আর তার প্রতি আকর্ষন ধরে রাখতে পারিনি। বিমল মিথ্যুক। বিমল ভালোবাসার সংজ্ঞা জানে না, বিমল বৌদিকে ফাঁকি দিয়েছে। ভালোবাসায় মিথ্যা কেন, সত্য লুকানো কবিরা গুনা মানে বড় পাপ। বিমল কোনোদিন শান্তিতে থাকতে পারে না। বিমলের প্রতি আমার অভিশাপ।

রতনকে রেখে পোস্টমাস্টার চলে গ্যাছে সেখানে একটা রাবীন্দ্রিক পেনপেন যুক্তি আছে "পৃথিবীতে কে কাহার "( আরে ভাই, পৃথিবীতে সবাই সবার)। কিন্তু বিমলকে বিদেশের আলো বাতাসে নিয়ে যাওয়া জাস্ট প্রতারনা, বৌদির সাথে প্রতারনা।

বৌদি আজও জানে না বিমল কোথায়। বৌদি মারাযাওয়া ছোট্ট ভাইয়ের সমস্ত যন্ত্রনা আপনার মধ্যে দিয়ে ভুলতে চেয়েছিলেন মিস্টার বিমল সাহেব। আপনার জন্য প্রতিদিন রান্না করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতেন মহিলাটি, গ্রামীন লাজ লজ্জা ভুলে গিয়ে আপনাকে রাস্তার পাশে নিজ হাতে খাইয়ে দিতেন মহিলাটি। আপনার জন্য আরও অনেক কিছু করতে চেয়েছিলেন, বার বার বলেছে 'ভাই,আমি পরাধীন '। আর আপনি নিজের সুন্দর ক্যারিয়ারের জন্য এমন সুন্দর মনের ত্যাগী মানুষটিকে না জানিয়ে বাবুদের দেশে পারি জমালেন। ভালো। বেশ ভালো বিমল সাহেব।

আপনি নিজেই মহিলাটিকে দিদি সম্বোধন করেছিলেন, পাছোঁয়া প্রনাম করেছেন, গ্রামীন হৃদয়ের সহজ সরল ভালোবাসা আদায় করে নিলেন নাগরিক কৌশলে। তারপর। তারপর তাকে কোনো কিছু না জানিয়ে, তাঁর ভালোবাসায় কোনো প্রকার শ্রদ্ধাবোধ না রেখে আপনি চলে গেলেন কোর্টটাই পরা শহরে। আরও আধুনিক হতে।

সমস্যা নাই বিমল সাহেব! আরও আধুনিক, সুবিধাভোগী হতে থাকেন।
আধুনিক হতে হতে সুবিধাভোগী হতে হতে  একদিন দেখবেন গাছ থেকে নামবার মইটা আর নাই। তখন সেই সহজ নারীর কথা মনে পড়বে আর কাঁদবেন। তখন চোখের জলে কপোল ঘা হবে, হৃদয় শুকিয়ে যাবে, মরুময় হৃদয়ে ভালোবাসার জল দেয়ার জন্য কেউ আসবে না। ঝড় একবাররই আসে,  ঝড়ের দিন ঠিকই মানুষ বুঝে ঘর কেন প্রয়োজন!

নারী আর পুলিশ

নারী আর ভারতবর্ষের পুলিশের মানসিক গঠন এক-- দুর্বলের উপর প্রবল, প্রবলের নিচে দুর্বল 

বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭

বদল

কাউকে ভালোবাসলে বহুগুনে ফেরত আসে কোনো একদিন, কাউকে আঘাত দিলে বহুগুনে ফেরত আসে কোনো একদিন 

বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৭

এ ই তো

ফেরেশতা স্বাধীনতা চাইলে শয়তান হয়ে যায় 

বাংলাদেশ নামে লোকটি

বাংলাদেশও মানুষ
অনেকের পরিচিত একজন মানুষ
তার কন্ঠে তারাপদ সুর
ভাষায় আলপিন সুখ

বৈষ্ণব বাউল প্রেম গায়, ইছামতি পরে বেগুনী রঙের ব্লাউজ চম্পা কালারের শাড়ি, বাম হাতে হৃদয় ডান হাতে নুড়ি

আমিও বাংলাদেশকে চিনি

ফুটপাতের পাশ দিয়ে পা মেপে হেঁটে যায়, একপলক চোখ রাখে সামনে, এক পলক মাটির কাছে নখ থেকে সামান্য দূরে, একপলক চোখ রাখে মনের ভেতর

আমি তাকে দূরতমা বলি
কাছে তবুও দূরে
আমি তাকে প্রিয়তমা বলি
দূরে তবুও কাছে
বাংলাদেশ নামে লোকটির মাংসের মতো হৃদয় আছে
প্রতিদিন চা খেতে বসে, হাঁটে, হাসে
বিকাল বেলা জিমে যায়, রুটির সাথে ডিম খায়, আস্ত দুপুর মদির দোকানে কাটায়

তার সাথে দেখা হয় আমার শাকুরায় মদ খেয়ে মাতাল প্রায় চিৎকার করে কাঁদে, দেখা হয় মাজারে জিকির করে আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর, দেখা হয় সুপ্রিম কোর্টের বারান্দায় প্লেকার্ড  হাতে ন্যায় বিচারের দাবির সাথে, দেখা হয় মেঘনায় লাল হাসি আর ঢেউয়ের ওড়নায়

তার চুল থেকে নেমে আসে অন্ধকার, সিল্করোডে যতসব রঙের বাহার
বাংলাদেশের এখন বিশ্রাম দরকার, ঘুম দরকার

ব লা কা

বলাকা একটি ব্লেডের নাম

মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭

এলার্জি

এলার্জি রোগী হতে সাবধান!  তারা যেকোন সময় ঘূর্নিঝড় কিংবা টর্নেডো আমদানি করতে পারে!!  এলার্জি রোগের সাথে রাগের একটি আইনানুগ সম্পর্ক আছে

নিয়মিত এলার্জির ট্যাবলেট খান এবং আপনার পাশের মানুষটিকে শান্তিতে থাকতে সহায়তা করুন

মে য়ে

মাটির দিকে চোখদুটো রেখে আস্তে আস্তে যখন কোনো মেয়ে কথা বলে আমাদের পুরুষদের বেশ ভালো লাগে।
মেয়েটিকে মিষ্টি মিষ্টি লাগে। আরে না, মিষ্টির দোকান লাগে। মিষ্টির দোকান হলে বেশ ভালো, আমি আর মামু যামু  আর হামু.. চোখে চোখ রেখে কথা বলবে মেয়ে! না না। এ এক চরম বেয়াদবী!

আমার চোখে তাকাবে না মেয়ে, আমার চোখে লেখা আছে তোমার সর্বনাশ .... তুমি বরং মাটির নামাতা গুনে কবরে যাও আল্লা রাসুল মসজিদ মন্দির শুনে 

সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭

কুসংস্কার

অনেক কুসংস্কারকে মানুষ মাথার নিচে রাখে বালিশ হিসাবে। তাই কুসংস্কারের উপরে যে মাথা, মাথার ভেতরে যে স্বপ্ন তাতে আমার বড়ই সন্দেহ। 

রবিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৭

এস এম সুলতান

ভাবা যায়? একটি লোক ফার্স্ট ইয়ারে সেকেন্ড, সেকেন্ড ইয়ারে ফার্স্ট, থার্ড ইয়ারে ফার্স্ট, তারপরও পড়াশোনা ছেড়ে দিলেন।

কেন?

ভারতবর্ষ ঘুরেফিরে দেখবেন বলে।

আর আমরা! মাশাল্লাহ একটু ভালো রেজাল্টের বাতাস যদি গতরে লাগে তেলের গুদাম মুখে নিয়ে ঘুরি, শিক্ষক যখন মাঠে খেলাধূলা করেন ছাত্র আমি তখন একমাত্র গ্যালারি বানিয়ে একমাত্র হাততালি দিতে থাকি।

আর গোপন রুমে শিক্ষক যদি একবার বলে ফেলেন তোমার তো শিক্ষক হওয়ার বেশ যোগ্যতা আছে তখন তো আনন্দে মরি মরি-- হস্ত পদ স্কন্ধ মাথা বিউটি অর্গান দিতে পারলে যেন মহামান্য দায়িত্বের কিছু অংশ পালন করা হয়।

তবে তারা হয়তো হযরতে চামচা হতে পারে এস এম সুলতান হতে পারে না। 

শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭

মেয়েরা

মেয়েরা আসলে দেখতে পছন্দ করে, দেখাতে না, তাইতো তাদের ফেইসবুকে নিরাপত্তা বোরখা সবচেয়ে বেশি।

এক জরিপে দেখা গ্যাছে মেয়েদের only me স্ট্যাটাস ছেলেদের তুলনায় দ্বিগুন।

বোরখা নারীর অলঙ্কার, কারো মনে,  কারো দেহে ও মনে। 

শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

ফুলের বোন

শব্দে ব্রহ্মা
মাংসে চুম্মা

.....................

কাশ্মীরি আপেল ঘুম থেকে ওঠে আসা চাকাপফুল
ভৈরবী নাপেল প্রশংসায় চাপা থাকা নয়ছয়ভুল

.....................

হয়ে যাবে হবে হবে
রয়ে যাবে রবে রবে
রাজনীতি রাজাকার
জয়ে জয়ে জয়াকার
.....................

মালিকের ছাতা
ঠোঁটে ঠোঁট রাখা
গল্পকথা যতসব সখা
যমুনা নদী কৃষ্ণ বেটা

লাভ লস

লাভ লসের হিসাব তো এখন পর্যন্ত করতে পারিনি। লেখালেখি আমার চিন্তার আয়না, নিজেকে দেখি। মনে যে মাছ খেলা করে তাই লেখা নামক প্রতারক জাল দিয়ে পৃথিবীর খাতায় তুলে আনি।

খুব পারফেকশনিস্ট যারা আছেন তাদের থেকে আমি বহুদূরে, আদর্শিক তেল হতেও আমি চাই না, আমি কেবলই আমার মনের খেলাকে বাইরের খেলার সাথে উপস্থাপন করে থ্রী ডাইমেনশনাল চোখে দেখার চেষ্টা করি।

অনেকে আমাকে কবি বলেন, অনেকে লেখক, অনেকে দার্শনিক, অনেকে বাউল, অনেকে আবার মনে মনে পীর কেবলা ভাবেন, অনেকে আবার মহাব্যবস্থাপক উপাধিও দিয়ে থাকেন। অনেকে খুব ভালো মানের পাগলও বলেন। আমি কেবল তাঁদের শব্দের দিকে চেয়ে থাকি! কোথায় পাই তারা এতো শব্দ। একটি শব্দের (আমি) অর্থ আজ পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারিনি।

আমার আমি যখন জীবন নামক সাগরে পড়ে তীর খুঁজে পাচ্ছে না তারা তখন এমসিকিউ ওআরসি জ্ঞান নিয়ে আমার চুলের ব্যাখ্যা করছে।

মন্তব্য করতে গেলে ডাক্তার হতে হয়, ডাক্তারকে হতে হয় সহমর্মিতার দোষে দুষ্ট, সহমর্মী হতে গেলে আকাশ পাতালমুখী শুদ্ধ জ্ঞানের অধিকারী হতে হয়, অনেক মূর্খ মা সন্তানের মৃত্যুর কারন।

বইবিক্রির বাজার ধরার ইচ্ছাও আমার নেই, কোনো প্রকাশকের লগে আমার  গোপন হাতিরও নাই।  নিজে পত্রিকা বের করেছি কোনো প্রকার বানিজ্যিক চিন্তা বাদ রেখে, অনুবাদগ্রন্থ পাঠকের হাতে গ্যাছে, শুধুমাত্র ছাত্রদের হাতে যায় নি। যারা শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের বই কিনতে বাধ্য করেন তাদের আমি চিনি, তাদের কাছে লাভ লসের হিসাব অনেক বড়।

আমি শুদ্ধ মানুষ নহে, এখনো যখন রাতে নিজের দিকে তাকাই দেখি কত হাজার চৈতন্যহীন বেদনা, প্রস্তাবনা বাস করে আমার মনে! কিন্তু শুদ্ধতার পথে আমার যাত্রার চেষ্টা শতভাগ।

আপনারা হয়তো পথ পেয়ে গেছেন, আপনাদের হয়তো ভালো চাকরি কিংবা প্রমোশন লাগবে, আমি এখনো পথ পাইনি, তাই পথমানুষদের মতো আজাইরা কিছু বকবক করি, আপনাদের ভালো লাগিলেও করি, না লাগিলেও করি

বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭

ঠোঁটে

প্রেমিকার ঠোঁটের চেয়ে মহৎ নয় মূর্তি কিংবা পাথর

ঠোঁটে ঠোঁটে মিলে গেলে ঝরে যায় যতসব পাপ তাপ ফ্যাসাদ গলদ 

গান আমার বোরাক যার মাধ্যমে তোমার পথে যাত্রা করি 

ভালোবেসে

ভালোবেসে কেউ কেউ হয়ে যায় নদী ভালোবাসা ঘৃনা করে অথবা কিংবা যদি 

মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭

গলি

চিন্তার গভীরে শব্দ থাকে না-- গলিপথ

চোখ অর্কিড বল

ডানপিট সময় রাবারের তার কাক বসে শরীরে তার বারবার

পাখি বসে বসে স্মৃতির পাপিয়া

চোখ অর্কিড বল গতিতে গতিতে সামনে চলে-- ধরতে গেলে ভয় আরও নিকটে গভীর হলে আরও আরও ভয় প্রানে থরথর, দূরে থাকলেও মানবিক রোগ ধরে আপন করে-- ভাল লাগে না কিচ্ছু ভালো লাগে না, অন্তরের সুর শুকিয়ে যায় বারবার

কাছে গেলে ভয় ভয় দূরে থাকা নয় নয় সমাজ খাঁচা হয়ে হাসে-- জলাতক প্রকৃতি তবে ক্যামনে বাঁচে ক্যামনে বাঁচে

এতো বিপদ সংকেত থাকলে জাহাজ ক্যামনে যাবে সেন্টমার্টিন-- ভাষা ক্যাফে কিংবা ইমাম মামার টিস্টলে বসে দিনাপাত করলে কিছু কথা জমে কানে-- কাজ তো চাই কাজ-- বিভূতি স্বপ্নেরা খেলা করে মনে-- আরও আরও প্রান চাই আরও প্রান

অনেক পাতার নাচ, অনেক নাচের ভাঁজ ঝরে পড়ে মধুমাস উঠোনে-- যা করবে নোভা তা করতে পারে না, যা করবে বলে বলেছিল তাও করেনি, যা করছে তাও বড় কর্তার অফিস আদেশ-- তারা সাপ্লাই করছে হস্তমৈথুন ওয়াজ-- বীর্য আসে না-- রক্তের ধারা আসে ফোঁটায় ফোঁটায়-- মেরুদন্ডের আলপথে আসে ঘামটাম-- ইহাই আমাদের পইঠা কাল-- থামো তবে করতে হবে, করতে হবে তবে থামো, থামতে থামতে গতি জুরাইয়্যা যায়, বীর্যাবাশের আগেই উর্বর ভূমি সবুজ ফসল-- আর কতকাল ইনবক্স ইনবক্স, কাছে আসো চোখে রাখো চোখ ঠোঁটে রাখো যৌবতী সময়, ভুলে যাও সমাজ, জীবন তো একটাই, মরনও জীবনের মতো একক

সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭

সাপের

ফনারত সাপকে পৃথিবীর সুন্দরতম ফুল মনে হয় (এমন মনে হওয়াটা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ভুল)।

রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৭

বিয়ে

বিয়ে হয় দুটি পরিবারের মধ্যে, সমাজ থার্ড আম্পিয়ারের ভূমিকা রাখে, ছেলেটি মেয়েটি ব্যাটবল মাত্র।

ভাবছেন ফার্স্ট  এবং সেগেন্ড আম্পিয়ারের কথা। তারাও আছেন। তারা হলেন তরবারির মতো ঝুলে থাকা রাষ্ট্রীয় কিংবা ধর্মীয় আইন।

বিয়েতে দর্শক যারা আছেন তারা দাওয়াতপত্র পাওয়া সত্ত্বেও gift নামক টিকেট ক্রয় করে বিয়ে গ্যালারিতে ঢুকে এবং এনজয় নামক মুনাফা পেয়ে বেশ খুশি মনে বাড়ি ফিরে। 

ঠিক একদিন একদিন করে

এরা কী মানুষ

হাত কান নখের মতো সূর্য দেখা যায়

কারা এরা যারা জোয়ারে জোয়ারে নেমে আসে অভিনয় করে পানসে নদীর তীরে

কুয়াশায় কতিপয় আজাইরা বকবক
কুয়াশায় কতিপয় হেমলক
কুয়াশায় কতিপয় মুখ

শান্ত হবার কিছু নেই, ছিল আছে থাকবে এমন জাতীয় আশা লাইটের পেছন থেকে দেখানোর অভ্যাস

ওফেলিয়ার মৃত্যু সহজে মানুষকে বিশ্বাস করে, আড়ালে গেলে ঠিক শব্দটি অনেকটা বেঠিক

মাঝির শেষ ঠিকানা ফ্রি টিকিটে পাওয়া যেতে পারে, একেবারে ঠিক দুজন হলে, তিনজনের ভেতরে ঘোলাটে হৃদয়

কারা তারা জলের গায়ে হেঁটে চলে আলোকিত হত্যার ভোরে

অনেক মিলিত শোক একজনের এক মুহূর্তের বৃষ্টির সমান নহে, বর্শার মাথায় শীত নামে কালে কালে-- মাটির কাছে মাটি গেলে মানুষ শব্দটি কোথায় থাকে, কোথায় থাকে -- এরা কী মানুষ তবে নখের মতো যাদের হৃদয় মুখ কথা

আলো শেষ হলে চোখ অপেক্ষা করে নীরবতার, দ্বীপের সবপাশে এখন গভীর অন্ধকার 

...:

অসুস্থ লোকের অভিমানও অসুস্থ 

শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৭

সিসিফাস মন

আমি তোমারে মনে মনে ডাকি
তোমার মন বলে কিছু আছে নাকি

যে কাল গ্যাছে নদীর জলে
যে তুমি এখন রোদের তলে
যে ফুল হাসে সূর্যের তালে-- তাদের সাথে চকিত হৃদয়ের কানাকানি হয় নাকি

আমার আকাশে প্রতিদিন একটি পাখি আসে, একটি ঘর আসে, একটি পালতোলা নৌকা আসে, যৌবনা কামনার বর্ষা আসে, পিকনিকমাখা নদীর তীর আসে সাথে আসে উদাম এক বাউল চর ....

আমি আঁকতে থাকি কেবল তোমার ঘর, তোমার সাইকেল, তোমার পাঠানো ফেইসবুক ইনবক্স

এমন করে দিন চলে যাবে, চোখে নেমে আসবে বুড়ো অন্ধকার, রাতকে তখন রাত মনে হবে না, জল ভাঁটফুল থাকবেনা শরীরে শরীরে, সূর্যের আলো আরও ধূসর, পরিপূর্ন চাঁদ আয়মামা সুখ  হবে ডিমলাইট আলো ঘরে

আমার সিসিফাস মন তখনো একটু একটু করে টেনে আনবে তোমায় প্রিয়তম সম্পর্কে, কসম জান ভাসবে ভালো আগের মতো করে 

শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭

সাধন

নেই শব্দটি সাধকের কাছে থাকলে ফসল ফলে, নেই শব্দটি বোকার কাছে থাকলে ভিক্ষুকথালা ফলে 

বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৭

বন্দী হলে তবে

সম্পর্কের জটিলতায় আমরা খুব গভীর, ভাবনার জায়গায় ভাসমান। চোখের সামনের দৃশ্য দিনে দিনে বড় হয়ে যায় তাই, তাইতো ছোট হয়ে আসে চোখের ভেতরের চোখ। মানুষ প্রথমে বন্দী হয় তার মানসিকতার কাছে তারপর অন্যকিছু বন্দীর উপকরন হিসাবে আসে। ভৌগোলিক সীমানা ছাড়াও শিশু স্বাধীনতা ঘোষনা করতে পারে, অনেক জ্ঞানী নিজের জ্ঞানদালানের ভেতর বন্দী

বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৭

জনপদে ভ্রমপদ

হাত বাড়িয়ে দিলে আসবে?

চলে যাবো কোনো এক দিগন্তে
পাখিদের ঘর হবে, ফুলদের সংসার তো থাকবেই, ঘুঘু প্রিয়া বাঁধবে বাসা

সুন্দর করে তুমি হাসো, সুন্দর করে হাঁটো, ঝগড়াটা করো বেশ-- বিএসএফ বিজিপি বিজিবি বিএসএফ

আমাদের ঘরে বাতাস বর্ষাপাতার মতো উড়িবে তোমার লাভলক
বাঁশির সুরে পথ হারাবে, পথ পাবে আমারই পথে-- কাঁঠাল পাতায় জমবে নরম রঙের অভিমান লাজুক প্রিয়া

আঁচলে জমা করবে বৈশাখী মিছিল সারাটা বছর
বেহুলার উঠোনে বারোমাস বেঁচে ওঠবে লখিন্দর
ভালো কথা হলো ভালো কথার দরকার হয় না সেখানে
সব নৌকা মাঝি চায়, কলম তো নাম কালির সাথে

তুমিআমি বেঁচে যায় মুঠো মুঠো প্রেমে
নেমে আসে যতসব অন্ধকারের মতো লাজুক ব্যথা
রোপিত হবো তোমার ভেতর এই তো কথা
রাধাদেহ আসওয়াদ আমার তাই গ্যাপহীন চুম্বন প্রার্থনা
চুম্বনে চুম্বনে ঝরে যায় ঝরে যায় যাবৎ সব ভ্রমপ্রায় কালিমা
নিহত বিয়ে আর থাকে না আর রবে না কামনায় কামনায়
চলো না আবার হারিয়ে যাই নতুন ভোরে কোনো এক নতুন অজানায়

মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭

মৃত্যু

মানুষ মারা গেলে এখানে আলোচনা সভা প্রসংশা সভা শোকসভা হয়, অথচ প্রতিদিন যে রাস্তা ঘাটে, অফিসে আদালতে, প্রতিষ্ঠান নামক খানকায় অসংখ্য মেধা নিহত হচ্ছে এই দিকে কোনো মহা মান্যবরদের নজর নেহি হ্যায়...

মানুষ মানে আমরা এখনো হাত চোখ নাক গলা কান মুখ মানে সারফেস বডিকেই বুঝি। মানুষ মানে যে মানুষের মানসিকতা ও তার বিকাশকে বুঝায় সেই দিকে আমাদের কোনো নজর নেই। তাই জানাযায় উপরের দিকে হাত তুলে আর নিচের দিকে চোখের জল ফেললেই আমরা মনে করি মহান কাজটি করা হয়ে গ্যাছে।

দায় চাপিয়ে দিয়ে দায় মুক্তির একটি প্রবনতাও জাতিগত। জাতি এগিয়ে যাবেন জাতিগত সমস্যা এগিয়ে যাবে, পিছিয়ে থাকবে না কেবল মেধা মৃত্যুর হার! 

অ আ

তোমার মন আমার বৃন্দাবন

সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭

নেতার বেড়াল

নামছি। হল থেকে।

হল থেকে রেজা সাহেব আপনি প্রতিদিনই নামেন ওঠেন-- এ আবার নতুন কী, নতুন করে বলার কী হলো?

আরে ভাই, এতো কথাবীর্য হেছেন ক্যান? আমাকে বলতে দেন।

হল থেকে নামছি। হল থেকে তো সবাই নামে তবে আপনার নামার কথা আলাদা করে কেন বলতে হবে রেজা সাহেব?

দেখুন প্রশ্ন করতে জানলেই উত্তর পাওয়া যায় না। শোনার কান তৈরি করেন, অনেক উত্তর আপনি আপনি চলে আসবে।

রেজা সাহেব আপনাকে বানী কে দিতে বলেছে, উপদেশ দেয়ার অভ্যাসটা মনে হয় আপনার জন্মগত।

ও মিয়া, বাজে বকছেন ক্যান? মনে হয় আর ধরি ধরি পৃথিবীর বাইরে আপনার কোনো পৃথিবী নেই আমি নিশ্চিত।

উপদেশ যারা দিয়ে থাকেন তারা যে নিশ্চিতবাদী তা আমি জানি মিস্টার রেজা।

যান যান, আপনার সাথে কথা বলতে রাজি না।

রেগে গেলেন?
শিয়ালকে তো কোনোদিন রাগতে দেখিনি, আপনার মতো করে বললে বলব রেগে গেলে শিয়াল হওয়া যায় না।

ক্লাস নেয়ার অনেক জায়গা আছে সেখানে যান, আমাকে আমার কথাটা বলতে দেন ভাই।

আপনি তো কথা বলতেই আছেন, গোছানো কথার চেয়ে অগোছালো কথায় আপনাকে কয়েক টন অধিক পাওয়া যায়।

তারপর মিস্টার রেজা চুপ।

লোকটি নীরবতা সহ্য করতে পারে না, হারা গতরে তার আগুন লেগে যায়, লোকটি চলে যায় অন্য কোনো কথার মিছিলে।

হল থেকে নামছি। তৃতীয় তলা নামতেই দেখি দুটি বেড়াল, দুটি ইঁদুর। দুটি বেড়াল দুটি চেয়ারে ঘুমাচ্ছে। ইঁদুর দুটি অজ্ঞানের মতো চেয়ারের পাশে পড়ে আছে।

বেড়াল কেন ইঁদুরের মাথা চিবিয়ে চিবিয়ে খেল না?

আরে এই বিড়াল সেই বিড়াল না। এই বিড়াল নেতার বেড়াল। নেতার বেড়াল ইঁদুর খায় না, ইঁদুরকে অজ্ঞান করে রাখে!

রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭

হৃদয় তবে

ভালোবাসা মানে জেলখানা না-- ভালো বাসা। ভালোবাসা হবে নদীর তীরে, জোছনা রাতে নৌকা চালানো যায়, লাজুক জলে স্নান করা যায়। ভালোবাসায় আলো বাতাস না ঢুকলে কেন তবে হৃদয় ভাড়া দেয়া!

শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৭

একবার

একবার বলেছিলাম একটি কথা
গভীর কথা
একবার
একবার শুনেছিলাম একটি কথা
গভীর কথা
একবার
তারপর থেকে তুমি আমি ঝুলে আছি দাড়ির এপার ওপার

আমার চোখে এখনো স্বপ্ন নামে, এখনো ভুলি নাই আমি চাষার ছেলে কৃষি আমার কাজ

নারকেল পাতার ঘ্রানে গানে ঘুমাই, বাতাসে গতর রেখে চোখ রাখি দূরে আজন্ম অজানায়, আবদুল করীম কানে কানে পুকুর পাড়ে বেজে ওঠে বারবার

আমাদের স্বপ্নগুলো সত্যি হয়ে যায়, আমাদের স্বপ্নেরা কখনো মরে না
আমার চোখের ভেতর ঠিক তোমারই চোখের দুর্লভ আল্পনা

বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৭

চড়ুই পাখি

চড়ুই পাখি চড়ুই পাখি
বাসাটা ঠিক বাসা নাকি
চড়ুই পাখি চড়ুই পাখি
ভাষাটা ঠিক ভাষা নাকি
তেল ভাসছে
টাকা উড়ছে
নদী কমছে
ব্যবসা বাড়ছে
চড়ুই পাখি চড়ুই পাখি
তুমিটা ঠিক তুমি নাকি
দাও দাও
প্রমোশন নাও
কৃত্রিম আরেকটা পেট লাগাও
উড়াও উড়ো যত পারো
চড়ুই পাখি চড়ুই পাখি
বাসা তো হলো
গাড়ি একখান লাগবে নাকি 

হঠাৎ দেখা

চেনা মানুষের অচেনা গাম্ভীর্য। চেনা সুরের অচেনা স্রোত। একটি ট্রেন। কিছু সময়। সামনের স্টেশনে তার নেমে যাওয়া। অনামিকায় আংটি নিয়ে বয়ে বেড়ানো লোকটির একলা একলা চলা! হঠাৎ দেখা। তারপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

হঠাৎ দেখা কবিতার ছায়া অবলম্বনে তৈরি হয়েছে বাংলা সিনেমা হঠাৎ দেখা। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন রেশমী মিত্র এবং সাহাদাত হোসেন। হেয়ার ড্রেসারে কাজ করেছেন বিনা নাথ। জীবনানন্দ দাশ হয়তো অনেক আগে চুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন। আমাকেও হতে হলো।আজকে। মানসীর  চুল অন্ধকারের মতো গোল হয়ে আসে। তেজপাতার রেখার মতো মানসীর ঠোঁটরেখা দেখা যায়, ঠোঁটের একটু উপরে কালো তিল। অমিতের ভাষায় বা মানসীর অমিত দার ভাষায় এই কালো তিল নাকি বিউটি স্পট। বাঙালি নারীর চুল কতরকমভাবে সুন্দর করে তুলা যায় তা কিন্তু দেখাল হঠাৎ দেখা সিনেমার মানসী।

মানসী সুন্দর করে শাড়ি পরে, সুন্দর করে হাঁটে, সুন্দর করে কথা বলে। তার কথা বলায় একটি বাচ্চা বাচ্চা ভাব। তার শাড়ি পরায় আছে হাজার বছরের বাঙ্গালি নারীর লজ্জা। মানসীর চুল কখনো রাধার মতো বিরহী, কখনো অন্ধকারের মতো রোমান্টিক, কখনো আবার সময়ের মতো আধুনিক।

হঠাৎ দেখা হঠাৎ করে থেকে গেলে থেকে যায় চিরতরে। মানসীর সলাপ চুল আমার হৃদয়ে দীর্ঘলাপে গুনগুনানি। মানসী নেমে গেলো। আমি এখনো চলছি একলা। আরও অনেক স্টেশন। হঠাৎ দেখা।

বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৭

শব্দের দিকে

শব্দের দিকে চেয়ে থাকি। কোথা থেকে শব্দ আসে-- ঠোঁট থেকে, পেট থেকে, মাথা থেকে, বুকের মাঝপথে? ক্যাসেট হাতে নিয়ে দেখেছি-- গান সেখানে নেই, আছে কালো রঙ্গের জমাট ফিতা। টেপের সঙ্গমে ফিতা বেজে ওঠে-- বিদ্যুৎ লাগে বিদ্যুৎ লাগে। আমার ফিতা তাহলে কোন বিদ্যুতে বেজে ওঠে, গান করে, কথা বলে?  নাকমুখ তো সুন্দর স্পিকার ওঠানামা করে ডানবাম নড়ে-- অধীর অচল দৃশ্য তোমার।

শব্দের সকাল শব্দের বিকাল ঘুমাতে ঘুমাতে মানুষ জাগাতে জাগাতে রাত। পাতা নড়ে কথায় কথায়।

আজকাল শব্দেরা মনোরমভাবে শব্দ হয়ে যায়, আজকাল শব্দেরা মনোরমভাবে ক্যাসেট হয়ে যায়। ছুটি চাই ছুটি চাই পীথাগোরাস জামানায়-- মহতাজ যো মনজিল নান্তনং হো তো নেহি, মহতাজ যো মনজিল মধ্যং হো তো নেহি, মহতাজ যো মনজিল হৃদয়ে গভীরে গভীরে-- শব্দ তুমি প্রিয়তমা রাত ওঠে আসা ফুল বাসরে বাসরে।

বাস চলে নৌকা চলে মাংসের গাড়িও পৃথিবীতে চলে। মাংসের গাড়ি অকারনে হুইসেল বাজায়। বাতাস করেছে দখল শব্দের মানুষ-- মালগাড়ি চলে আবাল পিতার, চোখ নিবে গেলে সবুজ ঘাসে কুয়াশা নামে-- গুড মর্নিং মাই ডিয়ার বিকাল। ঘুম এলে শব্দও আসে স্বপ্নে। শব্দ আর দেহ দুটি ঘর মাঝখানে এক উঠোন ব্যবধান।

তোমাদের বাড়ি গিয়ে বলবো আমিও কথা বলতে জানি অলোকানন্দ জলে-- তলে তলে পলিমাটি হারায় আপন দেহ আপনায়, শব্দের নদী মৃতপ্রায় জনান্তিক নীলিমায়, শব্দের দিকে চেয়ে থাকি অকারনে অজানায়। 

সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭

রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৭

আমিও মানুষ

একটা আড়াল নিয়ে নিলে। ডাকাত যেমন আড়াল নিয়ে থাকে তেমন একটি আড়াল। আজও কোনো ডাকাত দেখিনি। রাতে কোথাও গেলে ডাকাত পড়বে ডাকাত পড়বে এমন একটা ভাবনা ছিল মনে, এখনো আছে।

একটা আড়াল নিয়ে নিলে। ভূতের মতো আড়াল। কতকাল ভূত দেখবো বলে সাধনা করেছি। মাঠের মাঝখানে শুয়ে শুয়ে কাটিয়েছি মধ্য রাত। ভূতের দেখা পেলাম না।

পরী আসবে, দেখা দিবে এমন ভাবনা জীবনে কখনোই ছিল না, তাই এলো। তাও আবার চলে গেল চোখের পেছনে। খুব আড়ালে। একটা আড়াল নিয়ে নিলো।

খুব আড়ালে যেতে যেতে আড়াল এক বিশেষ্যের নাম, আড়াল এক চোরা স্রোতের নাম গভীরে গভীরে।

সিনেমা চলছে। স্ক্রিপ্ট আমার পছন্দ হয়নি জনাব ডিরেক্টর। এতো সার্কাস কার ভালো লাগে? ভোর রাতে আমারও ঘুম ভাঙে, আমিও মানুষ।

সৈয়দ আকরম হোসেন

আকরম হোসেন। সৈয়দ আকরম হোসেন। আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। তিনি ক্লাস নিচ্ছেন। বললেন "আগে একটি উপন্যাস অনেক সময় নিয়ে পড়াতাম আর এখন অনেক উপন্যাস পড়াতে হয় অল্প সময়ে।"

যদিও পড়ানোর স্টাইল বক্তৃতামুখী। মানে টিচার বলবেন ছাত্র শুনবে। ছাত্রদের মুখ বলে কিছু নেই, ছাত্ররা কেবল কান নিয়ে  ক্লাসে জন্মগ্রহন করে। তারপরও মুখটা একটু একটিভ করার চেষ্টা করলাম।

স্যার, একটি উপন্যাস অনে সময় নিয়ে পড়ানো আপনার চরিত্র, তাহলে সিস্টেম কী আপনাকে চরিত্রহীন করে দিচ্ছে?

ক্লাসে অন্ধকার নেমে আসলো। আলোর বিন্দুবলয় নেই। কিছু অন্ধকার সৃষ্টিশীল। এই অন্ধকারটাও  সৃষ্টিশীল বলে মানতে হবে। স্যার জন্ম দিলেন নতুন এক বাক্য " সিস্টেম তোমাকেও চরিত্রহীন করছে এমরানুর রেজা।"

শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭

হাওড়ামুখী

বোলপুর থেকে হাওড়ামুখী আমরা। সবার মনেই কেমন একটা ফুরফুরে ভাব। কোনো এক বাউলমুখী মানুষ ওঠলেন আমাদের কামড়ায়। কে ছেড়ে গেলে নাকি কাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না এমন জাতীয় গান ধরলেন। আমাদের স্যার আর সিটে বসে থাকতে পারলেন না। ধরলেন গান, করলেন ভিডিও। এক উৎসবমুখর চেহারা নেমে আসে ট্রেনের কামড়ায়।

বাউল নেমে গেলে থেমে যায় কলরব। তনুশ্রী গান ধরে। ওর আবার ক্লাসিক্যাল গলা। এমন গলা সন্ধ্যা অথবা বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি আড্ডায় বেশ আরামদায়ক। ট্রেনের আওয়াজে দরকার এমন গান যা ঝড়জল ঝকঝক আওয়াজের লগে বন্ধুত্ব করে। তাই ধরলাম গান। হামিং সাপোর্ট বেশ পেলাম। আমি আর আমি থাকলাম না। কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম। চারপাশে মানুষ জমে গেল। ইহা এক অন্যরকম অনুভূতি। গান শেষ। বায়তুল্লাহ কাদেরী স্যারের হাত মানিব্যাগে চলে গেল। চকচকে নরম একখান একশত টাকার নোট বের হয়ে আসে, শ্রাবন ভাই আরও একটি বড় নোট আমার হাতে তুলে দেন!  ইহা এক অন্যরকম অনুভূতি।

জীবনে দ্বিতীয়বার গান গাওয়ার পর দিষ্টান্ন পেলাম। ইহা এক অন্যরকম অনুভূতি। অন্যরকম অনুভূতি লইয়্যা আমি সিটে বসে গেলাম। অধিক অধিক গলা যারা বাজাতে পারেন তাহারা অন্য জাতের মানুষ। চর্চায় কিনা হয়। চর্চা বা সাধনার অপর নাম আধ্যাত্মিক জীবন। নদীর জলে ভেসে থাকা যায় নৌকায়, জলের নিচে জীবন সন্ধানের প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত থাকার নামই তো সত্যিকারের বিজ্ঞান। আমরা বিজ্ঞান আর বাউল সাধনাকে আলাদা করে বিচার করি। না। বাউল সাধনা অন্য এক বিজ্ঞান। বিজ্ঞান মানে ধ্যানস্থ থাকা কোনো কিছু নতুন করে পাওয়ার নেশায়। তাই অধিক গলা বাজানোর চর্চা আমার নেই। তাইতো সিটে বসে গেলাম।

ট্রেন চলছে বর্ষার জলস্রোতের মতো। এই ট্রেন তো ট্রেন না-- স্মৃতি জাগানিয়া রেডিও যা মধ্য রাতের শেষ শব্দের মতো হৃদয়ে নির্ঘাৎ বাজে। তৃষা চুপচাপ দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। যেন বিরহিনী রাধা। আমার ভেতরে একটু পর পর এমন ঢেউ লাগছে যা হৃদয় ভাঙছে বারবার কিন্তু কেউ জানে না আমার ভেতরকার এ ভাঙন, বার বার চোখের ভেতর দেখা দেয় জোনাক কান্দন। তাজ মহলের পাশেই যমুনা নদী। চাঁদ নদী আর তাজমহল একসঙ্গে হলে মমতাজ আর বিরহী থাকে না, শাজাহান থাকে না কয়েদী। তাজমহল আমাকে তেমন টানেনি। চোখের গভীরে যার মমতাজ থাকে চোখের সামনের মৃত তাজমহল আর কতটুকু তার হৃদয় টানে-- গভীর ব্যথা ভুলে যেতে আরও গভীর ব্যথার প্রয়োজন। আমার হৃদয় ব্যথার চেয়ে তাজমহল তত বেশি রোমান্টিক নহে যা আমাকে ব্যথা   ভুলিয়ে দেই। আমি বরং বারবার সেই সব শ্রমিকদের কথা স্মরন করছিলাম  যাদের ঘাম আর রক্তে গড়ে ওঠেছিল এই বিলাসী সৌন্দর্য, যাদব আত্মা এই মহলের পাশে ঘুরেফিরে আর বিরহ মাতম করতে থাকে। ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে না দিয়ে যে শাসক বিলাসী প্রাসাদ বানায় তারা কখনো মানব মনের চিরকালীন কষ্টে উপশমের কারন হতে পারে না।  আমার ভেতরে আমি নাই, আমি কেবল ট্রেনের ভেতর দিয়া স্মৃতি দেখি-- লাল নীল সবুজ হলুদ স্মৃতি। ট্রেন শ্রীরামপুর  চলে আসে। এখানকার স্থানীয় স্টেশনে এতো মানুষ থাকে না। চমৎকার এক নীরবতা বিরাজ করে স্টেশনে। বাংলাদেশের মসজিদের মতো নীরবতা-- কোনো মুমিন মুসুল্লি নাই -- সময়ে সময়ে আসে।

শ্রীরামপুর আমি অনেকদিন ছিলাম। আমার বন্ধু সুপ্রিয়ের বাসায়। সুপ্রিয়ের বাসার সাথেই নদী। নদীর পরপারে ব্যারাকপুর। লেফট রাইট পার্টির ব্যারাক থেকে ব্যারাকপুর। রাতের ব্যারাকপুরকে জল মাতা গ্রাম মনে হয়। আগ্রার ফোর্টের ভেতরে যেমন করে রোদ এসে তার চরিত্র হারায়, অর্থাৎ আগ্রা ফোর্টের চরিত্র ধারন করে তেমনি ব্যারাকপুরে রাতের নদী এসে নিজের চরিত্র হারায়, ব্যারাকপুরের চরিত্রে চরিত্রবতী হয়ে ওঠে-- সে যে কী এক মহিমা আমি বলিতে পারিব না-- জল চিক চিক নদী বয়ে যায়, মন ধুক্ ধুক্ শান্তি রাখা ঠাঁই।

কিছুক্ষন পরে আমরা হাওড়া স্টেশনে নামবো। হাওড়া সত্যিকারের স্টেশন। কারন স্টেশন মানে তো মানুষ, তাই না? আরেকটি কথা বলা হয়নি আমরা ছিলাম শান্তিনিকেতনের উৎসবে। উৎসব  কিন্তু উতসব নহে-- হোটেলের নাম। বেশ আরামদায়ক। বিশেষ করে তার উঠোন।

আমাদের কেউ শান্তিনিকেতনে তেমন আনন্দ পাইনি। শান্তিনিকেতন দেখতে দেখতে কাদেরী স্যার বলেই ফেললেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাঁচিয়ে  রেখেছি আমরা মানে বাংলাদেশ। আমি স্যারের কথার সাথে একমত হতে পারলাম না। কারন কবির কোনো দেশ নেই, কবি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির নাম নহে যাকে সুপারিশ করে, তেলমর্ধন করে, সাবমেরিন ক্রয় করে রক্ষা করতে হয়, কবি এক আশ্রয়ের নাম। তারপর যতক্ষন শান্তিনিকেতনবিহারে ছিলাম ততক্ষনই এডগার এলান পোর Eldorado কবিতাটি বারবার পড়তে থাকি

Gaily bedight,
A gallant knight,
In sunshine and in shadow,
Had journeyed long,
Singing a song,
In search of Eldorado.

But he grew old-
This knight so bold-
And o'er his heart a shadow
Fell as he found
No spot of ground
That looked like Eldorado.

অবশ্যই মনে মনে এবং আমার মনে নতুন করে মনে হলো প্রেম আসলেই এক শব্দহীন নদী আর রাগ সেই জলপথে  ফারাক্কা বাঁধ! 

জীবনে

রাত। রাতই বলা যায়। কারন সময় তখন একটার কাছাকাছি কিংবা প্রায় একটা ত্রিশ মিনিট। রাতে ফোন দিলে তাও আবার যখন ঘুমে থাকার কথা তখন ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। ভয় পেয়েছি বটে। আঙ্কেল  সাধারনত এতো রাতে ফোন দেননা।

রাত গেল দিন এলো আবার রাত এলো। ইউটিউবে কালিকা প্রসাদ নিয়ে ব্যস্ত। কালিকা প্রসাদ একজন সংগঠক, একজন শিল্পী একজন গীতিকার একজন প্রেমের মানুষ। তার কথা আর গান শুনতে শুনতে আমি তখন ছিদরাতুল মুনতাহায়, রফরফের অপেক্ষায় বসে আছি। এমন সময় ফোন আসে। ভয় পেয়ে গেলাম। কারন ভাই সাধারনত এতো রাতে আমাকে ফোন দেন না। তাছাড়া আমি ছিলাম তখন পৃথিবীর বাইরে।

মাঝেমাঝে আমি like doing nothing পৃথিবীতে বসবাস করি। তখন পৃথিবী থেকে অনেক দূরে থাকি। ফোন অফ থাকে। কিন্তু কেমনে কেমনে যেন বড় ভাইয়ের ফোন ঢুকে গেলো। অবাক হলাম। কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ভয় পেয়েছি বটে।

আঙ্কেল, ভাই, বড় ভাই তিনজনের ফোনে ভয় পাওয়ার মতো কোন কারন ছিল না। তিনজনই আনন্দের সংবাদ দিলেন। দুজন নতুন বাবা হলেন আর বড় ভাই চার নাম্বার সন্তানের বাবা হলেন।

আঙ্কেল, ভাই, বড় ভাই পৃথিবীতে জীবন নিয়ে আসলেন। আর আমি? আমি আমার একমাত্র জীবন নিয়া ভাবতাছি, কেমনে সাগর পারি দিব আমার ভাঙা তরী! এ জীবন কী শাপলা ফুল বর্ষা গেলে যার কোনো থাকে না কুল!!