বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

পাখি

পাখিটা উড়ি উড়ি করে
পাখিটা ঘুরি ঘুরি চলে।।

পাখিটা পথ চিনে না
পাখিটা ভাষা জানে না
পাখি তো জন্মের কানা
পাখিটা পথে পথে পথে ঘোরে।।

পাখিটার আশায় ফুরায় না
দুনিয়া তাকে ছাড়ে না
পাখি তো স্রোতে ভাসে না
পাখিটা ভেসে ভেসে চলে।।

পাখিটা কান্নায় হাসে
পাখিটা পিঞ্জিরা ভাঙে
পাখি তো দমে দমে চলে।। 

মা

মার কাছে শুনেছিলাম প্রথম ইশ্বর বলে কেউ আছেন। তারপর থেকে আমি আস্তিক। মা কত মহান বোকা ইশ্বর হয়ে ইশ্বর চেনান, ইশ্বর করেন ইশ্বরের বয়ান, মা কত বোকা মহান! মা দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন। মা আমার বাড়ির পাশের মেঘনা নদী, স্রোতের ভাষণ আর কলকল ধ্বণি। মা আমার কালো মাটির ঘ্রাণ, মা আমার সংগ্রাম থেকে জন্ম নেয়া একমুঠো প্রাণ।

মা তুমি যদি বল মরে যা, আমি নিজ হাতে প্রাণ উড়িয়ে দিব আকাশে। তুমিই তো মা ধরে ধরে শেখালে দৃশ্য কীভাবে আকাশ হয়ে উঠে।
ভুল হয় মাঝে মাঝে মানুষ ভেবে তোমায়, আম্মা তুমি তো মানুষ নও,জন্মান্তরের স্রষ্টা।

মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

স্মৃতির ডায়রি

কলকাতা স্টেশনে নামলাম। চিতপুর স্টেশনকে কলকাতা স্টেশন বলা হয়ে থাকে। এখন ট্যাক্সি করে যেতে হবে হাওড়া স্টেশন।
তখন রাত, তখন অন্ধকার। অন্ধকার এবং রাতের সাথে আমার ভালো পরিচয় থাকলেও কলকাতার ট্যাক্সি চালকদের সাথে আমার তেমন ভালো পরিচয় নেই। তাছাড়া আমার বন্ধুরা আগেই সর্তক করে দিয়েছে কলকাতা খুব নিরাপদ শহর না। আমি কিন্তু ভয় পেতে ভালোবাসি। তাই ভয়টাকে উপভোগ করছি। ভয় আর আমি মিলে ট্যাক্সি চালকের গাছে গেলাম।

যাবেন?

কোথায়?

আড়াই শত টাকায় যতদূর নেয়া যায়( কথাটি শুনেই ট্যাক্সি চালকের মুখে অনবদ্য হাসি)।

বসেন।

আমি ট্যাক্সি চালকের পাশের সিটে বসলাম। বসেই শুরু হলো কথা। রিক্সাচালক আর ট্যাক্সি চালকের সাথে আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলি, তারাও।

কাকু, এই যে কলকাতা শহর, কলকাতা শহরে এতো আলো ঢিসঢিস করছে, অন্ধকার পরাজিত হয়ে মামার বাড়ি চলে গেছে, কার জন্য জানেন?

কার জন্য?

টমাস আলভা এডিসন, আইনস্টাইন, মাইকেল ফ্যারাডে প্রমুখ ব্যক্তিদের জন্য।

আচ্ছা কাকু,
ধরেন, টমাস আলভা এডিসন আমার মতো বয়সী, তখনও তিনি বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কার করেননি। তিনি কোনো এক অপরিচিত ট্যাক্সিতে উঠলেন। আর ট্যাক্সি  চালক তাঁর কাছে যা আছে সব কিছু ছিনতাই করে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেয়, পরে রাস্তা থেকে একদল মানুষ তাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার নাম করে তাঁর একটি কিডনিসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিক্রি করে দেয়। সুস্থ টমাস আলভা এডিসন প্রায় অসুস্থ হয়ে যায়। তাহলে কি আমরা আজকের এই বৈদ্যুতিক উন্নতি উপভোগ করতে পারতাম? আজকের এই আলোকিত কলকাতা শহর পেতাম?
আমি কি একজন টমাস আলভা এডিশন হতে পারি না!

কাকু মিটমিট করে হাসলেন। হেসে আমাকে বললেন,
কাকু তুমি টমাস আলভা এডিসন কেন, তাঁর চেয়ে অনেক শক্তিশালী হতে পারো, কিন্তু আমি সেই ছিনতাইকারী হতে পারি না!

না কাকু আমি কিন্তু আপনাকে ছিনতাইকারী বলছি না। আমি বলতে চাচ্ছি প্রতিটি মানুষ অনেক বড়, অনেক সম্ভাবনাময়!

বা প রে,  তোমার মতো করে যদি কেউ ভাবতো তাহলে আংশিক হলেও তার বাস্তবায়ন দেখতে পেতাম, পৃথিবী অনেক সুন্দর হয়ে যেত।

আমার তখন মনে পড়লো সুফিয়া কামালের কথা যিনি বলেছিলেন পৃথিবীতে ভালো মানুষদের সংখ্যা বেশি কিন্তু তাঁরা বিচ্ছিন্ন, আর খারাপ মানুষদের সংখ্যা কম কিন্তু তারা একত্রিত। 

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

কম জানলে

এখানে কম জানলে বোকা, বেশি জানলে পণ্ডিত, মধ্যমজ্ঞানী হারিকেন মার্কা বলদ।
এখানে বোকাদের জন্য রয়েছে তাচ্ছিল্য, পণ্ডিতদের জন্য গালি আর বলদের জন্য পায়ের চাপাতি। 

মানুষ কত বাঁকা কুকুরের লেজও সোজা দেখতে চায় 

রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

তুমি তুমি

যখন ঘুমাই তখন শুধুই ঘুমাই
যখন খেলি তখন শুধুই খেলি
যখন পড়ি তখন কেবলই পাঠক
যখন অস্ত্র হাতে তুলি তখন কেবল গুলি চালাই-- লাল, নীল, হলুদ গুলি

আমি যখন তোমাকে দেখি শুধু তোমাকেই দেখি,
কসম খোদার, তোমাকে যেভাবে দেখি কেউ তোমাকে এমন করে দেখে না, এমনকি তুমিও না,
যে মশাটি সময় করে তোমার দেহ থেকে তুলে নেয় রক্ত সেও জানে না তোমার লালায় কীভাবে আমি মানুষ হয়ে উঠি, তোমার বাম চোখে আমার চুম্বন কেমন করে মন্দিরের ঘণ্টা হয়ে যায়।

আমি তোমাকে দেখি একজন মা প্রসব ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে তার সন্তানকে যেমন করে দেখতে চায়। আমি তোমাকে দেখি মাঝ রাতের সেই পাগলটির মতো যে চানকে আগলে রাখতে চায় বুকের দিন্দুকে। আমি তোমাকে দেখি সাগরের তীব্র স্রোতে ভাষা যেখানে নিশ্চুপ।

আমি তোমাকে দেখি দেখার মতো বলার মতো না, বলার মতো না।

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বিরহের গান

একজন মেয়ে সবচেয়ে কম্পিত হয়ে থাকে যখন কেউ তাকে বলে ভালোবাসি। মেয়েটি বিশ্বাস করতে চায় না তাকে কেউ ভালোবাসতে পারে। কারণ এই সমাজ তাকে বঞ্চিত হতে শেখায়। এই সমাজ তাকে বঞ্চিত করে। বেডরুম থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের করিডোর পর্যন্ত মেয়েটিকে মনে রাখতে হয় সে মেয়ে।

বিজ্ঞাপনের প্রধান প্রসাধনী মেয়ে। বিলবোর্ডের স্লিম ফিগার নারী জানে না দোকানের বাদাম-চানাচুর মতো উঠানো-নামানো হয় তার দর-দাম। মেয়েটিও জানে না কেন তার ফিগার স্লিম রাখতে হবে।
প্রথমে মেয়েটি দুর্বল হয় ঘরে। কারণ তার দাদার চেয়ে কম খেতে হয়। তারপর মেয়েটি দুর্বল হয় বাইরে। কারণ বাইরে মেয়েরা খাবে(?),এই সমাজ তা হতেই দিবে না।আরেকবার মেয়েটি দুর্বল হয় স্লিম ফিগারের বাহানায়। শারীরিক দুর্বলতা এক সময় চিত্তে প্রবেশ করে। আমাদের মায়ের জাত হয়ে পড়ে চিত্তগতভাবে দুর্বল, তেলাপোকা দেখলে ভয় পায়, কুকুরের ডাক শুনলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

অপর দিকে পুরুষ হয়ে ওঠে নায়ক। নারী কখনো নায়িকা হয়ে ওঠতে পারে না। বরাবরই হয়ে ওঠে লতানো বৃক্ষ যে প্রতিনিয়ত আশ্রয় খোঁজে, অবলম্বন খোঁজে, তার কণ্ঠে থাকে আশ্রয় নির্ভর গান--

এক জাতের লতা আছে
বাইয়্যা সে উঠে গাছে
গাছ মরিলে লতাও মরে
তবুও লতা গাছ ছাড়ে না।।


আর পুরুষ প্রথমে ভালোবাসার ইয়ামি ইয়ামি চকলেট খাওয়ায়, চকলেট পর্যন্তই তার ভালোবাসা সীমাবদ্ধ, তারপর কালো কাপড় দিয়ে বন্ধ করে দেয় মেয়েটির দেখার দৃষ্টি। অনেকটা এক সময়ের ভালো লাগা বিটিভি বিজ্ঞাপনের মতো--


ও সুন্দরী মরতে পারি, তুমি গলার মালা

ভালো কথা, খুবই আবেগময় কথা। কিন্তু পরে শুনতে পাই--


এই না দেখ তোমার জন্য আনছি আর সি কলা
কন্যা কেন নাও ডাইব কিংবা লেমন
ডাইব বোতলে বুঝবে সুখী ভালোবাসি কেমন


কেমন দারুণ ভালোবাসার চিত্র! যার জন্য মরতে পারে তার জন্য নাকি লেমন বোতলে ভালোবাসা জমা হয়। হায়রে পুরুষ নারী চিনলে না, হায়রে এক হাত তোমার অপর হাতের কথা ভাবলে না!

নারীর বিশাল, অসীম এলাকা সে মা। জমি উর্বর থাকলে বীজ ভালো হবে, বীজ ভালো হলে জমি ফসলা-শ্যামলা হবে। প্রত্যেক মানুষকে মায়ের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে আসতে হয়। মা যদি দুর্বল থাকে সমস্ত জাতি জন্মগতভাবে দুর্বল হতে বাধ্য।
আসলে পাগলই নিজের ভালোটা বুঝে, সামাজিক মানুষ পাগলকে বুঝে না।

সিনেমার পর্দায় প্রত্যেক পুরুষ মেয়েকে ভালোবাসার প্রস্তাব দেয়। আর মেয়েটি রাতে বিছানায় শুয়ে স্বপ্ন দেখে। প্রেম এখনো মেয়ের কাছে স্বপ্ন আর ছেলের কাছে কর্ম। কর্ম আর স্বপ্নের মাঝখানে প্রেম হয়ে পড়ে প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী প্রেম কখনো পরিণতির খোঁজ পায় না। তাই প্রেম এখানে বিরহের অপর নাম। বিরহের গান এখানে মূলত গান। 

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ইদ

Either eat or be eaten কথাটির আজ আনুষ্ঠানিক উৎসব,
আজ ইদ-উল-আযহা 

ইচ্ছা

জন্ম হবে আমার হয় সুরে নয় নদীর জলে, হয় কৃষ্ণের বাঁশির তলে নয় মৃত্যুর একনিষ্ঠ নলে 

ইচ্ছা

জন্ম হবে আমার হয় সুরে নয় নদীর জলে, হয় কৃষ্ণের বাঁশির তলে নয় মৃত্যুর একনিষ্ঠ নলে 

ইচ্ছা

জন্ম হবে আমার হয় সুরে নয় নদীর জলে, হয় কৃষ্ণের বাঁশির তলে নয় মৃত্যুর একনিষ্ঠ নলে 

ইচ্ছা

জন্ম হবে আমার হয় সুরে নয় নদীর জলে, হয় কৃষ্ণের বাঁশির তলে নয় মৃত্যুর একনিষ্ঠ নলে 

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

মন

বেয়াদব চোখ মন দেখে না, স্তন দেখে
বোকা চোখ স্তন দেখে না, মন দেখে
মানবিক চোখ মনের পাশে এক দেশের এক পাহাড় দেখে 

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

শূন্যতা

বায়ু শূন্যতা পছন্দ করে না। যেখানে বায়ু শূন্য হয়ে যায় সেখানেই ছুটে চলে দলে দলে বাতাস। বায়ু খেয়ে, বায়ু মেখে বেঁচে আছে মানুষ।

দুর্গা, পুরুষ তোমার অবয়ব বানাতে গিয়ে বানিয়ে ফেলে তার প্রেমিকার অবয়ব

শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বউ

মুরুব্বিরা  গরু কিনতে যায়। গরুর দাঁত দেখে, পা দেখে, চামড়া দেখে, চামড়ার কালার দেখে, মাংস কিংবা দুধের হিসাব-নিকাশ করে।

আসলেই গরু গৃহপালিত প্রাণি!


মুরুব্বিরা বউ কিনতে যায়। বউয়ের দাঁত দেখে, পা দেখে, চামড়া দেখে, চামড়ার কালার দেখে, চুল দেখে, আসমানী জ্ঞান কেমন আছে তা যাচাই করে।


আসলেই বউ গৃহপালিত রমণী! 

আগুন থেকে আগুন নিলে মনে হয় মানুষ থেকে মানুষ 

কন্যাসন্তান

দায় মানে কোনো কিছুর উপর অন্যের অধিকার। কন্যাসন্তান পিতা-মাতার কাছে এক প্রকার দায়। প্রতিটি কন্যাসন্তান দায় হয়ে জন্মগ্রহণ করে  যাহাদের শরীরে অদৃশ্যভাবে লেখা থাকে চাহিবার মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবেন।

শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ডায়রি

এখন নিজের একটু প্রচার করবো, আত্মপ্রচারণা....

স্বরকল্পন আবৃত্তিচক্র ঢাকার আবৃত্তি পরিবারে একটি পুরাতন ও গুরুত্বপূর্ণ নাম। তারা সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রযোজনা তৈরি করে থাকে।

এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না
এই জল্লাদের উল্লাস মঞ্চ আমার দেশ না " এই শিরোনামে মাহাদী হাসানের নির্দেশনায় প্রায় দুই ঘণ্টা সময়কে সামনে রেখে একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করা হয়। তৈরি করা স্ক্রিপ্ট-এ আমার লেখা রংপুরে এক পাখি জন্মে " গানটি এবং তারানি সিরিজের কয়েকটি অংশ সংযুক্ত হয়। আমি তাতে বিশাল খুশি। আমার খুশি দেখে কে!

এখন আসি আসল কথায় ....

অনুষ্ঠান শেষে আমাকে মঞ্চে আহবান করা হলো। জানতে চাওয়া হলো আমার অনুভূতি।

আচ্ছা আপনারাই কন, আমার লেখা আবৃত্তি শিল্পীরা মুখস্থ করবে, আবৃত্তি করবে, আর আমি শুনবো,  আমি আনন্দে আনন্দে ফালা ফালা হয়ে যাওয়ার কথা না, আর যদি আনন্দে ফালা ফালা না অই তাইলে আমার মিছা ভাব নেয়া অইবো।

আমি যা কইছি ....

ছোট কালে দেখতাম আব্বা বাজার থেকে লাল শাক কিনে আনছে। টকটকে লাল শাক। আমার বোনেরা শাক বানাচ্ছে। ঠাকুরমা শাক কেটে কেটে আম্মার কাছে দিচ্ছে। আম্মা রান্না করে আমাকে খেতে ডাকছে। আর আমি লাল শাক পেয়ে মহা খুশি।
আমি জানি না আজ স্বরকল্পন পরিবার কার কাজটি করেছে-- আমার মায়ের?  আমার বাবার?  আমার বোনের? না আমার ঠাকুরমার!

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

সূর্য কি মেঘের প্রেমিক যার তাপে মেঘ ধীরে ধীরে নি:শেষ হয়ে যায়?

Is the cloud loveable beloved of the sun that amortizes the cloud slowly slowly? 

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

অন্ধ

অন্ধ ডাক্তার, অন্ধ কবিরাজ, অন্ধ ছাত্র, অন্ধ ব্যবসায়ী হতে পারে।
অন্ধ প্রেমিক?
অসম্ভব!
প্রেমিক হওয়ার জন্য উন্মুক্ত দুটি চোখ থাকা আবশ্যক। একটি চোখ হলেও চলবে না। কারণ প্রেমের মন্দিরে ডিসকাউন্ট চলে না। 

ভালোবাসতে গিয়ে

ভালোবাসতে গিয়ে মানুষ হয়ে ওঠি।
কোনো কালে মানুষ ছিলাম না।
মানুষের জন্য ঘর-সংসার, আদা-মরিচ, পেঁয়াজের ঘাটতি বাজার। বিশ্বায়নের মতো দৃষ্টিভঙ্গির বদল তোমাদের হতে পারে। আমার আপেল গাছের নিচে নিউটন বসা থাকে। কৃষ্ণের বাঁশি আমার ঠোঁটের অলঙ্কার। লিপজেল চামড়ায় আর নিরাপদ বোধ করি না। যে নিরাকার মানুষ আমার হৃদয় কামড়ে রাবার করেছিল তাহার সংবিধান গঙার স্রোতের মতো ভাসমান। আমি তো জলের নিচের এক ঝাঁক চিত্রকল্প স্রোতহীন ভাস্কর্যের মতো স্থির।

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

পরাজয় মানুষকে নিজের দিকে টেনে আনে আর জয় মানুষকে ভাসমান করে

মার্কেটিং

নগদে পন্য বিক্রি করা হলো পাঁচ হাজার টাকা এবং এর জন্য ভ্যাট ধার্য করা হলো পঞ্চাশ টাকা।

নগদান হিসাব ডেবিট
বিক্রয় হিসাব ক্রেডিট
ভ্যাট হিসাব ক্রেডিট

ভ্যাট হিসাবটি এখানে দায়। হিসাববিজ্ঞানের ভাষায় দায় বৃদ্ধি ক্রেডিট। যেহেতু প্রতিষ্ঠানের দায় বৃদ্ধি পেয়েছে তাই ভ্যাট হিসাবটি ক্রেডিট দেখানো হয়েছে।
হিসাববিজ্ঞানের এই সহজ হিসাবটিও জটিল করে বাংলাদেশের হিসাব বিজ্ঞানীরা। খুব গোপনে ভ্যাট হিসাবটি বিক্রয়ের সাথে এ্যাড করে ক্রেডিট দেখায় যার ফলে দায়টিও প্রতিষ্ঠানের আয় হিসাবে পরিগণিত হয়ে যায়।
আবার যিনি হিসাব বই অডিট করার জন্য আসেন তিনিও সন্তুষ্ট থাকেন যদি এমন এনকাউন্টার এন্ট্রি পাওয়া যায়। কারণ তাতেই তিনার পকেট ভারি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এমন আরো অনেক সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ।

এখানে টাকা উপার্জনের জন্য ব্যবসা করতে হয় না সব সময়। এতিমখানার নামেও ব্যবসা করা যায়। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কিন্তু লাভেমূলে গাদাগাদা।
প্রত্যেক পীরে কামেলের একটি এতিমখানা থাকে। ছদকার সমস্ত অর্থ, সরকারি অনুদান, বিদেশি অনুদানে এতিমখানার ফান্ড জমজমা। আবার মুরীদগনের বিশেষ অর্থদান তো আছেই। এতিমখানাতেও চলে হিসাবের কারচুপি। যে কর্ম দিবসে সরকারি লোক এতিমখানা পরিদর্শনে আসে সেই কর্ম দিবসে এতিমখানার এতিমদের সংখ্যা বেড়ে যায়। সরকারি পরিদর্শক যেনো এতিমখানার প্রতি বিশেষ নজর দেন সেই জন্য চলে বিশেষ অ্যাপায়ন। সরকারি লোক আল্লার বিশেষ বান্দাদের খেদমত বিশেষভাবে মনে রাখেন।

এইভাবে সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ।

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যদি সেবাখাত নামে কোনো খাত থাকে তবে সরকার সেবাখাতদারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কর কম নেন। কর কম দেয়ার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলে। কিন্তু সেবাখাতের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলে রমরমা ব্যবসা।

এইভাবেই বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীর নির্ভয়যোগ্য আশ্রয়স্থল।

ছোট কালে নিউজ পেপার নামে প্যারাগ্রাফ লিখতে হতো আমাদের। প্রশংসা বনাম প্রশংসা বাক্য দিয়ে আমরা শেষ করতাম নিউজ পেপার প্যারাগ্রাফ লেখা। আর আজকে দেখি নিউজ পেপার বের করা পরিপূর্ণ একটি মার্কেটিং প্লান। যেকোনো গ্রুপ অব কোম্পানির একটি জীবন্ত মিডিয়া থাকা আবশ্যক। কারণ তাতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা তৈরি হয়।

একদিনের কথা।

বাসে বসা। পাঞ্জাবি গায়ে, টুপি মাথায় এক দাড়িওয়ালা লোক বাসে ওঠলেন। ওঠেই তিনি মধুর কণ্ঠে সবাইকে সালাম দিলেন,

আল্লার পেয়ারা বান্দাদের একটু সুনজর কামনা করি। আল্লা ইনসানকে সৃষ্টি করেছেন ইনসানের  কল্যানের জন্য। ইনসানের কল্যানের চিন্তা যে ইনসান করে স্বয়ং আল্লা সেই ইনসানের জামিনদার হয়ে যান। মানুষের রোগ তিন হাজারেরও উপরে। ডাক্তার, বিজ্ঞানী আজও তা আবিষ্কার করতে পারে নাই। এই আল্লার আয়াত আপনাদের সমস্ত বালা মুছিবত দূর করে দিবে ইনশাল্লাহ।

তখনো লোকটির কথা কেউ শুনছে না। কারণ এমন কথা তারা অনেক শোনে থাকে। যখনি লোকটি বলে, আল্লার পেয়ারা বান্দারা এই আয়াতের জন্য কোনো প্রকার হাদিয়া দিতে হবে না তখনই সবার মনোযোগের দরজা সজাগ হয়ে গেল। তখন যাত্রীরা একে একে সবাই আল্লার আয়াত নিতে লাগলো। অনেকে আবার দুটি করে আল্লার আয়াত নিতে লাগলো।

এইখানে আয়াতের বরকত শেষ হতে পারতো কিন্তু হল না। কারণ হুজুরের অনেক ওয়াজ তখনো অসমাপ্ত। হুজুর আবার ওয়াজ শুরু করে --

আল্লাহতালার এই পবিত্র আয়াত একটি তাবিজের মধ্য দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। তাবিজের মাল-মসলা হতে হবে রূপার এবং তামার। ঝমঝম কূপের পানির মধ্যে তাবিজটি তৈরি করার সাথে সাথে একদিন ডুবিয়ে রাখতে হবে, তারপর.... ।

খোদার কসম এইভাবে তাবিজ তৈরি করার পর যখন আল্লার এই পবিত্র আয়াত ব্যবহার করবেন তখন আপনার শরীরে মৃত্যু ব্যতীত অন্য কোনো রোগ থাকবে না।
সবার প্রফুল্ল চেহারা তখন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।

তখন হুজুর আবার বলে চলল--

আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে আমি নিজেই তাবিজ তৈরি করে এনেছি। তাবিজ তৈরি করতে আমার খরচ হয়েছে চল্লিশ টাকা। আপনাদের জন্য মাত্র বিশ টাকা, বিশ টাকা। এই পোশাকের ভেতরে যদি কোনো মানুষ থেকে থাকে কসম খোদার মৃত্যু ব্যতীত আপনাদের অন্য কোনো রোগ থাকবে না।

তখন প্রত্যেক ফাও-খাওয়া-সদস্য একটি করে তাবিজ নিতে বাধ্য। আর হুজুর তার ব্যবসা চমৎকারভাবে করে চলে গেলেন।
এইভাবেই বাংলাদেশ, বাংলাদেশের বিজনেস প্লান, বাংলাদেশের মার্কেটিং প্লান ( Marketing is nothing but a cheating where minimum input and maximum output is the main warble)।

সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

দিন শেষে সূর্যও বাড়ি ফিরে 

ভাবনা

মানুষ লিখছে। প্রতিনিয়ত লিখছে (যেহেতু  বলতে পারি না I don't think,  বলতে হয় I don't think so)।

কোথায় লিখছে?

মানুষ তার মনে লিখছে। লিখছে বলেই মানুষ কথা বলতে পারে। অবশ্যই অন্ধের দেখার দৃষ্টি অনুভূতিপরায়ণ, চক্ষুস্নায়ু সমেত মানুষের দৃষ্টি দৃশ্যকরণ+...= অন্য রকম। অন্য রকম + অন্য রকম = ভিন্ন রকম = সাহিত্যের জগৎ।

আমি মনে করি লেখা হল কথা অথবা উন্নত কথা। উন্নত কথা বললে আমার doctrine টি সাহিত্যের ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে আংশিক জায়গা পেতে পারে।

একটা সময় গ্রিসের প্রতি তিন জন লোকের মাঝে একজন ছিল সাহিত্যিক(ক্রেতা- বিক্রেতাদের মতে)।

কীভাবে?

তারা সংজ্ঞা অনুবাদ করে সাহিত্যের কাঠামো নির্ধারণ করে নাই। ফলে লেখাকে জাতে তোলার কোনো প্রাদেশিক প্রতিযোগিতা ছিল না। অনুভূতির transfer ছিল আসল কথা।

প্রতিষ্ঠান ( অবশ্যই Nature is the great master)  প্রথা চর্চা করে, সাহিত্য না। ফলে প্রতিষ্ঠানের সাথে সাহিত্যের একটি বিরোধ বিদ্যমান। কারণ মানুষ অনেক বড় ধরনের সংক্রমিত প্রাণি। এক বিষয়, এক কথা তার বেশি দিন ভালো লাগে না। ড্রেস বদলের মতো outlook বদল করা তার সহজাত প্রবৃত্তি। যত বিশ্বায়নের মুখোমুখি মানুষ হবে ততই মানুষ বদলে বিশ্বাসী হবে। বদলে যাবে তার কথা মানে সাহিত্য।

আমার বন্ধুর সাথে কথা বলতে ভেতর থেকে ভাব টেনে আনতে হয় না। তাহলে তথায় কথিত সাহিত্য রচনা করতে ভাব ভেতর থেকে টেনে আনার প্রসঙ্গ থাকবে কেন?
হ্যাঁ থাকবে এই জন্য যে, আমাদের সমাজে এখনো জাতিপ্রথা বিদ্যমান, জাতপ্রথা শক্তিশালী।

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ভোর

লোকটি আমাকে স্বপ্ন দেখায়। নাকি স্বপ্ন শেখায়? কিছুই ধরতে পারি না।

অধরা। অধরা।

লোকটিকে আমার নদী মনে হয়, যে নদী প্রতিনিয়ত পার ভাঙ্গে সেই নদী। আমি কি তাহলে নদীভাঙা পার? ভেঙে ভেঙে আমিও যে নদী হয়ে গেছি লোকটি বুঝিতে পারে কী? নাকি পারা না-পারা এমন কিছুই তার বেলায় প্রযোজ্য নয়?

ভোর হলো। হাঁটছি। সূর্যরশ্মি ঠিকঠাক থাকবে। ঠিকঠাক ছিল না লোকটি। নগ্ন পায়ে হাঁটছে। দেখলাম তার পা বেয়ে আরেকটি ভোর নেমে এল। এই ভোরে কোনো সময় সূর্যরশ্মি ঠিকঠাক থাকে না। অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই। কারণ অন্ধকার আলো চায়, সবুজ আলো হলেও চলবে।

কিন্তু এ কেমন ভোর অন্ধকার চাষ করে?

চাওয়া

একটি জায়গা চেয়েছিলাম
এমন জায়গা যা নিলামে বিক্রি হয় না
একটি সুর শুনতে চেয়েছিলাম
এমন সুর যা বাজারী হয় না
এক কাপ চোখের জল চেয়েছিলাম যা দিয়ে বানানো হবে অর্ধকাপ ফুরফুরে লাল চা

চেয়েছিলাম মানে চাওয়াকে সমর্পিত করা পাওয়ার ভেতর, পাওয়াকে মৌলিক করে তুলা দেনাদের ভেতর

একটি ব্যক্তিগত ডায়রি থাকতেই পারতো যেখানে স্রোত এসে নগ্ন হয়ে যায়, মিলিয়ে দেয় জীবনের সব লেনদেন
অথচ লেনদেন কারেন জালে আটকে গেল, পৃথক এখন চাঁদ আর জোছনা
প্রত্যেকের কাছে প্রত্যেকে তাইতো ব্যক্তিগত ভাবনা

বানরের

বানরের বংশধর বাদাম পছন্দ করে
বাদাম পেলেই জমে ওঠে খেলা
নৃত্যের বিভিন্ন মুদ্রা, ঠোঁটের নিচে বাঁকা হাসি, জলকেলি, কালো বাড়ি
বানরের বংশধর মূলত বাদাম পেলেই খুশি

বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

মশার দৌড় রক্ত পর্যন্ত 

তোমরা হয়তো নাগরিক মাংস নিয়ে, আমরা এখনো হৃদয় ঘটিত ব্যাপার নিয়ে বড্ড গোঁয়ার 

বাঙালি প্রশ্ন করতে পারে, প্রশ্ন নিয়ে আবিষ্কার করতে পারে না 

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

প্রেমিক

মুসা নবীর যুগের এক পাগল। মুসা নবী যে রাস্তা দিয়ে তুর পাহাড়ে যায় সেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।

মুসা কই যাও?

আল্লার লগে দেখা করতে যাই।

তোমার আল্লারে  একটা কথা জিগাইবা?

কী কথা?

আমি জান্নাতি, না জাহান্নামি?

হ জিগামু।


মুসা নবী তুর পাহাড় থেকে বাড়ি ফিরছে। তখনো সন্ধ্যা নামেনি। সকাল থেকে পাগল রাস্তায় দাঁড়ানো। মুসা নবী আসবে, তার কাছ থেকে সে জানবে তার পরকালীন অবস্থান।


মুসা আল্লারে জিগাইছো?

হ।

আল্লা কী কইছে?

আল্লা কইছে তুমি জাহান্নামি!


তারপর থেকে পাগল আনন্দে নাচতে আরম্ভ করে। সন্ধ্যা থেকে রাত, রাত থেকে সকাল পাগলের আনন্দনাচ শেষ হয় না। সকালে আবার মুসা নবীর সাথে দেখা।


পাগল তুমি তো জাহান্নামি, তো তুমি নাচো ক্যান?

আরে মুসা, আল্লা এতো কোটি কোটি লোকের মাঝে আমার মতো কীট মানুষ রে চিনে এটাই আমার আনন্দ।


মুসা নবীর চোখে জল এসে গেল। মুসা নবী ভাবলেন এতো সুক্ষ্মদর্শী প্রেমিক তো আমিও হতে পারি নাই।


প্রজাপতি,

প্রেম কখনো প্রাপ্তির মানে নির্ধারিত হয় না। প্রেম অন্তরের গোপন গুহায় মিটমিট করে জ্বলতে থাকা এক জোঁনাকি পোকা-- যতনে বাড়ে তার আলো, অযতনে আরো বেড়ে যায়, আরো বেড়ে যায় তার স্রোত, নদী, আলো।

তোমার দেয়া গালি আমার কাছে প্রমিত সুর হয়ে যায় যা শুনে কখনো বিরক্তি আসে না। কী ঝরণাময়া তোমার গালি! ধীরে ধীরে গালির মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

গালি শুনতে আমার ভালো লাগে। কারণ গালির মধ্য দিয়ে মানুষের অপছন্দের জায়গাগুলো সনাক্ত করা যায়। মানুষ যা অপছন্দ করে ছোট্ট সুবিধার কারণে তাই নিয়ে  গড়ে তুলে আরেক গালিমি জীবন। তাইতো তাদের গালি গদ্যময়।
আর তোমার গালি ইশ্বরের মতো সংলাপধর্মী।

ইশ্বরকে অন্তরে উপলব্ধি করতে মানুষ কত সাধনা করে। আমিও হয়েছি সাধক, প্রজাপতির সাধক। যদি একবার তোমার উপলব্ধি আমার অন্তরে মন্দিরের ঘণ্টার মতো বেজে ওঠে তাহলে তোমার দেয়া গালির মর্যাদা আংশিক হয়তো রক্ষা করতে পারবো।

মুসা নবীর যুগের সেই প্রেমিক পাগল হয়তো আমি নই, তারপরও পাগলটিকে আমার অনেক ভালো লাগে। আর মানুষের যা ভালো লাগে ধীরে ধীরে মানুষ তাই হয়ে যায়।
নাকি পাগল হয়েই আছি? নতুবা সংসার সীমান্ত গল্পের রজনীকে এতো মনে পড়ে কেন? কেন মনে পড়ে ডাকঘর নাটকের সেই অমৃত সংলাপ-- সুধা তোমাকে ভুলে নি।

প্রজাপতি,

তুমি কী অমলের সুধা হবে? তা হলেও অন্তত মৃত্যুর কিংবদন্তী তৃষ্ণা থাকবে না আমার,
থাকবে না আমার।

রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫



নারীকে প্রথম দর্শনে যতটুকু সুন্দর দেখায় ততটুকু সুন্দর সে নয়, নারীকে প্রথম দর্শনে যতটুকু কুৎসিত দেখায় ততটুকু কুৎসিত সে নয়।



আলোর সঠিক নিচে থাকে বেশ্যা অন্ধকার।



অসীম সাহসী ছোট মশা আমার প্রিয়ার হৃদয়কেও রক্ত ভাবে।



স্বর্গের কোথায় প্রজাপতি নামে একটি মন্দির আছে যেখানে পূজারত অবস্থায় দ্বিতীয়বার মৃত্যুবরণ করা যায়?



অন্ধ আর বোবাদের প্রেম প্রেমের মহাকাব্য--     দৃষ্টিভ্রমহীন, বচন সংকট মুক্ত অনুভূতির মেঘ।



রক্তাক্ত= রক্তের দাগ।
বেদনা= মন বদ করার চিৎকার।



অসংখ্য অসুখ নিয়ে একজন সুখী মানুষ।



ইট হতে গেলে আগুনের সাথে বন্ধুত্ব থাকা আবশ্যক



দরজা খোলা রেখেছি চোরের সুবিধার জন্য নয়, চোরের মতো বের হয়ে যাওয়ার জন্য।

১০

গালির সীমানা প্রাণির পছন্দের সীমানা, ঢেউ জলের স্বপ্ন। 

শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আমরা মানুষ

ইলেকট্রন। প্রোটন। নিউটন। কোয়ার্ক। একসময় সময়ের চরে ভেসে উঠে প্রাণী। প্রাণী থেকে বিস্তৃর্ণ প্রাণিমাঠ। প্রাণিমাঠ থেকে মানুষের ইতিহাস। জন্ম থেকে প্রাণীকে প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয়। মানুষকেও যুদ্ধবিদ্যা আয়ত্ত করতে হয়েছে। মানুষ যুদ্ধে সমকালীন পারদর্শী। জ্ঞানের রাজ্যে ভ্রমণ করে জানতে পারি যে মানুষই প্রকৃতিরাজ্যের নায়ক, অন্যভাবে বললে 'চালাক শোষক'। প্রকৃতির প্রত্যেকটি বিভাগে মানুষ তার প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট রয়েছে, সফলও হচ্ছে। মানুষের ইতিহাস তাইতো প্রভাব বিস্তারের ইতিহাস যেখানে টিকে থাকা আসল কথা, পাপ-পুণ্যের প্রশ্ন অবান্তর।

মানুষ প্রথমে অভ্যাস তৈরি করে। পরে অভ্যাস মানুষকে চালিত করে। অভ্যাস সব সময় চাহিদাকে সামনে রেখে গঠিত হয় এমন নয়, চাহিদার আয়োজনকে ফাঁকি দিয়েও সে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে থাকে । অভ্যাস জন্মগত নয়, জন্মমাত্র মানুষের অভ্যাস থাকে। শব্দ উচ্চারণের অভ্যাসে ভাষার জন্ম। ভাষার জন্মের শুরুর দিকে বর্ণ বলে কিছু ছিল না , ছিল না ভাষার লিখিত রূপ। ভাষা কেবল ভাব বিনিময়ের হাতিয়ার। ভাবনার সাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে ভাববলয়। সমাজ, জাতি, পরিবার, গঠনে ভাববলয় অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। প্রয়োজনের স্রোত ভেসে দৃশ্যায়িত হয় বর্ণপরিবার। মুখে মুখে উচ্চারিত শব্দকে বৈজ্ঞানিক করার প্রচেষ্টা। মুখের উচ্চারিত শব্দমালা গাছের পাতায়, খাতায়, গুহায় সংগৃহীত হতে থাকে।সূর্য যেহেতু পৃথিবীর সকল প্রান্তে সমানভাবে  কিরণ দেয় না, সেহেতু সব এলাকার মানুষের মানসিক বিস্তার এক নয়।
শব্দ কিংবা শব্দমালা মানসিকতার একক। তাই শব্দের জাতীয় পরিচয়ে মানুষের মধ্যে জন্ম হয় জাতিগত বিভেদ। ধর্ম তখনো মূখ্য ছিল না। জাতিগত বিভেদকে নিজস্ব অধীনে সফল রাখার তাগিদে তৈরি হয় ধর্মের ঢামাঢোল।

আর আজ!

ধর্মের পার্থক্য সবচেয়ে বড় পার্থক্য! ধর্মের কারণে আমরা ভুলে গেছি আমাদের জন্মগত পরিচয়-- আমরা মানুষ।

প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে মানুষের আবর্তন-বিবর্তন। প্রয়োজন মানুষের মানবিক গুণের একক। প্রয়োজনের জায়গা থেকে মানুষ পশু শিকার করে, একই প্রয়োজনের জায়গা থেকে মানুষ পশুপরিবারে সন্ত্রাস হিসেবে তালিকাভুক্ত। 'প্রয়োজন' শব্দটি যখন মানুষের নিজ পরিবারের দিকে ছুটে আসছে তখনই 'বিপ্লব' হচ্ছে 'বিদ্রোহ', 'বিদ্রোহ' হচ্ছে 'বিপ্লব' ।

তারপরও আমরা প্রয়োজনের একটা মান নির্ধারণের চেষ্টা করি। প্রয়োজনকে তালিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই যাতে পাগলা ঘোড়া লাগামছাড়া না হয়। আর প্রয়োজনের প্রায়োগিক মানদণ্ড `মানুষ মানুষের জন্য', `জীবন জীবনের জন্য'। তালিকা নির্ধারনে ব্যক্তিরুচির চেয়ে যখন ভোক্তারুচি মূখ্য হয়ে উঠে তখনই প্রদর্শিত সিনেমার নাম `হুমকি', `বিশৃঙ্খলা', `ভাত দে হারামজাদা '।

সময়ের প্রাসঙ্গিকতায় মানুষের শেকড়মুখী প্রয়োজন দুই ধরনের

এক- বেঁচে থাকার প্রয়োজন

দুই- বিকশিত হওয়ার প্রয়োজন

বিকশিত প্রতিভা'র জায়গা থেকে মানুষ মূলত মানুষ। মানুষ খুব করে বিকশিত হতে থাকে যখন সে ভাবনার আদান-প্রদান যন্ত্রের সাথে পরিচিত হয়। ভাবনার আদান-প্রদানের যন্ত্রটির নাম 'ভাষা'।

পৃথিবীর প্রত্যেক ভাষার Syntax প্রায় (Sub-verb-object)এক। তাহলে আমরা বলতেই পারি মানুষের মানসিক গাঠনিক পর্যায়টা এক। আজকে মৌলবাদী বলতে আমরা যা বুঝি তা সৃষ্ট মৌলবাদী, প্রকৃত মৌলবাদীর জায়গায় মানুষ কখনো মানুষের শত্রু হতে পারে না। তাই মানুষ যে কোন উপায়ে মানুষের বিরুদ্ধে যখন রাজনীতি করে তা কখনো রাজনীতির পর্যায়ভুক্ত না। মানুষের বিরুদ্ধে যা কিছু যাবে তাই লিটলবয়, ফ্যাটম্যান, মানব অস্থিত্বের ধ্বংসের মরণাস্ত্র।

মানুষের মানসিক বিস্তার এক না হলেও মানসিক বিস্তারের কোষ যে পরিবেশ থেকে শক্তি লাভ করে তা কিন্তু এক। একক জায়গার কথা চিন্তা করে আমাদের ভ্রমণ একমুখী হলেই পৃথিবী মানুষের বাসযোগ্য হয়ে উঠবে ।
আশার কথা হল মানুষের দ্বন্দ্বের জায়গাগুলো সৃষ্ট,আর মৈত্রীর জায়গাগুলো প্রাকৃতিক। মানুষ যত চৈতন্যের কাছাকাছি যাবে ততই মানুষ প্রাকৃতিক হয়ে উঠবে।

প্রাকৃতিক মানুষ কেমন?

প্রাকৃতিক মানুষ অন্তত নিজ সম্প্রদায়কে প্রতিযোগী মনে করে না। প্রাকৃতিক মানুষ প্রকৃতির মতো সাহসী, উদার। বেঁচে থাকা তাদের কাছে প্রথম এবং শেষ কথা নয়, বাঁচানো তাদের বেঁচে থাকার মতো জন্মউদ্দেশ্য।

বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

নায়ক

যখন সে সিংহাসনে তখন সে রাজা
যখন সে যুদ্ধের ময়দানে তখন সে সৈনিক
যখন সে মঞ্চে তখন সে বক্তা
যখন সে মাঠে তখন সে খেলোয়াড়
যখন সে রাজনীতিবিদ তখন সে দূরদর্শী
যখন সে ছাত্র তখন সে বিনয়ী
যখন সে প্রেমিক তখন সে শিশু



আমি এমন একজন মানুষ চাই
আমরা এমন এক নায়ক চাই
আমাদের এমন এক নেতা প্রয়োজন 

বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

দরবার

হাওনের আগে দরবারের পরে


এটি আঞ্চলিক প্রচলিত কথা। খাবারের আগে কেন যেতে হবে? কারণ পরে গেলে ভালো খাবার পাওয়া যাবে না। দরবারের শেষে আলোচনা জমে বেশ। আলোচনা জমে ওঠার চেয়ে বড় কথা অল্প সময়ে সমাধান জানা যাবে। অর্থাৎ চা স্টলের হিংসাত্মক আলোচনা করার বিষয় কে বা কি হয়ে উঠবে তা স্পষ্ট হবে।


দরবার একটি সামাজিক বিচারালয় যেখান থেকে সামাজিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। সামষ্টিক সমস্যা সমাধানের শিক্ষা দরবারে চর্চিত হয়ে থাকে। কতটুকু সুস্থ চর্চা হয় এই প্রশ্ন করাই যেতে পারে। তবে গ্রামীণ মানুষের গ্রামীণ বিচারালয় যে দরবার এই ব্যাপারে কারো সন্দেহ থাকার কথা না।


প্রচলিত কথাটির মধ্য দিয়ে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট যে এখানে খাবারের জন্য প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেক মানুষকে প্রতিযোগী মনে করে। এখনো মৌলিক চাহিদার ব্যাপারে যে সম্প্রদায় একে অন্যকে প্রতিযোগী মনে করে তারা কীভাবে আন্তর্জাতিক মানুষ হয়ে ওঠবে?


জন্ম-মৃত্যু-খাদ্য এই তিন চক্রনেমি গ্রামীণ সমাজের ভাগ্য। ফলে দেখা যায় একদিন ভালো কোনো খাবারের ব্যবস্থা হলে পেটে-পীঠে এক সাথে সংগ্রহ করে।

আর দরবারের কর্তা হয়ে ওঠে তারাই যাদের আর্থিক সক্ষমতা আছে। কর্তা বাবুর আদেশ আবশ্যিকভাবে অন্যদের মেনে নিতে হয়। কারণ কর্তা বাবুর আদেশের সাথে যে হুকুম মান্যকারীদের অর্থনৈতিক ভাগ্য জড়িত।

মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

প্রশ্ন

এখানে প্রশ্ন করা নিষিদ্ধ। কারণ এই শহরের প্রধান দরজায় প্রেম আর বিশ্বাস তালা হয়ে ঝুলে আছে। মৃত্যুই একমাত্র চাবি যার মাধ্যমে তালা খুলবার প্রতিশ্রুতি আছে।