আজ গোধূলী পার্লারে থাকবে না। থাকবে না এমন নয়, থাকার মতো অবস্থা নেই। গোধূলী বাসায় যেতে চায় কিন্তু আজকের জন্য বাসায় যেতে মানা।
গোধূলী পার্লারের ছোট্ট একটি কামড়ায় থাকে। চিকন একটি বেড। বেডের সাথে আয়না। রাত যত গভীর হয় আয়নাটা তত স্বচ্ছ হতে থাকে। স্বচ্ছ আয়নায় অতীতের লোমহর্ষক স্মৃতি ভাসতে থাকে অবিরাম। অতীতের স্মৃতি গোধূলীকে ভয়ার্ত করে তোলে। অতীত মানে জীবন্ত স্মৃতির মৃত কবর। রাত গভীর হলেই গোধূলী কবরে শুয়ে ভবিষ্যৎ নির্মাণ করে। চোখের জল গড়িয়ে পড়ে চিন্তাকে স্যাঁতস্যাঁতে করে দেয়। আয়নায় চোখের জল, কিছু ভাবী হতাশা, হাহাকারকে জমা করে একসময় ঘুম আসে গোধূলীর পৃথিবীতে।
সখিনা বেগম। গোধূলীর মা। আরজ আলী। গোধূলীর বাবা। আরজ আলী গোধূলীকে তালাক দিয়েছে গোধূলী যখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। গোধূলীর মা একজন সাংবিধানিক সঙ বেছে নিয়েছে ; বাবাও। সখিনা বেগমের খোঁজ- খবর নেয়ার মতো বন্ধু অনেক। সখিনা বেগমের বর্তমান স্বামী এস, আই। চাকরির প্রয়োজনে ছয় দিনই বাড়ির বাইরের থাকে । ছয়দিনই গোধূলী বাসাতে থাকতে পারে । কিন্তু সে থাকে না। যদিও সে দিনে বাসাতে যায়, রাতে তার দম বন্ধ হয়ে আসে, মানসিক দম। রাতের বাসাটি বেশ আরামদায়ক, বাসযোগ্য। আরামদায়ক বাসযোগ্য বাসাটিতে গোধূলী পুরুষের গন্ধ খুঁজে পায়। রাতেই তা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে, হতে হতে গোধূলীর শরীরের এসে ধাক্কা লাগে ; যে ধাক্কা সে সহ্য করতে পারেনা, মেনে নিতে পারে না, অমান্য করার সাহস তার নেই।
ইতি, মিলি, সাথি পার্লারের স্টাফ। তাদের কাজ শুরু হয় সকাল দশটায়, শেষ হয় রাত আটটায়। মাঝেমধ্যে গোধূলীকে তাদের কাজে সহায়তা করতে হয়। এমনিতে গোধূলী এ্যাকাউন্টের দায়িত্বে । রাত দশটার পর সে তাদের জীবনের গল্প শুনে। তারা গল্পের শুরু করে কিন্তু শেষ করতে পারেনা। কারণ শেষ পর্বটি তাদেরও জানা নেই, জানানো হয়নি। অসমাপ্ত গল্প শুনে সে কবরের মতো রুমটিতে চলে যায়, আয়নার সাথে কথা বলে। কিন্তু আজ সে পার্লারে থাকবে না। ইতি, মিলি, সাথির শরীরের পুরুষের কাচা গন্ধ। এই গন্ধ তাকে অস্থির করে তুলছে।
সে যাবে কোথায়?
শহরটিতে জায়গার অভাব নেই, মানসিক স্বস্তি পাওয়ার মতো জায়গা বড়ই অভাব!
গোধূলীর তখন পাঁচতলার আন্টির কথা মনে পড়ে। সাবিহা আন্টি। তিনি মায়ের ভাষায় কথা বলেন। স্নেহভরা কণ্ঠ। বিনয়ের রসে টল টল। তিনি প্রায় বলেন,
" মা, তোমার কাকু শুক্রবারে শুধু বাসায় আসে, সরকারি কাজ, ছুটি পাইনা, পার্লারে তোমার ভালো না লাগলে, সোজা আন্টির বাসায় চলে এসো।"
আজ গোধূলী আন্টির বাসায় যায়। আন্টির বাসায় কড়া নাড়ে। আন্টি দরজা খুলে।
" মা এসেছো, আসো "
আন্টির চারটে রুম। গেস্ট রুমের পাশের রুম থেকে একটি লোক বেরিয়ে আসে। আন্টির বয় ফ্রেন্ড। গোধূলীর চোখের দিকে লোকটি তাকায়। গোধূলী তার চোখে চোখ রাখার সাহস পায়না। গোধূলী একবার মায়ের বাসার দিকে তাকায়, একবার পার্লারের দিকে তাকায়, আরেকবার আন্টির দিকে তাকায়। সবখানে সে একই গন্ধ অনুভব করে, পুরুষের গন্ধ।
গোধূলী ছাদে চলে যায়। কম্বল মুড়িয়ে বসে থাকে। সে এক কোণে একটি ছায়া দেখতে পায়। পুরুষের ছায়া। যে পুরুষের শরীরে একদিন সে প্রেমের গন্ধ পেয়েছিল। আজ সে-ই পুরুষের শরীরে কেবলই পুরুষের গন্ধ। ছায়াকে সে অতিক্রম করতে পারেনা। গোধূলীর চোখে জল আসে। জলের কাছে সে জানতে চায়,
" জল, আমার পরম বন্ধু, তোমার শরীরেও কী একদিন পুরুষের গন্ধ ফুটবে? "
গোধূলী পার্লারের ছোট্ট একটি কামড়ায় থাকে। চিকন একটি বেড। বেডের সাথে আয়না। রাত যত গভীর হয় আয়নাটা তত স্বচ্ছ হতে থাকে। স্বচ্ছ আয়নায় অতীতের লোমহর্ষক স্মৃতি ভাসতে থাকে অবিরাম। অতীতের স্মৃতি গোধূলীকে ভয়ার্ত করে তোলে। অতীত মানে জীবন্ত স্মৃতির মৃত কবর। রাত গভীর হলেই গোধূলী কবরে শুয়ে ভবিষ্যৎ নির্মাণ করে। চোখের জল গড়িয়ে পড়ে চিন্তাকে স্যাঁতস্যাঁতে করে দেয়। আয়নায় চোখের জল, কিছু ভাবী হতাশা, হাহাকারকে জমা করে একসময় ঘুম আসে গোধূলীর পৃথিবীতে।
সখিনা বেগম। গোধূলীর মা। আরজ আলী। গোধূলীর বাবা। আরজ আলী গোধূলীকে তালাক দিয়েছে গোধূলী যখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। গোধূলীর মা একজন সাংবিধানিক সঙ বেছে নিয়েছে ; বাবাও। সখিনা বেগমের খোঁজ- খবর নেয়ার মতো বন্ধু অনেক। সখিনা বেগমের বর্তমান স্বামী এস, আই। চাকরির প্রয়োজনে ছয় দিনই বাড়ির বাইরের থাকে । ছয়দিনই গোধূলী বাসাতে থাকতে পারে । কিন্তু সে থাকে না। যদিও সে দিনে বাসাতে যায়, রাতে তার দম বন্ধ হয়ে আসে, মানসিক দম। রাতের বাসাটি বেশ আরামদায়ক, বাসযোগ্য। আরামদায়ক বাসযোগ্য বাসাটিতে গোধূলী পুরুষের গন্ধ খুঁজে পায়। রাতেই তা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে, হতে হতে গোধূলীর শরীরের এসে ধাক্কা লাগে ; যে ধাক্কা সে সহ্য করতে পারেনা, মেনে নিতে পারে না, অমান্য করার সাহস তার নেই।
ইতি, মিলি, সাথি পার্লারের স্টাফ। তাদের কাজ শুরু হয় সকাল দশটায়, শেষ হয় রাত আটটায়। মাঝেমধ্যে গোধূলীকে তাদের কাজে সহায়তা করতে হয়। এমনিতে গোধূলী এ্যাকাউন্টের দায়িত্বে । রাত দশটার পর সে তাদের জীবনের গল্প শুনে। তারা গল্পের শুরু করে কিন্তু শেষ করতে পারেনা। কারণ শেষ পর্বটি তাদেরও জানা নেই, জানানো হয়নি। অসমাপ্ত গল্প শুনে সে কবরের মতো রুমটিতে চলে যায়, আয়নার সাথে কথা বলে। কিন্তু আজ সে পার্লারে থাকবে না। ইতি, মিলি, সাথির শরীরের পুরুষের কাচা গন্ধ। এই গন্ধ তাকে অস্থির করে তুলছে।
সে যাবে কোথায়?
শহরটিতে জায়গার অভাব নেই, মানসিক স্বস্তি পাওয়ার মতো জায়গা বড়ই অভাব!
গোধূলীর তখন পাঁচতলার আন্টির কথা মনে পড়ে। সাবিহা আন্টি। তিনি মায়ের ভাষায় কথা বলেন। স্নেহভরা কণ্ঠ। বিনয়ের রসে টল টল। তিনি প্রায় বলেন,
" মা, তোমার কাকু শুক্রবারে শুধু বাসায় আসে, সরকারি কাজ, ছুটি পাইনা, পার্লারে তোমার ভালো না লাগলে, সোজা আন্টির বাসায় চলে এসো।"
আজ গোধূলী আন্টির বাসায় যায়। আন্টির বাসায় কড়া নাড়ে। আন্টি দরজা খুলে।
" মা এসেছো, আসো "
আন্টির চারটে রুম। গেস্ট রুমের পাশের রুম থেকে একটি লোক বেরিয়ে আসে। আন্টির বয় ফ্রেন্ড। গোধূলীর চোখের দিকে লোকটি তাকায়। গোধূলী তার চোখে চোখ রাখার সাহস পায়না। গোধূলী একবার মায়ের বাসার দিকে তাকায়, একবার পার্লারের দিকে তাকায়, আরেকবার আন্টির দিকে তাকায়। সবখানে সে একই গন্ধ অনুভব করে, পুরুষের গন্ধ।
গোধূলী ছাদে চলে যায়। কম্বল মুড়িয়ে বসে থাকে। সে এক কোণে একটি ছায়া দেখতে পায়। পুরুষের ছায়া। যে পুরুষের শরীরে একদিন সে প্রেমের গন্ধ পেয়েছিল। আজ সে-ই পুরুষের শরীরে কেবলই পুরুষের গন্ধ। ছায়াকে সে অতিক্রম করতে পারেনা। গোধূলীর চোখে জল আসে। জলের কাছে সে জানতে চায়,
" জল, আমার পরম বন্ধু, তোমার শরীরেও কী একদিন পুরুষের গন্ধ ফুটবে? "
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন