ঠিকানা। বাসের নাম। লোকাল বাস। জাতীয় মানের লোকাল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থামে না। হাতইশারায় থামে। থামলো। আমি আর সোহেল ভাই বাসে উঠলাম।
হিমউৎসবের হাত ধরে জাহাঙ্গীরনগর আসা। উৎসবটি বেশ মুগ্ধকর। প্রথমবারের মতো ওয়াজের মতো করে গান শুনলাম।
আড়াইসিধার শীতকাল মানে ওয়াজ-মাহফিল। ওয়াজ শুনে শুনে আড়াইসিধার প্রত্যেকটি শিশু বড় হতে থাকে। আসমানের ওয়াজ। আসমান থেকে হুজুর ধীরে ধীরে জমিনে নেমে আসেন। সবার কন্ঠে সুবহানাল্লাহ।
সিট খালি নেই। পেছনের সিট খালি। ভাই পেছনের সিটে বসে গেলেন। আমি দরজায় দাঁড়িয়ে দৌঁড়ানো দৃশ্য দেখছি। দরজার পাশের সিটটি খালি হলো। বসলাম। জানালার পাশে বসতে চাইলাম। লোকটি বসে গেলেন। জানালার পাশে যেন বসতে পারি লোকটিকে বললাম। লোকটি বললেন 'না'। কিছুক্ষন চুপ করে থাকি। তারপর ... তাকে আস্তে করে বললাম বমি কী আপনার উপরে করবো, না জানালা দিয়ে সোজা বাইরে ফেলে দিবো!? লোকটি বসেন বসেন বলে সুন্দর করে জায়গা ছেড়ে দিলো। মনে মনে হাসলাম।
আপনার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ?
কীভাবে বুঝলেন?
যেভাবে জানালার পাশে সিটটা নিয়ে নিলাম সেইভাবে।
লোকটি চমৎকার এক হাসি দিলেন। হাসিতে শব্দ নেই, প্রান আছে। জানালার পাশে আমি। গতিময়তার সাথে আমি।
আমিন বাজার ব্রিজ। তুরাগ নদী। তুরাগ নদী স্রোত হারিয়ে আজ বাজার । নারী আর নদী যৌবনের সমান বয়সী। যৌবন শেষে নারী হয়ে যায় স্মৃতির কাবাব আর নদী উদাম বাজার।
এই রাস্তায় পড়ে আছে তারেক মাসুদের রক্ত। যৌবন রক্ত। তারেক মাসুদ মানে মাটির ময়না। তারেক মাসুদ মানে রানওয়ে। মাটির ময়না ও রানওয়ে অতি সত্যের হাতছানি-- কারো জন্য হুমকি। পুঁজিবাজার খুব গরম একটা জিনিস, হুমকি সহ্য করতে পারে না। তাই এই রাস্তা জানে তারেক মাসুদ আজ কোথায়!
কোথায় যাবেন?
নিউমার্কেট।
ভাড়া দেন।
কত?
নব্বই টাকা।
একশত টাকার একটি নোট দিলাম। দুইজনের ভাড়া চল্লিশ টাকা। কিন্তু দশ টাকা ফেরত দিল।
আরও পঞ্চাশ টাকা ফেরত দাও।
মামা যত ভাড়া ততই রাখছি।
তাহলে নিউমার্কেট গিয়ে পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দিও, আর একটিও শব্দ খরচ করবো না।
আমার পাশে বসা লোকটি হাসছেন। টিটু একদিন এমন করে হেসেছিল।
টিটু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ে। লেখালেখিও করে। আমার পাশে সূচনা বসা। সূচনা জানালার পাশে। আমার ডান পাশে টিটু। সূচনা ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র এবং বাসে বমি করার অভ্যাস আছে। বাস চলছে। সূচনা গম্ভীর হয়ে আসতেছে। শুরু করলাম সূচনার সাথে কথা।
সূচনা বমি বমি লাগছে?
হুম।
আমারও বমি করার অভ্যাস আছে। আজকে দুজনে একসাথে বমি করবো। আজকে সারা বাস আমাদের বমি করার প্রতিযোগিতা দেখবে। আমি নিশ্চিত আমি ফার্স্ট হবো।
তুমি বমি কর কত বছর বয়স থেকে?
ছোট কাল থেকে।
তাহলে বমি করার অভিজ্ঞতা আমার তোমার চেয়ে বেশী।
কীভাবে?
আমি যখন আম্মার পেটে তখন আম্মা ঢাকা এসেছিলেন তাঁর বাবাকে বিমান বন্দর থেকে রিসিভ করার জন্য, তাঁর বাবা মক্কাফেরত হাজী ছিলেন তো তাই। আম্মা তখন বাসে বমি করে। আসলে বমি করেছিলাম আমি। কারন আমি তখন আম্মার পেটে।
আমার কথা শুনে সূচনা হাসতে শুরু করে, টিটুও হাসে। হাসি আর কথার মধ্য দিয়ে আমরা কখন যে শাহবাগ পৌঁছে যাই টেরই পেলাম না। সূচনা সেদিন বলেছিল লং ড্রাইভে গেলে আমাকে নিয়ে যাবে। তারপর থেকে সূচনার জীবনে কত লং ড্রাইভ চলে আসে, আমারই শুধু সেই তিন প্রহরের বিল দেখা হলো না!
মামা এই নেন আপনার পঞ্চাশ টাকা।
তাহলে আর চার হাজার নয় শত পঞ্চাশ টাকা কে দিবে?
মামা ভুল হয়ে গেছে, ভুল তো মাইনসেই করে ....
আসলেই ভুল তো মানুষকেই করতে দেখি, যন্ত্র তো ভুল করতে পারে না। যন্ত্র ভুল করলে অকেজো হিসাবে ট্রিট করা হয়, আর মানুষ ভুল করলেও মানুষ।
হিমউৎসবের হাত ধরে জাহাঙ্গীরনগর আসা। উৎসবটি বেশ মুগ্ধকর। প্রথমবারের মতো ওয়াজের মতো করে গান শুনলাম।
আড়াইসিধার শীতকাল মানে ওয়াজ-মাহফিল। ওয়াজ শুনে শুনে আড়াইসিধার প্রত্যেকটি শিশু বড় হতে থাকে। আসমানের ওয়াজ। আসমান থেকে হুজুর ধীরে ধীরে জমিনে নেমে আসেন। সবার কন্ঠে সুবহানাল্লাহ।
সিট খালি নেই। পেছনের সিট খালি। ভাই পেছনের সিটে বসে গেলেন। আমি দরজায় দাঁড়িয়ে দৌঁড়ানো দৃশ্য দেখছি। দরজার পাশের সিটটি খালি হলো। বসলাম। জানালার পাশে বসতে চাইলাম। লোকটি বসে গেলেন। জানালার পাশে যেন বসতে পারি লোকটিকে বললাম। লোকটি বললেন 'না'। কিছুক্ষন চুপ করে থাকি। তারপর ... তাকে আস্তে করে বললাম বমি কী আপনার উপরে করবো, না জানালা দিয়ে সোজা বাইরে ফেলে দিবো!? লোকটি বসেন বসেন বলে সুন্দর করে জায়গা ছেড়ে দিলো। মনে মনে হাসলাম।
আপনার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ?
কীভাবে বুঝলেন?
যেভাবে জানালার পাশে সিটটা নিয়ে নিলাম সেইভাবে।
লোকটি চমৎকার এক হাসি দিলেন। হাসিতে শব্দ নেই, প্রান আছে। জানালার পাশে আমি। গতিময়তার সাথে আমি।
আমিন বাজার ব্রিজ। তুরাগ নদী। তুরাগ নদী স্রোত হারিয়ে আজ বাজার । নারী আর নদী যৌবনের সমান বয়সী। যৌবন শেষে নারী হয়ে যায় স্মৃতির কাবাব আর নদী উদাম বাজার।
এই রাস্তায় পড়ে আছে তারেক মাসুদের রক্ত। যৌবন রক্ত। তারেক মাসুদ মানে মাটির ময়না। তারেক মাসুদ মানে রানওয়ে। মাটির ময়না ও রানওয়ে অতি সত্যের হাতছানি-- কারো জন্য হুমকি। পুঁজিবাজার খুব গরম একটা জিনিস, হুমকি সহ্য করতে পারে না। তাই এই রাস্তা জানে তারেক মাসুদ আজ কোথায়!
কোথায় যাবেন?
নিউমার্কেট।
ভাড়া দেন।
কত?
নব্বই টাকা।
একশত টাকার একটি নোট দিলাম। দুইজনের ভাড়া চল্লিশ টাকা। কিন্তু দশ টাকা ফেরত দিল।
আরও পঞ্চাশ টাকা ফেরত দাও।
মামা যত ভাড়া ততই রাখছি।
তাহলে নিউমার্কেট গিয়ে পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দিও, আর একটিও শব্দ খরচ করবো না।
আমার পাশে বসা লোকটি হাসছেন। টিটু একদিন এমন করে হেসেছিল।
টিটু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ে। লেখালেখিও করে। আমার পাশে সূচনা বসা। সূচনা জানালার পাশে। আমার ডান পাশে টিটু। সূচনা ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র এবং বাসে বমি করার অভ্যাস আছে। বাস চলছে। সূচনা গম্ভীর হয়ে আসতেছে। শুরু করলাম সূচনার সাথে কথা।
সূচনা বমি বমি লাগছে?
হুম।
আমারও বমি করার অভ্যাস আছে। আজকে দুজনে একসাথে বমি করবো। আজকে সারা বাস আমাদের বমি করার প্রতিযোগিতা দেখবে। আমি নিশ্চিত আমি ফার্স্ট হবো।
তুমি বমি কর কত বছর বয়স থেকে?
ছোট কাল থেকে।
তাহলে বমি করার অভিজ্ঞতা আমার তোমার চেয়ে বেশী।
কীভাবে?
আমি যখন আম্মার পেটে তখন আম্মা ঢাকা এসেছিলেন তাঁর বাবাকে বিমান বন্দর থেকে রিসিভ করার জন্য, তাঁর বাবা মক্কাফেরত হাজী ছিলেন তো তাই। আম্মা তখন বাসে বমি করে। আসলে বমি করেছিলাম আমি। কারন আমি তখন আম্মার পেটে।
আমার কথা শুনে সূচনা হাসতে শুরু করে, টিটুও হাসে। হাসি আর কথার মধ্য দিয়ে আমরা কখন যে শাহবাগ পৌঁছে যাই টেরই পেলাম না। সূচনা সেদিন বলেছিল লং ড্রাইভে গেলে আমাকে নিয়ে যাবে। তারপর থেকে সূচনার জীবনে কত লং ড্রাইভ চলে আসে, আমারই শুধু সেই তিন প্রহরের বিল দেখা হলো না!
মামা এই নেন আপনার পঞ্চাশ টাকা।
তাহলে আর চার হাজার নয় শত পঞ্চাশ টাকা কে দিবে?
মামা ভুল হয়ে গেছে, ভুল তো মাইনসেই করে ....
আসলেই ভুল তো মানুষকেই করতে দেখি, যন্ত্র তো ভুল করতে পারে না। যন্ত্র ভুল করলে অকেজো হিসাবে ট্রিট করা হয়, আর মানুষ ভুল করলেও মানুষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন