বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৫

উট

সবুজ মাঠ। সবুজ মাঠের সামনে পাগলা নদী। বেশ নরম সুরে বৃষ্টি হচ্ছে। ঝিরঝির বৃষ্টি, ঝিরঝির হাওয়া। সবুজ মাঠে বসা উট আর তার একমাত্র শিশু। শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিবার, মা শিশুর প্রাথমিক শিক্ষক। অনেক,  অনেক জিজ্ঞাসা জন্ম হয় শিশুছাত্রের সাদা প্লেটে। উত্তর দিতে মা প্রস্তুত থাকে প্রফুল্লচিত্তে।

 উটশিশু :  মা, তোমার চোখে এতো পাপড়ি কেন?

উট :  বাবু রে, মরুভূমিতে প্রচুর বালিঝড় হয়ে থাকে, পাপড়ি আমাদের চোখকে রক্ষা করে।

উটশিশু : হুম।  পীঠে কুঁজ এই কারণেই?

উট : আমরা তো বাবু মরুভূমির জাহাজ। প্রচুর মালামাল বহন করতে হয়, কুঁজটি বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। কুঁজসিট মানুষের আয়েশী এলাকাও বটে।

উটশিশু : তোমার চেরা খুর আছে বুঝলাম কিন্তু তার নিচে আবার নরম প্যাড কেন?

উট : (উটের দীর্ঘশ্বাস)। জাহান্নাম দেখি নাই। জাহান্নামের আগুনের কথা শুনছি। আমরার তো জান্নাত- জাহান্নাম নাই তবে  মরুভূমির বালুই আমাদের  জাহান্নাম। আর পায়ের নিচের নরম প্যাডটি আমাদের লাইফবুট।
হুন বাবা তরে আরেকটি কথা কই, মরুভূমিতে পানির বড় ক্রাইসিস। আর আমাদের একটি বিশেষ থলে আছে যেখানে আমরা অনেকদিন পানি সংরক্ষণে রাখতে পারি। মানুষ আমাদের এই গুণের কথা জানে। আমাদের এই বিশেষ গুণের জন্য আমাদের বিশেষ কদর মরুভূমির মানুষের কাছে, আমাদের এই বিশেষ গুণটি আবার আমাদের বিশেষ মৃত্যুর কারণ।

উটশিশু : তোমার সব কথা বুঝলাম। বুঝলাম আমাদের জন্ম মরুভূমির মানুষের জন্য, আমাদের দৈহিক গঠন মরুভূমির আদলে।
তবে আমরা বাংলাদেশে কেন?
কেন জলাভূমি এলাকায়?

উট এই প্রশ্নের উত্তর জানে না, উত্তর জানে আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ। মানুষও জানে না, জানে মানুষের সুবিধাভোগী মন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন