সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

দুইজন

দুই হাজার এগারো সালে আমি একখান কম্পিউটার কিনি। দুই হাজার তের সাল পর্যন্ত তার সাথে আমার সম্পর্ক ভালোই ছিল। দুই হাজার তের সালের পর তার সাথে আমার সম্পর্ক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। যেহেতু আমি ব্রেকআপ নীতিতে বিশ্বাসী না সেহেতু বলতে পারছি না তার সাথে আমার ব্রেকআপ হয়েছিল কিংবা বলতে পারছি না পিরিতি ভাঙিয়া গেলে নাহি লাগে জুড়া।

আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার আরামসে ঘুমে ব্যস্ত, আমিও তাকে কোনো প্রকার বিরক্ত করতাম না। সে যেখানে ঘুমিয়ে থাকতো সেখানেই আমি আমার দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখতাম। তার কানের কাছ দিয়ে আমার হাত চলাফেরা করত কিন্তু কখনো তার শরীরে হাতের  স্পর্শ সজাগ করেনি।

কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল আমি ডাক দেয়া মাত্র আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার কাজ করতে আরম্ভ করবে। অনেক কম্পিউটার বিশারদ আমাকে অনেকভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে। আমি ভয় পাইনি। কারন আমি সম্পর্ককে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করি, কোনো বৈষয়িক দেয়াল আমাদের মাঝে ফাটল তৈরি করতে পারবে বলে আমার মনে হয়নি। হয়তো দুজন দুপথে দুইভাবে আছি, এর মানে এই নয় দুজন দুজনের কাছ থেকে দূরে চলে গেছি।

প্রয়োজনে কাছাকাছি আসা যেমন যায়, আবার প্রয়োজনে দূরেও যাওয়া যায়। দুজনের প্রয়োজন এক হলে কাছে কিংবা দূরে থাকা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ন বিষয় নয়। প্রয়োজনে চাঁদ লুকিয়ে যায় কিন্তু নদীর মাঝি ঠিকই জানে চাঁদ লুকিয়ে গেছে মানে চিরতরে দূরে সরে গ্যাছে না। ভালো যোদ্ধা যেমন যুদ্ধ করতে পারে তেমনি যুদ্ধ থেকে পালাতেও পারে।

আমি আর আমার কম্পিউটার সম্পর্ক থেকে পালিয়ে ছিলাম সম্পর্কের গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্যে।

আজ আবার কম্পিউটার ওপেন করলাম। চার্জ নেই তাই চার্জ দিলাম। সে ঠিক আগের মতোই আছে। একটুও বদলায়নি। আমার আস্থা ছিল সে বদলাতে পারে না। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন