বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

গ্রাম.

বাজারচারতলা। মেঘনা নদী। খেয়া ঘাট। তারপর চরচারতলা। চরচারতলা আশুগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। বাজারচারতলা আড়াইসিধা ইউনিয়নের অন্তভুর্ক্ত।

চর থেকে চরচারতলা, বাজার থেকে বাজারচারতলা। চরচারতলা আর বাজারচারতলার মাঝে সীমানা নির্ধারনকারী নদীর নাম মেঘনা। মূল মেঘনা এখানে আসে না। এখানে মেঘনার মাসির বাড়ি। বর্ষাকালে মেঘনা এখানে বেড়াতে আসে। মূল মেঘনা আরও কয়েক কিলোমিটার পশ্চিমে।

মেঘনাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড। হাজার হাজার লোক এখানে কাজ করে। সারা বাংলাদেশ থেকে চাকরির জের ধরে আসা লোক এখানে নির্মান করেছে কলোনি-- আমার শৈশবের লন্ডন।

বাজারচারতলা থেকে খেয়া নৌকা যেখানে গিয়ে নোঙর গাড়ে সেই জায়গাটি লালপুরের কোনা হিসাবে পরিচিত। আমরা চিনি হাউজিঙয়ের কোনা হিসাবে। এই কোনায় একসময় ডাকাতি হতো। এখন ডাকাতি ব্যবসাটি অনেকটা বাজার হারিয়েছে। বাজার যে একেবারে নেই তা বলা যাবে না। আছে, অল্পবিস্তর।

রাত দশটা পর্যন্ত খেয়া নৌকা পারাপার চলে। সবচেয়ে পুরাতন খেয়া মাঝি আমাদের শামসু কাহা। তার রাগের সুনাম আছে! এখনো মাগরিবের নামাযের পর এই জায়গাটি দিয়ে লোক চলাচল কমে আসে। কারন একটাই-- ডাকাতের ভয়।

হাউজিঙয়ের এই কোনায় একদিন এক ডাকাতের লাশ পাওয়া যায়। ডাকাতের নাম শাকির। দায়িত্বরত আনসার তাকে তিনটি গুলি করেছিল। শাকির এক ডায়ালগ দিতো-- বিল নাই বিল নাই। বিল মানে বেলা। অন্য মানুষকে এই ডায়ালগ দিয়ে সে সরাসরি টিস করতো। অথচ একদিন সাধারন আনসারের হাতে তার বিল শেষ হয়ে গেলো।

এই কোনা দিয়ে বিকাল বেলা আমি প্রায় হাঁটতে যাইতাম। হাঁটা ছিল উপলক্ষ্য। লক্ষ্য ছিল অন্য কিছু। বিকাল বেলা সুন্দর নারীরা ছাঁদে হাঁটতে আসতো। তাদের কোনো একজন যদি আমার দিকে তাকায় আর হাসি দেয় তাহলে আমার জীবন ধন্য হয়ে যাবে এমন লক্ষ্য মনে মনে পোষন করতাম। কিন্তু যদি কোনোদিন বাস্তবতার মুখ দেখেনি, যদি যদিই রয়ে গেলো!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন