আমি প্রতিদিন রাতে একগ্লাস জুস খাই। পেঁপের বা আমের বা কলার জুস। একটি দোকান থেকেই খাই। পকেটে যেহেতু টাকা এবং মনভর্তি স্বাধীনতা আছে সেহেতু যে কোনো দোকান থেকেই খেতে পারি। কিন্তু খাই না। যেখানেই থাকি জুস খাওয়ার জন্য আমি সেই দোকানে চলে আসি(ঢাকা থাকলে)।
লেনদেন আমি একজায়গা থেকে করতে পছন্দ করি। আমার মোবাইল কোনো কারনে অন্য চার্জজার দিয়ে চার্জ দিলে মোবাইল গুসসা করে অনেকটা বাংলা সিনেমার এককালীন চমৎকার অভিনেত্রী শাবানার মতো। সে তখন ভালোভাবে কাজ করতে চায় না। তাই যেকোনো লেনদেনে আমি বহুগামীতা পছন্দ করি না।
একবছর যাবৎ আমি সেই দোকান থেকে জুস খাচ্ছি। কিন্তু দোকানদার আমার সাথে অন্য কাস্টমারের মতোই আচরন করে। প্রতিদিন দোকানে গিয়ে আমাকে বলতে হয়, ভাই প্রয়োজনে টাকা বেশি নেন কিন্তু আমার জুস যেন ভালো হয়। সে এমন এক ভাব ধরে যেন আমার কথা হয়তো শুনেছে হয়তো শুনেনি।
দোকানদাদের এই বিচারবুদ্ধিহীন আচরনের জন্য মনে মনে আমি খুব কষ্ট পেতাম। আরে বেটা প্রতিদিন তর এখানে একটি ছেলে একগ্লাস জুস খাওয়ার জন্য আসে সে তো স্বাভাবিকভাবেই একটু ভালো আচরন আশা করে। মাঝে মাঝে দেখতাম অন্য কিছু কাস্টমারের সাথে হাসি দিয়ে কথা বলছে এবং সে তার সেবা পৌঁছে দিচ্ছে।
তাহলে আমি কী দোষ করলাম?
সব কিছুরই শেষ দেখার একটি মানসিকতা আমি রাখি। শেষ দেখে শুরুর সিদ্ধান্ত আমি নিয়ে থাকি। ফলে তখন আমার সিদ্ধান্তে এসে জমা হয় অভিজ্ঞতা, বাস্তবতা, নৈতিকতার এক জমকালো খতিয়ান। মনে মনে প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম তার দোকান থেকে আর জুস খাবো না। যেকোনো অভ্যাসগত জায়গা আমি আস্তে আস্তে ত্যাগ করি ( Run fast leave slow)।
চীন থেকে দেশে ফিরলাম। ইদের ছুটিতে সবাই বাড়ি চলে গ্যাছে। আমিও চলে যাবো। রাতে সাইফুল ভাইয়ের দোকানে গেলাম। জুস খাবো। দেখি সে একহাত দিয়ে জুস বানাচ্ছে।
ভাই , আপনার অন্য হাতে কী?
দেখেন না ক্যামন ঘা হয়েছে?
কী করে?
দুইদিন আগে কেটে যায়, তখন ওয়ানটাইম দিয়ে বেঁধে রাখি, ওয়ানটাইম খুলে দেখি এই অবস্থা!
দোকান এখন বন্ধ করেন। সে তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে। তারপর তাকে নিয়ে যাই ঢাকা মেডিকেলে। ইমার্জেন্সি গেইট দিয়ে ঢুকি। চিকিৎসক চিকিৎসা করতে চায় না। তারপরও আমি ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কথা বলাতে ডাক্তারের সুমর্জি হয়। তার আঙুলে কয়েকটি সেলাই দিয়ে একমাসের ঔষধ দিয়ে বিদায় করে।
সে দোকানে চলে আসে, আমিও তাকে সমস্ত ঔষধসেবন বিধি বুঝিয়ে দিয়ে আমার হলে চলে আসি। পরদিন সকালে বাড়ি চলে যায়।
এখনো তার দোকানে প্রতিরাতে জুস খেতে যায়। সে দেখামাত্র একটি হাসি দিবে। কী চমৎকার হাসিরে বাবা! তারপর সুন্দর করে গ্লাস ধৌত করবে, তারপর মজা করে একগ্লাস জুস দিবে।
মাঝে মাঝে অনেক রাত হয়ে যায়। তারপরও দেখি তার দোকান বন্ধ হয়নি। কেন দোকান বন্ধ করেনি তা আমি জিজ্ঞেস করি না। কারন আমি জানি আমার জন্যই তার এই রাতজাগা।
যে মানুষটি আমার চোখে চোখ রেখে কথা বলতো না, সে এখন আমার জন্য রাত জেগে থাকে, হৃদয়ভর্তি ভালোবাসা জমা রাখে। আসলেই মানুষকে ভালোবাসা শেখাতে হয় ....
লেনদেন আমি একজায়গা থেকে করতে পছন্দ করি। আমার মোবাইল কোনো কারনে অন্য চার্জজার দিয়ে চার্জ দিলে মোবাইল গুসসা করে অনেকটা বাংলা সিনেমার এককালীন চমৎকার অভিনেত্রী শাবানার মতো। সে তখন ভালোভাবে কাজ করতে চায় না। তাই যেকোনো লেনদেনে আমি বহুগামীতা পছন্দ করি না।
একবছর যাবৎ আমি সেই দোকান থেকে জুস খাচ্ছি। কিন্তু দোকানদার আমার সাথে অন্য কাস্টমারের মতোই আচরন করে। প্রতিদিন দোকানে গিয়ে আমাকে বলতে হয়, ভাই প্রয়োজনে টাকা বেশি নেন কিন্তু আমার জুস যেন ভালো হয়। সে এমন এক ভাব ধরে যেন আমার কথা হয়তো শুনেছে হয়তো শুনেনি।
দোকানদাদের এই বিচারবুদ্ধিহীন আচরনের জন্য মনে মনে আমি খুব কষ্ট পেতাম। আরে বেটা প্রতিদিন তর এখানে একটি ছেলে একগ্লাস জুস খাওয়ার জন্য আসে সে তো স্বাভাবিকভাবেই একটু ভালো আচরন আশা করে। মাঝে মাঝে দেখতাম অন্য কিছু কাস্টমারের সাথে হাসি দিয়ে কথা বলছে এবং সে তার সেবা পৌঁছে দিচ্ছে।
তাহলে আমি কী দোষ করলাম?
সব কিছুরই শেষ দেখার একটি মানসিকতা আমি রাখি। শেষ দেখে শুরুর সিদ্ধান্ত আমি নিয়ে থাকি। ফলে তখন আমার সিদ্ধান্তে এসে জমা হয় অভিজ্ঞতা, বাস্তবতা, নৈতিকতার এক জমকালো খতিয়ান। মনে মনে প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম তার দোকান থেকে আর জুস খাবো না। যেকোনো অভ্যাসগত জায়গা আমি আস্তে আস্তে ত্যাগ করি ( Run fast leave slow)।
চীন থেকে দেশে ফিরলাম। ইদের ছুটিতে সবাই বাড়ি চলে গ্যাছে। আমিও চলে যাবো। রাতে সাইফুল ভাইয়ের দোকানে গেলাম। জুস খাবো। দেখি সে একহাত দিয়ে জুস বানাচ্ছে।
ভাই , আপনার অন্য হাতে কী?
দেখেন না ক্যামন ঘা হয়েছে?
কী করে?
দুইদিন আগে কেটে যায়, তখন ওয়ানটাইম দিয়ে বেঁধে রাখি, ওয়ানটাইম খুলে দেখি এই অবস্থা!
দোকান এখন বন্ধ করেন। সে তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে। তারপর তাকে নিয়ে যাই ঢাকা মেডিকেলে। ইমার্জেন্সি গেইট দিয়ে ঢুকি। চিকিৎসক চিকিৎসা করতে চায় না। তারপরও আমি ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কথা বলাতে ডাক্তারের সুমর্জি হয়। তার আঙুলে কয়েকটি সেলাই দিয়ে একমাসের ঔষধ দিয়ে বিদায় করে।
সে দোকানে চলে আসে, আমিও তাকে সমস্ত ঔষধসেবন বিধি বুঝিয়ে দিয়ে আমার হলে চলে আসি। পরদিন সকালে বাড়ি চলে যায়।
এখনো তার দোকানে প্রতিরাতে জুস খেতে যায়। সে দেখামাত্র একটি হাসি দিবে। কী চমৎকার হাসিরে বাবা! তারপর সুন্দর করে গ্লাস ধৌত করবে, তারপর মজা করে একগ্লাস জুস দিবে।
মাঝে মাঝে অনেক রাত হয়ে যায়। তারপরও দেখি তার দোকান বন্ধ হয়নি। কেন দোকান বন্ধ করেনি তা আমি জিজ্ঞেস করি না। কারন আমি জানি আমার জন্যই তার এই রাতজাগা।
যে মানুষটি আমার চোখে চোখ রেখে কথা বলতো না, সে এখন আমার জন্য রাত জেগে থাকে, হৃদয়ভর্তি ভালোবাসা জমা রাখে। আসলেই মানুষকে ভালোবাসা শেখাতে হয় ....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন