শুক্রবার, ২০ জুন, ২০১৪

একটি কুকুর!

মেঘলা মেঘনা। এই মেঘনা পাড়ের সন্তান বাবুল। আদুরে নাম বাবু। আর্ট ভালো করে। এই কাজটি নিজের চেষ্টায় শেখা।মরা নদী তার চোখের সামনেই থাকে। মরা নদীটি মেঘনা নদীর শাখা নদী। নদীর ভাঙন বাবু ছোট কাল থেকেই দেখে। জীবনের এই পর্যায়ে এসে জীবনের ভাঙণে আতঙ্কিত নয়। বাবু পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে। তার সাথে আরো অনেকে পড়ে, অনেকেই পড়তো।
অনেকে যারা পড়তো এবং অনেকে যারা পড়ে উভয় তার দীর্ঘশ্বাসের কারণ হয় --
-দুইন্নাডা কুচু পাতার পানি, আইও টলমল টলমল করে,
-হায়রে মানু নামাযও পরছ, আবার বেবাক হেতের আইলও ভাঙছ

তার দীর্ঘশ্বাস পরিবেশের গরম বাতাস ভারী করে কিন্তু সমাজের ভারী মানুষের তাতে কিচ্ছু আসে যাই না। কারণ বাবু দরিদ্র, অসুস্থ। অসুস্থ আর দরিদ্র মানুষের সুস্থ কথা কিংবা বক্তব্য দিতে নেই!  তাতে গণেশ, সীতা , লক্ষী এক সাথে রাগ করে। তবু বাবু আর্ট করে, স্বপ্নের জাল বুনে
আশায় বাধে বাসা
আশায় ফুটায় ফুল
আশার তরে জীবন মরণ
আশায় সুখের মূল
বাবু আশাবাদী তার জীবনে ভোর আসবে না। তাতে তার মনে সুখ নেই এমন নয়। সে সুখের প্রাচীন মানব। গুহার ভেতরে অন্ধকার চাষ করতে পারে। যারা আলোতে বাস করে তারা মূলত অন্ধকার পছন্দ করে, আর অন্ধকারে যাদের বসবাস তারা তো শান্তির দীর্ঘশ্বাস উড়ায়!
একটি কুকুরের কামড় জীবনকে  বিপন্ন সুখের স্পর্শে পূর্ণ করে দিতে পারে, পারে শীতল আগুনের জোয়ার এনে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে হিমায়িত করে দিতে।
একটি কুকুর!
ভাদ্র মাস। প্রকৃতির আস্ত রোদ কুকুরের মানসিক এলাকায় হাটাহািট করে। এই সময়টা তাদের যৌন জীবনের জন্য পৌষ মাসের মতো  প্রাসঙ্গিক। কাঁঠাল পাকা রোদ, বাবু আড়াইসিধা বাজারে যাবে । জয়দর পোট্রি অতিক্রম করা পর একটি বাঁশঝাড়। পুকুর পাড়ের পূর্ব কোণায় নাইনটি ডিগ্রি এ্যাঙেলে এই বাঁশঝারের সংসার। বাঁশঝাড়ের কাছে যেতেই কুকুরটি তেড়ে আসে, ডান পায়ের উরু থেকে একখণ্ড মাংস শিকার করে। বাবু চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। আজো তার জ্ঞান ফিরেনি। তবু সে আর্ট করে, স্বপ্নের জাল বোনে, আলোর মিছিলে অন্ধকারের খবর পড়ে!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন