আয়নাবাজি সিনেমার পর বাদশা ভাই সবচেয়ে জনপ্রিয়। না, বাদশা ভাই কোনো সিনেমার নাম না। বাদশা ভাইয়ের দোকান। ভাসমান দোকান। উদ্যানে তার ভাসমান খাবারের দোকান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে শুরু করে বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সবাই তার খাবারের ভক্ত।
সে যখন প্রথম উদ্যানে খাবার চালু করে আমি ছিলাম তার দোকানের প্রথম কাস্টমার। আমি তার খাবার খেয়ে বলেছিলাম আপনি তো একদিন অনেক জনপ্রিয় হয়ে যাবেন, আমার কথা কিন্তু মনে রাখবেন। সে একটি বিনয়ের হাসি দিয়েছিল। আজকেও বাদশা ভাই আর তার বউয়ের আচরনে বিনয় আছে কিন্তু প্রথম কাস্টমার হিসাবে আমার কোনো আলগা সুবিধা নাই।
বারোটার মধ্যে তারা উদ্যানে চলে আসে। প্রায় চারটা পর্যন্ত তাদের খাবার চলে। আজকে আসতে একটু লেইট হচ্ছে। একটু বলতে প্রায় দেড় ঘন্টা। সবাই খাবার খেতে আসে কিন্তু খাবার তো আসেনি। অপেক্ষা করছে। বৃষ্টিও পড়ছে। ছাতা নিয়ে অপেক্ষা করছে। ভালো কিছুর জন্য মানুষ অপেক্ষা করতে পারে এখনো। বিষয়টা পজেটিভ। আমিও অপেক্ষা করছি। ভাত পাতানো টেবিলে রাখা। তরকারি বাদশা ভাই আর তার বউ বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে আসে। আমি টেবিলের পাশে দাঁড়ানো।
তিনজন মেয়ে আসে। একজন খুব সুন্দর। গল্প করার মতো সুন্দর। হুমায়ূন থাকলে বলত " দাদা এ মেয়েটা আপনার সাথে খুব মানাবে "। হুমায়ূনের ধারনা শহরের সব সুন্দর মেয়েরা আমার সাথে মানাবে বেশ। আর ক্যাম্পাসে সুন্দর মেয়ে দেখলেই তুহিনের বক্তব্য " রেজা, এই মেয়েটা তর জন্য পার্ফেক্ট, ক্যাম্পাসে তর প্রেম করতেই হবে, আমি দেখতে চাই "। আমি দুজনের কথা শুনেই মৃদু মৃদু হাসি ....
বলছিলাম তিনজনের মধ্যে একজন খুব সুন্দর। আমি প্রায় তিন মিনিট লুকানো চোখে তাকে দেখছি। আমার মধ্যে অবশ্যই সিভিক সেন্স আছে। মেয়েটি আস্তে আস্তে আমার কাছে আসে। আমার হার্টবিট একটু একটু বাড়তে আরম্ভ করে, আমার প্রায় আধ হাত কাছে আসে, কাছে এসে বলে
"আপনাদের খাবার কখন চালু হবে?"
আমি কী বলবো কিছু বুঝতে পারছি না, কী বলেছি মনে নেই, তবে কিছু একটা বলেছি নিশ্চয়। মেয়েটি আমাকে দোকানদার ভাবতে পারলো!
মেয়ে তিনজন আস্তে আস্তে অন্য কোনো খাবারের দোকানের দিকে চলে যায়। তাদের চলে যাওয়া দেখতে দেখতে আমার জীবনে আরেক জন নারীর কথা মনে পড়ে ....
বাড়ি যাবো। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে রিক্সার সামনে দাঁড়ানো। রিক্সাওয়ালা গ্যাছে টাকা ভাঙতি আনতে। বাড়ি যাওয়ার সময় প্রায় আমার সাথে ব্যাগট্যাগ কিছু থাকে না। দাঁড়িয়ে আছি। আমার পাশেই গাড়ি থেকে এক ড্রেসিং গার্ল নামে। মুখ হা করে রাখার মতো সুন্দর।আমি অবশ্যই মুখ হা করে রাখিনি। মেয়েটি আমাকে ডাক দিল। গেলাম।
আমার ব্যাগ দুটি ট্রেনে নিয়ে চলো।
জ্বি আফা ( মনে মনে বেশ আনন্দ পেলাম)।
সুন্দরী সামনে সামনে যাচ্ছে, আর আমি তার পেছনে পেছনে। আমার জীবনে আমি এতো ভারী বোঝা বহন করি নাই। ট্রেনে তাকে তুলে দিলাম। আমাকে সে পাঁচ শত টাকা দিল।
আফা একশ দিলেই অইবো।
আরে নাও পাঁচ শত টাকাই নাও।
পাঁচ শত টাকাই হাতে নিলাম। রিক্সাওয়ালা পাঁচশত টাকার ভাঙতি নিয়ে এসে হয়তো আমাকে না পেয়ে চলে গ্যাছে হয়তো আমাকে টাকা দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
কিন্তু আমার আর তার কাছে যাওয়ার সময় নেই। কারন ট্রেন কিছুক্ষনের মধ্যে ছেড়ে দিবে।
সিগারেট খাওয়া আমার অভ্যাস না, তারপর একটি সিগারেট কিনলাম। মালবরো এ্যাডভান্স। নিকোটিন পয়েন্ট টু পার্সেন্ট। স্টেশনের এক মাথা থেকে আরেক মাথা পর্যন্ত হাঁটাচলা করলাম কিছুক্ষন। ট্রেন গার্ডকে টিকেট দেখালাম। সে আমাকে আমার কামড়া দেখালো। এসি গ ষোল নাম্বার সিট।
ও মাই গড কামড়ায় সেই মেয়েটি! মেয়ে আমাকে দেখে অবাক! ভাবলাম মেয়েটিকে অবাক করানো যাবে না। বিভিন্ন ধরনের গল্প শুরু করলাম তার সাথে। আমার গল্প শুনে মেয়েটি বিশ্বাস করতে বাধ্য হয় আমি একজন রিক্সাচালক, ঢাকা শহরে রিক্সা চালাই।
আমি আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে নেমে যাই। মেয়েটি আমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে যায় এবং বলে " আমি তোমাকে ফোন দিবো, তোমার রিক্সা করে ঢাকা শহরে ঘুরবো।"
আমি বিশ্বাস করিনি মহিমা চৌধুরী আমাকে ফোন দিবে। মহিমা চৌধুরী সত্যিই আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমেরিকা থেকে বছরে একবার সে বাংলাদেশে আসে এবং আমাকে ফোন দেয়। কোনো এক ছুটির দিনে সে আমার রিক্সা করে সমস্ত ঢাকা শহর ঘুরে।
একদিনের জন্য আমি রিক্সা ভাড়া করি, মহিমার রিক্সা ড্রাইভার হয়ে সমস্ত ঢাকা শহর ঘুরি ....
সে যখন প্রথম উদ্যানে খাবার চালু করে আমি ছিলাম তার দোকানের প্রথম কাস্টমার। আমি তার খাবার খেয়ে বলেছিলাম আপনি তো একদিন অনেক জনপ্রিয় হয়ে যাবেন, আমার কথা কিন্তু মনে রাখবেন। সে একটি বিনয়ের হাসি দিয়েছিল। আজকেও বাদশা ভাই আর তার বউয়ের আচরনে বিনয় আছে কিন্তু প্রথম কাস্টমার হিসাবে আমার কোনো আলগা সুবিধা নাই।
বারোটার মধ্যে তারা উদ্যানে চলে আসে। প্রায় চারটা পর্যন্ত তাদের খাবার চলে। আজকে আসতে একটু লেইট হচ্ছে। একটু বলতে প্রায় দেড় ঘন্টা। সবাই খাবার খেতে আসে কিন্তু খাবার তো আসেনি। অপেক্ষা করছে। বৃষ্টিও পড়ছে। ছাতা নিয়ে অপেক্ষা করছে। ভালো কিছুর জন্য মানুষ অপেক্ষা করতে পারে এখনো। বিষয়টা পজেটিভ। আমিও অপেক্ষা করছি। ভাত পাতানো টেবিলে রাখা। তরকারি বাদশা ভাই আর তার বউ বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে আসে। আমি টেবিলের পাশে দাঁড়ানো।
তিনজন মেয়ে আসে। একজন খুব সুন্দর। গল্প করার মতো সুন্দর। হুমায়ূন থাকলে বলত " দাদা এ মেয়েটা আপনার সাথে খুব মানাবে "। হুমায়ূনের ধারনা শহরের সব সুন্দর মেয়েরা আমার সাথে মানাবে বেশ। আর ক্যাম্পাসে সুন্দর মেয়ে দেখলেই তুহিনের বক্তব্য " রেজা, এই মেয়েটা তর জন্য পার্ফেক্ট, ক্যাম্পাসে তর প্রেম করতেই হবে, আমি দেখতে চাই "। আমি দুজনের কথা শুনেই মৃদু মৃদু হাসি ....
বলছিলাম তিনজনের মধ্যে একজন খুব সুন্দর। আমি প্রায় তিন মিনিট লুকানো চোখে তাকে দেখছি। আমার মধ্যে অবশ্যই সিভিক সেন্স আছে। মেয়েটি আস্তে আস্তে আমার কাছে আসে। আমার হার্টবিট একটু একটু বাড়তে আরম্ভ করে, আমার প্রায় আধ হাত কাছে আসে, কাছে এসে বলে
"আপনাদের খাবার কখন চালু হবে?"
আমি কী বলবো কিছু বুঝতে পারছি না, কী বলেছি মনে নেই, তবে কিছু একটা বলেছি নিশ্চয়। মেয়েটি আমাকে দোকানদার ভাবতে পারলো!
মেয়ে তিনজন আস্তে আস্তে অন্য কোনো খাবারের দোকানের দিকে চলে যায়। তাদের চলে যাওয়া দেখতে দেখতে আমার জীবনে আরেক জন নারীর কথা মনে পড়ে ....
বাড়ি যাবো। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে রিক্সার সামনে দাঁড়ানো। রিক্সাওয়ালা গ্যাছে টাকা ভাঙতি আনতে। বাড়ি যাওয়ার সময় প্রায় আমার সাথে ব্যাগট্যাগ কিছু থাকে না। দাঁড়িয়ে আছি। আমার পাশেই গাড়ি থেকে এক ড্রেসিং গার্ল নামে। মুখ হা করে রাখার মতো সুন্দর।আমি অবশ্যই মুখ হা করে রাখিনি। মেয়েটি আমাকে ডাক দিল। গেলাম।
আমার ব্যাগ দুটি ট্রেনে নিয়ে চলো।
জ্বি আফা ( মনে মনে বেশ আনন্দ পেলাম)।
সুন্দরী সামনে সামনে যাচ্ছে, আর আমি তার পেছনে পেছনে। আমার জীবনে আমি এতো ভারী বোঝা বহন করি নাই। ট্রেনে তাকে তুলে দিলাম। আমাকে সে পাঁচ শত টাকা দিল।
আফা একশ দিলেই অইবো।
আরে নাও পাঁচ শত টাকাই নাও।
পাঁচ শত টাকাই হাতে নিলাম। রিক্সাওয়ালা পাঁচশত টাকার ভাঙতি নিয়ে এসে হয়তো আমাকে না পেয়ে চলে গ্যাছে হয়তো আমাকে টাকা দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
কিন্তু আমার আর তার কাছে যাওয়ার সময় নেই। কারন ট্রেন কিছুক্ষনের মধ্যে ছেড়ে দিবে।
সিগারেট খাওয়া আমার অভ্যাস না, তারপর একটি সিগারেট কিনলাম। মালবরো এ্যাডভান্স। নিকোটিন পয়েন্ট টু পার্সেন্ট। স্টেশনের এক মাথা থেকে আরেক মাথা পর্যন্ত হাঁটাচলা করলাম কিছুক্ষন। ট্রেন গার্ডকে টিকেট দেখালাম। সে আমাকে আমার কামড়া দেখালো। এসি গ ষোল নাম্বার সিট।
ও মাই গড কামড়ায় সেই মেয়েটি! মেয়ে আমাকে দেখে অবাক! ভাবলাম মেয়েটিকে অবাক করানো যাবে না। বিভিন্ন ধরনের গল্প শুরু করলাম তার সাথে। আমার গল্প শুনে মেয়েটি বিশ্বাস করতে বাধ্য হয় আমি একজন রিক্সাচালক, ঢাকা শহরে রিক্সা চালাই।
আমি আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে নেমে যাই। মেয়েটি আমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে যায় এবং বলে " আমি তোমাকে ফোন দিবো, তোমার রিক্সা করে ঢাকা শহরে ঘুরবো।"
আমি বিশ্বাস করিনি মহিমা চৌধুরী আমাকে ফোন দিবে। মহিমা চৌধুরী সত্যিই আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমেরিকা থেকে বছরে একবার সে বাংলাদেশে আসে এবং আমাকে ফোন দেয়। কোনো এক ছুটির দিনে সে আমার রিক্সা করে সমস্ত ঢাকা শহর ঘুরে।
একদিনের জন্য আমি রিক্সা ভাড়া করি, মহিমার রিক্সা ড্রাইভার হয়ে সমস্ত ঢাকা শহর ঘুরি ....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন