শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭

একা এক অসুখের নাম

আমাদের বাড়ির দক্ষিনে ডোবা। আমাদের বাড়ির দক্ষিনে সবুজ আর সবুজ। সবুজে রাতে ডাহুক ডাকে। দিনে সেই ডাহুকই আবার খেলা করে বাচ্চা নিয়ে।

দক্ষিনে বসে সবুজ দেখা যায়, ডাহুক দেখা যায়, অনেক বছরের পুরাতন এক কাঁটাগাছ দেখা যায়, দেখা যায় না দূরের সেই গ্রামটিকে।

গ্রামটি আমার শৈশবের প্রশ্ন গল্প কৌতূহল। মনে মনে গ্রামটিতে হাঁটাচলা করে আসি, আমার পায়ে তাতেই সন্ধ্যা নামে। রাত করে বাড়ি ফিরি। মনে মনে। সেই গ্রামে মানুষ থাকে, না ভূত থাকে তাও জানতাম না। জানতে পারবো বলে আশাও করিনি। গ্রামটি তাই আমার কাছে একধরনের আলিফ লায়লা সিরিয়াল-- দেখে দেখে দেখার বাসনা বাড়ে।

সেই দূরের গ্রামের পরপারেও আমাদের জমি ছিল। আব্বা গ্রামটি পার করে প্রায় নিজের জমি দেখতে যেতো। আব্বাকে নিয়ে আমার টেনশনের শেষ ছিল না। কারন ভূত যদি আব্বাকে কিছু করে।

আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলাম। গ্রামের ছায়াটিও আমার চোখের সামনে ছোট হয়ে আসতে লাগলো।এখন আর ব্লার করা সেই ছায়া দেখি না, গ্রামটিই কেবল দেখি, গ্রামের ভেতর মানুষের হাঁটাচলা পর্যন্ত দেখি।

এখন আমি অনেক বড়। আর গ্রামটি? গ্রামটি আমার কাছে অনেক ছোট।

ছোট চোখ দিয়ে ডাহুককে যেমন দেখতাম এমনই দেখি, সবুজকে যেমন দেখতাম তেমনি দেখি, একা দাঁড়িয়ে থাকা কাঁটাগাছটিকে এখনো দেখি একা।অনেক অদেখা আস্তে আস্তে দেখা হয়ে যায়, অনেক দেখা কেমন যেন অদেখা থেকে যায়। অনেক অদেখা আবার ভাঁজ করে রাখলে ডোবার পাশের কাঁটাগাছটি হয়ে যায় যে অনেক তেজ নিয়েও বড় বেশি একা।
একা
একা
একা
একা এক অসুখের নাম 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন