সোমবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৮

প্রিয়তমা ঠান্ডা

প্রিয়তমা ঠান্ডা আমাকে আক্রমন করেছেন। তিনি আমাকে অনেক দুর্বল করে ফেলে। শুনেছি সিংহ ও রবীন্দ্রনাথ ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না পারতেন না। আমিও ঠান্ডা সহ্য করতে পারি না।কিন্তু আমি ত রবীন্দ্রনাথ কিংবা সিংহ নয়।

প্রচন্ড কষ্ট হয় আমার। শরতের মেঘের মতো আমার নাকেও সাদা সাদা মেঘের ঢেউ দেখা দেয়। আকাশের মেঘ দেখে যদিও মন জুড়ায়, নাকের মেঘ দেখে মন পুড়ায়।

হোমিও ডাক্তার বলেন আমার মধ্যে ব্রাউনিয়া সিমটম। ঠোঁট শুষ্ক হয়ে আসা, শীতশীত অনুভূত হওয়া, খাবারে অরুচি, সারা শরীরে একটা আনইজিভাব বিরাজ করা ব্রাউনিয়ার লক্ষন। এ্যালোপ্যাথি ডাক্তার বলবেন 'ধুর মিয়া হোমিও কোনো চিকিৎসা হইল'। এমনভাবে বলবে যেন তার সাবেক গার্লফ্রেন্ডের বর্তমান বয়ফ্রেন্ড হলো হোমিওপ্যাথি।

আরে ভাই, হোমিওপ্যাথি যদি মানু‌ষের শরীরের জন্য সন্ত্রাস টাইপের কিছু হয় তাহলে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে আক্রমন চালানোর চেষ্টা করো। না। তা করবে না। গরম ভাতের লাহান শুধু মেজাজ দেখাবে।

আমার সাথে প্রিয়তমা ঠান্ডা মেজাজ দেখিয়ে চলেছে। সকালে এক রকম, রাতে অন্য রকম, বিকালে আবার টুটালি অন্য রকম।

প্রথমে প্রিয়তমা আমার মধ্যে একটা কিসিং কিসিং মোড জাগ্রত করে, তারপর গলার শেষভাগ ও নাকের শেষভাগে বসে কুটকুট কুটকুট করতে থাকে। তারপর থেকে আমার শরীরে তার টিটুয়েন্টি উল্লাস শুরু হয়। শরীরের তাপ বেড়ে যায়, নাক দিয়ে জল ঝরতে থাকে। দুই একদিন এই অবস্থার ডিউরেশন। তারপর প্রিয়তমা আর পাতলা থাকতে পারে না। তার শরীরে মেদ জমে। মেদসহ প্রিয়তমা আস্তে আস্তে নাক দিয়ে বের হতে থাকে। তখন বুঝতে পারি আমার উপর তার অধিকার ফলানোর মাত্রা কমে আসতেছে।
এরপর শুরু হয় ছোট ছোট কাশি। কাশি আসলেই বুঝতে পারি প্রিয়তমা আমার প্রায় চলে গ্যাছে। এবং চলেও যায়।

মজার ব্যাপার হলো ঠান্ডা মানে প্রিয় প্রিয়তমা যখন আমার উপরে ভর করে তখন সে ব্যতীত অন্য কাউকে নিয়ে চিন্তা করার বিন্দুমাত্র সুযোগ সে রাখে না। গভীর ভালোবাসা। সে চলে যাওয়ার পর বুঝতে পারি গভীর ভালোবাসা কেবল আনন্দ দেয় না কষ্টও দেয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন