শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

শীতলক্ষ্যা নদী আমার মারা যায় রোজ

গ্যাসবিলের পাশেই নজরুলের দোকান। নজরুল চা পান সিগারেট বিক্রি করে। গ্যাসবিল বিক্রি করে মানুষ মানুষের রুচি, মানুষের প্রতিদিনের সময়।

নজরুল এক সময় দারুন মাছধরা লোক ছিল। আজ সে কাস্টমার ধরে। রাতে বিলের পাশে নামে উঠতি যুবকের ঢল। তারা কথা বলে ফেইসবুকের ভাষায়। ফেইসবুক তাদের শেখাতে পারেনি গ্যাসবিলের রাবনমুখী ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকার ফলকথা। যুবকের দল কথা বলে রাত জাগে রিংটোনের মতো বেজে ওঠে বারবার।

অথচ ভুলে গেছে তারা শীতলক্ষ্যার কথা। শীতলক্ষ্যা এক সময় কপিলার মতো মাথায় তেল দিত। খাঁটি সরিষার তেল। তার ঠোঁটে ছিল তেঁতুল পাতার মতো মহিন মিহি কলরব। তার শরীরে ছিল গ্রামীন নারীর আবাদি সুভেন্দু গন্ধ। আজ তার শরীরে মিলফ্যাক্টরির আজলা বীর্য।

শীতলক্ষ্যা মারা যায়। নদী মারা যায়। মারা যায় আমার বাংলাদেশ। নাকে আসে কার্বনের পোড়া গন্ধ। বুকের ভেতর চোখের ভেতর সাপ খেলা করে কামড়ে কামড়ে বিষাক্ত হয় আমার স্বপ্নের দৃশ্যরা।

সকালে সূর্য উঠবে। নজরুল তার দোকান খুলে বসবে গ্যাসবিলের দাহ্য বাতাসে। মরা বাতাসে একটু একটু করে মারা যাবে নজরুল। মারা যাবে মঙলদ্বীপ গ্রাম।

অনেক গ্রাম মারা যাওয়ার পর আপনি একবার আন্দোলন করতে আসবেন। তারপর আপনার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে নোবেল প্রাইজ। আপনাকে বলা হবে শান্তির মশাল।

হাততালি হবে একটানা হাততালি হবে।মিডিয়ার পর মিডিয়া দেখাবে আপনার ইলেকট্রনিক মুখ। নজরুল তখন মাটিতে জলেতে মিশে গিয়ে বলবে
"নো টক ডিয়ার নো টক
মাই কান্ট্রি ইজ নাইস
ইউ দি পলিসি ইজ ফাইন
কেরি অন ডিয়ার কেরি অন"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন