সোমবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৮

ব্যাঙের চিন্তারা

খাল। খালে ব্যাঙের ডাক সন্ধ্যার পর থেকেই আরম্ভ হয়। তাদের ডাকাডাকি চলে প্রায় ভোর পর্যন্ত। তারা এই ডাকাডাকি করে মূলত তাদের প্রজননকালীন সময়ে। এই ডাকাডাকি একধরনের স্বাধীনতার ডাকও বটে। অর্থাৎ যে যেখানে আছে সে যেন ডাকাডাকির স্থানে উপস্থিত হয়ে একাত্মতা স্বীকার করে।

এই সময় ব্যাঙপরিবারে উৎসব হয়-- দূরের সাথে কাছের কাছের সাথে দূরের  মিলন উৎসব, নতুন সদস্যদের পৃথিবীতে আগমনের আগাম উৎসব। 

খালের পর একটি বিল্ডিং, তারপর আরেকটি বিল্ডিং, তারপর আরেকটি সুউচ্চ বিল্ডিং। সুউচ্চ  বিল্ডিংটিতে ইটভাটার মতো টাকাওয়ালারা থাকেন। টাকাওয়ালারা যেখানে বিল্ডিংয়ে টাকা ব্যতীত কোনো আত্মীয় স্বজনকে এলাউ করে না সেখানে একটি ব্যাঙ তাদের চকচকে টাকার কালার নষ্ট করবে তা ত ভাবনারও অতীব অতীত।

সুউচ্চ বিল্ডিংয়ের দেয়ালের কাছে যেতেই দেখলাম একটি ব্যাঙ পলিথিনের ভেতর ছটফট করছে। ব্যাঙটি বাঁচতে চায়। দেখলাম পলিথিনের মুখ সুতা দিয়ে বাঁধা। পলিথিনের মুখ খুলে দিলাম। ব্যাঙটিকে দেখলাম লাফাতে লাফাতে আবার বিল্ডিংয়ের দিকে চলে যেতে।

ব্যাঙটি ইচ্ছা করলেই খালের দিকে যেতে পারত যেখানে তার স্বজাতিরা তার জন্য অপেক্ষা করছে। আবার ভাবলাম, ব্যাঙটি ইচ্ছা করলেই খালের দিকে যেতে পারে না। কারন যে ব্যাঙ জন্মের পরই বিল্ডিং চিনে খালের স্বাধীনতা আর অসীম সুখ সে অনুবাদ করতে জানবে ক্যামনে!?

এই অপরাধ না ব্যাঙের না বিল্ডিংয়ের না খালের। এই অপরাধ স্বয়ং অপরাধ সৃষ্টিকারীর।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন