সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯

সংগঠন

সংগঠন। সম মানসিকতার দুই বা ততোধিক মানুষ যখন কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মিলিত হয় তাই সংগঠন। সংগঠনের জন্য আর্থিক বিষয় মুখ্য নয়, আবার মুখ্য। কারন অর্থের তরলমান অনেক জায়গায় প্রয়োজন হয়, আবার অনেক ক্ষেত্রে আবশ্যক হয়ে পড়ে।

সংগঠন তারাই করে যারা সমাজের অন্য আট দশজন থেকে আলাদা। সংগঠনের অনেক কাজ থাকতে পারে কিন্তু সংগঠনে তৎপর লোকটির প্রধান গুন আত্মমর্যাদাবোধ। ইন্টিগ্রিটি সেন্স না থাকলে সংগঠন করা যায় না, মূলত ইন্টিগ্রিটি সেন্স থেকে একজন মানুষ সাংগঠনিক মানুষ হয়ে উঠে।

একটি মাজারের খাদেম আর সাংগঠনিক মানুষটির মধ্যে অবশ্যই কিছু নীতিগত পার্থক্য থাকবে। খাদেম বাজার খুলে বসে আছে মানে টাকা আসবে, যে কেউ তার মাজারে গরু ছাগল মহিষ ভেড়া উপহার দিতে পারবে। একজন সাংগঠনিক মানুষ কখনো বাজারের খাদেমের মতো অন্যের কাছে অর্থ প্রত্যাশা করতে পারে না। তবে অনেকেই সংগঠনকে  এতিমখানার চেয়েও এতিম করে ফেলে যেখানে অর্থের সমাগম অন্য জায়গা থেকে না হলে তাদের সংগঠন নামক এতিমখানাটি চলবেই না।

অনেকে আবার স্পন্সরের নামে সমাজের জন্য ক্ষতিকর এমন মানুষের কাছে এমন প্রতিষ্ঠানের কাছে হাত পাতে। তাতে কয়েকটি ক্ষতি হয়-- সংগঠনটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, সমাজের জন্য ক্ষতিকর লোকটি প্রশ্রয় লাভ করে, সাংগঠনিক তৎপরতার ইনার ব্রাইড্‌শেড চোখে পড়ে।

সমাজে এমন মানুষও রয়েছে যারা অবৈধভাবে অর্জিত টাকার কিছু অংশ সমাজে প্রচলিত নামিক কল্যানকর কিছু সংগঠনকে প্রদান করে থাকে তার অবৈধভাবে অর্জিত টাকার বৈধতা পাওয়ার জন্যে। সংগঠনও অর্থ পেয়ে বিশাল খুশি। নেমে পড়ে লোকটির বিজ্ঞাপনে। বিজ্ঞাপনের আড়ালে লোকটি গড়ে তুলে অবৈধ টাকার বিশাল পাহাড়।

অনেকে আবার ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে সংগঠনকে পুষ্টিকর করতে চায়। তাতে ফল হয় ভয়াবহ। তাতে প্রথমে ব্যক্তি তার ভবিতব্য সম্ভাবনাকে নষ্ট করে, তারপর সংগঠনের সামগ্রিক ইমেজকে জনগনের গীবতমুখী করে তুলে।

'স্বাধীনতার সুখ' কবিতাটি আমরা পড়েছিলাম যেখানে নিজ হাতে গড়া কাচা ঘর খাসা হওয়ার কথা রয়েছে অর্থাৎ নিজেদের সংগঠন নিজেদের চেষ্টায় প্রচেষ্টায় অর্থায়নে চলা জাতি-ব্যক্তি-রাষ্ট্রের জন্য কল্যানকর। সংগঠন অন্তত মাধুকরী করতে পারে না, মাধুরীকে আনতে পারে সমাজে, মাগনা মাৎসর্যে আঘাত করতে পারে প্রশ্নের থরেবিথরে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন