শুক্রবার, ৭ জুন, ২০১৯

পাখি

রাস্তায় পড়ে আছে। প্রায় মৃত। পা দুটি উপরে। কাছে গিয়ে দেখি প্রান আছে। ছিও ছিও করছে। দোয়েল পাখিটিকে হাতে নিলাম। রুমে নিয়ে আসি। রুমে আনার কারন ইউটিউব দেখে ট্রিটমেন্ট করবো। রুমে এনে বিছানায় রাখি।

ইউটিউব ওপেন করে পাখিদের কিচিরমিচির চালু করি। রুম ভরে যায় পাখিদের কিচিরমিচিরে। দেখি তখনো দোয়েলটি মৃত প্রায়। কেন যেন মনে হলো চলতে থাকুক ইউটিউব চলতে থাকুক পাখি সব করা রব।

ইউটিউবের কিচিরমিচির চলছে, আমিও চললাম স্নানঘরে। বাড়ি যাবো। স্নান করলাম বেশ সময় নিয়ে। স্নান আমার কাছে বিরাট প্রার্থনা। শরীরে জল পড়ার সাথে সাথে যতটুকু শান্তি আমি পাই তার চেয়ে অধিক শান্তি যেন পৃথিবীতে নেমে আসে তার জন্যে প্রার্থনা করি।

স্নান শেষ করে দোয়েলের কাছে আসি। অবাক! বিছানায় সে আর নেই। তাহলে কী বিড়াল খেয়ে ফেললো?  রুমে ত বিড়াল নেই।

তাহলে?

ডাইনিং রুমের লতাপাতার উপরে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। আনন্দে মন ভরে গেলো! থাক তিনি তিনার মতো। আমি আমার কাজ করি। ইউটিউবের কিচিরমিচির সাথে তিনিও কিচিরমিচির করতে থাকেন।

বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি শেষ। ভাবলাম দোয়েলটিকে রুমে রেখেই চলে যাবো। তাকে একা রুমে রেখে যাওয়া মহা অন্যায়। তার বের হয়ে যাওয়ার সমস্ত পথ বন্ধ। কী করা যায়!? বিরাট দ্বিধান্বিত দ্বিধাবিভক্ত মানসিকতা শরীরে ভর করে। তাকে ছেড়ে দিতে পারি, আবার রেখে দিতে পারি। পাখিটির আনন্দ দেখে তার প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে মনে। তাকে রেখে চলে গেলে আবার খাবারদাবারও পাবে না।

অবশেষে সিদ্ধান্তে আসি। তাকে ছেড়ে দিবো। তার চলে যাওয়ার সমস্ত পথ নির্মান করে দিলাম। কিন্তু এখন আর সে যেতে চায় না। জানালার কাছে যায় কিন্তু যায় না। অনেকবার জানালার কাছে যায় কিন্তু বের হয়ে যায় না। আমি ত তাকে ছেড়ে দেবার পূর্ন মানসিকতা ফিট করে ফেলেছি।

একসময় সে রুম থেকে বের হয়েই যায়। রুম থেকে বের হয়ে বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছে। বারান্দার গ্রিলে বসে থাকে রুমের দিকে মুখ করে। ভাবটা এমন মিস্টার রেজা এখনো সময় আছে, একবার ভাবুন।

আমি সমস্ত ভাবনা অতিক্রম করে বারান্দার দরজা ক্লোজ করি। বারান্দার দরজা ক্লোজ করার সাথে সাথে তিনিও দিলেন বিরাট এক উড়াল! তার উড়াল দেখে মনে মনে বলতে থাকি my love is enough love to let you enough free

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন