অজ্ঞান পার্টির সাহস দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারি না। ঘটনাটি রাতের মহানগরে। আমরা যাচ্ছি চট্রগ্রাম।
সাধারনত ট্রেনের নিজস্ব বাহিনী ব্যতীত অন্য কারো কাছ থেকে কিচ্ছু খাই না। পানিও না। কিন্তু শনিবারে রাতে একটু রিস্ক নিলাম। কুমিল্লা যাওয়ার পর ট্রেনে রস মলাই উঠে। মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আমার টান একটু বেশি। রিস্কটা হয়তো এইকারনেই নেয়া। তাও আবার কুমিল্লার রস মলাই বলে কথা।
এক কেজি রস মলাই। ট্রেনে উঠার আগে রাতের খাবার খাইনি। সময় ছিল না। তবে এক কেজি দই খেয়েছি। দইয়ের প্রতিও আমার টান একটু বেশি। রমজান মাসে সেহরি খেতে উঠতাম কেবল চাক্কা দইয়ের জন্যে। সকালে দই চাক্কা থাকত না। সবার খাওয়ার পর দই চাক্কা থাকার কথা না। তাই রোজা না রাখলেও সেহরির সময় আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলা ছিল পরিবারের আরেকটি ফরজ কাজ।
রাতের খাবার না খেলেও এক কেজি দই আর চারটি আম রুপালি খেয়ে ট্রেনে উঠে পরি।
সিটে বসে চোখ বন্ধ করি। আসমানে চাঁদ। চানকে চোখে রেখে ট্রেনভ্রমন এক অমায়িক সুখবোধ জন্ম দেয় মনে। ট্রেন চলছে। হঠাৎ চোখ খুলে দেখি আমার ডান হাতে একটা ফড়িং আশ্রয় নিয়েছে। হাত থেকে ধীরে ধীরে আশ্রয় নিয়েছে আমার কাঁধে। ফড়িং তার মামার বাড়িতে বেড়াতে যাবে। তার মামার বাড়ি চট্রগ্রাম পলোগ্রাউন্ড রেলওয়ে কলোনিতে। আশ্রয় নিয়েছে ত নিয়েছে। একটুও নড়ছে না। মাঝেমাঝে পাখা নাড়ে।
তুসা সাত-আট চামচ রস মলাই খেয়ে আর খায়নি। অথচ রস মলাইটি ভালো ভালো বলে সেই বিজ্ঞাপন বেশি করছিল। যাক এক কেজি রস মলাইয়ের সবটাই আমাকে খেতে হয়। খাওয়ার পর বুঝতে পারি সামথিং রং।
কী করা যায় বুঝতে পারছি না। তাকে যদি বলি আমার মাথার ভেতরে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে তাহলে সে অস্থির হয়ে যাবে।
হাঁটতে ইচ্ছে করছে (অবশ্যই ট্রেনের এক পাশ থেকে অন্য পাশ একবার হাঁটা দেয়া আমার হবি)।
চলো, আমিও হাঁটবো তোমার সাথে, তুসা বলে।
না, তুমি বসো, ব্যাগ আছে না উপরে।
সে সিটে বসা।
আমি খাবারের কেবিনে গিয়ে বললাম এক কাপ পানিতে চারটা টিব্যাগ দিয়ে চা দেন। তারা সব কিছু ক্লোজ করে দিছে। তারপরও আমার জন্যে জল আবার গরম করে। চা খাওয়ার পর ভেতরের সব কিছু বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। আমিও চাচ্ছিলাম এমনটা হোক। আরাম করে বমি করি। ভেতরের সব কিছু বের হয়ে আসে।
আমি যখন বমি করি তখন আমার সাথে কেউ নাই। কেউ নাই বলতে কাউকে রাখি নাই। কিন্তু। ফড়িংটা আমার কাঁধ থেকে লেকলেক করে আমার দিকে চেয়ে আছে। বমি করার সময় একবার সে আমার মাথায় বসে আবার আমার কাঁধে বসে। বমি করছি আর ফড়িংকান্ড দেখে অবাক হচ্ছি। ভেতর থেকে আর কিচ্ছু বের হওয়ার নাই। এবার শান্তি আর শান্তি।
একটা জলের বোতল কিনি। জল পান করতে করতে সিটের দিকে এগিয়ে যাই। আমাদের সিট ট্রেনের তেতুলিয়ায়। ট্রেনের টেকনাফ থেকে ট্রেনের তেতুলিয়ার দিকে যাচ্ছি। যাত্রী যারা জেগে আছে সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকায়। না। আমি কোনো নবী পয়গম্বরের মতো মুখশ্রী ধারন করি নাই। কারন একটাই। ফড়িং। আমার কাঁধে এমন একটা ফড়িং দেখে তারা অবাক হচ্ছে।
সিটের কাছে গিয়ে দেখি বিশাল এক ভিড়। এক লোক অজ্ঞান হয়ে আছে। তার জ্ঞান ফেরানোর জন্য পুলিশসহ সবাই চেষ্টা করছে। তার জ্ঞান আর ফিরে না। পুলিশকে বললাম 'কিছু একটা করেন'। পুলিশ বললো 'চিটাগাং যাওয়ার আগে কিচ্ছু করার নাই।'
আসলেই কিচ্ছু করার নাই? না, তিনি কিচ্ছু করবেন না? কিচ্ছু করার নাই, না, তিনি কিচ্ছু করবেন না এটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে চট্রগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছানো পর্যন্ত।
সবাই নেমে গেলো যার যার মতো। আমরা সিটে বসা। আমাদের নেমে যেতে বলা হলো। আমাদের যারা নেমে যেতে বললেন তারাই সেন্সলেস লোকটিকে ট্রেন থেকে নামিয়ে সোজা এ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে পাঠান। হা হা হা। এমনটি হলে ভালোই হতো। এমন কিচ্ছু হয়নি। লোকটিকে তারা রেলওয়ের ইটের বিছানায় রেখে যার যার মতো চলে যাচ্ছে। পুলিশের কোনো খোঁজ নেই।
ট্রেনের দায়িত্বরত প্রধান অফিসার দলবল নিয়ে সাই সাই করে হেঁটে যাচ্ছে নিজস্ব আরামের দিকে। সারা রাত তারা কত কষ্ট করেছে। আমি ডাক দিলাম তাকে। জানতে চাইলাম সেন্সলেস লোকটির কী হবে। তিনি আমাকে রামায়ন মহাভারত কুরান হাদিস ইচ্ছামতো বুঝালেন। আমিও বুঝলাম। আমাদের মাথাও ঠিকমতো কাজ করছিল না। কারন বমি করলেও রস মলাইয়ের সাথে মেশানো অজ্ঞান ইফেক্ট কিছু হলেও ত মাথায় রয়ে গেছে। বুঝতে ছিলাম। তাদের সাথে কথা বলে কোনো ফায়দা হবে না। বন্ধুকে ফোন দিলাম। বন্ধু সেকেন্ডে হাজির। বন্ধুর বাসায় স্নান করে একটা বিশাল ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠলাম একদম সন্ধ্যায়।
ট্রেন থেকে নামার কিচ্ছুক্ষন আগে ফড়িংটা নেমে যায় বা চলে যায় অথবা আমাকে বিদায় জানায় কিংবা তার ডিউটি শেষ।
সেন্সলেস লোকটি কোথায় আছে কেমন আছে জানি না, জানি রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সেন্সলেস কর্মকান্ডের জন্য সিলেট টু ঢাকাগামী উপবন ট্রেনটি মৃত্যুর মুখে পতিত হয়েছে
সাধারনত ট্রেনের নিজস্ব বাহিনী ব্যতীত অন্য কারো কাছ থেকে কিচ্ছু খাই না। পানিও না। কিন্তু শনিবারে রাতে একটু রিস্ক নিলাম। কুমিল্লা যাওয়ার পর ট্রেনে রস মলাই উঠে। মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আমার টান একটু বেশি। রিস্কটা হয়তো এইকারনেই নেয়া। তাও আবার কুমিল্লার রস মলাই বলে কথা।
এক কেজি রস মলাই। ট্রেনে উঠার আগে রাতের খাবার খাইনি। সময় ছিল না। তবে এক কেজি দই খেয়েছি। দইয়ের প্রতিও আমার টান একটু বেশি। রমজান মাসে সেহরি খেতে উঠতাম কেবল চাক্কা দইয়ের জন্যে। সকালে দই চাক্কা থাকত না। সবার খাওয়ার পর দই চাক্কা থাকার কথা না। তাই রোজা না রাখলেও সেহরির সময় আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলা ছিল পরিবারের আরেকটি ফরজ কাজ।
রাতের খাবার না খেলেও এক কেজি দই আর চারটি আম রুপালি খেয়ে ট্রেনে উঠে পরি।
সিটে বসে চোখ বন্ধ করি। আসমানে চাঁদ। চানকে চোখে রেখে ট্রেনভ্রমন এক অমায়িক সুখবোধ জন্ম দেয় মনে। ট্রেন চলছে। হঠাৎ চোখ খুলে দেখি আমার ডান হাতে একটা ফড়িং আশ্রয় নিয়েছে। হাত থেকে ধীরে ধীরে আশ্রয় নিয়েছে আমার কাঁধে। ফড়িং তার মামার বাড়িতে বেড়াতে যাবে। তার মামার বাড়ি চট্রগ্রাম পলোগ্রাউন্ড রেলওয়ে কলোনিতে। আশ্রয় নিয়েছে ত নিয়েছে। একটুও নড়ছে না। মাঝেমাঝে পাখা নাড়ে।
তুসা সাত-আট চামচ রস মলাই খেয়ে আর খায়নি। অথচ রস মলাইটি ভালো ভালো বলে সেই বিজ্ঞাপন বেশি করছিল। যাক এক কেজি রস মলাইয়ের সবটাই আমাকে খেতে হয়। খাওয়ার পর বুঝতে পারি সামথিং রং।
কী করা যায় বুঝতে পারছি না। তাকে যদি বলি আমার মাথার ভেতরে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে তাহলে সে অস্থির হয়ে যাবে।
হাঁটতে ইচ্ছে করছে (অবশ্যই ট্রেনের এক পাশ থেকে অন্য পাশ একবার হাঁটা দেয়া আমার হবি)।
চলো, আমিও হাঁটবো তোমার সাথে, তুসা বলে।
না, তুমি বসো, ব্যাগ আছে না উপরে।
সে সিটে বসা।
আমি খাবারের কেবিনে গিয়ে বললাম এক কাপ পানিতে চারটা টিব্যাগ দিয়ে চা দেন। তারা সব কিছু ক্লোজ করে দিছে। তারপরও আমার জন্যে জল আবার গরম করে। চা খাওয়ার পর ভেতরের সব কিছু বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। আমিও চাচ্ছিলাম এমনটা হোক। আরাম করে বমি করি। ভেতরের সব কিছু বের হয়ে আসে।
আমি যখন বমি করি তখন আমার সাথে কেউ নাই। কেউ নাই বলতে কাউকে রাখি নাই। কিন্তু। ফড়িংটা আমার কাঁধ থেকে লেকলেক করে আমার দিকে চেয়ে আছে। বমি করার সময় একবার সে আমার মাথায় বসে আবার আমার কাঁধে বসে। বমি করছি আর ফড়িংকান্ড দেখে অবাক হচ্ছি। ভেতর থেকে আর কিচ্ছু বের হওয়ার নাই। এবার শান্তি আর শান্তি।
একটা জলের বোতল কিনি। জল পান করতে করতে সিটের দিকে এগিয়ে যাই। আমাদের সিট ট্রেনের তেতুলিয়ায়। ট্রেনের টেকনাফ থেকে ট্রেনের তেতুলিয়ার দিকে যাচ্ছি। যাত্রী যারা জেগে আছে সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকায়। না। আমি কোনো নবী পয়গম্বরের মতো মুখশ্রী ধারন করি নাই। কারন একটাই। ফড়িং। আমার কাঁধে এমন একটা ফড়িং দেখে তারা অবাক হচ্ছে।
সিটের কাছে গিয়ে দেখি বিশাল এক ভিড়। এক লোক অজ্ঞান হয়ে আছে। তার জ্ঞান ফেরানোর জন্য পুলিশসহ সবাই চেষ্টা করছে। তার জ্ঞান আর ফিরে না। পুলিশকে বললাম 'কিছু একটা করেন'। পুলিশ বললো 'চিটাগাং যাওয়ার আগে কিচ্ছু করার নাই।'
আসলেই কিচ্ছু করার নাই? না, তিনি কিচ্ছু করবেন না? কিচ্ছু করার নাই, না, তিনি কিচ্ছু করবেন না এটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে চট্রগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছানো পর্যন্ত।
সবাই নেমে গেলো যার যার মতো। আমরা সিটে বসা। আমাদের নেমে যেতে বলা হলো। আমাদের যারা নেমে যেতে বললেন তারাই সেন্সলেস লোকটিকে ট্রেন থেকে নামিয়ে সোজা এ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে পাঠান। হা হা হা। এমনটি হলে ভালোই হতো। এমন কিচ্ছু হয়নি। লোকটিকে তারা রেলওয়ের ইটের বিছানায় রেখে যার যার মতো চলে যাচ্ছে। পুলিশের কোনো খোঁজ নেই।
ট্রেনের দায়িত্বরত প্রধান অফিসার দলবল নিয়ে সাই সাই করে হেঁটে যাচ্ছে নিজস্ব আরামের দিকে। সারা রাত তারা কত কষ্ট করেছে। আমি ডাক দিলাম তাকে। জানতে চাইলাম সেন্সলেস লোকটির কী হবে। তিনি আমাকে রামায়ন মহাভারত কুরান হাদিস ইচ্ছামতো বুঝালেন। আমিও বুঝলাম। আমাদের মাথাও ঠিকমতো কাজ করছিল না। কারন বমি করলেও রস মলাইয়ের সাথে মেশানো অজ্ঞান ইফেক্ট কিছু হলেও ত মাথায় রয়ে গেছে। বুঝতে ছিলাম। তাদের সাথে কথা বলে কোনো ফায়দা হবে না। বন্ধুকে ফোন দিলাম। বন্ধু সেকেন্ডে হাজির। বন্ধুর বাসায় স্নান করে একটা বিশাল ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠলাম একদম সন্ধ্যায়।
ট্রেন থেকে নামার কিচ্ছুক্ষন আগে ফড়িংটা নেমে যায় বা চলে যায় অথবা আমাকে বিদায় জানায় কিংবা তার ডিউটি শেষ।
সেন্সলেস লোকটি কোথায় আছে কেমন আছে জানি না, জানি রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সেন্সলেস কর্মকান্ডের জন্য সিলেট টু ঢাকাগামী উপবন ট্রেনটি মৃত্যুর মুখে পতিত হয়েছে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন