রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২

ওগো প্রিয় স্টেশন প্রিয়া

 একটি বেকার স্টেশন— একটি বেকার স্টেশনে বসে আছি—কতিপয় মৌমাছি টেবিলে বৈকালিক খেলাধূলা ছেড়ে খাওয়াদাওয়াতে ব্যস্ত। ট্রেন আসতে অনেক দেরি।


একজন দোকানি মহিলার সাথে স্টেশনের হকার এক লোকের তুমুল বাকযুদ্ধ চলছে। নিশ্চিত হকার লোকটির রাতে ঘুম হয়নি। হকার লোকটির ভাবসাব এমন যেনো সে প্রতিবাদী আন্দোলনের সম্মুখযোদ্ধা। ট্রেন আসতে অনেক দেরি। রোদের ছায়া পশ্চিম দিকে হেলেদুলে পড়ছে।


হকার লোকটির রাগ বাড়ছে— তিন নাম্বার থেকে একেবারে সাত নাম্বার বিপদ সংকেত— দোকানি মহিলার বাড়ছে অসহায়ত্ব—চোখে জল তার টলমল।


হকার লোকটির রাগভাব একেবারে দমন করে স্টেশনের এক হুজুর দোকানি— সেরের উপর সোয়া সের।


প্রায় এক মাস পর আবার স্টেশনে হিজরা দেখি— তাও আবার বোরখা হিজাব পরিহিত অবস্থায়। দোকানি মহিলাটি খাবার খাচ্ছে— দুপুরের খাবার— তাও আবার বিকালবেলার চশমাপরা সময়ে। ট্রেন আসতে অনেক দেরি।


স্টেশনের নিরাপদ নির্জনতা আর কবরের হাইফেন রূপকথার মধ্যে অমিল থাকলেও মিলের মিলিয়ন সাদৃশ্য অবশ্যই চাপা পরে আছে কথাফুলের গন্ধের আড়ালে— সৌরভ এবং গৌরব সহোদরা অস্থায়ী ভাস্কর্য। ট্রেন আসতে এখনো অনেক দেরি।


প্লাটফর্মে মা কুকুরটি তাকিয়ে আছে বাচ্চার চোখের দিকে—বাচ্চার চোখে নিজের ক্ষমতা দেখতে পায় মা— পৃথিবী তাকে ক্ষমতাহীন  করলেও বাচ্চার পৃথিবীতে সে রাজা— রাজা হতে কার না ভালো লাগে!?


ট্রেন আসতে এখনো দেরি— দেরিপথ আজ অথবা কাল কমে আসবে— ট্রেন আসবে— আমি হয়ে যাবো ট্রেনের যাত্রী— স্টেশন আবার কোনো যাত্রীকে তুলে দিবে ট্রেনে।

ট্রেন আসবে যাবে— যাত্রী আসবে যাবে— স্টেশন ট্রেন ও যাত্রীকে নিয়ে জন্মের মতো একা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন