মালতী ফুলে ❀
ব্যথা পেয়ে যখন
জেগে উঠে বিধাতা
ব্যথাই ভালো
গন্ধ থাকুক
সূর্যতাপে বলে সৃষ্টিকথা
মালতী ফুলে ❀
ব্যথা পেয়ে যখন
জেগে উঠে বিধাতা
ব্যথাই ভালো
গন্ধ থাকুক
সূর্যতাপে বলে সৃষ্টিকথা
নবীনগর উপজেলার পূর্বাংশে নাটঘর ইউনিয়নের অবস্থান। নাটঘর ইউনিয়নের আয়তন ৬,৪৭৬ একর (২৬.২১ বর্গ কিলোমিটার)। জনসংখ্যা প্রায় তিরিশ হাজারের মতো।
এই নাটঘর ইউনিয়নের একটি গ্রাম রসুলপুর। মাত্র একটি ব্রিজকে কেন্দ্র করে এটি ইদানিং হয়ে উঠেছে মানুষের বিনোদন কেন্দ্র। বর্ষাকালে প্রচুর মানুষ একটু শ্বাস ফেলার ইচ্ছায় চলে আসে এই রসুলপুর গ্রামে। এই গ্রামের এক পাশে তিতাস নদী। বর্ষার জলে তিতাস নদী যখন টইটুম্বুর হয়ে ওঠে তখন চাষের জমি হয়ে ওঠে তরতাজা জলল প্রাণ। বাংলাদেশের মানুষ জল পছন্দ করে পছন্দ করে জলগোষ্ঠী জলের স্বাভাবিক ধারা-উপধারা প্রবাহ।
রসুলপুর ব্রিজ থেকে একটি রাস্তা সোজা চলে গেছে বিদ্যাকুটের দিকে। বর্ষাকালে এই রাস্তার দুই ধারের ধানি জমিতে কেবল জল আর জল । হাওড় নয় তবে হাওড়ের মতো ( গ্রীষ্মকালে হাওরকে সাধারণত বিশাল মাঠের মতো মনে হয়, তবে মাঝে মাঝে বিলে পানি থাকে এবং তাতে মাছও আটকে থাকে)।
নাটঘর ইউনিয়নের পশ্চিমে বিদ্যাকুট ইউনিয়ন, দক্ষিনে শিবপুর ইউনিয়ন ও কাইতলা উত্তর ইউনিয়ন; পূর্বে তিতাস নদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন, রামরাইল ইউনিয়ন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা এবং উত্তরে তিতাস নদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিন ইউনিয়ন ও সাদেকপুর ইউনিয়ন অবস্থিত। নাটঘর ইউনিয়ন জাতীয় সংসদের ২৪৭নং নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ এর অংশ।
আমরা তিনজন। আমি আর সৈকত। রিকশা চালাচ্ছে বাবু। আড়াইসিধা থেকে যাত্রা শুরু করলাম যাত্রাপুর হয়ে রসুলপুর গ্রামের দিকে প্রানশক্তিতে ভরপুর কোনো এক তরতাজা দুপুরে। এই গ্রামের গল্প অনেক শুনেছি। গ্রামটি দেখতে নাকি অনেক সুন্দর।সৌন্দর্য নির্ভর করে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির উপর সৌন্দর্য নির্ভর করে মানসিকতার অবস্থানের উপর। গ্রামটি দেখার ইচ্ছা অনেকদিন আগের। অনেকদিন আগের বলতে গতবছর বর্ষাকালের। এই বছর এখনো বর্ষা আসে নাই। বাবুর বিভাটেক চলছে রসুলপুর গ্রামের দিকে। প্রচন্ড গরম। দুই হাজার সালের আগে প্রত্যেকটা গ্রাম ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রাকৃতিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রকৃতির আদরে লালিত। প্রচন্ড গরম। বাবুর বিভাটেক চলছে। বিভাটেক বয়ে যাচ্ছে তারুয়া চিলোকুট নরসিংসার আদমপুর হয়ে গোকর্ণ ঘাটের দিকে।
গ্রাম আর গ্রাম নাই ভাই। গরম আর গরম। কারণ গাছপালার দেখা নাই। আদমপুর গ্রামে ১৭-১৮ বছরের এক মেয়ে গাছ থেকে আম পাড়ছে। আমি আম চাইলাম। মেয়েটি হাসি দিয়ে দুইটি আম আমাদেরকে দিয়ে দিল। আমরা হাসি দিয়ে তাকে ধন্যবাদ দিলাম।
গ্যাসের খনি দেখতে পেলাম আদমপুর গ্রামে। আজ থেকে বিশ পঁচিশ বছর আগে আদমপুর গ্রামের এই গ্যাসের খনির দেখা মিলে। নতুন আরও গ্যাসের খনি আবিষ্কার হচ্ছে এখানে। মনটা আনন্দে ভরে গেল। এই গ্যাসের খনি প্রমাণ করে এই গ্রামে এক সময় প্রচুর গাছপালা ছিল। আজকে গ্রাম এলাকায় যেমন গাছপালা দেখতে পাওয়া যায় না তেমনি দেখতে পাওয়া যায়না গাছপালা লাগানোর প্রতি মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টা।
রসুলপুর গ্রামে অর্থাৎ রসুলপুর ব্রিজ বা গোকর্ণঘাট ব্রিজের সামনের রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠেছে কর্পোরেট রেস্টুরেন্ট বাচ্চাদের খেলাধুলার প্র্যাকটিক্যাল সামগ্রী, বসে আড্ডা দেওয়ার বহুবিধ আধুনিক সামগ্রীও দেখতে পাওয়া যায় এখানে। ঘোড়াও এখানে পাওয়া যায়-- ছবি তুললে ১০টাকা থেকে ২০ টাকা দিতে হয়। সৈকত জীবনে প্রথমবারের মত ঘোড়াতে 🏇 আরোহন করে। আহা কি আনন্দ তার চোখে-মুখে!
নরসিংসার বাজারে গিয়ে কলা খেলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে সাধারণত কলা আসে নরসিংদী থেকে। নরসিংদী সারা বাংলাদেশে কলার জন্য বিখ্যাত। নরসিংসার বাজারের কলাওয়ালা চাচা খুব রসিক মানুষ। তিনি পাইকারি হারে কলা বিক্রি করেন। আমাদের কাছে পাইকারি মূল্যের চেয়েও কম দামে কলা বিক্রি করেন।
২০ টাকা দামের চটপটি খেয়ে আমরা আবার রওনা দিলাম বাড়ির দিকে। তখন সন্ধ্যা নামছে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে অন্ধকার নেমে আসে আমাদের মেঘনা নদীর জলে। বাবুর বিভাটেক এবার বিশ্রামে যাবে। আমরাও বিশ্রামে যাই।
এখন রাত। লোকজন এই সময়টাকে নিশি রাত বলে। একটু পরে ভোর হবে। একটু পরে মসজিদে আযান পরবে। আমি তোমার কথা ভাবছি। খুব করে ভাবছি। তোমাকে ফোন দিতে একটা সময় খুব ইচ্ছে করতো। এখন করে না। এখন ভাবতে ইচ্ছে করে। সহজ করে বললে তোমার কথা প্রায়ই মনে পড়ে আমার। জানতে ইচ্ছে করে কী করছো তুমি, রেগে গেলে কার সাথে ঝগড়া করো। তোমার গল্প জানতে খুব ইচ্ছে করে আমার।কেউ নাই যে তোমার কথা আমার কাছে বলবে। তুমি আমার কাছে এখন জীবিত পরকাল। কেউ মেঘদূত ☁ হয়ে তোমার মনের দেশের খবরাখবর আমার কাছে পৌঁছে দিলে সে নিশ্চিত স্বর্গ লাভ করতো। কিচ্ছু না, তুমি কী করছো, কী ভাবছো, কি নিয়ে ব্যস্ততা যাচ্ছে, কোনো মানুষকে তোমার নতুন করে ভালো লাগছে কিনা জানতে পারলেই ভালো লাগতো আমার। এটাও সত্যি কথা যে এখন সম্পর্কের মেঘদূত নাই, আছে কেবল যমদূত!
ভালোবাসা কাকে বলে সংজ্ঞা দিয়ে বলা যাবে না।প্রেমের পাঠশালা পৃথিবীর কোথায় মানুষ এখনো জানে না। তবে আমার মনে একটা আফসোস থেকে গেলো, তোমার সাথে আমি কথা বলতে পারিনি।পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর যে কথা সে কথাটি তোমাকে বলতে পারিনি।সবচেয়ে সুন্দর যে দৃশ্য তা আমি তোমাকে দেখাতে পারিনি।আফসোস।
এখন কী ইচ্ছে করছে জানো? ইচ্ছে করছে কোনো এক নদীর পাড়ে মৃদুমন্দ আলোতে বসে তোমার সাথে গল্প করি। গল্পের ফাঁকে ফাঁকে কোনো এক চায়ের দোকানের খুঁজে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করি।তারপর সকাল হয়ে গেলে তোমাকে তোমার আশ্রমে দিয়ে আমি বাসাই ফিরে আস্ত একটা ঘুম দিই। হায়, তুমি নাই, তুমি কই!?
আমি খুব ভালো মানুষ। নিজের সম্পর্কে নিজের এমন কথা বলতে নাই।তারপরও বললাম। তুমি আর আমি ভালোই থাকতাম।সুন্দর জীবন হতো আমাদের। তুমি কী যে হিজিবিজি ভাবনায় দূরে চলে গেলে। ইচ্ছাকৃতভাবে জীবনে কারো ক্ষতি করি নাই।আমার ক্ষতিও কাউকে করতে দেয়া হয়নি। তোমার ক্ষতি করতে পারি এই কথা তুমি কেমনে ভাবতে পারলে!?
খুব জানতে ইচ্ছে করে আমার কথা তুমি ভাবো কিনা।মাঝে মাঝে মনে হয় আমার কথা তোমার মনেই আসে না। মাঝে মাঝে মনে হয় আমাকে একটা আপদ মনে করে শান্তি পাও। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার কথা মনে হলেই গান ধরো " সব পেলে নষ্ট জীবন।" আবার মনে হয়, যখনই আমার কথা ভাবতে শুরু করো তখনই একটা অদৃশ্য দেয়াল চোখের সামনে ভেসে উঠে, দেয়াল সরানোর ক্লান্তিতে তুমি ঘুমিয়ে পড়ো তোমার প্রিয় অলস বিছানায় অলস বিড়ালের মতো।
চলো একদিন আমরা সারাদিন হাটি আর গল্প করি।তারপর দুজন দুপথে চলে যাই।
হৃদয়ে মনে মননে জমা হওয়া সব গল্প গোগ্রাসে করে ফেলি। সেরিবেলাম,পনস,মেডুলার সমগ্র এলাকায় যে কথার বাষ্প জমা হয়েছে তা বাতাসে মিশিয়ে দিই চলো।
কথা না বলা খুব সনাতনী স্টাইল। এখন মানুষ তার শত্রুর সাথেও কথা বলে। আমাকে শত্রু মনে করে হলেও চলো একদিন কথা বলি খোলামেলা। কবি আল মাহমুদের চুলখোলা আয়েশা আক্তারের খোলা চুলের মতো কথা বলি, চলো কথা বলি গাঙের ঢেউয়ের মতো, কথা বলি সাগরের জলের মতো সীমানাহীন সীমানায়।
সংসার করতে ইচ্ছে করে না আমার। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সময়ে বসবাস করছি আমরা। মানুষ সময়ের ব্যবহার জানে না বিধায় দুর্যোগের কাল মনে হচ্ছে সবার কাছে। খুব শীঘ্রই মানুষ সময়কে চালাতে শিখে যাবে। এমন উন্নত প্রাগ্রসর সময়ে এসে মানুষ প্রাচীনপন্থী পদ্ধতিতে সংসার ক্যামনে করতে পারে? আসলে করতে পারে না। সংসার করে এখন সবাই মানসিকভাবে একধরনের বন্দীদশা ফিল করে। সংসার না করেও কেমন করে সুন্দর মনোরম অনুপম উপায়ে সংসার করা যায় তাই দেখাতে চাই তোমাকে।
জীবন খেলা করে সুন্দরবনের নির্জন সবুজের পাতায় পাতায়, সাগরের দ্বীপের ভেতর সহজ সরল মানুষের চোখে কথায় হাসিতে, পাহাড়ি কন্যার চোখের নজরে অলিগলি মেঠো পথের নীরব ছায়ায়, দেখাতে চাই মেঘনার জলে পানকৌড়ির রোদেলা ডানায় কেমন করে জীবন খেলা করে। আসো একদিন। আসো মুখোমুখি বসি দুজনে মনের ডানার উদাস দুপুরে।
ভ্যাটিকানসিটি থেকে রাশিয়া, লংইয়ারবিন থেকে চিলির পুন্টা আরেনাস,কালালিত নুনাতের নুক শহর থেকে বিশপ রকের উত্তাল জলল শহরে তোমাকে নিয়ে ঘুরবো। তোমাকে নিয়ে ঘুরবো আমি ক্রিস্টাল মিলের পাহাড়ি বাড়িটিতে। সন্ধ্যা নামবে। ঘুম থেকে মাত্র উঠবো আমি। পরিষেবা চাই না আমি। এক কাপ চা তো পেতেই পারি।দুজনে চা খেতে খেতে দেখবো অতীত গিলে খাওয়া ভবিষ্যৎ। আসো একদিন। আসো চোখে চোখ রেখে বলি পাতার চেয়েও সবুজ মানুষের জীবন।
তোমাকে একটি ইংরেজি শুনাতে চাই। শুনবে? নিশ্চয়ই শুনবে। তাহলে বলছি শোনো Being with you and not being with you is the only way I have to measure time. কথাটি বলেছেন এক বিদেশি ভদ্রলোক। নাম তার Jorge Luis Borges। কোনো এক গ্রীষ্মের পাতাপতন দুপুরে তার বাড়িতে যাবো আমরা। শীতের চাদরের মতো নরম আর উষ্ণ হয়ে চুষে নেবো তার কর্ম রক্তের লাল ঢেউয়ের তরঙ্গে।
চলো ধনাত্মক ঋণাত্মক হই আলো দিবো বলে। চলো আঙুলে আঙুল রেখে ঘুম হই কোনো এক রাতে।
তোমার কথা খুব মনে পড়ে আমার। খুব মনে পড়ে।
গেলাম
ভালো থেকো
এই তো ভালো ভালোর সাথে ভালো যেমন থাকে
ফুলের সাথে গন্ধ যেমন ফুলের ❀ সাথে বাচে
নদীর সাথে জলের যেমন মাছের যেমন দেখা
তুমি যেমন তোমার হাতে✋রাশিফলের রেখা
আমি যেমন তোমার হাতে শুভ শুভ্র শাখা
গাছের সাথে পাতা
গরমকালের পাখা
ঝুলমাংস ছিডালরুডি পিঠা
ঝুমবৃষ্টি শ্যামাকন্যার কানের লতিশব্দ
সাতার শেষে দুটি দেহের নখের আঁচড়
সাতার শেষে দুটি দেহ কামে প্রেমে দগ্ধ
আচলখোলা দুটি দেহ পেরেক অবিরাম
বৃন্দাবালক কৃষ্ণ জানে রাধার অভিমান
জলে ঝাল
ডাঙায় কাল
আকাশভরা মেঘের ☁ বাহন
ব্যথার দেশে শব্দ ভালো
ভালোর সাথে আছি
ভালোর সাথে ভালো যেমন ভালো হয়ে থাকে
অন্ধকারে কালো যেমন মুখ লুকিয়ে হাসে
জলের মাঠে হাস যেমন জলের মতো ভাসে
হেসে আছি
ভেসে আছি
আছি প্রেমের ত্রাসে
আছি এখন যেমন ছিলাম তেমন থাকবো বলে
ঘরে তোমার ডেকে নিও ঘর শুকানো হলে