রাজাপুর গ্রামের জঙ্গলে দশটি গরু মরে পড়ে আছে— কাক দেখতে পেলো— একটি কাক নিজের চোখ ভরে মন ভরে খেয়ে নিলো মাংস— খাওয়া শেষে ভাবলো অন্য কাকদের খবরটি জানাতে হবে— দ্রুত উড়াল দিয়ে নিজের কাকগ্রামে ছুটে গেলো— সবাইকে পর্যাপ্ত মাংসের খোঁজ নিয়ে কথা বললো।
কাকদল ছুটে এলো রাজাপুর গ্রামে— গ্রামের জঙ্গলে— এসে দেখে শকুন আর শকুন। কাকদল অসহায় চোখে শকুনের মাংস খাওয়া দেখে। কাকদের সভাপতি বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না— জরুরি মিটিং ডাকে— মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় শকুনের এমন ভোগবাদী মানসিকতা মেনে নেয়া যায় না— তাহলে কী করা!? আমরা শিয়ালের সহযোগিতা নিবো। যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ।
শিয়াল ভাই শিয়াল ভাই।
কী হয়েছে? এতো অস্থিরতা কেনো?
রাজাপুর গ্রামে মাংসের ঢল নামছে।
তাই নাকি?
হুম। তাইতো দেখে আসলাম।
শিয়ালদল রাজাপুর গ্রামে যেতে না যেতে শকুন উধাও। কিন্তু শকুনদল গরু খেয়ে ফেলছে তিনটি অলরেডি।
এবার শিয়ালের পালা— এবার শিয়ালদল মজা করে গরু খাচ্ছে। কাক কোনো প্রকার ভাগাংশ পাচ্ছে না— কাকদল আবার মিটিংয়ে বসে— কাকের সভাপতির জ্বালাময়ী বক্তব্যে গাছপালা অস্থির হয়ে উঠে— শিয়ালদের এমন স্বৈরাচারী নীতিচার মেনে নেয়া যায় না— আমরা কুকুরের সহযোগিতা নিবো। সভাপতির আদেশক্রমে একটি কাক উড়ে গেলো কুকুরের কাছে।
কুকুর ভাই কুকুর ভাই।
বলো শুনছি।
রাজাপুর গ্রামে মাংসের ঢল নামছে।
তাই নাকি?
তাইতো দেখে আসলাম। শিয়াল পাকনা সব একাই খেয়ে নিচ্ছে।
কাকের কথা শুনে কোনো প্রকার কালবিলম্ব না করে কুকুর প্লাটুন রাজাপুর গ্রামে উপস্থিত। কুকুর এবং শিয়ালের মাঝে কিছুক্ষণ ধাওয়া পাল্টাধাওয়া চলে। মাংস খেতে খেতে যেহেতু শিয়ালের শরীর ভার হয়ে আসে সেহেতু বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি যুদ্ধক্ষেত্রে শিয়াল— শিয়াল পরাজিত হয়— কুকুর প্লাটুন জয়ী বেশে মাংস খাওয়া শুরু করে।
কুকুর যখন মাংস খাওয়া শুরু করে তখন আর মাত্র তিনটি গরু তাদের মুখের সামনে।
অল্প সময়ের ভেতরে তিনটি গরু শেষ।
কুকুর যখন মাংস খেয়ে রাজাপুর গ্রাম ত্যাগ করছে তখন কাকদলের সভাপতি আবার জ্বালাময়ী বক্তব্য দিচ্ছে এবং তার জ্বালাময়ী বক্তব্য আকাশপাতাল এক করে ফেলছে— কিন্তু বোকা কাকরা ঠিক বুঝতে পারতাছেনা তাদের সভাপতি এখন কি নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছে— রাজাপুর গ্রামে এখন তো মাংস বলে আর কিছু নাই!